এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  দর্শন

  • ফরহাদ মজহারের ‘ভাবান্দোলন ‘ --- ফিরে দেখা 

    Sandipan Majumder লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | দর্শন | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৬২ বার পঠিত
  • বাংলাদেশে সম্প্রতি একটি গণঅভ্যুথ্বান ঘটে গেছে। এই আন্দোলনের পেছনে  কাদের  ভাবাদর্শের প্রভাব আছে সেকথা বিচার করতে গিয়ে  কেউ কেউ ফরহাদ মজহারের নাম উল্লেখ করেছেন। উপদেষ্টামণ্ডলীর যে তালিকা আমরা পেয়েছি সেখানে ফরহাদের স্ত্রী সনজীদা আখতারের নাম আছে। তাই ধরে নেওয়া যেতে পারে যে এই সরকারের ওপর ফরহাদের
     প্রভাব আছে । সমাজমাধ্যমে তাঁর পোস্ট দেখলেও মনে  হচ্ছে তিনি মনে করছেন এই গণআন্দোলনের অভিমুখকে সঠিক নির্দেশনা দেওয়ার দায়িত্ব তাঁর আছে। তাই  ফরহাদের সবচেয়ে প্রভাবশালী বই  ‘ভাবান্দোলন’ নিয়ে কিছু আলোচনা এই অবসরে করা যেতে পারে। আমরা দেখতে পারি এই উপমহাদেশের এবং বিশেষত বাংলাদেশের সামাজিক ব্যাধির নিরুপণে তাঁর চিন্তার গুরুত্ব কতখানি।

    যে কথা বলা দরকার যে  ফরহাদের মূল প্রতিপাদ্য আমাদের অচেনা কিছু নয়। আমরা যে সেকুলার লিবারেল আদর্শের কথা বলি, যা শিক্ষিত মধ্যবিত্তের কাছে নাস্তিকতার নামান্তর  , তার বিরুদ্ধে ফরহাদের যে বক্তব্য সেটা আমাদের কাছে আধুনিকতা বিরোধীরা বেশ কিছু দিন ধরেই হাজির করেছেন। ফরহাদ ঠিক তাঁদের মতই ধরে নেন যে  এই আদর্শ ঔপনিবেশিকতার ফসল, পশ্চিমা নিরীশ্বরবাদ দ্বারা উদবুদ্ধ এবং স্বভাবতই জনবিচ্ছিন্ন। সেকুলাররা ধর্মের যে সমালোচনা করেন তা দ্বান্দ্বিক বোধবর্জিত। ফলে তারা ধর্মের  প্রগতিশীল ভূমিকা দেখতে পান না। ফরহাদ বিশেষ করে বাংলার ভাব বলতে মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য, নিত্যানন্দ, ফকির লালন শাহ – এঁদের  মাধ্যমে বাংলার জাতপাতবিরোধী, ইহবাদী, সংগ্রামী চেতনার যে বোধ ও পরিপুষ্টি  সাধারণ মানুষের চেতনায় পরিবাহিত হয়ে চলেছে, তাকেই বুঝিয়েছেন।
     
    ফরহাদ বাঙালি জাতীয়তাবাদ (আওয়ামি লীগ ও বামপন্থীরা )  এবং বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ (বি এন পি ) – উভয়েরই বিরোধী। উভয়ই ধরে নেয় বাঙালিত্ব  আর ইসলাম পরস্পরবিরোধী। কিন্তু বাংলার  সংগ্রামী, জাতপাতবিরোধী , মানবিক সংগ্রামের অংশই হল বাংলায় ইসলামের উথ্বানের ইতিহাস। কাজেই তাকে বাদ দিয়ে চেতনার নির্মাণ সম্ভব নয়—সংখ্যাগুরু মুসলমানের দেশ বাংলাদেশে তো বটেই। কিন্তু ফরহাদ চমৎকারভাবে  বাংলার ভাবান্দোলনের মধ্যে মৌলবাদ বিরোধিতার  তালাশ করেন। এটা করার জন্য তিনি লক্ষ্য করেন কীভাবে বাংলার ভাব ও ভাষার মধ্যে ইসলামের বৈপ্লবিকতাকে আত্মস্থ করা হয়েছে।  ফরহাদের মতে ফকির লালন শাহ আদৌ আধ্যাত্মবাদী বা মরমিয়াবাদী নন। তিনি প্রতিষ্ঠিত সমাজব্যবস্থার বিরুদ্ধে একজন বিপ্লবী যিনি দেশ, কাল, জাতি, বর্ণ—সকল আত্মপরিচয়ের ন্যূনতা পরিহার করে সহজ মানুষের সাধনা করেন। এর মাধ্যমে অপরের সঙ্গে, প্রকৃতির সঙ্গে, ব্রহ্মাণ্ডের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনই বড় কথা।
    ফরহাদের অন্যতম উপজীব্য হল গান – লোকসমাজে, সাধনসঙ্গীত হিসেবে জনপ্রিয়  ফকিরি গান। এই গানের কথায় তিনি মৌলবাদ বিরোধী উপাদান পান সহজেই। যেমন আবদুল হালিম নামক একজন অখ্যাত গায়কের গানের এই লাইনগুলিঃতালা মারা কালেমাতে / চাবি রয় মুর্শিদের হাতে/ মুর্শিদ ছাড়া খুলবি কেমন করে ?
     
    কালেমা অর্থাৎ বাক্য (এখানে পবিত্র বাক্য)  তার আক্ষরিক অর্থের উপর নির্ভর করে না। সেই বাক্যের অর্থ একজন মুর্শিদের  (গুরু) শিক্ষা ছাড়া বোঝা যাবে না । এই মুর্শিদ কে ? ফরহাদের সংজ্ঞায় যিনি সত্য জানেন, সত্য চেনেন, সত্যের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যিনি প্রাজ্ঞ হয়েছেন। ফরহাদ অবশ্য অন্যত্র বুঝিয়েছেন এই সত্য মানে পথের সত্য নয়,কাজের সত্য। সত্য অনুশীলনের মাধ্যমে, প্রয়োগ ও সংগ্রামের মাধ্যমেই আবিষ্কৃত হয়। আবার এই সত্য বেদ বা কোরাণের গ্রন্থের  কোনো  একমাত্রিক সত্য নয়। তাঁর মতে একটি বাক্য দেশকালপাত্রভেদে আমাদের মধ্যে নতুন অর্থ  তৈরি করতে পারে। এমনকি একই বাক্য আগে যে অর্থ হয়ে নিজের ঘর খুলে দিয়েছিল ,সেই বাক্যের অর্থও অনেক সময় বদলে যেতে পারে। ফরহাদের এই স্থলে সিদ্ধান্ত  গ্রন্থমুখী মৌলবাদের বিরোধিতা করে। কারণ তা মৌলবাদীদের কালাম  বা বাক্যপূজার বিরোধিতা করে। এই কারণেই ফরহাদ , এই ধরণের ভাবের গানকে ঐতিহ্যের অংশ বানিয়ে তাকে তুলে রাখার বিরোধী। তিনি মনে করেন বাংলার ভাবান্দোলন তার গানের মধ্য দিয়ে ক্রমাগত যে প্রশ্নগুলি তুলেছে সেগুলি এক চলমান আত্নানুসন্ধানের অংশ—ব্যক্তি হিসেবে, জাতি হিসেবে। ফলে  ঐতিহ্যের কুলুঙ্গীতে নয়,  সমসাময়িক বাচনে, ইতিহাসবোধে  এবং অমীমাংসিত প্রশ্নগুলির উত্তর খোঁজার চেষ্টা হিসেবেই তাকে দেখা ভালো। এর মধ্যে রাজনীতি এবং অর্থনীতির প্রশ্নগুলিও বাইরে থাকবে না।
     
    ফরহাদের প্রচেষ্টাটি ভালো। যতক্ষণ কোনো প্রকল্প ধর্ম, ধর্মতত্ত্ব এবং  ধর্মীয় মৌলবাদের মধ্যে পার্থক্য করতে শেখায় ততক্ষণই তা ভালো। ধর্মনিরপেক্ষতার সীমাবদ্ধতার বিপরীতে বিপুল ধার্মিক জনতার নৈতিক বোধকে  অসাম্প্রদায়িক লক্ষ্যে চালিত করার এ এক উপায় হতে পারে। কিন্তু এর জন্য নিরীশ্বরবাদী  প্রগতিমনস্কদের বিরুদ্ধে এত তীব্র আক্রমণ শাণাতে হল কেন ফরহাদকে তাঁর সারা বই জুড়ে, সেকথা বোঝা মুশকিল। নিরীশ্বরবাদ বুঝি ভারতীয় উপমহাদেশের ঐতিহ্যের অংশ নয়  যে তাকে পশ্চিমা এবং শেকড়হীন বলে আক্রমণ করতে হবে ?  যাঁরা বাঙালি নামক আত্মপরিচয়কে সামনে রাখতে চান এবং  ধর্মের সঙ্গে তাকে সম্পর্কহীন ভাবেন, ফরহাদ তাঁদেরকে সাম্প্রদায়িক পর্যন্ত বলেছেন। কারণ তাঁদের মধ্যে নাকি রয়েছে ইসলামবিদ্বেষ। হ্যাঁ, এঁদের মধ্যে একটা অংশ অবশ্যই আছেন যাঁরা শুধু ইসলাম কেন, পৃথিবীর সব প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম সম্বন্ধেই বিরূপ মনোভাব পোষণ করেন,, আলাদা করে শুধু ইসলাম সম্পর্কে নয়। কিন্তু তার জন্য তাঁদের সাম্প্রদায়িক বলা চলে কি ? আবার বাংলাদেশে যা প্রাসঙ্গিক, তার অনেক কিছুই ভারতে, এমনকি এই বঙ্গে প্রাসঙ্গিক হবে না। জাতপাতবিরোধী আন্দোলন বা অন্যান্য  বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন  এই বঙ্গেও ধর্মের মাধ্যমে যতটা হয়েছে তার  ঐতিহাসিক গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিতেই হবে কিন্তু  রণকৌশল হিসেবে তার প্রতিবাদী সত্তার অবক্ষয়ও আমাদের দৃষ্টি এড়ায় না।  এই উপমহাদেশে রাষ্ট্রশক্তির কাছে মৌলবাদ প্রশ্রয় পায়। সেখানে লোকধর্ম তার বিরুদ্ধে কতটা শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়তে পারবে তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। অতীতে যখন রাষ্ট্রের নজর এমন সর্বব্যাপ্ত ছিল না  তখন এই পথে যতটা সামাজিক পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে তার কতটা  আজকে সম্ভব  সেই প্রশ্ন আছে। বাংলাদেশে যে গণঅভ্যুথ্বান ঘটেছে সেখানে  এই ফরহাদ মজহারীয় অসাম্প্রদায়িক চেতনা কতটা ক্রিয়াশীল ছিল জানি না।  কিন্তু দেশজুড়ে এখন যে মবোক্রেসি দেখা যাচ্ছে সেখানে অসহিষ্ণুতার চিহ্ন বড় প্রকট হয়ে উঠছে। তত্ত্ব আর প্রয়োগের মধ্যে যে ফাঁক সেখানে বেঁটে মানুষদের ছায়া ক্রমশ দীর্ঘতর হচ্ছে।

     

     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ২৬২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • দীপ | 2401:4900:3bde:6c8b:313e:7676:12c3:***:*** | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:১৩537141
  • লিখেছিলাম , দুর্গাপূজার মণ্ডপে হনুমান থাকেন বটে, কিন্তু হনুমানের পায়ের কাছে কোরানই থাকতে হবে সেটাই বাংলাদেশের উষ্মার কারণ'। অনেকে প্রশ্ন করেছেন হনুমান আর ' জয়শ্রীরামওয়ালা হনুমান'-এর মধ্যে পার্থক্য কি? তাহলে ফকির লালন শাহের একটি কালাম দিয়ে শুরু করি। 
     
    'যাত্রাভঙ্গ যে নাম শুনে
    বনের পশু হনুমানে
    নিষ্ঠাগুণ যার রামচরণে
    সাধুর খাতায় তার সুখ্যাতি
    কি হবে আমারও গতি
           কি হবে আমার গতি!!
     
    হনুমান দুই প্রকার। এক সাধু বা সন্ত হনুমান। বঙ্গে তাঁর নাম সাধুর খাতায় লেখা। কারণ বনের পশু হয়েও তিনি ভক্তির চূড়ান্ত আদর্শ স্থাপন করে গিয়েছেন। 
     
    সন্ত হনুমানের সম্পূর্ণ বিপরীতে রয়েছে 'জয়শ্রীরামওয়ালা হনুমান'। বড় বাংলার হিন্দু যেহেতু তার নিজের ধর্ম, ঐতিহ্য ও শক্তিশালী ভাবচর্চার ইতিহাস ভুলে গিয়েছে, নিজেকে জানে না কিম্বা নিজের সম্পর্কে অজ্ঞ -- সে এখন জয়শ্রীরামওয়ালা হনুমানের পূজা করে। এই হনুমান মোদী-অমিত-শাহ-আদিত্যনাথের হনুমান -- জয়শ্রীরামওয়ালা হনুমানের পূজা করার মধ্য দিয়ে আদতে সে পূজা করে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ ও আদিত্যনাথের। জয়শ্রীরামওয়ালা হনুমানের রণধ্বনি দিয়ে নাঙা তলোয়ার হাতে হিন্দুত্ববাদী শক্তি ভারতে মুসলমান নিধন ও উপমহাদেশ থেকে ইসলাম নির্মূলে্র লড়াই করছে নগ্ন ভাবে। সমস্যা রাজনীতির, রাজনৈতিক প্রতিকায়নের। জয়শ্রীরাম ধ্বনি হিন্দুত্ববাদের শ্লোগান। ভারতের জয়শ্রীরামওয়ালা হনুমান পুজারি বা বজরঙ্গীরা হচ্ছে মুসলিমদের উপর সবচাইতে উগ্র জনগোষ্ঠী। এই জঙ্গীগোষ্ঠী আরএসএস এরই একটি শাখা। 
     
    এই হোল হনুমান আর ' জয়শ্রীরামওয়ালা ' হনুমানের পার্থক্য।
     
    আবারও বলি, হনুমান দুর্গাপূজার মণ্ডপে থাকেন বটে, কিন্তু হনুমানের পায়ের কাছে কোরানই থাকতে হবে সেটাই বাংলাদেশের উষ্মার কারণ। চোখে পড়ে না কেন? বাংলাদেশের দুর্গাপূজার মণ্ডপে এই হনুমানের পায়ের ওপর কোরান শরিফ পাওয়া গেছে। তাই বলেছি জয়শ্রীরামওয়ালা হনুমানের পায়ের ওপর কোরান আদতে দিল্লির তরফে বাংলাদেশের জনগণকে পাঠানো একটি হিন্দুত্ববাদী বার্তা।  
     
    হিন্দুত্ববাদিদের বিপরীতে একই মূদ্রার অপর পিঠ হিশাবে আছে পরিচয়বাদী, সাম্প্রদায়িক ও জাতিবাদী মুসলমান। এই মুসলমান সৌদী, ইরানি, তুর্কি ইত্যাদি হতে চায়। বাঙালি মুসলমান হিশাবে সে কিভাবে বেড়ে উঠল তার ইতিহাস সে জানে না। জানতেও চায় না। তার ধারণা আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসই তার ইতিহাস। 
     
    ফলে মাথায় গোবরভর্তি অপরিণামদর্শী সাম্প্রদায়িক জাতিবাদী মুসলমান সনাতন ধর্মের পূজামণ্ডপ ও মন্দির ভাঙা শুরু করেছে। দুর্বল, অসহায়, শক্তিতে-সংখ্যায় স্বল্প সনাতন ধর্মাবলম্বী এই দেশেরই নাগরিদের, কিন্তু তাদের ওপর তারা হামলা করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। গুলি খেয়ে মরছে। তার ধারনা সে ইসলাম রক্ষা করছে, কোরান অবমাননার বিরুদ্ধে লড়ছে। আসলে সে জানেও না যে সে পা দিয়েছে মোদী-অমিত শাহ ও আদিত্যনাথের মুসলমান নিধন ও ইসলাম নির্মূল রাজনীতির ফাঁদে। 
     
    কি দেখছি আমরা? যারা দুর্গা মণ্ডপে হনুমানের পায়ের কাছে কোরান রেখেছে আর যারা সেটা দেখে মন্দির ও হিন্দুদের বাড়িঘর ভাঙ্গতে শুরু করেছে উভয়ের নেতা একই। মোদী-অমিতশাহ-আদিত্য নাথ। একজন সজ্ঞানে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি করে আরেক পক্ষ চরম বেয়াকুফ বলে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতি্র ফাঁদে পা দেয়। 
     
    জয় হিন্দ! 
     
    ফরহাদ মজহারের লেখা! 
  • দীপ | 2402:3a80:198f:2a7:878:5634:1232:***:*** | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:৩২537142
  • কতোদূর শয়তান হলে মৌলবাদীদের সমর্থনে এসব লেখা নামানো যায়!
  • দীপ | 2402:3a80:198f:2a7:878:5634:1232:***:*** | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:২৭537156
  • "হিন্দুত্ববাদের আঁতুড়ঘর ইংরেজি শিক্ষিত আধুনিক উচ্চ বর্ণের হিন্দুর বাংলাভাষা ও সাহিত্য। 'সাহেব-পণ্ডিতদের বাংলা' বলা যায়। উত্তর ভারত, কিম্বা হিন্দি ভাষা নয়, বরং হিন্দুত্ববাদের জন্মস্থান বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধায় (১৮৩৮-১৮৯৪) বাংলার, কিন্তু হিন্দুত্ববাদের আদর্শিক ভিত্তি তাঁর হাতেই গড়ে উঠেছে। তিনিই প্রথম পুরাণকে ইতিহাস বলে দাবি করেছেন, কৃষ্ণকে ঐতিহাসিক চরিত্র বলে প্রতিষ্ঠা করেছেন। রামায়নও এখন ইতিহাসের বই। 

    বঙ্কিমচন্দ্রের সাহিত্য কর্মের রাজনৈতিক অভিপ্রকাশ ব্যক্ত হয়েছে  বিনায়ক দামোদর সাভারকর (১৮৮৩-১৯৬৬) -এর রচনা ও তৎপরতায়। সাভারকর ১৯২২ সালে রত্নগিরিতে বন্দী থাকার সময় হিন্দুত্বের পক্ষে – অর্থাৎ ভারত শুধু হিন্দুদের এই প্রকার হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক মতাদর্শ গড়ে তোলেন। সেটা ছিল জাতিবাদের যুগ। সাভারকার হিন্দু মহাসভার একজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব। হিন্দু মহাসভায় যোগ দিয়ে তিনি হিন্দুত্ব (হিন্দুত্ব) শব্দটিকে জনপ্রিয় করেন, এবং ভারতীয় জাতিবাদকে ইসলাম নির্মূল রাজনীতিতে পরিণত করতে সক্ষম হন। উপনিবেশবিরোধী জাতিবাদের যুগে সেটা অস্বাভাবিক কিছু ছিল না। কিন্তু একালে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ সাভারকারের হিন্দুত্ববাদকে যে রূপ দান করেছে এবং নরেন্দ মোদীর বিজেপি তার যে রূপ খাড়া করেছে তাকে বৈশ্বিক পরিপ্রেক্ষিতে বিচার করাই সঙ্গত। সনাতন ধর্মের সঙ্গে এর সম্পর্ক অতিশয় ক্ষীণ। ইহুদিবাদ এবং মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের দক্ষিণ এশীয় মতাদর্শ হিশাবে ভারতে হিন্দুত্ববাদ গড়ে উঠেছে। যার রূপ আমরা ওয়ার অন টেররের মধ্যে দেখেছি। 

    যেটা ভুলে যাওয়া ঠিক না সেটা হোল সাভারকার ছিলেন নাস্তিক। সনাতন ধর্মের বৈচিত্র, ঐতিহাসিক উপলব্ধি,  কিম্বা ভাবগত মর্মের গভীরতা সম্পর্কে তার বিশেষ কোন ধারণা ছিল না। নাস্তিকতা হিন্দু ধর্মের অন্তর্গত ধারা হিশাবে বাইরের কিছু না। উপমহাদেশে বিভিন্ন ভূগোল, আবাস, ভাষা, ধর্মের পার্থক্য, বৈচিত্র এবং বিরোধ রয়েছে। সেই বৈচিত্র্য ও বিরোধের মধ্যে ঐক্যের সাধনা উপমহাদেশের বৈশিষ্ট্য। তার গোড়া নষ্ট করে দিয়েছে নাস্তিক্যবাদী সেকুলার হিন্দুত্ব । ফলে ভূ-রাজনৈতিক ভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া বা চিনের বিপরীতে ভারতকে শক্তি হিশাবে গড়ে তোলার ভারতীয় স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবার সম্ভাবনা খুবই কম। কারন হিন্দুত্ববাদ ভারতীয় স্পিরিট বা আত্মিক শক্তিকে সমূলে ধ্বংস করে দিয়েছে। ভারত সাম্রাজ্য হতে পেরেছিল যখন মুঘল বা সুলতানরা 'বহিরাগত' হয়ে নয়, ভারতীয় হয়ে দেশ শাসন করেছেন। আসলে তারা শাসক থাকলেও শাসন ব্যবস্থার সকল স্তরে ছিলেন ‘হিন্দু’ বা ভারতীয়। 'বহিরাগত' এবং বিশুদ্ধ কাল্পনিক হিন্দুর ধারণা ভারতকে ভেতর থেকে নষ্ট করে দিয়েছে। এর ফলে ভারত মূলত নিজেকে শুধু নয় -- সেন্ট্রাল এশিয়া ও মধ্য এশিয়ারও প্রতিনিধি হয়ে ওঠা -- অর্থাৎ চিন ও রাশিয়ার বিপরীতে আরও বৃহত্তর ও শক্তিশালী শক্তি হিশাবে বিকাশের সম্ভাবনাও সমূলে বিনষ্ট হয়েছে।

    হিন্দুত্ববাদীরা ভারতীয় ইতিহাসের উজ্জ্বল কালপর্ব থেকে মুক্ত হতে চায়। তাই মুঘল বা সুলতানদের ‘বহিরাগত’ আখ্যা দিয়ে যে ভারতীয় সংস্কৃতির কথা বলা হয় সেটা পায়খানায় এসে আটকে যায়। ভারত এখনও তার শৌচকর্মকে সংস্কৃতির অন্তর্গত করতে পারে নি। সাম্রাজ্য হওয়া দূরের কথা।  তার বাইরে যে ভারতীয় দর্শন ও সংস্কৃতির কথা বলা হয় সেটা অরিয়েন্টালিস্ট বা প্রাচ্যবাদীদের ভাষ্য।  ভারত ইউরোপের প্রাচ্যবাদী কল্পনার এক্সোটিক স্বর্গরাজ্য হতে চায়। সেটা চায় গরু খাওয়া বা গরু বেচাবিক্রির অপরাধে নিরীহ মুসলমান পিটিয়ে মারার সভ্যতা প্রদর্শন করে। এই বর্বরতাকেই সভ্যতা হিশাবে হাজির করার বাসনা হিন্দুত্ববাদীদের। এই প্রকার হিন্দুত্ববাদী ভারতকে রাজনৈতিক ভাবে বাংলাদেশের জনগণ কিছুটা বুঝতে পেরেছে। নাস্তিক্যবাদ যে শুধু বাংলাদেশের নয় , সর্ব ভারতীয় সমস্যা সেটা বাংলাদেশে পরিষ্কার।

    বড় বাংলার শক্তিশালী ভক্তি আন্দোলনের সঙ্গে সাভারকরের হিন্দুত্ববাদ সাংঘর্ষিক। আধুনিক জাতিবাদের বিকৃত ও সাম্প্রদায়িক রূপ নিয়ে হিন্দুত্ববাদ পুরা উপমহাদেশকে খণ্ড বিখণ্ড করে ফেলতে উদ্যত।  অথচ পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়নের যুগে দরকার পতনশীল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং নতুন পরাশক্তি হিশাবে চিনের উত্থানের বিপরীতে উপমহাদেশকে নতুন ভাবে ঐক্যবদ্ধ এবং অর্থনৈতিক ভাবে শক্তিশালী করা। আসন্ন বহুকেন্দ্রিক বিশ্বে যেখানে দরকার নিজের বিচিত্র ও সমৃদ্ধ সভ্যতা নিয়ে গর্বের সঙ্গে বুক ফুলিয়ে দাঁড়ানো, কিম্বা যেখানে কার্ল মার্কসের সূত্র ধরে গর্ব করে বলা দরকার যে ভারত সকল বহিরাগতদের ‘হিন্দুভূত’ করে ফেলতে পেরেছে, যা অন্য কোন সভ্যতার পক্ষে সম্ভব হয় নি, সেই ভারত মাটি খুঁড়ে যত্রতত্র শিবলিঙ্গ খুঁজে বেড়াচ্ছে। ভারতের পরিচয় হয়ে উঠেছে মসজিদ ভাঙা এবং অতীতের সকল ঐতিহাসিক স্থাপনার নীচে শিবলিঙ্গ খুঁজে বেড়ানো মানসিক ভাবে অসুস্থ একটি জাতি হিশাবে। ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা ধূলায় লুন্ঠিত। পরম মিত্র হওয়া সত্ত্বেও বিব্রত হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও রাষ্ট্রীয় প্রতিবেদন প্রকাশ করে সেই কথা বলতে বাধ্য হয়েছে। এটা পরিষ্কার হিন্দুত্ববাদ ইসলাম নির্মূল ও মুসলমান নিধনের রাজনীতি চর্চা করার মধ্য দিয়ে মূলত শক্তিশালী ভারতের আবির্ভাবকে কয়েক শ বছর পিছিয়ে দিয়েছে। বিশ্ব ব্যবস্থায় হিন্দুত্ববাদী ভারত পরাশক্তি হিশাবে নয়, পরিচিত হয়ে উঠছে একটি বর্বর ও পশ্চাতপদ দেশ হিশাবে, যারা তাদের দেশের নাগরিকদের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে অক্ষম। অর্থাৎ বিশ্ব ব্যবস্থায় আত্মসম্মানের সাথে দাঁড়াবার যোগ্যতা ভারত হারিয়ে ফেলছে। 

    এই দুর্দশা  সনাতন ধর্মের নয়, ভারতীয় ঐতিহ্যের নয়, কারন এই ধর্ম বা ঐতিহ্যে  ‘অন্তর্গত’ ও ‘বহিরাগত’ নামক কোন ভেদবুদ্ধি নাই। সেই ভেদবুদ্ধি বা আর্য/অনার্য ভেদের শুরু ঔপনিবেশিক আমলে।  আর্যবাদীদের ঔপনবেশিক কাল গেল। এখনকার হিন্দুত্ববাদ আধুনিক জাতিবাদী ও নাস্তিক্যবাদী সাভারকার মার্কা হিন্দুত্ববাদের করুণ পরিণতি। মনে রাখা দরকার বাংলার ভক্তি আন্দোলনের দিক থেকে বিচার করলে নাস্তিক্যবাদ উপমহাদেশে আধুনিক জাতিবাদী হিন্দুত্ববাদেরই রকমফের মাত্র। সাভারকারের নাস্তিক্যবাদকে হাল্কা ভাবে নেবার কোন সুযোগ নাই। 

    এই সেকুলার ও নাস্তিক্যবাদী হিন্দুত্ববাদ -- অর্থাৎ আধুনিক হিন্দু জাতিবাদ ভারতে প্রতিটি মসজিদের নীচে শিবলিঙ্গ খুঁজে পাচ্ছে । হিন্দুত্ববাদীরা মসজিদ আরও ভাঙবে, তার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এর পরিণতি উপমহাদেশে তো বটেই, আন্তর্জাতিক ভাবেও খারাপ হবে এটা সম্ভবত রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের নেতা মোহন ভাগবতও টের পাচ্ছেন। (কমেন্ট বক্সে দেখুন)। তিনি এখন বলছেন , সব মসজিদের তলায় শিবলিঙ্গ খোঁজার দরকার কি? কিন্তু অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে, তাই না? জ্ঞানবাপী মসজিদসহ আরও অনেক মসজিদ ভাঙার তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে।

    শিল্প-সাহিত্যকে রাজনীতি কিম্বা সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত  নির্দোষ কায়কারবার গণ্য করা ঠিক নয়। একালে ভু-রাজনৈতিক বাস্তবতা থেকে শিল্প-সাহিত্যকে আলাদা বিচার করাও যারপরনাই কঠিন। বঙ্কিম পুরানকে 'পুরাণ' মেনে নিলেন না, তাকে ইতিহাস বানাতে চেয়েছেন। শ্রীকৃষ্ণ  তার কাছে ঐতিহাসিক চরিত্র। তাহলে 'রাম'ও বা আর রামায়নে  পুরাণের নীতিকথন বা গল্প হয়ে থাকবেন কেন? তিনিও ইতিহাস হয়েছেন এবং অযোধ্যার মসজিদও ভাঙা হয়েছে।  বাংলা সাহিত্য হিন্দুত্ববাদের জন্ম ও বিকাশের গোড়ায় এই অভূতপূর্ব অবদান রেখেছে। পুরাণকে ইহিহাস হিশাবে প্রতিষ্ঠিত করা। অস্বীকার করে লাভ নাই। 

    মানুষের মহিমা পুনর্স্থাপনের জন্য নাস্তিকতা তো খারাপ কিছু না। সেটা হওয়া সহজও বটে। কিন্তু নিজেকে নাস্তিক দাবি করলেই ঈশ্বর মরে ভূত হয়ে যান না, বরং আরও শক্তিশালী ফিরে আসেন। বাংল ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাস পাঠ করতে গেলে বোঝা যায় আনন্দমঠ থেকে অযোধ্যার মসজিদ ভাঙার দূরত্ব খুব বেশী নয়। মানুষের জগত নিছকই বুদ্ধি আর জ্ঞানতাত্ত্বিক দুনিয়া না, যুক্তি দিয়ে আল্লা নাই প্রমাণ করলে আল্লা নাই হয়ে যান না। বরং প্রশ্ন হয়ে ফিরে আসেন। যেমন কাকে ‘আছে’ বলি আমরা? কিভাবে ‘নাই’ নির্ণয় করি? শুধু বুদ্ধি নয় মানুষের জগত কল্পনার, আবেগের, হৃদয়েরও জগত। আল্লা, ভগবান, ঈশ্বর, গড যে নামেই ডাকুন তিনি স্বয়ং মনের মসজিদে, মনের মন্দিরে মনের মঠে বা মনের গির্জায় নিজেকে ঠিকই রক্ষা করেন। সেখান থে্কে তাঁকে হঠানো মুশকিল। 

    বিনায়ক দামোদর সাভারকার নাস্তিক ছিলেন, বিষয়টা গুরুতর।"
     
    ফরহাদ মজহারের আরেক লেখা!
     
  • দীপ | 2402:3a80:198f:2a7:878:5634:1232:***:*** | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৩০537161
  • মাতব্বর বঙ্কিম থেকে সর্বত্র সাম্প্রদায়িকতা খুঁজে পাচ্ছে, কিন্তু বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে চুপ! তখন অবশ্য সে হনুমান - জাম্বুবানের গপ্পিবাজি শোনাচ্ছে!
  • দীপ | 2402:3a80:198b:58d:678:5634:1232:***:*** | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:০২537401
  • ফরহাদ মজহার মার্কা ছাগু, বামাতি-জামাতি দের গপ্পিবাজির মূল কথা,
     
    শশাঙ্ক, ধর্মপাল, দেবপাল কেউ বাঙালি নন
    ইলিয়াস শাহ বাংলাকে ঐক্যবদ্ধ করেন, তিনিই আদি বাঙালি।
    সংস্কৃত ভাষার সঙ্গে বাংলা ভাষার কোনো যোগাযোগ নেই। মধ্যযুগের বাংলা ভাষা আরবী, ফার্সিতে পরিপূর্ণ ছিল। বিদ্যাসাগর, বঙ্কিম এইসব সরিয়ে জোর করে সংস্কৃত শব্দ ঢুকিয়ে বাংলা ভাষার ক্ষতি করেছে। বিদ্যাসাগর, বঙ্কিম যে ব্রিটিশদের দালাল ছিল তার বলাই বাহুল্য।
  • দীপ | 2402:3a80:198b:58d:678:5634:1232:***:*** | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:০৪537402
  • একটি অসামান্য তত্ত্ব পেয়েছিলাম। শশাঙ্ক গৌড়ের অধিপতি ছিলেন। তাই বাংলার ইতিহাসে তিনি নেই!
     
  • দীপ | 2401:4900:3821:26f0:da6e:1046:267f:***:*** | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:১৪537403
  • আরেক মাতব্বরের বিশ্লেষণ।
     
    বাংলা ভাষী হিন্দু জাতিবাদের জন্ম হয়েছিলো উনবিংশ শতকের কোলকাতায়, চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের লুটেরা নব্য জমিদারদের পয়সায়। যা শুধু বাঙালি জাতিসত্তাকেই হত্যা করতে চায় নি, খন্ডে খন্ডে ভেঙে দিয়েছে একটি জাতিগোষ্ঠী ও তার দেশকে এবং দেড়শ বছর ধরে বিষাক্ত করেছে বাঙালির ইতিহাস, সাহিত্য, সংস্কৃতি। ইদানিং এই বঙ্গীয় হিন্দু জাতিবাদ মার খাচ্ছে উত্তর ভারতীয় হিন্দুত্বের হাতে, এর থাকা না থাকায় বাঙালি জাতির কিচ্ছু আসে যায় না। এদিয়ে বড়জোর সর্বজনীন দুর্গাপূজা সম্ভব, সর্বজনীন বাঙালি জাতীয়তাবাদ সম্ভব নয়। 
           ----- রাজু আহমেদ মামুন
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে প্রতিক্রিয়া দিন