এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • কালো টাকার ওপর সার্জিকাল স্ট্রাইক ও তারপর

    দেবর্ষি দাস লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ১৪ নভেম্বর ২০১৬ | ১৭২৪ বার পঠিত
  • কালো টাকা না কালো ব্যবসা?

    যখন দেশের কালো টাকা নিয়ে হা হুতাশ করি সেটা কি বেআইনি টাকার বান্ডিল নিয়ে করি? না, যে কারণ থেকে কালো টাকা জমা হয়েছে তার ওপর রাগ করি? এনডিএ সরকারের কাজকম্মো দেখে এই খটকাটা লাগতেই পারে।  

    বেআইনি রাস্তায় রোজগার করা টাকা নিয়ে রাগ থাকা স্বাভাবিক। সে টাকা বাজেয়াপ্ত করা উচিত এ ব্যাপারে দ্বিমত নেই। কিন্তু একটু চিন্তা করলে বোঝা যাবে, স্রেফ টাকা বাজেয়াপ্ত করলে কাজের কাজ বিশেষ হবে না। 

    কালো টাকা আসে বেআইনি আর্থিক গতিবিধি থেকে। ধরুন, প্রাইভেট প্র্যাকটিস করে ডাক্তারবাবু যত রোজগার করছেন, ট্যাক্স বাঁচাতে তার পুরোটার হিসেব সরকারের কাছে দিচ্ছেন না। হিসেবের বাইরের এই রোজগারকে কালো টাকা বলব। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, চার্টার্ড এ্যাকাউন্টান্ট, প্রাইভেট টিউটার, উকিল – সবাই কালো টাকা রোজগার করতে পারেন। ব্যবসায়ী, শিল্পপতিদের কাছে অবশ্য এনারা তুশ্চু। লক্ষ্য করুন এদের কারো পেশা বেআইনি নয়। কিছুটা লুকোনো হচ্ছে, সেটা বেআইনি। 

    আবার অনেক আর্থিক কাজ আছে যা শুধু কালো টাকা উৎপাদন করে। যেমন ড্রাগ বেচা, ডাকাতি, ঘুষ। আর্থিক গতিবিধিগুলোই বে-আইনি, তাই পুরোটা কালো টাকা।

    যে কালো টাকা জমা হয়েছে কালো ব্যবসায়ীর কাছে সরকার তা বাজেয়াপ্ত করে নিলে সরকারের ঘরে কিছু টাকা আসবে। কালো টাকার স্রোত কিন্তু তাতে থামবে না। কেননা যে সমস্ত আর্থিক গতিবিধির ফলে কালো টাকার জন্মাচ্ছিল তার ওপর আঁচ পড়ছে না। পোষাকি অর্থনীতির ভাষায় স্রোত বা ফ্লো (flow)-এর ওপর ঘা পড়ছে না। শুধু জমাপুঁজি বা স্টক (stock) বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে। কালো টাকা ধ্বংস হল, তার জনক কালো ব্যবসা অক্ষত থাকল। সেখান থেকে আবার স্রোত বেরিয়ে ভবিষ্যতে নতুন কালো টাকার স্টক তৈরি হবে। 

    সার্জিকাল স্ট্রাইকে কী লাভ হতে চলেছে?

    নরেন্দ্র মোদিজির সরকার ৮ নভেম্বর রাত থেকে ৫০০ আর ১০০০ টাকার নোটের বৈধতা শেষ করে দিয়েছেন। পোষাকি ভাষায় নোটগুলো আর লিগ্যাল টেন্ডার থাকছে না। অর্থাৎ, নোটগুলোর যে মূল্য ছিল তার দায় আর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বা সরকার নিচ্ছে না। যাদের কাছে ৫০০, ১০০০ টাকার নোট আছে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিসে গিয়ে তারা পুরোনো নোট বদলে নতুন নোট নিয়ে আসতে পারবে। তবে ঊর্ধ্বসীমা আছেঃ ৪০০০ টাকা জনপ্রতি। এর ফলে নাকি কালো টাকার হাত থেকে নিস্তার পাওয়া যাবে। যুক্তি এই যে, যাদের কাছে কালো টাকা আছে, তারা টাকা বদলাতে ব্যাঙ্কে যাবে। নোট জমা করতে গেলেই সরকার বাহাদুর টের পেয়ে যাবেনঃ এইয়ো, হিসেবমত ওর কাছে তো এতো টাকা থাকার কথা নয়! ক্যাঁক।

    বলা হচ্ছে, দুটো সুফল পাওয়া যাবে। এক, দোষিদের জরিমানা থেকে সরকারের হাতে দুটো টাকা আসবে। দুই, কালো টাকা দেশ থেকে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যাবে। যারে কয়, স্বচ্ছ ভারত। 

    যুক্তিগুলো পরীক্ষা করে দেখা যাক। মোদিজি যাকে নিশানা করছেন সেটা স্টক, জমা কালো টাকা। কালো ব্যবসাকে তিনি নিশানা করেন নি। ফলে এর থেকে কোনো দীর্ঘস্থায়ী সুফল পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ আছে। দীর্ঘস্থায়ী ফল পেতে গেলে এরকম ঘনঘন সার্জিকাল স্ট্রাইক করতে হবে। মনে হয় না সরকারের সেরকম পরিকল্পনা আছে।

    দীর্ঘকালীন ফল না পাওয়া যাক, স্বল্পকালীন সুফল পাওয়া যাবে কি? কালো টাকার জমা পরিমাণকে ধাক্কা দেওয়া যাবে না ৫০০ আর ১০০০ টাকার নোট তুলে দিয়ে?

    জবাব খুঁজতে গেলে জানতে হবে বে-আইনি সম্পদের কত অংশ নোটে রাখা থাকে; কেননা নোট ছাড়া অন্য কোনোভাবে সম্পদ রাখা থাকলে তা কিন্তু মোদিজির জালে ধরা পড়ছে না। কালো ব্যবসার অবস্থান যেহেতু সরকারি হিসেব বহির্ভুত এক ছায়াজগতে, তাই এই নিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা মুশকিল। আমরা একটা কাছাকাছি, গোদাগোছের, হিসেব করতে পারি। বিভিন্ন সরকারি এজেন্সি তল্লাশি চালিয়ে কালো টাকা বাজেয়াপ্ত করে। লুকিয়ে রাখা আয়ের কত পরিমাণ নোটে ছিল তার তথ্য আছে। মাত্র ৬%। অর্থাৎ কালো কারবারিরা মাত্র ৬% নোটে রাখেন। বাকিটা অন্যান্য সম্পদের মাধ্যমে রাখা হয়। জমি, সোনা ইত্যাদি। তাহলে ৫০০, ১০০০ টাকার নোট বন্ধ করে কালো টাকার মোট পরিমাণের খুব ছোট্ট অংশকে ধরা যাচ্ছে। লক্ষ্য করুন এখানে বিদেশে সুইস ব্যাঙ্কে রাখা মণি মানিক্য ধরছি না। ধরলে সংখ্যাটা ৬%-এর থেকে আরো কমবে। 

    দ্বিতীয়ত, ওই ৬%-ও তার মালিকরা তো বিনাযুদ্ধে ছেড়ে দেবেন না। বাজারে কালো টাকা সাদা করার নানান পদ্ধতি দেখা যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে সোনার বাজার হঠাৎ তেজি যাচ্ছে, সম্ভবত কালো টাকা দিয়ে সোনা কিনে নেওয়া হচ্ছে। কারখানার মালিকরা তাদের শ্রমিকদের নাম করে টাকা সাদা করে নিচ্ছেন। জনপ্রতি ৪০০০ টাকা বদলানো যাচ্ছে। মানে ৫০ জন শ্রমিকের নামে দিনে ২ লাখ সাদা করা সম্ভব। এক মাসে ৬০ লাখ। আবার, নিয়ম অনুযায়ী ব্যাঙ্ক এ্যাকাউন্টে জনপ্রতি আড়াই লাখ টাকার নিচে পুরোনো নোট জমা দেওয়া যাবে। অন্যের ব্যাঙ্ক এ্যাকাউন্ট ভাড়া করে এই রাস্তায়ও টাকা সাদা করার কারবার চলছে। ট্রেন টিকিট কাটতে গেলে পুরোনো নোট ব্যবহার করার ছাড় আছে। ফলে অনেকে ট্রেন টিকিটে কালো টাকা লগ্নি করতে লেগেছেন। পরে টিকিট ক্যানসেল করে টাকা উঠে আসবে। 

    সংক্ষেপে, যেটুকু কালো টাকা জালে ধরা পড়ার কথা (যা কালো সম্পদের ৬%) তার কতখানি হাতে আসবে স্পষ্ট নয়। উপরন্তু, দেখা গেছে ৮ নভেম্বরের ঠিক আগের মাসগুলোতে হঠাৎ ব্যাঙ্কগুলোতে টাকা জমা দেওয়া হিড়িক পড়েছিল। সন্দেহ হয়, সার্জিকাল স্ট্রাইকের খবর গুপ্ত ছিল না, সুযোগ ভাজপা ঘনিষ্ঠরা তুলেছেন। 

    সন্ত্রাসবাদী যোগ ও জাল নোট নিয়েও কিছু কথাবার্তা কানে এসেছে। জাল নোট নির্মূল করা যদি উদ্দেশ্য হয় ধীরে ধীরে পুরোনো নোটকে নতুন নোট দিয়ে প্রতিস্থাপন করা যেত। আজকের অরাজকতা দেখতে হত না।

    কাদের ওপর সার্জিকাল স্ট্রাইক?

    এবার আসা যাক এই অপ্রত্যাশিত ঘোষণার লোকশানে। ভারত গরিব দেশ। কেনাবেচার সিংহভাগটাই নগদ নোটে হয়। ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, নেট ব্যাঙ্কিং জাতীয় নোটহীন কেনাবেচা মোট লেনদেনের মূল্যের মাত্র ১৪%। এই সংখ্যাটা বাড়ছে, তবে এখনো ৮৬% কেনাবেচা কাগজের নোটেই হয়। 

    কারা নগদে কেনাবেচা করেন? একটা অংশ অবশ্যই অসাধু ব্যবসায়ীরা, কেননা বৈদ্যুতিন কেনাবেচাতে রেকর্ড থেকে যায়। তবে অনুমান করা শক্ত নয় দুর্বল আর্থিক সামর্থের ক্রেতা বিক্রেতাদের “ক্যাশলেস ইকনমিতে” উত্তরণ হয় নি। তাঁরা ওই ৮৬%-এ আছেন। কেন এতো লোক নগদে কেনাবেচা করেন? কারণ খুব কম লোক ব্যাঙ্ক এ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেন। মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫৪%-এর ব্যাঙ্ক এ্যাকাউন্ট আছে। আবার মোট এ্যাকাউন্টের ৪৩ % সুপ্ত (ডরম্যান্ট) অবস্থায় পড়ে আছে। অর্থাৎ, মাত্র ৩০% লোক ব্যাঙ্ক এ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেন। এদের মধ্যে একটা ছোট ভগ্নাংশের কাছে আছে প্লাস্টিক টাকা কিম্বা নেট ব্যাঙ্কিং। অর্থাৎ এক বিশাল সংখ্যাগুরু জনতা নগদ দিয়ে কাজকারবার চালাচ্ছে। যাদের কার্ড আছে তারাও অনেক কেনাবেচা নগদে করতে বাধ্য থাকেন। ক্রেডিট কার্ড থাকলেও খুব কম লোকই ক্রেডিট কার্ড দিয়ে পাড়ার বাজার থেকে তিন মুঠো পালং শাক কেনেন, বা রিক্সাওয়ালার ভাড়া চোকান।

    এই আম জনতা যারা নগদের ওপর নির্ভরশীল তাদের ওপর মোদিজির সার্জিকাল স্ট্রাইক পড়েছে। ৫০০, ১০০০-এর নোট উঠে যাওয়াতে গ্রাহকের হাতে বৈধ নগদ নেই যে খুচরো বাজারে মাল কিনবে। ফলে দোকানদারের হাতে টাকা নেই পাইকারের থেকে কেনার। ফলে পাইকারের হাতে টাকা থাকছে না, ও ফলে উৎপাদকের গুদামে মাল জমে যাচ্ছে। সার্জিকাল স্ট্রাইকের ফলে অর্থনীতির শিরা-ধমনী বন্ধ হয়ে দেহে পক্ষাঘাত দেখা দিচ্ছে। 

    কতটা অংশ প্রভাবিত হচ্ছে একটা ছোট্ট হিসেবে দেখা যাক । দেশের মোট লেনদেন মূল্যের ৮৬% নগদে চলে। আর নগদ জগতের মোট মূল্যের প্রায় ৮৫% ধারণ করছে ৫০০ আর ১০০০ টাকার নোট; বাকি ১৫% ৫, ১০, ২০, ৫০, ১০০ টাকার নোট ও বিভিন্ন মুদ্রা। অর্থাৎ, দেশের মোট লেনদেনের প্রায় চারের তিন ভাগ মোদিজির সার্জিকাল স্ট্রাইকে থমকে গেছে (৭৩% ~ ৮৬% * ৮৫%)। এই থমকে যাওয়া অংশের মূল্য ১৫ লাখ কোটি টাকা। অংশটা সচল হবে যদি ১৫ লাখ কোটি টাকা মূল্যের ৫০০, ২০০০-র (বা ১০০) নতুন নোট বাজারে আসে। এটা রাতারাতি হওয়ার কথা নয়। এতো বিশাল পরিমাণ টাকা অর্থনীতির ধমনীতে সঞ্চারিত হতে সময় লাগে। ওই পরিমাণের নোট তৈরি আছে কিনা তাও একটা জরুরি প্রশ্ন। উপরন্তু সরকার এটিএম বা ব্যাঙ্কের মাধ্যমে টাকা তোলার ওপরে ঊর্ধ্বসীমা জারি করেছে। ফলে বড় পরিমাণে নতুন টাকা ঢুকতেই পারছে না। 

    সামনের দিনগুলোতে ব্যাঙ্ক, এটিমের লাইন ছোট হবে না। যদি ভবিষ্যতের লাভের পরিমাণ আজকের যন্ত্রনার সমানুপাতিক হত তাও বোঝা যেত। সে হওয়ার নয়। প্রভাত পট্টনায়েক একখানি উপমা দিয়েছেন। কেউ খুন হলে পুলিশ নিশ্চয়ই গোটা অঞ্চলের মানুষকে থানায় নিয়ে হাজির করে তল্লাশি চালায় না কার হাতে, জামায় রক্ত লেগে আছে দেখতে। কেসটার তদন্ত করে। মোদিজির কালো টাকা শিকার অভিযান গাঁশুদ্ধু লোককে পুলিশ হয়রানির সামিল।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১৪ নভেম্বর ২০১৬ | ১৭২৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • aka | ***:*** | ১৪ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:৪৩80751
  • ভালো লেখা।
  • somen basu | ***:*** | ১৪ নভেম্বর ২০১৬ ০৭:০৪80752
  • উদ্দেশ্যটা একটু ধরতে পারা গেলে ভালো হত। এখনই পুরো ধরা যাবে না। তবে মনে হচ্ছে এর পেছনে বড় খেলা আছে...
  • রৌহিন | ***:*** | ১৪ নভেম্বর ২০১৬ ০৭:২৫80753
  • উদ্দেশ্য ত্রিবিধ। আমি একটা লিখেছি - এখানে আর রিপীট করছি না। পড়ে এসে এখানে মন্তব্য করতে পারেন বা ওখানে।
  • PP | ***:*** | ১৪ নভেম্বর ২০১৬ ০৭:২৮80754
  • রৌহিন লিন্ক টা দেবেন please
  • PP | ***:*** | ১৪ নভেম্বর ২০১৬ ০৮:১০80756
  • পেয়েছি। থ্যান্কু। শেয়ার কোরতে পারি?
  • দেব | ***:*** | ১৪ নভেম্বর ২০১৬ ০৯:৪৯80749
  • "৫০০, ১০০০-এর নোট উঠে যাওয়াতে গ্রাহকের হাতে বৈধ নগদ নেই যে খুচরো বাজারে মাল কিনবে। ফলে দোকানদারের হাতে টাকা নেই পাইকারের থেকে কেনার। ফলে পাইকারের হাতে টাকা থাকছে না, ও ফলে উৎপাদকের গুদামে মাল জমে যাচ্ছে। সার্জিকাল স্ট্রাইকের ফলে অর্থনীতির শিরা-ধমনী বন্ধ হয়ে দেহে পক্ষাঘাত দেখা দিচ্ছে।"

    উই হ্যাভ এ উইনার। সাপ্লাই লাইনগুলো বন্ধ হল বলে। শহর ভাবছে আমার আর কি, পেটিএম আছে, ওরে তোর কনসিউমেবলগুলো যেখান থেকে আসে, যে ট্রান্সপোর্ট নেটওয়ার্কে আসে সব বন্ধ হল বলে। দেখতে থাক।

    "অংশটা সচল হবে যদি ১৫ লাখ কোটি টাকা মূল্যের ৫০০, ২০০০-র (বা ১০০) নতুন নোট বাজারে আসে। এটা রাতারাতি হওয়ার কথা নয়। এতো বিশাল পরিমাণ টাকা অর্থনীতির ধমনীতে সঞ্চারিত হতে সময় লাগে। ওই পরিমাণের নোট তৈরি আছে কিনা তাও একটা জরুরি প্রশ্ন। উপরন্তু সরকার এটিএম বা ব্যাঙ্কের মাধ্যমে টাকা তোলার ওপরে ঊর্ধ্বসীমা জারি করেছে। ফলে বড় পরিমাণে নতুন টাকা ঢুকতেই পারছে না। "

    "এতো বিশাল পরিমাণ টাকা অর্থনীতির ধমনীতে সঞ্চারিত হতে সময় লাগে।" - আন্ডারলাইন।

    ২০১৯ তো দুর, এবারের টার্মটাও বিজেপিকে পুরো করতে হচ্ছে না। এক'দু হপ্তার মধ্যে দাঙ্গা, অবরোধ, ভাঙচুর হবে সর্বত্র। তাতেও কিস্যু হবে না। লোকজন না খেতে পেয়ে মরবে। র‌্যাশন দোকান আসিতেছে ফিরিয়া। গান্ডুগুলো এবিসিডি না বুঝে সারা দেশের লিকুইডিটি মেরে দিয়েছে।
  • দেব | ***:*** | ১৪ নভেম্বর ২০১৬ ১০:১৫80750
  • ও হ্যাঁ আরেকটা কথা। লোকজন এবার খরচা করা একদম কমিয়ে দেবে। খুচরো বাঁচাতে হবে সুতরাং খাবার জিনিস ছাড়া আর কিছুই কিনবে না আপাতত। এই ধরনের পরিস্থিতিতে কোন দেশের অর্থনীতির কি দশা হয় যেকোন ইকনমিস্টকে একবার শুধান, দেখবেন তেনার মুখখান কেমনি শুকিয়ে আমসি হয়ে গেছে। তোতলাতে আরম্ভ করবেন।

    শালা দিব্যি চলছিল দেশটা, ৬-৭% হারে এগোচ্ছিল বচ্ছর বচ্ছর। ক্যাশলেস কেনাকাটাও বাড়ছিল স্বাভাবিক নিয়মেই এবং বেশ দ্রুতহারেই। সব গেল।

    বাজার অর্থনীতির সঙ্গে এই সিদ্ধান্ত পুরো অপোসিট এন্ডে। নেহরুর ভুত আমাদের ঘাড় থেকে যে কবে যাবে ভগবান। নর্থ কোরিয়ায় এই জিনিস হয়। আসিতেছে ডিপ্রেসন।
  • রৌহিন | ***:*** | ১৫ নভেম্বর ২০১৬ ০৬:৫২80757
  • সানন্দে। সাধারণতঃ নিজের লেখার প্রচার করিনা - কিন্তু চাইছি এটা নিয়ে আলোচনা হোক। কারণগুলোর বিশ্লেষণ হোক। তাতে আমি ভুল প্রমাণিত হলেও আপত্তি নেই।
  • Ranjan Roy | ***:*** | ১৫ নভেম্বর ২০১৬ ০৬:৫৮80758
  • রৌহিনের স্পিরিটকে সাধুবাদ!
    btw, রৌহিন শব্দের মানে কী? অন্যভাবে নেবেন না; জানি না , তাই।
  • ore baba re | ***:*** | ১৬ নভেম্বর ২০১৬ ০৫:২৭80759
  • দাঙ্গা, অবরোধ, ভাঙচুর, বিক্ষোভ ।।।। কষ্টকল্পনা যদি করতে হয় সঙ্গে লং মার্চ, দেশ দিয়ে দিল্লি ঘেরা, প্রলেতারিয়েত এর বিপ্লব, চাড্ডি নির্মূলন এবং সবশেষে মুদি বাবুর দোকান গুটিয়ে কেটে পড়া এগুলো রাখতে হবে। তারপরে কেন্দ্রে জনদরদী, গরিবের বন্ধু, সমাজতান্ত্রিক এবং 'ধর্মনিরপেক্ষ' সরকার প্রতিষ্ঠা হবে কারাত ও ইয়েচুরির নেতৃত্বে। বিপ্লব সফল হবে। সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাবে। ডোনাল ট্রাম্প আর আম্রিগা ভয়ে কাঁপবে কখন সে দেশে বসন্তের বজ্রনির্ঘোষ শোনা যায়। জমে যাবে একেবারে।
  • রৌহিন | ***:*** | ১৬ নভেম্বর ২০১৬ ০৬:১০80764
  • রঞ্জনদা, অন্যভাবে নেবো কেন? রৌহিন মানে চন্দন গাছ - হরিচরণ ঘোষের ডিকশনারি অনুযায়ী - সংসদ অভিধানে শব্দটি অনুল্লেখিত। নামটা আমার মা দিয়েছিলেন শখ করে।
    কল্লোলদা এই খবরটা কিছুক্ষণ আগেই দেখছিলাম - অপ্রত্যাশিত নয় কিন্তু। এগুলো হবারই ছিল।
    ddt উত্তরপ্রদেশ আর প্নজাব নির্বাচন নিয়ে যা বলেছেন সেটা একেবারেই সত্যি। এবং আরেকটা বিষয় - যেটা আমার লেখাতেও উল্লেখ করা হয়নি - অন্য কোথাও ও দেখিনি - মধ্য ভারতের জঙ্গলমহলে মাইনিং করার জন্য, ডিফরেস্টেশন করিয়ে কর্পোরেটদের জমি ও লেবারের ব্যবস্থা করিয়ে দিতে সরকার বহুদিন ধরেই মরীয়া - সেনাবাহিনীকে পুরো মাত্রায় ব্যবহারও করা হচ্ছে। এই অবস্থায় যে সব মানুষ আদিবাসীদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, তাদের আর্থিকভাবে দুর্বল করে দেওয়াটাও একটা বাড়তি বেনিফিট। এটা সরাসরি উদ্দেশ্য যদি না-ও হয়ে থাকে, তার মূল্যও সরকারের কাছে কম নয়।
  • bhabuk | ***:*** | ১৬ নভেম্বর ২০১৬ ০৭:০৬80765
  • দেবর্ষী, ভালো লেখা। পরিসংখান গুলির reference পাওয়া যাবে?
  • ddt | ***:*** | ১৬ নভেম্বর ২০১৬ ০৭:০৭80760
  • রৌহিনবাবু যে গুঢ় উদ্দেশ্যগুলোর কথা বলেছেন তার অনেকগুলোর সাথেই একমত। মানে,
    (১) ক্যাশ ইকনমির থেকে ক্যাশহীন ইকনমির দিকে ধাক্কা,
    (২) কালো টাকার বিরুদ্ধে কিছু করেছি বলতে পারা (কিছু করেছে তা সব ভারতবাসী হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি কিনা),
    (৩) ব্যাঙ্কের ডিপোসিট বাড়ানো যাতে নন-পারফর্মিং এ্যাসেটের সমস্যা অন্তত কিছুদিনের জন্য এড়িয়ে যাওয়া যায়।

    এইসব। আরেকটা প্র্যাক্টিকাল উদ্দেশ্য থাকতে পারে, ভাজপা এ্যাজ এ পার্টির। তা হল উত্তর প্রদেশ ও পাঞ্জাব নির্বাচন। নির্বাচনের সময় সব দল টাকা বিলি করে। তাই আগের থেকে টাকা যোগাড় করে মোটা তহবিল বানাতে হয়। আশা করা যায় সপা, বসপা, কং-রা তহবিল বানিয়ে নিয়েছিল। এবং আশা করা যায় ৫০০, ১০০০-র নোটেই ছিল ম্যাক্স। এই কালা ধন এক ঝটকাতে চাপে পড়ে গেল। লক্ষ্যনীয় ভাজপার লোকেরা আগে খবর পেয়েছিল।
  • Attitude adjustment | ***:*** | ১৬ নভেম্বর ২০১৬ ০৮:৫৯80761
  • UP আর পাঞ্জাব ইলেকশন এর কারণটাই সবথেকে বেশি জাস্টিফায়েড মনে হচ্ছে।
  • ! | ***:*** | ১৬ নভেম্বর ২০১৬ ১০:৩৫80762
  • কীসের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক? এতো কার্পেট বম্বিং!
  • Ekak | ***:*** | ১৮ নভেম্বর ২০১৬ ১২:২৭80768
  • স্বতঃস্ফূর্ত রায়ট বলে কিছু হয় বলেই কোনোকালে দেখিনি বা শুনিনি বা পড়িনি । শুরুটা করে দিতে হয় । সেই মোটিভেশনের জন্যেও ক্যাশ লাগে , ক্ষমতা লাগে । সাধারণ মানুষ বড়োজোর পার্সোনাল মোটিভেশনে পুলিশের লাঠি আর কাঁদানে গ্যাস সহ্য করতে পারে । সেরকম খবর আসবেই বিচ্ছিন্নভাবে ।

    আরেকটা ভরসার জায়গা হলো , কেন্দ্রে যে দল টি আছে ওরা রায়ট এ ডক্টরেট । প্রফেশনাল দেড় এক্ষেত্রে বেশি ভরসা করবো সুপ্রীম কোর্টের মতো রায়ট সাবজেক্টে একাডেমিকের চে :)

    যাগ্গে , মিনিমাম কোসালটি কাম্য । মার্কেটে ক্যাশ ঢুকুক ।
  • pi | ***:*** | ০৮ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:১২80769
  • মিলিয়ে নেওয়া যাক।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে মতামত দিন