কয়েকদশক আগে প্রতিবেশি বাংলাদেশের সংসদ তোলপাড় হয়ে গেছল একটি শব্দবন্ধকে কেন্দ্র করে। জনৈক সাংসদ বিরোধীপক্ষের একজনকে অধিবেশন চলাকালীন বলেছেন ‘বেশি চুদুর-বুদুর কইরেন না’। কথা হল ওই শব্দটি বাংলা অভিধানে নেই। তাহলে কেন অসংসদীয় শব্দ ব্যবহার করে সংসদ ও সাংসদকে অপমান করার দায়ে ওই ভদ্রলোককে শাস্তি দেওয়া হবে না? কিন্তু কয়েকদিনের বিচার বিবেচনার পর স্পীকার রায় দিলেন ‘চুদুর-বুদুর’ অভিধানবহির্ভূত শব্দ বটে, কিন্তু অসংসদীয় নয়। ওটি স্ল্যাং! ফলে শাস্তি হবে না।
ঘটনাটি ফের মনে পড়েছে একটি বই পড়তে গিয়ে-- গুরুচণ্ডা৯ প্রকাশনার অজিত রায়ের বইটি –“বাংলা স্ল্যাং, সমুচয় ঠিকুজি কুষ্ঠি”।
বইটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশন, এটি আমাদের স্ল্যাং এর প্রতি নাক-সিঁটকানো অপরাধীভাব থেকে মুক্তি দেয়। আমরা ওঁর যুক্তি পরম্পরায় মজে গিয়ে হার মানি, বুঝতে পারি স্ল্যাং মানেই খিস্তি নয়, যৌনগন্ধী শব্দ বা উপমা নয়। তবে খিস্তি ও যৌনতার ছোঁয়া লাগা শব্দাবলী নিঃসন্দেহে কথ্যভাষার স্ল্যাং নামক মহতী ইউনিভার্সাল সেটের সাবসেট। অর্থাৎ সব স্ল্যাং খিস্তি নয়, কিন্তু সব খিস্তি স্ল্যাং বটেক।
একটা জিনিস আজ স্পষ্ট।
মানুষে মানুষে বন্ধন ও বিভাজনের কারক তত্ত্ব হল তার আইডেনটিটি বা পরিচয়, যা আর্থিক সামাজিক লৈঙ্গিক ধার্মিক এবং ভাষিক সবই হতে পারে। এসবের ভিত্তিতেই আমরা গড়ে তুলি বিভিন্ন গোষ্ঠী, সম্প্রদায় এবং তার সংগঠন। এসবের মধ্যে যদি কোন কারক তত্ত্বকে আলাদা করে চিহ্নিত করতে হয় তো আমি বেছে নেব দু’টি—ধর্ম ও ভাষা। কারণ, এই দুই তত্ত্বের ভিত্তিতে আমরা দেশ ও রাষ্ট্র গড়ে উঠতে এবং ভাঙতে দেখেছি। সে তুলনায় আর্থিক শ্রেণী সম্পর্কের পহচান-পরিচয়ের টান অপেক্ষাকৃত দুর্বল বলেই মনে হয়।
পাকিস্তানকে দু’টুকরো করে বাংলাদেশের জন্ম এবং স্বাধীনতা উত্তর ভারতে মহারাষ্ট্র, অন্ধ্র, হরিয়ানা, ছত্তিশগড় রাজ্যের নির্মাণ ভাষাগত পরিচয় খোঁজার উদাহরণ। এমনকি আসামে কয়েক দশক ধরে চলে আসা বাঙালি ও অহোম বিরোধ এবং নাগরিকত্ব্ব আইনের সংশোধন এরই ফলশ্রুতি।
প্রাক যৌবনে হাতে এসেছিল জোসেফ স্তালিনের মার্ক্সবাদ ও ভাষা নিয়ে লেখা বইটি। তাতে স্তালিন ভাষার শ্রেণীগত পার্থক্য, শোষক ও শোষিতের আলাদা ভাষা ইত্যাদি ধারণাকে তিরস্কার করেছিলেন। ওঁর বক্তব্য ছিল , যতদূর মনে পড়ছে, ভাষার কোন শ্রেণীচরিত্র হয় না।
এর ঠিক বিপরীত মেরুতে দাঁড়িয়ে সদ্য প্রয়াত অজিত রায় দেখছেন কীভাবে ভদ্দরলোকের ভাষা আসলে ক্ষমতার ভাষা, এবং তারাই স্ল্যাংকে ছোটলোকের ভাষা বলে মুটেমজুর কুলিকামিন ,চাষি জেলে ও বেশ্যাদের মুখের ভাষাকে অপাংক্তেয় করে দেয়। দাগিয়ে দেয় নিকৃষ্ট, অপকৃষ্ট, ইতরদের ভাষা বা ছোটলোকদের ভাষা বলে। আমরা জানি, পাওলো ফ্রেরি তাঁর ‘পেডাগজি অফ অপ্রেসড্’ এ দেখিয়েছেন কীভাবে অভিজাতকুলের ভাষা আসলে ক্ষমতাকে ধরে রাখার হাতিয়ার হয় এবং বঞ্চিতেরা ভাষা নিয়ে হীনমন্যতায় ভোগে, ভুগতে বাধ্য করা হয়।
এবার আসি বইটির কথাবস্তুর ভাগ -বাঁটোয়ারায়।
প্রায় দেড়শ’ পাতার বইটির শেষভাগে , পৃষ্ঠা সংখ্যা ৯৫ থেকে ১৪৪ জুড়ে রয়েছে স্ল্যাং এর অভিধান, বর্ণানুক্রমিক।
কিন্তু আপনি যদি আগেই ‘শেষ থেকে শুরু’ করে অ’য়ে অং= প্রেম, ইন্টুমিন্টু দেখে মুচকি হেসে অধ্যাপক= ‘আধা ভরে পকাপক’ দেখে চমকে ওঠেন; তারপর সেখান থেকে সটকে অ্যাঁড় = অন্ডকোষ, হয়ে একষট্টি -বাষট্টি= হস্তমৈথুনের শেষে জাপানে (জাম্পিং অ্যান্ড পাম্পিং অ্যাট নাইট) পৌঁছে হোঁচট খান এবং তকলি=’স্তনের বোঁটা’য় মুখ থুবড়ে বইটি বন্ধ করে ফেলেন তাহলে ব্যাপক ঠকবেন, পরে আফসোস করবেন। শব্দকোষ নিয়ে ফের কথা বলা যাবে। তার আগে বইটির প্রথম ৯৩ পাতার বিষয়সূচী দেখুন।
প্রথমে রয়েছে বাংলা স্ল্যাং কী ও কেন—উপভাষা, কথ্যভাষা ইত্যাদি। এর পরে আসছে বাঙালি মেয়েদের কথাবার্তায় চোরাগোপ্তা স্ল্যাং, বৈচিত্র্য; যৌনতা, অশ্লীলতা ও স্ল্যাং।
পরের অধ্যায়ে খুব ভালো আলোচনা হয়েছে বাংলা সাহিত্যে স্ল্যাং নিয়ে। বঙ্কিম -দীনবন্ধু থেকে রবীন্দ্রনাথ-শরতচন্দ্র কেউ বাদ যাননি। এরপরে তারাশংকর, মানিক এবং কল্লোল যুগের স্ল্যাং ব্যবহারে ব্যর্থতা। বিহার ও ঝারখন্ডের বাঙালী লেখকদের রচনায় সতীনাথ ভাদুড়ির জাগরী ও ঢোঁড়াই থেকে মলয় রায়চৌধুরি, কমল চক্রবর্তী,সুবিমল মিশ্র সবাইকে নিয়ে আলোচনা রয়েছে। নবারুণ তো আলোকবর্তিকা। বলতে ভুলে গেছি—অজিত রায় নিজে এই ডায়াসপোরিয়া লেখকদের অন্যতম। অল্পদিন আগে প্রয়াত অজিত ছিলেন ধানবাদের লিটল ম্যাগ এবং প্রকাশনা সংস্থা ‘শহর’ এর প্রতিষ্ঠাতা- সম্পাদক, লিখেছেন ১৫টি উপন্যাস, প্রবন্ধ ও গল্প সংকলন। কোলকাতার মহাদিগন্ত প্রকাশনা থেকে বেরিয়েছে ‘দোগলা চরিত’ এবং ‘ঘামলাঘাটে’র মত উপন্যাস। লিখেছেন ‘হিরণ্যরেতা’। বাংলা হাংরি সাহিত্য নিয়ে গবেষণা করেছেন। দিল্লির ন্যাশনাল বুক ট্রাস্ট থেকে প্রকাশিত হয়েছে ওঁর দাগকাহিনী নামের অনুবাদ-কর্মটি । সম্পাদনা করেছেন ‘ছোটলোকের শব্দকোষ-বাংলা স্ল্যাং’।
স্ল্যাং বলব কাকে?
সে কি উপভাষা? না, সেটি তো ভাষার আঞ্চলিক স্বরূপ মাত্র— যেমত হিন্দি থেকে ছত্তিশগড়ি, অওধি, বুন্দেলখন্ডি বা রাঢ় অথবা পূববাংলার বাঙলাভাষা। তবে কি অপভাষা? আমরাও তাই ভেবে এসেছি। মেনে নিয়েছি এ হল ইতরযানী ভাষা। ভদ্রলোকে বলবে ‘স্তন’ , ইতরেরা বলবে ‘চুচি’।
বিদ্রূপে ফেটে পড়েন অজিত, ‘মজার কথা হল, শাসক ও সমাজপতিদের চোখে নিজের প্রবর্তিত ভাষাটি ছাড়া আর সবই –অমার্জিত, অনাচারিক ও ইতরের ভাষা, অর্থাৎ স্ল্যাং’'।
তাহলে স্ল্যাং কী? অজিতের কথায়,’ যে কোন কালখণ্ডে ও সমাজে ভাষার কথ্য রূপটি (সিনক্রোনিক) স্ল্যাং হয়ে থাকে। ফুটপাতে, গণিকালয়ে, অপরাধজগতে, জেলখানায়, রেসের মাঠে, মদের ঠেকে, সংবাদপত্রের স্টোরিতে, টিভির পর্দায়, শিশুদের কথোপকথনে, যে ভাষা ব্যবহৃত হয় তার সবটাই অমার্জিত আজ, সবই স্ল্যাং। একটি জাতির বেশির ভাগ মানুষই তার নিজের সমাজের অভ্যন্তরে স্ল্যাং ভাষাই ব্যবহার ও উপভোগ করে থাকে, পৃথিবীর সর্বত্র। ইহাই সত্য। প্রান্তিক যে সমস্ত ডায়লেক্ট সর্বদাই মানুষের প্রাণের ভাষা—তার সবগুলিই স্ল্যাং। সেই তার পোয়েট্রি, সেই তার ফিলজফি’।
অজিত ইংগিত করছেন স্ল্যাঙের চিত্রধর্মিতা ও ধ্বন্যাত্মকতার দিকে।
আমি ওঁর নির্বাচিত শব্দ দুটোর দিকে ইশারা করছি। স্তনের বোঁটার জন্য ‘তকলি’ বললে যাঁরা ছোটবেলায় তকলি দেখেছেন, অনুভব করবেন এর অনিবার্য চিত্রময়তা। ধ্বনির উদাহরণ হিসেবে অধ্যাপক যথেষ্ট।
কিন্তু কথায় কথায় কোন স্ল্যাংয়ের পুনঃপৌনিক ব্যবহার তার ধার হারিয়ে ভোঁতা হয়ে যায়। উদাহরণ হিসেবে অজিত তুলে ধরেন বাংলা কথ্যভাষায় ‘বাল’ ও ‘বাঁড়া’ শব্দের ব্যবহৃত হতে হতে শুয়োরের মাংস হয়ে যাওয়া।
ভাষাচার্য পণ্ডিতেরা কী বলেন?
সুকুমার সেনের মতে স্ল্যাং হল ইতর শব্দ, ভদ্রলোকের ভাষা নয়।
তাহলে ইংরেজি স্ল্যাং এর যুতসই বাংলা প্রতিশব্দ কী হবে? পবিত্র সরকার বলছেন ‘অপশব্দ’। কুমারেশ ঘোষ তাঁর ‘আড্ডার অভিধানে’ বলছেন ‘জনবুলি’ । অমলেন্দু বসু ও মানসকুমার রায়চৌধুরির মতে স্ল্যং হল ‘অশিষ্ট বুলি’। নন্দলাল বসু বলেছিলেন স্ল্যাং হল ‘বিচ্ছিরি’ শব্দ। সত্রাজিৎ গোস্বামী তাঁর ২০০০ সালে প্রকাশিত বাংলাভাষার স্ল্যাং নিয়ে প্রথম পুর্ণাংগ অভিধানের নাম রেখেছেন ‘বাংলা অকথ্যভাষা ও শব্দকোষ’।
স্ল্যাং অকথ্য? অজিত বলেন কদাপি নয়। সমর্থনে উদ্ধৃত করেন আরেক খ্যাতনামা অধ্যাপক সুভাষ ভট্টাচার্যকে।
‘এত স্ল্যাং ভদ্র-অভদ্র নির্বিশেষে এত জনপ্রিয় হত না। মনোবৈজ্ঞানিকেরাও উল্লেখ করেছেন আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে যোনি শিশ্ন কেন্দ্রিক বহু শব্দ রয়েছে , যেগুলি আমরা ব্যবহার করে তৃপ্তি পাই’। উনি আরও বলেন যে স্ল্যাং বহুস্তরের- পেশাগত শব্দের ও প্রতিবেশি ভাষার মিশ্রণে তার নানা রূপ। এবং সব স্ল্যাং যৌনগন্ধী বা অশ্লীল নয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়ঃ হ্যাটা করা, জক দেওয়া, জপানো, খচে ব্যোম, চুকলি করা, চুক্কি দেয়া, কিচাইন, ঢপ মারা, ঢপের চপ।
আমি জুড়তে চাইছি--ফান্ডা দেওয়া, ঢপের চপ, ঝুল, ঝক্কাস, বিন্দাস।
বহুবছর ফ্যাক্টরিতে কাজ করা পিতৃদেব আমায় বলেছিলেন --মজদুরের স্ল্যাং হল নাট ও বল্টুকে কে ফিমেল ও মেল পার্টস বলা। আমেরিকান ফ্যাক্টরি স্ল্যাংয়ে মজুরের সুপারভাইজারের সম্বন্ধে ‘বস’ বা ‘বসিং’ এসেছে এমবস থেকে।
তাহলে দেখা যাচ্ছে স্ল্যাং শব্দের ব্যঞ্জনা ও সমস্ত বহুমাত্রিক অর্থ কোন একটিমাত্র প্রতিশব্দে ধরা সম্ভব নয়।
লেখক তাঁর ২০০৪ সালের স্ল্যাং বিষয়ক সংকলন গ্রন্থে বলছেনঃ স্ল্যাং হল ‘আপনাতে আপনি বিকশি’ গোছের শব্দ ভাঁড়ার। তাতে বাগধারা, কথ্যভাষা, উপভাষা, গণিকাপল্লী ও কুচেল দুনিয়ার ভাষা শব ঘুলেমিলে একাকার।
লেখকের মত আমরাও অভ্র বসু’র ‘বাংলা স্ল্যাংঃ সমীক্ষা ও অভিধান’ গ্রন্থের উপসংহারের সঙ্গে একমত না হয়ে পারি না—স্ল্যাং শব্দটিকে বাংলায় অবিকৃতভাবে গ্রহণ করাই শ্রেয়’।
বাংলা সাহিত্যে স্ল্যাং লেখকের মতে বড়ু চণ্ডীদাসে শুরু। বঙ্কিমের মাগী, আবাগী, পোড়ারমুখি ও শতেকখোয়ারি বহুবার চোখে পড়ে। আর সখা দীনবন্ধু মিত্রের নাটকে স্ল্যাং বড় জীবন্ত। সাহেবের মুখে বাঞ্চৎ, হারামজাদী এবং তোরাপের মুখে মান্নির (মারানীর) ভাই এবং মূর্খ হেমচাঁদের মুখে -সন্তান হলে মেয়েদের নিতম্বে দুদ হয় ( ও নিতম্ব মানে জানত না) জাতীয় স্ল্যাঙয়ের কার্যকারিতা নিয়ে স্বয়ং বঙ্কিম সার্টিফিকেট দিয়ে গেছেন।
রবীন্দ্রনাথের চোরাগোপ্তা স্ল্যাং নিয়ে সুন্দর আলোচনার জন্য আপনারা বইটি পড়ুন। অত স্পয়লার দেব না। কল্লোলের লেখকেরা শুরু করেও কাব্যি করতে গিয়ে স্ল্যাং লিখতে পারলেন না বলে অজিত আঙুল তুলেছেন। প্রমথ চৌধুরীর সবুজপত্রের আপাত ঝকঝকে ভাষা অজিতের মতে, সংগত ভাবেই, কৃত্রিম, বুদ্ধিবাদী ফ্যাকাশে। সে তুলনায়
কিন্তু অজিত বলেছেন বাঙালী মেয়েরা স্ল্যাং এর ব্যবহারে বড্ড সাদামাটা।হুতোম ও বিবেকানন্দের ভাষা এমনকি হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর ভাষা – সাধারণ জীবনের ‘তেল-নুন-লকড়ি’র কাছাকাছি। আমি একমত, যাঁরা সন্দেহের আঙুল তুলছেন তাঁরা বিবেকানন্দের ভ্রমণ কাহিনী পড়ে দেখুন, দ্বিমত হওয়ার সম্ভাবনা কম।
আমার ব্যক্তিগত মত ঘর থেকে বাইরে না বেরোলে স্ল্যাং প্রয়োগের স্বাধীনতা আসে না। তাই গত শতাব্দীর গোড়ায় ও মধ্যভাগে মেয়েদের মুখে স্ল্যাং কদাচিত শোনা যেত। কিন্তু আজ তাঁদের একটি বড় অংশ অনায়াসে ‘বাল’, ‘মাল’ ‘লাগানো’ উচ্চারণ করেন।
আমি উদাহরণ হিসেবে সমরেশ বসুর ‘খাঁচাকল’ গল্পটি উল্লেখ করতে চাই। সত্তরের দশকে লেখা। পেশায় যৌনকর্মী বুড়ি দিদিমা ও তার যুবতী নাতনি ছাদে ঢিল পড়ায় ধুইয়ে দিচ্ছে – ওরে মা-মেগো বোন-মেগোর দল, ওরে বাপ-ভাতারি ভাই -ভাতারিরা!
স্থানাভাবে সংক্ষেপে অভিধান অংশ নিয়ে দু’কথা সেরে নিই।
শব্দগুলির হিন্দি/আরবি/ফার্সি উৎস নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্যবহারের মোক্ষম সব উদাহরণ দেওয়া হয়েছে লেখকের স্ল্যাং ভিত্তিক উপন্যাসগুলো থেকে, দরাজ হাতে।
আমার কিছু মন্তব্যঃ
আড় খেমটা= ছেনালি। কিন্তু এটি একটি গানের তাল,সেটা বাদ গেছে।
ডবল ডেকার=নারীর বিপুল নিতম্ব। কোলকাতায় একসময়ের দোতলা বাসের অনুষঙ্গ দিলে ভাল হত।
ভেড়িয়াধসান= গড্ডলিকা প্রবাহ। এটি হিন্দি থেকে হুবহু এসেছে। ভেড়ার পাল যেভাবে যায়।
মাইরি= মায়ের দিব্যি। মা মেরির দিব্যি নয়?
রেণ্ডি= ইংরেজি rod থেকে? কেবল উত্থিত পুরুষাংগ? বেশ্যা এবং রাঁড় শব্দ নয়? এমন ভুল অজিত করতে পারেন না। কোথাও ছাপাখানার ভূত ঢুকেছে।
পি এফ= পোঁদ ফাটা রয়েছে, কিন্তু জি এফ= গার্ল ফ্রেন্ড কেন বাদ পড়ল?
ঢ্যামনা= অপদার্থ। কিন্তু ঢ্যামন সাপের উদাহরণ দিয়ে আসল অর্থটি, নিবীর্য পুরুষ, কেন স্পষ্ট হল না?
কিন্তু এহ বাহ্য! অতীব পরিশ্রমে ও মনশীলতায় এই ব্যতিক্রমী বইটি একটি সংগ্রহে রাখার মত বই। এই আকড়া দিনে মাত্র ১৮০ টাকায় বইটি প্রকাশ করে গুরুচন্ডালি কর্তৃপক্ষ আমার মত পাঠকের ধন্যবাদের পাত্র হয়েছেন।