এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  সমাজ

  • রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের ধর্মঘট প্রসংগে 

    Sandipan Majumder লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | সমাজ | ১০ মার্চ ২০২৩ | ১৩৩৮ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • পরিপ্রেক্ষিত

    এমনিতে কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে, রাজ্য সরকারী কর্মচারী বা শিক্ষকদের গরিষ্ঠ অংশকে খুব বেশি  বিপ্লবী ভেবে নেওয়ার কোনো কারণ নেই। রাজ্য সরকার তো দূরের কথা, ২০১১ সালের পর থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে যত ধর্মঘট হয়েছে, নবান্ন থেকে বেরোনো সার্কুলারের ভয়ে তাঁরা কোনোদিনই সেসব ধর্মঘটে, বিচ্ছিন্ন কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া অংশ নেন নি। এর জন্য অবশ্য পুর্বতন বাম সরকারের প্রশ্রয়পূর্ন ঐতিহ্য অনেকখানি দায়ী। ধর্মঘটের অধিকার থাকা মানে বেতন না কাটিয়ে ধর্মঘট নয়, সেটা ভুলে যাওয়ার পক্ষে ৩৪ বছর যথেষ্ট বড় সময়। আমি নিজে বীমা ক্ষেত্রের কর্মচারী হিসেবে ১৯৯১ সালের পর থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক নীতির বিরুদ্ধে ডাকা প্রতিটি ধর্মঘটে অংশগ্রহণ করেছি। ফলে শিল্প ধর্মঘটের আগের দিন যখন রাজ্য সরকারের কর্মচারী ও শিক্ষকদের একাংশ মাংস কিনে ফ্রিজে মজুত করতেন আমরা, বীমা ও ব্যাংক শিল্পের কর্মীরা, মাসিক মাইনে থেকে এক বা দুদিনের বেতন বাদ দিয়ে গেরস্থালীর বাজেট করতাম। আমাদের নেতাদের এ নিয়ে জিজ্ঞেস করলে তাঁরা বলতেন, যে কাজ আমি করিনি তার মজুরি চাওয়ার অধিকার আমার নেই। তাঁরা  ঠিকই বলতেন। এই নৈতিকতার জোরেই ২০১১ সালের পর থেকে কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকে যত শিল্পধর্মঘট হয়েছে (মূলত বাম ট্রেড ইউনিয়নগুলির উদ্যোগে), সেখানে ব্যাংক এবং বীমা ক্ষেত্রের কর্মচারীরাই এ রাজ্যে এবং সারা দেশে সেই ধর্মঘটের মুখরক্ষা করেছেন। তবে এবার ৪৫ বছর পরে, এই প্রথম মাইনে কাটিয়ে (বিচ্ছিন্ন কিছু সাহসী ব্যতিক্রমী রাজ্য সরকারী কর্মচারী ও শিক্ষক আগেই এ কাজ করেছেন অবশ্য) আগামী ১০ই মার্চ রাজ্য সরকারী কর্মচারী ও শিক্ষকসমাজের বিভিন্ন সংগঠনের যৌথ মঞ্চ মূলত ডিএ-র দাবি এবং শূন্যপদে দূর্নীতিমুক্ত নিয়োগের দাবিতে ধর্মঘট করতে চলেছেন। এতদিন জানুয়ারি মাসে অনুগ্রহ করে তাদের সামান্য ডিএ মাঝে মাঝে দয়া করে মুখ্যমন্ত্রী দিয়ে দিতেন। এবছর সেটাও না করায় শেষ পর্যন্ত তাঁদের বোধোদয় হয়েছে যে সংগ্রাম না করে কিছু পাওয়া যায় না। কারণ ২০২১ সালের নির্বাচনেও পোস্টাল ব্যালটে শাসক দলের প্রতি তাঁদের পক্ষপাতের কথা দিনের আলোয় উদ্ভাসিত ছিলো। সেটা ‘সাম্প্রদায়িক ফ্যাসিবাদী’ বিজেপিকে রুখে দেওয়ার সুনাগরিকসুলভ তাগিদ থেকে নাকি বিজেপি এলে পেনসন উঠিয়ে দেবে ত্রিপুরার মত মডেলে -- সেই আতংকজনিত স্বার্থবুদ্ধি থেকে, সেটা তাঁরাই ভালো জানেন। তবে আপাতত তাঁরা ম্যারাপ বেঁধে অবস্থান করছেন, অনশন করছেন এবং ধর্মঘটে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন সেটা অনেকটা যে ঠেকে শিখে এবং  ‘দেখিয়া শুনিয়া খেপিয়া গিয়েছি’ ভাব নিয়ে অনেকেই চলছেন সেটা কর্মচারীদের সংঘবদ্ধ চেতনার পক্ষে  ভালো। রাজ্য তথা দেশের পক্ষে ভালো কিনা সেটা বোঝার জন্য আরেকটু সময় আমাদের অপেক্ষা করতে হবে। তবে আন্তরিকভাবেই চাইবো ১০ ই মার্চের এই ধর্মঘট সফল হোক।

    নবান্নর ভ্যানতাড়া

    ডিএ ইস্যুতে মাননীয় পুরমন্ত্রী এবং মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং পরে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন, অনেক আগডুম বাগডুম কথার খোলস ছাড়ানোর পরও যা পড়ে থাকে তা হল ডিএ  প্রদান সরকারের অগ্রাধিকার নয়। সামাজিক সুরক্ষার বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যয়, এমনকি মিড ডে মিলের ব্যয় বুঝি ডিএ ঠিকঠাক দিলে আটকে যেতে পারে। মুখ্যমন্ত্রী এর সঙ্গে যোগ করেছেন যে তিনি নাকি একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী যিনি পেনসন দেন। পেনসন বন্ধ করলে এখুনি তিনি ২০০০০ কোটি বাঁচাতে পারবেন। বন্ধ যে করে দেন নি এটা তাঁর দাক্ষিণ্য। এরপর আবার বাড়তি ডিএ চায় ‘নন্দলালরা’। নন্দলাল মানে কি এখানে ননীচোর কেষ্টঠাকুর? ফ্র্যাংকলি স্পিকিং, বুঝিনি। তবে এটুকু বুঝেছি শাসক দলের উদ্দেশ্য হচ্ছে সরকারি কর্মচারি এবং শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে খেপিয়ে দেওয়া। সত্যিই তো, ওঁরা তো তাও অনেক টাকা মাইনে পান, এরপর আবার ডিএ চাইছেন কি করে? বরং হতদরিদ্র মানুষের জন্য সামাজিক প্রকল্পগুলো বন্ধ হয়ে গেলে তো সর্বনাশ হবে। দেখা যাক এই যুক্তির সারবত্তা কতটা।

    পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মিড ডে মিল খাতে ২০২২-২৩ সালের  বরাদ্দ ১৯৩০ কোটি টাকা। এর মধ্যে আবার মাত্র কয়েক মাসের জন্য ফল, মিষ্টি খাওয়ানোর প্রকল্প আছে (মে মাসের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে পর্যন্ত, এর পর সেটা প্রত্যাহার করে নেওয়াটা ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কত বড় প্রবঞ্চনা সেটা বোঝার মত অনুভূতি অবশ্য বাচ্চাদের প্রতি ‘দরদী’ পৌরমন্ত্রীর নেই)। লক্ষীর ভাণ্ডার খাতে সরকারের বাজেট বরাদ্দ ১২৯০০ কোটি টাকা। এই আর্থিক বছরে বেতন খাতে সরকারের খরচ ৬০,৫২৪ কোটি টাকা এবং পেনসন খাতে ২২৯৯৮ কোটি টাকা। বিপুল ব্যয় নিঃসন্দেহে। কিন্তু বিরাট রাষ্ট্রযন্ত্র চালানোর জন্য এই আবশ্যিক ব্যয় সব রাজ্যকেই করতে হয়। এরপরও ভারতের বিভিন্ন রাজ্য কিন্তু বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষামূলক ক্ষেত্রে ব্যয় করছে, সরকারি কর্মচারীদের ডিএ-র অধিকারকে এভাবে নস্যাৎ করে না দিয়েই। পশ্চিমবঙ্গের সরকারের আর্থিক ব্যয়ের বেহিসাবি রকমসকম আরো প্রশ্ন তুলে দিয়েছে যে সত্যিই কী সরকার তার অগ্রাধিকার  প্রয়োজনের ভিত্তিতে নির্ধারণ করছে। এর আগে ২০২১ সালের অডিট রিপোর্টে বেরিয়েছিলো পশ্চিমবঙ্গ সরকার শুধুমাত্র নির্বাচনের বছরে বিভিন্ন এনজিও কে বরাদ্দ করেছিলো ২৭০৪৮ কোটি টাকা। এই এনজিও গুলিতে স্বচ্ছ ভাবে অডিট করা হয় না বলে  রিপোর্টে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছিলো। সাম্প্রতিক আরেকটি বেহিসেবি খরচের উদাহরণ হচ্ছে দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের ট্যাব কেনার জন্য  টুয়েলভের টেস্ট পরীক্ষার পর ১০০০০ টাকা করে দেওয়া। সবাই জানে এই ট্যাব পড়াশোনার কোনো কাজে লাগবে না। অনেক  স্টুডেন্ট টাকা নেওয়ার পর আর পরীক্ষাও দেয় নি। এখানে ১২ লক্ষ ছাত্রছাত্রীর জন্য প্রায় ১২০০ কোটি টাকা অপচয় করা হয়েছে। এগুলো উদাহরণ মাত্র। এরকম আরো আছে – প্রশাসনিক মিটিংয়ের নামে দলীয় একঘন্টার মিটিংয়ে কয়েককোটি টাকা খরচ থেকে শুরু দূর্গাপুজোয় ২৫৮ কোটি টাকা খরচ পর্যন্ত। তাই অগ্রাধিকার খাতে ব্যয় বন্ধ হয়ে যাওয়ার যুক্তি এক্ষেত্রে খাটে না। মহার্ঘ ভাতার দাবি জিনিসপত্রের দাম বাড়ার সঙ্গে সমানুপাতিক। মনে রাখা প্রয়োজন যে এই মুহূর্তে উন্নত দেশের মডেল বলে যাদের ধরা হয় সেই ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ফলে বিভিন্ন সরকারি ক্ষেত্রের কর্মচারীরা ধারাবাহিক ধর্মঘট করছেন মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে। আর মুখ্যমন্ত্রী যে দাবি করছেন পশ্চিমবঙ্গ একমাত্র পেনসন দেয়, সেটা বর্তমানে আর ঠিক নয়। রাজস্থান, পাঞ্জাব, ছত্রিশগড়, ঝাড়খণ্ড, তামিলনাড়ু এবং হিমাচল প্রদেশ পুরোনো পেনসন ব্যবস্থায় ফিরে যাওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই উদ্যোগ নিয়েছে। কেরলে এই প্রস্তাব অর্থ দপ্তরের বিবেচনাধীন।

    আন্দোলনের কাঙ্খিত অভিমুখ

    মনে রাখতে হবে ২০০৪ সালে কেন্দ্রীয় সরকার পুরোনো পেনসন ব্যবস্থা তুলে দেওয়ার পরও প্রতিটি শিল্প ধর্মঘটে তা ফিরিয়ে আনার দাবিকে সামনে রেখে  দাবিটিকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিলো বলেই আজ তার ফল ভোগ করছেন পশ্চিমবঙ্গ সহ কিছু রাজ্যের সরকারি কর্মচারীরা। পাশাপাশি আপামর দরিদ্র ভারতবাসীর জন্য ন্যূনতম সার্বিক পেনসন, বেকার ভাতা, গণবন্টন ব্যবস্থার মাধ্যমে অত্যাবশকীয় কিছু পণ্যদ্রব্যের সংস্থান  প্রভৃতি সামাজিক সুরক্ষার দাবিতে এই রাজ্যের সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষকদেরও নিয়মিত দাবি তোলা ও আন্দোলনে সামিল হওয়া প্রয়োজন। একমাত্র তাহলেই তাঁদের ন্যায়সঙ্গত দাবির বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে খেপিয়ে তোলার ষড়যন্ত্রকে পর্যুদস্ত করা যাবে। আগামীদিনে, এই সমস্ত দাবিতে ধর্মঘট হলে, আবার যদি তাঁরা বেতন কাটার ভয়ে বা সামগ্রিক উসাসীনতায় সেখান থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকেন তাহলে স্বৈরতন্ত্রের আঘাত থেকে তাঁদের কেউ বাঁচাতে পারবে না। শুধু একটা অঙ্গরাজ্যের সরকার নয়, সামগ্রিকভাবে ভারত সরকারের আর্থিক নীতির  অগ্রাধিকার পরিবর্তনের দাবিতে তাঁদের সামিল হওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি ফেডারেলিজমের পক্ষে, রাজ্যের হাতে আরো আর্থিক ক্ষমতা দেওয়ার দাবিতেও অবিচল থাকা দরকার, তা রাজ্যের তখতে যে দলের সরকারই থাকুক না কেন। পরিণতিবোধ না দেখালে, দেশের শ্রমজীবী জনগণের স্বার্থের সঙ্গে নিজেদের সম্পর্কিত না করতে পারলে ডিএ-র দাবি আপাতত কিছুটা হয়ত মিটবে, কিন্তু বৃহত্তর সমাজের কাছে তাঁদের ভাবমূর্তির ঔজ্বল্য ফিরবে না যা ইতিমধ্যেই অনেকটা ফিকে হয়ে আছে। সেই সুযোগে বাংলার  ‘অগ্রণী’ সংবাদপত্র সম্পাদকীয় লিখে দাবি করছে ডিএ তুলে দেওয়া উচিত। সেই টাকায় নাকি সর্বজনীন উন্নয়নের কাজ করা যেতে পারে। অর্থাৎ ঘুরিয়ে ফিরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বা পুরমন্ত্রীর কুযুক্তিকেই বৈধতা দেওয়া। এরা মধ্যবিত্তকে জনগণের শত্রু হিসেবে দেখাতে চায় আর সেই ফাঁকে আসল শত্রুদের আড়াল করে। একবারও বলে না ভারতের অতিধনীদের ওপর করের হার সামান্য বাড়িয়ে বা সামান্য নতুন কর চাপিয়েই টাকার সংস্থান করা সম্ভব যাতে সদিচ্ছা থাকলে উন্নয়নের কাজ করা যায় গরীব মানুষের জন্য। সরকারি কর্মচারীদের এই দাবিও করতে হবে, শুধু নিজেদের দাবি তুলে ধরলেই হবে না।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ১০ মার্চ ২০২৩ | ১৩৩৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • a | 194.193.***.*** | ১০ মার্চ ২০২৩ ১৪:০৪517215
  • পড়লাম। দুটি প্রশ্নঃ 
    ১। আর মুখ্যমন্ত্রী যে দাবি করছেন পশ্চিমবঙ্গ একমাত্র পেনসন দেয়, 
    সেটা বর্তমানে তো ঠিকই? অন্যান্য রাজ্যের যে উদাহরন দিলেন সেগুলো তো বিবেচনাধীন। নাকি ভুল বুঝলাম? 
     
    ২। যদি আজ রাজ্যকে ডিএ মেটাতে হয় তাহলে কত টাকার প্রয়োজন রয়েছে এই তথ্য পেলাম না। বা কিভাবে তার রাস্তা করা যায় তার রূপরেখাও অস্পষ্ট রয়ে গেল। 
  • হজবরল | 185.22.***.*** | ১০ মার্চ ২০২৩ ১৪:২৩517216
  • বিষয়টি বাজেট বহির্ভূত হওয়ায় রাজ্য সরকার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মন্তব্য করেছে যার সমর্থনে তথ্য পাওয়া অসম্ভব। কখনও বলা হয়েছে বকেয়া কিছু নেই। যা দেওয়ার ছিল সব দেওয়া হয়েছে। কখনও বলা হয়েছে ৯৯ আর ৬, মোট ১০৫ শতাংশ ডিএ দেওয়া হয়েছে। খরচ হয়েছে ১,৬৪,০০০ কোটি টাকা। আরও ডিএ দিতে হলে পেনশন দেওয়া যাবে না। কর্মী সংগঠনের একটা প্রতিবেদনে দেখলাম, খরচ ৫০০০ কোটির বেশি হবে না। এত তফাত! তা হলে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যানের শরীর ঠিক থাকে কী করে? আমরা তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।
     
  • Sandipan Majumder | 45.64.***.*** | ১০ মার্চ ২০২৩ ২০:১৭517230
  • @*আ ১।  একমাত্র কেরলে বিবেচনাধীন  বলা যেতে পারে। অন্যান্য  যে ছটি রাজ্যের  কথা বললাম তারা  কেন্দ্রীয়  সরকারকে লিখিত ভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে তারা পুরোনো পেনসন  ব্যবস্থায় ফিরে যাচ্ছে। রঘুরাম রাজন এই নিয়ে  উদবেগ প্রকাশ করেছেন,দেখেছেন  নিশ্চয়।  আসলে ২০০৪ সালে কেন্দ্রীয়  সরকার পেনসন তুলে দেওয়ার  পর একে একে সব কটি রাজ্য পেনসন  তুলে দেয়। ব্যতিক্রম  ছিলো  বাম শাসিত কেরল,ত্রিপুরা  ও পশ্চিমবঙ্গ।  ২০১৪ সালে কেরলে ওমান চান্ডীর ইউ ডি এফ সরকার  পেনসন  তুলে দেয়,ত্রিপুরায় তুলে  দেয় বিপ্লব  দেবের সরকার।  খানিকটা  বাম ঐতিহ্যের জনপ্রিয়  অবশেষ হিসেবে পুরোনো  পেনসন  স্কীম থেকে  যায় পশ্চিমবঙ্গে। 
    ২।  ডি এ দিতে কত টাকা লাগবে আমরা সত্যিই  জানি না। কারণ এই নিয়ে কোনো  স্বচ্ছতা  নেই সরকারী  তথ্যের যেটা দ্বিতীয়  কমেণ্টে  @* হজবরল  বলেছেন। 
  • ভাস্কর গুপ্ত | 103.189.***.*** | ১১ মার্চ ২০২৩ ১০:৫৫517273
  • আন্দোলনের সঠিক  অভিমুখ অংশটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। একথা ঐতিহাসিকভাবে সত্য যে ট্রেড এবং  নিজস্ব সমস্যাভিত্তিক আন্দোলন করতে করতেই এই সচেতনতা আসা দরকার যে বৃহত্তর সঙ্কটের সমাধান ভিন্ন আশু দাবী আদায় বা আদায়করা অধিকার রক্ষা করা সম্ভব নয়।গত ১০ই মার্চের ধর্মঘটের অন্যতম আহ্বানকারী সংগঠন 'রাজ্য কেষাগার থেকে বেতনপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ সেকারণেই ধর্মঘটের দাবীসনদে 'রাজ্যে বিভাজনের রাজনীতি বন্ধ এবং  গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবীকে যুক্ত করেছিল।
    কারণ আজকের  মতো বকেয়া মহার্ঘভাতা আদায় শুধু নয় সেই  মহার্ঘভাতা নিয়মিত সময়োপযোগী ভাবে চলতে থাকার জন্য রাজ্যে গণতান্ত্রিক পরিবেশ পুনঃপ্রতিষ্ঠার দরকার। আবার বিভাজনের রাজনীতির নামে মানুষের রুটি রুজির দাবীর লড়াইকে বিভ্রান্ত করার প্রবণতাকেও রুখে দেবার প্রয়োজন। 
  • a | 194.193.***.*** | ১২ মার্চ ২০২৩ ১০:৫৩517300
  • এ আবার হয় নাকি
  • a | 14.2.***.*** | ১২ মার্চ ২০২৩ ১২:৩১517309
  • কি বিপদ, বাকি পোস্টটা উড়ে গেল কিভাবে!! 
     
    বক্তব্য ছিল যে যিনি টাকা পাবেন আর যিনি দেবেন দুজনের কেউই জানেন না টাকার পরিমাণ। e আবার হয় নাকি!! 
     
    সেক্ষেত্রে আন্দোলনের প্রথম দাবিই হওয়া উচিত এবিষয়ে স্বচ্ছতা নিয়ে আসা। 
  • Sandipan Majumder | ১৩ মার্চ ২০২৩ ১০:৩১517349
  • এখানে  আমার ফেসবুক  পোস্ট থেকে একটা  হিসাব  দিলাম।
    রাজ্য সরকার  কখনোই  স্পষ্ট করে বলে নি ডি এ বাবদ তার কত খরচ বা কোন ভিত্তিতে  কতটা ডি এ দিতে হবে। আবার যাঁরা  আন্দোলন  করছেন  তাঁরাও এই দাবি সরকারের  কাছে করেন নি  যে অঙ্কটা পরিষ্কার  করে বলুন। এর মধ্যে দেবযানী  ভট্টাচার্য ২ ( সম্ভবত  ছদ্মনাম)  এর লেখা  একটি দীর্ঘ  ইংরেজি প্রবন্ধে সেই অঙ্কটি  পরিষ্কার  করে দেওয়া হয়েছে। লেখাটি  যে  সংগঠনের পত্রিকায় বেরিয়েছে তার সঙ্গে  সম্পূর্ণ  বিপরীত  মেরুতে আমাদের অবস্থান। এই লেখাটির  সমস্ত বক্তব্যের সঙ্গে  যে একমত  হওয়া গেছে তাও নয়। কিন্তু  লেখাটির  আঙ্কিক বিশ্লেষণের  গভীরতাকে অস্বীকার  করা যাবে না। স্ক্রিনশটটি সেখান থেকেই  নেওয়া। 
    এখানে  যেটা দেখানো হয়েছে যে পরিকল্পনা  বহির্ভূত  ব্যয় পশ্চিমবঙ্গে  অন্য রাজ্যগুলোর  তুলনায় অনেক বেশি। পাঞ্জাব,কেরালা এবং রাজস্থানে যেখানে এই ব্যয়বৃদ্ধির হার যথাক্রমে  ৫.৫৬, ১০ এবং ৬.২ শতাংশ সেখানে  পশ্চিমবঙ্গে  এই হার ১৪.৮  শতাংশ।  যদি ২০২০-২১ আর্থিক বর্ষে এই বাবদ যা খরচ  হয়েছিলো  ২০২১-২২ বর্ষে সেই খরচই ধরে রাখা যেতো  তাহলে এখানেই সরকার  বাঁচাতে  পারতো  (৯০৩২৭—৬৬০৮৫) কোটি = ২৪২৪২ কোটি। এই টাকাতে ২০২১-২২ সালেই বকেয়া ডি এ পুরো মিটিয়ে  দেওয়া যেতো (বকেয়া ডি এ বাবদ কত খরচ  হোতো বা কত খরচ  হতে পারে সেই সব হিসাব  এই লেখাতে অন্যত্র নির্ভুলভাবে  দেওয়া  আছে)।লক্ষ্য  করার বিষয় যে এখানে  কিন্তু অপরিকল্পিত  ব্যয়  ( যেখান থেকে বিভিন্ন  ভরতুকির টাকাও আসে) বন্ধ করতে  বলা হয় নি। তাকে এক বছরের জন্য স্থিতিশীল  অবস্থায়  রাখতে বলা হয়েছে। কোনটা  প্রয়োজনীয়  ব্যয় আর কোনটা ট্যাবের জন্য বা দূর্গাপুজোর জন্য অনুদানের হরিলুঠের মাধ্যমে  ভোটের  রাজনীতি  সেটা তো সবাই বোঝে। 

    তাহলে অভাবটা টাকার নয়,অভাবটা আর্থিক শৃঙখলা, সুষ্ঠু  পরিকল্পনা  আর রাজনৈতিক  সদিচ্ছার।
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি মতামত দিন