ডাক্তারি পরীক্ষার ধরন কি হবে, কেমন হবে এ নিয়ে সাধারণ মানুষ ভাববে কেন? ভাবার প্রশ্ন আসছে এ কারণে যে বর্তমানে চিকিৎসা ক্ষেত্রের বিভিন্ন স্তরে – সে চিকিৎসার মান থেকে শুরু করে চিকিৎসার খরচ নিয়ে – যে উদ্বেগ এবং অনিশ্চয়তা দানা বাঁধছে সে কাহিনী আরও প্রলম্বিত হবার সম্ভাবনা আছে কিনা এটা বোঝার হক সব মানুষের আছে। যারা এই লেখার পাঠক তাদেরও একটা উল্লেখযোগ্য অংশ বর্তমানের বিপুল ব্যয়সাপেক্ষ চিকিৎসার ভার অধিকাংশ সময়েই বহন করতে হিমসিম খান।
২০১৮-২০১৯ সালের সরকারি তথ্য অনুযায়ী (‘ন্যাশনাল হেলথ অ্যাকাউন্ট এস্টিমেটস, ২০১৮-২০১৯’), স্বাস্থ্যের জন্য সরকারের তরফে খরচ করা হয় ৪০.৬% এবং রোগীদের নিজেদের পকেট থেকে খরচ হয় ৪৮.২%। রাজ্য অনুযায়ী আবার এ খরচের তারতম্য আছে। উত্তর প্রদেশে রোগীদের পকেট থেকে খরচ হয় ৭১.৩%। হার্ভার্ড পাবলিক হেলথ রিভিউ (২০১৮)-এ প্রকাশিত “Health Care for India’s 500 Million: The Promise of the National Health Protection Scheme” গবেষণা প্রবন্ধে দেখানো হয়েছে – “The recognition that lack of accessibility to basic health care and the prohibitive out-of-pocket expenses borne by poor families have direct bearing on poor health outcomes (especially among children and young mothers), including creating a vicious “poverty trap” as the loss of income from adult breadwinners unable to work only serves to further push individuals and families into impoverishment and extreme poverty (or prevent them from escaping it), and its adverse long-term consequences for economic development”। একে সহজ কথায় ‘মেডিক্যাল পভার্টি ট্র্যাপ’ বলা হয়। কিছুদিন আগের হিসেব অনুযায়ী, বছরে ৬ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ (ন্যাশনাল হেলথ পলিসি, ২০১৫) স্বাস্থ্যের জন্য পকেট থেকে খরচ করার জন্য ‘মেডিক্যাল পভার্টি ট্র্যাপ’-এর ফাঁদে পড়ে দারিদ্র্য সীমার নীচে তলিয়ে যায়। ন্যাশনাল হেলথ পলিসি (২০১৭)-তে সরাসরি মেডিক্যাল পভার্টি ট্র্যাপ-এর কথা বলা না হলেও জানানো হয়েছে – “growing incidences of catastrophic expenditure due to health care costs, which are presently estimated to be one of the major contributors to poverty” (পৃঃ ১)।
এর সঙ্গে আরও দু-একটি তথ্য স্মরণে রাখা যায়। প্রথমত, ভারত সরকারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২০২১ সালে পৃথিবীর ৪৬টি ‘মেডিক্যাল ট্যুরিজম’ বা ‘চিকিৎসা ভ্রমণ’-এর গন্তব্য স্থানে ভারতের স্থান ১০ নম্বরে। ২০২০ সালে ১ লক্ষ ৮৪ হাজার মানুষ এদেশে চিকিৎসা করাতে এসেছিল, ২০২১-এ সে সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩ লক্ষের ওপরে। একটিই কারণ এখানে সস্তায় বিশ্বমানের চিকিৎসা মেলে। লাভ হয় কাদের? সহজেই বোধ্য যে এতে সরকারি হাসপাতালের বা সরকারি স্বাস্থ্যব্যবস্থার কোন লাভ হয়না, কর্পোরেট হাসপাতালগুলোর মুনাফা ভাণ্ড আরও স্ফীত হয়। দ্বিতীয়ত, ‘মেডিক্যাল মাইগ্রেশন’ অর্থাৎ এদেশ থেকে পাশ করা ডাক্তার বিদেশে চলে যায়। গ্রামাঞ্চলে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো ডাক্তারের অভাবে রক্তাল্পতা এবং অপুষ্টিতে ভোগে। ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে সুচিকিৎসক অনেক সময়েও পাওয়া যায়না। ল্যান্সেট-এর সমীক্ষা অনুযায়ী (২৯ অক্টোবর, ২০২২) ২০১৪ সালে বিদেশগামী হয়েছে ৮৮,০০০ ডাক্তার। ২০২৩-এ এসে সংখ্যা বেড়েছে বই কমেনি।
এই প্রেক্ষিতে সাধারণভাবে প্রত্যাশা করা যায়, ‘মেডিক্যাল পভার্টি ট্র্যাপ’, ‘মেডিক্যাল ট্যুরিজম’ এবং ‘মেডিক্যাল মাইগ্রেশন’-এর কথা মাথায় রেখে আমাদের ডাক্তারি পড়াশোনা, পরীক্ষার ধরন এবং আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো উপযুক্ত গুরুত্ব পাবে।
কিন্তু আমাদের বর্তমানের কথা সেরকম কোন ইঙ্গিত বহন করছেনা। খুব সাম্প্রতিক সময়ে ডাক্তারি পরীক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ লেখাপড়া কোন পথে হবে এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিল এবং এইমস (দিল্লী)-এর তরফে জানানো হয়েছে – ভারতবর্ষের সমস্ত প্রান্তের মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষাক্রমকে একটি নির্দিষ্ট সুষম মানে এনে নিপুণতর এবং ফলপ্রদ করার জন্য মে ২০২৪ থেকে বছরে দুবার করে (মে এবং নভেম্বর) নেক্সট (NExT) পরীক্ষা নেওয়া হবে। এখানে মনে রাখতে হবে, এ পরীক্ষা নেবার সিদ্ধান্ত ২০১৯ সালেই ‘ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন বিল ২০১৯’-এ নেওয়া হয়েছিল। এ পরীক্ষা নেওয়া শুরু হলে সমস্ত কলেজের ফাইনাল বা চূড়ান্ত পরীক্ষা এবং পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট যে পরীক্ষা (NEET PG) চালু সেগুলো অবলুপ্ত হবে। নেক্সট-এ পাস করলে তবে একজন মেডিক্যাল শিক্ষার্থী প্র্যাক্টিস করার লাইসেন্স (রেজিস্ট্রেশন নাম্বার) এবং পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাবে। এ পরীক্ষা নেবে এইমস (দিল্লী)। প্রকৃত মেধাভিত্তিক অ্যাডমিশনের জন্য নেক্সট-এর প্রবর্তনা বলে ঘোষিত। যে সাধারণ প্রশ্নটি এখানে চলে আসে তাহল এতদিন ধরে কলকাতা, চণ্ডীগড়, মুম্বাই, ব্যাঙ্গালোর বা চেন্নাইতে যেভাবে মেডিক্যাল অ্যাডমিশন হত সেগুলো মেধাভিত্তিক হতনা? অথচ এসব নামী মেডিক্যাল কলেজগুলো থেকে পাস করা ডাক্তাররেরা আমেরিকা, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস সহ পৃথিবীর সমস্ত উন্নত দেশের চিকিৎসাকাঠামোর মাঝে অন্তর্ভুক্ত। অনেকেই রীতিমতো প্রথম সারির মৌলিক গবেষণা করছে, প্রথমসারির জার্নালে প্রকাশিতও হচ্ছে।
নেক্সট-এর আরও গভীরে যাবার আগে পুরনো কিছু কথা সেরে নেওয়া যাক। ভারতে একবিংশ শতকের গোড়ার দিকেও মেডিক্যাল শিক্ষা এবং সাধারণ শিক্ষায় প্রধানত ব্রিটিশ/ইউরোপীয় মডেলকে অনুসরণ করা হত। ২০১৪ সালের পরে এটা প্রায় সম্পূর্ণত আমেরিকার মডেলের অনুসারী হয়ে ওঠে – ‘নতুন শিক্ষানীতি’ এবং ৪ বছরের আন্ডারগ্র্যাজুয়েট কোর্স চালু করা যার ভালো উদাহরণ। ব্রিটিশ মডেলে ক্লিনিকাল শিক্ষার ওপরে জোর দেওয়া হত। হাউসস্টাফশিপ ছিল বাধ্যতামূলক যাতে একজন ডাক্তার স্পেশালিস্ট না হলেও যেকোন ধরনের রোগীর সাধারণ চিকিৎসায় দক্ষ একজন ফ্যামিলি ফিজিশিয়ান বা প্রাইভেট প্র্যাক্টিশনার হয়ে উঠতে পারত। এখনো ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে, গ্রামেগঞ্জে এধরনের চিকিৎসকেরাই রোগীদের প্রধান ভরসা। আরেকটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথা রাখতে হবে। চিকিৎসক এবং চিকিৎসার এ ধারার মধ্য দিয়ে ডাক্তার-রোগী সম্পর্কের একটি দীর্ঘকালীন বনিয়াদ জন্মায়। রোগীরা পারিবারিক, ব্যক্তিগত এবং সামজিক সমস্যা সম্পর্কে মন খুলে কথা বলতে পারে। এখানে একজন রোগী চিকিৎসার বাজারের (কর্পোরেট জগতের থাবায় যা ক্রমাগত সমস্ত অঞ্চলে অনুপ্রবেশ করছে) অর্থনৈতিক ‘ভোক্তা’ নয় – একজন মানুষ, যে ঘটনাচক্রে রোগী হয়েছে।
আমেরিকান মডেল খোদ আমেরিকায় দীর্ঘকাল অনুসৃত হবার পরে দেখা যাচ্ছে, রোগীর সাথে চিকিৎসকের সম্পর্ক গড়ে ওঠার পরিবর্তে বিযুক্তিকরণ ঘটছে। একটি স্টাডিতে দেখা গিয়েছে – ১৯৯৮ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে ফ্যামিলি প্র্যাক্টিসে ৫১%, ইন্টার্নাল মেডিসিন ও প্রাইমারি কেয়ারে ১৮% হ্রাস ঘটেছে। অ্যানাস্থেশিয়া এবং প্যাথলজিতে বৃদ্ধির হার যথক্রমে ১৫০% ও ১২২%। ১৯৭৯ সালেই একটি প্রবন্ধে বলা হয়েছিল, একজন আর্ত মানুষ বিশ্বাস করার মতো একজন ‘ট্রাস্টি’কে খোঁজে, যে তার হয়ে সবচেয়ে সঠিক সিদ্ধান্তটি নিতে পারে। রোগী তখন কোন অর্থনৈতিক মানুষ (ইকনমিক ম্যান) নয় এবং চিকিৎসক-রোগী সম্পর্কও ক্রেতা-বিক্রেতার সম্পর্ক নয়। এসবের উর্ধে একটি সম্পর্ক যেখানে জীবন-মৃত্যুর সরু পলকা সুতোর ওপরে দাঁড়িয়ে রয়েছে একজন চিকিৎসক ‘প্রাণের প্রহরী’ হিসেবে। আরও সাম্প্রতিক সময়ে চিকিৎসার বাজারকে অর্থনীতির ‘বাবল মার্কেট’-এর সাথে তুলনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে, আমরা বর্তমানে বাজার অর্থনীতির সাধারণ নিয়মের মতো মেডিক্যাল শিক্ষার জগতেও আমরা একটি বুদ্বুদের বাজারে অবস্থান করছি। এর পরিণতিতে একটি সময় সমাগত যখন সে বুদ্বুদ ফেটে যাবে এবং শেষ অবধি হয়তো পড়ে থাকবে হাসপাতাল বা ক্লিনিকের পরিচালক এমবিএ-রা।
প্রায় দু’দশক আগে নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল-এ একটি প্রবন্ধ ‘লার্নিং ফ্রম ডায়িং’ প্রকাশিত হয়েছিল। প্রবন্ধ লেখকেরা বলেছিলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সমসাময়িক মেডিসিনের মাঝে “লুকিয়ে-থাকা পাঠ্যক্রম” (হিডেন কারিকুলাম) – বিশেষ করে তড়িঘড়ি করে চলা, রোগ-কেন্দ্রিক, নৈর্ব্যক্তিক, আরও বেশি বেশি করে ছোটার (হাই-থরোপুট) ক্লিনিকাল বছরগুলো – এখনো পর্যন্ত ছাত্র এবং ফ্যাকাল্টি সদস্যদের সবচেয়ে ভালো আকাঙ্খাগুলোর ভিত ক্ষইয়ে দেয়। এর সাথে অবমূল্যায়িত করে রোগী এবং তাদের পরিবারের সম্পর্ক। এই শিক্ষাক্রমের মধ্যে প্রশিক্ষিতরা কেবল ‘গ্রেট কেস’ খোঁজে। এ অবস্থাকে খানিকটা সামাল দেবার জন্য রোগীদের সাংস্কৃতিক বহুত্বতা, মেডিক্যাল হিউম্যানিটিজ, রোগী-কেন্দ্রিক চিকিৎসার ধারণা ইত্যাদি মেডিসিনের পাঠ্যক্রমের মাঝে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে, প্রায় ২৫ বছর ধরে।
ভারতের দিকে তাকালে দেখা যাবে, ২০১৯ সালে সাবেক মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া ‘কম্পিটেনসি-বেসড ইউজি কারিকুলাম ফর ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল গ্র্যাজুয়েটস’ নামে নতুন মেডিক্যাল শিক্ষাক্রম চালু করার প্রস্তাব দিয়েছিল যা ২০১৯ সাল থেকেই চালু হয়। এতে ২৯৩৯টি যোগ্যতা-নির্ভর ক্ষেত্রের ওপরে জোর দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই সুবিশাল পরিবর্তনের মাঝে ‘ফ্যামিলি ফিজিশিয়ান’, ‘জেনারেল প্র্যাক্টিস’ বা ‘ফ্যামিলি প্র্যাক্টিস’ – যেগুলো সাধারণ মানুষের জন্য নিতান্ত প্রয়োজনীয় – ইত্যাদি বিষয়গুলো একবারের জন্যও উল্লেখিত হয়নি। এখনও ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে যেখানে সামাজিক মানুষের চিকিৎসা একান্ত জরুরী সেখানে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট চিকিৎসকদের বঞ্চিত করা হবে এগুলোকে স্বাধীন পেশা হিসবে বেছে নেওয়া থেকে। এমন সম্ভাবনাও থাকছে, বিরাট সংখ্যক মানুষ বঞ্চিত হবে উপযুক্ত চিকিৎসা থেকে। সে জায়গা অবধারিতভাবে পূরণ করবে অপ্রশিক্ষিত ‘কোয়াক’ ডাক্তারেরা। অধিকন্তু, সামাজিকভাবে এদের অনুপস্থিতি অনিবার্যভাবে মানুষকে বাধ্য করবে বহুমূল্য, হাই-টেক, ঝকঝকে প্রাইভেট হাসপাতাল বা টারশিয়ারি কেন্দ্রের দিকে (সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল বা মেডিক্যাল কলেজ) যাত্রা করতে।
নেক্সট পরীক্ষা হবে দু ধাপে। প্রথম ধাপে অনলাইন থিওরেটিকাল পরীক্ষা। দ্বিতীয় ধাপে ছাত্ররা নিজের নিজের মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটিতে নেক্সটের পাঠক্রম অনুযায়ী প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা দেবে। প্রথম ধাপে ফাইনাল এমবিবিএস-এ যে ছ’টি পেপার পড়ানো হয় সেগুলোকে নিয়ে থিওরির পরীক্ষা। যতদিন না পাস করে ততদিন একজন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে পারবে। দ্বিতীয় ধাপে প্র্যাক্টিক্যাল/ক্লিনিকাল এবং মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। এখানে কতকগুলো বিষয় সবাইকে ভাবাবে –
(১) ফাইনাল এমবিবিএস-এর পরে ক্লিনিকাল প্রশিক্ষণ-বঞ্চিত বিপুলসংখ্যক ডাক্তার কি শিখবে? এরা কি শেষ অবধি কর্পোরেট হাসপাতাল/সরকারি হাসপাতালের মেডিক্যাল কেরানী হতে যাচ্ছে?
(২) যে নেক্সট পরীক্ষা প্রধানত এমসিকিউ নির্ভর সেখানে ক্লিনিকাল শিক্ষার পরীক্ষা হবে কিভাবে? আর যদি সেটা না হয় তাহলে কি ভবিষ্যতে হাই-টেক প্রযুক্তির উপযোগী ডাক্তার তৈরি হবে যাদের মূল ঠিকানা হবে কর্পোরেট হাসপাতাল?
এখানে স্মরণে রাখবো, সরকার যে অর্থ (পরিমাণ যাই হোক না কেন) ডাক্তার তৈরির জন্য খরচ করে তা আসলে মুটে-মজুর, মধ্যবিত্ত সবার ট্যাক্সের টাকা।
প্রসঙ্গত, হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের শিক্ষাক্রম এরকম –
(১) প্রথম ধাপে ‘পাথওয়েজ’ শিক্ষা যেখানে অত্যন্ত চাপের এবং কঠোর রেসিডেন্সি প্রোগ্রাম (৩ থেকে ৭ বছরের) এবং ক্রিটিকাল চিন্তা জরুরী। মুল ক্লিনিকাল বছরের আগে বেসিক/পপুলেশন সায়ান্স শেখানো হয়।
(২) এরপরে রয়েছে প্রি-ক্লার্কশিপ এবং ‘প্রিন্সিপাল ক্লিনিকাল এক্সপেরিএন্স’ (পিসিই) পর্যায়।
(৩) তারপরে পোস্ট-পিসিই পর্যায়।
হার্ভারড মেডিক্যাল স্কুলের ওয়েবসাইট জানাচ্ছে – “MD Program at Harvard Medical School (আমাদের বেসিক এমবিবিএস-এর তুল্য) comprises two curricular tracks, Pathways and Health Sciences & Technology (HST)”। জানাচ্ছে – “Pathways incorporates pedagogical approaches that foster active learning and critical thinking, earlier clinical experience, advanced clinical and basic/population science experiences, and a scholarly project that will allow every student to plan an individual pathway to the MD degree. HST is offered jointly by HMS and the Massachusetts Institute of Technology (MIT) and is oriented toward students with a declared interest in a career in biomedical research or a strong interest and background in physical or molecular science. The HST curriculum is designed to emphasize basic and quantitative understanding of modern biomedical sciences and pathophysiologic processes and a fundamental approach to important concepts in modern biology and biotechnology.”
আমরা বোধহয় একটি হাঁসজারু ধরনের শিক্ষাক্রম তৈরি করতে চাইছি উপযুক্ত যত্ন, নিষ্ঠা এবং মানুষকে কেন্দ্রে রেখে মেডিসিনের ভাবনাকে বাদ দিয়ে। মেধাবী, আর্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর স্বপ্ন চোখে নিয়ে যে ছাত্র সমাজ মেডিক্যাল শিক্ষার জগতে প্রবেশ করে তারা ক্রমাগত এই অ-মানবিক শিক্ষাক্রম আর বাজারী হিংস্র অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতার বুদ্বুদের বাজারের মধ্য দিয়ে সুদীর্ঘ যাত্রা করে একজন ব্যবসায়িক চিকিৎসা-পরিষেবা বিক্রেতা হয়ে ওঠে। এ ট্র্যাজেডি কার? ছাত্রদের? সমাজের? চিকিৎসকের? রাষ্ট্রের? নাকি সম্মিলিতভাবে সবার?