এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • রানি ও কলতান - ৩

    Anjan Banerjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ০২ মার্চ ২০২৫ | ৯৮ বার পঠিত
  • ( ৩ )

    মিনিট দুই হাঁটার পর সহদেব রাস্তার ওপরে ডানদিকে একটা ছোট দোকান দেখিয়ে বলল, ' এই যে ... এটা নীতিনের দোকান ... '
    কলতান একটু দাঁড়িয়ে গেল দোকানটার সামনে। ছোট দোকান। পান বিড়ি সিগারেট, কম দামি বিস্কুট লজেন্স, টফি, হজমিগুলির বয়াম, ডান্ডায় ঝোলানো নানারকম পান মশলার পাউচের ছিগলি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে।
    ওদের দেখতে পেয়ে ভিতর থেকে একজন রোগামতো দাঁত উঁচু ফর্সা দেখতে লোক বেরিয়ে এল। হলুদ হাফ শার্ট আর নেভি ব্লু রঙের প্যান্ট পরে আছে। ব্যাক ব্রাশ করা চকচকে কালো চুল। একগাল হেসে কলতানের সামনে এসে বলল, ' কলকাতা থেকে ... না ? '
    সহদেব বলল, ' হ্যাঁ ... কলকাতার ... পুলিশের বাবু ... রানির ব্যাপারে খোঁজ করতে এসেছেন ... ওই যে বললাম না ... ইনার বাড়িতেই নিয়ে গিয়েছিল মেজবাবু ... '
    নীতীন বলল, ' হ্যাঁ হ্যাঁ ... বুঝেছি বুঝেছি ... '
    কলতান দোকানের খুব কাছে গিয়ে ভিতর দিকে চোখ বোলাতে বোলাতে বলল, ' আরে ... ভুল করছ ... আমি পুলিশের লোক নই ... আমি সাধারণ লোক ... '
    নীতিন দাঁত বার করে হেসে বলল, ' হ্যাঁ, জানি স্যার ... ডিটেকটিভ ... '
    --- ' জেনে ফেলেছ তা'লে। কি আর করা যাবে ...আচ্ছা নীতিন, তোমার এই দোকানটা কতদিন হয়েছে ? '
    --- ' এই সাত আট বছর হবে ... '
    --- ' ও আচ্ছা ... '

    কলতান দেখতে পেল দোকানের ভিতরের দেয়ালে তারা মা, গণেশ, শিব ইত্যাদি নানা দেবদেবীর বাঁধানো মলিন ছবি রয়েছে। একটা লোকনাথ ব্রহ্মচারির রঙীন ছবিও রয়েছে। সেটা বাঁধানো নয়। কলতানের চোখে পড়ল, আরও দু একটা আইটেম রয়েছে দোকানে। যেমন, মেয়েদের কপালে পরার অ্যাডহেসিভ লাগানো টিপ এবং লাল সাদা এবং হলুদ রঙের চুল বাঁধার সিল্কের রিবন। কলতানের চোখে পড়ল তিন রকম রঙের টিপ রয়েছে ... লাল, সবুজ আর খয়েরি।
    কলতান বলল, ' তোমার তো এটাই পেশা ... মানে, এর রোজগার থেকেই তো সংসার চলে ? '
    --- ' হ্যাঁ স্যার ... আর কি থাকবে ? আমার আর কতটুকু খ্যামতা ? '
    --- ' না না ... তা কেন হবে ... ক্ষমতা থাকতেই পারে ... খুঁজে বার করতে হয় ... '
    --- ' কোথায় আর কি খুঁজব স্যার ? আমাদের মতো মানুষ ... '
    --- ' সেটা আমি কি করে বলব ? ওটা তোমার ব্যাপার ... তোমাকেই খুঁজতে হবে ... তবে তুমি কিন্তু সহদেবের খুব উপকার করেছিলে। তুমি না থাকলে বডি খুঁজে পাওয়া মুশ্কিল হয় যেত ... '
    --- না না ... এ আর কি উপকার ... ওর যে কত বড় ক্ষতি হয়ে গেল নিজে মেয়ের বাবা হয়ে তো বুঝি ... ছাড়বেন না স্যার .. একদম ছাড়বেন না ... যারা করেছে তাদের ফাঁসি দিয়ে ছাড়বেন ... ', নীতিন বেশ উত্তেজিত হয়ে উঠল।
    কলতান বলল, ' হ্যাঁ সেটাই তো চাই ... দেখা যাক ... চল সহদেব এগনো যাক ... ঠিক আছে নীতিন আবার পরে কথা হবে ... এখন আসি ... '
    সহদেব যেতে যেতে বলল, ' নীতিন বড় ভাল লোক ... '
    --- ' তাই তো মনে হল ... ' কলতান বলল।

    ঘরবাড়ি, দোকানপাট ছাড়িয়ে খানিকটা ফাঁকা জায়গায় এসে পড়ল কলতানরা।
    আর একটু এগিয়ে সহদেব বলল, ' আসুন বাবু ... এই দিকে ... '
    আগাছা টাগাছা সরিয়ে ওদিকে এগোল সহদেব। কলতানও ওর পিছনে পিছনে গেল। ভিতরে একটা ছোট ডোবা আছে। ডোবাটার পাশে বড় বড় ঘাসে ঢাকা বেশ খানিকটা জমি। চারদিকে আগাছা থাকায় ভেতরটা ভালভাবে দেখা যায় না।না। গরমকাল এখন, অনেকদিন বৃষ্টি নেই। ডোবাটা একদম শুকনো। ঘাস মাটির সবই একদম শুকনো। মাথার ওপর সূর্যের প্রচন্ড তাপ।
    সহদেব বলল, ' এই যে ... ঠিক এইখানটায় মেয়েটা পড়ে ছিল ... ', সহদেবের চোখ ছলছল করতে লাগল।
    কলতান জায়গাটার চারপাশে চোখ বোলাতে লাগল। জায়গাটা ঘিরে চারদিকে পায়চারি করতে লাগল মাটির দিকে চোখ রেখে। একপাশে মাটির ফাঁকে একটা ছোট্ট চকচকে জিনিস উঁকি মারছে। কলতান হাতে তুলে নিয়ে দেখল, একটা দশ টাকার কয়েন। কলতান রুমাল দিয়ে তুলে তার ব্যাগে রাখল। কোন কিছুই তুচ্ছ নয়। ভাবল, এখানে কে এসে পয়সা হারাল ?

    মাটি বা ঘাসে কোন ধস্তাধস্তির চিহ্ন দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না .... ভিজে থাকলে হয়ত কিছু চিহ্ন পাওয়া যেত। রক্তের দাগ থাকলেও তা শুকিয়ে শুকনো মাটিতে মিশে গেছে। সাদা চোখে কিছু বোঝা গেল না।

    কলতান সহদেবের পাশে এসে দাঁড়াল। বলল, ' কিছু মনে কর না, একটা কথা জিজ্ঞাসা করছি। রানির দেহ যখন তোমরা দেখতে পেলে তার গায়ে জামা ছিল, না খালি গা ছিল ?
    --- ' জামা ছিল বাবু ... নীচেও ঢাকা ছিল ... ' বলতে গিয়ে সহদেবের শরীরে কেমন কাঁপন ধরল।
    --- ' রানির মাথাটা কোন দিকে ছিল ? '
    সহদেব একটা দিক দেখিয়ে বলল, ' এই দিকে ... '
    কলতান উবু হয়ে বসে হাত দিয়ে ওই মাথার দিক থেকে, আনুমানিক কোমরের জায়গা থেকে এবং পায়ের দিক থেকে একটু একটু মাটিসুদ্ধ ঘাস তুলে নিয়ে ব্যাগ থেকে বার করে তিনটে টিস্যু পেপার বার করে নমুনাগুলো তাতে রেখে কাগজগুলো মুড়ে তার হাতের ছোট ব্যাগটায় রাখল।
    তারপর বলল, ' আচ্ছা ঠিক আছে, ওসব কথা বাদ দাও। রানি কি সাজগোজ করতে ভালবাসত ? মানে, টিপ বা চুলের ফিতে বা কাঁচের বা অন্য কোন চুড়ি.... বা ধর গলায় কোন হার টার ... '
    --- ' আমাদের আর ওসব কেনার ক্ষমতা কোথায় বাবু, তবে কপালে টিপ পরতে খুব ভালবাসে। নীতিনের দোকান থেকে কিনে টিপ পরত ...
    --- ' কি রঙের টিপ সবচেয়ে পছন্দ করত, জান কিছু ? '
    --- ' হ্যাঁ ... খয়েরি ... '
    --- ' আচ্ছা আচ্ছা।
    --- ' আর একটা জিনিস ... মেয়েটা টফি খেতে খুব ভালবাসত। নীতিনের দোকান থেকে মাঝে মাঝে কিনে দিতাম ... '
    --- ' হমম্ .... আচ্ছা,তুমি কি দেখলে মাথা থেকে রক্ত পড়ছিল ? '
    --- ' না, তবে মাথার পিছনে মনে হয় চোট ছিল। অন্ধকারে টর্চের আলোয় আর কতটুকু দেখা যায় ... চুলের ফাঁকে মাথা ফাটা ক্ষতটা দেখতে পেলাম ... মনে হয় ওকে ওরা ... '
    কান্নায় সহদেবের গলা বুজে আসল।
    কলতান সহদেবের পিঠে হাত রেখে বলল, ' আচ্ছা ঠিক আছে ... আর কিছু জিজ্ঞেস করব না ... পুলিশ পরদিন সকালে এসে বডি সরায় তাই তো ? '
    --- ' হ্যাঁ বাবু ... '
    --- ' ঠিক আছে চল এখন ... প্রকাশজির ঘরে যাই। তোমার জরুর সঙ্গেও একটু কথা বলতে হবে। ওর সঙ্গে তো কিছু কথা হল না ... '
    --- ' হ্যাঁ বাবু চলুন ... '

    প্রকাশদের বাড়ির নাম 'মাহির'। ওখানে পৌঁছে দেখল প্রকাশ লুঙ্গি আর স্যান্ডো গেঞ্জি পরে গেটের কাছে দাঁড়িয়ে একজনের সঙ্গে কথা বলছে। ভদ্রলোকের বয়স বছর পঞ্চাশ হবে। মোটা গোঁফ আছে। দোহারা চেহারা। রঙ কালোই বলা যায়। হাল্কা গোলাপী বুশ শার্ট আর ব্লু জিনসের প্যান্ট পরে আছেন।
    কলতানরা ওখানে পৌঁছতে প্রকাশ বলল, ' আসুন মিস্টার গুপ্ত। ক্রাইম স্পটটা দেখলেন ? কিছু ট্রেস পাওয়া গেল ? খুব রেস্টলেস অবস্থায় আছি ... '
    --- ' ওসব পরে বলছি ... এখন আপনার ঘরে একটু বসতে চাই। টায়ার্ড লাগছে। সেই সকালে বেরিয়েছি ...
    --- ' আরে হ্যাঁ হ্যাঁ ... কি মুশ্কিল ... আমিও যেমন ... আসুন আসুন ... '
    সহদেব বলল, ' আমি তা'লে যাই বাবু ... '
    --- ' হ্যাঁ হ্যাঁ ... তুমি যাও ... আমি একটু পরে যাচ্ছি। তোমার পরিবারের সঙ্গে কথা বলব ... '
    --- ' আচ্ছা বাবু ... ', বলে সহদেব চলে গেল।
    প্রকাশ বলল, ' ও হ্যাঁ ... কলতানবাবু ... ইনি হলেন সুজিত বর্ধন ... আমাদের এখানকার কাউন্সিলরের ডান হাত বলতে পারেন। আমরা নানা ব্যাপারে অনেক হেল্প পাই এনার কাছ থেকে ... ', সঙ্গের ভদ্রলোককে দেখিয়ে বলল প্রকাশ।
    কলতান হাতজোড় করে বলল, ' নমস্কার ... '
    সুজিত বর্ধন অমায়িকভাবে হেসে প্রতি নমস্কার করলেন।
    --- ' আপনি নিশ্চয়ই মিস্টার কলতান গুপ্ত ... প্রকাশ আমাকে সব বলেছে ... '
    --- ' বলেছে ? তাহলে তো আর বলার কিছু নেই ... '
    --- ' আমাদের বিশ্বাস আপনি নিশ্চয়ই পারবেন কালপ্রিটকে বার করতে ... প্লিজ দেখুন একটু ... মনে একদম শান্তি পাচ্ছি না। পুলিশের ওপর একদম ভরসা করতে পারছি না ... বলতে বাধ্য হচ্ছি ... কি আর বলব ... আপনাকে বলেই ফেললাম ... '
    --- ' হমম্ ... চলুন এখন ... ' কলতান বলে।
    প্রকাশ বলল, ' হ্যাঁ ... আসুন আসুন ... সুজিতদা আসুন ... '
    কলতানও বলল, ' সুজিতবাবু আসুন আসুন ... '

    প্রকাশের ঘর বেশ অগোছাল। ব্যাচেলর ছেলেদের ঘরের মতো। আরও ঘর আছে ... ক'টা ঠিক বোঝা যাচ্ছে না।
    --- ' মিসেস কোথায় ? ও একটু পিতাজির ঘরে গেছে। কানপুরে। দুমাস পরে আসবে ... '
    --- ' কেন ? '
    --- ' ওর মায়ের বিমার হয়েছে। ক্যান্সার সাসপেক্ট করছে ডক্টর। কি আর করা করা যাবে ... সবই তকদির... নসীব আপনা আপনা ... '
    --- ' ওঃহো ... সো আনফরচুনেট... বাচ্চারাও সঙ্গে গেছে নিশ্চয়ই... '
    --- ' সরি ... আমার কোন ইস্যু নেই ... ', প্রকাশ জানায়।
    --- ' ও ... আচ্ছা ... সরি ... রান্নার লোক আছে ? '
    --- ' না ... আমি নিজেই চালিয়ে নিচ্ছি। অনলাইনেও মাঝে মাঝে আনাচ্ছি। কি আর করা যাবে ... যখন যেরকম সিচুয়েশান ... একজনের তো খাওয়া ... আর ঘরের কাজ সহদেবের ছোটমেয়ে তিন্নি এসে করে দিয়ে যায় ... ওই তো, ওই যে কাজ করছে ... '
    কলতান বাঁদিকে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখল একটা রোগামতো ফর্সা আট ন বছরের মেয়ে বারান্দা ঝাঁট দিচ্ছে। নাকটা একটু চাপা হলেও মুখে মিষ্টত্ব আছে।
    --- ' হমম্ ... একেবারেই বাচ্চা ... '
    --- ' সেজন্যই একেবারেই বেশি কাজ করাই না ...'
    --- ' ঠিক ঠিক ... ভাল করেছেন ... '

    সুজিতবাবুর দিকে ফিরল কলতান। তিনি সোফায় হেলান দিয়ে বসে আছেন।
    ---' দাদা আপনার সঙ্গে ঠিকমতো আলাপ হল না এখনও ... '
    সুজিত বর্ধন সোজা হয়ে বসে বললেন, ' হ্যাঁ ... বলুন দাদা ... '
    --- ' সুজিতবাবু আপনি এ এরিয়ার পুরনো বাসিন্দা নিশ্চয়ই ... '
    --- ' না, খুব পুরণো নই। এই বছর পনের হল এখানে এসেছি ... '
    --- ' তাও তো কম দিন হল না ... জায়গাটা ভালভাবে চিনে গেছেন নিশ্চয়ই ... '
    --- ' তা বলতে পারেন। আমাদের কাজ তো জানেন। এলাকা এবং এলাকার মানুষদের ভালমতো না চিনলে কাজ করা মুশ্কিল ... '
    --- ' হ্যাঁ ... তা তো ঠিকই... ' কলতান মৃদু ঘাড় নাড়ে।
    তারপর বলল, ' তাছাড়া, প্রকাশজি আছেন, এলাকার পুরণো বাসিন্দা ... উনিও নিশ্চয়ই আপনাকে হেল্প করেছেন এলাকা চেনার ব্যাপারে ... '
    --- ' হ্যাঁ তা বলতে পারেন ... '
    --- ' আপনাদের দুজনের কি এখানে আসার পর পরিচয় হয়েছে,না আগে থেকেই চেনা জানা ছিল ?'
    --- ' না ... মানে চেনা জানা কি করে থাকবে ... চেনা জানা আর কি ... বলতে পারেন এখানে আসার পরই ... কি আর বলব ... '
    --- ' আগে কোথায় থাকতেন ? '
    --- ' আমতায় ... ওই হাওড়ার দিকে ... '
    কলতান ও ব্যাপারে আর কথা বাড়াল না।
    সরাসরি বলল, ' এই যে নারকীয় ব্যাপারটা সহদেবের মেয়ের সঙ্গে ঘটল সে ব্যাপারে কারও ওপর সন্দেহ হয় আপনার ? মানে আপনাদের সাহায্য না পেলে আমি এগোব কি করে ? '
    --- ' কি বলি বলুন তো ... আমি কিছু ভেবেই পাচ্ছি না ... কি করে এ এলাকায় কেউ এরকম একটা কাজ করার সাহস পায় ... '
    কলতান কথাটা শেষ হওয়ার আগেই বলল, ' আচ্ছা ঠিক আছে, আমি এখন উঠি ... সহদেবের বউয়ের সঙ্গে একটু কথা বলতে হবে ... '
    প্রকাশ বিড়ম্বিত স্বরে বলল, ' বাড়িতে কেউ নেই ... কিছু আপ্যায়ন করতে পারলাম না ... খুব খারাপ লাগছে ... '
    --- ' আরে ... ওসব নিয়ে ভাববেন না ... সময় এলে সব কিছু হবে ... পালিয়ে যাচ্ছে নাকি ? '
    প্রকাশ সবিনয়ে মুখ নীচু করে বসে রইল।
    কলতান উঠে দাঁড়াল। ওরা দুজনও উঠে দাঁড়াল।
    কলতান বলল, ' আচ্ছা আসি এখন। আবার হয়ত দু একদিনের মধ্যে দেখা হবে ... ও হ্যাঁ ... একটা কথা সুজিতবাবু ... এখানকার থানার ওসিকে আপনি চেনেন ? '
    সুজিত বর্ধন বেশ মেপে জুপে বলল, ' হ্যাঁ ওনাকে ... কি যেন নাম ... সব্যসাচী পাত্র... চিনি এই পর্যন্ত। তেমন পরিচয় কিছু নেই ... আমি আবার যে কোন লোকের সঙ্গে চট করে মিশতে পারি না ... হে হে ... '
    --- ' সেটা তো স্যার আপনাদের লাইনে একটা ডিসকোয়ালিফিকেশান... '
    --- ' তা যা বলেন ... আমি তাহলে মিসফিট ... কি আর বলব ? ' সুজিতবাবু প্যান্টের দু পকেটে হাত ঢুকিয়ে হাসিমাখা মুখে দাঁড়িয়ে থাকেন।
    --- ' সেই ... কে যে কোন কাজে সবচেয়ে বেশি ফিট তা বুঝতে আমাদের অনেক সময় লেগে যায় ... '
    --- ' তা যা বলেন ... ' সুজিত বর্ধন দু পকেটে হাত গলিয়ে হাসিমুখে এ পা ও পা করতে লাগল ... '
    --- ' ওকে ...আমি আসি আপাতত। সহদেবের বউয়ের সঙ্গে কথা বলে চলে যাব ... ' দরজার দিকে পা বাড়িয়ে তাড়াতাড়ি যেতে গিয়ে কলতান চৌকাঠে হঠাৎ হোঁচট খেল। মেঝেতে হাত দিয়ে কোনরকমে সামলে নিল।
    --- ' আরে ... মিস্টার গুপ্ত ... কি হল ? আস্তে আস্তে ... ওঃ ... ' প্রকাশ ব্যস্ত হয়ে ওঠে।
    কলতান বুকপকেটের কাছে বাঁ হাতটা বুলিয়ে বলল, ' না ... ঠিক আছে। ডোন্ট ওয়ারি ... আসলাম ... দু একদিনের মধ্যেই আবার আসব ... তখন আপনার বাড়িতে দু একদিন কাটিয়ে যাবার ইচ্ছে রইল। আপনাদের এলাকাটা তো ভালভাবে দেখা হল না। দেখতে হবে ... '
    --- ' বিলকুল বিলকুল ... উইথ প্লেজার মিস্টার গুপ্ত ... আমার দিক থেকে ফুল কোঅপারেশান পাবেন ... '
    কলতান বেরিয়ে গেল দরজা দিয়ে।

    ( ক্রমশ )

    *****
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Anjan Banerjee | ০৩ মার্চ ২০২৫ ১১:৪৩541457
  • তাই  তো ... 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন