এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • তেমনি আমার বুকের মাঝে

    শিবাংশু লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ | ১৪২৭ বার পঠিত | রেটিং ৪.৫ (২ জন)
  • আমি আর সায়ন ফিরছিলুম একসঙ্গে অটোতে। এইট বি থেকে গড়িয়া। সায়ন শুধালো, শিবাংশুদা, কেমন লাগলো আজ? তখনই প্রথম আমি আলাদা করে ভাবতে প্ররোচিত হলুম। ঠিকই তো। কেমন লাগলো আমার এইসব কিছু। জানি, এই প্রশ্ন তো আমাকে আবার করা হবে। করা হলো। অনেকরাতে। স্বয়ং পাইদিদি। জীবনে প্রথম এতোজন উন্মোচিত সমকামী ও বৃহন্নলা মানুষজনের সঙ্গে এতোক্ষণ কাটালুম। তাদের কথা শুনলুম। তাদের ভাবনার জগতে রু-ব-রু মহড়া নিলুম। প্রথমবার এ জীবনে।

    কিছু বলার আগে একটা অব্স্থান নিতে হয়। 'সামাজিক অবস্থান'। নিত্য দেখি, 'মানবিকতা' নামক একটি লক্ষণকে যাঁরা স্বভাবের অলংকার মনে করেন, তাঁদের আমরা ভালো লোক মনে করি। তবে মানুষসমাজের একটা ততো বড়ো না হলেও বেশ কিছু সদস্য সভ্যতার প্রথম পর্ব থেকেই শারীরিক ও মানসিকভাবে সামান্য আলাদা। তাঁদের অন্তঃস্রাবী গ্রন্থিগুলি বহুজনের ছাঁচে কাজ করেনা। ব্যস, এইটুকুই। বাইনারি চিন্তার স্বস্তিময় জগতে তাঁরা ব্যতিক্রম। তাঁরা স্বেচ্ছায় আলাদা হতে চাননি। প্রকৃতি তাঁদের আলাদা করেছে। এই অপরাধে তাঁরা দীর্ঘদিন 'মানবিকতা'র ঘেরা উঠোন থেকে নির্বাসিত ছিলেন। 'মানবিকতা', 'গুণ' হিসেবে যেন সেই হুস্ন। জব উস হুস্ন কি বাত চলি, ঢলতে ঢলতে রাত ঢলি। অগণন তেমন রাত ফুরিয়ে গেলেও এইসব মানুষ যেন 'মানবতা'র একেবারে বাইরে কোনও ভিন্ন গ্রহের মানুষ। এঁদের সম্বন্ধে 'বিদ্যাসাগর' কী ভাবতেন, সেকথা আমরা ঠিক জানিনা। 'বিদ্যাসাগর' কোনও ঈশ্বরচন্দ্র ন'ন। একটা ধারণা মাত্র। মধ্যবিত্ত বাঙালির বিবেকের টোটেম। একজন বৃহন্নলা যখন বলেন, আমাদের দেখে সবাই বলেন, 'আহা, ওরাও মানুষ। ওদের নিয়ে আমাদের মায়াদয়া থাকা উচিত। কিন্তু আমরাও তো জানি, আমরা মানুষ। গরু নই।' আমাদের 'মানবতা'বোধ এখনও 'ওরাও মানুষ' জাতীয় ব্যাপ্তির উপরে ওঠেনি।

    আমরা যে প্রজন্মের মানুষ, সেই সময় 'আলফা মেল' হতে পারার হাজার বছরের সামাজিক তাড়না সমানভাবেই তীব্র ছিলো। আমাদের যেসব সহপাঠী বা সহপাঠিনীর আচারব্যবহার সমাজনির্দিষ্ট লিঙ্গভিত্তিক ছাঁচের সঙ্গে মিলতো না, তাদের প্রতি যে ধরনের ব্যাপক নিষ্ঠুরতা দেখানো হতো সেসময়, সে কথা এখনও মনে পড়লে বিড়ম্বিত বোধ করি। মনে হয় সেই ট্র্যাডিশন এখনও চলেছে। একজন বৃহন্নলা ঐ সভায় আবেগতাড়িত হয়ে হয়তো সামান্য রাজনৈতিকভাবে বেঠিক কিছু বলেছিলেন। শ্রোতাদের মধ্যে কেউ কেউ সেই বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন। আমি করিনি। কারণ সেই মানুষ্টি যখন কথা বলছিলেন, তাঁর বাগভঙ্গি, শব্দচয়নের মধ্যে যেধরনের তীব্র আবেগমুখর প্রতিরোধ ছিলো, সেটা তো আজকের বা সেই সন্ধ্যার উপজ নয়। হাজার বছরের কোণঠাসা মানুষের মরিয়া আত্ম-আবিষ্কারের প্ররোচনা ছিলো তার পিছনে। যে 'অপরাধ' তাঁরা করেননি, তার জন্য ইতিহাস জুড়ে ক্রমাগতভাবে তাঁদের বিরুদ্ধে হেরেসির অভিযোগ, মর্মন্তুদ অমানবিক ব্যবহার ও নিপাট হিংসা প্রদর্শন করা হয়েছে। তাঁরা সর্বভাবে আমাদের মতো মানুষ। শুধু এক-আধটা প্রত্যঙ্গের অচেনা ব্যবহারের জন্য আমরা তাঁদের মানুষের পৃথিবী থেকে নির্বাসিত করে এসেছি।

    সমকামিতা বা বৃহন্নলাবৃত্তি মানুষের ইতিহাসের আদিতমকাল থেকে রয়েছে। এদেশে আব্রাহামিক ধর্মের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হবার আগে পর্যন্ত প্রচলিত রাজকীয় বা সামাজিক নীতি এইসব মানুষদের পোষকতা দিতো। হয়তো উচ্চকিত বা প্রকট বিজ্ঞাপন ছিলোনা তার। কিন্তু তাঁরা সমাজের অন্যান্য সংখ্যালঘুদের থেকে নিকৃষ্ট জীবন যাপন করতে বাধ্য হতেন না। দশ-এগারো শতক থেকে ধীরে ধীরে তাঁদের প্রতি নিপীড়ন ক্রমশ তীব্র হতে থাকে। এদেশে ভিক্টোরিয়যুগ থেকে ব্যাপারটি আকাশছোঁয়া হয়ে পড়ে। যখন অভিযোগ আসে, বৃহন্নলারা নবজাতকের পরিবার থেকে কেন বলপূর্বক অর্থ দাবি করেন? আমরা কখনও ভাবিনা তাঁদের ক্ষুধার অন্ন কীভাবে জোগাড় হবে? সরকার কিছু করবে না, সমাজ কিছু করবেনা, ব্যক্তি কিছু করবে না । শুধু অন্তহীন ঘৃণা আর অস্পৃশ্যতার অভিশাপ। তাঁদেরও তো খিদে পায়। প্রথামাফিক কামবাসনা ছাড়াও তো মানুষের আরও অনেক কিছু প্রয়োজন হয়। আমি বাল্যকাল থেকে দেখেছি ইস্পাত কারখানার ব্লাস্ট ফার্নেস, বয়লার প্ল্যান্ট, মেল্টিং শপের পঞ্চাশ-পঞ্চান্ন ডিগ্রি উত্তপ্ত, মানুষের জন্য অসহনীয় অপরিবেশে বৃহন্নলা কর্মীরা কীভাবে বারোঘন্টা ধরে কাজ করে যান। তার জন্য সম্মানও পান তাঁরা। যাঁরা নিজেরা খেটে খান, তাঁরা অন্যের শ্রমকেও সম্মান জানান। শুধু কারখানা নয়, কয়লা বা অন্য সব খনি থেকে আকরিকসন্ধানী পুঁজি সাগ্রহে বৃহন্নলাদের নিযুক্ত করেন কঠিনতম দৈহিক কর্মে। উপযুক্ত পেশার সুযোগ দিলে কেন তাঁরা নিকৃষ্টতম ভিক্ষুকের বৃত্তি গ্রহণ করবেন?

    বছর পনেরো আগে আমি একটি বড়ো ব্রাঞ্চে ছিলুম। আমার আপ্তসহায়ক ছিলেন একজন তামিল মহিলা। খুবই স্মার্ট ও কর্মদক্ষ। আমার আগের ম্যানেজারমশাই আমাকে সতর্ক করেছিলেন। এই মহিলা নাকি উদ্ধত প্রকৃতির। আমি বলি, বেশ। কিছুদিনের মধ্যেই শুনতে পাই এই মহিলার সঙ্গে আমার ব্রাঞ্চেরই আরেকজন মহিলার 'সম্বন্ধ' রয়েছে। দ্বিতীয়জন গুজরাতি। তিনিও খুব দক্ষ কর্মী। কথাবার্তা অত্যন্ত শালীন ও সম্ভ্রান্ত। যিনি আমাকে এই 'সম্বন্ধে'র খবরটি দেন তাঁরা আশা ছিলো আমি এই দুজনকে অন্যচোখে দেখতে প্রলুব্ধ হবো হয়তো। যেরকমভাবে অন্যরা দেখতে ভালোবাসেন। অতো বড়ো ব্রাঞ্চে স্বভাবতই নিত্য তাঁদের সঙ্গে কাজের বাইরে কোনও কথা হতোনা। কিন্তু জানতে পারি তাঁরা দুজনে একসঙ্গে ঋণ নিয়ে একটি বাড়ি কিনেছেন। একসঙ্গে থাকেন। তাঁদের জীবিত অভিভাবকরাও থাকেন তাঁদের সঙ্গে। ছন্দোময় একটি জীবন কাটান তাঁরা। আমি তো গুলজারসাহেবের আপ্তবাক্য মেনে চলি। "হমনে দেখি হ্যাঁয়, উন আঁখো কি মহকতি খুশবু/ হাথ সে ছুকে ইসে রিশ্ত কা ইলজাম ন দো।" আমার থেকে বয়সে খুব একটা ছোটো ছিলেন না তাঁরা। যতোদিন ছিলুম আমি সেই, ব্রাঞ্চে দুজনের সঙ্গেই হৃদ্যতা ছিলো আমার। আমি অন্য জায়গায় চলে যাবার পর একজন আমার কাছে একটি স্থানীয় হিন্দি সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি খবরের প্রতিলিপি পাঠান। সেখানে ঐ দুজন মহিলাকে নিয়ে যতোটা অশালীন ইঙ্গিত করা যায়, করা হয়েছিলো। তাঁদের একটি সরকারি দফতরে কাজ করার অনুপযুক্ত ঘোষণা করা হয়। স্তম্ভিত আমি, তাঁদের তৎকালীন উপরওয়ালাকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মেঘনাদদের কাবু করা যায়নি। আমার সহকর্মী দুজনকে তাঁদের ইচ্ছায় একসঙ্গে শহরের অন্য একটি ব্রাঞ্চে স্থানান্তরিত করে দেওয়া হয়। কিন্তু সেখানেই গল্পটি শেষ হয়নি। শুনেছি তাঁরা দুজনেই এই মূহুর্তে গুজরাতে গিয়ে নতুন করে বসতি করেছেন।

    ঐ সন্ধ্যার সভায় আমার পাশে একজন অচেনা শ্রোতা বসেছিলেন। তিনি আলাপসূত্রে বলছিলেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা। তিনি আমাদের শাস্ত্রে, মহাকাব্যে বাইনারি প্রকল্পনার বাইরে থাকা 'অপর' মানুষদের উপস্থিতি নিয়ে কথা বলছিলেন। পরে শুনলুম তিনি 'নৈঃশব্দ্যের পত্রগুচ্ছ' যুগলের একজনের নিকট আত্মীয়া। যে পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে এইসব মানুষজনের পরিবার-পরিজনকেও এগিয়ে যেতে হয় তার বিড়ম্বনাও বুঝে ওঠা যায়না সবসময়। আমিও বুঝিনা কেন আমরা সমকামিতা নিয়ে এভাবে মানসিক পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয়ে যাই। আজকের পৃথিবীতে দুজন প্রাপ্তবয়স মানুষ কীভাবে নিজেদের সম্পর্কটি নিরূপণ করবেন। ঘরের চারদেওয়ালের মধ্যে তাঁদের যাপন কেন অসম্পর্কিত, অচেনা, অশালীন জনসমাজের অবাঞ্ছিত আলোচনার সামগ্রী হয়ে উঠবে? কোথাও তো একটা প্রতিরোধ হওয়া দরকার। স্বীকার করি বিগত প্রজন্মের মানুষ হিসেবে এই প্রতিরোধের ইচ্ছা কিন্তু প্রথম জীবন থেকে ছিলোনা আমার। যেভাবে আমার সন্তানরা প্রান্তিক যৌনতার প্রশ্নটিকে সহজ, সাবলীলতায় গ্রহণ করেছে কৈশোরকাল থেকে। তারা জানে তাদের চেনা-অচেনা যেসব মানুষ এই বোধে বিশ্বাস করে, মানুষ হিসেবে তাদের সমান সামাজিক অধিকার রয়েছে। তাদের হাত ধরা জরুরি। আমাদের, সবার। গুরুচণ্ডালি দীর্ঘকাল ধরে এই প্রতিরোধের প্রতি দায়বদ্ধ হয়ে কাজ করছে। আমি তাঁদের সঙ্গে সংলিপ্ত থাকার জন্য গর্ববোধ করি।

    আপনজনদের আকাঙ্খা, নিজের সন্তানদের মধ্যে যেন এই প্রবণতা না দেখা দেয়। অন্যপরেই না হয় থাক এই 'বিপর্যয়'। কিন্তু যদি দেখা দেয়, তবে কেমন লাগে? সেদিন উপস্থিত ছিলেন কয়েকজন মা ও মাতৃপ্রতিম নারী, যাঁদের সন্তানরা 'অপর' ইচ্ছার ভাগী। তাঁরা যখন একযোগে ঘোষণা করেন তাঁদের আত্মজরা কোনও অপরাধী ন'ন। তাঁরা সতত বটবৃক্ষের ছায়া হয়ে থাকবেন তাঁদের সঙ্গে। 'মানুষ' হয়ে বাঁচার তাঁদের মৌল অধিকার আপোশযোগ্য নয়। প্রান্তজনের যৌনতা নিয়ে লজ্জাপর হওয়ার দিন আর নেই নিশ্চয়। সাহিরসাহেবের সেই ফিলমি শ্যেরটি মনে পড়ে, "ন মুঁহ ছুপায়ে জিও, অওর না সর ছুপাকে জিও।"

    'নৈঃশব্দ্যের পত্রগুচ্ছ' আগেই পড়েছিলুম এই পাতায়। অক্ষরের ভাষা ও ছবির ভাষা ভিতর পর্যন্ত প্রবেশ করেছিলো। না, কোনও 'কালজয়ী' সাহিত্য হিসেবে নয়, কোনও ব্রিগেডকাঁপানো স্লোগানবাজিও নয়। মানুষী বিপন্নতার কিছু মানবিক দলিল হিসেবেই দেখেছি একে। দেওয়াল জোড়া আয়নার মতো নির্মম সে। যার সামনে দাঁড়ালে নিজেকে লুকিয়ে রাখা যায়না। লেখাটি দুই মলাটের বন্ধনে প্রকাশ পেলো এখন। পরিশীলিত মুদ্রণ। বুদ্ধ যেমন বলেছিলেন, আত্মদীপ হয়ে প্রকাশিত হবার স্বপ্ন।

    সেদিন বইটি থেকে পাঠ করা হলো। গান হলো। নানারকম কথাবিনিময় হয়ে চললো দীর্ঘক্ষণ। একটু অগোছালো, একটু অবিন্যস্ত হয়তো বা। কিন্তু বেদনার গল্প আর কবেই বা গুছিয়ে লেখা যায়? হিমন্ত সন্ধ্যায় খোলা আকাশের নীচে জ্বলছিলো লালনীল বাতিগুলি। সারিবেঁধে। নতুন প্রজন্মের কতো মানুষ মলাট ছেঁড়া প্রচ্ছদ হয়ে নিজেদের উদযাপন করছিলো আলোআঁধারে। তাদের যদি কোনও কষ্ট থাকে, আমরাও তো রয়েছি তার সঙ্গে। তাদের বলি,

    তেমনি আমার বুকের মাঝে,

    কাঁদিয়া কাঁদাও গো......
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ | ১৪২৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • dd | ***:*** | ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:১০65509
  • ভালো লেখা। যেমন হয় আর কি শিবাংশুর লেখা।

    গুরুচন্ডালীর এই বিষয় নিয়ে যে নিষ্ঠা, সেটা সত্যিই প্রশংসার।

    অ্যানেকডোট শেয়ার করা ছাড়া, আর কীই বা করতে পারি। আমার ছোটোবেলাতেও এরা ছিলো ঘৃন্য মানুষ। এক সমকামী সহপাঠীকে নিয়ে নিষ্ঠুরতায় তো আমিও সামিল ছিলাম। সমকামীরা যে তৃতীয় বিশ্বের উপর চাপিয়ে দেওয়া ইয়াংকী কালচার , আমরা তো সেটাও জানতাম।

    আমার তিন মেয়ের সহপাঠী/সহকর্মীদের একাধিকজন সম্পুর্ন ঘোষিত ভাবে সমকামী। তাদের ব্যাপারে, পরিবারে, সমাজে, বন্ধুমহলে অ্যাকসেপ্টেন্স আমাদের সময়ের থেকে বহু বহুগুন বেশী।

    চেন্নাইতে যখন কাজ করি তখন সহকর্মী হিসেবে ছিলো এক সমকামী কাপল। তাদের মতন মাইনরটি আর হয় না। কারন সমকামী ছাড়াও তারা ছিলো উত্তর ভারতীয় আর মুসলমান। কিন্তু প্রায় সমগ্র তামিল সহকর্মীদের মধ্যে একেবারেই এক নির্লিপ্ত (বা বলা যায় উদাসীন) মনোভাব ছিলো। কখনো একঘরে করে রাখার মানসিকতা দেখি নি।

    জানি না, এক প্রজন্ম আগে কলকাতা শহরে তারা কতোটা মিশে যেতে পারতো।
  • প্রতিভা | ***:*** | ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:২৯65510
  • লেখাটি পড়ে না যেতে পারার কষ্ট কিছুটা হলেও ঘুচল। শুধু বাঁধুনির জন্য নয়, মানবিক দলিল হিসেবেও বহুদিন থাকবে এই লেখা।
  • aranya | ***:*** | ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৯:৩৩65511
  • ভাল লাগল শিবাংশুর প্রতিবেদন।

    'গুরুচন্ডালীর এই বিষয় নিয়ে যে নিষ্ঠা, সেটা সত্যিই প্রশংসার' - ডিডি-দার সাথে একমত। খুবই ভাল কাজ করছে গুরুচন্ডালী - কুর্নিশ পাই ও অন্য সবাইকে
  • kihobejene | ***:*** | ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:১৩65512
  • has anyone studied why the perception towards homosexuals changed in bengal? What i have seen first hand is my parents' acceptance level changed with Rituparno. Somehow he created the wide acceptance among Bengali middle class. is this true? For people who follow these, "Will and Grace" - a sitcome created wide acceptance of gays in US. If asked many Americans (in 90s) would mention that the only gay they knew was Will. any good article to read on what changed in Bengal or with Bengalis?
  • dc | ***:*** | ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:১৩65513
  • শিবাংশুবাবুর লেখা ভালো লাগলো আর ডিডিদার পোস্টও খুব ভালো লাগলো। আস্তে আস্তে এলজিবিটিকিউ দের অ্যাক্সেপটেন্স বাড়ছে, এটা সত্যি খুব ভালো ব্যাপার। চারিদিকে ডাইভার্সিটি যতো বাড়বে, নানারকম দেওয়াল যতো ভাঙ্গবে, ততো আমরাই ভালো থাকবো।

    তাছাড়া মার্কেট সাইজও বাড়বে, যেটা আমার ক্যাপিটালিস্টরা চাই।
  • সুকি | ***:*** | ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:০৪65514
  • খুব ভালো লিখেছেন শিবাংশুদা। আমাদের গ্রামের দিকে কিছু হাসি মস্করা হত এই নিয়ে, তবে অনেকে ভেবে চিন্তে আঘাত করব বলে বলতেন না। কেমন যেন সামাজিক ভাবেই হাসির পাত্র এমনটা ভাবা হত মনে হয়!
  • নাহার তৃণা | ***:*** | ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:০৯65515
  • আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে সমকামিতা বা বৃহন্নলাবৃত্তি নিয়ে হাসিয়া উড়াইয়া দেবার আবকাশ নেই। পৃথিবীর যাবতীয় বিষয়ে আমার-আপনার একার অংশীদারিত্ব না, সবটাতে তাঁদেরও আছে সমান অধিকার।
    আপনার লেখাটা ভালো লাগলো শিবাংশুদা। 'নৈঃশব্দ্যের পত্রগুচ্ছ' পড়বার সৌভাগ্য হয়নি। নাগাল পেলে পড়বো নিশ্চয়ই। গুরুকে আন্তরিক সাধুবাদ জানাই।
  • অমিতাভ চক্রবর্ত্তী | ২১ জুন ২০২২ ০৬:২৯509212
  • খুব ভালো লেখা, শিবাংশুর কাছ থেকে অবশ্য এইরকমই পাওয়ার কথা। আশার যেটা, আজকের বাচ্চাদের গ্রহণক্ষমতা আমাদের থেকে অনেক সময়ই অনেক বেশি।
  • kk | 2601:448:c400:9fe0:39c5:43c4:65d3:***:*** | ২২ জুন ২০২২ ০০:২৪509247
  • এই লেখাটা আমি আগে পড়িনি। খুবই ভালো লাগলো। থ্রেডটা উঠে এসে খুব ভালো কাজ হয়েছে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে মতামত দিন