এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • রানি ও কলতান - ১৩

    Anjan Banerjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৭ মার্চ ২০২৫ | ৯৯ বার পঠিত
  • | | | | | | | | | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭
    ( ১৩ )

    বেলা সাড়ে বারোটা। সহদেবের ঘরের একপাশে রান্নাবান্না হচ্ছে। মুগের ডাল চড়েছে। আলু ভাজা বেগুন ভাজা, ফুলের তরকারি হবে। ভাজার তরকারি কাটাকুটি করছে মানু। সকাল সকাল বেরিয়ে মুরগির মাংস কিনে এনেছে সহদেব। একটা গামলায় মশলা টশলা মাখিয়ে একটা গামলায় ঢেকে রেখেছে মান্ডবী। কয়েকটা গার্ডেন চেয়ার পাতা হয়েছে ওখানে। প্রকাশ একটা ফোল্ডিং টেবিলও আনিয়েছে তার ঘর থেকে। কলতান এদিকে ওদিকে ঘুরে ফিরে একটা চেয়ারে এসে বসল। আর কেউ আসেনি এখনও। প্রকাশও আসেনি এখনও। সকালে অবশ্য বেশ গরম পড়ে গেছে। জায়গাটায় গাছের ছায়া আছে বলে রক্ষে।
    সহদেব এসে বলল, ' বাবু চা খাবেন নাকি ? '
    --- ' হ্যাঁ, তা এক কাপ হলে খারাপ হয় না ... ' কলতান বলল।
    --- ' আচ্ছা, বসুন বাবু ... এক্ষুণি আসছি ... '
    তিন মিনিটের মধ্যে চা নিয়ে এল সহদেব।
    --- ' চায়ের কাপ প্লেট কলতানের হাতে দিয়ে বলল, ' এই নিন বাবু ... '
    কাপ প্লেট হাতে নিয়ে কলতান বলল, ' অনেক ধন্যবাদ। মনটা একটু চা চা করছিল। তুমি এখানে একটু বস না ... একটু কথাবার্তা বলি ... আমি তো আজ চলেই যাব ... '
    সহদেব একটু ইতস্তত করে কলতানের সামনে একটা চেয়ারে বসল।

    কলতান আন্দাজ করল সহদেবের বয়স হবে চল্লিশের মতো। আর মানু... যা মনে হয়, পঁচিশ টঁচিশ হবে। প্রথম দর্শনে মনে হয়েছিল সাতাশ আঠাশ, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে পঁচিশের বেশি নয়। তার মানে সহদেবের সঙ্গে প্রায় পনের বছরের তফাত। এদের কথা অনুযায়ী রানির বয়স ছিল এগারো। তার মানে মানুর চোদ্দ বছর বয়সে বাচ্চা হয়েছিল। আর পরের মেয়ে, মানে তিন্নি হয়েছিল তার সতের বছর বয়সে। অসম্ভব কিছু নয় অবশ্য। এরকম অবশ্য হামেশাই হয় আমাদের দেশে।
    সহদেব বলল, ' আপনি আবার কবে আসবেন বাবু ? আমার মেয়েটা যে ওভাবে চলে গেল ... দোষীর কি শাস্তি হবে না বাবু ... মেয়েটাকে আমি এক মুহূর্তের জন্য ভুলতে পারি না ... আমরা তো আপনার মুখ চেয়েই বসে আছি স্যার ... ', বলতে বলতে সহদেবের চোখ অশ্রুসজল হয়ে ওঠে।
    কলতান চায়ের কাপ প্লেট পাশের চেয়ারে রেখে দিল। সহদেবের হাতের ওপর হাত রেখে বলল, ' আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি আর এক সপ্তাহের মধ্যে তোমার মেয়ের খুনিদের ধরে দেব ... শুধু তুমি যদি আমাকে একটু সাহায্য কর ... '
    সহদেব অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল কলতানের মুখের দিকে।
    বলল, ' আমি ? কি করতে হবে বলুন বাবু ... আমি যে কোন সাহায্য করতে রাজি ... '
    --- ' না না ... কোন কঠিন কাজ তোমাকে করতে বলব না। শুধু আমার কয়েকটা প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। উত্তরগুলো ঠিকঠাক হওয়া চাই ... '
    --- ' আচ্ছা ঠিক আছে বলুন বাবু ... '

    কলতান দেখল প্রায় পনের মিটার দূরে মান্ডবী রান্নার কাজে ব্যস্ত। কান খাড়া করে রাখলে তাদের কথাবার্তা শুনতে পাওয়া খুব কঠিন নয়। সে বলল, ' চল ... ওই দেবদারু গাছটার তলায় গিয়ে দাঁড়াই ... '
    --- ' আচ্ছা চলুন বাবু ... কিন্তু আপনার চা টা ... '
    --- ' ও ঠিক আছে, পরে খেয়ে নেব। গরম করে নিলেই হবে ... '
    সহদেব আর কলতান দেবদারু গাছটার তলায় গিয়ে দাঁড়াল।
    সহদেব চুপ করে অপেক্ষা করতে লাগল কলতানের কথার জন্য।
    কলতান বলল, ' সহদেব তোমাকে এই চাকরিতে কে নিয়ে এসেছিল ?
    --- ' ও ... আমাদের দেশের একজন, মাধব ওঁরাও ... আগে এখানে কাজ করত। পরে অন্য বড় জায়গায় কাজ পেয়ে যায়। গাছপালার কাজ আমার চেয়েও ভাল বোঝে ও ... '
    কলতান হঠাৎ বলল, ' সহদেব ... তোমার বিয়ে হয়েছে ক' বছর হল ? '
    সহদেব চুপ করে কি ভাবতে লাগল।
    --- ' কি ভাবছ এত ? ' কলতান বলে।
    সহদেব সামান্য লাজুক মুখে বলে, ' না মানে ... ওদিকে আমাদের ঘরে কম বয়সে বিয়া হয় তো ... '
    --- ' হুঁ হুঁ ... জানি ... '
    --- ' বাবু আমার সতের বছর বয়সে একটা বিয়া হয়েছিল ... '
    --- ' আচ্ছা ... তারপর ? '
    --- ' সে মেয়েটা একবছর পরে হঠাৎ কলেরা হয়ে মারা গেল। পয়সা ছিল না। তেমন চিকিৎসা করাতে পারি নাই ... কি বলব ... '
    সাতাশ বছর বয়সে বাবা মা আবার বিয়া দিল। ঘরে আর ক্ষেতে কাম কাজের জন্য লোকের দরকার ছিল ... উপায় নাই ... '
    --- হমম্ ... বুঝতে পেরেছি। তারপর ? '
    --- এক বছর পর একটা মেয়ে হল, মানে রানি হল ... '
    কলতান কোন কথা না বলে সহদেবের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।

    সহদেব বলতে লাগল, ' কিন্তু আমার কপাল খুব খারাপ বাবু ... রানির যখন দুবছর বয়েস তার মা মালিয়া একটা লোকের সঙ্গে ভেগে গেল। আগে কিছু বুঝতে পারিনি। কপাল এমন খারাপ, আমার মা বাবা দুজনেই মারা গেল ছ মাসের মধ্যে। ঘরে দু বছরের বাচ্চা ... আমি এতকিছু একা সামলাতে পারি ? বন্ধুদের পরামর্শে আমি আবার বিয়া করলাম। আমার এক বন্ধুই যোগাযোগ করেছিল... '
    --- ' মানে মানুকে বিয়ে করলে ? '
    --- ' হ্যাঁ বাবু। বিয়া মানে ওই ... একটা মন্দিরে গিয়ে ... '
    --- ' হ্যাঁ ... বুঝতে পেরেছি। মানুই তাহলে রানিকে মানুষ করল ? '
    --- ' মানুষ মানে ওই ... কোনরকমে বড় হয়ে গেল। নিজের মা না থাকলে কি আর সেই যত্ন হয় ? তবে কোনরকমে বেঁচে গেল তখনকার মতো ... কিন্তু শেষ পর্যন্ত তো বাঁচতে পারল না ... '
    --- ' হমম্ ... ঠিকই তো ... শেষ পর্যন্ত বাঁচতে পারল না। এর দাম মেটাতে হবে কাউকে কাউকে ... কথা দিলাম ... '
    কলতান একটু চুপ করে থাকল। তারপর বলল, ' সহদেব ... তারপর তিন্নি কবে হল ? '
    --- ' ওই... ওই ধরেন বছরখানেক পর ... '
    --- ' আচ্ছা ... যখন বিয়ে হয় মানুর তো বয়েস খুবই কম ... '
    --- ' কম মানে ... ষোল বছর। আমাদের ওদিকে তো এরকম বয়সেই মেয়েদের বিয়ে হয়। এর আগেও হয় ... '
    --- ' হমম্ ... বুঝলাম ... '
    কলতান মনে মনে হিসেব করে নিল মানুর বর্তমান বয়স পঁচিশ, আর সহদেবের উনচল্লিশ। হিসেবমতো তিন্নির জন্ম হয়েছে মানুর সতের বছর বয়সে।
    এরপর কলতান বলল, ' কিছু মনে ক'র না, তদন্তের খাতিরেই জিজ্ঞেস করছি ... মানুর সঙ্গে তুমি ঠিকমতো মানিয়ে নিতে পেরেছ ? '
    --- ' হ্যাঁ বাবু ... সেটা পেরেছি। ও খুবই ভাল। যত্ন না করুক, রানিকে কষ্ট তো কখনও দেয়নি। ও-ও তো একটা মা ...'
    --- ' আর তোমাকে ? '
    সহদেব হেসে ফেলল। বলল, ' আমাকেও ওই একই ... যত্ন না করুক, কষ্ট তো দেয়নি ... হেঃ হেঃ ... কি আর বলব ... '
    --- ' হ্যাঁ তা তো বটেই ... '
    কলতানের মনে হল পরিষ্কার উত্তর পাওয়া গেল না। অবশ্য সব উত্তর পরিষ্কার পাওয়া যাবে না এটা জানা কথা।
    সহদেব বলে যাচ্ছে, ' ওরা তো দেশেই থাকত। আমি এখানে একাই থাকতাম। প্রকাশবাবু আমাকে একদিন বলল, তোমার একা থাকতে তো অসুবিধে হচ্ছে। পরিবারকে এখানে নিয়ে এস। থাকার তো জায়গা রয়েছে। বাবুর কথা শুনে আমি মানু আর দুই মেয়েকে এখানে নিয়ে এলাম ... এই ধরেন প্রায় একবছর আগে ... '
    --- ' হ্যাঁ, সেটা তো আগে শুনেছি। সহদেব তুমি খুব সর্দি কাশিতে ভোগ, না ? '
    --- ' হ্যাঁ বাবু ... আপনি কি করে জানলেন সেটা ? '
    --- ' না মানে ... দেখছি তো সবসময় খুকখুক করে কাশছ ... এরকম শুকনো কাশি ভাল জিনিস নয়। ভালভাবে চিকিৎসা করাও ... '
    --- ' করাচ্ছি বাবু ... মানু প্রকাশজির কাছ থেকে ওষুধ নিয়ে এসে আমায় খাওয়ায় ... কাশির ওষুধ... '
    --- ' তাই নাকি ? রোজ খাও ওষুধটা ? '
    --- ' হ্যাঁ ... '
    --- ' ওষুধ ঠিক ঠিক মেপে দেয় তো ? '
    --- ' পুরো বোতলটাই রোজ খেতে বলে। মানু বলে, এর কমে কাজ হবে না। আমার নাকি টি বি হয়ে যেতে পারে এরকম কাশতে থাকলে ... খাওয়ার পরে খুব ঘুম পায় আমার। সঙ্গে সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়ি। এই তো কালকে বাইরে খাটিয়াটা ছিল, ওর ওপরই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম ... '
    --- ' হমম্ ... আচ্ছা সহদেব ... মানু তোমার কথা শোনে ? '
    --- ' হ্যাঁ ... মানে ... কি বললেন বাবু ? '
    --- ' না ... বলছি যে, আমিই তো আজকের এই খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারটা ঠিক করেছি ... মানুকে রান্নাবান্না করতে বলেছি। যাহোক দুচারজন লোক আসবে। তাই মানু যদি একটু সাজগোজ করে, মানে গলায় কোন হার টার পরে থাকে আমার খুব ভাল লাগবে। সে, পুঁথির হার হলেও চলবে। ভাল মানালেই হল ... বুঝলে ... আছে কিছু ? '
    এরকম একটা বিচিত্র প্রস্তাব শুনে সহদেব একটু চিন্তায় পড়ে গেল। সে মাথা নীচু করে ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করতে লাগল।
    কলতান হেসে বলল, ' না না ... অত চিন্তার কিছু নেই। বলে দেখ ... না শোনে তো কোন অসুবিধে নেই। জোর জবরদস্তির কোন ব্যাপার নেই।
    সহদেব ঘাড় নেড়ে বলল, ' ঠিক আছে বাবু ... আপনি বলছেন যখন ... '
    কলতান ভাবল ঢিল ছুঁড়তে ক্ষতি কি ... না লাগে না লাগবে। আর একটা ছুঁড়তে হবে। আর লেগে গেলে তো সোনায় সোহাগা।

    এই সময় কলতান দেখল, প্রকাশ আর সুজিত বর্ধন মাহির থেকে বেরিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলতে বলতে এদিকে আসছে।
    কলতান তাড়াতাড়ি বলল, ' ঠিক আছে সহদেব ... তুমি এখন ওদিকে যাও। আমি এদের দেখি একটু ... '
    সহদেব মাথা নেড়ে রান্নার দিকে চলে গেল।
    প্রকাশরা বাঁদিকে ঘুরে সহদেবের ঘরের দিকে যাচ্ছে। কলতান একটু দূরত্ব বজায় রেখে পিছন পিছন যেতে লাগল। প্রকাশ আর সুজিত বর্ধন দুটো চেয়ারে গিয়ে বসল।
    কলতান ওখানে পৌঁছে সুজিতবাবুর দিকে তাকিয়ে বলল, ' গুড আফটারনুন মিস্টার বর্ধন ... '
    --- ' আরে ... মিস্টার গুপ্ত ... নমস্কার নমস্কার ... কেমন আছেন ? কেমন লাগছে এখানে ? '
    --- ' দারুন দারুন ... প্রকাশবাবুর বেটার হাফ যে কিভাবে এত নিশ্চিন্তে তার বাপের বাড়িতে আছেন সেটা এনার রান্না খেলেই বোঝা যায় ... '
    শুনে ওরা দুজনই হো হো করে হাসতে লাগল।
    প্রকাশ বলল, ' কি যে বলেন কলতানবাবু ... হাঃ হাঃ হাঃ ... '
    সুজিত বর্ধন হাসতে হাসতে বললেন, ' ওঃ ... আপনি পারেনও বটে মিস্টার গুপ্ত ... '
    দুজনেরই হাস্যোচ্ছ্বাসটা বেশ বাড়াবাড়ি মনে হল কলতানের এরকম সাধারণ একটা কথায়।
    সে বলল, ' যাক ... আপনাদের হাসাতে পেরে ভাল
    লাগছে। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে হাসি জিনিসটা খুব দরকার। কে কতদিন হাসতে পারে কিছু বলা যায় না ... তাই সুযোগ পেলে হেসে নেওয়া ভাল।
    প্রকাশ হাসি থামিয়ে বলল, ' তা ঠিক ... তা ঠিক ... '
    কলতান বলল, ' নীতিনকে তো দেখছি না ... নীতিন ... মনোজকেও আসতে বলেছিলাম ... '
    প্রকাশ অবহেলাভরে বলল, ' ও ... এসে যাবে ঠিক ... চিন্তা করবেন না ... '
    --- ' হমম্ ... আসা তো উচিত। নেমন্তন্ন করলাম ... হ্যাঁ, প্রকাশজি ... ওটা কবে হবে ? '
    প্রকাশ ভ্রু কুঁচকে বলল, ' কোনটা ? '
    --- ' ওই যে ... আপনার পিতাজির কাছে নিয়ে যাবেন বলেছিলেন ... '
    --- ' না না ... ওটা আমি বলিনি। আপনিই বলেছিলেন। ঠিক আছে, যাব একদিন ... উনি আবার কখন কোন মুডে থাকেন ... '
    --- ' আরে, মুড নিয়ে আপনি চিন্তা করবেন না। ওটা আমি সামলে নেব। আমি খুব ভাল মুড ট্যাকল করতে পারি ... ফোনে কথা বলে ওনাকে তো খুব অ্যামিকেবল পার্সন মনে হল ... অসুবিধা হবে না ... '
    --- ' তা তো বটেই ... তা তো বটেই ... নাহলে আর আপনার কাছে যাওয়া কেন। ঠিক আছে, আজ ফ্রাইডে। নেক্সট মানডে তে চলুন ... এতে যদি আপনার ইনভেস্টিগেশানে সুবিধা হয় ... '
    --- ' সেটাই হল কথা। আসলে কথাবার্তা যত বেশি বলা যাবে, তদন্তের কাজ তত তাড়াতাড়ি এগোবে। আর হ্যাঁ, ইফ ইউ ডোন্ট মাইন্ড... ইনভেস্টিগেশন পারপাজেই দুটো ফোন নম্বর খুব দরকার ... '
    --- ' কোনটা ? ' প্রকাশ বিব্রত মুখে তাকিয়ে আছে।
    --- ' একটা আপনার মিসেসের আর একটা আপনার শ্বশুরমশাইয়ের, কানপুরের বা ভবানীপুরের ... যে কোনটা হলেই চলবে ... সব কিছুই তদন্তের স্বার্থে। তার বাইরে কিছু নয় ...
    --- ' আচ্ছা ... ঠিক আছে। দিয়ে দেব ... তাতে যদি আপনার পারপাজ সার্ভ করে ... আচ্ছা ঠিক আছে ... আমি আপনার নাম্বারে পাঠিয়ে দেব ... '
    --- ' থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ মিস্টার শ্রীবাস্তব ... '
    --- ' না না ... ঠিক আছে ...এতে আর থ্যাংকস দেবার কি আছে ? '

    বেলা দুটো বাজতে চলল। যাদের ডাকা হয়েছিল সবাই এসে গেছে। কাউকে না জানিয়ে থানার আই সি সব্যসাচী পাত্রকে ফোনে নিমন্ত্রণ করেছিল কলতান। দেখা গেল মাহিরের গেট পেরিয়ে তিনি হেলেদুলে এদিকে আসছেন। পরণে অপুলিশি পোশাক।
    তাকে দেখে কলতান এগিয়ে গেল ওদিকে। সব্যসাচীবাবু তাকে দেখে একগাল হাসলেন।

    খানিক বাদে দেখা গেল সৌভাগ্যক্রমে কলতানের ছোঁড়া ঢিল লেগে গেছে। মানু ঘর থেকে বেশ সেজেগুজে বেরিয়ে এল। গরীবের কুঁড়েতে গন্যিমান্যিরা পায়ের ধুলো দিয়েছে বলে কথা। মনোজও এসে গেছে। মোবাইলের দিকে একমনে চোখ রেখে বসে আছে। বোধহয় অস্ট্রেলিয়া আর ভারতের টেস্ট ম্যাচ দেখছে খেলা পাগল মনোজ, যার নামটা কলতান ইতিমধ্যেই সন্দেহভাজনদের তালিকা থেকে কেটে দিয়েছে।

    কলতানের চোখ আটকে আছে মানুর গলার দিকে। সেখানে শোভা পাচ্ছে একটা অবিকল ব্ল্যাক পার্লের মতো দেখতে কালো পুঁতির মালা, যার একটা দানা কোনভাবে কোথাও খসে পড়েছে। সূতোয় সামান্য একটুখানি ফাঁক, চোখ এড়াল না গোয়েন্দা কলতানের।

    ( ক্রমশ )

    ******
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    | | | | | | | | | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬ | ১৭
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • . | ০৭ মার্চ ২০২৫ ১৯:২৪541514
  • হুম্।
  • a | 220.253.***.*** | ০৭ মার্চ ২০২৫ ২১:৫৯541516
  • এটাকে সিরিজে জুড়ে দিন 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে মতামত দিন