"শেষ পাথর টুকরোটা বেছেবুছে ওই টুকরোতেই হয় যেখানে কুমারী আম্মার পায়ের ছাপ না কী এক ঢপের চপ আছে। কিছুতেই পাশের পাথরের টুকরোটায় হয় না।" (এলেবেলে | ২৩ জুলাই ২০২৩ ১৪:১৩)
--- মুশকিল হল ভারতের ম্যাপটার লেজের দিক একটু বেশি জুম করে দেখলেই বোঝা যাবে "তার পাশের পাথরের টুকরোটা" কে ভারতবর্ষের শেষ বলা যায় না, বড় জোর শেষের আগেরটি বলা যায়। বিবেকানন্দ রক-ই তীর থেকে বেশি দূরবর্তী, তথা 'শেষ পাথর টুকরো'। একে "কিছুতেই" অন্যথা করতে গেলে পাথরপাহাড়গুলোকে ঠেলেঠুলে স্থান পরিবর্তন করাতে হয়।
পায়ের ছাপ না ঢপের চপ বিষয়ে :
- According to tradition, the temple was built, maybe a couple of thousand years ago or more, on the rock, which was then a part of the mainland, and now known as the Vivekananda Rock (“the last bit of Indian rock”). The temple was rebuilt on the mainland when sea erosion transformed the rock to an islet. A natural footprint-shaped indent found on the rock is believed to be that of the Devi Herself, and is revered as a symbol of the “Sripadam.” (https://indianmandirs.blogspot.com/2013/11/ sri-kanyakumari-amman-temple.html.) If this is true, and if Swamiji was aware of the compelling Puranic history of the rock where the Divine Mother performed intense austerities as Devi Kanya to win the hand of Lord Shiva, then it explains why he wanted to go there to meditate.
টুকতে গিয়ে ১৯১২, ১৯১৩, ১৯১৪, ১৯৩৩, ১৯৩৬, ১৯৬০, ১৯৬৩, ১৯৭০, ১৯৭৯ সব একাকার হয়ে যাচ্ছে। -- এইটে বলে নিয়ে শেষ করি। এ বিষয়ে আর কিছু বলার বাকি নেই সম্ভবত।
মূল সমস্যা হল উনি এই আলোচনার আগে অদ্বৈত আশ্রম প্রকাশিত মূল "THE LIFE OF SWAMI VIVEKANANDA BY HIS EASTERN AND WESTERN DISCIPLES" বইটা দেখেনইনি। নিজের কাছে বইটির কোনো হার্ড কপি সংস্করণই তো নেইই, এমনকি সফট কপি খুঁজে দেখারও দরকার বোধ করেননি। কারণ রাজাগোপাল ইত্যাদিদের উপর অগাধ ভক্তি। (আপাতত রাজাগোপাল-ইত্যাদিই বলব, কারণ অন্য লেখকের লেখা থেকে একই (টার্শিয়ারি !!) রেফারেন্স দেওয়ার হুমকি দিলেও সেটা উনি এখনও দিয়ে উঠতে পারেননি।)
মূল লেখাতে লেখা হয়েছে --- "১৯১২ সালে প্রকাশিত হয় বিবেকানন্দের প্রথম ইংরেজি জীবনী ‘The Life of the Swami Vivekananda’ (এবার থেকে TL বলব)। বইটির প্রথম সংস্করণে লেখা হয়, ..."
-- এটা ভুল তথ্য। কোট করা লাইনটা রয়েছে TL-এর দ্বিতীয় খণ্ডে, যা প্রকাশিত হয় ১৯১৩তে।
এমনকি ১৯ জুলাই ২০২৩ ০০:২৮ তে উনি যখন এখানের তক্কাতক্কিতে ব্যস্ত হয়ে চট করে আর্কাইভ হাতড়ে একটা TL খুঁজে বের করেছেন, তখনও অরিজিনাল প্রথম সংস্করণ পাননি। পেয়েছেন একটা সাল জালি করা "১৯৬০ ষষ্ঠ" লেখা সংস্করণ। ফলে তখনও তিনি প্রথম কোটেশনটিকে ১৯১২-র বলে দাবি করে চলেছেন।
প্রথম সংস্করণের সফট কপি উনি খুঁজে পান সবে ২১ জুলাই ২০২৩ ২০:০১, কিন্তু সেই সঙ্গে আবার অন্যের বইয়ের ঝাল খেয়ে ১৯৮৯ সংস্করণের উল্লেখ করে বসেন যেটা তাঁর কাছে নেই। নিজে দেখেনওনি।
(১৯৬০-এর ব্যাপারে ২২ জুলাই ২০২৩ ২২:৪৭-তে স্বীকারোক্তির কারণে আর ওটি নিয়ে নাপানাপির প্রসঙ্গ তুলে লজ্জা বাড়ালাম না।)
মূল লেখায় তিনি এও লিখেছিলেন "কিন্তু তার পরেও ওই একই গ্রন্থের ১৯৭৯ সালের সংস্করণে প্রথম সংস্করণটির ভাষ্য সামান্য সংশোধন করে লেখা হয়, ..." সেই ১৯৭৯-র সংস্করণ নিশ্চয় এখনও খুঁজে পাননি। কারণ ২২ জুলাই ২০২৩ ২২:৪৭-এ স্বীকার করেছেন ওটি তাঁর কাছে নেই। ১৯৭৮ এর পঞ্চম সংস্করণের ভূমিকাটি, যদি কোনো ১৯৭৯ প্রিন্ট থেকে থাকে, তাতেও থাকত, ১৯৮৯ প্রিন্ট-এও থাকত। কারণ সেসব এমনকি লেটেস্ট সংস্করণের বইতেও রয়েছে, যা বাজারে ক্রয়লভ্য। অর্থাৎ TL এর কোনো হার্ড কপিই, এমনকি নতুন প্রিন্টও তাঁর কাছে নেই, কখনও ছিল না। পুরো লেখার বিষয়টাই রাজাগোপাল ইত্যাদিদের বই থেকে চোতা করে নামানো। তাদের নাম না-উল্লেখ করার অসততা তো আছেই।
যাকগে, আশ্চর্যের কিছু নেই। রাজাগোপালের বইতেও ১০০ পাতার পরের পাতায় (পেজ নাম্বার হীন) প্রথম সং ১৯১৪ আবার ১২৯ পাতায় ওই চ্যাপ্টারেরই রেফারেন্স পাতায় সেটা ১৯১৩ বলা আছে। গুরুশিষ্যক্রমে পরম্পরা চলমান আরকি।
(১)
(২)
এই বইটির যে একটি ১৯৩৩ দ্বিতীয় সংস্করণ হয়েছিল, তাতে এ প্রসঙ্গে যে ঠিক কী সংশোধন হয়েছিল মূল লেখার (১৭ জুলাই, ফেসবুকে আরও আগে) সময়েও তা লেখক জানতেন না। ১৯ জুলাই ২০২৩ ০০:২৮ সেই "তথাকথিত ১৯৬০" এডিশন দেখেই সে বিষয়ে প্রথম জানেন। ২২ জুলাই ২০২৩ ২২:৪৭ সে বিষয়ে নিঃসন্দেহ হন। যদিও দাগা বুলিয়ে ২২ জুলাই ২০২৩ ১৭:২৬-তে বুঝিয়ে দেওয়া অবধি বুঝেছিলেন কিনা সন্দেহ, কারণ তার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত "ঢপ গিলে ফেলা ঢপ উসকে দেওয়া" --- এই বুক চাপড়ানো চলছিলই।
আর ১৯৩৬-এ কী হয়? কে বি হেড়গেওয়ার এর উত্তরসূরী এম এস গোলওয়ালকর ১৯৩৬ সালে তিনি মিশনের তৃতীয় অধ্যক্ষ স্বামী অখণ্ডানন্দের কাছে দীক্ষা নিতে গেলে অখণ্ডানন্দ কাটিয়ে দেন। এর সত্যমিথ্যা যাচাই করতে যাইনি, কারণ এ থেকে মিশনের সাথে RSSএর "আঁতাত" বা "মাখামাখি" কিসুই প্রমাণ তো হলই না, বরং কাটিয়ে দেওয়ায় উলটোটাই সাব্যস্ত হল। কন্যাকুমারী বা বিবেকানন্দ রক-এর সাথেও এ ঘটনার কোনোই সম্পর্ক নেই। কন্যাকুমারিকায় বিবেকানন্দ শিলার প্রসঙ্গে লিখতে গিয়ে হঠাৎ এই টুকরো বাক্য জুড়ে দেওয়া আর তারপরে আবার সাঁতারে ফিরে যাওয়ার অর্থ কী? এমনকি লেখা যেখানে শেষ হচ্ছে ১৯৬৩ তে রক-এ মন্দির বানানো বিষয়ে, সেখানেও এর প্রাসংগিকতা নেই। "কন্যাকুমারীর এই বিবেকানন্দ শিলামন্দিরকে হিন্দু জাতীয়তাবাদের এক পবিত্র তীর্থে রূপান্তরিত" করা ১৯৬৩ তে সম্ভব ছিল না, কারণ সেই মন্দির বানানো, তথা তীর্থে রূপান্তরণ শেষ হয় ১৯৭০ এ।
হঠাৎ এই হচপচ লেখাটির অর্থ অনুধাবন করা গুরুচণ্ডা৯-তে বসে করা একটু কঠিন। আসলে জুন ১১, ২০২৩, রবিবার, "
জেগে আছি" নামক একটি ওয়েবজিন-এ (অনলাইন সাহিত্যপত্র) "ইসকন : শুরুই হচ্ছে জালিয়াতি দিয়ে" নামে দেবোত্তম চক্রবর্তীর লেখাটির প্রথম অংশটুকু প্রকাশিত হয়। এরপর ইসকনের অমোঘ লীলা দাস-এর সেই বিতর্কিত বক্তব্যের জের-এ তিনি এটিকে খানিক এডিট করে তার সাথে খানিক রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দকে গালি দিয়ে মিড-জুলাইয়ে ফেসবুকে ছাড়েন ফ্রেন্ডস-অনলি করে। তাতে কেউ কেউ শুধু ইসকন অংশটা কপি করে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি আবার বলে কয়ে সে-লেখার বাকি অংশটাও জুড়ে দেওয়ান, যদিও সেই বাকি অংশে প্রায় পুরোটাই ছিল ইসকনের জমি হাতানোর সঙ্গে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিকভাবে রামকৃষ্ণ ও বিবেকানন্দকে আক্রমণ। গুরুতে সে-লেখা পোস্ট করার সময় দ্বিতীয় অংশটা বদলে তিনি বিবেকানন্দ শিলা প্রসঙ্গ আনেন। বিভিন্ন সময়ে তৈরি নানারকম লেখাকে একটা লেখায় মেশানোর চেষ্টায় স্বভাবতই এইসব খিচুড়িঅনুচ্ছেদ বা পারম্পর্যহীনতা ঢুকে গেছে।
লেখাটার মূলভাবে গোলমাল ছিল না। ইসকন যেমন নানাভাবে জমি হাতাচ্ছে RSS এর ক্ষেত্রে সেরকম একটা অন্তত ইন্সট্যান্স এই কন্যাকুমারিকার Islet টাকে প্র্যাকটিকালি অধিগ্রহণ করে মন্দিরটা বানানো। সে কাজের প্রধান রূপকার RSS-এর একনাথ রানাডে। ইতিহাসটা উইকি থেকে সংক্ষেপে এরকম :
The teachings of
Swami Vivekananda deeply influenced Ranade. In 1963, during the centenary year of
Swami Vivekananda's birth, he published a selection of Vivekananda's writing under the title
Rousing Call to Hindu Nation, as a personal tribute.
[1]The same year, Ranade conceived the idea of building a monument in honor of Vivekananda at the mid-sea rock location near Kanyakumari, where Vivekananda had meditated for three days in December 1892.
After receiving enthusiastic responses to the scheme from RSS chief
M. S. Golwalkar and others, Ranade established the Vivekananda Rock Memorial Organising Committee and became its Organizing Secretary. Various committee branches were established across the country (with future
BJP leader
L. K. Advani serving as the organising secretary of the Delhi branch) to build support and later raise funds, for the memorial. When the idea was initially rejected by the (
Minister of Education and Culture) -
Humayun Kabir, Ranade drummed up support from over 300 members of the
Indian Parliament, which led to the project receiving approval from (
Prime Minister) -
Indira Gandhi. Ranade also managed to win endorsement for the project from a diverse section of the political and spiritual community, including sections traditionally in opposition to RSS.
[2]After the project was approved, Ranade led a cadre of volunteers to raise funds for construction from donors across the country; state governments and the central
Government of India also contributed towards the
Rs.12.5 million fund total. The Rock Memorial was completed in 1970 and inaugurated by (
President of India) -
V. V. Giri on 2 September.
[2]
লেখাটা এইদিকে ফোকাস করে থাকলে গোলমাল ছিল না, বরং সুপ্রযুক্তই হত। কিন্তু সমস্যা হল, বিবেকানন্দ ও মিশনকে এই সুযোগে চাট্টি গালাগাল না দিলে ভাত হজম হবে কী করে। ফলে ফোকাস চলে গেল সাঁতার কেটেছে না কাটেনি, জীবনীগ্রন্থে কী লেখা হয়েছিল বা হয়নি; আর সেসব লেখার জন্য দু-এক দিনের মধ্যে আর বিশেষ 'গবেষণা"র সুবিধে হয়নি বলে এই ছড়িয়ে ছত্তিরিশ কেস।
যাকগে, বেটার লাক নেকস্ট টাইম।
----------------------------------------------
এখনই দেখলাম আরো অনেক কিছু লেখা হয়েছে। এমনকি পঞ্চম সংস্করণের ভূমিকা পড়েও কিসু বোঝা যায়নি। দাগা বুলিয়ে না বোঝালে হয়তো বোঝা যাবেও না। কী আর করা...
much new published as well as unpublished material about the Swami's life has come to our hands. All significant new information has, therefore, been incorporated in this edition in the light of these archives. No pains have been spared to make it informative, up to date, and authentic. Secondly, some material that was omitted in the abridged second edition has been restored in appropriate places for the sake of fuller account. ... ...
Furthermore, an effort has been made to make the earlier text read more simply and smoothly, and make the added matter all of a piece with it. Some factual errors, which occurred in the earlier editions owing to the scanty resources available then, have been rectified wherever possible in the light of the recently discovered material. ... ...
Besides these, numerous quotations from many hitherto unpublished letters of Swamiji, of his friends and disciples, and some hitherto unknown information about the Swami, have been added, ... ...
নতুন কিসু নয়, আগেও বহুবার একই মচকাবো-না সিন্ড্রোম দেখা গেছে। গ্যাস খাওয়ানোও নতুন উদ্যমে শুরু হয়েছে। যাকগে, নতুন কিসুই আর বলার নেই।
* বালকের বয়স ১৮৯২ আর ১৮৯৭ দুটোই ধরে গোনা হচ্ছে তো? প্রবুদ্ধ ভারতের লেখাটার দ্বিতীয় পার্ট দিইনি। লাগলে খুঁজে নিতে হবে।
** যুগনায়ক বিবেকানন্দ দিয়ে খুব বেশি লাভ বোধহয় হবে না, বরং "অতীতের স্মৃতি" বইটা নিয়ে একটু চর্চা করলে কাজে দিতে পারে। সাল তারিখ সংস্করণ ইত্যাদি। অবশ্য মোল্লা নাসিরুদ্দিন বলে গেছেন, যেখানে আলো পড়ছে হারানো মুদ্রা সেখানেই খুঁজিও।