প্রোটোকল - পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দপ্তরেরজ্বর এর হিস্ট্রি এবং মাথা বা গায়ে হাতে পায়ে ব্যথা বা কাশি বা পেট খারাপ নিয়ে কেউ ডাক্তারের কাছে এলেই -
০০) ভ্যাকসিন নিয়েছেন? দেখুন নিলে যে হবে না তা নয়, তবে এফেক্ট মাইল্ড হবে, সিভিয়ার কিছু হবে না। বাড়ি থেকে বেরোননা, তাতে কি? আসলে জানেনতো ভাইরাসটা এখন বায়ুমন্ডলে ছড়িয়ে পড়েছে। নিঃশ্বাসের সাথে সাথেই এটা শরীরে ঢুকে পড়ছে। তিন ফুট ছ দুট দূরত্বের দিন আর নেই। WHO ও একে এয়ার বোর্ন ডিক্লেয়ার করে দিয়েছে।
০) আপনার যা হয়েছে বা হচ্ছে - জ্বর, গায়ে ব্যথা, কাশি ইত্যাদি, কখনওবা পেট খারাপ - এক্কেবারে খাপে খাপ কোভিড (এই মুহূর্তে ওমিক্রন, কিছুদিন আগে ছিল ডেল্টা) সিনড্রোম। ১৪ দিন আইসোলেশনে থাকবেন, এখন সরকার ৭ দিন বলছে, তবে ১৪ দিন বেটার। আর দেখুন ওমিক্রন আমাদের কাছে প্রাকৃতিক আশির্বাদ, ভয় পাওয়ার কোনো ব্যপার নেই। এতে আমরা প্রাকৃতিক ভাবে ইনিউনড হয়ে উঠছি।
১) গ্যাসের ওষুধ - দিনে দুবার খালি পেটে - যদি এত বেশি ওষুধ খেয়ে গ্যাস হয় সেই আশঙ্কায়
২) অ্যান্টিবায়োটিক - দিনে দুবার খাওয়ার পরে, পাঁচদিন - ভাইরাল ইনফেকশনে শরীরের ইমিউনিটি দুর্বল হয়ে যায়, তখন যাতে কোনো ব্যাকটিরিয়া আক্রমণ না করতে পারে। এর সাথে বর্তমান ভাইরাসের বা ইনফেকশনের কোনো সম্পর্ক নেই।
৩) পেইন কিলার - গায়ে ব্যথা বা শরীরের অন্য কোনো অংশে ব্যথা থাকলে - এমনকি চোখের মণি ডানদিক বাঁদিক করতে ব্যথা লাগলেও।
৪) প্যারাসিটামল দিনে মোট ২০০০ মিগ্রা মতন - জ্বর এককালে এসেছিল আর গত দুদিন আসেনি, তবু, (প্রোটোকল) - আগামী তিন দিন - দিনে তিনবার করে।
৫) কাফ সিরাপ - দশ দিন, কাশি থাকলে।
৬) ভিটামিন সি, ডি, জিঙ্ক সম্বলিত মাল্টিভিটামিন ট্যাবলেট (সাধারণত চুষে খাওয়ার) - দিনে একবার দশদিন।
৭) দিন দুয়েকের মধ্যে না কমলে (কী কমবে? জ্বর তো গত দুদিন ধরেই নেই। পাঁচ দিন ধরে পেইন কিলার খেলে চোকের বা গায়ের ব্যথাও থাকবে না) একটা RTPCR টেস্ট করিয়ে নেবেন। তবে দরকার নেই, এতেই সেরে যাবেন।
৮) সিভিয়ারিটি বাড়লে হসপিটালাইজড হবেন।
৯) আর ঠান্ডা লাগাবেন না। ঠান্ডা গরম মিশিয়ে উষ্ণ জলে স্নান করবেন। দিনে এক-দুবার অন্তত স্টীম নেবেন।
এই প্রোটোকল প্যান্ডেমিক সিচুয়েশনে সকল রোগীর জন্য। কোনো ইন্ডিভিজুয়াল পরীক্ষা বা সিম্পটম অনুযায়ী এই প্রোটোকল এড়িয়ে ওষুধ দেওয়া যাবে না। স্পেসিফিক সিম্পটম থাকলে এর সাথে কিছু যোগ হতে পারে।
সকলেই জানেন, (১) থেকে (৫) আজীবন যেকোনো রকম সর্দি কাশি জ্বরে ডাক্তারেরা দিয়ে এসেছেন। বেসিকালি ইনফ্লুএঞ্জা ভাইরাস এর জন্য। ফ্লু শট তো এখানে কেউ নেয় না। আগে ছিলও না। নিউ বর্ণ বেবির জন্য হাসপাতালে যে ম্যান্ডেটরি ভ্যাকসিনের লিস্ট তাতেও নেই ফ্লু ভ্যাকসিন। (৯) নং নিয়ে আর বললাম না, স্টীম কত তাপমাত্রায় কনডেন্স করে, দেহে বা মিউকাস মেমব্রেনের কত তাপমাত্রা পর্যন্ত সহ্য করার ক্ষমতা আর কত তাপমাত্রায় ভাইরাসের সেল ওয়াল ডিসরাপ্ট করে) কোভিড প্রোটোকল এ আলাদা কী? সব ভাইরাসেরই সংক্রমণ বেল কার্ভ ধরে হয়। পীক এ উঠলে জ্বর, মোট ইনকিউবেশন ১৪ দিন। কোভিড এ আলাদা কী?
- না, না আলাদা কেন, সব ভাইরাসের মতই এরও একই বেল কার্ভ, একই ইনকিউবেশন।
তাহলে লং কোভিড কী জিনিস? লোকে এত দিন ধরে অসুস্থ থাকছে কেন?
- রি-ইনফেকশন হচ্ছে।
সার্স কোভিড তো ডিক্লেয়ার্ড শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস। লাংস-কে এফেক্ট করে। তা কোমর্বিডিটি বলছে কেন? ডায়াবেটিসের সাথে এর কী সম্পর্ক?
- ডায়াবেটিস রোগীদের ইমিউন সস্টেম একটু দুর্বলই থাকে তো।
তাহলে হার্ট ফেল, ব্লাড প্রেসার এসব নানা ধরনের ব্যপারে এই ফুসফুসের ভাইরাস কে দায়ি করা হচ্ছে কেন?
- না, না, ফুসফুস আর রেনাল ফেলিওর - কিডনি তে এফেক্ট করছে।
ডাক্তারবাবু, একটা ডিক্লেয়ার্ড এয়ার বোর্ন ভাইরাসের ক্ষেত্রে মাস্ক পরে ঠিক কী সুবিধে হচ্ছে? ভাইরাস তো বায়ুতে ভাসছে আপনিই বললেন। ড্রপলেট আর তার সেটল আউটের তত্ত্ব তো খারিজ হয়ে গেছে? আপনি তো জানেন ভাইরাসের ডায়ামিটার। তুলনায় মাস্কের ছিদ্রের ডায়ামিটার কত। তার ওপর এ তো গ্যাস মাস্ক নয়, প্রশ্বাস নেওয়ার সময় হাওয়া তো মাস্কের ছিদ্র দিয়ে প্রেসার ড্রপ করে নাকে আসবে না, লিস্ট রেজিস্ট্যান্ট পাথ দিয়ে মাস্ক আর মুখের আশে পাশের ফাঁক দিয়ে নাকে ঢুকবে। আর যে ইনফেকটেড মানুষটা নিশ্বাস ছাড়ছে, তার নাক থেকে বেরোনো কিছু ভাইরাস যদি মাস্কের ফাইবার-এ আটকেও যায়, টানা আধ ঘন্টা এক ঘন্টা ধরে ফেলে চলা নিঃশ্বাসের ধাক্কায় কী সেগুলো মাস্ক পেরিয়ে বায়ুমন্ডলে ছড়াবে না? এ কি ফেভিকলের জোড়ের মত মাস্ক আঁকড়ে পড়ে থাকবে? আপনি তো নিজে ডাক্তার। আপনি কী বলেন?
- দেখুন আমাদের তো স্বাস্থ্য দপ্তরের থেকে যা বলতে বলা হয়েছে তার বাইরে বলতে পারি না। লাইসেন্স ক্যানসেল করে দিতে পারে। এটা প্রোটোকল। এই কথাগুলো আমাদের বলতেই হবে।
আচ্ছা এই যে টেস্ট না করিয়েই আপনি কোভিড কনফার্ম করছেন, ওমিক্রনের জয়গান করছেন, RTPCR না করে বা জিনোম সিকোয়েন্সিং না করে এই কথা গুলো আপনি কীভাবে বলতে পারেন।
- দেখুন প্যান্ডেমিক সিচুয়েশনে আমাদের তো প্রোটোকল মেনেই কথা বলতে হয়।
আচ্ছা যারা ইনফেক্টেড এবং সেরে উঠেছেন, তারা তো ভ্যাকসিনেটেড জনতার মতই ইমিউনড। একবার বা দুবার ইনফেকশনের পরে তাহলে আর ভ্যাকসিন নেওয়ার কোনো জরুরি প্রয়োজন নেই?
- দেখুন প্রোটোকলের বাইরে আমি কিছু বলতে পারব না।
চিন্তা করবেন না, সামনে পুরসভা ভোট আছে,টেস্ট কমিয়ে রিপোর্ট কমিয়ে, RTPCR এর স্প্যান কমিয়ে যেভাবে হোক ওয়েভ-এর কার্ভ ফলিং দেখাতেই হবে। স্বাস্থ দপ্তর এ ব্যপারে পূর্ণ দক্ষতা দেখাচ্ছে। আমাদের বাড়িতে চুপচাপ বসে থাকতে হবে শুধু।