এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  প্রবন্ধ

  • ধ্যান ও  স্নায়ুবিজ্ঞান 

    অরিন লেখকের গ্রাহক হোন
    প্রবন্ধ | ১২ জুন ২০২৪ | ৬৫০৪ বার পঠিত | রেটিং ৩.৮ (৪ জন)
  • | |

     
    গোড়ার কথা: কি, কেন, ইত্যাদি 
     
    এই প্রবন্ধটির আলোচনার বিষয় ধ্যান এবং স্নায়ুবিজ্ঞানএর পারস্পরিক সম্পর্ক, বা বলা যেতে পারে স্নায়ুবিজ্ঞান এর "চোখ" দিয়ে ধ্যানের মতো একটি বিষয়কে বোঝার চেষ্টা করা। আজ অবধি এই বিষয়ে মোটামুটি যা যা জানা হয়েছে ও জানা হচ্ছে তার একটি অতি সংক্ষিপ্ত, হয়তো কিছুটা লঘু ধরণের অবতরণিকা পেশ করা। এখন প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে হঠাৎ করে এইরকম একটি বিষয় নিয়ে, বিশেষ করে ধ্যান ও স্নায়ুবিজ্ঞান নিয়ে দু চার কথা পাড়তে গেলে যা হয়, আপনারা যারা পাঠক আপনাদের কারো কারো মনে হতে পারে যে কোথায় কি নিয়ে গপ্পো? মানে কোথায় ধ্যানের মতো গুরুগম্ভীর ধর্মীয় বিষয়, রীতিমতন সাধারণ ভাবে যার সঙ্গে নানারকমের ধর্ম কর্মের যোগ প্রবল, আর কোথায় নিউরোসায়েন্স, অতি জটিল বিজ্ঞান, বিশেষত মস্তিষ্কের জটিল অন্তর্জগতের হদিস দেওয়া যার কাজ - এই দুটো বিপ্রতীপ বিষয় কি তেল আর জল মেশানোর মতো অসম্ভব ব্যাপার নয়? এখানে আমার উত্তর "না নয় :-) ",  কিন্তু কেন নয়, ক্রমশ প্রকাশ্য । 
     
    এ নিয়ে সন্দেহ নেই যে মস্তিষ্ক ও স্নায়ুবিজ্ঞান অতি জটিল বিষয়, এবং অনেকেই হয়তো ভাবেন যে যাদের ও বিষয়ে ব্যুৎপত্তি নেই, তাদের পক্ষে ও বিষয় না যায় বোঝা, না যায় বোঝানো । তার থেকে অপেক্ষাকৃত ভাবে ধ্যান ব্যাপারটি আপাতভাবে আরেকটু সোজাসাপ্টা ও হাতেকলমে করে দেখা যেতে পারে। এইটা আমার মনে হয়, তাই এই লেখাটিতে প্রথমে ধ্যান ব্যাপারটিকে নিয়ে চর্চা করা যাক। তারপর পর্যায়ক্রমে ধ্যানের সঙ্গে নানান রকমের ব্যবহারিক প্রয়োগ, এই করে আমরা স্নায়ু, মস্তিষ্ক, সেখান থেকে নির্গত সংবেদনাকে ধরার জন্য ইলেক্ট্রোএনকেফালোগ্রাফি (EEG), মস্তিষ্কের অভ্যন্তর দেখার জন্য MRI ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে, কারণ ধ্যান, এবং মনোবিজ্ঞান এবং স্নায়ুবিজ্ঞান ইত্যাদি বিবিধ বিষয়ের অবতারণা করতে গেলে এই বিষয়সমূহ আসবেই ।
     
    লেখাটার গোড়ায় এখানে একটা কৈফিয়ত দেবার ব্যাপার আছে। সেটা এই যে আমাদের এই আলোচনা কিন্তু ধ্যানের ধর্মীয় দিকগুলো নিয়ে আমরা করব না, আমরা বরং বিষয়টিকে বৈজ্ঞানিক পরিপ্রেক্ষিতে দেখার চেষ্টা করব। তার অর্থ অবশ্য এই নয় যে ধ্যানের ধর্মীয় ব্যাপারটি কম গুরুত্বপূর্ণ, বরং উল্টোটা। ধ্যানের অবশ্যই একটি ধর্মীয় দিক রয়েছে, এবং সে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । এবং সে দিকটি বিভিন্ন ধর্মের ধ্যানের চর্চায় দেখা যায়। উপনিষদিক ব্রাহ্মণ্যাধৰ্মে যেমন হঠযোগ (বিশেষ করে প্রাণায়াম প্রক্রিয়া ইত্যাদিতে) এবং রাজযোগে ধ্যানের অপরিসীম গুরুত্ব, তেমনি বৌদ্ধধর্মে অনপনসতী (শ্বাস প্রশ্বাস এর দিকে নজর রেখে ধ্যান), বা কায়াগত সতী (শরীরের বিভিন্ন অংশে নজর রেখে ধ্যান) বা বিপাসনা (আসলে বলা উচিত বিপস্যনা), তেমনি আবার খ্রীষ্ট ধর্মেও সুপ্রাচীন কাল থেকে ধ্যানের তাৎপর্য রয়েছে (মরু যাজকদের সূত্রে, desert fathers , দেখুন, https://www.contemplativeoutreach.org/the-christian-contemplative-tradition/ ), তেমনি ইসলাম ধর্মেও ধ্যানের  ভূমিকা রয়েছে।  সেইসব জটিল পারমার্থিক বিষয়ের মধ্যে না গিয়ে আমরা আপাতত ধ্যান কি সেই দিকটায় প্রাথমিক মনোনিবেশ করি, কারণ ধ্যান কি ও কত রকমের । এছাড়াও ধ্যান বিষয়টিকে কেন্দ্র করে যে কতরকমের অদ্ভুত ধারণা আমাদের সমাজে আছে, সে সমস্ত নিয়ে দু একটি কথা আলোচনা এখানে প্রাসঙ্গিক হবে বলে মনে নয়। এখানে আরেকবার লিখে রাখা যাক যে  ধ্যান মানেই ধর্ম-কর্মের ব্যাপার নয়, এই ব্যাপারটা স্পষ্ট করে না লিখলে এ আলোচনা এগোনো যাবে না। 
     
    ধ্যান বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা 

    এক কথায় ধ্যান কথার সঙ্গে  মনোনিবেশ বা মনঃসংযোগ ব্যাপারটির একটি যোগাযোগ রয়েছে, যদিও সচরাচর বাংলা ভাষায় ধ্যান কথাটি বললে সেই ব্যাপারটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে না । সে তুলনায় হিন্দি ভাষায় যদি "মন দিন" বলতে হয়, বলা হয় "কৃপয়া ধ্যান দিজিয়ে"। আমরা বাংলা ভাষায় ধ্যান বলতে অনেকটা এইরকম একটা ছবির কথা ভাবি সাধারণত :
     

    (জনৈকা ধ্যানরতা)
     
    ছবিটা "মন দিয়ে" দেখুন । ছবিতে যে মানুষটিকে দেখা যাচ্ছে তাঁর চোখদুটি বন্ধ, দুই হাত দুই হাঁটুতে রেখে, তিনি  বসে আছেন। ধ্যানরত লিখলাম বটে, তিনি কি প্রকৃত পক্ষে ধ্যান করছেন? অস্যার্থ , কারোর এই রকম ছবি দেখে কি বোঝা যায় যে  তিনি সত্যি সত্যি ধ্যান করছেন? সেটা আমরা জানছি কি করে? ধ্যান ব্যাপারটা কি শুধুই হাতের মুদ্রা আর বিশেষ রকম পিঠ টান টান  করে বসে থাকার ব্যাপার? ইনি  ধ্যান আদৌ করছেন কিনা আমরা কিন্তু জানি না, কাজেই যে কেউ তাঁর ধ্যানস্থ অবস্থায় বসে থাকার নানাবিধ ছবি দেখাতে  পারেন (আজকাল বৈদ্যুতিক সামাজিক মাধ্যমের যুগে অনেকেই সেই ধরণের ছবি পেশ করে থাকেন), তা থেকে কিন্তু প্রমাণিত হয় না যে তিনি অভিনয় করছেন, না সত্যিকারের ধ্যান করছেন । আপাত ছবি দেখে যদি সত্যিকারের ধ্যানের কথা ভাবা যায়, তাহলে ভুল হবে । একথা লিখছি কেন?  একটা সহজ উদাহরণ দিয়ে বোঝাবার চেষ্টা করি । 
     
    চুপটি করে বসে থাকো, কিছু কোরো না
    যেমন ধরুন, ছোট বয়েসে  "চুপটি  করে বসে থাকো, কিচ্ছু করো না" এই কথাটা আমরা হয়তো অনেকেই শুনেছি । কিন্তু এই ব্যাপারটাই, যে কোন কাজ কর্ম না করে চুপ করে বসে থাকার ব্যাপারটি প্রাপ্ত বয়েসে কেমন হয়?   মনে করুন আপনি স্থির হয়ে বসে থাকা মনস্থ করলেন। আরো মনে করুন আপনি স্থির করলেন প্রায় ২০-২৫ মিনিট মতন ঐরকম এক ঠায় একটি চেয়ারে বা আসনে বসে থাকবেন। কাজ কর্ম কিছু করবেন না, শুধু এক জায়গায় চোখ বুজে চুপ করে বসে থাকবেন। প্রথমত ঐরকম করে বসে থাকা, নেহাত সহজ নয়, বা করলেও যেটি অবধারিত ভাবে হবে, মনে নানান রকমের চিন্তা ভিড় করে আসতে থাকবে, মন যেন জংলী বাঁদরের  মতন, এক গাছ থেকে অন্য গাছে লাফিয়ে বেড়ায় (বৌদ্ধ ধর্মে এই মনের অবস্থাকে বলে "কপিচিত্ত ", আমরা আপাতত ধর্মকর্ম জাতীয় আলোচনা না করা মনস্থ করেছি, অতএব এ নিয়ে কথা বাড়াবো না)। এখন "কপিচিত্ত " দশা প্রাপ্ত হলে যা হয়, মনে নানান রকমের চিন্তা ভিড় করে আসে, এক চিন্তা অন্য চিন্তায় মিশে যায় বিস্তর দিবাস্বপ্ন দেখা হয়। বাইরে থেকে আপনাকে দেখলে মনে হবে আপনি বুঝি গভীর ধ্যানে নিমগ্ন, আসলে তা তো নয়। এবং এই ব্যাপারটি ধ্যানও নয় কারণ ধ্যানের অন্যতম শর্ত  মনোনিবেশ করা, সেটি না হলে ধ্যান বলা যাবে না।
     
    এবার আমরা আরেকবার বিষয়টিকে বিবেচনা করে দেখি । এইবার, আবার, বসে থাকার একই ব্যাপার, কিন্তু আগের থেকে এবারের তফাৎ, এবার চোখ বন্ধ করে ও সুখাসনে উপবেশিত হয়ে আপনি "মনোনিবেশ" করবেন, মনকে একেবারে লাগামহীন অবস্থায় ছেড়ে দেবেন না । অতএব আবার সেই  ব্যাপার, একই রকমের বসার ভঙ্গি, এবারও ২০ মিনিট ঘড়ি ধরে একটি নরম গদিতে ধরুন আসন পিঁড়ি হয়ে বসলেন, বা একটি চেয়ারে বসলেন । চোখ বন্ধ করলেন, এবং , এইবার স্থির করলেন যে "মনোনিবেশ" করবেন, মনকে লাগামহীন ঘুরতে দেবেন না । এই অবধি তো হল, এখন মনোনিবেশ করবেন কিসে? 
     
    সব ধ্যান একরকম নয় (যে ধরণের ধ্যানের কথা আমরা এই প্রবন্ধে আলোচনা করছি না )
     

    এইখানে দুটি কথা বলার আছে। প্রথমত, মনে করুন মনোনিবেশ করবেন কোনো একটি রূপকল্পনায়, কোনো একটি  শব্দে, বা কোন একটি  মন্ত্রে ।  মহাঋষি মহেশ যোগী বলতেন শব্দের ওপর "ধ্যান দিতে", যাকে এখন বলা হয় transcendental meditation । এই ধরণের ধ্যান করার সময় অন্য কোন কিছুকে মনে স্থান দেওয়া যাবে না । অনেকে তাই এই ধরণের ধ্যান কে চিন্তাশূণ্য ধ্যান বলেন । এই জাতীয় ধ্যান বা মনোনিবেশ আমাদের এই আলোচনার বিষয় নয়, অন্য কোনো সময় একে নিয়ে চর্চা করা যাবে। দ্বিতীয়ত, আমরা যে ধরণের ধ্যান নিয়ে এই প্রবন্ধে আলোচনা করতে চাই তাকে "মুক্ত ধ্যান" (open awareness meditation) বলা যেতে পারে। সে কিরকম ধ্যান? আসছি সে কথায় ।
     
    আমাদের আলোচ্য ধ্যান: মনোনিবেশিত ধ্যান বা Mindfulness Meditation
     
    আগের বারের মতন এবারেও আপনি মনে করুন ২০-২৫ মিনিট সময় নিয়ে ঘড়ি ধরে ধ্যান করতে শুরু করেছেন। এইবার আপনি "মন" দেবেন আপনার শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রতি, আপনার নাসারন্ধ্রে শ্বাস নেবার সময় হাওয়া প্রবেশ করছে, শ্বাস নির্গত হচ্ছে ওই পথে, আপনি তার প্রতি মনোনিবেশ করবেন । এবার দেখবেন কিছু পরে পূর্ববর্ণিত কপিচিত্তের কার্যকলাপ শুরু হবে, আপনার মনে নানান রকমের চিন্তাভাবনা আসতে থাকবে। এক্ষেত্রে আপনি সেইসব চিন্তাসমূহ দূরে কোথাও সরিয়ে রাখবেন না, বরং নিজেকে বলুন যে "আমি আর আমার মন আমার চিন্তা এক নয়, অতএব সবিশেষ কৌতূহল নিয়ে তাদের দেখি", এই বলে  নিজের শরীর থেকে মন সরিয়ে নিয়ে কৌতূহল সহকারে এই যে নানান ধরণের চিন্তা মনে আসছে, তাদের দেখতে থাকুন ।  এই ব্যাপারটা মোটেও সহজ নয়, এই কাজটি করতে আপনার সময় লাগবে, ধৈর্য্য লাগবে । আপনার ভাবনাচিন্তা এমন ভাবে  "দেখতে" থাকুন, যেন গ্যালারিতে বসে খেলা বা নাটক দেখছেন । চিন্তার উদয় হওয়া মাত্রই, তাদের একটি নাম দিন, এবং তারপর আবার পুনরায় আপনার শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রতি  মনোনিবেশ করুন। যেমন ধরুন, ধ্যান শুরু করেছেন, শ্বাস প্রশ্বাস এর দিকে নজর রাখতে শুরু করেছেন, এমন সময় মনে একটি চিন্তা উদিত হল  যে অমুকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে, এখন অবধি করা হয়ে ওঠেনি । সে চিন্তা ভারী প্রবল হয়ে মনে উপস্থিত হল । এখন আপনি ধ্যান করা ছেড়ে উঠে গিয়ে অমুকবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন, কিন্তু তা না করে, এই চিন্তাটির যে উদয় হয়েছে, তার প্রতি কৌতূহল প্রকাশ করে মনে মনে নিঃশব্দে নিজেকে বলতে লাগলেন "যোগাযোগ", "যোগাযোগ", এবং একাগ্র মনে আবার শ্বাস প্রশ্বাসের প্রতি নজর ফিরিয়ে আনলেন । এই ধরণের যে ধ্যান, যেখানে মনোসংযোগ করা হচ্ছে ঠিকই, তবে অন্যান্য ধারণাকে দেখে, তাদের অগ্রাহ্য করা হচ্ছে না, এই ধরণের ধ্যান নিয়ে আমাদের আলোচনা (এর ইংরেজি পরিভাষায় "open awareness meditation" বলা হয়, আমরা বাংলা করে বলতে পারি "মুক্ত চেতনার ধ্যান" ।
     
    আকাশ ও মেঘ 
     
    এবার এখানে একটা ব্যাপার নজর করুন । এই যে পদ্ধতিতে ধ্যানের কথা বলা হচ্ছে, এই যে শ্বাসের প্রতি মন নিবিষ্ট রেখে অন্যান্য যে সমস্ত চিন্তা ভাবনা মনে আসছে তাকে চিহ্নিত করতে থাকছেন, তাতে করে কিন্তু মন থেকে চিন্তা "দূর" করার কোন  ব্যাপার নেই,  মনকে "চিন্তাশূণ্য" করার কোন প্রয়োজন নেই। ক্রমাগত যদি চিন্তা ভাবনাগুলোকে চিহ্নিত করে তাদের উদয় এবং অস্ত যাওয়া লক্ষ করতে থাকেন , তাহলে একটা ব্যাপার অচিরে বুঝতে পারবেন।  প্রতিবার এই যে চিন্তাভাবনাগুলোকে চিহ্নিত করতে থাকবেন, এরা একবার করে উদিত হবে, তারপর আবার মিলিয়ে যাবে। ধ্যানের বিভিন্ন ঘরানায় (বিশেষত বিভিন্ন ধর্মে), এর একটা উপমা দেওয়া হয়, এ যেন অনেকটা নীল আকাশে সাদা মেঘের আনাগোনার মতন ব্যাপার। রবীন্দ্রনাথের পূজা ও প্রার্থনা পর্যায়ের "মাঝে মাঝে তবে দেখা পাই" গানের কথা স্মরণ করলে দেখবেন কবি লিখেছিলেন, "কেন মেঘ আসে হৃদয়-আকাশে তোমারে দেখিতে দেয় না", এও তাই । আপনার হৃদয় একটি আকাশের মতন, সেখানে নানান চিন্তা ভাবনা মেঘের মতন আসে, কিছু সময় যেন ভেসে বেড়ায়, তারপর মিলিয়ে যায় । আপনার মন আকাশ, আর চিন্তা ভাবনা, ধারণাসমূহ মেঘের মতন ভেসে বেড়ায় ।  উপনিষদেও "চিদাকাশ" কথাটির ঐরকম একটি  ধারণা পাওয়া যায় । এই রকম করে, আপনি যতক্ষণ অবধি  ধ্যান করবেন, আপনার মনে একেকবার একেকটি চিন্তা আসতে থাকবে, আপনি তাদের চিহ্নিত করবেন, তারপর আবার ধীরে ধীরে শ্বাসপ্রশ্বাসের দিকে মন নিবদ্ধ করতে থাকবেন । কালক্রমে ক্রমশ এলোমেলো চিন্তা ভাবনার মনে আসা যাওয়া কমে আসবে, মন পুরোপুরি শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রতি নিবদ্ধ হবে। আমি যেভাবে লিখলাম, কথাটা লেখা সহজ, কিন্তু বাস্তবে ব্যাপারটি অমন সহজ নয় । বেশ কয়েকদিন নিয়ম করে ধ্যান করতে থাকলে তখন দেখবেন এই ব্যাপারটি হয়তো কিছুটা সম্ভব হবে, তবে সে হতে দীর্ঘ সময় ধরে আপনাকে প্রায় প্রতিদিন কিছুটা সময় ধ্যানে ব্যয় করতে হবে ।

    তার পর লক্ষ  করবেন, মন হয়তো কিছুক্ষন এর জন্য শ্বাসপ্রশ্বাসে নিবেশিত হয়েছে । তারপর, শরীরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানান রকমের ব্যাথা বেদনা  সংবেদনা এসে উপস্থিত হবে। আপনি এই অবস্থায় ধ্যান করার অভ্যাসে রণে ভঙ্গ দিতে পারেন, আবার  নাও পারেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে হয়তো ক্ষণকালের জন্যে আপনার  মনকে শরীরের থেকে "আলাদা" করে নিয়ে ভাবতে শেখাতে হবে যে, এই সাময়িক শারীরিক সংবেদনা নেহাতই শারীরিক ব্যাপার, একে আপাতভাবে শরীরের "হাতেই" ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে । তবে এখানে একটা কথা মনে রাখবেন  বলে সব রকমের শারীরিক সংবেদন উপেক্ষা করার বিষয় নয়, কোনটা করার আর কোনটা নয় ধরে নেওয়া যেতে পারে সে বোধ আপনার রয়েছে । বেশ কিছুক্ষন যদি এইভাবে স্থির থাকেন, তখন দেখবেন ঠিক যেমন প্রাথমিক উড়ো চিন্তাভাবনা গুলো প্রথমে জড়ো হয়ে তারপর ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেল (অবিশ্যি মিলিয়ে আর গেলো কোথায়, মনের গভীরে কোথাও সে রয়ে গেলো, শুধু আপনাকে আপনার ধ্যান থেকে সরিয়ে দিতে পারল না), এই শারীরিক ব্যাপারগুলো সেইরকম, উদিত হবে, কিছুক্ষন জ্বালাতন করবে, তারপর অস্তমিত হবে। তারপর আবার যখন আপনার শ্বাসপ্রশ্বাসের দিকে মনোনিবেশ করেছেন, তখন আবার অন্য রকমের কিছু মানসিক চিন্তা ভাবনার উদয় এবং অস্ত হতে থাকবে। এরকম চলতেই থাকবে। ব্যাপারটি অনেকটা এইরকম,
     

     
    এখন, এই যে ধরুন মনের মধ্যে একেকটি ভাব চক্রাকারে চলতে থাকছে এবং একে যদি আপনি নিয়ম করে প্রতিনিয়ত ধ্যান করে যেতে থাকেন, বিশেষ করে এই যে নানান রকমের ভাব উদিত হচ্ছে, তা থেকে আপনি নিজেকে সরিয়ে রাখতে সক্ষম হন, কোনো রকম আলাদা করে ভালো মন্দর বিচারবোধ দিয়ে তাকে না দেখেন, এই ব্যাপারটিই  মনোনিবেশিত ধ্যান যাকে ইংরেজি পরিভাষায় mindfulness meditation বলা হয় । একে যদি  আপনি মাস দুয়েক নিয়ম করে চালিয়ে যেতে সক্ষম হন, আপনি  "নিজের মধ্যে" দুটি ব্যাপার লক্ষ  করবেন :
     এক, আপনার শারীরিক, মানসিক বা চেতনায় যে সমস্ত সংবেদন আসবে, তার কোনটির প্রতি কতটা মনোসংযোগ করবেন, আপনি স্বয়ং তার নিয়ন্ত্রক, অর্থাৎ, ক্রমাগত আস্তে থাকা অনুভূতি গুলো আপনাকে আপনার একাগ্রতা থেকে সরাতে সক্ষম হবে না ।
    দুই, এই যে আপনার বিভিন্ন রকমের অনুভূতি, সে যা হোক, ব্যাথা,  বেদনা,মানসিক উদ্বেগ, বিষন্নতা, প্রতিটির প্রতি আপনার এক ধরণের ঔৎসুক্য বলুন, কৌতূহল বলুন, এমন একটা সম্পর্ক স্থাপিত হবে, যেন আপনি আর তারা আলাদা, আপনি ও আপনার অনুভূতি, আপনার মন এক নয়, ব্যাপারটির  উপলব্ধি হবে  । বিশেষ করে, যত দিন যাবে, তত ক্রমশ নিজের মধ্যে নজর করবেন মনের মধ্যে এক ধরণের পরিবর্তন আসছে  যে আপনি যা ছিলেন, তার তুলনায় আরো অনেক নিস্পৃহ ও শান্ত হয়ে পড়ছেন । আপনাকে বাইরে থেকে দেখলে হয়তো কেউ বুঝতে পারবে না, সে পরিবর্তন অন্তরের পরিবর্তন । আপনার উদ্বেগ, রাগ, একই  কথার চর্বিতচর্বন, এই ধরণের চিন্তা ভাবনা গুলো ক্রমশ কমতে থাকবে  ।  সে ধরণের পরিবর্তন হয়তো আপনি নিয়মিত ধ্যান না করলে হত  না, আর আপনি যদি ধরুন কয়েক সপ্তাহ ধ্যান করা বন্ধ করে দেন, আপনি আবার আপনার পুরোনো অবস্থায় ফিরে যাবেন ।  এই ব্যাপার গুলো থেকে মনে হতে পারে আপনার অন্তরের যে পরিবর্তন তাতে ধ্যানের একটা প্রভাব রয়েছে ।
     
    স্নায়ুবিজ্ঞানের কথাটা আসছে  কেন?
     
    এই  ব্যাপারগুলো যেহেতু সাধারণ মানুষের মধ্যে লক্ষ করা যায়, স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন ওঠে যে কি কারণে এমন হচ্ছে? তাহলে কি ধ্যান ব্যাপারটি কোন ভাবে আমাদের চেতনায় একটা পরিবর্তন আনছে? তাই যদি হয়, তাহলে তাকে কিভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে? যেহেতু মস্তিষ্ক এবং চেতনার কথা উঠছে, তাই স্নায়ু এবং সেই সূত্রে স্নায়ুবিজ্ঞানের বিষয়টিও আসছে । সেই সূত্রে যে প্রশ্নগুলো অবধারিত ভাবে আসবে, ধ্যান যদি/হয়ত "কাজ" করে, কিন্ত তার কারণ কি? এখন, চিকিৎসাবিজ্ঞানে এমন অনেকবার হয়েছে যে প্রামাণ্য তথ্য মিলেছে, কিন্তু তার মূল কারণ কি জানতে বহু সময় পেরিয়েছে । হাতের কাছে চটজলদি  উদাহরণ  ১৮৫৪ সালে ব্রিটিশ চিকিৎসক জন স্নো সাহেবের লন্ডনে  কলেরা মহামারীর প্রতিকার । যখন তিনি প্রতিকার করেছিলেন, তখন কলেরার জীবাণু কি তাই নিয়ে স্পষ্ট ধারণা ছিল না,  কলেরার জীবাণু  আবিষ্কার করবেন  ১৮৮৩ তে রবার্ট কখ (তার সঙ্গে অবশ্য কলকাতার একটি যোগাযোগ আছে, এখানে সে সব আলোচনার অবকাশ নেই) । এইরকম আরেকটি আবিষ্কার, অষ্টাদশ শতাব্দীতে, ১৭৪৭ সালে ব্রিটিশ চিকিৎসক জেমস লিন্ড স্কার্ভি অসুখের চিকিৎসা করার জন্য এর নাবিকদের লেবু খাবার পরামর্শ দেওয়া ১৯৩৩ সালে চার্লস কিং এর  ভিটামিন সি  আবিষ্কার করবেন । অতএব চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাস ঘাঁটলে  এমন অনেক উদাহরণ পাওয়া যাবে যেখানে ডাক্তাররা কিছু একটা লক্ষ করছেন, রোগীদের পরামর্শ দিচ্ছেন, পুরো ছবিটা তৎক্ষণাৎ  জানা যায় না, পরে জানা যাবে ।  এই ধরণের ব্যাপারগুলো কেন্দ্র করে আজকের দিনের  evidence based medicine গড়ে উঠেছে, কাজেই আজকে ধ্যান কেন কাজ করে, তার একেবারে ঠিক মূল্যায়ন যদি আমরা নাও জানি, কাল যে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে না, কেউ বলতে পারেন না ।  সে সব পরের কথা, আপাতত যে বিষয়টি নিয়ে শুরু করেছিলাম,তার উত্তর খোঁজা যাক,যে, এই যে মনোনিবেশিত ধ্যান  (mindfulness meditation ) এর কথা আলোচনা করা হচ্ছে, এর সঙ্গে মনোবিজ্ঞান,  সাইকিয়াট্রি, চিকিৎসা, এমনকি স্নায়ুবিজ্ঞান কে জড়ানোর কারণটি কি? এই ধরণের ব্যাপারগুলো কারা শুরু করেছিলেন এবং কোথা  থেকে শুরু হয়েছিল? 
     
    অন্তত বাংলায় বা বাঙালির পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রশ্নগুলো অবান্তর নয় । কারণ ধ্যান ব্যাপারটা আমরা যতদূর বেশির ভাগ সাধারণ মানুষ বুঝি তাতে সাধু বা ধরুন, সাধু সন্তদের ভেক ধরে  যারা ধর্মের বা ধর্মের "ব্যবসার" সঙ্গে জড়িত, এই সমস্ত লোকজন লোক দেখানো ধ্যান ইত্যাদি করে থাকেন । দুঃখের বিষয়, এদের সবাই যে সৎ , এমন বলা যাবে না, অনেকেই নানারকম অলৌকিক ব্যাপার স্যাপার নিয়ে মানুষকে হতচকিত করে ঠকিয়ে দেবার চেষ্টা করেন, শুধু তাই নয়, যুক্তির বদলে, তর্কের বদলে, এরা  চান মানুষ এদের বিশ্বাস করুন, যার জন্য এমনিতেই যুক্তিবাদী লোক এদের ব্যাপারে বিরক্ত , বিশ্বাস করার প্রশ্নই ওঠে না । আরো একটা ব্যাপার রয়েছে । মনে করুন  যদি ধ্যান ব্যাপারটায় মানুষের সত্যি সত্যি মানসিক পরিবর্তন হয়ও, যারা ধর্মের ব্যবসায়ী, তারা ব্যাপারটাকে "ধর্মীয় কীর্তি"  বলে চালিয়ে দেবেন, সে পরিবর্তনের পশ্চাৎপটে নিয়মিত  ধ্যান করার একটা "মনস্তাত্বিক" ব্যাপার আছে, সেই প্রসেস  বা সেই প্রচেষ্টাকে সেভাবে এরা গুরুত্ব দেবেন না । এই সমস্ত নানান কারণে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, যে হঠাৎ মনোবিদ, স্নায়ু বৈজ্ঞানিক, ডাক্তার, যারা পেশাগত ভাবে বিজ্ঞান চর্চা করেন, এরা  এইসব নিয়ে কেন মাথা ঘামাচ্ছেন । তো এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে দেখতে দুটি ভিন্ন বিষয়ে লিখতে হয়, দুটিই এই ধরণের ধ্যানের সঙ্গে সম্পৃক্ত । স্নায়ুবিজ্ঞানের সূত্রে ধ্যানের তাৎপর্য নিয়ে লেখার আগে ধ্যান ও স্নায়ুগত আরো দুয়েকটা ব্যাপার দেখা যাক:  (১) একটা ধ্যান এবং Flow (জানিনা, বাংলায় ইংরেজির ফ্লো  কথাটিকে হয়তো প্রবাহ বলা যেতে পারে), (২) ধ্যান এবং আধুনিক মনোবিজ্ঞানে ও চিকিৎসায় তার তাৎপর্য ।
     
    (এর পরের পর্বে বাকিটা, চলবে  )
     
     
     
    ---
    তথ্যপঞ্জী 
    ১) Keng SL, Smoski MJ, Robins CJ. Effects of mindfulness on psychological health: a review of empirical studies. Clin Psychol Rev. 2011 Aug;31(6):1041-56. doi: 10.1016/j.cpr.2011.04.006. Epub 2011 May 13. PMID: 21802619; PMCID: PMC3679190
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    | |
  • প্রবন্ধ | ১২ জুন ২০২৪ | ৬৫০৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • &/ | 107.77.***.*** | ১৩ জুন ২০২৪ ০৭:২৭533093
  • তারপর ?
  • অরিন | ১৩ জুন ২০২৪ ০৭:৩২533094
  • আসছে। আজকে আপিসে বসে খানিকটা লিখতে শুরু করেছি অমনি হাজারটা কাজ আর মিটিং এর চক্করে পড়ে লেখাটার বারোটা বেজে গেল!
  • অরিন | 2404:4404:1732:e000:c53a:843f:7f92:***:*** | ১৩ জুন ২০২৪ ১১:৫৯533108
  • যে কোন মানুষেরই মতামত পেশ করার স্বাধীনতা আছে, এবং সেই সব লেখা অন্যকে পড়ানোর ও স্বাধীনতা রয়েছে । দেখা যাক, বৈজ্ঞানিক গবেষণায় কি কি পাওয়া যাচ্ছে । 
  • kk | 172.58.***.*** | ১৩ জুন ২০২৪ ২০:১৬533125
  • আমি একটা জাফু পেতে বসলাম। যতই সময় লাগুক, প্লিজ এই লেখাটা কন্টিনিউ করুন। ধৈর্য্য ধরে থাকবো।
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ১৩ জুন ২০২৪ ২০:৫৭533126
  • এই লেখাটা খুব ইন্টারেস্টিং হতে চলেছে, আমিও একটা চাটাই পেতে বসলাম। আপনি সময় পেলে আবার কন্টিনিউ করুন প্লিজ।
  • &/ | 151.14.***.*** | ১৩ জুন ২০২৪ ২২:৩৭533127
  • আমি একটা পরিব্রাজকের কম্বল পেতে বসলাম। এই কম্বলে এত শক্ত রোঁয়া থাকে যে পিঁপড়ে উঠতে পারে না। ঃ-)
  • @এটা পড়ুন | 165.225.***.*** | ১৩ জুন ২০২৪ ২৩:০৭533129
  • খুব ভাল লেখা, কমেন্ট পর্যন্ত পড়ুন। লেখাটা পুরো না পড়লেও ক্ষতি নেই, কমেন্ট অবশ্যই পড়বেন। 
  • অরিন | ১৪ জুন ২০২৪ ০০:৪২533131
  • কেকে, রমিত, অ্যাণ্ডর, আপনাদের উৎসাহ পেয়ে ভারি খুশী হলাম। এটাকে কাজের ফাঁকে ফাঁকে লিখতে হবে বলে একটু স্লো হবে।
    @@এটাপড়ুন, চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম ব্লগে ভদ্রলোক যা লিখেছেন, তার অনেক বিষয়ের সঙ্গে আমিও একমত, সেসব এই লেখাটা পড়লেও দেখতে পাবেন। বস্তুত, ধ্যান ব্যাপারটা নিয়ে নানান রকমের গোলমেলে আইডিয়া আছে, :-), সেইগুলো একটু দেখে নেওয়া, আলোচনা, এইসবের জন্য লেখা এটা।
  • reader | 178.218.***.*** | ১৪ জুন ২০২৪ ০০:৫৩533132
  • যুক্তিবাদী সমিতির দেবাশিস ভট্চাজ দেক্লুম ও লেখায় কমেন মেরেচেন-
    "দারুণ লেখা, অশোকদা । এবং অসম্ভব জরুরি । শুধু বৈজ্ঞানিকভাবে নয়, রাজনৈতিকভাবেও । রাজনীতি-শিক্ষা-প্রশাসন-বিচারব্যবস্থা এইসবের ধর্মীয়করণ এবং ডি-সেক্যুলারাইজেশন এখন এক বিপজ্জনক রাজনৈতিক প্রোজেক্ট, এবং চিকিৎসার ধর্মীয়করণও তারই অঙ্গমাত্র । 'আরোগ্যসেতু' থেকে শুরু করে 'ইয়োগা' এবং 'মেডিটেশন' সে সবের একেকটি হাতিয়ার । ধর্মীয় ঘৃণা ও হিংস্রতার রাজনীতি কেন খারাপ সে তবু সহজে বোঝানো যায়, কিন্তু এইসব 'টেকনিক্যাল' ব্যাপারের মধ্যে কি চলছে সে আর কেউ সেভাবে টের পায় না । কাজেই, এগুলোর বিরুদ্ধে কণ্ঠস্বর এই মুহূর্তে অপরিহার্য । তবে, দু-তিনটি তথ্য যাচাই করে নেবার আবেদন রইল । প্রথমত, মানব মস্তিষ্কের কোষের সংখ্যা, আমি যতদূর জানি, এক হাজার নয়, সাড়ে তিন হাজার কোটি । দ্বিতীয়ত, মানুষের মস্তিষ্কের ছয় শতাংশমাত্র ব্যবহার হয়, এটাও বোধহয় ঠিক না । আমার ধারণা, মস্তিষ্কের কোনও অংশই অপ্রয়োজনীয় নয়, সবটুকুই ভীষণ জরুরি এবং সক্রিয় (প্রতিমুহূর্তে বা একসাথে নয়, যদিও) । শুনেছি বটে, এ রকম একটি গুজব বাজারে আছে । যদি এটি গুজবই হয়, তো এখানে তা পরিত্যজ্য । পরিশেষে, মস্তিষ্ক-চিত্রণের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র 'এফ এম আর আই', গুরুতর স্নায়ুরোগীদের ক্ষেত্রে প্রায়শই যার ব্যবহার হয়ে থাকে, তার পুরো কথাটা বোধহয় 'ফেরোম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং' নয়, 'ফাংশনাল ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং' ।"
     
    ইদিকে গুরুতে অরিনবাবু এইসব ছাইপাঁশ লিখছেন। অরিনবাবু ত কভিদ বিশেষজ্ঞ জান্তুম, তেনার কি নিউরোসায়েন্স বিষয়েও জ্ঞান আছে? নাকি বৈষ্ণব সাহিত্যে এমফিল কলিম খানের ভক্ত কেস?
  • অরিন | ১৪ জুন ২০২৪ ০১:০৮533133
  • মশাই @reader , কমেন্ট করার কষ্ট যখন করেছেন, নাহয় একটু ধৈর্য ধরে বাকী লেখাটুকু পড়ুন ই না। তারপর না হয় অরিন নিউরো না কোভিড (কোভিড বিশেষজ্ঞ বলে কিছু হয় না যদিও), দেখা যাবে'খন।
  • অরিন | ১৫ জুন ২০২৪ ০২:১৩533179
  • লেখাটিতে গুগল ইনপুট টুল ব্যবহারের কারণে অজস্র বানান ভুল হচ্ছে। লেখাটি সমাপ্ত হবার পর বানান সংশোধন করব। আপাতত অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য পাঠকের কাছে ক্ষমা চাইছি।
  • Debasis Bhattacharya | ১৫ জুন ২০২৪ ১৩:৪৫533191
  • আরে, সবেতেই তো মস্তিষ্কের কোনও না কোনও অংশ প্রভাবিত হয়। 'তুই শালা একটা রামগাধা' গোছের কিছু বললে বোধহয় একটু বেশি বেশি হয়। 
     
    কিন্তু, তাতে জগতের কোন উপকারটা হয়, প্রশ্ন তো সেটাই! 
  • Ayantika | 2402:3a80:43a1:b44b:0:45:900d:***:*** | ১৫ জুন ২০২৪ ১৪:০৬533192
  • পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
  • যুক্তিবাদীদের বোধদয় হোক | 103.249.***.*** | ১৫ জুন ২০২৪ ১৪:৫৭533196
  • @মাননীয় দেবাশিসবাবু 
    যুক্তিবাদী আন্দোলন করেন খুব ভাল কথা ,কিন্তু ভারতীয় কোন কিছু দেখলেই আপনাদের জ্বালা ধরে কেন বলুন তো? ধ্যান নিয়ে এত বিবমিষা কেন? ধ্যান ভারতীয় বলে , তাই তো? অথচ পরীক্ষা ছাড়া বাজারে ছাড়া ভ্যাকসিনের সমর্থনে তো দেদার গলা ফাটিয়ে গেলেন। স্রেফ ওটা বিদেশি আর এটা দেশি ,এটাই যুক্তি ,তাই তো? ব্রিটিশরা চলে গিয়েছে ,দেশটা স্বাধীন হয়ে গিয়েছে ৭৫ বছর হয়ে গেল ,কলোনিয়াল হ্যাং ওভার কবে কাটবে আপনাদের? কবে আপনারা পশ্চিমী চশমা খুলে দেশি চশমায় জগতকে দেখতে শিখবেন? 
  • অরিন | ১৫ জুন ২০২৪ ১৫:২৬533197
  • "কিন্তু, তাতে জগতের কোন উপকারটা হয়, প্রশ্ন তো সেটাই! "
     
    জগতের কোন উপকারটা হয় মানে কি বলতে চাইছেন বুঝলাম না । 
     
    ধ্যানের ব্যবহারিক প্রয়োগ হয় কি না জানতে চাইছেন? 
    তাহলে, বলতে হয়, 
     
    1982 সন থেকে আজ অবধি মেডিসিন, পাবলিক হেলথ,  মনোবিজ্ঞানে, সাইকিয়াট্রিতে , palliative care, হস্পাইস,  তাছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে,   অফিস কাছারিতে, কারখানায়, হাসপাতালে,  মানুষের কাজের প্রোডাক্টিভিটি বাড়াতে, অফিসে কাজ জনিত অবসাদ  কমাতে, ধ্যানের, বিশেষ করে  প্রচুর ব্যবহারিক প্রয়োগ রয়েছে । ডাক্তারির একটা গোটা স্পেশালাইজেশান গড়ে উঠছে, এমনকি উচ্চশিক্ষাতেও  ।
     
    তাছাড়াও নীচে কয়েকটি লেখা, প্রবন্ধের সন্ধান রইল: 
     
    https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S1550830723002604 ("Contemplative Medicine training is a viable approach for improving clinician burnout and concretely implementing the “Well-being 2.0” framework.")
     
    "By creating a state of greater harmony and balance within one’s body, contemplative practices can mitigate maladaptive biological (e.g., elevated blood pressure) and behavioral (e.g., substance abuse) responses, and select medical conditions (e.g., depression). Contemplative practices can also foster an opportunity to raise one’s awareness about stressful, underlying issues [30,31]. Contemplative practices have been particularly useful in the treatment of post-traumatic stress disorder [9], in cardiovascular risk reduction [5,32,33], reducing health care provider burnout by increasing self-compassion [34], and possibly prolonging longevity [35,36]."
    ( Contemplative Practices: A Strategy to Improve Health and Reduce Disparities, https://doi.org/10.3390%2Fijerph15102253 )
     
    "
    Interest in contemplative medicine may be rising in the palliative and end-of-life care communities as more practitioners realize the potential benefits for clinicians and patients.
    The concept of contemplative medicine is rooted in the use of mindfulness, meditation and other practices designed to reduce clinician stress and help them embrace care for the whole patient — mind, body and spirit —which is also an integral aspect of palliative care.
    To advance this approach, two Buddhist monks have developed an evidence-based contemplative medicine fellowship for clinicians through the New York Zen Center for Contemplative Care. The monks — Koshin Paley Ellison and Chodo Robert Campbell — have spent years working as health care chaplains and educators in medical schools around the world."
     
    "Contemplative Pedagogy is an approach to teaching and learning with the goal of encouraging deep learning through focused attention, reflection, and heightened awareness. Learners are encouraged to engage deeply with course material through contemplation and introspection (examining their thoughts and feelings as related to the classroom content and their learning experiences). In their foundational text Contemplative Practices in Higher Education, Barbezat and Bush note that as students “find more of themselves in their courses,”1 they will make meaningful and lasting connections to their learning.
    Regardless of discipline and educational context, contemplative techniques can complement more traditional classroom activities to transform the way students come to learn about and understand the world. Many of the activities that instructors already use in the classroom–writing, close reading, reflection–may be intentionally (re)designed to draw more on contemplative practices and principles."
     
     
    লেখা আর উদাহরণ দিয়ে তো এই অল্প পরিসরে  শেষ করা যাবে না, ধ্যান দিয়ে "জগতের উপকার" নিয়ে যদি আপনার সত্যি আগ্রহ থাকে । 
    না কি অন্য কিছু প্রশ্ন বা কমেন্ট ছিল? 
     
     
     
  • প্রত্যয় ভুক্ত | ১৫ জুন ২০২৪ ১৬:৪৮533199
  • এই লেখাটাও পড়লাম, এর কমেন্টগুলোও আর চার্নং এর লেখা আর কমেন্টগুলোও- চার্নং এর লেখাটার তলায় আর লিখলাম না, এখানেই লিখে যাই- চার্নং এর লেখাতে লেখকমহাশয় একটু গুলিয়েছেন গোড়াতেই, মোদী, ইয়োগা নিয়ে ম্যুরিকানদের হুজুগেপনা (যেমন আরো অনেক কিছু নিয়েই), বিজেপির বা দক্ষিণপন্থার, কর্পোরেট এর 'vested interest, ষড়যন্ত্র' নিয়ে তত্ত্ব, বুদ্ধ-মহাবীরের মতো ঐতিহাসিক চরিত্রদের 'অস্তিত্ব' নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ, কে ধ্যান করেছেন আর কে করেননি আর কেমন সাফল্য পেয়েছেন লিস্টি বানানো, নেহরু-গান্ধী-প্যাটেল-ইন্দিরা কে একধারসে খোঁচা মারা- এইসব করে "আণ্ডীব অন্ডফ্রয়েণ" করার পর সিদ্ধান্তে এসেছেন ধ্যান মনকে বিকল করার শিকল। তার বিপ্রতীপে, এই লেখাটা সূচনায় অন্তত এইটুকু আশা জাগিয়েছে যে বৈজ্ঞানিক নিরীক্ষণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ-বর্জনের পদ্ধতিতে ধ্যান ও মস্তিষ্কের বা স্নায়ুতন্ত্রের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াগুলির কোনো সম্বন্ধ আছে কি না আদৌ, থাকলে তা ক্ষতিকর না উপকারী মানুষের পক্ষে, তার সম্বন্ধে একটা সংক্ষিপ্ত চিত্তাকর্ষক রূপরেখা আমরা পেতে পারি এখানে, যথেষ্ট ধৈর্য ধরে রাখলে। সুতরাং, হে তন্নিষ্ঠ পাঠক, রাই ধৈর্যং রহু ধৈর্যং। 
    আমার ব্যাক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতায় বা অন্যদের অভিজ্ঞতা জানার পর (এর মধ্যে কেকের খুব সম্ভবত, ঐ ঘোড়সওয়ারের উল্লেখ ওলা ধ্যানের অভিজ্ঞতার দলিলটিও আছে) মনে হয়েছে, ধ্যান বিভিন্ন রকমের ও ভিন্ন ভিন্ন উদ্দেশ্য সাধনের কাজে ব্যবহৃত হতে পারে প্রাত্যাহিক জীবনে বা সামাজিক জীবনতরঙ্গের বাইরে ও। আমার নিজের জীবনে ধ্যান সাহায্য করে চিন্তার গৃহিণীপণায়, অর্থাৎ মনে ভেসে ওঠা যেকোনো একটি চিন্তাকে, কোনো বিশেষ প্রশ্নের উত্তরকে ধাপে ধাপে সাজানোয় বা কোনো ধাপে আটকালে তা নিয়ে ব্যতিব্যস্ত না হয়ে শান্তভাবে উত্তর অন্বেষণ করায়। এছাড়া অনুভূতির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, আলাদা আলাদাভাবে প্রতিটি অনুভূতিকে শনাক্ত করা ও তাদের একটা মানসিক নিবন্ধীকরণে। আমাদের মন যেন একটা স্লেট বা কাগজ যার ওপর অনেক কিছু লেখা হচ্ছে নিয়ত, অনেক কালির দাগ লাগছে, অনেক লেখা বিকৃত হচ্ছে বা অনাবশ্যক ঘন হয়ে ঊঠছে, ধ্যান যেন সেই পাতাটা উল্টে নতুন পরিচ্ছন্ন পাতায় আসতে ও ভাবনাগুলিকে লিপিবদ্ধ করতে বা অনুভূতির ও চিন্তাপ্রবাহের বন্যাকে লকগেট বসিয়ে নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। নিজস্ব অনুভব ও চিত্তবৃত্তিগুলিকে সুনির্দিষ্ট শনাক্তকরণ, রূপদান ও ক্রমান্বয়ে সাজাতে অনেক সহায়তা হয় ধ্যানের অভ্যাসে।
  • :) | 2405:8100:8000:5ca1::1b:***:*** | ১৫ জুন ২০২৪ ১৭:১২533201
  • যুক্তিবাদী হ্যাজগুলোতেই বা জগতের কোন উপকার হয়? হ্যাঁ, খোরাক হয়, লোককে হাসানো হয় সেটা মেনে নিচ্ছি।
    রামগাধা ধোপার কাজে লাগলেও বামগাধা কার কাজে লাগে মশাই?
  • Debasis Bhattacharya | ১৫ জুন ২০২৪ ১৭:৪০533202
  • মাননীয় কী-একটা-যেন,
     
    মিথ্যে আর প্রতারণা দেখলে বাস্তবিকই আমার জ্বালা ধরে, সেটা ভারতীয় হোক বা বিদেশি। মাথায় লোহার ডান্ডা দিয়ে মারলে মাথা ফেটে যায়, সেটা ভারতীয় হোক বা বিদেশি, জানেন্তো? এও সেইর'ম ক্যাইস!
     
    বলা বাহুল্য, দেশের নাম করে বুজরুকি দেখলে একটু বেশি গা জ্বালা করে, দেশটাকে ভালবাসি বলেই। তবে, এক বুজরুকি তো আর বেশিদিন চলে না। দেশভক্তির নাম করে লোক ঠকানোর দিন বোধহয় শেষ হয়ে আসছে। এবার নতুন টেকনিক ধরুন। আর, সেটা করতে গেলে পড়াশোনার অভ্যেস বাড়াতে হবে। 
     
    যেমন ধরুন, ধ্যান ব্যাপারটা নিছক 'ভারতীয়' নয়, সেটা আলোচ্য প্রবন্ধেও পরিষ্কার করে লেখা হয়েছে, কিন্তুক পড়েন্নিকো। 
     
    তাপ্পর ধরুন, ভ্যাকসিন নিয়ে বিস্তর পরীক্ষা হয়েছে, এবং নেট থেকে বিনে পয়সায় সে সব নিয়ে পড়াশুনো করা যায়, কিন্তুক পড়েন্নিকো। 
     
    তাপ্পর ধরুন, এই যে মোবাইল আর কম্পিউটার দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে ঢুকে কুটুস কুটুস করতে ভালবাসেন, সেটা কিন্তু পুরো বিদেশি, কিন্তুক জানেন্নাকো। 
     
    এবং, বোল্লে বিশ্বেস কোর্বেন্নাকো, ধ্যান দিয়ে শারীরিক এবং মানসিক 'ফিটনেস' বজায় রাখার এই যে বাণিজ্যিক গল্প, এটাও বিদেশি। 
     
    সেইজন্যে বলি, বুজরুকির নোতুন্নোতুন টেকনিক বার কোরুন, পুরোনো কাসুন্দি ঘাঁটবেন্নাকো। 
  • Debasis Bhattacharya | ১৫ জুন ২০২৪ ১৭:৫০533203
  • কাম সার্সে, 'রামগাধা' বলায় কে এক চাড্ডি আবার খেপে গেরুয়া থেকে লাল হোয়ে গ্যালো! এ তো মোহা সমোস্সা‌ দেকচি! 
  • cognition | 93.125.***.*** | ১৫ জুন ২০২৪ ১৭:৫১533204
  • অনেক রেফারেন্স দিয়ে দেওয়ার বিশেষ মানে নেই যদি না একটি লিটারেচার রিভিউ পাওয়া যায়। সাইকোলজির ধোঁয়াটে দিকগুলো নিয়ে ত অনেক কাজই হয়েছে বা হয়। টেলিপ্যাথি ইত্যাদি। কিন্তু মূল প্রশ্নটা যদি লিখি - মেডিটেশনের পিছনে কি কোনো বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব আছে? তার এককথায় উত্তর - নেই। কেন নেই তা একটু বিশদে ব্যাখ্যা করা যাক। 
     
    ধরুন এই যে এ লেখায় শুরু থেকেই নিউরোসায়েন্স এসে পড়েছে, এর কারণ কিন্তু শুধু ব্যাপারটা ব্রেনের বলেই। এফএমরাই এর ছবিও এসে পড়েছে। কিন্তু এফএমরাই থেকে কি জানা যায়? কিস্যু না। ও যন্তর স্রেফ মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশে রক্তচলাচল মেপে কোন কোন জায়গা বেশি একটিভ তার 'এক্সরে' তোলে। তা থেকে কি মস্তিষ্কের কার্যকলাপ আন্দাজ করা যায়? একটি সুপার কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারে কোন কোন অংশ একটিভ তা দেখে আপনি কম্পিউটারটি কি সফটওয়ার রান করছে বলতে পারবেন? এবার কল্পনা করুন ওই সুপার কম্পিউটারের চেয়ে ঢের বেশি জটিল মানুষের ব্রেন। তাহলেই বুঝতে পারবেন ব্যাপারটি কত হাস্যকর।
     
    তাহলে কিং কর্তব্য? এইখানে আসে কগনিটিভ সায়েন্স। নিউরো সায়েন্স মস্তিষ্ককে বোঝার একটি টপ ডাউন এপ্রোচ। অন্যদিকে,  কগনিটিভ সায়েন্স হল বটম আপ এপ্রোচ। কগনিটিভ সায়েন্স ব্রেনকে একটি কম্পিউটার হিসেবে ধরে মানুষের বোধের বিভিন্ন দিকগুলিকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা। এইখানে একটা ডিস্ক্লেমার দিয়ে রাখা যাক যে যতবার আমরা কম্পিউটার বলব ততবার আপনি কিন্তু পড়বেন টুরিং মেশিন। অর্থাৎ কম্পিউটার সায়েন্সের লোক কম্পিউটার বলতে যা বোঝে।
     
    ঠিক আছে। কগনিটিভ সায়েন্স না হয় হল, কিন্তু মেডিটেশনের বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব কি করে পাব? আপাতত মেডিটেশন ছেড়ে দিন। আসুন একটা সহজ জিনিস ধরি। ভিশন অর্থাৎ দৃষ্টি। একজন বিখ্যাত ব্রিটিশ-আমেরিকান কগনিটিভ সায়েন্সটিস্ট ছিলেন ডেভিড মার্। উনার বিখ্যাত বই ভিশনে উনি বলেছিলেন মস্তিষ্কের এনালিসিস বিভিন্ন স্তরে করা যেতে পারে। মারের এনালিসিসের তিনটি স্তর - ইম্প্লিমেনটেশনাল,  এলগোরিদিমিক এবং কম্পিউটেশনাল। 
     
    Marr, D. (1982), Vision: A Computational Approach, San Francisco, Freeman & Co.
    A summary: https://cocosci.princeton.edu/papers/krafftCogsci.pdf
     
    কম্পিউটেশনাল এনালিসিসের লক্ষ্য ব্রেন কিভাবে বাস্তব জগতের বস্তুসমূহের স্মৃতি জমা রাখে তা নিরুপন করা। এইখানে একটি রোডব্লক হচ্ছে সিম্বল গ্রাউন্ডিং প্রব্লেম অর্থাৎ বাস্তব যে জগৎ, মাথার ভেতরে সেই জগতের রিপ্রেজেন্টেশন কিভাবে তৈরী করছি।
     
    এলগোরিদিমিক এনালিসিসের লক্ষ্য ব্রেন ঠিক কিভাবে দুয়ে দুয়ে চার করছে সেইটা বোঝা। এইখানে বিহেভরিয়ালিস্টরা অর্থাৎ এখন যারা এয়াই পন্ডিত তাঁরা বলবেন ওহে ব্রেন নানারকম অভিজ্ঞতা থেকে শিখেছে দুয়ে দুয়ে চার হয়। নোয়াম চোমস্কি (যিনি বিহেভরিয়ালিস্টদের আর্চ এনিমি হিসেবে খ্যাত) ও জেরি ফোডোর বলবেন ব্রেনের অধিকাংশটাই প্রোগ্রামড। ফোডোরের এই লেকচারটা শুনে দেখতে পারেন -
     
    এরপর আসে ইম্প্লিমেন্টেশনাল লেভেল অর্থাৎ কিনা কম্পিউটারে যেমন ট্রানজিস্টর তেমনি মস্তিষ্কে ব্রেনসেলগুলি কিভাবে এলগোরিদম ইমপ্লিমেন্ট করছে। এইখানে আমরা শুধু নিউরোনের কথা ভাবলে কিন্তু ভুল করব। নিউরোন, মনে রাখবেন, অনেক স্লো। সম্প্রতি র্যান্ডি গ্যালিস্টেল তাঁর মেমোরি এন্ড কম্পিউটেশনাল ব্রেন বইতে প্রস্তাব করেছেন যে ব্রেনের আসল কম্পিউটেশন ঘটছে কোষের ভেতর আর নিউরোন গুলি স্রেফ তারের কানেকশন।
     
    এইটুকু আমরা বুঝতে পারি মানুষের মস্তিষ্কের কার্যকলাপ সম্বন্ধে একটি বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব দেওয়া কত দুরূহ এবং নিউরোসায়েন্স এব্যাপারে এখনও বাল্যস্তরে রয়েছে। ফলে স্নায়ুবিজ্ঞানের আলোকে মেডিটেশনের ব্যাখ্যা নিয়ে প্রবন্ধ লেখার সময় এখনো আসেনি। আমরা মানব মস্তিষ্কের কার্যকলাপ প্রায় কিছুই জানিনা।
     
    আরেকটা ব্যাপার হল বৌদ্ধ ধর্মের ক্লেম টু ফেম আজকাল দেখি নিউরোসায়েন্সের আলোচনায় কন্ট্রিবিউশন। ব্যাপারটা ওই বেদ বা কোরানে আইনস্টাইনের তত্ত্ব খুঁজে পাওয়ার মত বলে মনে হয়। দলাই লামার ইন্টারভিউতেও দেখিছি উনি ঢাক পেটান নিউরোসায়েন্টিস্টরা উনার সংগে আলোচনা করতে আসেন বলে। হাস্যকর আর কি।
  • Debasis Bhattacharya | ১৫ জুন ২০২৪ ১৭:৫১533205
  • অরিনবাবু,
     
    আপনার মন্তব্যের উত্তর দিচ্ছি, কিন্তু তার আগে আপনার দেওয়া সোর্স-গুলো একটু দেখে নিই। 
  • Debasis Bhattacharya | ১৫ জুন ২০২৪ ১৭:৫৫533206
  • cognition,
     
    আপনার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। আশা করি, আপনার মন্তব্য থেকে অনেকে আঁচ পাবেন যে, মন ও মস্তিষ্কের সম্পর্ক নিয়ে সত্যিকারের বৈজ্ঞানিক চর্চা কোন পথে যাওয়া উচিত। 
  • ব্যাস | 103.5.***.*** | ১৫ জুন ২০২৪ ১৮:০০533207
  • খেউড়ে দেবু মাঠে নেবে পড়েচে! অরিনের টইয়ের বারোটা বাজল।
  • !! | 104.225.***.*** | ১৫ জুন ২০২৪ ১৮:১৮533208
  •  
    এই লোকটা? এ ত নিত্যানন্দ ১.০ মোশাই!
     
    Controversies
    Sexual misconduct
    While the Beatles were in Rishikesh, allegations of sexual improprieties by the Maharishi in his ashram were circulated.[1] John Lennon later cited a rumor that the Maharishi made sexual advances on Mia Farrow and "a few other women" during their time at the ashram,[278] later writing the Beatles' song "Sexy Sadie", in which John Lennon characterized the Maharishi as a fraud.[279] George Harrison and Cynthia Lennon later denied that the Farrow event took place and stayed within the TM movement,[280] while Farrow maintains that the Maharishi made sexual advances towards her during a private meditation session.[281]
    In the 2010 documentary David Wants to Fly, a former personal assistant and "skinboy" of the Maharishi recounts bringing women to the Maharishi's room, claiming he has "no question in my mind that he had sex with the women." In the same film, another assistant, Judith Bourque, details how the Maharishi had sex with her multiple times over the course of two years before moving on to other women, with instructions including "don't tell anyone" and, in the case of her becoming pregnant, to "get married quick".[282] Bourque later elaborated and substantiated her claims with evidence (including photos, notes, and dated letters from the Maharishi) in the autobiographical book Robes of Silk, Feet of Clay, including additional allegations that the Maharishi had at least sixteen other mistresses during her two years of traveling with him.[283][284]
    Pseudoscience
    Since early in the TM movement, the Maharishi made claims of pseudoscientific supernatural abilities (called "sidhis" or the TM-Sidhi program) that can be obtained through TM meditation, including levitation (yogic flying), invisibility, and invulnerability.[285] The "magical claims" of the TM-Sidhis program and the Maharishi Effect created a crisis for the movement’s image and began a period of media controversy.[286] In 2014, a meta-analysis of meditation research found "insufficient evidence that mantra meditation programs [such as TM] had an effect on any of the psychological stress and well-being outcomes".[287]
    Despite the Maharishi's claims that his movement was not a religion but "scientific", TM initiation since his time has begun with a Hindu puja worship ritual performed by the teacher[288][289] and his movement has received criticism from Hindus for selling "commercial mantras" of the Sanskrit names of Hindu-Vedic gods.[290] Sociologist William Sims Bainbridge writes that the Maharishi taught a "highly simplified form of Hinduism, adapted for Westerners who did not possess the cultural background to accept the full panoply of Hindu beliefs, symbols, and practices."[288]
    On top of criticism that TM is a "form of Hinduism that doesn't acknowledge its roots", a 1978 federal court ruling in New Jersey declared TM to be a religion.[291] Further allegations state that the Maharishi presented TM as areligious so that it could be taught in US public schools and other tax-funded institutions.[292]
    World government
    Since the 1970s, the Maharishi began planning a new world government based on his TM teachings,[286] including meetings with world leaders such as Canadian prime minister Pierre Trudeau to discuss his plans.[293][294][295] On Larry King Live, the Maharishi made anti-democratic statements and announced plans for a monarchic world government, including, "I believe in God. And I believe in the custody of God vested in kings" and "I want to establish a government in every country [...] I used to say 'damn the democracy' because it's not a stable government."[296]
    The Maharishi crowned key members of his movements as the "rajas" (kings) of his Global Country of World Peace, including Tony Nader as the "maharaja" (great king) and "First Sovereign Ruler of the Global Country of World Peace."[297] It has been reported that the "rajas" of the TM movement must pay $1 million to receive "spiritual dominion" over a country in accordance with "natural law".[298] In 1992, the Maharishi's Natural Law Party was listed on the presidential ballot in several states in the USA, with physicist and "raja" John Hagelin as the presidential nominee.[286]
     
     
  • aha | 2405:8100:8000:5ca1::1e:***:*** | ১৫ জুন ২০২৪ ১৮:২৩533209
  • দেবুজিকে অত হ্যাটা করবেন না। উনি কমেন্ট পিছু দু টাকা করে পান (রেট কি বাড়ল, দাদা?)। পাপী পেট কা সওয়াল।
  • Debasis Bhattacharya | ১৫ জুন ২০২৪ ১৮:৩০533210
  • সেই পাগোল্টা আবার বারবার নাম পালটে খেলা করতে এসেছে। যাকগে, পাগোল জেনে গেলে টেনশন কম। 
  • রেট | 2405:8100:8000:5ca1::1d:***:*** | ১৫ জুন ২০২৪ ১৮:৩৪533211
  • দুটাকাই? ডিএ নেই?
  • dc | 2401:4900:6349:662e:6dfd:c4ad:6dfc:***:*** | ১৫ জুন ২০২৪ ১৮:৪৭533212
  • দেবাশীষবাবু আপনার প্রবন্ধগুলো পড়তে বেশ ভালো লাগতো। মাঝখানে বেশ কিছুদিন লিখছেন না, সময় পেলে আবার লিখবেন। 
     
    কগনিশানের পোস্টটা ভালো লাগলো। 
  • Debasis Bhattacharya | ১৫ জুন ২০২৪ ২০:৪৪533219
  • অরিনবাবু,
     
    আপনার দেওয়া রেফারেন্স-গুলো সব দেখলাম। সেগুলোর কথায় পরে আসছি, কিন্তু তার আগে দু-একটা কথা বলে নিই। 
     
    প্রথমত, আমার অতিক্ষুদ্র প্রথম মন্তব্যটিতে ইয়ার্কির ঢঙে একটি সিরিয়াস প্রশ্ন ছিল, যেটা সম্ভবত ঠিকঠাক বোঝাতে পারিনি। প্রশ্নটা হচ্ছে, যে কোনও মানসিক ক্রিয়াতেই মস্তিষ্কে কিছু না কিছু ঘটে, ধ্যান করলেও কিছু না কিছু তো ঘটবেই। সেটা আগে বাইরে থেকে বোঝা যেত না, এখন নানা যন্ত্র দিয়ে সে সব 'দেখতে' পাই। কিন্তু, ধ্যান করলে মস্তিষ্কে 'কিছু একটা' ঘটছে --- শুধু এই তথ্যটুকু দিয়ে ধ্যান সংক্রান্ত জনপ্রিয় ধারণা বা দাবিগুলোকে সমর্থন বা ব্যাখ্যা করা যায় কি? ইতিমধ্যে 'কগনিশন' তাঁর সংক্ষিপ্ত কিন্তু চমৎকার মন্তব্যে তার উত্তর দিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু আমি চাইব, আপনিও কিছু বলুন। ভেবেচিন্তে সময় নিয়েই বলুন, আপনার উত্তরটা আন্তরিকভাবে জানতে চাই। এখানে বলে রাখা উচিত, মস্তিষ্কের ওপরে ধ্যানের প্রভাব নিয়ে আপনি মূল লেখায় যে সমস্ত রেফারেন্স দিয়েছেন, তার মধ্যে কিন্তু আদৌ সে সমর্থন বা ব্যাখ্যা নেই। 
     
    দ্বিতীয়ত, আপনি জানতে চেয়েছেন, আমি যখন জিজ্ঞেস করলাম যে, ধ্যান দিয়ে জগতের উপকার কিছু হয় কিনা, তখন আমি 'উপকার' বলতে ঠিক কী বোঝাতে চেয়েছি? এমনকি, আমি হয়ত উপকার বলতে মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত উপকারের কথাই বলতে চেয়ে থাকতে পারি --- এইটা ধরে নিয়ে আপনি সেই সংক্রান্ত কিছু রেফারেন্স দিয়ে দিয়েছেন। তার কথায় পরে আসছি, কিন্তু বলে রাখা উচিত, আমি নিছক 'ব্যবহারিক' লাভের কথা বলিনি। 'ধ্যান' যদি সত্যিই কোনও স্বতন্ত্র ও গুরুত্বপূর্ণ মানসিক প্রক্রিয়া হয়, তাহলে মস্তিষ্কে তার প্রভাব জানতে পারলে তা থেকে মন ও স্নায়ু সংক্রান্ত অনেক মূল্যবান জ্ঞান লাভ করতে পারবার কথা। কিন্তু দুঃখের বিষয়, তেমন কোনও জ্ঞান পাওয়া গেছে বলে জানি না। আপনার সন্ধানে থাকলে, জানতে চাইব। 
     
    এইবারে আসা যাক ধ্যানের 'ব্যবহারিক উপযোগিতা'-র কথায়। 
     
    আপনি লিখেছেন, "1982 সন থেকে আজ অবধি মেডিসিন, পাবলিক হেলথ,  মনোবিজ্ঞানে, সাইকিয়াট্রিতে , palliative care, হস্পাইস,  তাছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে,   অফিস কাছারিতে, কারখানায়, হাসপাতালে,  মানুষের কাজের প্রোডাক্টিভিটি বাড়াতে, অফিসে কাজ জনিত অবসাদ  কমাতে, ধ্যানের, বিশেষ করে  প্রচুর ব্যবহারিক প্রয়োগ রয়েছে । ডাক্তারির একটা গোটা স্পেশালাইজেশান গড়ে উঠছে, এমনকি উচ্চশিক্ষাতেও  ।" 
     
    এর উত্তর হচ্ছে, না, ধ্যান নিয়ে ডাক্তারিতে আদৌ কোনও 'স্পেশালাইজেশন' গড়ে ওঠেনি। এম বি বি এস পাস করবার পরে ডাক্তাররা নানা বিশেষজ্ঞতার দিকে চলে যান --- অপথ্যালমোলজি, গাইনোকলজি, সাইকিয়াট্রি এইসব। সেখানে ধ্যান সংক্রান্ত কোনও বিশেষজ্ঞতার অস্তিত্ব নেই। নেই মানে, থাকবার কথাই নয়। ধ্যানের সুফল নিয়ে 'রিসার্চ পেপার' ইন্টারনেট-এ প্রচুর পাবেন, যেমনটি পাবেন হোমিওপ্যাথি ইউফো জাতিস্মর এইসব নিয়েও। আপনি ঠিকই বলেছেন, "উদাহরণ দিয়ে শেষ করা যাবে না"। সমস্যা হল, বৈজ্ঞানিক প্রমাণের জন্য তা যথেষ্ট নয়। যথেষ্ট সংখ্যক উচ্চমানের  পরীক্ষা-নিরীক্ষা, তার সিস্টেম্যাটিক রিভিউ, নির্ভরযোগ্য জার্নালে তার প্রকাশ, নানা প্রশ্ন ও আপত্তি পেরিয়ে একটা জায়গায় থিতু হয়ে দাঁড়ানো, 'ককরেন ডেটাবেস'-এ অন্তর্ভুক্তি, বিজ্ঞানী সমাজের মূলস্রোতের কাছে স্বীকৃতি, চিকিৎসার টেক্সটবুক-এ অন্তর্ভুক্তি --- এই হল কোনও বিশেষ চিকিৎসা-পদ্ধতির গ্রহণযোগ্যতার কঠিন ও দীর্ঘ পথ। এবং, না, ধ্যানের উপকারিতা সে পথ এখনও অবধি পেরোতে পারেনি। 
     
    মন্তব্য দীর্ঘ হয়ে যাচ্ছে বলে শেষ করলাম। একটু পরে বাকিটা বলছি। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে প্রতিক্রিয়া দিন