অমিলপয়ার ছন্দে ফাল্গুনের এক বসন্তসন্ধ্যা নেমে আসছিলো আমাদের গ্রামে। বেঙ্গল ক্লাবে সারা রাতের অনুষ্ঠান। বুধাদিত্য বাজাবেন সেদিন। তিনি তখন যুবক এবং অদ্ভুত চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী নবীন প্রতিভা। সন্ধে আটটা নাগাদ অনুষ্ঠানের শুরু। সামনের দিকে সাকচি হাইওয়ের তেলেভাজার দোকানের পাশে বাইকটি লাগিয়ে আমি আর সুগত হলের দিকে এগোচ্ছি। অন্ধকার থেকে গেটের হ্যালোজেন আলোয় আসতেই দেখি সামনে পর্ণা আর একটি মেয়ে। প্রথম গেটে কার্ড দেখাচ্ছে। ঠিক পিছনেই আমরা। ময়ূরপঙ্খি রঙের সিল্ক থেকে মৃদু খসখস শব্দ আর অচেনা কোনও সুরভির অস্পষ্ট ইশারা। চুপ করে দাঁড়িয়েই ছিলুম। মুখ ফেরাতে দেখতে পেলো। ... ...
তোমারি তুলনা তুমি....
আজ তাঁর জন্মদিন। আমার জংলা ডায়রির কয়েকটা ছেঁড়া পাতা উড়িয়ে দিলুম তাঁর ফেলে যাওয়া পথে।
দাঁড়াও পথিকবর....জন্ম যদি তব অরণ্যে,
" সবুজ কাগজে
সবুজেরা লেখে কবিতা
পৃথিবী এখন তাদের হাতের মুঠোয়"
(বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়)
মহাভারতের কালে অঙ্গ ও বঙ্গদেশ শুধুই অরণ্য ছিলো। কিন্তু বাঙালির অরণ্যপ্রীতির ইতিহাস বিশেষ প্রাচীন নয়। রাজা রামমোহন বেশ কিছুদিন চাতরার জঙ্গলমহলে আমিন ও মুন্সির কাজ করেছিলেন প্রায় দু'শো ব্ছর আগে। যে চাতরা আজকের দিনেও প্রায় দুর্গম একটি ... ...
তোমার সুরের ধারা ঝরে যেথায়...
আসলে যে কোনও শিল্প উপভোগ করতে পারার একটা বিজ্ঞান আছে। কারণ যাবতীয় পারফর্মিং আর্টের প্রাসাদ পদার্থবিদ্যার সশক্ত স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে থাকে। পদার্থবিদ্যার শর্তগুলি পূরণ হলেই তবে মনন ও অনুভূতির পর্যায় শুরু হয়। যেমন কণ্ঠ বা যন্ত্র যদি সঠিক কম্পাংকে না বাজে বা রঙের দুনিয়ায় পরস্পর পরিপূর্ত বর্ণিকাবিভঙ্গ বিষয়ে যদি আঁকিয়ের ধারণা না থাকে, তবে তো প্রথম বেড়াটিই পেরোনো যাবেনা। যে সব শিল্পীদের সিদ্ধিলাভ হয়ে গেছে, তাঁদের শিল্প পরিবেশন, পদার্থবিদ্যা কেন, মননেরও প্রাথমিক ... ...
ওগো কাঙাল আমারে…..
এঁর গাওয়া গানের মহিমা বুঝতে বোধ হয় নিজেকে কিছুটা প্রস্তুত করতে হয়। তার মানে এর মধ্যে কোনও এলিটিস্ট দাগ কাটার কিছু নেই। রবীন্দ্রসঙ্গীত নামক শিল্পটি কীভাবে পরিবেশন করা যায়, সে বিষয়ে তাঁর নিজস্ব কিছু ধারণা ছিলো। তাঁর গায়নভঙ্গির সঙ্গে হিমালয়প্রমাণ পূর্বসূরিদের পরিবেশিত লোকপ্রিয় ধারাগুলির ফারাকটি প্রথম থেকেই বেশ স্পষ্ট। প্রথমত তাঁর কণ্ঠসম্পদ। দার্ঢ্য ও সুরের কারুকাজ একসঙ্গে এভাবে শ্রোতারা শোনেননি আগে। আমাদের বাল্যকালে সুনীল ... ...
বারো-তেরো বছর বয়স হবে তখন। বাবার সঙ্গে শরৎকালে যাচ্ছিলুম আমাদের দ্যাশের বাড়ি। থার্টি আপ নামক ট্রেনটি, এখন যার নাম কুর্লা এক্সপ্রেস, টাটানগর থেকে হাওড়া যেতে সব স্টেশনে দাঁড়াতো।প্যাসেঞ্জারের অধম। তখনও গীতাঞ্জলিই শুরু হয়নি। জ্ঞানেশ্বরী, আজাদ হিন্দ, দুরন্ত সব তখন স্বপ্নে। বম্বে যেতে আসতে টোয়েন্টি নাইন ডাউন বা রাতে বম্বে মেল। আমরা দিনের বেলা খড়গপুর যেতে গেলে থার্টি আপ ধরতুম টাটানগর থেকে। সকালবেলা 'ভাতেভাত' খেয়ে সেই যাত্রা। খড়গপুরে নেমে ধরতে হতো গোমো প্যাসেঞ্জার। বিকেল বিকেল পৌঁছে দিতো আমাদের দ্যাশের ... ...