এক্সিকিউশন। শব্দটির সঠিক অর্থ ঠিক কী?
গুছিয়ে ছকে রাখা একটি পরিকল্পনাকে কার্যকরী করতে পারা? নাকি, মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামীকে কোতল করা - সেও এক অর্থে পরিকল্পনাকে কাজে পরিণত করা-ই - অর্থাৎ, মৃত্যুদণ্ডের আদেশটিকে কার্যকরী করা?
শিল্পী যখন তাঁর ছবির নাম দেন এক্সিকিউশন - ঠিক কোন অর্থে নেব এই শব্দটিকে? এমনিতেই ছবির নামকরণের বিষয়টি কিছু গোলমেলে। নামকরণের মাধ্যমে শিল্পী নিজের ভিশনটিকে দর্শকের উপর চাপিয়ে দিচ্ছেন - এবং, সেই সুবাদে ছবিটি কোনো এক জায়গায় সীমাবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে, এমন প্রশ্ন বারবার উঠেছে। সম্ভবত এই কারণেই অজস্র ছবির তলায় আমরা আনটাইটেলড, অর্থাৎ অনামা, শব্দটি দেখে থাকি, কেননা আঁকিয়ে নামকরণের ঝামেলায় যান নি - দর্শকের সামনে ছবির আকাশটি উন্মুক্ত রেখেছেন। এ তো জানাই কথা, যেকোনো ছবির অর্ধেকটি আঁকেন শিল্পী, আর বাকি অর্ধেকটি সম্পূর্ণ করার দায়িত্ব নিবিষ্ট দর্শকের। সেইখানে, শিল্পীর স্বাধীনতাকে স্বীকার করলে, দর্শকের স্বাধীনতাকে নামকরণের মাধ্যমে সীমায়িত করে দেওয়া তো কোনো কাজের কথা নয়। অপরদিকে, প্রবলভাবে সুনির্দিষ্ট একটি বর্শামুখ অনুভূতি নিয়ে, একটি নির্দিষ্ট ভাবনায় চাড়িত হয়ে শিল্পী যদি সৃজনে জড়িত থাকেন, তাঁর সেই সন্তানকে ঠিক কেমনভাবে ভাবীকাল লালন করবেন, সেই নিয়ে কিছু বলার অধিকার, সম্ভবত, শিল্পীর প্রাপ্য - সেক্ষেত্রে নামকরণ আর দোষণীয় নয়, তাই না?
কিন্তু, শিল্পী যখন ছবির নামককরণের মধ্যে দিয়েই দর্শককে দোলাচলে ফেলে দেন, তখন?
নাঃ, বড্ড মাঝখান থেকে কথা শুরু করেছি। শুরুতে ফেরা যাক।
১৯৯৫ সাল। চীনদেশের বেইজিং শহরে এক উঠতি তরুণ শিল্পী একখানা ছবি আঁকলেন। নাম, এক্সিকিউশন। শিল্পীর নাম উই মিনজিন। বয়স সবে তেত্রিশ।
ক্যানভাসের উপর তেলরঙে আঁকা। মাপে বেশ বড়। উচ্চতা প্রায় পাঁচ ফুট। পাশাপাশিতে প্রায় দশ ফুট।
শিল্পীর কাছ থেকে, সেই বছরেই, পাঁচ হাজার ডলারের বিনিময়ে (ভারতীয় মুদ্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা) ছবিটি কিনে নেন হংকং-এর এক গ্যালারি মালিক।
পরের বছর, অর্থাৎ ১৯৯৬ সালে, লণ্ডনের এক ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কার, ট্রেভর সাইমন হংকং-এ এলে ছবিটা তাঁর চোখে পড়ে। গ্যালারিমালিকের সাথে সাইমনের পুরোনো বন্ধুত্ব ছিলো। আর, ছবিখানাও সাইমনের বড় পছন্দ হয়। কিন্তু, গ্যালারিমালিক জানান, ছবিখানা বিক্রির জন্যে নয়। বিস্তর চাপাচাপি বা ঝুলোঝলিতেও গ্যালারিমালিকের মন গলে না।
এমন অবস্থায়, নিরুপায় ট্রেভর সাইমন গ্যালারিমালিকের সাথে মদের গেলাস নিয়ে আড্ডায় বসেন। ঘণ্টাদুয়েক মদ্যপানের পর, নেশার পারদ চড়লে, আবার ছবি কেনার প্রস্তাব। এইবার চিঁড়ে ভেজে। শেষমেশ রাজি হন মালিক। রফা হয়, বত্রিশ হাজার দুশো মার্কিন ডলারে, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় বাইশ লক্ষ টাকা। সাইমনের জেদ দেখে ছবির মালিক দাঁও মেরেছিলেন, নিঃসন্দেহে। কেনার এক বছরের মধ্যে এক উঠতি শিল্পীর শিল্পকর্মের জন্যে ছয় গুণেরও বেশী দাম হাঁকা খুব একটা স্বাভাবিক ঘটনা নয়। তবে, মালিক নিশ্চয়ই ছবিটার মধ্যে আলাদা কিছু একটা দেখে থাকবেন - নাহলে, গ্যালারির মালিক ছবি বিক্রি করতে মুখিয়ে থাকেন, বিক্রি করতেই চান, সেটাই তাঁর ব্যবসা - ছবি বিক্রি করার জন্যে তাঁদেরকে এত সাধাসাধি করার প্রয়োজন পড়ে না।
ওদিকে, ট্রেভর সাইমনও তেমন কিছু ধনকুবের ছিলেন না। ছবির দামটা তাঁর বার্ষিক বেতনের দুই-তৃতীয়াংশ - এমন দাম দিয়ে এককথায় ছবি কিনে বসার সামর্থ্য তাঁর ছিল কিনা, বলা মুশকিল। কিন্তু, ছবির নেশা, ছবি কেনার নেশা, ছবির সাথে জড়িয়ে যাওয়ার নেশা বড় সাঙ্ঘাতিক - সেইখানে, হিতাহিতজ্ঞান লোপ পাওয়ার ঘটনা বিরল নয়।
ট্রেভর সাইমন ছবিখানা কিনে নিলেন। হংকং থেকে রোল করা ক্যানভাস-ছবি চলল লন্ডনে। ছবির সাথে একখানা আজব শর্ত জুড়ে দেওয়া ছিল - আগামী পাঁচবছর ট্রেভর এই ছবি দেখাতে পারবেন না কাউকে - এমনকি ঘনিষ্ঠ পরিজনকেও না। ট্রেভর আপত্তি করেননি - ছবিখানা নিজের কাছে থাকবে, এই উত্তেজনায় অতকিছু ভাবার অবকাশও ছিল না। ছবিটা রইল, সেই রোল-করা গোটানো অবস্থাতেই - ট্রেভর সাইমনের বাতিল মালপত্র রাখার গুদামঘরে, লন্ডনে।
কিন্তু, কী ছিল এই ছবিতে?
এককথায়, একটি ফায়ারিং স্কোয়াডের দৃশ্য। চারজন দাঁড়িয়ে আছেন স্কোয়াডের মুখে। পরণে স্রেফ অন্তর্বাস। তাঁদের দিকে তাক করে আছেন - কজন বোঝা যাচ্ছে না, দুজন দৃশ্যমান, আরো কয়েকজন থাকা আশ্চর্যের নয়। পুরো দৃশ্যের থেকে উল্টোদিকে মুখ করে দর্শকের দিকে ফিরে আছেন একজন।
এর মধ্যে আশ্চর্য কী?
আশ্চর্য ওই ফায়ারিং স্কোয়াডে দাঁড়ানো মানুষগুলোর মুখের অভিব্যক্তি। প্রত্যেকেই হাসছেন। একেবারে হা হা করে হাসছেন। কিন্তু, সেই হাসির মধ্যে আনন্দ বা খুশী রয়েছে কি?
ফায়ারিং স্কোয়াডের পেছনে দাঁড়ানো, আপনার মুখোমুখি মানুষটার পরণে টি-শার্ট - বড় লোগো সেই টি-শার্টের বুকে - তিনিও হাসছেন - তাঁর হাসির ধরণ যেন কিছু ভিন্ন। আন্দাজ করা যায়, তিনি বন্দুকধারীদের পক্ষের একজন।
না, বন্দুকধারী কই? বন্দুক তাক করে যাঁরা দাঁড়িয়ে, তাঁদের হাতেও তো বন্দুক নেই!! স্রেফ নিশানা করেছেন তাঁরা - বন্দুক, সম্ভবত, নিষ্প্রয়োজন।
পেছনে লাল দেওয়াল। সেই রঙের সাথে তথাকথিত গণপ্রজাতন্ত্রী দেশের জাতীয় পতাকার রঙের মিল লক্ষ্যণীয়।
এক দশকেরও বেশী সময় ছবিটি থাকে ট্রেভর সাইমনের গুদামঘরে, গুটিয়ে রাখা অবস্থায়। প্রকাশ্যে আসে ২০০৭ সালে।
লন্ডনের সদবি-র নীলামে তোলা হয় ছবিটিকে। ছবিটি বিক্রি হয় প্রায় ছয় মিলিয়ন মার্কিন ডলারে, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় বিয়াল্লিশ কোটি টাকায়। চীনের কোনো শিল্পীর আঁকা ছবির পক্ষে এতাবৎ কালের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্য এটিই।
পঁচানব্বই সালে এই ছবি আঁকার কয়েক বছর আগেই ঘটে গিয়েছে তিয়েনআনমেন স্কোয়্যারের ঘটনা। ছবির পেছনের লাল দেওয়ালের সাথে বেইজিং-এর নিষিদ্ধ শহরের দেওয়ালের রঙের মিলও চোখে পড়ার মতো।
খুব স্বাভাবিকভাবেই, পশ্চিমী দুনিয়া এই ছবিকে তিয়েনআনমেন স্কোয়্যারে গণতন্ত্রের উপরে নেমে আসা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের প্রতিবাদ হিসেবে দেখতে চেয়েছে।
কিন্তু, স্বয়ং শিল্পী? মিনজিন বিষয়টিকে ঠিক এইভাবে দেখেন নি। হ্যাঁ, ওই ঘটনায় তিনি প্রভাবিত হন গভীরভাবে - সম্ভবত, ছবির দৃশ্যকল্প তাঁর মাথায় আসে সেই প্রেক্ষিতেই - কিন্তু, তিনি স্পষ্টভাষায় জানান, এই ছবিকে নিছক তিয়েনআনমেন স্কোয়্যারের ঘটনার প্রতিবাদ হিসেবে দেখতে চাইলে ভুল হবে। আর্টকে শুধু ইস্যুভিত্তিক প্রতিবাদে বেঁধে রাখাটা ঠিক হবে না।
মিনজিনের ছবির চরিত্রের ওই হাসি, যা ফিরে ফিরে এসেছে তাঁর অনেক ছবিতেই - যে হাসির সুবাদে তাঁকে আধুনিক চীনের বিদ্রূপাত্মক বাস্তবতা, সিনিক রিয়্যালিজমের জনকের আখ্যা দেওয়া হয়েছে - সেই হাসির মধ্যেও শুধু শ্লেষ খুঁজতে মিনজিন রাজি নন।
তিনি শুধু বলেছেন, ছবি দেখুন। যখন কাউকে হাসতে দেখি, আমরা ভাবি, তিনি সুখে হাসছেন, খুশীতে হাসছেন। কিন্তু, আরেকটু তলিয়ে দেখলে?
ঘরের পাশে পাহাড় বা জঙ্গলমহল যখন ক্ষমতার ভাষায়, "হাসছে", তাকেও কি নিছক খুশীর হাসি বলে মেনে নিয়ে নিশ্চিন্ত হবো? কালকে যখন দেখব, কাশ্মীর হাসছে, হাসব নিশ্চয়ই আমরাও?
কিন্তু, ঠিক কী দেখেছিলেন এই ছবির মধ্যে ট্রেভর সাইমন? কী এমন দেখলেন, যাতে নিজের আটমাসের মাইনে খরচা করে ফেললেন এক অখ্যাত শিল্পীর ছবি কিনতে?
ট্রেভরের ভাষায়, ছবিটা দেখামাত্র আমার চোখে সবকিছু কেমন বদলে গেল। আমার চারপাশে যা যা ঘটছে, একটা ছবির মধ্যে তার সব, সঅব, ধরা রয়েছে। আমি স্তম্ভিত হয়ে গেলাম।
ট্রেভর তখন ব্যাঙ্কে চাকরি করেন। তাঁর মনে হল, সারা পৃথিবীতে, চীনের মাটিতে, ব্যাঙ্কিং সেক্টরে - যা যা চলছে, সবকিছুর নির্যাস ধরে রেখেছে এই একখানা ছবি।
ট্রেভরের কথায়, আমি তো ব্যাঙ্কিং সেক্টরে চাকরি করি। দেখলাম, প্রতিদিন, প্রত্যেকটা দিন মানুষ খুন হচ্ছেন - আক্ষরিক অর্থে নয় - কিন্তু হাসতে হাসতে মানুষ শেষ হয়ে যাচ্ছেন। আমি আজ লন্ডন, কাল প্যারিস, পরশু হংকং - দিনরাত কাজ আর কাজ, অবকাশ নেই এতটুকুনি - বান্ধবীর সাথে সম্পর্ক শেষ হয়ে যাচ্ছে। না, এই ছবিতে ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনের মানুষগুলো খুন হচ্ছেন না, খুন হচ্ছি আমি।
ট্রেভর বলে চলেন, আমরা তো দৌড়ে চলেছি, কেউ আমাদের তাড়া করেই চলেছে, নিশানা করে চলেছে - সে এক অকল্পনীয় উৎপীড়ন - আমরা ভীত, সন্ত্রস্ত - নার্ভাস - হাসছি না, ঠিক হাসছি না - নার্ভাস হা-হা-হি-হি করে চলেছি।
মিনজিনের এই ছবির সাথে তুলনা করা হয়েছে দুনিয়ার সর্বকালের শ্রেষ্ঠ কিছু ছবির। যেমন ফ্রান্সিসকো গোইয়া-র দ্য থার্ড অফ মে ১৮০৮-এর, অথবা এডুয়ার্ডো মানে-র দ্য এক্সিকিউশন অফ এমপেরর ম্যাক্সিমিলন-এর। কিন্তু, ট্রেভরের কাছে মিনজিন-এর এই এক্সিকিউশন তাৎপর্যে এইসব কিংবদন্তী ছবির চাইতেও এগিয়ে। গোইয়া বা মানে-র ছবির বিষয় হত্যা - রাজনৈতিক হত্যা। কিন্তু, মিনজিন নিছক রাজনৈতিক হত্যাকে ধরেন নি ক্যানভাসে। তাঁর পরিধি বহুধাবিস্তৃত। এই হত্যার অস্ত্র বন্দুক-রাইফেল নয়। এই হত্যার অস্ত্র সংস্কৃতি - কালচার। বদলে যাওয়া চীন, বদলাতে থাকা দুনিয়া সব ধরা রয়েছে এই ছবিতে। আর আক্রান্তেরা নগ্ন, উন্মুক্ত - এক্সপোজড - আপাত অসহায়, নার্ভাস হাসিতে লুকিয়ে রাখছেন অস্বস্তি আর আতঙ্ক।
ছবিটায় ফিরুন। ফায়ারিং স্কোয়াডের নিশানাবাজদের হাতে বন্দুক নেই। আপনার দিকে ফিরে হাসছেন যিনি, তিনি কি পুরো ব্যাপারটা যে কতখানি ফাঁপা আর হাস্যকর, তার প্রতিই আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন না? নাকি তাঁর হাসি বিজয়ীর হাসি? তাচ্ছিল্যের আর তৃপ্তির হাসি?
আজ যখন কোনো ফায়ারিং স্কোয়াডের মুখে আমরাও দাঁড়িয়ে পড়েছি, মানে পড়তে বাধ্য হয়েছি - একটু কি খতিয়ে দেখতে পারি না, যে, না, তথাকথিত প্রবল প্রতিপক্ষের হাতে আমাদের চাইতে আলাদা কোনো অস্ত্র নেই?
আস্তে আস্তে আমাদের অধিকারটুকু সঙ্কুচিত হতে হতে যখন একটা গণ্ডির মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে আমাদের - সেই গণ্ডির বেড়ি যখন ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে - অধিকার শব্দটাই যখন হাস্যকর ও বাতিলের তালিকায় ঢুকে পড়ছে - বুক ভরে নিঃশ্বাস নেওয়ার স্বস্তিটুকুকেও যখন খুব বড়ো চাওয়া বলে ধরে নিচ্ছেন পরাক্রমী রাষ্ট্রশক্তি - তখন, সেই মুহূর্তে, ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে দাঁড়িয়ে - হ্যাঁ, সে তো ভার্চুয়াল ফায়ারিং স্কোয়াড ভিন্ন আর কিছুই নয় - সেইখানে দাঁড়িয়ে বোকা বোকা হাসি ভিন্ন কি কিছুই আমাদের করে ওঠার থাকবে না?
প্রবল রাষ্ট্রশক্তি যখন পড়শির দরজা ভেঙে ঢুকে পড়েছেন - আমার দরজার সুরক্ষায় আপাতশান্তিতে গর্বিত হয়ে নার্ভাস হাসি টেনে সেই শক্তিকে জ্যোতির্ময় ভেবে তার জয়ের প্রার্থনা করব, যেমনটি করছেন আশেপাশের অনেকেই?
আর এইখানেই মিনজিনের ছবির নামের ওই "এক্সিকিউশন" শব্দখানা আমার কাছে এক আলাদা দ্যোতনা নিয়ে আসে। না, ছবির দৃশ্যে যতোই ফায়ারিং স্কোয়াডের অনুষঙ্গ থাকুক না কেন, এই এক্সিকিউশন শুধুমাত্র দুচারটে খুন বা মৃত্যুদণ্ড কার্যকরী করার মধ্যে সীমিত নেই।
এই এক্সিকিউশন আরো অনেক গভীর, তাৎপর্যে অনেক ব্যাপক। এ এক অনেক সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার সফল প্রয়োগ - যেখানে আক্রান্ত হওয়ার মুহূর্তেও আমরা চোয়াল শক্ত করে রুখে দাঁড়াতে পারিনা, যেখানে পাশের মানুষটি আক্রান্ত হওয়ার মুহূর্তেও যাক-আমি-তো-বেঁচেই-রইলাম-এযাত্রা-সুলভ নিশ্চিন্তিই আমাদের স্বস্তি দেয়, যেখানে নিজের বিচারবুদ্ধি বিসর্জন দিয়ে প্রোপাগাণ্ডার শিকার হতে পারি প্রায় সকলেই - প্ল্যান সাকসেসফুল বই কি!!
আবার, এও তো অন্য অর্থে এক্সিকিউশন-ই। মানবিকতা, মানুষ হয়ে ওঠার প্রাথমিক শর্তটুকুই নিয়ত বলি দিচ্ছি রাষ্ট্রের যূপকাষ্ঠে। এক্সিকিউশন!!
ওই যে বললাম, ছবি আর নামকরণ - সব মিলিয়ে বড্ডো কনফিউজিং। বড্ডো ভাবায়।
প্রায় সিকি শতক আগে আঁকা এক ছবির মাধ্যমে উই মিনজিন বন্দুকের সামনে, সজাগ এক আয়নার সামনে দাঁড় করিয়ে দেন দর্শককে - প্রতিমুহূর্তে - দেশকালের বেড়া অতিক্রম করে।