কলকাতার রাস্তাতেও ট্রাক্টর নামলো। হ্যাঁ সেই দিল্লিওয়ালা কৃষক আন্দোলনকারীরাই নামলেন কলকাতার রাজপথে। হোক না ট্রাক্টরের সংখ্যা মাত্র দুই, কিন্তু তাতেই মেতে উঠলো চারপাশ। মিছিলের দিকে প্রবল আগ্রহে তাকিয়ে রইলেন ব্যস্ত শহরের পথ চলতি হাজারো মানুষ। অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন — হাত নাড়লেন অনেকে, মোবাইলে ছবি তুলে নিলেন, এমনকি কৃষক নেতাদের ছুঁড়ে দেওয়া শ্লোগানে গলাও মেলালেন কেউ কেউ।
১২ মার্চ ২০২১, কলকাতা সাক্ষী রইল এক নতুন ইতিহাসের। প্রথম কৃষক-মজুর মহাপঞ্চায়েত অনুষ্ঠিত হল কলকাতার রামলীলা ময়দানে। অংশ নিলেন দিল্লির ঐতিহাসিক কৃষক আন্দোলন পরিচালনাকারী প্রায় পাঁচ'শ কৃষক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ, 'সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা'র নেতৃত্বকারী প্রতিনিধিরা। প্রথম পঞ্চায়েত রামলীলা ময়দানে হলেও, এখানেই শেষ নয়। এরপর নন্দীগ্রাম, সিঙ্গুর, ভবানীপুরে মহাপঞ্চায়েত অনুষ্ঠিত হবে।
দুপুর ১২:৩০-এ কলকাতা প্রেস ক্লাবে কৃষক নেতারা সাংবাদিক সম্মেলন করেন। প্রথম বক্তব্য রাখেন, প্রবীণ কৃষক নেতা বলবীর সিং রাজেওয়াল। এরপর থেকে পরপর বক্তব্য রাখেন অন্যান্য কৃষক নেতারা— যোগেন্দ্র যাদব, হান্নান মোল্লা, গুরনাম সিং চাডুনি, মেধা পাটকর, রাজারাম সিং, হিমাংশু তিওয়ারী প্রমুখ। সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁদের বক্তব্যে স্পষ্টতই ছিল আসন্ন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ। বাংলার কৃষকদের উদ্দেশে একটি আবেদনপত্র প্রকাশ করেন তাঁরা। স্পষ্ট ভাষায় তাঁদের আবেদন — 'এই ভোটে কৃষক বিরোধী বিজেপিকে উচিত শিক্ষা দিন'।
ফসল কাটা ইত্যাদি কারণে কৃষকরা যে আন্দোলন থেকে সরতে নারাজ, সেটা রাজেওয়ালের বক্তব্যে ফুটে ওঠে। তাঁর মতে, এই আন্দোলন চলাকালীন ইতিমধ্যেই তাঁরা ফসলের মাড়াই-কাটাই সেরেছেন। এসব কারণে আন্দোলনের জোর কমে যাবে এমনটা ভাবার কোনও জায়গা নেই। যে পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হতে চলেছে, সবকটিতেই তাঁরা বিজেপি-কে ভোটে পরাস্ত করবার জন্য কৃষকদের মধ্যে প্রচার চালাবেন।
যোগেন্দ্র যাদব সহ অন্যান্য কৃষক নেতাদের বক্তব্যে বারবার উঠে আসে স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলা ও পাঞ্জাবের ঐতিহাসিক ভূমিকার কথা। তাঁরা প্রত্যয়ের সঙ্গে তাঁদের আশার কথা জানান, 'দেশ বেচনেওয়ালা' মোদী সরকারের হাত থেকে দেশের মানুষকে মুক্ত করবার কাজও করবেন বাংলা ও পাঞ্জাবের মানুষ।
হান্নান মোল্লার বক্তব্যে নতুন একটা গণতান্ত্রিক পরিচয়ের কথা উঠে এল। তিনি বললেন, জাত-ধর্ম সব পেরিয়ে 'কিষাণ' এক নতুন আত্মপরিচয়। ১০০ দিনের বেশি সময় ধরে ৫০০-র বেশি কৃষক সংগঠনের এই ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারাকে তিনি গণ আন্দোলনের এক নতুন বৈশিষ্ট্য অর্জন বলে জানান।
গুরনাম সিং চাডুনি বলেন, বাংলায় বিজেপি জিতলে তা হবে দেশের কৃষকদের পরাজয়।
সাংবাদিকদের দিক থেকে প্রশ্ন আসে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আর ভবানীপুরেই বেছে বেছে কেন যাচ্ছেন কৃষক নেতারা? কৃষক নেতারা স্পষ্টভবে জানান, কোনও নির্দিষ্ট দলকে সমর্থন করে কোথাও যাচ্ছেন না তাঁরা। সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম আন্দোলন কতটা কৃষক আন্দোলন নিয়ে ৫০০ সংগঠনের যৌথ মঞ্চ 'সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা'র অনেকেরই মতপার্থক্য থাকতে পারে। অনেকে অনেক ভাবে ব্যাখ্যা করতে পারেন, কিন্তু এই আন্দোলনগুলিতে ঐতিহাসিক ভাবে কৃষকরাই অংশ নিয়েছিলেন এবং প্রাণ দিয়েছেন। তাই 'সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা' বাংলার এই অঞ্চলের কৃষকদের কাছে যাবে। আর ভবানীপুরের শিখ ভাইদের আবেদনে ডাক দিয়ে সেখানেও তাঁরা যাবেন। এর সাথে কোনও বিশেষ দলকে জেতানোর কোনও সম্পর্ক নেই বরং বিজেপিকে পরাস্ত করবার আহ্বান জানানোটাই তাঁদের উদ্দেশ্য।
সাংবাদিক সম্মেলনের পর গাড়ি, ট্রাক্টর চালিয়ে এবং পায়ে হেঁটে গান্ধী মূর্তির পদদেশ থেকে চালু হওয়া মিছিল পৌঁছয় রামলীলা ময়দান। সেখানে মহা অঞ্চায়েতে কৃষক নেতারা বক্তব্য রাখেন। আন্দোলনের অভিজ্ঞতা বিবৃত করবার পাশাপাশি বাংলার মানুষের কাছে বিজেপিকে পরাস্ত করবার আহ্বান রাখেন প্রত্যেকেই।
খুব বেশি আগাম প্রচার ছাড়াই এবং এই রাজ্যের বিজেপি বিরোধী কোনও বড় রাজনৈতিক দলের গণ জমায়েত ব্যাতিরেকেও মোটামুটি মাঠ ভরিয়ে ফেলেছিল কৃষক নেতাদের মহাপঞ্চায়েত। বাংলার মানুষকে নতুন ইতিহাস গড়বার ডাক দিতে ২৯৪ টি কেন্দ্রেই তাঁরা পৌঁছে দিতে চান নিজেদের বার্তা। মিছিল চলাকালীন রাস্তার দু'ধারে মানুষের জমায়েত এবং তাঁদের উৎসাহে সেই বার্তায় সাড়া দেওয়ার সুরটাই যেন বেজে উঠলো।
"গান্ধী মূর্তির পদদেশ থেকে চালু হওয়া মিছিল পৌঁছয় রামলীলা ময়দান"।
--কোলকাতায় রামলীলা ময়দানটি ঠিক কোথায়?
পার্কসার্কাসে
একটা ভোট যেন ওই শুওরের বাচ্চা রা নাপায় !!ঠেঙিয়ে বাংলার বাইরে করা উচিত এই সব হারামীর বাচ্চা দের !!বদমাশ ।..গুন্ডা ।..মিথ্যাবাদী ।..দেশ টাকে বিক্রি করে দিচ্ছে শালারা !!কোন ভদ্রতা না ।..কোনো রাজনৈতিক শিষ্টাচার না।..কোনো মানবিক নিদর্শন না ।..ওরা যখন আমাদের দেশের কৃষক দের ওপর লাঠি ।।.গুলি আর জল কামান চালায় ।..যখন মুসলমান দের কুকুর বেড়াল গণ্য কোরে হত্যা করে যখন প্রতিবাদ করলেই পুলিশ , জেল , আদালত করে , কোনো মানবতা থাকে ওদের ?? ওই কুত্তার বাচ্চা দের ??
বাঃ, সন্তোষ ভাল বলেন।
হেব্বি এন্থো!
মেধা পাটেকর বা যোগেন্দ্র যাদবকে বার বার কৃষক নেতা বলাটা চোখে লাগল। এই আন্দোলনের মুখপাত্র তথা সমর্থক বললেই ভাল হত
a
ঠিক বলেছেন।