ঘুম থেকে উঠে ঋজু বুঝল মাথাটা অসহ্য ধরেছে। কিন্তু সে এই সক্কাল সক্কাল বুঝে উঠতে পারল না, চশমার পাওয়ারটা হঠাৎ বেড়ে গেলো নাকি বইয়ের লেখা গুলো ক্রমশ ছোট হয়ে যাচ্ছে। দিন দিন কাগজের দাম যে হারে বাড়ছে তাতে কোন কিছুই অসম্ভব নয়, নিজের মনেই বলে উঠলো সে। মুখ ধুয়ে, বিষ্ণুদার দোকানের চা টাই এর মহৌষধ, তাই হোস্টেলের নীচে নামটাই এখন তার একমাত্র ভরসা। অভ্যেস মতো চা অর্ডার দিয়ে একটা সিগারেট ধরিয়ে ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে তার মনে হল, ভেতরের যা সব পুড়ছে তারা এতক্ষণে একটা বেরোবার পথ পেয়ে নিস্তার পেল। চায়ে চুমুকটা এত ভালো লাগলো,এবার আশা করছে সব ঠিক হয়ে যাবে। এই চা খেতে এলে কত রকমের মানুষজনের যে মুখোমুখি হওয়া যায় আর কত রকমের গল্প শোনা যায়, এটা বেশ ভালো লাগে ঋজুর।এই এখনই যেমন একটা ছেলে আর একটা ছেলেকে বলছে, "ভাই আর বলিস না এত চাপ অফিসে, কর্পোরেটে আসিস নি ভাল করেছিস, শালা রাতেও স্বপ্ন দেখে ভয়ে বলে উঠছি স্যার আই উইল ফিগার ইট আউট সুন.. শুয়েও শান্তি নেই মাইরি"। ঋজু মনে মনে মুচকি হাসল, কত কী না হচ্ছে এই শহরে। কোথায় সে ভেবেছিল বাড়ি থেকে বেরিয়ে এখানে এসে একটা অন্যরকম জগৎ পাবে কিন্তু সবাই এত আত্মকেন্দ্রিক যে আজকাল ওঁর খুব ক্লান্ত লাগে।হম, হয় ত এই শহরে একটা ভালো এক্সপোজার পাওয়া যায়, নিজেকে এনরিজ করার হাজারো উপায় খোলা কিন্তু একটা শহর ত তৈরি হয় তাদের মানুষদের নিয়েই।তারাই এত যান্ত্রিক যে তাদের কাছে যন্ত্রের যন্ত্রণা ছাড়া অন্য কিছু আশা করাই বৃথা। এইসব ভাবতে ভাবতে কখন যে চায়ের কোপটেটা ফাঁকা হয়ে গেছে খেয়ালই করে নি, ওটা পাশের ডাস্টবিনে ফেলে চলে আসতে যাবে, কিন্তু আটকে গেলো। একটা আরশোলা। হ্যাঁ একটা আরশোলা ডাস্টবিনে পড়ে থাকা এক টুকরো ডালপুরীর ওপর ঘুরে বেড়াচ্ছে আর লম্বা শুঁড় দুটো দিয়ে কী যেন একটা জরিপ করে নিচ্ছে। ঋজুর চায়ের কোপটেটা প্রায় আর একটু হলে আরশোলাটার গায়ে গিয়ে পড়ত কিন্তু তা সত্ত্বেও ওঁর কোন ভ্রূক্ষেপ নেই! ঋজুর হোস্টেলেও প্রচুর এই প্রাণীটির উৎপাত। ওদের তো রীতিমতো লক্ষণগন্ডী কিনে রুমে কোটো-বাটা, খাবারের চারপাশে বড় বড় শূন্য এঁকে রাখতে হয়। এসব করতে গিয়ে তার মাঝে মাঝেই মনে হয়, যে গন্ডী সীতাকেই বাঁচাতে পারলো না সে আর কি করে এই বিদেশী কীটকে পরাস্ত করবে… কোম্পানীরা পারেও বটে, নাম দিয়েছে লক্ষণগন্ডী! হাঁসি পায় আবার ঘৃণাও হয় এইভাবে মানের কাছে বাজার জিতে যাচ্ছে দেখে।
কিছুক্ষণ একমনে দৃশ্যটার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ও বুঝল ওর চারপাশের জগৎটা ক্রমে ঝাপসা হয়ে আসছে, যানবাহনের কোলাহলও হালকা হয়ে যাচ্ছে আর চোখের সামনে সেই কুয়াশার মধ্যে কোন এক জায়েন্ট স্ক্রিনে ফুটে উঠেছে কিছু পরিসংখ্যান– গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স এ ভারতের স্থান ১২১টা দেশের মধ্যে ১০৭, হিউম্যান ডেভোলাপমেন্ট ইনডেক্স এ ভারতের স্থান ১৩২, ১৯১টা দেশের মধ্যে, দেশের ১.৮মিলিয়ন মানুষের মাথার ওপর কোন ছাদ নেই, দেশীয় মুদ্রার মান কমছে, ১ডলার যেখানে ৮৩ টাকা ছুঁয়েছে, দেশে বেকারত্বের হার সর্বোচ্চ, অথচ সেই দেশেরই বণিক পৃথিবীর দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তি! সে সামনে এসব দেখতে পাচ্ছে,কপালের শিরা ফুলে উঠছে, সে বুঝতে পারছে তার নিজের ওপর আর নিয়ন্ত্রণ নেই, হাতের মুঠো শক্ত হয়ে গেছে, আর এই সময় সে একটা কাণ্ড ঘটিয়ে ফেললো।হাতের আধপোড়া সিগারেট টাকে সজোরে চেপে ধরল আরশোলাটার গায়ের উপর,কীটটা এতটাই ভক্ষণে মোজগুল ছিল যে ঘটনার আকস্মিকতায় সে উড়ে যেতেও ভুলে গেল। ঋজু কিন্তু সেই আগুন ওয়ালা সিগারেটের মুখটা ওঁর গায়ে নিজের সর্বশক্তি দিয়ে চেপে ধরে বিড়বিড় করে চললো, "মর শালা, দগ্ধে দগ্ধে মর, আর খাবি?খা না খা, ভালো করে খা। এত খেয়েও তোদের সাধ মেটে না নই, দেখ দেখ, ঐ যে ফুটপাথে দেখতে পাচ্ছিস? ল্যাংটো, পাঁজরের হাড় বের হওয়া সর্দি ঝরা ছেলেটাকে, শেষে ওর খাবারেও হাত দিয়েছিস, শালা বহিরাগত কীট, এইটাই তোর যোগ্য শাস্তি,মর তুই"। এই বিড়বিড়ানি কত ক্ষণ চলেছিল ঋজুর মনে নেই, একটা ধাক্কায় ওঁর চৈতন্য ফিরল। ততক্ষণে চারিপাশে লোকজন জমে গেছে না ভুল হল মজার খোরাক পেয়ে গেছে আরকি…ধাক্কাটা এসেছিল অতনুদার কাছে থেকে, ও ঋজুকে হাতে ধরে হোস্টেলে এনে রুমে বসিয়ে এক গেলাস জল দিয়ে বললো, "এই তোর এক্সযাক্টলি কী হয়ে ছিল বল তো? আমি ত ভাবলাম নির্ঘাত প্রেসার ফল করে তোর এই অবস্থা, এত ঘেমে গেছিস এই মেঘলা দিনেও! "কোন উত্তর আসছে না দেখে আবার অতনু বললো, "এই ঋজু কি হল তোর শরীর টা ঠিক লাগছে? কি খুঁজছিলিস ডাস্টবিনে?দেখ কি কোইনসিডেন্স ভাগ্যিস আমি আজ চা খেতে গেলাম, কোনদিন সকালে চা খাই না আজই মনে হল যায়, না গেলে আজ কি যে হত তোর"! ঋজু এতক্ষণ এক দৃষ্টিতে ফ্যানের ব্লেডের দিকে তাকিয়ে ছিল, তার হৃৎপিণ্ডের লাবডাব বাইরের যে কেউ এখনো শুনতে পাবে,দ্বিতীয় ধাক্কায় সে একটু ধাতস্থ হল। কিন্তু অতনুদার দিকে তাকিয়ে কিছু একটা বলতে যাবে হঠাৎ সে পায়ের চপ্পলটা খুলে সেকেন্ডের মধ্যে ছুঁড়ে দিল সামনের দেওয়ালে। লক্ষ্য ভ্রষ্ট হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না, চটির আঘাতের সাথে সাথে চপ্পল আর একটা আরশোলা মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। ঘটনাটা এতটাই তাড়াতাড়ি ঘটে গেল পাশে বসে থাকা মানুষটি তার কোন কার্য-কারণ বুঝে উঠতেই পারলো না। খালি বললো "বাপরে ভালো টিপ ত তোর, ভালো কাজে লাগা ওটাকে"। ঋজু আবার বলে উঠলো, "শালা বহিরাগত কীট,সব খাবি না? মর তুই"। পাশে অতনুদার কানে গোটা বাক্যের খালি শালা টুকুই পৌঁছল আর গলা ঝেড়ে বললো, "শালা আরশোলা না ওটা তুমি। এখন কে তোমার চরণধূলি দেওয়াল থেকে তুলবে শুনি?" ঋজু এবার সত্যি একটু লজ্জা পেয়ে গেল, "সর্রী দাদা আমি এখুনি সার্প জল এনে ব্যবস্থা করে দিচ্ছি!আসলে শরীরটা ঠিক ভালো লাগছে না, কি করতে কি করছি কে জানে! তুমি প্লিজ কিছু মনে করো না।আর থ্যাংকস গো আমাকে নিয়ে আসার জন্য। এখন আমি রুমে যায় বুঝলে, একটু শুই, আশা করি ঠিক হয়ে যাবে সব"।কিন্তু ঋজু জানে কাজটা ও সজ্ঞানেই করেছে।ওটাই এখন থেকে ওঁর লক্ষ্য বা অতনুদার ভাষায় যেটা টিপ।
দিন দিন কেমন একটা হয়ে যাচ্ছে সে, উষ্কখুষ্ক চেহারা, উদাস ঘোলাটে দৃষ্টি, ঘর থেকে আর সেরম বেরোয় না, পড়াশুনাতেও তেমন মন বসাতে পারে না, যখন সে পড়ে পৃথিবীতে বছরে ১.৩ বিলিয়ন টন খাবার নষ্ট হয় আর কিছু মানুষ না খেয়ে রাস্তার ধারে মরে, বস্তিতে অভাবে ছেলেগুলো পকেট কাটে, বিদেশের রাষ্ট্রনায়ক এলে বস্তির ঢাকতে পাঁচিল তুলে দেওয়া হয়, চাকরি প্রার্থীদের অনশন সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয় যাতে কার্নিভাল এ এসে মানুষ বিব্রত বোধ না করে। অতনুদা মাঝে মধ্যেই তার ঘরে আসে দ্যাখে সবসময়ই ঋজু কি যেন একটা খুঁজে চলছে,চোখে মুখে একটা উৎকণ্ঠা,আর খালি বলে, "অতনুদা ওই সামাজিক কীট গুলো কে ত খতম করে দিতে হবে বলো,ওরা থাকলে সাধারণ মানুষ বাঁচবে না, ওরা খালি নিজেরটুকু বোঝে, যে কোন উপায়ে আমাদের ওদের নির্মূল করতে হবে"। অতনু কিছুই বুঝতে পারে না। সে ভারী চিন্তায় পড়ে ওঁর বাড়ির লোককে খবর দিয়েছে কিন্তু ঋজু কিছুতেই যাবে না। ওঁকে এখন কোন এক খতমের ভূতে পেয়ে বসেছে। একবার তো ওঁর বাবা-মা নিতে এলো, ও জানতে পেরে সেই দিন বেপাত্তা, সারা দিন কোন খবর নেই। বাবা-মা কেঁদে কেটে ফিরে গেলেন।পরের দিন সকালে হোস্টেল ফিরল আলুথালু হয়ে যেমন করে জুয়ায় সর্বস্ব হেরে মানুষ বাড়ি ফেরে। জিজ্ঞেস করলে বলে ছিল ওর পকেট মানি থেকে নাকি সব টাকা দিয়ে সে রাস্তার মানুষদের আপেল, আর পাউরুটি কিনে দিয়েছে, এখন ও নিঃস্ব। হাতে একটা কড়িও নেই। বাসে চেপে ছিল ভাড়া দিতে না পারায় কন্ডাক্টর দু ঘা দিয়ে টেনে নামিয়ে দিয়ে বলেছে, "বাসে উঠলেই বেটাদের ক্ষেপা সাজতে ইচ্ছে হয়"। কিন্তু ঋজু বোঝাতে পারেনি ওঁর কাছে সত্যই পয়সা ছিল না।
হোস্টেলে সবাই দিনে একবার করে এখন ঋজুর ঘরে আসে আর দেখে ও খালি পিঠ চুলকাচ্ছে আর বলছে, "দেখ না রে কেউ আমার শিরদাঁড়ার দুইদিকে কিছু একটা কি গজাচ্ছে? এই বাপ্পা, সৌরভ, অভি তোরা কি অন্ধ হয়ে গেছিস নাকি! দেখতে পাচ্ছিস না আমার পিঠে হাত দিয়ে দ্যাখ না কিছু একটা হয়েছে মনে হচ্ছে"। কিন্তু কেউ কিছুই দেখতে পাই না ভাবে ঋজু আসতে আসতে উন্মাদ হয়ে যাচ্ছে। খালি টিনের স্কেল দিয়ে পিঠের দুই ধার চুলকায়। এখন ওঁর জামা প্যান্টের সংখ্যাও হাতে গোনা, বাকি উদ্বৃত্ত জামা সব গরীব বাচ্চাদেরকে দিয়ে এসেছে। এখন খালি মলিন হয়ে আসা একটা জামা আর হাতে চপ্পল নিয়ে সবসময় দেওয়ালে মেঝেতে কিছু যেন একটা তাক করে থাকে মারার জন্য। কোন কোন সময় অন্যকারো রুমে গিয়েও আরশোলা মারব বলে হাঙ্গামা বাঁধিয়ে বসে। হাতে টাকা পয়সা বলতে কিছুই নেই, হোস্টেল সুপার ভালো তাই একবেলা মিল ফ্রি করে দিয়েছেন।বাড়ির লোকজন এমনকি কারো সাথেই আজকাল আর কথা বলে না, ভ্যাবলার মত খালি তাকায় আর কারো সাথে দেখা হলেই চপ্পল নিয়ে বলে "ওদের শেষ করে দিতে হবে, শালারা না হলে সব শেষ করে দেবে, ওদের খালি চাই, এই দাঁড়িয়ে আছিস কেন আমার সঙ্গে আই ওদের চিনিয়ে দিচ্ছি"।
একমাত্র অতনুদা এলেই ওঁ একটু শান্ত হয়ে বসে।কি যেন বলতে চাই আর ওর চোখ গড়িয়ে জল নেমে এসে ওঁর লোমশ খালি বুকটা ভিজিয়ে দেয়। এই হোস্টেলে অতনুদাই একমাত্র তাকে নিজের ভাইয়ের মত দেখত সেই প্রথম দিন থেকে। চোখের সামনে ঋজুটা কেমন একটা হয়ে গেল সেই দিনের বিষ্ণুদার চায়ের দোকানে ঘটনার পর থেকেই। সেই নাদুসনুদুস পাঞ্জাবি পড়া ছেলেটা আজ রোগা, হাড় বের হয়ে আসা উন্মাদ! অতনুদাও এটা মেনে নিতে পারে না,জড়িয়ে ধরে বলে,"কিরে কিছু বলবি? কাঁদছিস কেন?" ঋজু তত ফুঁপিয়ে ওঠে। আজ সেরমই এক মুহূর্তে অতনু লক্ষ্য করল ঋজু নিজের পিঠের শিরদাঁড়ায় ঠিক দুই পাশে স্কেল দিয়ে ঘষে ঘষে দুটো বিরাট ক্ষত করে ফেলেছে, রক্ত-পুঁজ জমাট বেঁধে জায়গাটা কেমন ভেদ ভেদ করছে। কিছু মাছিও বসছে, কিন্তু ঋজুর তাতে ভ্রূক্ষেপ নেই বিন্দুমাত্র। চমকে উঠে অতনু বলল, "একি করেছিস তুই! পিঠে সেপটিক হয়ে গ্যাছে, ইমিডিয়েট ডাক্তার না দেখলে ভয়ানক একটা কিছু ঘটে যাবে"। ঋজু শান্ত হয়ে বললো, "দাদা আমি কাল থেকে খাবার খেতে পারছি না আর। দ্যাখো কত মানুষ খেতে পাচ্ছে না, এইতো যে ছেলে গুলো রাস্তায় উলঙ্গ ঘুরে বেড়াচ্ছে, ওদের কি দোষ বলো? ওদের সামনে দিয়ে কিছু মানুষ খাবারের টিফিন কৌটো ঝোলাতে ঝোলতে অফিস, স্কুল যাচ্ছে আর ওঁদের বাবা মা ওঁদের সামান্য ফুটন্ত ভাতের গন্ধটুকু দিতে পারে না। আজ ওঁরা যদি লোকের পকেট কাটে দু'মুঠো ভাতের জন্য ওদের কী দোষ বল, ওরাও আমার দেশ। আমরা বাধ্য করছি একটা অন্ধকার জগৎ ওদের বেছে নিতে। আর ওই আরশোলাগুলো ওদের ওই সামান্য ভাগ টুকু পর্যন্ত ছাড়ছে না। দেখো না আমার পিঠেও মনে হচ্ছে এবার পাখনা গজাবে খুব সুড়সুড় করছে, তাহলে আমিও কি আরশোলা হয়ে যাব অতানুদা? একটু থেমে সামনের হাত দুটো আঁকড়ে ধরে শ্যাওলা ধরা গলায় বলে, "দাদা আমি ওঁদের হকের খাবার খেয়ে নিচ্ছি না তো"? শান্ত হ আর এসব একদম ভাববি না। কি যা তা বলছিস তুই কেন ওদের খাবার খাবি! তুই তো সর্বস্বান্ত ওদের দিতে গিয়ে.. নিজেকে এই ভাবে শেষ করিস না ভাই, তুই মানসিক রুগী হয়ে গেছিস তোর শীঘ্রই চিকিৎসা দরকার। আগে তোর পিঠ তারপর মাথা, অতনুদা কাঁপা কাঁপা গলায় বলে ওঠে।
কথা মত আজ ঋজুকে একবার ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যাবার কথা। সকাল ৯টা বাজে,কিন্তু অন্য দিন এতক্ষণ চপ্পল হাতে হোস্টেলের বারান্দায় ওঁকে দেখা যায়। আজ এখনো কেন দেখা যাচ্ছে না! অতনু মনে মনে ভাবল যাক বাবা আজ বোধ হয় একটু ঘুমিয়েছে। ওটা দরকার ছিল। কিন্তু ডাক্তার কাকাকে বলা আছে না গেলেই নয় তাই ঋজুকে ডাকতে ওঁর রুমের দিকে এগোল। গিয়ে দেখল দরজা বন্ধ। কোন দিন ত এমনটা হয় না! ভয় পেয়ে দরজা একটু জোরে ধাক্কা দিতে না দিতেই দরজা খুলে গিয়ে কপালে ঋজুর পা দুটো ঠেকল অতনুর। সিলিং থেকে ঝুলে আছে। সামনে ওঁর এককালে অঙ্ক করা হোয়াইট বোর্ডটাই লেখা "পিপীলিকার পাখা গজায় মরিবার তরে"।।