শিপ অব থিসিয়াস ঃ কিছু ব্যক্তিগত কথা : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৯ আগস্ট ২০১৩ | ১০১৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৮
তাই এই ভীষণ চেনা মানুষগুলোর ভালোমন্দ দুরু দুরু বুকে দেখতে দেখতে একটা গোটা বড়োসড়ো সিনেমা পুরো উপভোগ করে ফেলি। আমার মনে মালগুডি ডেজ, চাঁদমামায় দেখা জাতকের গল্প ও ছবি, প্রিয় বান্ধবীর অ্যাকসেন্ট, প্রিয় বন্ধুর অর্থপিশাচ হয়ে যাওয়া, তিনটি মহাদেশ ও তার মানুষের ভালোমন্দের ছাপ, দারিদ্র্য, দারিদ্র্যকে ছাপিয়ে উঠে মানুষ হওয়া ও না হতে পারার অসহায়তা, আর এ যাবৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির ডিভিডি সংগ্রহের সমস্ত প্রিয় অপ্রিয় স্বল্পপ্রিয় চরিত্র জট পাকিয়ে যায়। যে দ্বন্দ্ব নিয়ে এই সিনেমা তৈরী, আমি সেই দ্বন্দ্বেরই শিকার হই। সিনেমাটা দেখার পরের আমি সিনেমাটা দেখার আগের আমিই আছি কিনা বুঝতে পারিনা। এর উত্তর জানা অবশ্য ততটা জরুরি কিনা জানিনা।
কৃষ্ণগহ্বরের প্রথম ছবি ও তার তাৎপর্য্য : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৮ এপ্রিল ২০১৯ | ৩২৪১ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৯
সুতরাং এক কথায় বলতে গেলে, কৃষ্ণগহ্বর আসলে বিশাল পরিমাণ পদার্থকে ঠেসেঠুসে রাখা এক বস্তুপিন্ড। ঘনত্ব বোঝাতে আবারো আমাদের উদাহরণে ফিরে যাই। যে নক্ষত্রটি নিয়ে আমরা কথা শুরু করেছিলাম, সেই সূর্যের থেকে দশগুণ ভারি যে, তাকে যদি ঠেসে নিউ ইয়র্ক শহরের চৌহদ্দির মধ্যে পুরে দেওয়া হয় তাহলে যেরকম ব্যাপার হবে, একটা ব্ল্যাক হোলের ঘনত্ব অনেকটা সেরকম। কৃষ্ণগহ্বরের মহাকর্ষীয় বল এতই বেশি (কারণ প্রচন্ড বেশি ভর) যে তা আসেপাশের সমস্ত বস্তুপিন্ডকে গ্রাস করতে থাকে। অন্য নক্ষত্র যদি কাছে চলে আসে তবে তারও সেই হাল হয়। তবে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ কথা, কৃষ্ণগহ্বরের থেকে আলো পর্যন্ত নিস্তার পায়না। ফলে কৃষ্ণগহ্বর দেখতে ঠিক কেমন -- এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা বলেছিলেন অন্ধকার এক বস্তুপিন্ডের কথা।
স্বাভাবিক তাপমাত্রায় অতিপরিবাহিতা ও সেই সংক্রান্ত সাম্প্রতিক বিতর্ক : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৪ জুন ২০১৯ | ১৪৫৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৯
২০১৮ সালের জুলাই মাসে অধ্যাপক পান্ডে এবং এবং তাঁর ছাত্র দেব কুমার থাপা একটি গবেষণাপত্রে ঘোষণা করেন যে তাঁরা এমন একটি পদার্থের সন্ধান পেয়েছেন যা ঘরের উষ্ণতায় অতিপরিবাহী [1]। এইরকম একটি পদার্থের খোঁজ বিজ্ঞানীরা অনেকদিন ধরেই করছেন, কাজেই পরীক্ষার ফল প্রকাশ করার পরেই গবেষকমহলে ব্যাপক সাড়া পড়ে। এবং খুব ভালো কোন কাজের ক্ষেত্রে যেমন হয়, বিশেষজ্ঞরা নানাভাবে খতিয়ে দেখার চেষ্টা করতে থাকেন, যে দাবিটি যথেষ্ট সঙ্গতিপূর্ণ কিনা। সেই সঙ্গতি খুঁজতে গিয়ে কিছু প্রশ্ন উঠে এসেছে যা তীব্র বিতর্কের জন্ম দেয়। এই বিতর্কের মীমাংসা এখনও সম্পূর্ণভাবে হয়নি, তবে ২০১৯ সালের মে মাসে ঐ একই গবেষণাপত্র আরো বিস্তারিতভাবে প্রকাশ করা হয়েছে। এই পরিবর্ধিত সংস্করণে পূর্বোক্ত গবেষকেরা ছাড়াও আরো কয়েকজন যুক্ত হয়েছেন। কিন্তু এই বিতর্কের আরো গভীরে ঢোকার আগে আমাদের গবেষণার বিষয়টি নিয়ে সামান্য একটু জেনে নেওয়া দরকার। সুপারকন্ডাক্টিভিটি বা অতিপরিবাহিতা খুবই জটিল তত্ত্ব, তাই আমরা যথাসম্ভব সহজ করে, যতটুকু না জানলেই নয় ততটুকুই জানবো।
জম্মু-কাশ্মীর : ৩৭০ ধারার উৎস ও তাৎপর্য্য : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০৯ আগস্ট ২০১৯ | ২৪৯২ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
১৯৫০ থেকে শুরু করে ২০১৮ পর্যন্ত মোট ৪৯ টি প্রেসিডেন্শিয়াল অর্ডার পাস করা হয়েছে। এর সবগুলোতেই রাজ্য সরকারের সাথে আলোচনা করে দুপক্ষের সম্মতিক্রমেই নেওয়া হয়েছে বলে প্রকাশ। এইসব রাজ্য সরকারের ক্ষমতা গত কয়েকদিন ধরে জম্মু-কাশ্মীরের শীর্ষ নেতৃত্বের অবস্থা দেখলেই অনুমান করা যায়। আর্টিকল 370 লোপ করার আগে থেকেই ওমর আবদুল্লা, ও মেহবুবা মুফতি গৃহবন্দী ছিলেন। সাধারণ মানুষের অবস্থা কেমন সেকথা দেশ বিদেশের সংবাদসংস্থার প্রতিবেদনে ভালোই বোঝা যায়। কোথাও অ্যাম্বুলেন্সে সন্তানের জন্ম দিতে হচ্ছে, কোথাও জানলা দিয়ে কর্তব্যরত সাংবাদিকের কাছে রোগীর অবস্থা জানতে চাইছেন আত্মীয়। বিক্ষোভ চলছে, পাথরের বিনিময়ে পেলেট গান চলছে। ৫০০ বিক্ষোভকারী গ্রেপ্তার হয়েছেন, অমিত শাহ দাবি করেছেন অবস্থা শান্তিপূর্ণ। পেলেট গানের জখমে কেউ মারা না গেলেও বহু মানুষ অন্ধ হবেন বলে মহারাজ হরি সিং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। এই ধরণের খবর আমাদের কাছে সকালের দুধ-সিরিয়ালের মত, তাই অত্যাবশ্যক কথা না বাড়িয়ে একসাথে করে রাখা তথ্যসূত্রে রেখে দেওয়া থাক সরকারের শান্তিপূর্ণ অভিযানের খবরাখবর ।
পুলওয়ামা বিস্ফোরণ, সর্বভারতীয় মব আর যুদ্ধ পরিস্থিতি : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | ২৮৩৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪৮
পুলওয়ামা বিস্ফোরণ পরবর্তী সময়ে দাঁড়িয়ে দেশজুড়ে যে জিঙ্গৈজমের রবরবা, তা যে মব মানসিকতা সেকথা বলার অপেক্ষা রাখেনা। যে চারাগাছে গত কয়েকবছর সারজল পড়েছিলো নিয়মিত, আজ তা মহীরূহে পরিণত। সেই একই রেটরিক, যুদ্ধ চাই যুদ্ধ চাই চিৎকার, সেই ইশকুল-কলেজ-অফিস ফেরত ভারতবাসীর আইপিএলসুলভ আবাল মস্তি নিয়ে যুদ্ধের গজল্লা ---কিচ্ছু পাল্টায় নি। যেমন পাল্টায়নি কাশ্মীর নিয়ে মানুষের সীমাহীন অজ্ঞতা, যদিও গুরুচন্ডা৯ প্রকাশিত কাশ্মীরের প্রথম সংস্করণ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। এই অবস্থায় কীই বা লেখা যায়? আমার জানা নেই কোন ভাষায় লিখলে, কোন শব্দ ব্যবহার করলে মানুষকে অন্য মানুষ সম্পর্কে সচেতন করা যায়।
ছায়ামারীচ : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ০৬ মে ২০১৬ | ১১৫৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ১০
- সাল সত্তরের শুরুও হতে পারে, আবার ওয়াইটুকেও হতে পারে। তুমি কোনটা চাও? তুমি পরে আছো খুব হালকা নীলচে জামা, ছাই রঙের ট্রাউজার। ফুলশার্ট, পাড়ার দর্জি হারুদা বানিয়েছে। সন দুহাজার হলে জামাটা গোঁজা। চশমা সত্তর হলে নেই, নয়ত আছে। তোমার হাইট পাঁচ ফুট আট, গায়ের রং প্রায় ফরসা, গাল একটু বসা।
কথা না বাড়িয়ে সোমনাথ হাঁটছিলো। গরম হাওয়া বইছে রাশবিহারী অ্যাভেনিউ বরাবর, ট্রামলাইন পেরিয়ে সে হাওয়া ঘুপচি দোকানগুলোয় ঝাপটা মারছিলো।
- ক্যালিফোর্নিয়া গ্যাছেন? ওখানে এমনি হাওয়া দেয় গরমে
এক বহিরাগত সিনেমাওয়ালা - শেষ পর্ব : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২০ ডিসেম্বর ২০১৭ | ১৩৫১ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
কিন্তু এসবের আগেও বলতে হয় "কভি হাঁ কভি না"র কথা। ১৯৯২ সালেই, "বাজিগর", "ডর" রিলিজ হওয়ার আগেই নির্মিত এই ছবি তৈরির গল্প নিজেই এক ট্র্যাজিকমেডি। জনপ্রিয় সিরিয়াল হিসেবে "ফৌজি" সার্কাস" ইত্যাদির পরে শাহরুখ একটু একটু নাম করেছেন। মুম্বই এসে একে একে ছবিতে কাজ পাচ্ছেন, সইটই চলছে। কুন্দনের সাথে "ওয়াগলে কী দুনিয়া" ও "উমীদ" বলে দুটি টেলিভিশনের কাজের সুবাদে শাহরুখের পরিচয় ছিলো। কভি হাঁ কভি না'র গল্প ভালো লাগায় কথাবার্তাও চূড়ান্ত হলো। ফি ছিলো পঁচিশ হাজার টাকা। এরপর ছবি তৈরি হয়ে বসে রইলো, ডিস্ট্রিবিউটররা কিনতে রাজি হলেন না (এ একেবারেই সুধীর ও বিনোদের মত দশা)। বাজিগর, ডর ততদিনে বেরিয়ে ব্লকবাস্টার, তাও এই অবস্থা। এসে গেল ১৯৯৪ সাল। ছবিটি কোনদিন দিনের আলো দেখবেনা বুঝে শাহরুখ নিজেই মুম্বই এলাকায় ডিস্ট্রিবিউটিং রাইটস কিনলেন। কুন্দন পরে বলেছেন, ঐ লো বাজেট ছবি যতদিনে খ্যাতি পায় বা কাল্ট হয়, ততদিনে একযুগ কেটে গেছে। ঠিক যেভাবে জানে ভি দো ইয়ারোঁ যেসব কলেজের ছেলেমেয়েদের সময় বানানো হয়েছিলো, সমাদর পেয়েছিলো তার পরের প্রজন্মের কাছে, সেইরকম।
এক বহিরাগত সিনেমাওয়ালা : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১০ অক্টোবর ২০১৭ | ১৪৭৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ২৪
কিন্তু এই কাজগুলোর সবকটাতেই সেই সময়ের দুটি চরিত্র স্পষ্ট। এক, এই সেই সময় যখন শিক্ষিত চাকরি করা স্বচ্ছল মধ্যবিত্তের সাথে নিম্নবিত্তের মানসিক দূরত্ব অনেক কম ছিল। দুই, ভারতীয় সমাজে তখনও ব্যক্তির থেকে সমষ্টির ভালোমন্দ বেশি গুরুত্ব পেত। এই দুটি ঘটনাই এখন অতীত, এবং ব্যক্তি বা সমষ্টির মধ্যে কার গুরুত্ব বেশি, সেই বিষয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই, কুন্দন শাহের ছবিতে কালের নিয়ম মেনেই সেই চিহ্নগুলো ফুটেছে শুধু এট্কুই বক্তব্য। কুন্দন শাহের বংশে সিনেমার কোন ইতিহাস নেই। পরিচালক হিসেবেও তিনি নিজেকে বর্ননা করেছেন বৃত্তের বাইরের একজন হিসেবে, যাঁকে মেইনস্ট্রিমে ফেলা যায়নি, এবং তথাকথিত প্যারালাল সিনেমার কুশীলবদের তালিকাতেও রাখা হয়নি। এমনও নয়, তিনি একমাত্র পরিচালক যিনি মধ্যবিত্তের সুখদুঃখ নিয়ে কাজ করেছেন। কুন্দন শাহকে শুধু আলাদা করেছে তাঁর গল্পের চরিত্রেরা, কারণ তারাও আসলে অনেকেই পরিচালকের মতই সাফল্য-ব্যর্থতার বৃত্তের বাইরের মানুষ, তাদেরও কোন হিসেবে এঁটে ফেলা যায় না। দেগে দেওয়া যায়না "ব্যর্থ" হিসেবে। বরং তারা অবলীলায় ব্যর্থতার লাশ বয়ে হাসি ঠাট্টায় মেতে উঠে পরবর্তী ব্যর্থ প্রোজেক্টের অনুসন্ধানে যাত্রা করে।
মানসের গল্প : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : উৎসব ২০১৪ | ১৯ অক্টোবর ২০১৪ | ১৩৫৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
সেদিন সকাল থেকেই মনটা কু গাইছিলো। কারখানা বন্ধ থাকায় কাজে যেতে হয়নি। আগের দিন মালফাল খেয়ে রাত করে বাড়ি ফিরলাম। মা ফালতু বাওয়াল দিলো, যদিও ঘুমচোখে বেশিক্ষণ টের পাইনি। সকাল থেকেই মাথাটা টলছিলো। বমি। বিকেলে ওরা ডাকতে এলো, ভাসানের প্রসেশন। একটু গুমোটের মত ছিলো দিনটা, আকাশটা ঝুলে নেমে এলে যেমন হয়, মেঘলা দলা দলা চিটচিটে আকাশ। আমার জানার কথা না, জানিওনা, যে এইরকম লিকুইড বোতলে ভরে বোমা বানানো হয়। কিন্তু আমি না জানলেও ঐ লোকটা জানতো। ফিনিশ-সোভিয়েত যুদ্ধের কথা, অ্যান্টি ট্যাঙ্ক গান্স কম পড়ার কথা, সে সালা ঊনিশশো ঊনচল্লিশ-চল্লিশের ঘটনা। লোকটা অত জানে, তবু পুজোকালের দিকে টেলিফোন বুথে দাঁড়িয়ে টাইমপাস করছিলো। কপাল মাইরি! অথচ আমার দেখা অল্পস্বল্প পাসফাস করা লোকজন দিব্যি বউবাচ্চা নিয়ে ভাসান দেখে চাউমিন খেয়ে নালেঝোলের জীবন কাটিয়ে গেল। যাই হোক, ফিনিশ শুনে আমার হেভি হাসি পেয়েছিলো। মজার নাম, না? ফিনিশ! সেদিন আরেকটু হলেই আমিও ফিনিশ হয়ে যাচ্ছিলাম। মুখে পেট্রলটা নিয়ে সবে ছুঁড়তে যাবো, আড়চোখে দেখি বেগুনি সালোয়ার পরে একটা মেয়ে, সাধনদার শালীফালি হবে মনে হয়, হাসছে। ব্যস, পেটে চলে গেল একঢোঁক। তখনই বসের সাথে আলাপ। হেঁচড়ে টেনে নিয়ে গিয়ে বাঁচিয়েছিলো।
নৈঃশব্দের উদ্দেশ্যে এক যুবা : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০৩ মে ২০১০ | ৭৪৫ বার পঠিত
ঘাতক, একাকিত্ব, মৃত্যু আর অন্ধকার। একের পর এক খালি ঘর পেরিয়ে যেতে যেতে দমকা হাওয়ার মত উপলব্ধি আসে। নীলাভ আলোর ছটা, পাহাড়ের চূড়া থেকে তীক্ষ্ম শব্দে যে প্রহর ঘোষণা করে, সেও একা। ঠাণ্ডায় কুঁচকানো শরীরটা জ্বরের ওম পেয়ে কেঁপে ওঠে। বৃক্ষের শাখা থেকে টুপিয়ে পড়ছে শিশির, রক্তের মত। নি:শ্বাসে বিষ নিয়ে ফুলে ভরে দিচ্ছে এক যুবা।
এক যে ছিলো রাজা : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২৫ মে ২০১০ | ৭৮৩ বার পঠিত
যুদ্ধ থামানোর গানের কথা মনে পড়ে। কি অদ্ভুৎ কাকতালীয় এই প্রস্থান। নাকি ইঙ্গিতবাহী বলবো? সরকারী প্রযোজনায় যাঁরা আগে যুদ্ধ থামাতে গান গেয়ে ফিরতো, আজ সরকারী যুদ্ধের দামামার মধ্যেই তাদের একজনের প্রস্থান। হীরক রাজ্যে বড়ো সুখের সময় ছিলো সেটা। আমলা আর মন্ত্রীদের বাড়বাড়ন্ত, বাকিদের নিত্য অনশন। রাজ্য জুড়ে অবিশ্বাসের বিষবাষ্প, স্বয়ং রাজারও নিস্তার নেই। নিজেদের চারপাশে তাকালেই এই অবিশ্বাসের হাওয়া টের পাই। খুব দ্রুত একটা আশচর্য্য প্রতিযোগিতামূলক ব্যবস্থায় আমরা এসে পড়েছি, এখানে শুধু কাজ আর টাকা, লালচোখ আর চাবুক। এখন কেউ কেউ যুদ্ধ করেই চলবে। এই যুদ্ধ ও আগামী অনেক যুদ্ধই চলবে বহুদিন ধরে। যতক্ষণ না শেষ মানুষটা মারা যাচ্ছে ততদিন। এখন যন্ত্রের বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়িয়ে কথা বলারও নেই কেউ। আমাদের চারপাশে অযুত যন্ত্রমানবেরা ঘুরে ফিরবে। তাদের অর্থলিপ্সা, সাফল্য আর বিকৃতকাম পর্বতপ্রমাণ হয়ে উঠলেও গদি টলাতে কেউ এগিয়ে আসার নেই।
অন্য বিশ্বকাপ : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ২০ জুন ২০১০ | ৭৮৭ বার পঠিত
যাই হোক, কাজের কথায় আসি। পঞ্জিকা থেকে পেস্টের বিজ্ঞাপন সর্বত্র বিশ্বকাপ নিয়ে কথা চালাচালি হচ্ছে। অতএব, বুলবুলভাজার কলামেও, অনিবার্য্যভাবে, এসে গেল বিশ্বকাপ। বা অন্তত উপলক্ষ্য। সবাই না হলেও, অনেকেই জানি জুন মাসের এগারো তারিখ দক্ষিণ আফ্রিকায় শুরু হয়ে গেছে বিশ্বকাপ ফুটবল। ঝাঁ চকচকে নতুন স্টেডিয়ামে একের পর এক প্রিয় তারকারা ঝলমলাচ্ছে।
ইরফানঃ এক বাগীর প্রস্থান : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৬ মে ২০২০ | ৩০৬২ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
ইরফানের মৃত্যুর পরে বিভিন্ন ভারতীয় পত্র পত্রিকায় তো বটেই, আন্তর্জাতিক খ্যাতির কারনে বিদেশী পত্রিকাতেও তাঁকে নিয়ে লেখাপত্র হয়েছে। সেখানে ইরফান সম্পর্কে এই বিষয়টিতে খুবই বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছে যে, তিনি এমন একজন অভিনেতা যাঁর অভিনেতা হওয়ার কথা নয়। এবং তারপরেও তিনি শুধু যে একরকম নতুন স্টারডমের সংস্কৃতিই তৈরী করলেন তাই না, এমন বেশ কিছু ছবিতে খুবই সাবলীলভাবে কাজ করলেন যেখানে তাঁকে কেউ কেউ বিবেচনাই করতে চাইবেন না। এই কথায় সত্যতা আছে। এই কয়েক বছর আগের সাক্ষাৎকারেও ইরফান বলেছেন অভিনয় করতে চাওয়া তাঁর "ইনার কলিং" না, বরং "কাল্টিভেটেড ডিজায়ার"।
উনিশে এপ্রিল এবং ঋতুপর্ণঃ ফিরে দেখা : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | আলোচনা : সিনেমা | ০২ জুন ২০২০ | ৩০৫৮ বার পঠিত
আমাদের ব্যক্তিগত আগ্রহের জায়গা, যদি সেটা ছবিটি সম্পর্কে জেগে ওঠে, সেখান থেকে অন্য একটা পথ চলা শুরু হতেই পারে। আমাদের পারিপার্শ্বিক, সামাজিক অবস্থান, যে পথ পেরিয়ে এসেছি সে পথের রক্ত ও কাদা আমাদের মনে করিয়ে দিতেও পারে অন্য কিছু। সেই অন্য কিছু, যা জরুরি ও অদরকারির মত পূর্বনির্ধারিত খোপে বসে নেই। সে কথা পরিচালক যে বলতে চাইছেন তাতে কোন সন্দেহ নেই। ক্রাফটের সীমাবদ্ধতা সেই যোগাযোগে ব্যর্থ হতে পারে কোন কোন ক্ষেত্রে, কিন্তু উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ থাকতে পারেনা। যেমন সন্দেহ থাকার কথা নয় রাজনীতি নিয়ে। উনিশে এপ্রিলে ২০২০ সালে আমি স্পষ্টই দেখি গায়ে হাত না তুলেও পিতৃতন্ত্র কীভাবে ছকের বাইরের লোককে রক্তাক্ত করতে পারে। প্যাসিভ অ্যাগ্রেশন কথাটা নব্বইয়ের দশকে জানা ছিলো কি অনেকের?
বাঙালির বারাণসী দর্শন পর্ব -১ : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক | ২১ জুন ২০২০ | ৫১১৭ বার পঠিত | মন্তব্য : ৬
ঘাটের কিনারায় আস্তানা গাড়া হলো। একেবারে ফেলু মিত্তিরের কাশীবাসের মতই পরের দিন সকালেই আলাপ হয়ে গেল একজন অদ্ভুত লোকের সাথে। ভদ্রলোক বাঙালী, দক্ষিণ কলকাতায় বাড়ি, তন্ত্রসাধনা সম্পর্কিত বই লেখেন। বয়সে আমার থেকে কয়েক বছরের বড়, শিবপুর বা যাদবপুর থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে একদা বহুজাতিকে চাকরি করেছেন। এখন সেসবে মন নেই। সংসারী মানুষ, কিন্তু বছরের বেশিরভাগ সময় আজ হিমালয় তো কাল কাশী এইসব করেন। বললেন কয়েকটা বই বেরিয়েছে, ছদ্মনামে (আমি খুঁজে দেখেছি, ঐ নামে লেখক ও তন্ত্র ইত্যাদির বই আছে, তবে একই লোক নাও হতে পারে)। এরপর ভদ্রলোক আমায়, বললে বিশ্বাস করবেন না, ভোরবেলার স্নিগ্ধ রোদে দাঁড়িয়ে সিগারেট খেতে খেতে, কোয়ান্টাম এন্ট্যাঙ্গেলমেন্ট নিয়ে চাট্টি ভাট দিলেন।
বাঙালির বারাণসী দর্শন পর্ব -২ : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক | ২৭ জুন ২০২০ | ৪২০২ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৯
মোড় থেকেই বিশ্বনাথ মন্দিরে যাওয়ার লোহার রেলিং-ঘেরা হাঁটার রাস্তা, লোকে ডালি-ফালি নিয়ে লাইন দিয়ে চলেছে। এদিকে একইরকম আরও একটা রাস্তার মসজিদে ঢোকার মুখে, যদিও সেখানে কেউ নেই। পাশে কয়েকজন পুলিশ জটলা করছে। পূর্বঅভিজ্ঞতা থেকে বুঝলাম জিজ্ঞেস করে লাভ নেই। তাই হেলতে দুলতে ওই রেলিং-ঘেরা জায়গাটা দিয়ে চলতে শুরু করলাম। কয়েকপা এগোতেই জটলাকারী পুলিশের দল ছুটে এসে জেরা শুরু করে দিল। ততক্ষণে বেশ রাগ হচ্ছে। কোথায় যাচ্ছেন, কেন যাচ্ছেন এসবের উত্তরে বললাম আর্কিওলজিকাল সাইট, তাই দেখতে এসেছি। খুব বিশ্রীরকম সন্দেহজনক দৃষ্টিতে দেখে নিয়ে, যাওয়ার নিয়ম নেই, বলে ভাগিয়ে দিল ওখান থেকে আমাদের।
বেড়ালটা কই, জাঁহাপনা? : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক | ০৪ জুলাই ২০২০ | ৩৮০০ বার পঠিত | মন্তব্য : ১২
২০১৪ সালের অক্টোবর নাগাদ তুরস্কে যখন যাই তখনও ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর প্রচণ্ড বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠেনি। যদিও দক্ষিণ পূর্ব সীমায় অবস্থিত নিমরুত পাহাড় থেকে পাঁচ ছ ঘন্টার মধ্যে এসে পড়েছে আইসিস, সীমান্তে জোর যুদ্ধ চলছে। আমাদের শেষ পর্যন্ত আর নিমরুত অবধি যাওয়া হয়নি, যুদ্ধ কাঁটাতার টপকে এদিকে চলে আসতে পারে এই আশঙ্কায়।
উষ্ণ প্রশ্রবণ আর চোখ ধাঁধানো পুরাতত্ত্বের পামুক্কালে থেকে দিনভর গাড়িতে মৌলানা জালালুদ্দীন রুমির স্মৃতিবিজড়িত কোনিয়া যাওয়ার পথে এক গ্রামে গাড়ি দাঁড়ালে হঠাৎ করেই চোখে পড়েছিলো পথের পাশে বইয়ের দোকান। সেখানে মোল্লা নাসিরুদ্দীন (তূর্কীতে নাসিরুদ্দীন হোজা) তাঁর প্রিয় গাধার পিঠে চেপে বইয়ের মলাটে হাজির। আকসাহির বলে যে ছোট শহরে তাঁর মৃত্যু হয় ও সমাধি, তার খুব কাছে এসে পড়েছি আমরা। নাসিরুদ্দীন এমন এক চরিত্র, যাঁর মধ্যে ইতিহাস ও কিংবদন্তী মিলেমিশে এমনভাবে জট পাকিয়ে আছে যে একটার থেকে অন্যটা আলাদা করা যায়্না।
আজি দখিন দুয়ার - পর্ব-১ : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক | ১১ জুলাই ২০২০ | ৪৩৪৮ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
ফার রাইট বা উগ্র দক্ষিণপন্থী দলের অ্যাজেন্ডায় যা আছে, সেইসব দলের মুখ্যনেতৃত্ব প্রথাগত লিবারাল সমাজের প্রতি যেসব অভিযোগগুলি করেছেন, বা নিজ নিজ দেশে তাঁরা যেসব সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন ও হচ্ছেন, সেগুলোর সবই মিথ্যাচার বা অতিরঞ্জন নয়। যেমন অর্থনৈতিক সংকট ও তজ্জনিত ধুঁকতে থাকা কর্মসংস্থান, উদ্বাস্তু সমস্যা, সেন্ট্রিস্ট আদর্শের মূলধারার রাজনৈতিক নেতৃত্বের দুর্নীতি, বা একরকমের সাংস্কৃতিক যুদ্ধ, যা নিজদেশে মানুষকে পরবাসী করে দিচ্ছে। এগুলোর কোনোটাও গালগল্প নয়, সাধারণ মানুষ বলে যে বহুস্তরীয় পদার্থটিকে নেতারা ভোটব্যাংক ভাবেন, তারা এইসব সমস্যা তাদের দৈনন্দিন জীবনে দেখতে পায়। কেন এই সমস্যাগুলি তাদের জীবনে মূর্তিমান উপদ্রবের মতো আসছে সে কথা ভাবতে গিয়ে তাদের অনেক সময়ই মনে হয় এইসব সমস্যার অনেকগুলোই জনবিস্ফোরণের ফল।
আজি দখিন দুয়ার—পর্ব-২ : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক | ১৮ জুলাই ২০২০ | ২৮৮০ বার পঠিত | মন্তব্য : ২
ব্যক্তিগত সমস্যায় জর্জরিত থাকলেই মানুষের অসহিষ্ণু হয়ে যাওয়াকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে হবে, এরকম নয়। আর সবাই যে দাঙ্গার জিগিরে প্রভাবিত হয়ে রয়েছেন, বা অতি দক্ষিণপন্থীর রাজনৈতিক চাল বুঝতে পারছেন না এমনটা নয়। এই নেতাদের সহিষ্ণুতা ও অসহিষ্ণুতার ফাঁকি, এলিট অবস্থানে থেকে এলিটিজম বিরোধিতা—এসব অসততা সমর্থকদের কাছে ধরা পড়ছে না এমন নয়। এখন প্রশ্ন হল, এই অসততা কি এতই মূল্যহীন যে অতি দক্ষিণপন্থার ঢেউয়ে ভেসে যাওয়া সমর্থকেরা সেসব বুঝলেও উপেক্ষা করছেন?
এর উত্তর পাওয়ার জন্য আমাদের ভেবে দেখতে হবে লিবেরালিজমের অসংগতিগুলো।
এ সপ্তাহের খবর্নয় ও খবর্দার : দ্বৈপায়ন বসু ও মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | খবর : খবর্নয় | ১৫ জুলাই ২০০৭ | ১২৬৮ বার পঠিত
Vanuatu নামে ছোট্ট একটা দেশ বা দ্বীপ পুঞ্জের এক অখ্যাত ব্যাঙ্ক। দেশ জোড়া এদের অনেক শাখা প্রশাখা, প্রচুর কাস্টমার, অনেক অ্যাকাউন্ট, চেক বুক এসব তো আছেই; তা ছারা এদের সুদের হার ১৫%। মর্টগেজ লোন, easy credit system সব কিছুর ই ব্যবস্থা আছে। তাহলে হঠাৎ করে আজ এই ব্যাঙ্ক টা খবরে উঠে এলো কেন? সেটা বুঝতে হলে ব্যাঙ্কের আমানত কারী দের সাথে একটু লাইনে দাড়াতে হবে।
খবর্নয়, খবর্দার (জুলাই ২২) : দ্বৈপায়ন বসু ও মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | খবর : খবর্নয় | ২২ জুলাই ২০০৭ | ১৪৫৪ বার পঠিত
এতদিন ন্যাপি কেনা, ন্যাপি বদলানো, ন্যাপি পরিষ্কার এই সব নিয়ে চিন্তায় থাকতে হতো নতুন হওয়া বাবা মা দের। কিন্তু এতদিনে হয়তো সমব্যাথি খুঁজে পেলেন তারা। কেনিয়ার লিমুরু শহরে নতুন আইন জারি হয়েছে যে শহরের সমস্ত বাসিন্দা, যাদের পোষা গাধা আছে, তাদের কে গাধা দের জন্য ন্যাপি কিনতে হবে এবং রাস্তায় বার করার আগে তাদের ন্যাপি পরিয়ে বার করতে হবে।
খবর্নয় খবর্দার (জুলাই ২৯) : মিঠুন ভৌমিক ও দ্বৈপায়ন বসু
বুলবুলভাজা | খবর : খবর্নয় | ২৯ জুলাই ২০০৭ | ১৭৫৪ বার পঠিত
ট্যাক্স নিয়ে ট্যাকটিসের কোনো শেষ নেই। উচ্চ, মধ্য, নিম্ন সর্ব ধরনের বিত্তবান মানুষের কাছেই ট্যাক্স মানে আতঙ্ক, ট্যাক্স মানেই তর্ক, ট্যাক্স মানেই সরকারি নীতির সমালোচনা, সরকার জনগনের ট্যাক্সের পয়সায় কোন অকাজ, কুকাজ করে বেড়াছে তার ফিরিস্তি। তো এত তর্কে না গিয়ে সবাই মিলে ট্যাক্স দেয়া বন্ধ করে দিলেই তো হয়। আমার দেওয়া এই সলিউশান টা খুব অদ্ভুত লাগছে কি শুনতে? তবে সোজা চলে যান লস অ্যাঞ্জেলেসের প্লেন ফিল্ডের ব্রাউন দের বাড়ি তে।
খবর্নয়, খবর্দার (আগস্ট ৫) : মিঠুন ভৌমিক ও দ্বৈপায়ন বসু
বুলবুলভাজা | খবর : খবর্নয় | ০৫ আগস্ট ২০০৭ | ১৭৩৬ বার পঠিত
আপনার কি অবাক হওয়ার ক্ষমতা কমে গেছে? হযবরল'র মামাদের মত কি আপনিও দিনদিন হোঁতকা থেকে হোঁতকাতর হয়ে পড়ছেন? এইবেলা চিকিৎসা করিয়ে নিন। নয়ত আর্থিক ক্ষতিস্বীকার করতে হতে পারে। বিশ্বাস হচ্ছেনা বুঝি? বেশ, কেভিন টেলরকে জিজ্ঞেস করুন। সদ্য আয়োজিত এক টেক্সট মেসেজ কন্টেস্টে কেভিনবাবু ১০০০ ডলার হাতছাড়া করেছেন, শুধু একটি ""! '' চিহ্নের জন্যে। নর্থ ডাকোটা স্টেট ফেয়ারে ঐ প্রতিযোগিতায় কেভিন টেলর আর বেথ ব্রেভিকের মধ্যে টাইব্রেকার চলছিল। শেষে দুই যুযুধানকে থামানোর জন্য সাডেন ডেথ চালু হয়। আর সেখানেই কেভিন ঐ মোক্ষম ভুলটি করেন, নিজের বাক্যের শেষে বিস্ময়বোধক চিহ্ন না দিয়ে। ফলে তাঁকে মাত্র ২০০ ডলার নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়।
খবর্দার (আগস্ট ১৯) : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | খবর : খবর্নয় | ১৯ আগস্ট ২০০৭ | ৮৫৭ বার পঠিত
একদিকে যখন বিজ্ঞানমনস্কতা বাড়ানোর জন্য নানা কর্মসূচী চালু হচ্ছে, ঠিক তখনই উইসকনসিনের একটি ঘটনা নতুন করে মনে করিয়ে দিল কুসংস্কারের পাঁচিলটা এখনো কতো মজবুত। মধ্যবয়স্ক এক মহিলা ""ধর্মাচরণের"" নামে প্রচন্ড উৎপাত করে গ্রেপ্তার হয়ে ঘোষনা করলেন, তিনি নাকি ডাইনি এবং তাঁর যাদুচর্চায় ব্যাঘাত ঘটিয়ে পুলিশ আইনভঙ্গ করেছে। গত মঙ্গলবার পূর্ণিমা ছিল। সেদিন মধ্যরাতে ব্রেনা নামের ঐ মহিলার প্রতিবেশীরা আতঙ্কিত হয়ে ফোন করে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ গিয়ে দেখে, নিজের বাড়ির পেছনে প্রায় দশ ফুট উঁচু আগুন জ্বালিয়ে তার চারদিকে ঘুরে ঘুরে চিৎকার করে মন্ত্র পড়ছেন ব্রেনা। কানের হেডফোনে রেকর্ড করা মন্ত্র বাজছে, আর তার সাথে মিলিয়েই চলছে তারস্বরে আবৃত্তি। পুলিশ নানাভাবে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ওদিকে তখন আগুনের তেজ আরো বেড়েছে। লেলিহান ঐ আগুনে ব্রেনা ছুঁড়ে দিচ্ছেন লাইটারের জ্বালানী তরল, পুরোনো টায়ার, কাপড় ও আরো অনেক কিছু। পরিস্থিতি সামাল দিতে এরপর পুলিশ ব্রেনাকে গ্রেপ্তার করে। তখন দেখা যায় ব্রেনা ভালরকম নেশাগ্রস্ত।
খবর্নয়, খবর্দার (আগস্ট ২৬) : মিঠুন ভৌমিক ও দ্বৈপায়ন বসু
বুলবুলভাজা | খবর : খবর্নয় | ২৬ আগস্ট ২০০৭ | ১৬৯৩ বার পঠিত
এই মুহুর্তে বিশ্বের বেশ কিছু বিজ্ঞানী এক অভূতপূর্ব গবেষণায় মেতেছেন, যা সফল হলে অদূর ভবিষ্যতে সম্পূর্ণ কৃত্রিম উপায়ে প্রাণ সৃষ্টি করা সম্ভব হবে। অদ্ভুৎ শোনাচ্ছে? তাহলে আরো শুনুন, বিজ্ঞানীরা এর মধ্যেই সময়সীমাও দিয়ে দিয়েছেন, আগামী ৩-১০ বছরের মধ্যেই তাঁরা ছুঁয়ে ফেলবেন এই মাইলফলক। কৃত্রিমভাবে তৈরী ঐ কোষের ভিত্তি হতে চলেছে ডি এন এ থেকে পাওয়া কিছু রাসায়নিক পদার্থ। কোষের মূল তিনটে অংশ বানানোর ছকও তৈরী। কোষপর্দা, যা একাধারে কোষকে ধরে রাখে, আকৃতি দেয় আর ক্ষতিকর পদার্থদের ঘাড় ধরে বের করে দেয়, সেটা বানানো-ই প্রথম ধাপ। আর হাভার্ড মেডিকেল স্কুলের বিজ্ঞানীরা এই কাজটা করে ফেলতে সময় নিচ্ছেন মাত্র ৬ মাস। তারপরেই শুরু হবে পরের ধাপ, অর্থাৎ কোষীয় বিপাকসমূহের সংযোজন।
খবর্নয়, খবর্দার (সেপ্টেম্বর ৩) : দ্বৈপায়ন বসু ও মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | খবর : খবর্নয় | ০২ সেপ্টেম্বর ২০০৭ | ১৬৬৬ বার পঠিত
ছোট্ট বেলা থেকে যে কয়েকটা বদভ্যাস নিয়ে আমরা বড় হয়ে উঠি, তার একটা হলো চুইং গাম বা বাবল গাম গুলো খেয়ে যেখানে সেখানে ফেলে দেয়া। আর সেই জিনিস টাও এমন যে, একবার যেখানে পরবে সেখান থেকে আর উঠবে না সহজে। সব কটা বড় শহরের রাস্তা ঘাট সাফ সুতরো রাখার পক্ষে খুব বড় বাধা এই জিনিস টা। সিঙ্গাপুর সরকার তো বাধ্য হয়ে চুইং গাম বিক্রি করাটাকেই বেআইনি করে দিয়েছে। তো, আমরা কি আমাদের এই বদ অভ্যেসটাকে বদলাতে পারি না? চেষ্টা করলে হয়তো করা যায়, কিন্তু এই বিশেষ অভ্যেস টা আসলে আমাদের মজ্জাগত, অথবা বিশদ ভাবে বললে আমাদের জিনগত। যীশু খ্রীষ্টের জন্মের প্রায় ৩০০০ বছর আগে থেকেই মানুষ এই বদ অভ্যেস টি রপ্ত করেছিল। সম্প্রতি তার ই প্রমাণ পাওয় গেলো ফিনল্যান্ডে।
খবর্দার (সেপ্টেম্বর ৯) : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | খবর : খবর্নয় | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০০৭ | ৬৯০ বার পঠিত
সৃষ্টিতত্ত্বে ডার্ক এনার্জির গুরুত্ব অপরিসীম। মহাবিশ্বের তিন-চতুর্থাংশ জুড়ে থাকা রহস্যময় এই ফোর্স প্যারামিটার স্পেস-টাইমের প্রসারণের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। আইনস্টাইনের এক গবেষণায় প্রথম এই ধারণার প্রচলন হয়, এবং প্রাথমিকভাবে পরিত্যক্ত হলেও ১৯৯০ সালে এর অস্তিত্ব প্রমাণিত হয়। ডার্ক এনার্জি সম্পর্কে আরো বিশদ জানতে NASA র একটি বিশেষ দল কাজ শুরু করছে, নাম দেওয়া হয়েছে Joint Dark Energy Mission (JDEM)। এরকম আরো একগুচ্ছ কর্মসূচী নিয়ে শুরু হতে চলেছে বিয়ন্ড আইনস্টাইন প্রোগ্রাম, যেখানে ঐ কিংবদন্তী বিজ্ঞানীর ভাবনায় ভর করে আমাদের জানাশোনার জগৎকে আরো প্রসারিত করা যাবে। এর মধ্যে আছে কনস্টেলেশান এক্স এবং লেসার ইন্টারফেরোমিটার স্পেস অ্যান্টেনা (সংক্ষেপে লিসা), যা এক্স রে ডিটেকশানের মাধ্যমে প্রকল্পিত "গ্র্যাভিটি ওয়েভ" এর অস্তিত্ব অনুসন্ধান করবে এবং ব্ল্যাক হোল ফাইন্ডার প্রোব ( BHFP )।
খবর্দার (সেপ্টেম্বর ১৬) : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | খবর : খবর্নয় | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০০৭ | ৭১৪ বার পঠিত
আজকাল প্রায়ই সিরিয়াল কিলারেরা খবর হয়। ""মানুষ মারার ১০১ সহজ উপায়"" নামে বই লেখা না হলেও, সহস্র সহজ এবং কঠিন পদ্ধতি আজ আমাদের হাতের মুঠোয়। এইসব হত্যাকাহিনীতে শুধু যে পদ্ধতিগত নতুনত্ব থাকে তাই নয়, খুন করার নিত্যনতুন কারণও আমরা শুনে থাকি। জানতে পারি, কিভাবে সভ্যতার ক্রমবিবর্তনের সাথে, মানসিক জটিলতা আর বিকৃতিও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। এইরকমই আরো একটি তদন্তের কাজ শেষ হল সম্প্রতি। অকুস্থল রাশিয়ার মস্কো। সেখানে জনৈক আলেক্সান্দার পিশকিন মাত্র ৩৩ বছর বয়েসেই ৬২টি খুন করে ফেলেছেন। এবং এর প্রত্যেকটি হত্যাই ঘাতকের আজব ও অসুস্থ খেয়ালের ফসল। দাবা খেলতে খেলতে একদিন আলেক্সান্দারের খেয়াল হয়, কেমন হত যদি দাবার ছকের ৬৪টি ঘরের প্রত্যেকটি কোন না কোন ব্যক্তির নামে উৎসর্গ করে দেওয়া যেত? যেমন ভাবা তেমনি কাজ।
খবর্দার (অক্টোবর ৭) : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | খবর : খবর্নয় | ০৭ অক্টোবর ২০০৭ | ১৭৭৬ বার পঠিত
ছোটবেলায় কুইজের বইতে পড়া মানুষের তৈরী প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহটির কথা মনে পড়ে? হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন। স্পুটনিকের কথা বলছি। গত চৌঠা অক্টোবর ছিলো সেই স্পুটনিকের জন্মদিন। আমরা জানি, আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগে, ১৯৫৭ সালের অক্টোবর মাসে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে উৎক্ষিপ্ত হয় এই কৃত্রিম উপগ্রহটি। ১৮৪ পাউন্ড ওজনের এই ধাতব গোলকটির সফল উৎক্ষেপণের সাথে সাথেই সূচনা হয়েছিলো এক নতুন যুগের। এর পরেই মহাকাশে একের পর এক নতুন কৃত্রিম উপগ্রহ পাঠানো হতে থাকে, এবং প্রতিটি সফল উৎক্ষেপণ খুলে দিতে থাকে সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত। সেই সাথে পাল্টাতে থাকে মানুষের জীবনযাত্রার ধরণ।
খবর্দার (ডিসেম্বর ৩০) : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | খবর : খবর্নয় | ৩০ ডিসেম্বর ২০০৭ | ৭৫৩ বার পঠিত
না, এটা কোনো কল্পবিজ্ঞানের গল্প নয়। বরং তিনমাস আগের একটা পুরোনো খবর। এই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে টিটিকাকা হ্রদের কাছে এক বিশাল উল্কা আছড়ে পড়ে। তার কিছুদিনের মধ্যেই কাছাকাছি অঞ্চলের বাসিন্দারা, বিশেষত যাঁরা উল্কাপাতের জায়গাটা দেখতে গিয়েছিলেন, তাঁরা অসুস্থ হয়ে পড়েন। মাথার অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে অনেকেই চিকিৎসাকেন্দ্রে যাওয়ার পরে রোগের কারণ নির্ণয় করার চেষ্টা শুরু হয়। পেরুর একদল বিজ্ঞানী উল্কাপাতের এলাকা ও হ্রদের তীরবর্তী অঞ্চল থেকে নমুনা সংগ্রহ করে অনুমান করেছিলেন ভূগর্ভস্থ কোনো জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে উদ্ভূত বিষাক্ত গ্যাস থেকেই এই বিপত্তি। পরে অবশ্য এই আশঙ্কা ভুল প্রমাণিত হয়। সম্প্রতি মাইনিং, মেটালার্জি অ্যান্ড জিওলজি ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা বলছেন, আর্সেনিকের ধোঁয়া প্রশ্বাসের সাথে গ্রহণ করেই এই অসুখ দেখা দিয়েছিলো।
খবর্নয় (মার্চ ৩০) : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | খবর : খবর্নয় | ৩০ মার্চ ২০০৮ | ৭৮৩ বার পঠিত
সপ্তাহে চারদিন ভোর চারটে বেজে পনেরো মিনিটে টড ম্যাথিউজের দিন শুরু হয়। এগারো ঘন্টা কাজের পর ছুটি। আধ মাইল দূরের পাহাড়ঘেরা বাড়িতে তখন বেলা পড়ে এসেছে। স্ত্রী লোরি, দুই পুত্র ডিলান আর ডেভিনকে খানিকটা সময় দিতে না দিতেই, সময় ফুরিয়ে আসে। পরবর্তী সাত-আট ঘন্টা টড কাটান অন্য এক জগতে, আক্ষরিক অর্থেই যা মৃতদের দেশ। তাঁর কাজের টেবিলে ছড়িয়ে থাকে নানা আকারের অসংখ্য মানবকরোটির ক্ষুদ্র সংস্করণ, কম্পিউটারের স্ক্রিন জুড়ে অজস্র মুখ-- মর্গে তোলা আলোকচিত্র, স্কেচ, ফরেনসিক রিকনস্ট্রাকশান .... হাজার হাজার মুখ আন্তর্জালে ভেসে উঠতে থাকে। সেইসব মৃত মুখ, যাদের পরিচয় তো দূরের কথা, নামই জানা যায় নি।
আজি দখিন দুয়ার পর্ব-৩ : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক | ২৫ জুলাই ২০২০ | ২৮৯৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ৫
পপুলিজমের বৈশিষ্ট্য, যেখানে সঠিক-বেঠিকের হিসেবের থেকেও মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা বেশি প্রয়োজনীয়। কন্তের বিরুদ্ধে একগাদা বিতর্ক, মূলত তাঁর সিভিতে যেসব ডিগ্রির উল্লেখ আছে সেগুলো নিয়ে। মোদীর entire political science-এর মতো মোটা দাগের মিথ্যা না, মমতা ব্যানার্জির জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হাস্যকর দাবি নয়, সুচারু অর্ধসত্য আর মিথ্যা দিয়ে সাজানো কন্তের ফোলানো সিভি। অন্যদিকে স্পেনের পাবলো ইগলেশিয়াসের Podemos পার্টি আঞ্চলিক রাজনীতি (যার শিকড় কিনা ভাষা ও সংস্কৃতিগত ভাবে স্বীয় স্বীয় অঞ্চলের এবং আলাদা) হাইজ্যাক করে নির্বাচনে কিস্তিমাত করেছে। তারা এখন তৃতীয় বৃহত্তম দল। যেসব আঞ্চলিক, প্রতিষ্ঠানবিরোধী ভোট নিজেদের দিকে টেনে এনে তারা জিতেছে সেই ইস্যুগুলো তাদের নিজস্ব কর্মসূচির নয়, সেই আন্দোলনগুলিতে তারা কস্মিনকালেও অংশ নেয়নি।
একটি গণহত্যা : কিছু এড়িয়ে যাওয়া প্রশ্ন : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১৫ জুলাই ২০০৭ | ৬১৩ বার পঠিত
১৬ই এপ্রিল ২০০৭। ভার্জিনিয়ার ছোট্ট শহর ব্ল্যাক্সবার্গে মারা গেল ৩২ জন; আহত ২৫। অনেক খবর, ভিডিও ফুটেজ, বক্তৃতা আর শোকবিবৃতিতে ভরে গেল সবকটি মাধ্যম। খবরের ফলো-আপ, ভিডিও ফুটেজ বিতর্ক, সংসদে হুল্লোড় সামলে শুরু হল অশ্রুমোচন। অত:পর আরো শোকবিবৃতি এবং চোখের জলে পৃথিবী টইটম্বুর। ঘাতক চো খবর হল। চো যাদের মারল সেইসব হতভাগ্যও বঞ্চিত হলনা। এবং যারা ঘটনার পর প্রায় একমাস ধরে শোকসভা করল, তারাও। শুধুই খবর। তারপর একসময় হ্যারি পটার, আসন্ন নির্বাচন ও মহাকাশবিজ্ঞানের মত জরুরি বিষয়ের চাপে হারিয়ে গেল ব্ল্যাক্সবার্গ ট্র্যাজেডি।
আজি দখিন দুয়ার -৪ : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক | ০১ আগস্ট ২০২০ | ২৩৯৩ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করাকালীন সেখানকার এক রসায়নের ছাত্রের সাথে আমার প্রায়ই গল্প হতো। ছেলেটি ব্রাজিলের, তখন সে ডক্টরেট করছে। ব্রাজিল বললেই আমার মন চিরকাল উচাটন হয়। রিও বা সাও পাওলোর ছবি, টিভির পর্দায় বা নেটে যেমন দেখেছি, ভেসে ওঠে। সিটি অফ গডের দৃশ্যাবলী, ফুটবল মাঠের ম্যাজিক স্টিলগুলো, অসংখ্য খেলোয়াড়ের নাম, তাদের নিয়ে মাতামাতি, বিশ্বকাপে কলকাতার চালচিত্র ---এইসব অজস্র ছবির কোলাজ। কিন্তু সেই ছেলের কাছে আমি অন্য এক ব্রাজিলের আঁখো দেখি গল্প শুনতাম। ছেলেটির বাবা একজন নামকরা সার্জেন, অগাধ পয়সা। এমনিতেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্কলারশিপ ছাড়া পড়া খুবই খরচসাপেক্ষ। সেই ছেলে খুবই অপরাধবোধ নিয়ে বলেছিলো, তার বাবার কাছে ঐসব খরচ গায়েই লাগেনি। একেবারে হাইস্কুল থেকে ছেলেটি তাই মার্কিন মুলুকের বাসিন্দা। স্কুল কলেজের পড়াশুনোয় তাকে কোনদিন কোন কাজ করতে হয়নি, অথচ তার বেশিরভাগ বন্ধুরাই নানারকম ছোটখাটো কাজ করতে বাধ্য হয়েছে পড়ার পাশাপাশি। ব্যক্তিগত প্রিভিলেজ, পারিবারিক বৈভব, ব্রাজিলের আর্থিক বৈষম্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে (পৃথিবীর অন্যত্রও) ক্রমশ বেড়ে চলা "ট্রাম্পিয়ানা" তাকে বিষন্ন করতো।
বেঁচে থাকার নিয়ম : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ১১ মে ২০০৮ | ৭০৩ বার পঠিত
আপনার কি মাঝে মধ্যেই দু:খ হয় এই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে না পারার জন্য? নিজেকে মিস্ফিট লাগে এই দুনিয়ায়? স্বপ্নে নিজেকে শিবরাত্রির সলতের মত নিভুনিভু দেখে ঘেমে ওঠেন? মনে হয়, বেঁচে থেকে কি লাভ? কিংবা, আপনার জীবনের ওঠা-পড়ায় কি আনন্দ কম পড়িয়াছে? আর চিন্তা নেই, অব্যর্থ সারভাইভাল স্ট্র্যাটেজি নিয়ে এসে গেছেন আমার আপনার সবার প্রিয় ঘোড়াদা। এখন কলেজ ক্যান্টিন থেকে বসের চেম্বার, ক্রিকেট ক্যাম্প থেকে মাছের বাজার, নন্দনকানন থেকে সুন্দরবন- সর্বত্র আপনাকে আগলে রাখবে "বেঁচে থাকার নিয়ম"।
শোকদিবস : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | আলোচনা : বিবিধ | ০৯ জুন ২০০৮ | ৬৫১ বার পঠিত
দেখতে দেখতে এক বছর হয়ে গেল। চলে গেল ১৬ই এপ্রিল। সময় নদীর মত, শতদু:খের ক্ষতস্থানও ধুয়ে শীতল প্রলেপ দেয়। গত বছর এই সময় সদ্য স্বজন হারানো মানুষেরা বুঝে উঠতেও পারছিলেন না, কিভাবে, কোন শক্তিতে ভর করে তাঁরা সামনের দিনগুলোয় পথ চলবেন। অথচ এখন সবকিছু কত স্বাভাবিক।
এখন শোকের তীব্রতা অনেক কমে গিয়েছে। সবাই আবার ব্যস্ত নিজেদের কাজকর্মে, রোজকার প্রতিযোগিতায়। দূর্গের মত বাড়িটার সামনে প্রস্তরফলক বসেছে সবার নামে নামে। তরতাজা ফুলের তোড়া সাজিয়ে রাখা হয়েছে সযত্নে। আর একটু পরেই চার্চের বাজনা বেজে উঠবে, শুরু হবে তেত্রিশজন অকালমৃতের স্মৃতিফলকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন।
আজি দখিন দুয়ার -৫ : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক | ০৭ আগস্ট ২০২০ | ৩৭৪৬ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪
আমরা বরং, এই দীর্ঘ ও ক্লান্তিকর যাত্রার শেষে, পপুলিজম কেন বিপজ্জনক সেটা বোঝার চেষ্টা করি। স্বাভাবিক বুদ্ধিতে পপুলিজম ব্যাপারটা মোটেই খুব একটা খারাপ বলে মনে হয়না। হাজার হোক, গণতন্ত্রের তো উদ্দেশ্যই মানুষের কথা আরো বেশি করে তুলে আনা, তাঁদের অভাব অভিযোগ গুরুত্বসহকারে ভাবা। একরকমভাবে এলিট শাসকদলের এইসব অভাব অভিযোগ সম্পর্কে ঔদাসীন্যই তো পপুলিস্ট বা তোষণের রাজনীতির কারণ। কিন্তু বিভিন্ন দেশে পপুলিস্ট দল বা নেতৃত্বের উত্থান এবং ঘটনাপরম্পরা খতিয়ে দেখলে বোঝা যায় বিপদটা কোথায়। আরো স্পষ্ট হয় ক্যারিশম্যাটিক জনপ্রিয় নেতাদের কার্যকলাপ দেখলে। সেখানে একটা স্পষ্ট প্যাটার্ন আছে।
আমরা যারা দিন আনি, দিন খাই পর্ব -১ : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক | ১৪ আগস্ট ২০২০ | ২৯৯০ বার পঠিত | মন্তব্য : ১৫
যৌবন গিয়ে প্রৌঢ়ত্ব ছুঁই ছুঁই, এমন সময় ছোটদাদু চাকরি থেকে বরখাস্ত হলেন। তখন চাকরি চলে যাওয়া তেমন কোন বড়ো ব্যাপার ছিলোনা, লোকের হামেশাই চাকরি যেত। পরিবারও খুবই সচ্ছ্বল ছিলো -- চারটি কন্যাসন্তানের পিতা ছোট্দাদু বাড়ি এসে "কোনো ভদ্রলোকের বাচ্চা চাকরি করেনা" ঘোষণা করে তাস পিটতে বসে গেলেন। যৌথ পরিবারের কর্তা, বড়োদাদু মার্চেন্ট আপিসের বড়োবাবু। তিনি নার্ভাস হয়ে পরের মাসেই একটা পাকা চাকরির বন্দোবস্ত করে বাড়িতে এসে ছোটভাইকে বলার পর ছোটদাদু নাকি অট্টহাস্য করে বলেছিলেন, "তোমার কি মাথা খারাপ হয়েছে বড়দা? সত্তর টাকার মাইনে পেয়ে এসে আমি এখন পঞ্চাশ টাকায় ঢুকবো?"! বলা বাহুল্য ছোটদাদুকে আর কোনদিন উপার্জন করতে দেখা যায়নি, এবং যৌথ পরিবারটি অনতিবিলম্বে স্বখাতসলিলে ধরাশায়ী হয়। তারপরের দুই প্রজন্ম মুখে রক্ত তুলে খেটেও সেই বিলাসিতার ঋণ চোকাতে পারেনি। যে দারিদ্র পাকিয়ে ধোঁয়া টানে কবি, যে দারিদ্রে জলের ছিটে দিয়ে উজ্জ্বল করে তোলে আঁকিয়ে - সেই রাজকীয় শিল্পমন্ডিত দারিদ্র নয়। শস্তা অগৌরবের দারিদ্র।
একটি নারীর মৃত্যু : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | গপ্পো | ০২ অক্টোবর ২০১১ | ৭৮৯ বার পঠিত
প্রতিদিন খুব ভোরে, কাক ডাকারও আগে নীলিমার ঘুম ভাঙে। দিনের এই সময়টা আকাশ ঘন অন্ধকারে ঢাকা থাকে, ঘড়ি দেখে বুঝতে হয় ভোর হয়েছে। শীত আসছে, এখন রাত শেষ হতে দেরি হয় খুব। আজকাল ঘুম থেকে উঠে একটা হালকা চাদর গায়ে না দিয়ে বেরোনো যায়না, মফস্বলের এই দোতলা বাড়িটা, তার বাসিন্দাদের মতই সর্বাঙ্গে কুয়াশার চাদর জড়িয়ে ঘুমিয়ে থাকে।
আমরা যারা দিন আনি, দিন খাই পর্ব - ২ : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : বিবিধ | ২৯ আগস্ট ২০২০ | ৩৭৭১ বার পঠিত | মন্তব্য : ৩
একবার একটি রুগ্ন ছেলেকে নিয়ে কী বিষম বিপদই না হয়েছিলো। মধ্য এশিয়ার যে অঞ্চল থেকে শাহেনশাহ বাবর এসে হিন্দুস্তানের দখল নিলেন, সেই বীররসসিক্ত ফরগনার আসেপাশে কোথাও একটি পরিবারের গল্প। বাড়ির ছেলেটি ছোট থেকেই রুগ্ন, প্রায় নানা অসুখ বিসুখে ভোগে। মধ্য এশিয়ার মানুষদের সাথে যাঁরা মিশেছেন তাঁরা জানবেন --- শারীরিক দুর্বলতা ওখানে একটা ভীষণরকম লজ্জার ব্যাপার। গল্পের রুগ্ন ছেলেটি, বাংলায় হলে হ্যত তার নাম হত অমল, সোভিয়েত আজ্ঞাধীন বর্তমান উজবেকিস্তানে তারই নাম হলো স্পার্টাক। তো, স্পার্টাক ছোট থেকেই বাড়িসুদ্ধ সবার আলোচ্য বস্তু। আমাদের দেশে হলে মা ঠাকুমা আজ এই মন্দির কাল সেই পীরের থানে মানত করত -- হেই বাবা রোগ ভালো করে দাও। কিন্তু স্থানমাহাত্ম্য এমনই, স্পার্টাককে নিয়ে বাড়ির লোকের আলোচনা --এর বোধহয় স্পার্মকাউন্ট খুব একটা ভালো হবেনা।
দোতলার এগজিট -১১ : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : কাব্য | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ২৬৪৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ১
আমরা অতীতে যেখানেই ছিলাম, যে প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা ভেঙে ফেলা খেলাধুলোয় ব্যস্ত ও ত্রস্ত মানুষ -- আমরা কেবল ক্যালাইডোস্কোপের মধ্যে নাড়াচাড়া করে দেখছি। দেখছি, অক্ষরগুলো এখনও বেঁচে আছে কিনা। দেখছি, গনগনে চিতার শিখার থেকে কেউ রুমাল নাড়ে কিনা। চিতাভস্মে সমান হবার যে আবেগপ্রবণ আকাঙ্খা তার লেশমাত্র নাই। এখন কেবল ধানখেতে কালো একটি ছেলে শুয়ে আছে, রক্তাক্ত। কালো কালির ওপর লাল কালির এই কাটাকুটি লিখেছিলেন ভাস্কর চক্রবর্তী। ব্যাপারটা তেমন কিছুই নয়।
বৃহত্তম গণতন্ত্র ও রেফারি : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | ভোটবাক্স : বিধানসভা-২০২১ | ১৮ এপ্রিল ২০২১ | ৩২৯৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ৬
সব ভালো জিনিসই এক সময় শেষ হয়। ভোটদান শেষ হলো। আবারো নানাবিধ হিসাবনিকাশ ও কাগজপত্রের পর, এবার ফেরার পালা। সব পাখী ঘরে ফেরে, কবি এরকম অযৌক্তিক দাবি করে থাকলেও, সব ভোটকর্মী ঘরে ফিরবেন এমন কোন নিশ্চয়তা নেই। ফেরার সময় হলে দেখা যায়, সোনার তরীর মত ট্রেকারের স্থান অকুলান। আসার সময় একটা ট্রিপে পাঁচজনকে নিয়ে এসেছে ট্রেকার, ফেরার সময় পাঁচজন এবং খেলার ফল সমেত ইভিএম ---সবার জায়গা নেই।
একটি আপাত পাশবিক গল্প : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | ইস্পেশাল : পুজো ২০১০ | ০১ অক্টোবর ২০১০ | ৬১৬ বার পঠিত
জীবনবন্ধু পালিতের বাড়ি ফিরতে রোজই একটু রাত হয়। নি:সন্তান, বিপত্নীক মানুষ, বয়স ষাট ছুঁইছুঁই। ছোট বেসরকারী ফার্মের ক্যাশিয়ার, সন্ধ্যে পেরোলে হিসেব মিলিয়ে বাড়ি ফেরেন। জীবনবন্ধু নামটা একটু খটমট, তাই আপিসে সংক্ষেপে ওঁকে জীবনবাবু বলে ডাকেন অনেকে। কেউ কেউ আড়ালে জীবুবাবুও বলেন। এমনকি কানাঘুষোয় শোনা যায়, সদ্য জয়েন করা ছোকরা পিয়ন কানাই নাকি একবার পালুবাবু বলেও ডেকেছিলো। এসবই জীবনবাবুর গভীর দু:খের কারণ।
দানিশ সিদ্দিকি : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : রাজনীতি | ২৪ জুলাই ২০২১ | ৩৩১২ বার পঠিত | মন্তব্য : ১২
দানিশ বারবার বলেন, জীবন বিপন্ন করে তিনি ছবি তুলতে চান না। এমনকি আহত হওয়ার বিনিময়েও একটা ভালো ছবি তুলতে চান না। বলেন, একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সাংবাদিক জানেন কীভাবে কনফ্লিক্ট জোন কভার করতে হয় নিজেকে বাঁচিয়ে। বন্দুক তাক করা উগ্র হিন্দুত্ববাদীর সামনে অনভিজ্ঞ সাংবাদিকরা ভুল করে চলে গেলে তিনি তাদের সরিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছিলেন, অসাধারণ এবং আর এস এস সন্ত্রাসের মুখ হয়ে ওঠা সেই ছবিটি তোলার থেকেও অক্ষত থাকা ও রাখাকে গুরুত্ব দিয়েছেন। বলেছেন, তিনি সবসময় নিজেকে ভয় পেতে শেখান, নইলে কখন এমন কিছু করে ফেলবেন যাতে শারীরীক ক্ষতি হবে। বলেছেন, তিনি যে অতিমানব নন, এটা নিজেকে ভুলতে দেননি কোনদিন। তাহলে কি ধরে নেব যে গড়পড়তা স্বার্থপর সংসারী মানুষের থেকে দানিশ সিদ্দিকি আলাদা কেউ নন? কিন্তু তাহলে দানিশের কর্মজীবনের প্রধান অ্যাসাইনমেন্টগুলো হিসেবে আঁটানো যাবেনা, যার মধ্যে মোসুলের যুদ্ধ, রোহিঙ্গা ক্রাইসিস, দিল্লির মব লিঞ্চিং, শ্রীলংকার বিস্ফোরণ এবং আফগানিস্তানের তালিবান আর আফগান সেনা সংঘর্ষ আছে।
অলিম্পিকঃ সাতটি তারার তিমির : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : খেলা | ২১ আগস্ট ২০২১ | ৩৮৩৫ বার পঠিত | মন্তব্য : ৭
সুতরাং আমরা এই লেখায় অন্তত কয়েকজন এমন ক্রীড়াবিদের নাম লিখে রাখি যাঁদের কথা শোনা যাচ্ছেনা। ধরা যাক দীক্ষা ডগরের কথা। গল্ফে অদিতি অশোকের পাশাপাশি ইনিও ফাইনাল রাউন্ডে খেলছিলেন। গল্ফেই উদয়ন মানে, অনির্বাণ লাহিড়ী পুরুষদের ইভেন্টে ছিলেন। ২০ কিমি রেসওয়াক ইভেন্টে ফাইনাল রাউন্ডে ছিলেন সন্দীপ কুমার, রাহুল রোহিলা, ইরফান থোরি (পুরুষ ), প্রিয়াংকা গোস্বামী এবং ভাবনা জাট (মহিলা )। মহিলাদের ডিসকাস থ্রো তে কমলপ্রীত ক'র । রোইং এ অর্জুন লাল এবং অরভিন্দ সিং। সেইলিং এ পুরুষদের ইভেন্টে বিষ্ঞু সার্ভানন, কে সি গণপতি, বরুণ ঠক্কর, এবং মহিলাদের ইভেন্টে নেত্রা কুমানন। শুটিং এ সৌরভ চৌধুরি। কুস্তির দীপক পুনিয়ার কথা আমরা তাও একটু আধটু শুনতে পেয়েছি, পঞ্চম স্থানে শেষ করায়। হাতে গোনা যে কয়েকজনের নাম এখানে লেখা হলো, এঁরা সবাই স্ব স্ব বিভাগে ফাইনাল রাউন্ডে উঠেছিলেন। এর বাইরে রয়ে গেলেন বহু ক্রীড়াবিদ, যাঁদের অনেকের নাম আর কোনদিনই প্রচারের আলো পাবেনা। প্রসঙ্গত ভারত এবার মোট ১২০ জনের দল পাঠিয়েছিলো, দেশের ইতিহাসে এর থেকে বেশি খেলোয়াড় আগে কখনো অলিম্পিকে অংশ নেন নি।
পথরেখা : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : বিবিধ | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ২১১২ বার পঠিত | মন্তব্য : ৭
সুবিনয় রায়ের গান শুনতে গিয়ে দেখলাম সেখানে বিভূতিভূষণ উপস্থিত। " কী অচেনা কুসুমের গন্ধে" জেগে উঠছে ছবি, আর আমি ভাবছি একের পর এক মৃত্যুমিছিলের কথা। যে মানুষ চলে গেলেন, তাঁদের যাওয়া নয়, তাঁদের সঙ্গে সামান্য কিছু কথা, দেখা, কয়েকটি মুহূর্ত। ছোটবেলার বন্ধু, বন্ধুদের বাড়ির লোক চলে গেলেন খুবই অলক্ষ্যে। আরো এমন অনেক মানুষ যাঁদের চিনিনা। কিন্তু শোক ছাপিয়ে এই ভাবনা প্রবল যে এই এঁদের সঙ্গে দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে সেইসব জমানো মুহূর্তেরা থেকে গেল। এইসব যখন হয়েছে, তখন ভাবিনি কোন কোন পথের বাঁকে আনন্দময় স্মৃতি জমে উঠছে। হেলায় কুড়িয়ে বইয়ের ভাঁজে রাখা সেসব ফুলই অপূর্ব রূপ নিয়েছে এখন।
পায়ের তলায় সর্ষে (এবং কোভিড) - পুয়ের্তো রিকো : পর্ব - ১ : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : ভ্রমণ | ১৩ নভেম্বর ২০২১ | ৩০৩৯ বার পঠিত | মন্তব্য : ১২
সেই ছোট থেকেই একটা রেটরিকাল প্রশ্ন শুনে আসছি - ন্যাড়া বেলতলায় যায় কবার? এসক্যাম্ব্রিয়ন সমুদ্রতটে পৌঁছে প্রশ্নটা মর্মে এসে বিঁধলো। বিশাল সমুদ্রতট, সাদা বালি দিয়ে ঢাকা। সমুদ্র যত নয়নাভিরাম, ততই ভীতিপ্রদ। জায়গায় জায়গায় বেজায় ঢেউ, দুয়েকজন সার্ফিং করছেও দেখা গেল। তার ওপরে দেখলাম বিস্তর লোক, প্রায় কার্নিভ্যালের মত আবহাওয়া। দিনটা শুক্র বা শনিবার নয়, সম্ভবত বুধবার। এত লোকের কি কোন কাজ নেই, কি জ্বালা ! মনটা দমে গেল, মানসচক্ষে দেখতে পেলাম আমায় খাবি খাওয়া অবস্থায় জল থেকে তুলে নিয়ে আসা হচ্ছে, তীরের লোকেরা হেসে খুন। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মত দেখলাম স্নরকেলিং এর বাকি সদস্যদের।
পায়ের তলায় সর্ষে (এবং কোভিড) - পুয়ের্তো রিকো পর্ব - ২ : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : ভ্রমণ | ২৭ নভেম্বর ২০২১ | ৩১১১ বার পঠিত | মন্তব্য : ৯
তীরে এসে তো আর প্রেস্টিজ ডোবাতে পারিনা, তাই মুখে হিন্দি শেখা ডাকাবুকো অভিনেতার মত হাঁ হাঁ কিঁউ নেহি টাইপের ভাব করে ভেসে পড়তে হলো। এই অঞ্চলটা প্রায় একইরকম তবে বৈচিত্র্য আরো বেশি। মিনিট কুড়ি ধরে সেখানেও কুস্তি করে তারপর একসময় মুক্তি পেলাম। বীরের মত জল থেকে উঠে এলাম, মুখের ভাবটা আরো ঘন্টা দুই জলে থাকতে পারলেই ভালো হতো। শুনলাম ৫০-৫৫ বছরের ঐ ভদ্রলোক, যিনি সপরিবারে স্নরকেলিং করতে এসেছেন, তিনি অগাধ সমুদ্রে সাঁতার দিয়ে একটা কচ্ছপের পেছনে ধাওয়া করেছিলেন। তারপর এতদূরে চলে যান (এবং কচ্ছপটা এতই দ্রুতগামী) যে তাঁর ভয় হতে থাকে ফিরতে পারবেন না। অতঃপর বুদ্ধিমানের মত ফিরে এসেছেন। বুঝলাম যে লড়াইটা আদপেই সংস্কৃত আর হিন্দির না, বস্তুত তারা হলো "অলসো র্যান" ক্যাটাগরি। আসল হিরো হলো হলিউড, সেখানে সবই সম্ভব। কচ্ছপটা জোর বেঁচে গেছে।
পায়ের তলায় সর্ষে (এবং কোভিড) - পুয়ের্তো রিকো পর্ব - ৩ : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : ভ্রমণ | ১১ ডিসেম্বর ২০২১ | ২২৬৪ বার পঠিত | মন্তব্য : ৪
২০২১ সালের গ্রীষ্মে স্যান হুয়ানের গভর্নর রিকার্ডো রোসেলোর কিছু চ্যাট মেসেজ কেন্দ্র করে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। ফাঁস হওয়া ঐ মেসেজগুলি রোসেলো এবং তাঁর ঘনিষ্ট বৃত্তের মধ্যে বিনিময় হয়েছিলো। সেগুলো থেকে জানা যাচ্ছে হারিকেন মারিয়ায় যাঁদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাঁদের প্রতি রোসেলো অ্যান্ড কোম্পানি খুবই উদাসীন মনোভাব পোষণ করে। এছাড়াও ঐ মেসেজগুলিতে নানা আপত্তিকর মন্তব্য এবং দূর্নীতির স্বীকারোক্তি রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ধুঁকতে থাকা অর্থনীতি নিয়ে অসন্তুষ্ট মানুষ এর পরেই রাস্তায় নেমে আসে। জালিয়াতির অভিযোগে রোসেলোর দুজন শীর্ষ আমলা গ্রেপ্তার হওয়ার পর, জুন মাস নাগাদ, ব্যাপার খুবই ঘোরালো হয়ে ওঠে। পুলিশ প্রতিবাদকারীদের হঠাতে গিয়ে বলপ্রয়োগ করে, ফলে আরো বেশি প্রতিবাদ, পুরো দ্বীপ জুড়ে অন্দোলন ইত্যাদি হয়। বিদেশ থেকে নামকরা কয়েকজন শিল্পী আসেন প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দিতে (তাঁদের একজন রিকি মার্টিন )।
পায়ের তলায় সর্ষে (এবং কোভিড) - পুয়ের্তো রিকো পর্ব - ৪ : মিঠুন ভৌমিক
বুলবুলভাজা | ধারাবাহিক : ভ্রমণ | ১৮ ডিসেম্বর ২০২১ | ২৩১১ বার পঠিত | মন্তব্য : ৬
আমরা ট্যাঁকখালির জমিদারের মত অন্য সমুদ্রতটে গিয়ে থানা গাড়লাম। দিব্যি ঝলমলে রোদ, পরিষ্কার বালি, র্যাল্ফ ফিনেসের চোখের মত রঙের দিগন্তবিস্তৃত সমুদ্রের জল --- হঠাৎ দেখলে মনে হবে এখানেই আসেপাশে একতা জেড পাথরের ঘর দেখতে পাওয়া যেতে পারে। শুয়ে বসে, বই পড়ে, জলের ধার দিয়ে হেঁটে, আবার ডাব খেয়ে কয়েক ঘন্টা কাটিয়ে আমরা দুগ্গা বলে গড়িতে উঠলাম। এবার ঘরের ছেলেমেয়ে ঘরেই অর্থাৎ স্যান হুয়ানে ফিরে যেতে হবে। পরের দিন ফিরতি ফ্লাইট। উত্তর পূব কোণ থেকে স্যান হুয়ান যাওয়া খুবই সোজা। সটান পুব বরাবর গেলেই আয়তক্ষেত্র সম্পূর্ণ হবে। তেমন তাড়াহুড়ো না করেই পুরো দ্বীপটা বেড় দিয়ে ঘুরে আসা গেল।