‘হোয়াই গুজরাট’? তিস্তা শেতলবাদ তাঁর বই ‘ফুট সোলজার অফ কন্সটিটিউশন’ এ জিজ্ঞাসা করেছিলেন। কেন গুজরাটকেই সংঘ পরিবার হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির ল্যাবরেটরি হিসাবে বেছে নিয়েছিল? তিস্তা উত্তরে বলছেন গুজরাট হচ্ছে মহাত্মা গান্ধীর রাজ্য, অহিংসা, শান্তির পীঠস্থান। তাঁর এই মতাদর্শকে নিশ্চিহ্ন করার এটাই তো আদর্শ জায়গা! আরবি শ্রীকুমার, গুজরাটের ভূতপূর্ব ডিজি, যিনি সুপ্রিম কোর্টের নজিরবিহীন রায়ের কারণে জাকিয়া জাফরি মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন, তিনি তাঁর বই ‘গুজরাতঃ বিহাইন্ড দ্য কার্টেন্স’ এ লিখছেন এগারশো শতাব্দীতে সোমনাথ মন্দিরে গজনির সুলতান মাহমুদের আক্রমণের স্মৃতি সচেতন ভাবে হিন্দু মানসিকতায় জিইয়ে রাখা হয়েছে। এর ফলে অষ্টাদশ শতাব্দী থেকে রাজ্যে বারবার সাম্প্রদায়িক হানাহানি দেখা গেছে। ১৭১৪ খ্রিস্টাব্দে আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর মাত্র সাত বছর বাদে সেখানে বড় দাঙ্গা হয়। ১৯৬৯, ১৯৮৫, ১৯৯২, প্রায় প্রতি দশকেই গুজরাটে ভয়ঙ্কর সাম্প্রদায়িক হিংসা দেখা গেছে। ১৯৬৯ সালে তো ৬০০ জনের মৃত্যু হয়।
১৯৮৪র পর থেকে গুজরাটে সংঘ পরিবারের বাড়বাড়ন্ত হতে থাকে। ঐ বছরে সংরক্ষণ-বিরোধী আন্দোলন সারা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে। মুসলিমদের পিছিয়ে পড়া অংশও সংরক্ষণের জন্য চিহ্নিত হওয়ার কারণে এই আন্দোলনের বর্শামুখ মুসলিমদের দিকে ঘুরে যায়। গেরুয়াবাহিনী মানুষকে বোঝাতে সক্ষম হয় যে মুসলিম সমাজবিরোধীদের কংগ্রেস আশ্রয় দেয় এবং তাঁদের মাফিয়া হিসাবে ব্যবহার করে। তাঁদের নিরন্তর প্রচারের কারণে মানুষের মধ্যে এই ধারণা ক্রমশ দৃঢ় হয় যে এই মাফিয়ার ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে রুখতে রাজ্যে বিজেপি সরকারকে ক্ষমতায় আনা দরকার। কংগ্রেসের গণভিত্তি হ্রাস পেতে শুরু করে, প্যাটেল সম্প্রদায় যাঁরা জনসংখ্যার প্রায় ১৫ থেকে ২০% তাঁরা বিজেপিকে সমর্থন করা শুরু করে। একই সঙ্গে স্বামীনারায়ন সম্প্রদায়ের পুনর্জাগরণ আন্দোলনের কারণে হিন্দুদের প্রাচীন ঐতিহ্যকে মহিমান্বিত করা ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের দানবীয়করণ করা শুরু হয়। এর ফলে নিম্নবর্ণের হিন্দুদের মধ্যে বিজেপির প্রভাব বৃদ্ধি পায় এবং ১৯৯৫ ও ১৯৯৮র নির্বাচনে তারা রাজ্যে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। কিন্তু দুর্নীতি ও ২০০১ এর জানুয়ারিতে ভূমিকম্পের সময় ত্রাণ ও পুনর্বাসনে অদক্ষতার কারণে সরকারের জনপ্রিয়তা হ্রাস পায় এবং বিজেপি কিছু উপনির্বাচনে পরাজিত হয়। এই সঙ্কটকে সামাল দিতে ২০০১ এর সেপ্টেম্বরে নরেন্দ্র মোদী মুখ্যমন্ত্রী পদে অভিষিক্ত হন এবং গুজরাট ‘দাঙ্গা’র প্রেক্ষাপট প্রস্তুত হয়।
শ্রীকুমার ২০০২ এর এপ্রিল মাসে এডিজিপি (গোয়েন্দা বিভাগ) পদে অধিষ্ঠিত হন। তিনি লিখছেন তাঁর সম্পর্কে সরকার বিশেষ কোনও খোঁজখবর না করেই তাঁকে ঐ পদে অধিষ্ঠিত করে। এর আগে তিনি রাজ্যের সাতটি জেলায় এসপি ছিলেন, রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের নিরাপত্তা বিভাগের ডিরেক্টর ছিলেন এবং কোনও পদেই তিনি তাঁর অনমনীয় ও আপসবিরোধী মনোভাবের জন্য দশ থেকে এগারো মাসের বেশি টিকতে পারেননি। ১৯৮৬ সালে কচ্ছ জেলায় তিনি কড়া হাতে সাম্প্রদায়িক হিংসা দমন করেছিলেন। এর ফলে জেলার বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ করেন, জেলায় বন্ধ ডাকেন এবং তাঁকে মহম্মদ বিন তুঘলক নামে ভূষিত করেন!
ইতিমধ্যে ২৭শে ফেব্রুয়ারি গোধরার ঘটনা ঘটে গেছে। শ্রীকুমার কর সেবকদের অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুর কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যোগাড় করেন। তিনি জানতে পারেন এসআইবি আমেদাবাদ কর সেবকদের অযোধ্যা যাত্রার ওপর নজরদারি রেখেছিল। তাঁদের রিপোর্ট অনুযায়ী কর সেবকরা ট্রেনের হকারদের সঙ্গে ঝগড়া করেছে, তাঁদের মারধোর করেছে এমনকি রাতলাম এবং দাহোড় স্টেশনে তাঁদের সামগ্রী লুটপাট করেছে। আইবির এই এজেন্টরা তাঁদের সদর দপ্তরে এই সব ঘটনা জানিয়েছেন এবং সতর্ক করেছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় আইবি এইসব তথ্য চেপে যায়। রহস্যজনক ভাবে তাঁরা গোধরা পুলিশকে কোনও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয় না, উল্টে তাঁরা শুরুতেই এস-৬ কামরায় অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে ষড়যন্ত্রমূলক বলে আখ্যা দেয়, এমনকি এতে বিদেশী হাত আছে বলেও প্রচার করে। বলাই বাহুল্য এর ফলে অভূতপূর্ব সাম্প্রদায়িক উন্মাদনার সৃষ্টি হয় এবং গণহত্যার ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়।
শ্রীকুমার তাঁর বইয়ে অভিযোগ করেছেন যে ২৭ তারিখ রাতে গোধরা থেকে ফিরে মুখ্যমন্ত্রী উচ্চপদস্থ অফিসারদের একটি মিটিং ডাকেন। তিনি নাকি বলেন ইতিপূর্বে কোনও দাঙ্গা হলে পুলিশ প্রশাসন সেটা নিরপেক্ষ ভাবে মোকাবিলা করে থাকে। এবারে সেটা হবে না। অভিযোগ তিনি নাকি নির্দেশ দেন যে হিন্দুদের পুঞ্জিভূত ক্রোধের বহিঃপ্রকাশের সুযোগ দিতে হবে। অফিসাররা চুপচাপ শোনেন। তাঁর কথার বিরোধিতা করার কেউ সাহস করেন না। লেখকের ঊর্ধ্বতন অফিসার ডিজিপি চক্রবর্তী তাঁকে একান্তে বলেন মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষপাতমূলক মনোভাবের কারণে হিংস্র জনতার নৃশংস আক্রমণ থেকে মুসলিমদের রক্ষা করা যাচ্ছে না।
এরপরে ডিজিপি থেকে মুখ্যমন্ত্রী, সর্বস্তর থেকে অবৈধ, মৌখিক এবং অলিখিত নির্দেশ দেওয়া শুরু হয়। যে সব সভায় এইসব নির্দেশ দেওয়া হতো সেগুলির কোনও মিনিটস রাখা হতো না। কিছু নির্দেশের উদাহরণ নিম্নরূপঃ
•রাজ্যের শাসক দল এবং সেটির ঘনিষ্ঠ সংগঠনগুলির কর্মকাণ্ডের ওপর বেশি নজর রাখা চলবে না।
•বিরোধী দলের বর্ষীয়ান নেতার ফোনে আড়ি পাততে হবে।
•ভিত্তিহীন হলেও, একটি বিরোধী দল দাঙ্গায় ইন্ধন যোগাচ্ছে এরকম রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
•হরেন পাণ্ডা, রাজ্যের ভূতপূর্ব স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, যিনি ২০০৩য়ে রহস্যজনক ভাবে খুন হন, তাঁর কাজকর্মের ওপর নিয়মিত নজর রাখতে হবে।
•রাজ্যের পরিস্থিতি স্বাভাবিক জানাতে হবে যাতে শীঘ্রই নির্বাচনের আয়োজন করা যায়।
শেষের এই নির্দেশ থেকে লেখকের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সরাসরি সংঘাত শুরু হয়। ৯ই আগস্ট, ২০০২ নির্বাচনি কমিশনার জে এম লিংডো রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা যাচাই করার জন্য উচ্চপদস্থ অফিসারদের একটি সভা ডাকেন। শ্রীকুমারের ঊর্ধ্বতন অফিসাররা তাঁকে সরকারের পেশ করার রিপোর্টকে সমর্থন করার জন্য চাপ দেন যাতে শীঘ্রই রাজ্যে নির্বাচন করা যায়। লিংডো সরকারি রিপোর্ট পড়ে শ্রীকুমারের অভিমত জানতে চান। লেখকের চাঁছাছোলা মতামত সরকারের মিথ্যাচারকে নগ্ন করে দেয়। তিনি বলেন ১৮২টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ১৫৪টিতে পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ণ, যার মধ্যে আছে ৯৯৮টি গ্রাম ও ১৫১টি মফঃস্বল শহর। অন্তত এক লাখ লোক বাস্তুচ্যুত এবং তাঁদের কোনও পরিচয়পত্র নেই, যে কারণে তাঁরা ভোটদান করতে পারবেন না। রাজ্য সরকারের ইচ্ছা ছিল অক্টোবরে নির্বাচন করা যাতে হিন্দু-মুসলিম মেরুকরণের সুযোগ নিয়ে তারা পুনরায় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে পারে। কিন্তু শ্রীকুমারের রিপোর্ট তাতে জল ঢেলে দেয় এবং কমিশন নির্বাচন পিছিয়ে দেয়।
এর এক মাস বাদেই মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য জুড়ে ‘গৌরব যাত্রা’র সূচনা করেন। লেখকের অভিযোগ এই যাত্রায় নরেন্দ্র মোদী নিরন্তর প্রচার করেন যে মুসলিমরা যারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে অন্তরায় এবং হিন্দুদের কাছে ত্রাস, তাদের আগ্রাসন তাঁর সরকার রুখে দিয়েছে। লেখক ভাবেন এটা কি হচ্ছে? প্রায় ১৫০০ নাগরিকের মৃত্যু এবং প্রায় ৫০০ ইসলামিক সৌধ ধ্বংস করার জন্য উল্লাস করা হচ্ছে! তিনি মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যগুলির রেকর্ডিং করেন। রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব (স্বরাষ্ট্র) ও ডিজিপিকে সতর্ক করেন যে মুখ্যমন্ত্রীর এইসব বক্তব্যের ফলে রাজ্যের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির আরও অবনমন ঘটছে। ইতিমধ্যে ‘জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন’ এই বক্তৃতাগুলির রিপোর্ট ও অডিও ক্যাসেট চেয়ে পাঠায়। উপরোক্ত অফিসারদের নির্দেশ অমান্য করে শ্রীকুমার মুখ্যমন্ত্রীর বিভিন্ন বক্তব্যের প্রতিবেদন ও ক্যাসেট অতিরিক্ত মুখ্য সচিব, অশোক নারায়ণের কাছে জমা করে দেন। অনেকের মতে তাঁর এই পদক্ষেপ লক্ষণরেখা অতিক্রম করার শামিল হয়ে দাঁড়ায়। তাঁকে গোয়েন্দা বিভাগ থেকে পুলিশ সংস্কার, একটি নির্বিষ বিভাগ, যেখানে মানুষকে সাহায্য করার বা পরিষেবা দেবার ন্যূনতম সুযোগ নেই সেইখানে বদলি করে দেওয়া হয়।
আদালত যে রায়ই দিয়ে থাকুক না কেন, গুজরাট গণহত্যায় যে তৎকালীন রাজ্য সরকার ও শাসক দলের মদত ছিল তা মোটামুটি সর্বজনবিদিত। শ্রীকুমার লিখছেন যেটা আশ্চর্যজনক সেটা হচ্ছে রাজ্যের ছজন আইএএস ও সাতজন আইপিএস মুসলিম অফিসারের এই ‘দাঙ্গা’ নিয়ে হিরণ্ময় নীরবতা। উপরোক্ত অফিসাররা কমিশন বা সিটের কাছে বিপন্ন, ক্ষতিগ্রস্ত মুসলিমদের পক্ষে কোনও প্রমাণ পেশ করেননি। তিনি এই ক্ষেত্রে নারদা পাটিয়ার ঘটনার উল্লেখ করেছেন। ২৮শে ফেব্রুয়ারি সকালে তিনি খবর পান যে প্রায় ৫০০ জন সংখ্যালঘু মানুষকে বিশাল জনতা ধাওয়া করেছে এবং তাঁরা স্টেট রিজার্ভ পুলিশের ব্যারাকে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করছে। রিজার্ভ পুলিশ অন্যত্র ডিউটিতে চলে যাওয়াতে ব্যারাক তখন খালি। লেখক দরজা খুলে বিপন্ন মানুষদের আশ্রয় দেওয়ার নির্দেশ দেন। ব্যারাকের দায়িত্বে ছিলেন দুজন উচ্চপদস্থ মুসলিম অফিসার। তাঁরা দরজা খুলতে ভয় পায়। শ্রীকুমার তাঁদের অভয় দেন যে কেউ তাঁদের প্রশ্ন করলে তাঁর ফ্যাক্স করা লিখিত নির্দেশ তাঁরা দেখাতে পারবেন। বিকালের দিকে জানা যায় যে ওপরতলার চাপ এবং স্থানীয় দুষ্কৃতিদের হুমকিতে ভয় পেয়ে ব্যারাকের মুসলিম কম্যান্ডার দরজা বন্ধ করে রাখেন। অসহায় মুসলিম মানুষ উন্মাদ জনতার হিংসার শিকার হন। ৯৬ জন খুন হন এবং বহু নারী ধর্ষিতা হন। পরবর্তীকালে এই দুই অফিসার এবং তাঁদের একজনের স্ত্রীকে পদোন্নতি, লাভজনক পদে বদলি ও নানা ভাবে ‘পুরস্কৃত’ করা হয়। এই দুজন অফিসার ছাড়াও ‘দাঙ্গা’ চলাকালীন যে সব অফিসার সরকারের নির্দেশ মাথা নত করে পালন করেছেন তাঁদের ঢেলে সাহায্য করতে বিজেপি সরকার কোনও কার্পণ্য করেনি। এর পাশাপাশি যাঁরা সরকারের অন্যায় হুকুমের সাথে আপোষ করেননি, লেখক নিজে, সঞ্জীব ভাট, রাহুল শর্মা, তাঁদের কঠোর শাস্তি দিতেও কসুর করেনি।
শ্রীকুমার নানাবতী কমিশন ও সিটের কাছে নটি হলফনামা জমা দিয়েছেন। কিন্তু ডক্টর রাঘবনের নেতৃত্বে সিট সেগুলিকে সামান্যই গুরুত্ব দিয়েছে। তাঁরা গুজরাট পুলিশ যা তাঁদের শিখিয়েছে তাই তোতা পাখির মতো আওড়ে গেছে। লেখকের অভিযোগ সিট গুজরাট পুলিশের বি-টিমের মতো কাজ করেছে। রাঘবন তামিলনাডুর শ্রীপেরুম্বুদুরে রাজীব গান্ধী যখন ধানু নামক মানব-বোমার দ্বারা নিহত হন তখন তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু বিস্ময়কর ভাবে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এরকম একজন অফিসারকে কীভাবে সিটের দায়িত্ব দেওয়া হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সিট তাঁদের রিপোর্টে রাজ্য সরকারকে ‘ক্লিনচিট’ দেওয়ার পর মোদী সরকার তাঁকে সাইপ্রাসে রাষ্ট্রদূত হিসাবে নিয়োগ করে।
শ্রীকুমার উল্লেখ করেছেন কীভাবে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ী মোদীকে রাজধর্ম পালন করার বাণী দিয়ে ভর্ৎসনা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর এই কথার উত্তরে বলেন, আমি তো ঐ কাজই করছি সাহেব। বাজপেয়ী বলেন তিনি মোদীকে বিশ্বাস করেন। তাঁর এই উক্তি মুখ্যমন্ত্রীকে মুখরক্ষার সুযোগ করে দেয়। লেখক তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির ভূমিকা সম্পর্কেও মুখর। উত্তরপ্রদেশের পুলিশ অফিসাররা অযোধ্যা থেকে গোধরা ফেরত যাত্রায় গুজরাটের কর সেবকদের সাথে ছিল। লেখক অখিলেশ প্রতাপ ও তাঁর পিতা মুলায়ম সিং যাদবকে বারবার অনুরোধ করেন এঁদের থেকে কর সেবকদের আচরণ সম্পর্কে প্রমাণ সংগ্রহ করার জন্য। তাঁরা লেখকের অনুরোধ উপেক্ষা করে। কংগ্রেসের ভূমিকা তো তিনি ‘জঘন্য’ বলে মন্তব্য করেছেন। এই প্রসঙ্গে লেখকের উক্তি স্মরণীয়। তিনি বলছেন এরা ‘মানবিক বোধহীন ধর্মনিরপেক্ষতার’ কাণ্ডারি! হিন্দুরা যাতে বিরূপ না হয় তার জন্য কংগ্রেস সোনিয়া গান্ধীকে পর্যন্ত জাকিয়া জাফরির সাথে দেখা করতে দেয়নি। তাতে কী লাভ হয়েছে? বাইশ বছর অতিক্রান্ত, কংগ্রেস এখনো গুজরাটে ক্ষমতায় ফিরতে পারেনি। কেন্দ্রেও তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। হিন্দু ভোটের মরীচিকার পিছনে আজও কংগ্রেস দৌড়ে চলেছে!