এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • রানি ও কলতান - ১

    Anjan Banerjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১১১ বার পঠিত
  • | | | | | | | | | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬
    ( ১ )

    বেলা দশটা। বসন্ত কাল, কিন্তু মোটেই রোদ ঝলমলে নয়, মেঘলা আকাশ। আজ কালের মধ্যে বৃষ্টি হবে হয়ত। কলতান ভাবল কুলচা অনেকদিন আসে না। একটা ফোন করে দেখা যাক। কুলচার নম্বর ডায়াল করল কলতান। ফোন রিং হয়ে যেতে থাকল। শেষে নারীকন্ঠে ঘোষণা হতে লাগল --- আপনি যে ব্যক্তিকে কল করছেন তিনি এখন উত্তর দিতে পারছেন না ...
    কলতান লাইন কেটে দিল। ভাবল, হয়ত বাইরে কোন কাজে ব্যস্ত আছে। ফোন তোলার পরিস্থিতি নেই। কুলচার তো ব্যাঙ্গালোর যাওয়ার কথা ছিল ক'দিনের জন্য। সেখান থেকে ফিরেছে কিনা কে জানে। যাক, পরে আবার ডায়াল করা যাবে।

    নমিতাদি কফির মগ রেখে গেল। নমিতা এ বাড়িতে নতুন এসেছে। কলতান দুটো ছোট চুমুক মারল। বাংলা খবরের কাগজটা খুলে চোখ বোলাতে লাগল। ন বছরের একটা মেয়েকে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে মর্মান্তিকভাবে। বড় করে খবরটা করা হয়েছে। করাই উচিত। কলতানের বুকে যেন ছূঁচ বিঁধতে লাগল। এসব খবর পড়লে তাই হয়। কফির মগ পড়ে রইল। কলতান সোফায় হেলান দিয়ে নানা কথা চিন্তা করতে লাগল। তার মনে হল, একটা ঘৃণ্য অপরাধ তো হয়েইছে, যে পাপের বোঝা সমাজের সবার ওপর বর্তায়, কিন্তু আসল অপরাধি যদি ধরা না পড়ে এবং শাস্তি না পায় তাহলে আমাদের সকলের পাপের বোঝা আরও একশ' গুণ ভারি হবে তাতে সন্দেহ নেই । তদন্ত ঠিকমতো এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজটা অবশ্যই প্রাধান্য পাওয়া উচিত। তদন্তে শিথিলতা এবং গাফিলতি কলতানের দেহে মনে এক ভীষণ অস্থিরতা সৃষ্টি করে। অসহ্য লাগে। ছটফট করতে থাকে। কলতান আনমনে কফির কাপে আর একটা চুমুক দিল।

    কলতান ভাবল, কুলচাকে আর একবার ডায়াল করি। মোবাইলটা হাতে নিয়েছে এমন সময়ে ডোর বেল বেজে উঠল। কলতান উঠে গিয়ে দরজা খুলল।

    সামনে দাঁড়িয়ে এক বছর পঁয়ত্রিশের ঝকঝকে ফর্সা যুবক। মেরুন রঙের টি শার্ট, ঘিয়ে রঙের প্যান্ট পরা। হাতে দামী মোবাইল। কব্জীতে বিদেশী হাতঘড়ি। তার পাশে খানিকটা জড়সড় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে মোটামুটি চল্লিশ বছরের একজন শীর্ণকায় মানুষ। গালে দু দিনের না কামানো নুন মরিচ মেশানো দাড়ি। আধময়লা প্যান্ট আর মোটামুটি পরিষ্কার একটা কমলা রঙের শার্ট পরে আছে। এখানে আসবে বলে বোধহয় জামাটা বার করেছে। ওটা প্যান্টের সঙ্গে ঠিক মানাচ্ছে না। দুজনের দিকে চট করে চোখ বুলিয়ে নিয়ে কলতানের মনে হল লোকটির বোধহয় এই একটিই প্যান্ট এবং সে বাঙালী। সঙ্গের যুবকের মুখ দেখে অবাঙালী বলে মনে হল কলতানের।
    কলতান দুজনের চোখেই একবার করে চোখ রেখে বলল, ' হ্যাঁ, বলুন ... '
    মেরুন টি শার্ট পরা যুবক হাতজোড় করে সবিনয়ে বলল, ' নমস্কার স্যার ... আপনি কি মিস্টার কলতান গুপ্ত ? '
    --- ' হ্যাঁ ... বলুন ... '
    --- ' আপনার সঙ্গে একটু কথা বলতাম ... '
    --- ' আসুন আসুন ... ভেতরে আসুন ... '
    মেরুন টি শার্ট একটা সোফায় বসল। তার সঙ্গের লোকটি কাঁচামাচু ভঙ্গীতে হাঁটুর মাঝখানে করতল জড়ো করে রেখে তার পাশে বসল। বসে ভীরু দৃষ্টিতে কলতানের দিকে তাকিয়ে রইল ।
    মেরুন টি শার্ট বলল, ' স্যার ... আমার নাম প্রকাশ শ্রীবাস্তব। ডানকুনির কাছাকাছি থাকি। একটা ছোটখাট বিজনেস আছে। বড়বাজারে অফিস ... '
    --- ' কিসের ব্যবসা ? '
    --- ' জি ট্রান্সপোর্টের ... '
    --- ' ছোটখাট বিজনেস বলছেন কেন ? ট্রান্সপোর্ট বিজনেস ... '
    --- ' না ... আজকাল তেমন প্রফিট নেই এ লাইনে, তেলের দাম এত মাঙ্গা হয়ে গেছে ... তাছাড়া ঝামেলাও অনেক ... পুলিশ বহুত হ্যারাস করে ... যাক, ওসব বাদ দিন ... '
    --- ' পুরনো ব্যবসা ? '
    --- ' জি। তা পচপন ষাট বছরের হবে ... '
    কলতান দেখল অবাঙালী হলেও প্রকাশের বাঙলা উচ্চারণ শুনে বোঝার উপায় নেই। জন্ম কর্ম বোধহয় এখানেই । শুধু জি বলার অভ্যাসটা আছে।
    কলতান বলল, ' আচ্ছা ... তারপর বলুন ... '
    প্রকাশ তার সহচরকে দেখিয়ে বলল, ' এর নাম সহদেব মাহাতো। আমাদের ডানকুনির ওখানে বাড়িতে মালির কাজ করে ... আমাদের একটা বাগান আছে বাড়ির পাশে ... সেখানেই ... '
    সহদেব দাঁড়িয়ে উঠল। সন্ত্রস্ত ভঙ্গীতে বুকের কাছে হাতজোড় করে দাঁত বার করে বিনয় বিগলিত হাসি হেসে বলল, ' নমস্কার বাবু ... '
    কলতানও দুহাত জড় করে বলল, ' নমস্কার ... বস বস ... '
    সহদেব বসে পড়ল।
    সহদেব মাহাতোর হাব ভাব থেকে কলতানের মনে হল, এ সম্ভবত একটা ট্রমার মধ্যে আছে। সেটাই মনে হয় এই সম্ভাব্য কেসটার কেন্দ্রীয় বিষয়বস্তু।
    সে সহদেবকে জিজ্ঞাসা করল, ' তুমি কোথাকার লোক ? '
    সহদেব বলল, ' মেদিনীপুর ... '
    --- ' কোন জায়গায় ? '
    --- ' শালবনি বাবু ... '
    --- ' ও আচ্ছা ... ', তারপর প্রকাশের দিকে মুখ ঘোরাল।
    --- ' হ্যাঁ ... তারপর বলুন ... কি যেন বলছিলেন ...'
    প্রকাশ শ্রীবাস্তব সোজা হয়ে বসল, তারপর বলতে লাগল, ' বেশি কিছু না বলে আসল ব্যাপারটা বলছি। এ এর পরিবার নিয়ে বাগানের মধ্যেই একটা ঘরে থাকে। ওর বউ আর দুই মেয়ে নিয়ে থাকে ও, মানে... থাকত বলতে পারেন। ঠিক আট দিন আগে খবরের কাগজে যেরকম পড়ি আমরা সেরকম একটা ঘটনা ঘটেছে .... এ ঘটনাটা মিডিয়া কভারেজ পায়নি, তেমন কেউ জানে না ... বোধহয় নিউজটা কেউ কেউ প্রভাব খাটিয়ে সাপ্রেস করেছিল ... '
    --- ' কিরকম ? '
    --- ' ওর এগার বছরের একটা মেয়ে আছে, মানে ছিল ... ওর মানে বড় মেয়ে ... রানি। তাকে দশ তারিখে দুপুরবেলা থেকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত রানির ডেডবডি পাওয়া গেল প্রায় তিনশ মিটার দূরে আগাছা জঙ্গলের মধ্যে ছোট একটা পুকুরের ধারে ... '
    --- ' সে কি ! ' কলতান স্তম্ভিত হয়ে যায়।
    --- ' হ্যাঁ স্যার, খুব চান্স আছে ... রেপড হয়ে মার্ডার হয়েছে ... কি বলব ... বলতে পারছি না ... আমার কথা আটকে যাচ্ছে ... উপরওয়ালা যেন এদের মাফ না করে ... উঃ ... আমার সন্তানের মতো ছিল মেয়েটা ... '
    প্রকাশ দুহাতে মুখ ঢেকে মাথা নীচু করে বসে আছে।
    --- ' ও মাই গড ... কি বলছেন ! মাত্র এগার বছরের মেয়ে ... '
    প্রকাশ বলল, ' জি ... এদের জানোয়ার বললে কম পড়বে ... জানোয়াররাও এরকম হয় না ... উফফ্ ... '
    কলতান দেখল সহদেবের চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে। সে জামার হাতায় বারবার চোখ মুছছে বাকরুদ্ধ হয়ে।
    কলতান চুপ করে বসে রইল। ওদের সময় দিল মানসিক স্থিতিতে ফিরে আসার।
    পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হবার বলল, ' বলছি যে ... বডি কে প্রথম খুঁজে পেল ? '
    --- ' সহদেব আর একজনকে নিয়ে খুঁজতে বেরিয়েছিল রাত আটটার পরে। তার আগে দু এক জায়গায় খোঁজ করেছিল এরা, যেখানে রানির যাওয়ার সম্ভাবনা আছে, কিন্তু ওসব জায়গায় খোঁজ পাওয়া যায়নি ... ' প্রকাশ জানাল।
    --- ' হমম্ ...সহদেব তোমার সঙ্গে কে গিয়েছিল, তুমি যখন খুঁজতে গেলে ? '
    সহদেব ধরা গলায় বলল, ' নীতিন ... '
    --- 'সে কে ? '
    --- ' পাশে একটা দোকান চালায় ... সিগারেট, বিড়ি, পান মশলার ছোট দোকান। বিস্কুট টিস্কুটও পাওয়া যায়। ভাল লোক। ও সব শুনে বলল, চল খুঁজি ... '
    কলতান বলল, ' ঠিক আছে ...বুঝেছি ...'
    তারপর বলল, ' পুকুর ধারে, যেখানে ওগুলো হয়েছিল বলছ, সেখানে আলো ছিল ? '
    --- ' না ...অন্ধকার...' সহদেব সরল জবাব দিল।
    --- ' তাহলে ওই অন্ধকারে তোমরা তোমার মেয়েকে দেখতে পেলে কি করে ? '
    সহদেব আবার সরল জবাব দিল, ' টর্চ ছিল ... নীতিনের ... '
    --- ' ও আচ্ছা ... বুঝেছি ...'
    এবার প্রকাশের দিকে তাকিয়ে কলতান বলল, ' পুলিশ কেসটা টেক আপ করেছে নিশ্চয়ই ... '
    --- ' হ্যাঁ ... কিন্তু এখন পর্যন্ত কারও নামে এফ আই আর হয়নি, কেউ অ্যারেস্টও হয়নি ... '
    ---' পোস্ট মর্টেম হয়েছে ? '
    ---' জানি না ... আমাদের কিছু জানায়নি ... ওতে নাকি অনেক সময় লাগে ... '
    --- ' হমম্ ... বডির ক্রিমেশান হয়েছে নিশ্চয়ই...এক সপ্তাহের ওপর হয়ে গেল ... '
    --- ' হ্যাঁ দাহ কাজ হয়ে গেছে পরদিন বিকেলে ...'
    --- ' কারা দাহ করেছে ? '
    --- ' সহদেবরাই করেছে ... '
    কলতান এবার সহদেবের দিকে তাকাল।
    --- ' তোমার মেয়ের দেহকে কি পুলিশ তোমাদের হাতে তুলে দিয়েছিল ? '
    কান্না চাপা গলায় সহদেব বলল, ' হ্যাঁ বাবু ... '
    বলে, আবার জামার হাতায় চোখ মুছতে লাগল সে।
    কলতান সহদেবকে একটু সময় দিল তারপর জিজ্ঞাসা করল, ' স্পটটা, মানে তোমার মেয়ের দেহ যেখানে পেলে সেই জায়গাটার নাম কি ? '
    --- ' তেঁতুলতলা... '
    --- ' পুকুরের কোন দিকে ছিল দেহটা ? '
    সহদেব দ্রুত জবাব দিল, ' পশ্চিমদিকে। মানে ওই ... চালগুদামের দিকে ... '
    কলতান এবার তার আর্মচেয়ারে হেলান দিল।
    বলল, ' যাক, এতক্ষণ আসল কথাটাই জিজ্ঞাসা করা হয়নি। আপনারা আমার কাছে কেন এলেন ?'
    প্রকাশ এ প্রশ্নটার জন্য তৈরি ছিল।
    সে বলল, ' দেখে বুঝতেই পারছেন খুব হেল্পলেস এরা। আমরাও অবশ্য তাই। কিন্তু বুকের ভেতর জ্বালাটা তো আছে। পুলিশ কি করছে ঠিক বুঝতে পারছি না। কতদিনে কি হবে কিছুই বুঝতে পারছি না। এখন পর্যন্ত, যত দূর জানি, কোন অ্যারেস্টই হয়নি ... চার্জ ফ্রেম তো দূর কি বাত। তাই আমরা আপনার কাছে এসেছি ... মানে, আসল কালপ্রিট যাতে ধরা পড়ে, মানে জলদি ধরা পড়ে। সহদেবরা খুব ভেঙে পড়েছে, আমি এদের এই কষ্ট দেখতে পারছিলাম না ... তাই আপনার কাছে ওকে নিয়ে এলাম। যাতে ও একটু শান্তি পায়। আপনার সম্বন্ধে পাঁচ ছ বছর ধরে আমি অনেক কিছু শুনেছি। আপনার অ্যাড্রেস খুঁছে পেতে কোন অসবিধা হয়নি। আমার বিশোয়াস আপনি পারবেন ... শিয়োর পারবেন। প্লিজ আমাদের রিফিউজ করবেন না ... প্লিজ প্লিজ ... পুলিশ যা করছে করুক। আপনি আপনার মতো ব্যাপারটা যদি দেখেন। আর ইয়ে ... আমি আপনার কোন অসম্মান করব না ... শিয়োর ... '
    --- ' বুঝলাম না ... '
    --- ' ওই রেমুনারেশানটা ... '
    কলতান বলল, ' ও আচ্ছা আচ্ছা ... ওটা আপনি দেবেন ? '
    --- ' তাছাড়া আর কি করার আছে ... বিবেক বলে তো একটা জিনিস আছে ... এরা ভীষণ হেল্পলেস আছে ... বুঝতে পারছেন তো ? '
    --- ' তা তো বটেই ...বিবেক বড় বালাই, অবশ্য সেটা যাদের আছে। যাই হোক, নাম ঠিকানা, কন্ট্যাক্ট নাম্বার, ল্যান্ডমার্ক সব কিছু রেখে যান। আপনাদের দুজনেরই ফোন নাম্বার দেবেন। আর হ্যাঁ বড়বাজারে আপনার অফিসের অ্যাড্রেসও দিয়ে যাবেন ... '
    --- ' শিয়োর, শিয়োর ... তাহলে কবে কখন যাবেন স্যার ? ' প্রকাশ নাম, ঠিকানা, ফোন নাম্বার ইত্যাদি লিখতে লাগল কলতানের রাইটিং প্যাডে।
    --- ' সেটা এখন জানার দরকার নেই। আমি ঠিক সময়ে চলে যাব ... আচ্ছা সহদেব তোমার মেয়ের কাছে কোন মোবাইল ছিল ? '
    সহদেব সরল জবাব দিল, ' না না ... আমাদের মোবাইল কেনার পয়সা কোথায় ? '
    --- ' পুলিশের কুকুর এসেছিল ? '
    --- ' অ্যাঁ ... কি বললেন ... কুকুর ?
    কলতান বলল, ' পুলিশ কুকুর নিয়ে আসে না ... ওই যে ... গন্ধ শুঁকে শুঁকে বার করে ... '
    --- ' না না ওসব কিছু আসেনি। শুনেছিলাম আসবে ... কিন্তু কেন এল না বুঝতে পারলাম না ...'
    কলতান বলল, ' ঠিক আছে, আমার আপাতত আর কিছু জিজ্ঞেস করার করার নেই। খবর পাবেন। আমি সাধ্যমত চেষ্টা করব, যদিও ব্যাপারটা মোটেই সহজ নয় ... ঠিক আছে ... '
    কলতান উঠে দাঁড়াল। ওরা দুজনও উঠে দাঁড়াল।
    কলতান এগিয়ে গিয়ে সহদেবের কাঁধে হাত রেখে বলল, ' দুঃখ কোর না। চেষ্টা করব ... '

    ওরা বেরিয়ে যাবার পর হাওড়া জেলার অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার সুকমল পালধিকে ফোনে ধরল কলতান।
    --- ' হ্যালো,গুড মর্নিং কলতান ... কি খবর গো ...
    বুড়োটাকে ভুলে গেলে একেবারে ... '
    --- ' কি যে বলেন কমলদা ... আপনাকে ভোলার মতো অপরাধ এ জীবনে কখনও করব না। আপনার সঙ্গে কি আজকের সম্পর্ক ... আপনার কাছ থেকে কত হেল্প যে পেয়েছি তার ঠিক নেই ... সে সব কি ভুলতে পারি ... আয়্যাম রিয়েলি ইনডেটেড টু ইউ ... '
    --- ' অ্যাই অ্যাই ... এবার কিন্তু বাড়াবাড়ি করে ফেলছ ব্রাদার ... অ্যাকচুয়ালি ইট ওয়াজ মাই প্লেজার টু হেল্প ইউ। কত লোক উপকার পায় তোমার কাছ থেকে। আমি সব জানি। পুলিশ ডিপার্টমেন্টের পক্ষে তো সব কিছু সম্ভব হয় না ... অনেক কন্স্ট্রেন্ট থাকে ... বোঝই তো ... যাক, বল এবার আসল কথাটা বল। তুমি কাজের মানুষ। বেশি সময় নষ্ট করব না ... '
    --- ' বলছি যে ... ডানকুনিতে একটা কেস নিয়েছি ... '
    --- ' আচ্ছা আচ্ছা ... '
    --- ' ওখানে তেঁতুলতলা এরিয়ার আউটপোস্টের আই সি কে যদি একটু বলে দেন ... মানে যাব তো ওখানে ... প্রপার কোঅপারেশান না পেলে তো ... বুঝতেই পারছেন ...একটু ডিফিকাল্টি ফেস করতে হবে ...'
    --- ' ইয়েস, গট ইয়োর পয়েন্ট... গট ইয়োর পয়েন্ট... আমি খবর নিচ্ছি এখন কে আছে ওখানে ... এক ঘন্টা পরে ফোন করছি ... '
    --- ' ঠিক আছে কমলদা ... '

    সুকমলবাবুর ফোন এল আধ ঘন্টার মধ্যেই।
    --- ' হ্যাঁ বলুন কমলদা ... '
    সুকমলবাবুর জবাব এল, ' কলতান ... তেঁতুলতলা আউটপোস্টে ফোন করে তোমার কথা বলে দিয়েছি। ওখানকার আই সি-র নাম সব্যসাচী পাত্র। খুবই জেনুইন মেটিরিয়াল। ফ্রি হ্যান্ড দিলে অনেক কিছুই করে দেখাতে পারে। কিন্তু জানই তো ডিপার্টমেন্টের হাত পা নানা দিক দিয়ে বাঁধা ... তোমার নাম শুনে প্রচন্ড ইন্টারেস্টেড মনে হল ওকে। আশা করি, ইউ উইল গেট সাফিসিয়েন্টলি চ্যারিটেবল কোঅপারেশান ফ্রম হিম আফটার কমপ্লায়িং উইথ দা লিগ্যাল প্রোটোকলস অফ আওয়ার ডিপার্টমেন্ট ... '
    --- ' আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ কমলদা ... এতেই হবে। বাকিটা আমি দেখে নেব ... '
    --- ' শুধু ধন্যবাদ দিলেই হবে না। কেসটার ডিটেল জানার ব্যাপারেও উদগ্রীব হয়ে আছি ... অবশ্য কনফিডেনশিয়ালিটি মেনটেন করে ... '
    --- ' নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই কমলদা ... আপনাকে বলব না তো আর কাকে বলব ? কাজটা একটু এগিয়ে নিই তারপর ... '
    --- ' ও শিয়োর শিয়োর ... নেভার মাইন্ড... গো অ্যাহেড... '

    সুকমল পালধির ফোন ছাড়তে না ছাড়তে আবার ফোন বেজে উঠল। কলতান দেখল, Kulcha calling ...
    কলতান ফোন তুলল।
    ---' ফোন করেছিলে ? '
    --- হ্যাঁ ... তুই কি কলকাতায় আছিস ? '
    --- ' হ্যাঁ কলকাতাতেই আছি। কেন গো ... নতুন কেস এসেছে নাকি ? '
    --- ' হ্যাঁ ... খুবই মর্মান্তিক ইনসিডেন্ট ... '
    --- ' তাই নাকি ... স্টার্ট করেছ ? '
    --- ' কাল থেকে করব ... তবে তোকে এক্ষুণি আসতে হবে না। দরকার হলে আমি খবর দেব ... '
    --- ' ওকে ওকে ... তানমামা, আয়্যাম অলওয়েজ অ্যাট ইয়োর সার্ভিস ... গিয়ে সব শুনব ... '

    ( ক্রমশঃ )

    ****
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    | | | | | | | | | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • বিপ্লব রহমান | ০৩ মার্চ ২০২৫ ১১:২৭541452
  • অনেক দিন পর কলতান ফিরল! পড়ছি... cool
  • Anjan Banerjee | ০৩ মার্চ ২০২৫ ১১:৪১541455
  • ধন্যবাদ । সঙ্গে থাকুন।  
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন