এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • বাবা বুদান ও সাতটি বীজ..

    শিবাংশু লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৬ নভেম্বর ২০২০ | ৩৪০৬ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • পণ্ডিতেরা বলেন মানুষের জন্ম হয়েছিলো উত্তর আফ্রিকার একটি পাহাড়ি জঙ্গলের দেশে। হোমো স্যাপিয়েন্সের প্রথম দেখা পাওয়া গিয়েছিলো হর্ন অফ আফ্রিকার ইথিওপিয়ায়। এক কালে যার নাম ছিলো আবিসিনিয়া। 'হাবসি'দের দেশ। এই দেশটি, তার ইতিহাস, এখনও আমাদের কাছে এক ধূসর জগৎ। দেশটি মানুষের সভ্যতাকে উপহার দিয়েছিলো একটি প্রিয়তম পানীয়। যার নাম 'কফি'।

    পাশের দেশ মরোক্কোতে বা সমুদ্রের অন্য পারে ইয়েমেনে ছিলেন এক সুফি সাধক। নামটা বেশ লম্বা। গোতুল আকবর নুরুদ্দিন আবু অল-হাসান আল শাদিলি। তাঁর ছিলো কিছু অলৌকিক ক্ষমতা। তাঁরা প্রার্থনা করে আতুর মানুষের রোগমুক্তি ঘটাতে পারতেন। একবার ইথিওপিয়া ঘুরতে ঘুরতে তিনি দেখেন মাঠেঘাটে একটা ফল খাবার পর পশুপাখিদের মধ্যে খুব স্ফূর্তি দেখা যাচ্ছে। তিনি নিজে খাবার পর দেখলেন তিনিও স্ফূর্তি বোধ করছেন। সেই ফল তিনি নিয়ে আসেন ইয়েমেনে। অন্য গল্পে আছে তাঁর শিষ্য ওমরকে একবার কোনও কারণে তাঁকে মক্কা থেকে নির্বাসন দেওয়া হয়। তিনিই নাকি ফলটি খুঁজে পান। ঘটনা যাই হোক, ইয়েমেন দেশের সুফি সাধকরাই প্রথম এই ফলটির নির্যাস পান করতে শুরু করেছিলেন। আরবি ইসলামি সংস্কৃতিতে এই নির্যাসটির বহু তাৎপর্য রয়েছে। কিংবদন্তি বলে, দেবদূত জিব্রাইল নাকি স্বয়ং পয়গম্বর রসুলের অনুরোধে সন্ধান দিয়েছিলেন এই ফলের। রসুল চেয়েছিলেন তাঁরা অনুগামীরা যেন সুরাপান ত্যাগ করেন। সুরার বিকল্প হিসেবে প্রয়োজন ছিলো একটি তেজোবর্ধক পানীয়ের। পানীয়টির নামটি নেওয়া হয় আরবি ভাষার 'কাহওয়া' শব্দটি থেকে। অর্থ, এক ধরনের মৃদু সুরা, যা ক্ষুধা হরণ করে। অটোমান তুর্কিদের ভাষায় কাহওয়া হয়ে যায় 'কহওয়ে'। কহওয়ে ওলন্দাজদের ভাষায় হয় কোফি। ষোলো শতকে ইংরেজরা 'কোফি' শব্দ থেকে পানীয়টির নাম রাখে 'কফি'। এখন সারা পৃথিবীতে এই নামটিই চলে।



    সারা রাত্রিব্যাপী নানা ধর্মানুষ্ঠানে সুফি সাধকরা এই নির্যাসটি গ্রহণ করতেন। বিশেষত রামাদানের সময়। এই নির্যাসটির বিশেষ নিদ্রাহর ও ক্ষুধাহর ক্ষমতা ছিলো। অথচ তা শরীরে ও মনে শক্তির সঞ্চার করতো। সেমেটিকভাষী সভ্যতা, যেমন, খ্রিস্টিয় বা ইসলামি, দুই সংস্কৃতিতেই এই নির্যাসটি নিয়ে ক্ষমতাশালীরা নানা পরীক্ষানিরীক্ষা করেছিলেন। কখনও তাকে নিষিদ্ধ করা হতো। কখনও বা পবিত্র মনে করা হতো। তবে ক্রমে তার লোকপ্রিয়তা নির্বাধ বেড়ে ওঠে। সুফি সন্তদের সুবাদে আরব দুনিয়ার মক্কা, মদিনা, কাহিরা, দামাস্কাস, বাঘদাদ বা কনস্ট্যান্টিনোপল (ইস্তানবুল) সব জায়গায় তা ছড়িয়ে পড়ে। মামলুক, সফাভি, ওটোমান সমস্ত ইসলামি রাজসংস্কৃতিতেই এর প্রচলন ছিলো। লোককথা অনুযায়ী দক্ষিণ ভারতের সুফি সাধক বাবা বুদান প্রথম ইয়েমেন থেকে ভারতবর্ষে কফি বীজ নিয়ে এসেছিলেন। বর্তমান দক্ষিণ কর্ণাটকে পশ্চিমঘাট পর্বতমালায় ঘুমিয়ে থাকা একটি গ্রাম চিকমগলুর বাবা বুদানের সূত্রে হয়ে ওঠে এদেশে কফি চর্চার উৎস।

    'চিকমগলুর' শব্দটির উৎস আছে কন্নড় ভাষায় 'চিক্কমগলা উরু' নামের মধ্যে। এর অর্থ 'কনিষ্ঠ কন্যার জনপদ'। সক্করায়পত্তনের প্রবাদিত প্রধান রুকমঙ্গদা তাঁর কনিষ্ঠা কন্যাকে যৌতুক দিয়েছিলেন এই গ্রাম। প্রথমে সুফি সাধক, পরে ইংরেজদের প্রযত্নে এই জায়গাটা ক্রমে কফি সংস্কৃতির কেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায়।

    নামটা আমরা প্রথম শুনি ইন্দিরা গান্ধির দৌলতে। তিনি একবার রায়বরেলির মায়া কাটিয়ে চিকমগলুর থেকে ভোট লড়েছিলেন। হতাশ হননি। একবার বেলুরু, হালেবিদু দেখে ফিরছিলুম বেঙ্গালুরু। যাওয়ার ছিলো হাসান। হঠাৎ একটা বাস এলো। যাবে অন্যদিকে চিকমগলুর। এতো কাছে এসে ছাড়া যায়না। চড়ে গেলুম। আধ ঘন্টার মধ্যেই চিকমগলুর, সবুজের স্বর্গ।



    ভারতীয় উপদ্বীপের পূর্বঘাট আর পশ্চিমঘাট পর্বতমালাকে এককথায় স্বর্গরাজ্যই বলতে হবে। পূর্বে বঙ্গোপসাগর আর পশ্চিমে আরব সাগরের টানা প্রান্ত জুড়ে দাঁড়িয়ে আছে সবুজে সবুজ পার্বত্য প্রদেশ। এই সব পাহাড় হিমালয় নয়। তাদের হিম-মুকুট পরে থাকার বৈভব নেই। কিন্তু সৌন্দর্য মাপতে গেলে তারা পিছিয়ে থাকেনা। পশ্চিমঘাটের পর্বতমালার নাম 'সহ্যাদ্রি'। তার ব্যপ্তি ষোলো শো কিমি জুড়ে। সেই গুজরাট থেকে শুরু হয়ে দক্ষিণে মহারাষ্ট্র, গোয়া, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক হয়ে কেরালা পর্যন্ত তার রাজপাট। উচ্চতা মাপতে গেলেও কেরলের আনামুড়ি শৃঙ্গ প্রায় সাতাশ শো মিটার উঁচু।

    এদেশের কফি সংস্কৃতির কেন্দ্র পশ্চিমঘাট পর্বত মালা। সুফি সাধক বাবা বুদান নাকি হজ করে ফেরার পথে ইয়েমেন থেকে লুকিয়ে সাতটি কফিবীজ সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন। তিনি থাকতেন পশ্চিমঘাটের চন্দ্রগিরিতে। সেখানেই রোপন করেছিলেন এই বীজগুলি। তারা ছিলো কফি অ্যারাবিকা গোত্রের বীজ। তবে এই পানীয় তখন মূলত সুফি সাধকদের মধ্যেই প্রচলিত ছিলো। চন্দ্রগিরি এলাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো তার প্রভাব। চন্দ্রগিরি পর্বতমালা বাবা বুদানের স্মরণে আজ নাম নিয়েছে বাবা বুদান গিরিপ্রণালী। তার সব চেয়ে উঁচু শৃঙ্গটির নাম মুল্লায়নগিরি। জেলা চিকমগলুর। এদেশে এখানেই প্রথম শুরু হয় কফির কৃষি। ইংরেজরা এই শষ্যটির বাণিজ্যিক মূল্যটি অনুধাবন করেছিলো। উনিশ শতক থেকেই তাঁরা বড়ো মাত্রায় কফিচাষ শুরু করেন পশ্চিমঘাট পর্বতমালার নানা জায়গায়। মজার কথা আজ লোকে জানে নীলগিরি অঞ্চলটিতে শুধু চায়ের চাষ হয়। কিন্তু আগে এখানে কফির চাষই শুরু হয়েছিলো। পরে এদেশের লোক চায়ের নেশায় মজে যায়। কফির বোলবালা রয়ে যায় শুধু দাক্ষিণাত্যেই। তাঁরা বলেন 'কাপি'।



    কথা হচ্ছিলো, চিকমগলুর নামে ছোট্টো শহরটির। একে ঠিক শৈল শহর বলা যাবেনা। কিন্তু নয়ন জুড়োনো ভূপ্রকৃতি এখানে। এর অর্থনীতির ভিত্তি কফিচাষ। শহর-গ্রামে প্রায় পনেরো হাজার মানুষ জড়িয়ে আছেন কফিশিল্পে। উঁচু-নিচু পাহাড়ি রাস্তা ঘাট। আকাশ ছোঁয়া সরলরৈখিক বৃক্ষরাজির ছায়ার ফাঁকে ফাঁকে কফিগুল্মের কৃষি হয় এখানে। ভারতীয় কফির বৈশিষ্ট্য হলো এর চাষ হয় ছায়াঞ্চলে। এর স্বাদগন্ধ মৃদু, কোমল। যেদিকে চোখ যায়, শহরটি ঘেরা আছে পাহাড়ের ঢালে কফিবাগানের সারবাঁধা মিছিলে। মাঝে মাঝে ঢালু লাল ছাদের বাংলাবাড়ি। নির্মল অক্সিজেনে ভাসাভাসি শীতল হাওয়া। তার মধ্যে ভেসে আসে সেঁকা কফিবীজের মাদক সুগন্ধ। শহুরে মানুষের ক্লান্ত শরীর জেগে ওঠে প্রকৃতির আলিঙ্গনে। ভেবে গিয়েছিলুম, কিছুক্ষণ ঘুরে ফিরে চিকমগলুরের মায়া কাটাবো। কিন্তু থেকে গেলুম দু'দিন।

    চিকমগলুরের পরেই আসবে মাদিকেরির কফির গল্প। জেলা কোদাগু বা কুর্গ। অবশ্য পরেই বা আসবে কেন? আগেই আসা উচিত। এদেশের কফিবিনের সব চেয়ে বড়ো কেন্দ্র মাদিকেরি। এদেশের শতকরা পঁচিশ ভাগ কফি আসে কোদাগু থেকে। কেরালায় হয় উনিশ ভাগ। অ্যারাবিকা, রোবাস্টা আর কাবেরী গোত্রের কফি চাষ হয় এখানে। বিরাজপেট, বিলিগেরি, কুর্গ ইত্যাদি ব্র্যান্ডের কফির সাধারণ নাম 'মাইসোর কাপি।' মাদিকেরি একটা মাদকতাময় ঠিকানা। চারদিকে কফিবাগান ঘেরা পাহাড়ি জনপদ। চারিদিকে বৃক্ষের বিস্তৃত হরিৎদাব। পাহাড়ের গায়ে সযত্ন কর্ষিত কফি বাগান। এদেশে কফি মানেই তো কোদাগুর কফি। কফি এস্টেটেরই সঙ্গে অতিথশালা। সে তো গ্রাম। মানে গ্রামই। বিদ্যুৎ থাকে না বললেই চলে। জেনারেটর ভরসা। বৃষ্টির দিনে বিলিগেরি যাওয়া যায় না তিন-চার মাস। পাহাড়ের আড়ালে সূর্য মুখ লুকালেই নিস্তব্ধ পুরী। নীরবতার শব্দ শুনতে চাইলে স্বাগত। শুধু বন ফায়ারের কাঠ পুড়ে যাবার মৃদু শব্দ। ঘোর কালো আকাশে মিলিয়ে যাওয়া শাদা ধোঁয়ার সিঁড়ি। আঁকাবাঁকা লালমাটির পথ ওঠে নামে। এদিক ওদিক জল ঝরনার দল ভিজিয়ে দিয়ে যায়। কমলা বাগান আর এলাচ বীথির ফাঁকে ফাঁকে বোনা আছে সার সার কফিগুল্মের ঝোপঝাড়। নাম না জানা পাখিদের ডাকাডাকি, পাতার আড়াল থেকে গড়িয়ে আসা রোদ, যখন তখন ঝিরঝিরে বৃষ্টি, কতো রকমের উদ্ভিদ গন্ধের অলস বিলাসিতা।



    মাদিকেরি থেকে গাড়িতে সাড়ে তিন ঘন্টা দক্ষিণে গড়িয়ে গেলেই কেরালার ওয়াইনাড় । উত্তর কেরালার নয়নাভিরাম পরম প্রকৃতির কেন্দ্রে ছোট্টো জনপদ। এখানকার পাহাড়-পর্বত, বনাঞ্চল, হ্রদ-বাঁধ, ঝরনা-নদী, পশুপাখি, সব মিলিয়ে বোঝা যায় কেন কেরালাকে ঈশ্বরের বাসভূমি বলা হয়। ওয়াইনাড়ই কেরালার কফি চাষের কেন্দ্র। শতকরা নব্বই ভাগ কফি চাষ এখানেই হয়।

    উনিশ শতকের শুরুতে ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানির সৈন্যরা মননথওয়াড়িতে স্থানীয় রাজা আর উপজাতিক সর্দারদের বিদ্রোহ দমন করতে এসেছিলেন। লড়াইটড়াই শেষ হয়ে যেতে কোম্পানি সিপাইদের চাষ করতে লাগিয়ে দেয়। মননথওয়াড়ি ছাড়াও তাঁরা অম্বুকুথি পাহাড় আর উপত্যকায় কফি চাষ করতে শুরু করে দেন। বিভিন্ন সাহেবরা তখন জমি ইজারা নিয়ে কফি এস্টেট খুলে বসেন। উনিশ শতকের সাতের দশকে সারা দাক্ষিণাত্যে প্রায় একশো কুড়ি হাজার একর জমিতে কফি চাষ হতো। তার মধ্যে ষাট হাজার একরই ছিলো শুধু মাত্র ওয়াইনাড়ে।

    এদেশে কফিচাষ ব্যাপারটা ছোটো ছোটো উদ্যমে করা হয়। শতকরা আটানব্বই ভাগ কৃষিই দশ হেক্টর জমির নীচে বাঁধা থাকে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেমন সমতলভূমিতে কফিচাষ করা হয়, ভারতে তা হয়না। এখানে পাহাড়ের ঢালে, বৃষ্টিনির্ভর চাষ-আবাদ করতে হয়। কায়িক শ্রমদানের অনুপাতও অনেক বেশি। বীজ তোলা, বাছা, রোদে শুকোনো সব কাজই শ্রমিক নির্ভর।

    পশ্চিমঘাটের দেখাদেখি পূর্বঘাটেও কফিচাষ শুরু হয়েছিলো। উত্তর অন্ধ্রের আরাকু উপত্যকায় ভালো মাত্রায় কফির কৃষি দেখা যাবে। ছবির মতো আরাকু উপত্যকায় সবুজ পাহাড়ের ঢালে দেখা যাবে কফি খেত। নিলীম নির্জনে একটা ভারি সুন্দর কফি হাউস আছে ওখানে। ওড়িশার 'দার্জিলিং' দারিংবাড়িতেও কফি চাষ শুরু হয়েছে।

    দক্ষিণ ভারতে 'কাপি' শ্রেণীমুক্ত পানীয় হয়ে গেলেও উত্তর ভারতে অনেকের কাছে তা যেন একটা 'শ্রেণীসত্ত্বা'র সূচক। চা যেভাবে জনতার পানীয়, কফি তা নয়। কফির একটা 'আপমার্কেট' আবেদন আছে। কালো কফি পান করার ইচ্ছা যেন 'চিন্তাশীল' মানুষের চিহ্ন। কফির সঙ্গে একটা 'এক্সক্লুসিভ' রেলা দাগিয়ে দেওয়া এদেশে মধ্যবিত্তের নির্ভুল লক্ষণ। কফিহাউসে আড্ডা না দিলে বাঙালি বৈতরণী পেরোতে পারেনা। কফি তা জানেনা ঠিকই। না জানিলে, আমার সকল গান তবুও তোমারে ....


    (সৌজন্য: প্রথম আলো)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৬ নভেম্বর ২০২০ | ৩৪০৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ranjan Roy | ০৬ নভেম্বর ২০২০ ২২:৫৮99695
  • বাঃ। লেখা ও ছবির চমৎকার যুগলবন্দী।

  • anandaB | 50.125.***.*** | ০৬ নভেম্বর ২০২০ ২৩:৩২99696
  • চমৎকার লেখা , এক ডাই হার্ড কফি সেবক (অবসেসড ও বলা যায়) এর তরফ থেকে ধন্যবাদ , অনেক কিছুই অজানা ছিল 


    তবে দুধ চিনি ইত্যাদি দিলে কফি আর কফি থাকে না - অবশ্যই ব্যক্তিগত পছন্দ বা মতামত

  • অরিন | 161.65.***.*** | ০৭ নভেম্বর ২০২০ ০২:৫৩99706
  • খুব সুন্দর লেখাটা। তিনটি ধর্ম তিনটি পানীয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, কফি যেমন ইসলাম, রেড ওয়াইন খ্রিস্টধর্ম, আর চা বৌদ্ধধর্ম। 

  • যোষিতা | ২২ জুন ২০২২ ১২:২২509261
  • জমিয়ে রাখার মত।
  • dc | 2401:4900:1f2b:ff2e:a53a:4fce:3c60:***:*** | ২২ জুন ২০২২ ১৮:১৩509272
  • কফির ইতিহাস পড়তে দারুন ভালো লাগলো। কফি আর চকোলেট, এই দুই সম্বন্ধে যতো পড়ি ততো ভালো লাগে। 
     
    আর শিবাংশুবাবুর সাথে এক্কেবারে একমত, ওয়েস্টার্ন ঘাটসের সৌন্দর্য অতুলনীয়। যেমন সুন্দর লাগে একেকটা ছোট ছোট লোকালয়ে থাকতে, তেমনি ভাল্লাগে ঘাটের রাস্তায় গাড়ি চালাতে। রাস্তাগুলোর বাঁকে বাঁকে একেক জায়গায় ছোট্ট ছোট্ট কফির দোকান থাকে, সেখানের মতো কফি শহরেও পাওয়া যায় না।
     
    আগের মাসে আমরা কুর্গ ছিলাম, সেখানে উইন্ডফ্লাওয়ার নামে একটা হোটেলে থেকেছিলাম। হোটেলটা মাডিকেরিতে। সেই হোটেলের বারান্দা থেকে আমার বৌ নাকি হাতির ডাক শুনতে পেয়েছিল, যদিও জনৈক হোটেল কর্মী বলেছিলেন সেটা কুকুরের ডাক। তবে কুর্গে নাকি বুনো হাতির উপদ্রব খুব বেড়ে গেছে। আর সেই হোটেল থেকে কফি প্ল্যানটেশান টুরের  ব্যবস্থা করেছিল, সেখানে জেনেছিলাম কুর্গে নাকি বেশীর ভাগই রোবুস্তার চাষ হয়, অ্যারাবিকা খুব কম হয়। আর একেকটা কফি গাছ নাকি একশো বছরের বেশী বাঁচে।  
  • dc | 2401:4900:1f2b:ff2e:a53a:4fce:3c60:***:*** | ২২ জুন ২০২২ ১৮:২০509273
  • এই সেই কফি প্ল্যানটেশান। সামনে একটা রোবুস্তা গাছের পাতা দেখা যাচ্ছে। রোবুস্তার পাতা একটু লম্বাটে হয়, আর অ্যারাবিকার পাতা একটু গোলমতো হয় (এ সবই প্ল্যান্টেশানের গাইডের থেকে জেনেছি)। আর কলাগাছের ​​​​​​​লোভে ​​​​​​​নাকি ​​​​​​​বুনো ​​​​​​​হাতিরা আসে। 
     
     
     
  • :|: | 174.25.***.*** | ২৩ জুন ২০২২ ০৪:৪০509286
  • "সুফি সাধক বাবা বুদান নাকি হজ করে ফেরার পথে ইয়েমেন থেকে লুকিয়ে সাতটি কফিবীজ সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন।" কেন, লুকিয়ে আনতে হয়েছিলো কেন? কোনও নিষেধাজ্ঞা ছিলো? তীর্থযাত্রী সাধকের সঙ্গে চৌর্যবৃত্তির ভাবটা ঠিক মানাচ্ছে না।
  • যোষিতা | ২৩ জুন ২০২২ ০৪:৫৫509287
  • কাহওয়া তো কাশ্মীরি ভাষায় চা কে বলা হয়, তাই না?
  • dc | 2401:4900:1f2a:6d7b:d8fe:30b6:4862:***:*** | ২৩ জুন ২০২২ ০৮:৪৮509291
  • আরেকটা জিনিষ বলতে ভুলে গেছিলাম। কুর্গের মেন বাস স্ট্যান্ড, অর্থাত KSRTC বাস স্ট্যান্ডের উল্টো দিকে তাজ এন্টারপ্রাইজ নামে একটা দোকান আছে, সেখানে কফি পাউডার, নানান স্পাইসেস ইত্যাদি পাওয়া যায়। সেখান থেকে এক কিলো কফি পাউডার কিনেছি, ৪৫% অ্যারাবিকা, ৪৫% রোবাস্টা, আর ১০% চিকোরি ব্লেন্ড। হাফ কিলো আমরা এনেছি আর হাফ কিলো শালাবাবু নিয়েছে। এই কফিটা অসাধারন খেতে, একেবারে সাউথ ইন্ডিয়ান কাপি। কেউ কুর্গে ঘুরতে গেলে এই দোকানে যেতে পারেন, দোকানের মালিক খুব অমায়িক আর হেল্পফুল।  
  • শিবাংশু | ২৩ জুন ২০২২ ১৫:৩৩509304
  • @:I:,
    হ্যাঁ, নিষেধ ছিলো। সেকালে ঐ বস্তুটি পান করার অধিকার ছিলো শুধু আরবি সুফি সাধকদের। তাও সাধনার অংশ হিসেবে।  

    @যোষিতা, হ্যাঁ, কাশ্মিরি ভাষায় কাহওয়া মানে চা। শব্দের অর্থ সম্প্রসারণের আদর্শ উদাহরণ। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন