এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  রাজনীতি

  • অর্থনৈতিক এবং ধর্মীয়  মৌলবাদের মিথস্ক্রিয়া ঃআক্রান্ত ভারত  ভাবনা 

    Sandipan Majumder লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ২৭ মে ২০২৩ | ৮২১ বার পঠিত
  • (১) ভারত ভাবনার অন্যতম বিশিষ্ট রূপকার জওহরলাল নেহরুর আজ ৫৯তম মৃত্যুবার্ষিকী। এটা আশ্চর্যের বিষয় নয় যে তিনি ‘ভারত আবিষ্কার’ নামে একটি চমকপ্রদ বই লিখেছিলেন। কারণ ভারত তার বিশাল  ভৌগোলিক সীমারেখার মধ্যে, ভাষাগত, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক  বৈচিত্রের মধ্যে তার ঐক্যের সুরকে, মিলনের সুরকে লুকিয়ে রাখে। তাকে আবিষ্কার করতে হয়। তার জন্য দরকার সংবেদনশীল অনুসন্ধিৎসু একটি মনন যা পন্ডিত নেহরুর ছিলো। তাই নেহরুর ভারত ভাবনার মধ্যে আমাদের বেঁচে ওঠার সঞ্জীবনমন্ত্র নিহিত আছে যদিও আজ তা সর্বাপেক্ষা আক্রান্ত, আজাদীর এই অমৃতকালেই আরো বেশি করে যেন বা।

    (২) নেহেরুর এই ভারত ভাবনা অবশ্য ব্যক্তিগত কোনো উপলব্ধি নয়, বরং ইতিহাসের অমূল্য অর্জন। এই ভাবনার অন্যতম উপাদান হল গণতন্ত্র ও  ধর্মনিরপেক্ষতা। আমরা ভাবি, এসবই বুঝি আমরা পাশ্চাত্যের ঐতিহ্যের থেকে পেয়েছি। অমর্ত্য সেন তার ‘তর্কপ্রিয় ভারতীয়’ বইতে দেখিয়েছেন আমাদের সংস্কৃতিতে খোলামেলা বিতর্কের ইতিহাস কত প্রাচীন। এ ব্যাপারে  বৌদ্ধদের একটা বড় ভূমিকা ছিলো। বৌদ্ধদের যে চারটি বড় অধিবেশনের কথা আমরা জানি তার মধ্যে প্রথমটি গৌতম বুদ্ধর মৃত্যুর অল্পদিন পরে  রাজগৃহতে অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয়টি একশ বছর পরে বৈশালীতে, এবং সর্বশেষটি দ্বিতীয় শতাব্দীতে কাশ্মীরে অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এর মধ্যে সর্ববৃহৎ এবং সুপরিজ্ঞাত অধিবেশনটি ছিলো তৃতীয় অধিবেশন যেটি সম্রাট অশোকের পৃষ্ঠপোষকতায় পাটলিপুত্রে অনুষ্ঠিত হয় তিন শতাধিক খ্রীস্ট পূর্বাব্দে। এখানে যে শুধু ধর্মীয় বিতর্ক হত এমন নয়। সামাজিক এবং  নাগরিক কর্তব্যের বহু দিক নিয়ে প্রকাশ্য বিতর্ক  হত। বিতর্কের ভঙ্গি নির্দেশ করতে গিয়ে  অন্য গোষ্ঠীর সমালোচনা করার সময় বাকসংযম বজায় রাখা তো বটেই সেই সঙ্গে নিজের গোষ্ঠীর অকারণ প্রশংসা বা অন্য গোষ্ঠীর অকারণ  নিন্দা – এসব ব্যাপারে সম্রাট অশোকের স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা ছিলো। কর্ণাটকের এররাগুড্ডিতে রয়েছে অশোকের দ্বাদশ শিলালিপি। সেখানে স্পষ্ট লেখা রয়েছে, যে ব্যক্তি নিজের সম্প্রদায়ের প্রতি আনুগত্যবশত নিজের সম্প্রদায়কে শ্রদ্ধা দেখিয়ে অন্য সম্প্রদায়ের নিন্দা করে, সে এই আচরণের দ্বারা নিজের সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করে। অশোকের এই ভাবনা যে আমাদের ঈপ্সিত ভারত ভাবনার অন্যতম উপাদান হবে এবং আমাদের নানা জাতীয় প্রতীকে অশোকের উপস্থিতি খোদিত থাকবে, তাতে আর আশ্চর্য কী।

    (৩) ভারতে ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণা পাশ্চাত্যের থেকে আলাদা এটা অনেকেই জানেন। এখানে ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে বোঝায় সব ধর্মের প্রতি রাষ্ট্রের সমান দৃষ্টিভঙ্গী। ভারতবর্ষে সব নাগরিকের ধর্মাচরণ, উদযাপন এবং ধর্মপ্রচারের অধিকার যেমন আছে  তেমনি  তার ঐতিহ্যে সংশয়বাদী এমনকি নাস্তিকদেরও স্বীকৃতি আছে। অমর্ত্য সেন রামায়ণে জাবালি ঋষির কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। সংস্কৃত ভাষায় সংশয়বাদী বা নাস্তিক্যবাদী  প্রশ্ন এবং চর্চার যে ৩৫০০ বছরের ঐতিহ্য আছে সেকথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। যুক্তিবাদী চর্চার যে আবহে ভারতে গণিত এবং জ্যোতির্বিদ্যায়  উল্লেখযোগ্য সাফল্য  অতীতে এসেছিলো তাকে পরিপুষ্ট করার জন্যই আমাদের সংবিধানে ‘বৈজ্ঞানিক মনোভাব’ এর  প্রসারের জন্য রাষ্ট্রকে সচেষ্ট হতে বলা হয়েছে। যদিও এখন সেটা এসে দাঁড়াচ্ছে ‘মহাভারতের যুগে ইনটারনেট ছিলো থেকে  গণেশের মাথা প্লাস্টিক সার্জারি করে বসানো হয়েছিলো’ – এরকম বক্তব্যে।

    (৪) ভারতে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের সহাবস্থান এবং সহযোগের এক দীর্ঘ ইতিহাস আছে। সেখানে মুঘল সম্রাট আকবরের ধর্ম নিরপেক্ষতার উদাহরণ দেখে আমরা বুঝি যে এ ব্যাপারে আমাদের দেশীয় ঐতিহ্য কত শক্তিশালী। আকবরের নির্দেশ ছিলো ‘ধর্মের ব্যাপারে কোনো ব্যক্তিকে বাধা দেওয়া যাবে না। যার যে ধর্ম ভালো লাগবে সে সেই ধর্মের অনুসরণ করতে পারবে।’ আকবর ষোড়শ শতাব্দীর শেষভাগে বিভিন্ন ধর্মবিশ্বাসের প্রবক্তাদের নিয়ে  সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন। সেখানে হিন্দু, মুসলিম, ক্রীশ্চান, পার্সি, জৈন, ইহুদী এমনকি নাস্তিকরাও অংশ নিয়েছিলেন। ভারতে অনেক আগে থেকেই ধর্মনিরপেক্ষতার যে ঐতিহ্য তাকে সম্রাট আকবর আরো বেগবান  করেছিলেন। আকবরের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তসমূহ এই ধর্মনিরপেক্ষতার অনুসারী ছিলো। তার রাজসভায় অনেক হিন্দু অমাত্য যেমন ছিলেন তেমনি ছিলেন বিখ্যাত হিন্দু গায়ক তানসেন। তার সেনাপতি ছিলেন রাজপুত রাজা  মান সিংহ। আকবর যখন ধর্মনিরপেক্ষতার এই নজির তৈরি করছেন ইওরোপে তখন শুধুমাত্র ধর্মবিশ্বাস বা অবিশ্বাসের অজুহাতে  ইনকিউজিশন নাম দিয়ে মানুষ মারা হচ্ছে। শুধুমাত্র স্পেনেই মারা গেছেন ৩২০০০ মানুষ। এরপরও আমাদের দেশেরই কিছু লোক বলে বেড়ান ধর্মনিরপেক্ষতা নাকি বিদেশ থেকে আমদানি করা ধারণা। আমাদের দেশ গড়ার কারিগররা, আমাদের মনীষীরা ধর্মনিরপেক্ষতার এই ঐতিহ্যকে মর্মে মর্মে বুঝেছিলেন বলেই সাভারকার বা জিন্নার দ্বিজাতিতত্ত্ব তাঁদেরকে গ্রাস করতে পারে নি। ভারত ভাবনার মূল ভিত্তি হিসেবে তাঁরা ধর্মনিরপেক্ষতাকে অপরিহার্য ভাবতে পেরেছিলেন। রামমোহন, রবীন্দ্রনাথ, গান্ধী, নেতাজী, নেহরু, মৌলানা আজাদ থেকে আম্বেদকর পর্যন্ত এই ধারাকে পুষ্ট করেছেন তাঁদের ভাবনা এবং কর্মকাণ্ড দিয়ে।

    (৫) আমাদের সৌভাগ্য যে আমরা ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পণ্ডিত নেহরুকে পেয়েছিলাম। নেহেরু সংবিধানের অবজেকটিভ রেজোলিউশন  উপস্থাপন করেছিলেন কনস্টিটিউশনাল অ্যাসেম্বলির কাছে। যে যে ভাবনা ভারতের প্রাচীন ঐতিহ্যের উত্তরাধিকার হিসেবে আমাদের গর্বিত করে, ভারতের জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের পটভূমিকায় যে যে আকাঙ্খাগুলি স্বাধীন ভারতের  ভবিষৎ রূপরেখাকে চিহ্নিত করেছে তাকে মূর্ত করার দায়িত্ব নিয়েছিলেন নেহরু এবং আম্বেদকারের নেতৃত্বে সাংবিধানিক পরিষদ। সেকুলার এবং সোস্যালিস্ট – শব্দদুটি অনেক পরে ৪২তম সংশোধনীর মাধ্যমে সংযুক্ত হয়েছে কিন্তু প্রথম থেকেই সংবিধানের নির্দেশনায়, রাষ্ট্র পরিচালন নীতিতে ধারণাগুলি পরিব্যাপ্ত ছিলো। নেহেরু সেকুলারিজমকে এতটাই স্বাভাবিক ভাবতেন যে  তিনি আমাদের সতর্ক করে দিয়ে লিখেছেন, যে আমরা যেন মনে না করি যে সেকুলার পথে রাষ্ট্রকে চালাবার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা কোনো আলাদা মহত্ত্বের পরিচয় দিচ্ছি বা কাউকে দাক্ষিণ্য দেখাচ্ছি। আধুনিক পৃথিবীতে গুটিকয় পশ্চাৎপদ দেশ ছাড়া সবাই এই পথেই তাদের উন্নতি ও বিকাশের রাস্তা খুঁজছে। ভারতবর্ষের ক্ষেত্রে এই পথ তো আরো বেশি অনুসরণীয়। আসলে এটা একটা বিরাট পরীক্ষা। পাশ্চাত্যের জাতি রাষ্ট্রগুলির গঠনের ক্ষেত্রে এই পরীক্ষা দিতে হয় নি ভাষা, ধর্ম ও সংস্কৃতির  অনুরূপতার কারণে। ভারতের ক্ষেত্রে এই পরীক্ষাকে সফল করার স্বপ্ন দেশনায়করা দেখেছিলেন যে ভাবনা থেকে সেটাই ‘‘দ্য আইডিয়া অব ইন্ডিয়া”। অনেক  আশঙ্কাকে ব্যর্থ করে সেই পরীক্ষা অনেক বিচ্যুতি, বিপর্যয় এবং আঘাত সহ্য করেও  সেই ভাবনাকে যতটুকু রূপায়িত করতে পেরেছে সেটাই আজো এক বিমুগ্ধ বিস্ময়ের জন্ম দেয়। আমাদের একটা ধারণা আছে যে সেকুলারিজমের সুবিধাভোগী বোধহয় শুধু সংখ্যালঘুরা। সংখ্যাগুরুদের মধ্যে জাতপাত, ভাষা, এবং সংস্কৃতির যে বিভাজন তাকে সামাল দিতেও সেকুলারিজম কাজে লাগে। মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মেঘালয় প্রভৃতি খ্রীস্টানপ্রধান রাজ্য বা পাঞ্জাবের মত শিখপ্রধান রাজ্যে হিন্দুদের অবস্থানকে সমান মর্যাদায় রাখতেও সেকুলারিজমের দরকার এটা আমরা বুঝি তো? আবার সৌদি আরবের মত মৌলবাদী দেশকে দেখে অনেকে ভাবেন মুসলিমরা বোধহয় সেকুলার শাসনকাঠামোয় চলতে পারে না। অথচ  বিশ্বের ৫১টি মুসলিম প্রধান দেশের মধ্যে ২৫ টি দেশ কিন্তু সেকুলার শাসনকাঠামো বজায় রেখেছে।

    (৬) ১৯২৩ সালে বিনায়ক দামোদর সাভারকার তার হিন্দুত্বর তত্ত্বে  প্রথম স্পষ্ট করে বলেন যে হিন্দু মুসলমান দুই আলাদা জাতি। ভারতবর্ষ যদি হিন্দু রাষ্ট্র হয় সেখানে মুসলিম বা খ্রীস্টানদের স্থান হতে পারে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হয়ে। সাভারকরের যুক্তি অদ্ভুত। তাকেই খাঁটি ভারতীয় বলা হবে যার জন্মভূমি এবং ‘পবিত্র ভূমি’ দুটিই ভারতে। মুসলমান বা খ্রীস্টানদের জন্মভূমি ভারতে হলেও তাদের পবিত্র ভূমি যেহেতু মক্কা বা জেরুজালেম, তাই তাদের খাঁটি ভারতীয় বলা যাবে না। তাহলে একই যুক্তিতে যে সমস্ত প্রবাসী ভারতীয় বিদেশের নাগরিক হয়ে গেছেন তাঁদেরও সেই দেশের নাগরিক বলা যাবেনা কারণ তাঁদের পবিত্রভূমি ভারত। আবার জাপান বা থাইল্যাণ্ডের বৌদ্ধদের পবিত্র ভূমি যেহেতু ভারতের বোধগয়া, তাই তাদেরকেও বুঝি তাদের দেশের সরকার দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকত্ব দিচ্ছে? আসলে এটা  চিন্তার সংকীর্ণতা ছাড়া কিছু নয়। কিন্তু আজকে শাসক দল এবং তাদের অনুগামী সংগঠন সরাসরি ধর্মনিরপেক্ষতার বিরুদ্ধে কথা বলছে। তারা প্রকারান্তরে সাভারকরের দ্বিজাতিতত্ত্বেরই প্রচার করছে। এই তত্ত্ব মেকি জাতীয়তাবাদের মুখোস পড়ে থাকলেও এটা বিদেশ থেকে আমদানি। হিটলার এবং মুসোলিনির আর্য জাতির শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিপাদনের অনুকরণ। আর এস এসের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হেডগেওয়ারের গুরু বি এস  মুঞ্জে ১৯৩১ সালের মার্চ মাসে ইতালিতে গিয়ে মুসোলিনির সঙ্গে দেখা করে এবং ফ্যাসিস্ট সংগঠন ও যুববাহিনীর কার্যকলাপ দেখে কিভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছেন সেটা তিনি  ডায়েরিতে  লিখে গেছেন যা আজ প্রকাশিত। শুধু ইহুদীদের জায়গায় এখানে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু সংখ্যালঘু মুসলমান। তাঁদের  বিরুদ্ধে ভীতিপ্রদর্শন এবং কুৎসা করে দেশের মধ্যে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের সহাবস্থানের নীতিকে বাতিল করা হচ্ছে। এসবই ভারত ভাবনা এবং সাংবিধানিক মূল্যবোধের পরিপন্থী।

    (৭) গান্ধী, রবীন্দ্রনাথ পল্লীসমাজের উন্নতির মধ্যে ভারতবর্ষকে খুঁজেছিলেন। সুভাষচন্দ্র, নেহরু এবং আম্বেদকর শিল্পোন্নত ভারতবর্ষকে ভেবেছিলেন  দারিদ্র দূরীকরণের পথ। কিন্তু পথের পার্থক্য থাকলেও তাঁদের চিন্তায় দরিদ্র ভারতবাসীর ছিলো অগ্রাধিকার। নেহরু সংবিধান পরিষদের সামনে জানাচ্ছেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হোলো অভুক্ত মানুষকে খাওয়ানো, বস্ত্রহীন মানুষকে বস্ত্র জোগানো, বাসস্থানের ব্যবস্থা করা এবং প্রগতির  সব সুবিধা প্রত্যেক ভারতবাসীকে পৌঁছে দেওয়া। এটাই প্রকৃত স্বাধীনতার স্বরূপ। এই চিন্তাধারা সমাজতান্ত্রিক মতাদর্শ এবং মানবতাবাদী ঐতিহ্যের ফসল। যদিও ভারতের জাতীয় কংগ্রেস দলের মধ্যে সমাজতান্ত্রিক চিন্তার বিরোধী মানুষের সংখ্যাও কম ছিলো না। ১৯৩৮ সালের জুন মাসে বাবু রাজেন্দ্রপ্রসাদ, চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারী, আচার্য কৃপালনী সমেত কার্যকরী সমিতির সাত জন সদস্য নেহেরুর সমাজতান্ত্রিক ঝোঁকের বিরোধিতায় পদত্যাগ করতে চেয়েছিলেন। এই ঝোঁক এবং তার বিরোধিতা কংগ্রেসের মধ্যে বরাবরই ছিলো। ফলে ১৯৬৯ সালে যখন ইন্দিরা গান্ধী ১৪টি বৃহৎ ব্যাংক জাতীয়করণ করতে চান তার বিরোধিতা করে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী মোরারজি দেশাই পদত্যাগ করেন। পরের বছর রাজন্যভাতা বিলোপের মত একটি প্রগতিশীল বিলকে লোকসভায় পাস করিয়েও রাজ্যসভায় পাস করানো যায় নি। পাস করানো যায় পরের নির্বাচনে আরো বেশি সংখ্যাগরিষ্টতা অর্জনের পর। তবে বহু বিতর্ক এবং বিরোধিতার মধ্য দিয়ে ভারতের উন্নয়নের যে স্বপ্ন  দেশনায়করা দেখেছিলেন সেখানে একদিকে যেমন ধর্মনিরপেক্ষতার শক্ত ভিতের ওপর তার প্রাণপ্রতিষ্ঠা হয়েছিলো তেমনি দেশের সাধারণ মানুষের বিশেষত শ্রমজীবী শ্রেণীর উন্নতির প্রশ্নটি অগ্রাধিকার থেকে কখনো হারিয়ে যায়নি। গত শতাব্দীর আশির দশক থেকেই এই চিত্র পালটাতে শুরু করে।

    (৮) এর জন্য প্রাথমিক দায়িত্ব তৎকালীন শাসক দল কংগ্রেসের ওপর বর্তায়। একদিকে রামমন্দিরের তালা খুলে দিয়ে হিন্দু মৌলবাদকে খুশি করা, অন্যদিকে শাহবানো মামলায় অর্ডিন্যান্স এনে সুপ্রীম কোর্টের রায় বাতিল করে মুসলিম মৌলবাদীদের খুশি করা – এর মাধ্যমে ধর্মনিরপেক্ষতা নয় আদতে প্রতিযোগিতামূলক মৌলবাদকে  প্রশ্রয় দেওয়া হয়। এরপর নব্বইয়ের দশকে প্রথমে গ্যাট চুক্তিতে স্বাক্ষর, তারপর বিশ্বায়ন আর উদারীকরণের নামে ভারতে রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রে বেসরকারিকরণ, কর্মী ছাঁটাই, ক্যাজুয়াল কর্মী দিয়ে কাজ চালানো — এইসব উদার অর্থনীতির প্রথাকে এখানে প্রবর্তনের চেষ্টা করে কংগ্রেস। কিন্তু ভারতীয় জনতা পার্টি ক্ষমতায় আসার পর, বিশেষত ২০১৪ সালের পর থেকে ভারতের চিরন্তন ভাবনা, তার অর্থনৈতিক মুক্তির ধারণা যেভাবে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে তা স্বাধীনতার পর থেকে দেখা যায় নি।

    (৯) দেশনায়কদের পরিকল্পনায় যে ভারতবর্ষ  ছিলো তার বিপ্রতীপ অবস্থানে ছিলো  হিন্দুত্ববাদীরা — তা সে ধর্মীয়  মৌলবাদের প্রশ্নেই হোক আর আর্থিক নীতির ভাবনাতেই হোক। আজকে শুধু রাষ্ট্রক্ষমতায় আছে বলে নয়, সমাজের সর্বত্র তারা বিভাজন আর  ঘৃণার রাজনীতিকে  প্রচার করছে। গত লোকসভা নির্বাচনের আগে তারা  এনআরসি আর সিএএ-র মাধ্যমে গোটা ভারতবর্ষে সংখ্যালঘু  বিরোধী জিগির তুলতে সচেষ্ট হয়। দেশব্যাপী ডিটেনশন ক্যাম্প গড়ার প্রস্তুতি নাৎসি কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের ভয়াবহ স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়। এই হিন্দুত্ববাদীরা  বিবেকানন্দর নাম ব্যবহার করে।  অথচ তিনি তাঁর বিখ্যাত শিকাগো বক্তৃতার শুরুতেই বলছেন,  ‘আমি সেই জাতির অংশ হিসেবে গর্বিত যেটি পৃথিবীর সব ধর্ম এবং জাতির উৎপীড়িত এবং উদবাস্তুদের আশ্রয় দিয়েছে।’ ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য করা সিএএ বিবেকানন্দের এই উদার ভারত ভাবনার বিরোধী, সংবিধানের বিরোধী তো বটেই।

    (১০) সারাবছর ধরে এই হিন্দুত্ববাদীরা যে প্রচার চালায় তার মূল আক্রমণের লক্ষ্য থাকে সংখ্যালঘু, প্রগতিবাদী, সেকুলার এবং কম্যুনিস্টরা। সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে এদের প্রচারের একটা  বিষয় হল ‘মুসলমানরা চারটে করে বিয়ে করে আর তাদের অনেকগুলো করে ছেলেমেয়ে হয়’। করোনা ছড়ানো থেকে সন্ত্রাসবাদ, জনসংখ্যা বৃদ্ধি থেকে  বেকারি – সবকিছুর জন্য নাকি মুসলমানরাই দায়ী। সাম্প্রতিক সরকারি সমীক্ষার ফলে দেখা যাচ্ছে ভারতে বহুবিবাহ (একের অধিক) হারে সবচেয়ে এগিয়ে খ্রীস্টানরা – ২.১ শতাংশ, এরপর মুসলিমরা ১.৯ শতাংশ, হিন্দুরা ১.৩ শতাংশ। এটা নিশ্চয় সবাই চারটে করে বিয়ে করে তত্ত্বকে প্রমাণ করে না। সন্তানসংখ্যা নিয়ে একই রকম অপপ্রচারও ভিত্তিহীন। এই মুহূর্তে ভারতের টোটাল ফার্টিলিটি রেট ২.০ যা বেশ সন্তোষজনক। এই রেট যে দুটি রাজ্যে সবচেয়ে বেশি তা হল বিহার (৩.০) , উত্তর প্রদেশ (২.৪) এবং ঝাড়খণ্ড(২.৩)। পশ্চিমবঙ্গে এই হার বর্তমানে মাত্র (১.৬)। মুসলিম অধ্যুষিত জম্মু কাশ্মীরে এই হার ১.৪। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে ধর্মের যে কোনো সম্পর্ক নেই, আছে অশিক্ষার সেটা নিশ্চয় এর পরে আলাদা করে বলে দিতে হবে না। 

    (১১) হিন্দুত্ববাদীদের মিথ্যা ট্রোলগুলি, হোয়াটস অ্যাপের মিথ্যাগুলিকে একটু অনুসন্ধান করলেই  মিথ্যের বেসাতিটা ধরা পড়ে। ভারত ভাবনার মূল রূপকার পণ্ডিত নেহরু এদের আক্রমণের অন্যতম লক্ষ্য। এদের ভাষ্য অনুযায়ী নেহরু  নাকি বলেছিলেন, I am a  European by education, muslim by culture and Hindu by accident. এই উক্তি আসলে নেহেরু কোনোদিন করেন নি। ফেক নিউজের মুখোশ খোলার কাজ যারা করে তাদের মধ্যে বিখ্যাত অল্ট নিউজ সম্প্রতি প্রমাণ করে দিয়েছে এই উক্তি ১৯৫০ সালে হিন্দু মহাসভার নেতা এন বি খারে নেহেরুর ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছিলেন। আজ ৭৩ বছর ধরে সেই মিথ্যা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে তারা। মিথার শক্তিও বড় কম নয় সেটা ফ্যাসিস্ট গোয়েবলস অনেক আগেই বুঝেছিলেন।

    (১২) ধর্মীয় মৌলবাদ কিভাবে আমাদের জাতির ভারত হয়ে ওঠার, হয়ে থাকার স্বপ্নের বিরুদ্ধাচরণ করে সেটা আমরা দেখলাম। এর সঙ্গে  ওতোপ্রোতোভাবে জড়িয়ে আছে অর্থনৈতিক মৌলবাদ। একে বাজার  মৌলবাদও বলা যেতে পারে। এই মৌলবাদ  মানে সেই অর্থনৈতিক দর্শন যা শুধু ব্যক্তিপুঁজি আর বাজারকেই একমাত্র সত্য বলে মনে করে। এই তত্ত্বের প্রবক্তারা  রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রের বিরোধী কারণ তারা সেখানে বোধহয় কম্যুনিজমের ভূত দেখেন। জনকল্যাণকামী রাষ্ট্র গড়ে তোলা, গরীব, প্রান্তিক মানুষদের স্বার্থরক্ষার ব্যবস্থা করা, কৃষক ও দিনমজুরদের জন্য কৃষি নীতি প্রণয়ন – এসব কিছুই তাদের কর্মসূচীর ভেতর থাকে না। এর কারণ দ্বিবিধ। কারণ এসব নিয়ে ভাবলে বাজারের সর্বনিয়ন্তা প্রভাবকে অস্বীকার করতে হয়। দ্বিতীয়ত, সমস্ত  সমস্যার সমাধান ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র - এই নিদানকেও তাহলে অস্বীকার করতে হয়। তাই এই দুই মৌলবাদ হাত ধরাধরি করে চলে। বাজারকে একমাত্র ন্যায্যতা দিলে আমাদের ভারত ভাবনায়, আমাদের সংবিধানে যে অসাম্যের বিরুদ্ধে, সামাজিক ন্যায়ের  পক্ষে লড়াই করার কথা বলা হয়েছে সেই ভাবনাকেই অস্বীকার করা হয়। স্বাস্থ্য, শিক্ষা থেকে শুরু করে সমস্ত পরিষেবা যদি বাজার থেকে নিতে হয় তাহলে যে অসাম্যের জন্ম হয় তা থেকে পরিত্রাণের পথ এরা দেখাতে পারে না। বাজার জিনিসটাই অসাম্যের  দ্যোতক কারণ অনেকেই শুধু সামর্থ্যের কারণে সেই বাজার থেকে বাদ পড়ে যায়। এই বাজার মৌলবাদকে অনুসরণ করতে গিয়ে আসে নির্বিচার বেসরকারিকরণ যার আওতা থেকে লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প, ব্যাংক, বীমাক্ষেত্র কিছুই বাকি থাকে না। শিক্ষা, স্বাস্থ্য  ক্ষেত্রে ব্যয়বরাদ্দ কমতে থাকে। পেনসন এবং অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষার ওপর কোপ পড়ে। এই নিয়ে যে গণ-অসন্তোষের সম্ভাবনা দেখা দেয় তাকে নির্বাপিত করতে, আক্রান্ত জনগণের নজর অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে ধর্মীয় মৌলবাদ তখন কাজে আসে। তাই এই দুই মৌলবাদ হাত ধরাধরি করে চলে। যে উদার, জনকল্যাণকামী রাষ্ট্রের স্বপ্ন স্বাধীনতা সংগ্রামের স্বপ্নের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত ছিলো তার বিনাশকামনায় উদগ্ররূপ ধরেছে এই দুই মৌলবাদ।

    (১৩) ২০১৮ সালে আই এল ওর সমীক্ষা অনুযায়ী পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মজুরী বিশ্বে ২০ শতাংশ কম। ভারতে এই পার্থক্য প্রায় ৩৪ শতাংশ। গত বছর আইআইএম আমেদাবাদের একটি সমীক্ষাতেও একই চিত্র ধরা পড়েছে। এমনকি সিনিয়র মহিলা প্রফেশনালরা একই পজিশনের পুরুষদের তুলনায় ১৫ শতাংশ কম উপার্জন করছেন। ভারতের স্টক এক্সচেঞ্জে নথিভুক্ত ১০৯ টি কোম্পানির ৪০০০ একজিকিউটিভের বেতন বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে এই সত্য। আবার কর্মহানির ক্ষেত্রেও দেখা গেছে, বিশেষত  কোভিড পর্যায়ে যে মেয়েদের কর্মচ্যুতি পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি হারে ঘটেছে এবং কাজ ফিরে পাওয়ার হারও তাদের মধ্যে যথেষ্ট কম। একটু বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে যে এর পেছনেও এই দুই মৌলবাদের গাঁটছড়াই ক্রিয়াশীল। ধর্মীয় মৌলবাদের অন্যতম স্তম্ভ পিতৃতন্ত্র। সব মৌলবাদই মেয়েদেরকে চার দেয়ালের ঘেরাটোপে আটকে রাখাই শ্রেয় মনে করে। বাইরের কাজ তাদের কাছে বাহুল্য মাত্র। সতীসাধ্বী আদর্শ নারী, মা, বোন এবং স্ত্রীর বাইরে মেয়েদের কোনো স্বাধীন ভূমিকা তাদের কাছে অনুসরণীয় নয়। এর ফলে যেটা হয়, মেয়েদের উপার্জনকে  গৌণ বলে ধরা হয় এবং মেয়েরা নিজেরাও সেই পিতৃতান্ত্রিক মতাদর্শের অংশীদার হয়ে পড়ে। ফলে তারা সস্তা শ্রমের চুক্তিতে রাজি হয়ে যায়। এটা বাজার এবং পুঁজিবাদের  কাছে লাভজনক। কারণ এতে সে একটা সস্তা শ্রমের মজুত বাহিনী (Cheap reserve army of labour) পেয়ে যাচ্ছে এবং মজুরির গড় মানটাকে নামিয়ে রাখতে  বাজারকে  সাহায্য করছে। সাধে কি আর বাজার মৌলবাদ বা অর্থনৈতিক মৌলবাদ  হাত ধরাধরি  করে চলে।

    (১৬) সবশেষে নেহরুর মৃত্যুদিবসে তাকে স্মরণ করে দুকথা বলে শেষ করি। নেহরু একাদশ শতাব্দীর কাশ্মীরী কবি কলহণের ‘রাজতরঙ্গিনী’ থেকে রাজ্যশাসনের আদর্শ শর্ত হিসেবে ধর্ম এবং অভয়ের বাণীকে উল্লেখ করেছেন। এই ধর্ম মানে আইনের শাসন নয়, তার বেশি কিছু। যে ধর্ম রবীন্দ্রনাথের ভাষায় ধর্মমত থেকে আলাদা। আর অভয় মানে প্রতিটি নাগরিক যাতে ‘চিত্ত যেথা ভয়শূণ্য, উচ্চ যেথা শির’ সেই পরিমণ্ডল খুঁজে পায় স্বদেশভূমিতে। অথচ আজকে ধর্মীয় ও অর্থনৈতিক মৌলবাদ ধর্মের জায়গায় অধর্মকে আশ্রয় করছে, ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করছে দমন পীড়নের মাধ্যমে। আমাদের সাংবিধানিক মূল্যবোধ, আমাদের স্বপ্নের ভারত ভাবনা আজ সত্যি আক্রান্ত। কিন্তু ইতিহাস মানুষের পরাভব মেনে নেয় না। তাই আজ প্রত্যয়দীপ্ত শপথ নেওয়ার সময় এসেছে এই  আঁধাররাত্রিকে জয় করার জন্য। আমাদের সমবেত উদ্যোগ  এবং কর্মসূচীতে  প্রতিফলিত হোক সেই অমল বিশ্বাস যা এই পবিত্র ভারত ভাবনার গৌরবোজ্বল উত্তরাধিকারী হিসেবে আমাদের অবস্থানকে সুনিশ্চিত করতে পারে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ২৭ মে ২০২৩ | ৮২১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে প্রতিক্রিয়া দিন