এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • ধর্ষণ এবং আমরা

    প্রতিভা সরকার লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ০১ ডিসেম্বর ২০১৯ | ৩৫১৩ বার পঠিত
  • দেখা যাচ্ছে ধর্ষণ কী করিলে কমিবে তা আমাদের কারোরই জানা নেই। আন্দাজেই পথ হাতড়াচ্ছি আমরা , মেয়েদের পোশাক হাবভাব ব্যবহার ইত্যাদির দিকে তর্জনী তুললে অন্য চারটে আঙুল বেঁকে থাকে নিজেদের দিকে অথবা আর্থসামাজিক এবং রাজনৈতিক ফ্যাক্টরের দিকে। পিতৃতন্ত্রের বলদর্প আর কতো মেয়েদের জীবন তছনছ করে দেবে সে প্রশ্নও ওঠে খুব সঙ্গত ভাবেই।

    ডঃ প্রিয়াঙ্কা রেড্ডির মৃত্যুর পর ফেসবুকে ধর্ষণের প্রবণতা কমাবার যে কটি পদ্ধতি চোখে পড়েছে সেগুলো শোক এবং হতাশার বিস্ফোরণ হলেও আমাদের মানসিকতা যাচাইয়ের ভালো স্যাম্পলও বটে। কারণ এই একই প্রতিক্রিয়া অন্তর্জালে প্রত্যেকটি ধর্ষণের ঘটনার পর দেখতে পাই। এতে কেউ দোষী নয়,যেহেতু বার বার এই ধরণের ঘটনা ঘটতে থাকে, লোকে বার বার একইভাবে বিস্ফারিত হয়।ফলে প্রতিক্রিয়াগুলিকে খুব তাৎক্ষণিক বলা যাবে না। বরং এইগুলির একধরণের লাস্টিং ভ্যালু বা দীর্ঘমেয়াদী মূল্যমান আছে। এরা মোটামুটি দুরকম - আক্রমণাত্মক এবং আত্মরক্ষামূলক।

    প্রথম ভাগে পড়ে এইগুলি-

    ১) ফাঁসি বা মৃত্যুদন্ড
    ২) লিঙ্গচ্ছেদ
    ৩) মব লিঞ্চিং

    আত্মরক্ষামূলক ধাপ-

    ১) কন্যা ভ্রূণ জন্মাতে না দেওয়া
    ২) মার্শাল আর্ট শেখা
    ৩) ব্যাগে ছুরি কাঁচি পিপার স্প্রে রাখা
    ৪) মেয়েদের ‘সমাজের’ প্রত্যাশামতো বাঁচতে শিখে নেওয়া


    এর বাইরে আছে পুরুষবাচ্চাকে সেন্সিটাইজ করে বড় করা ,যেন তারা নারীকে সম্মান করা শেখে। পিতৃতান্ত্রিক ধ্যানধারণাকে জীবনচর্যার মধ্যে না আনে।

    একটু তলিয়ে ভাবলে বোঝা যাবে প্রথম দুধরণের পদক্ষেপ নারীর ভালোর চেয়ে মন্দ করে বেশি। কোনো ওষুধে কোনো রোগের উপশম হচ্ছে না দেখলে আমরা তো ডাক্তার এবং ওষুধ পাল্টাই। তাহলে দীর্ঘকাল ধরে মৃত্যুদন্ড এ অপরাধ কমাতে পারলো না কেন একথা বলতে যাওয়ামাত্র কেন ধেয়ে আসে তীব্র শ্লেষযুক্ত বাক্যবাণ ,আপনার বাড়ির লোক হলে এইরকম বলতে পারতেন ? অথচ আপনার আমার বাড়ির বাইরে পড়ে আছে একটা বিশাল দেশ আর তার পরিসংখ্যান। এ কথাও প্রমাণিত যে দেশে বিচারের পদ্ধতি অহিংস সেখানে হিংসা কম।

    মানুষের ভেতরের দানবটিকে বাইরে আনার ব্যাপারে প্রথম ক্যাটেগরির জুড়ি নেই। রক্তের বদলে রক্তই যদি কাম্য, তাহলে সে রক্তপাত থামবে কী করে ! উপরন্তু এর প্র্যাকটিকাল দিকটি আরো ভয়াবহ। ফিরে গিয়ে বলে দিলেই যদি মৃত্যু নিশ্চিত ,তাহলে ধর্ষিতাকে আর ফিরতে না দেওয়াই ভালো । পড়ে থাকুক তার আধপোড়া দেহ কোন ওভারব্রিজের নীচে,কিম্বা পুজোর নতুন সাজ পড়া দশবছরের বালিকাটির নিথর দেহ থ্যাঁতলানো ধানক্ষেতে। মা হিসেবে আমার তো ধর্ষককে চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে,তোরা প্রাণপুত্তলীদের শুধু ফিরতে দিস । তারপর আমরা নাহয় ্মেয়েদের শেখাব ঐ ঘটনা একটি এক্সিডেন্ট। ওটার জন্য কারো জীবন শেষ হয়ে যায়না। যারা ভাবে এবং বলে যে ধর্ষণে একটা মেয়ের জীবন শেষ হয়ে যায় তারাও কিন্তু প্রকারান্তরে মেয়েটির জীবন শেষই করে দিতে চায়। চর্তুদিকের কানাকানি ফিসফাস সমালোচনা,গায়ে পড়া উপদেশ চোখের জল মেয়েটিকে লজ্জায় অপমানে নিঃস্ব রিক্ত করে। নিজেকে দায়ী করে সে তার ওপর ঘটে যাওয়া অন্যায়ের জন্য।যে লজ্জা হওয়া উচিত সমাজের প্রত্যেকের এবং রাষ্ট্রের , তার ভারেই সে আত্মহননের রাস্তা বেছে নেয় অনেক সময়। আমরা ফেসবুকে কান্নার ইমোজি দিয়ে কাজ সারি। তার চেয়ে কী কালিঘাটের বস্তির হতদরিদ্র মায়ের কেজো দৃষ্টিকোণটিই বেশি কাম্য নয়, যে বলে নালিশ তো করা হয়ে গেছে ,এবার বিচার হোক ।কিন্তু মেয়ে ঘরে না ফিরলে খাব কী ! মেয়েটি তো অন্তত নিজেকে অচ্ছুত অকেজো ভাববে না।

    কখনো কখনো মনে হয় ইংরেজি শব্দ ‘ রিডান্ডান্টে”র থেকে বড় গালি এক মানুষের জীবনে আর কিছু হতে পারে না । আমাদের সমস্ত বেঁচে থাকার চেষ্টার ভরকেন্দ্র ঐ রিডান্ডান্ট না হবার প্রচেষ্টা। লাঞ্ছিত মেয়েটির শুধু সে অধিকার নেই !

    দ্বিতীয় ক্যাটেগরিটি আরো মারাত্মক। মেয়ে বাচ্চা জন্মাতে দেব না ,তার ফল কী হবে বুঝতে কষ্ট কী ! হরিয়ানার কোনো কোনো গ্রামে ঘুরে এলে মনে হবে প্রতিটি মেয়ে জন্মেইছে ধর্ষকের খাদ্য হবে বলে। নারীপুরুষের রেশিও আরো নষ্ট করে দিলে ধর্ষণ বাড়ে না কমে ? ফিল্মি অভিজ্ঞতার দরকার হলে মাত্রুভূমি সিনেমাটা দেখা যায়।

    কোনো মেয়ের যদি মার্শাল আর্টের বদলে নাচ শিখতে ইচ্ছে হয় তাহলেও তার নানকু চাকু চালানো বাধ্যতামূলক হবে ? যারা ব্লেড চালাতে বলেন তারা জানেন মদ্যপের হাত মণিবন্ধে এঁটে বসলে হাত নড়ানো যায় না? মার্শাল আর্ট যার শিখতে ইচ্ছে হবে সে অবশ্যই শিখবে,কিন্তু জোর করে চাপিয়ে কোনো লাভ নেই। চার পাঁচজন মিলে পিস্তল দেখিয়ে বাপমার সামনে থেকেও তুলে নিয়ে গেলে কিসসু করা যায় না । যা হওয়া উচিত সমাজ এবং রাষ্ট্রের যৌথ দায়িত্ব সেই গুরুভার আমরা চাপিয়ে দেব আমাদের আত্মজাদের কাঁধে ?

    আর সমাজের বিধিনিষেধ মেনে লক্ষ্মী নারীর পুরনো ছক থেকে সবদিকে যোগ্যতা প্রমাণ করে কালের নিয়মে যে মেয়েরা স্বয়ংভর হয়েছেন তাদের আর শত বলপ্রয়োগেও সেখানে ফেরত পাঠানো যাবে না। ধর্ষণেও না।

    তৃতীয় প্রস্তাবে তাও সুস্থ যুক্তি ছায়া ফেলে । এখানে ধর্ষণ বলতে যেহেতু আমরা পুরুষ কর্তৃক অনিচ্ছুক নারীদেহের দখল নেওয়া বোঝাচ্ছি, পুরুষের মনোভাব এবং চিন্তাধারার পরিবর্তন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।তবে সে কতো যুগের কতো সাধনার ফল তা জানা নেই । তথাকথিত শিক্ষার দৌড় দেখা হয়ে গেছে মি টুর দৌলতে। অন্তর্জালে যে পরিমাণ রেপ থ্রেট দেখা যায় তাতে মনে হয় মেয়েদের শায়েস্তা করার ঐ একটি পদ্ধতিই আমাদের শেখা। খুবই লজ্জা হয় যখন দেখি রেপিস্টের ধর্ম তুলে সেই ধর্মের নিরপরাধ মেয়েদের ধর্ষণ করবার ডাক দেওয়া হয়। চিত্তশুদ্ধির প্রচেষ্ট জারি থাকুক, আপাতত আর কিছু করতে না পারি রাষ্ট্র প্রশাসন এবং সমাজের ঘাড় নোয়ানোর জন্য আমরা সমস্বরে চিৎকার তো করতে পারব। সমস্ত ট্যাবু ভেঙে ফেলে প্রত্যেকটি ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে প্রবল আলোচনা,উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়, চেঁচামেচি । ধর্ষণকে ঘিরে থাকা বোবা নৈশব্দকে ভেঙে ফেলে একেবারে অনর্থ করা যাকে বলে। আমরা এখন পরিষ্কার জানি ধর্ষণ শুধু লালসার কারণে হয়না । মেয়েদের ওপর সামাজিক নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবার একটি হাতিয়ার এটি। মেয়েরা পুরুষের সমকক্ষ হতে পারবে না ,এটাই পরম্পরা। অতএব উচ্চশিক্ষিতা নারী যে উপার্জন করে, পুরুষের মতোই স্কুটার চালিয়ে বেশি রাতে বাড়ি ফেরে তাকে ধর্ষণ কোরে মেরে ফেললে আর পাঁচটা মেয়ে তাঁবে থাকবে।

    এক বিচারক এক রায়ের সমালোচনায় ঘরোয়া আলোচনায় ফুঁসে উঠেছিলেন ,আপনারা ঘরে বসে করছিলেন কী ? দলবল জুটিয়ে শুনানির সময় আদালত চত্বরে চ্যাঁচামেচিও তো করতে পারতেন । অন্তত বোঝা যেত জনমত লাঞ্ছিতার পক্ষে আছে ।

    ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা নেই, সে ব্যাপারে ফেসবুকের বাইরে কোন কাজে যুক্ত হওয়া নেই শুধু ঘরে বসে নানা প্রবল হিংসাত্মক কল্পনায় দিন কাটে আমাদের । এমন কল্পনা যে একজন দাগি অপরাধীকেও তা ভাবার জন্য অনেক সময় অতিবাহিত করতে হবে। এইরকম একটি ফেসবুক কুড়োনো মণিমুক্তো দিয়ে গেলাম উপসংহারে - চার ধর্ষকের গায়ে কেরোসিন তেল প্রথমে আধপোড়া করুন। তারপর ফেলে রাখুন। ডাক্তাররা এদের চিকিতসা করতে অস্বীকার করুন।আর কোন উকিল এদের হয়ে কেস লড়বেন না।

    এদেশে ধর্ষণ কমবে ?


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০১ ডিসেম্বর ২০১৯ | ৩৫১৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • | ***:*** | ০২ ডিসেম্বর ২০১৯ ১২:২৮79830
  • ফাঁসিবাদীরা চিন্ময়ানন্দ ইত্যাদি সম্বন্ধে কী ভাবছেন? মনে তাদের ফাঁসির দাবী নেই কেন? কুলদীপ সেঙ্গারকে পার্লামেন্টের ভেতরেই ফাঁসি দেবার দাবী তুলুন না, বেশ দৃষ্টান্তমূলক হবে।

    ও আর ধর্ষণ ইজ অল অ্যাবউট পাওয়ার প্লে। লালসা ফালসা ওনেক পেছনে। ওটা মেয়েদেদ্র শিশ্নের ক্ষমতা দেখানো ও মাটিতে গেঁথে ফেলার জন্য ব্যবহৃত।
    সোনালীর লেখা একটাচমৎকার টই আছে এই নিয়ে, আমার নাম মনে পড়ছে না। হুতো বা অন্য কেউ তুলে দিলে পড়ে দেখতে পারেন।
  • PM | ***:*** | ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৬:০৭79834
  • হ্যা অরন্য দা বলেছি। এখনো স্কুলে পড়ে। হাতে মোবাইল দেওয়া হয় নি। এখন একটা নন স্মার্ট ফোন দেওয়া হচ্ছে অতন্কে
  • Subhanjan Chakraborti | ***:*** | ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৮:০১79835
  • নারী - প্রাচ্য বনাম পাশ্চাত্য
    - শুভাঞ্জন চক্রবর্তী
    ( Copyrights reserved @ Subhanjan Chakraborti)

    লেখক হুমায়ূন আহমেদ একবার আক্ষেপ করে বলেছিলেন পৃথিবীতে এমন একজন পুরুষ নেই যে মনে মনে কোনো নারীকে ধর্ষণ করেনি। কথাটা সর্বাংশে সত্য নয়। তবে নারী ও পুরুষ উভয়েই মনে করে নারী ভোগ্যপণ্য এবং সে ভাবেই মেয়েদের শেখানো হয় আমাদের দেশে। যেমন বিবাহে কণ্যাদান, শাস্ত্রে নারী নরকের দ্বার প্রভৃতি। প্রাচীন ও মধ্য যুগে নারীকে উপঢৌকন হিসেবে দান করা হত। গ্রামে জমিদাররা প্রজাদের ঘরের মেয়ে-বৌদের ধর্ষণ করা ন্যায্য অধিকার মনে করত। স্ত্রীর শরীরের উপর স্বামীর ন্যায্য অধিকারের যে দাবী তা সম্মতি ব্যতিরেকে যৌনতাকে ছাড়পত্র দেয় যা ধর্ষণেরই নামান্তর।। নারীর প্রতি সমাজের এই দৃষ্টিভঙ্গিই ধর্ষণের মত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার অন্যতম কারণ। এই মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে গেলে সমাজের প্রতিটি মানুষকে বিবেকানন্দের চিন্তাধারার সাথে পরিচিত হতে হবে।

    ভারতের নারীদের প্রতি বিবেকানন্দের আহ্বান আজকের সমাজেও সমান ভাবে প্রাসঙ্গিক :

    " পূর্ণ নারীত্বের আদর্শ পূর্ণ স্বাধীনতা।...... কোথা সেই রমণী বীর্যবতী? তোমরা আমারই মত শক্ত সমর্থ , তোমাদের সাহায্য করতে যাব কোন দুঃখে ? মহিলা বলে ? ওটা হল শিভ্যালরি। বোঝনা কেন ঐ সম্পর্কের মধ্যে নারী পুরুষের জৈবিক সম্পর্কের দিকটিই প্রচ্ছন্ন থাকে। "

    ভাবতে অবাক লাগে যে দেশে প্রায় দু'শ বছর আগে সতীদাহ আইন প্রণয়ন করে নিষিদ্ধ হয়েছিল সে দেশে একবিংশ শতকে নারীকে ধর্ষণ করে পুড়িয়ে মারা হয়।

    সাধারণ ভাবে আর্য যুগেই মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার অবসান ঘটে এবং পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার প্রচলন হয়। রাহুল সংকৃত্যায়নের 'গঙ্গা থেকে ভল্গা ' বইটা পড়লে বোঝা যায় কি ভাবে বুদ্ধিমান পুরুষ নারী শক্তিকে অন্তঃপুরে বন্দী করেছিল এবং সমাজে পুরুষতান্ত্রিকতা প্রবর্তন করেছিল। অবশ্য মধ্যযুগে বৈদেশিক আক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে হিন্দু ধর্ম আরও রক্ষণশীল হয়ে পড়েছিল এবং মেয়েদের উপর অত্যাচার তীব্রতর হয়েছিল ব্রিটিশ আমলের সূচনাকালে। সতীদাহ এবং বিধবা নির্যাতন ব্রিটিশদের চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফসল বলা যায়। সম্পত্তির লোভে বিধবাদের পুড়িয়ে মারত সমাজের উচ্চবর্ণের মানুষেরা। জাতপাত প্রথাও প্রবল হয়েছিল ঐ সময়েই।
    মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা আজও কিছু আদিবাসী সমাজে এবং পার্বত্য উপজাতিদের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায় এবং তা থেকে প্রমাণ হয় সনাতন ভারতে মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল।
    মধ্যযুগে সতীদাহ বাধ্যতামূলক ছিল না। যে কোনো ইতিহাস সচেতন ব্যক্তি বা জানেন। জাতপ্রথা ব্রিটিশরা আসার পরে তীব্র আকার ধারণ করেছিল তা ঐতিহাসিক রমেশ চন্দ্র মজুমদার তাঁর বইতে লিখেছেন।

    আমেরিকায় বহির্জগতে নারীদের মধ্যে যে তেজ ও শিক্ষার বহিঃপ্রকাশ চোখে পড়ে আজও ভারতীয় নারীদের মধ্যে তা প্রায় অনুপস্থিত। ভারতীয় নারীদের মনে রাখতে হবে তারা প্রকৃতিগত ভাবে পুরুষদের চাইতে অধিকতর শক্তিশালী এবং সনাতন ভারতে তারাই সমাজকে পরিচালিত করত। ভারতীয় দর্শনে নারীকে শক্তি বলা হয়েছে, নারী বিহীন পুরুষ ক্রিয়াহীন শবে পরিণত হয়। আর্য যুগে বুদ্ধিমান পুরুষ নারীকে অন্তঃপুরে পাঠিয়ে প্রচার করেছিল যে লজ্জাই নারীর ভূষণ। পাশ্চাত্য সভ্যতায় নারীরা এই লজ্জার ভূষণটি পরিত্যাগ করে শিক্ষার আলোকে নিজেদের আলোকিত করতে পেরেছেন , তাই তাঁরা প্রকৃত অর্থে স্বাবলম্বীতা অর্জনে সক্ষম হয়েছেন।
    ধর্ষকের ফাঁসীর যেমন প্রয়োজন আছে তেমনি নারী শক্তির জাগরণেরও প্রয়োজন আছে।
  • বিপ্লব রহমান | ***:*** | ১০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৪৯79836
  • বিবিসির খবরে দেখলাম, হায়দরাবাদে তরুণী পশুচিকিৎসককে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় পুলিশের কথিত এনকাউন্টারে সন্দেহভাজন চার ব্যক্তিই নিহত হয়েছেন।

    এ নিয়ে বিভৎস উল্লাস চলছে। পুলিশের ওই ফোর্সটি রাতারাতি হিরো হিসেবে সংবর্ধিত হচ্ছেন। মিষ্টিমুখও চলছে।

    এই মৃত্যু উপত্যকাই তাহলে গণতান্ত্রিক দেশ! জল্লাদের এই উল্লাস মঞ্চই তাহলে একান্ত কাম্য!

    মৃত্যুদণ্ড, এনকাউন্টার, পিটিয়ে খুন বা লিংগ কর্তনের আহাম্মুকীতে কবে ধর্ষণ রোখা গিয়েছে?

    যারা এ নিয়ে গলা ফাটাচ্ছেন, নিশ্চিত বছর পাঁচেক পরে ধর্ষণের পরিসংখ্যানে তারা আঁতকে উঠবেন। অবশ্য মত পাল্টাবেন কি না তা নিশ্চিত নয়। ততোদিনে হয়তো "ধর্ষণের বদলা" আরও নতুন কোনো অভিনব পন্থা বেরিয়ে যাবে!

    ধিক মনুষ্যত্ব!
  • Kolikataherbal | ***:*** | ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৮:৫৯79837
  • Capital punishment is the only solution. Thanks for the article. <a href="http://kolikataherbaldoctor.com/"> click here</a>
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে মতামত দিন