এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ইস্পেশাল  পুজো ২০১০

  • অথ গজ-অনাথশালা : কম্বু-কলস্বনা কথোপকথনে কলম্বো-ক্যান্ডি ভ্রমণ বৃত্তান্ত

    অনামিক
    ইস্পেশাল | পুজো ২০১০ | ০১ অক্টোবর ২০১০ | ৬১৮ বার পঠিত
  • কম্বু: "ঐ সিন্ধুর টিপ সিংহল দ্বীপ কাঞ্চনময় দেশ!
    ঐ চন্দন যার অঙ্গের বাস তাম্বুল বন কেশ! "
    কলস্বনা: এটা কিন্তু আসলে বেড়ানোর গল্প |
    কম্বু: হুঁ, আমরা শ্রীলঙ্কায় বেড়াতে গিয়েছিলুম | শ্রীলঙ্কা আসলে ঠিক বিদেশ বিদেশ লাগে না | এয়ার্পোর্টে নেমে সময়টা পর্য্যন্ত ঘড়িতে বদলাতে হয় না| রাস্তার অধিকাংশ বাসও টাটা কিম্বা লেল্যান্ড | এমনকী, সন্ধ্যের রাস্তায় কুপির আলোতে বিক্রী হচ্ছে তেলেভাজা |

    কলস্বনা: পুরো শ্রীলঙ্কা অবশ্য ছুটি আর পয়সায় কুলিয়ে ওঠে নি| আমরা শুধু কলম্বো আর ক্যান্ডি গিয়েছি| যাওয়া হয় নি গ্যল, ভাবাও হয় নি উত্তর শ্রীলঙ্কার জাফনা বদ্বীপের কাছাকাছি কোথাও যাওয়ার| তাই আমাদের এবারের বেড়ানোর মূল থিম হাতি|
    কম্বু: হুঁ, ভারতের বিভিন্ন শহর থেকে প্লেনে চড়ে ১ থেকে ৩ ঘন্টায় পৌঁছনো যায় বন্দরানাইকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে| কলম্বো থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরের এই বিমানবন্দর থেকে গাড়ী চড়ে শৈলশহর ক্যান্ডি পৌঁছনো যায় ঘন্টা তিনেকের মধ্যে| যে সড়কের মাধ্যমে কলম্বো-ক্যান্ডি যুক্ত তার নাম এ-ওয়ান| প্রাচীন বৌদ্ধ রাজাদের রাজধানী ক্যান্ডি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিখ্যাত মূলত শ্রী দলদা মালিগাওয়া বা ঝনলসরন ষপ ঝষষঢ়ব এর জন্য|
    কলস্বনা: এখানে বুদ্ধদেবের দাঁত সংরক্ষিত আছে বলে কথিত| আমার তো ভয় করছিল আমারও দাঁত না খুলে নিয়ে নেয়| হি হি হি|
    কম্বু: হুঁ, ক্যান্ডি এমনিতে আর পাঁচটা শৈলশহরের মত| শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত বোগাম্বরা হ্রদ, ১৮০৭ সালে তৈরী| আয়তনে ছোট করে দেওয়ার পরেও আছে বি-শা-আ-ল জায়গা জুড়ে| পাড়গুলো সুন্দর করে বাঁধানো, ঝকঝকে পরিষ্কার - প্রচুর গাছ আছে যারা তীরে ছায়া দেয়| এরই একদিকে আছে শ্রী দলদা মালিগাওয়া| এটি একটি দ্বিস্তর মন্দির|
    কলস্বনা: এই একই চত্বরে এখানকার রাজাদের প্রাসাদও ছিলো এককালে|
    কম্বু: হুঁ, ইতিহাসের পুঁথি বলে, এই দাঁত বুদ্ধদেবের শেষ শয্যা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিলো| আনুমানিক ৩১৩ খ্রীষ্টাব্দে এই দাঁতের ত্‌ৎকালীন মালিক, ভারতবর্ষের দন্ডপুরীর বৌদ্ধ রাজা গুহশিব কোন পড়শী হিন্দু রাজার আক্রমণে বিপদে পড়লে তাঁর কন্যে রাজকুমারী হেমমালি শ্রীলঙ্কায় পালিয়ে যাওয়ার সময়ে নিজের চুলের ভেতরে লুকিয়ে এই দাঁতটি শ্রীলঙ্কায় নিয়ে আসেন| বর্তমানে যে মন্দিরটি আমরা দেখতে পাই, সেটা সম্ভবত ১৭শ শতাব্দীর শেষ দিকে কাঠ দিয়ে প্রথম বানানো হয়েছিলো| ডাচ, পর্তুগীজ ও নিকট-অতীতে-গৃহযুদ্ধের-সময়ে-তামিল-গেরিলাদের আক্রমণে বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই স্থাপত্য| বর্তমান কাঠামোটি মূলত: শ্বেতপাথরের তৈরী|
    কলস্বনা: আর মূল মন্দিরের যে সোনালী চূড়োটি আছে, সেটা নাকী নিখাদ সোনা| স্থানীয় লোকেরা বলেন, অন্তত ৪০ কিলোগ্রাম সোনা আছে মন্দিরের ঐ ডোমটাতে| সাধে কী আর বলে 'লঙ্কায় সোনা সস্তা'!
    কম্বু: হুঁ, কবি সবই বলে গিয়েছেন -
    ঞ্ছযার মন্দির সব গম্ভীর,- তার বিস্তার ক্রোশ দেড়;
    যার পুষ্কর-মেঘ পুষ্কর্ণীর দশ ক্রোশ ঠিক বেড়|ঞ্জ
    মূল মন্দিরের ভেতরে কিন্তু বেশ ঝকঝকে, ঝকমকে, জমজমাট ব্যাপার|
    কলস্বনা: নানা ভঙ্গিমা, নানা আকৃতিতে বিরাজ করছেন তথাগত| আছে ঝাড় লন্ঠন, পতাকা-রঙবেরঙের| একতলা থেকে অল্প কটা সিঁড়ি বেয়ে ওপরে দোতলায় উঠলে ওপরের ছাদের ভেতরের দিকেও দেখা যায় নানারকম শিল্পকার্য| এখানেই একটা বাক্সে ভরে রাখা আছে সেই দাঁত| যদিও সাধারণ দিনে তা দেখতে দেওয়া হয় না ভ্রমনার্থীদের| একমাত্র বাৎসরিক অনুষ্ঠানের সময়েই এগুলো দেখা যায়|
    কম্বু: এই বাৎসরিক উৎসবের নাম এসালা পেরাহারা| এইসময়ে হাতির পিঠে চড়ে কাস্কেট শহর পরিভ্রমণ করেন| এই অনুষ্ঠান সাধারণত অগাস্টে হয়| সারা বিশ্বের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে এটা এখন বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটা অনুষ্ঠান| তবে শ্রী দলদা মালিগাওয়াতে অন্যান্য ধর্মের মানুষরাও এসে পরলোকগত প্রিয়জনেদের জন্যে প্রদীপ জ্বালিয়ে যেতে পারেন| আর এই প্রদীপ জ্বালানোর জায়্‌গার পাশেই আছে, ঐ কাস্কেট-এর বর্তমান বাহক করী মহাশয়ের আস্তানা| শুধু তাই নয়, এ চত্বরের মধ্যেই আছে তার পূর্বসুরী অন্য একটি হাতির স্মৃতিসংগ্রহশালা| সেটা অবশ্য স্বচ্ছন্দে কাটিয়ে দেওয়া যেতেই পারে|
    কলস্বনা: হাতি! হাতি! এবার তাহলে হাতিদের নিয়েই কথা হোক! সেই যে অনাথাশ্রম হাতিদের জন্যে|
    কম্বু: হুঁ! ক্যান্ডিতে একটা খুব সুন্দর বোট্যানিক্যাল গার্ডেন-ও আছে বটে, যেটা যে কোন ভ্রমণার্থীর অবশ্যগন্তব্য| কিন্তু সেটা নিয়ে আমরা বেশী শব্দ আপাতত: খরচা করবো না| থাক সেইসব -
    ঞ্ছযার উত্তাল তাল-কুঞ্জের বায় মন্থর নিশ্বাস!ঞ্জ - এর গপ্পো|

    -=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-

    কলস্বনা: হাতি বলতে আমাদের, মানে, সাধারণ শহুরে বাঙালীদের ঠিক কী কী মনে পড়ে? ধৃতিকান্ত লাহিড়ি চৌধুরী আর প্রকৃতীশচন্দ্র বড়ুয়ার লেখা, তপন সিনহার আশির দশকের একটা হিন্দি সিনেমা, প্রভাতকুমারের আদরিণী, মিনি আর কাবুলিওয়ালা| আর? যমুনা বড়ুয়ার গলায় গান মাহুত বন্ধু রে| আর?
    কম্বু: হুঁ| ক্যান্ডি-কলম্বো জাতীয় সড়কের ওপর কেগল্ল বলে একটা গঞ্জ আছে কলম্বো থেকে ৮০-৯০ কিলোমিটার দূরে| এখান থেকেই একটু ভেতরে পিন্নাওয়ালা হস্তী অনাথালয়| প্রবেশমূল্য দেশবাসীর জন্যে ৫০০ টাকা (শ্রীলঙ্কার), অন্যদের জন্যে ৪০০০ টাকা|
    কলস্বনা: কিন্তু আমরা তো অত টাকা দিই-ই নি| আমাদের মনে ছিলো – জ্ঞগরব সে কহো হাম ভারতীয়, মানে ইন্ডিয়ান, হ্যায়|ঞ্চ হি হি হি|
    কম্বু: হুঁ, শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন ম্যিউজ্যিয়াম, সংগ্রহশালাতে সার্কভুক্ত দেশের নাগরিকদের জন্যে টিকিটের দাম, অন্যান্য দেশগুলোর ভ্রমণপিপাসুদের থেকে অনেক কম| যাই হোক, পিন্নাওয়ালা শ্রীলঙ্কার তো বটেই, কোন কোন দাবী অনুসারে এশিয়ারও বৃহত্তম হস্তী-অনাথালয়|
    কলস্বনা: অনাথালয় বললেই যদি আপনার রোগাভোগা, হাড়জিরজিরে কোন কিছু মনে পড়ে, এখানে তা পুরোপুরি সত্যি নয়| হাতিদের কলেবর বা গতর, বেশ, মানে হাতির মতই| হি হি|
    কম্বু: যা বলছিলুম| ১৯৭৫ সালে এই হস্তীশালার শুরু| বিভিন্ন ঠাঁই ঘুরে এখন থিতু হয়েছে এই ২৪-২৫ একর জায়্‌গায়| এখানে হাতিদের তাদের স্বাভাবিক বাসস্থানের কাছাকাছি পরিবেশে রাখার চেষ্টা করা হয়|
    কলস্বনা: এখানে হাতিরা কিন্তু খুব রুটিনে থাকে| সকালে ৮-টার সময়ে তাদের দুধ খাওয়ানো হয়|
    কম্বু: হুঁ, এই দুধ খাওয়ানো দেখতে হলে কিন্তু আপনাকে চা খেয়েই ভোর ভোর বেরিয়ে পড়তে হবে| কারণ পিন্নাওয়ালায় থাকার জায়গা আমরা বিশেষ দেখি নি| থাকতে হলে সেই এপাশে কলম্বো, ওপাশে ক্যান্ডি|
    কলস্বনা: দুধ খাওয়া হলে এইসব গজ-গজারা কী করেন? বেলা দশটার সময়ে তেনারা স্নানে যান| দু ঘন্টা ধরে চলে স্নানকেলি| আবার দুপুর দুটোয় তাঁরা ফের স্নানে যান| আর এর মাঝখানের সময়ে চলে এই হস্তীযূথের মধ্যাহ্নভোজ| হাতির খোরাক যোগানো হয় এইসময়ে, হি হি|
    কম্বু: দুপুরের খাবার হিসেবে এই হাতিদের বরাদ্দ ঘাস ও একধরণের নারকোল পাতা| এইসময়েই কৌতূহলী দর্শকদের ভিড় হয় সবচেয়ে বেশী| সম্পূর্ণ অপরিচিত দর্শনার্থীরাও নারকোল পাতা হাতে ধরে খাওয়াতে পারেন ছোট-বড় নানান আয়তনের হাতিদের|
    কলস্বনা: শুধু তাই নয়, পালকদের তঙ্কÄ¡বধানে এইসময়ে দর্শনার্থীদের পাশে দাঁড়িয়ে ছবির জন্যে পোজও দিয়ে থাকে এইসব হাতিরা| আপনি চাইলে একজন বড় হাতির শুঁড়ের ছায়ায় দাঁড়িয়ে ছবি তোলাতে পারেন আপনার সঙ্গীকে দিয়ে| অথবা একটি খোকা হাতির স্যাল্যুট নেওয়ার দৃশ্যও করে রাখতে পারেন ফ্রেমবন্দী| তবে সঙ্গত কারণেই লাঠি দিয়ে খোঁচা দেওয়া বা পিঠে চড়ার চেষ্টা করা কড়াভাবে বারণ|
    কম্বু: বিকেল সাড়ে চারটে থেকে ছটার মধ্যে কোন এক সময়ে নিজেদের আস্তানায় ফেরে এই জাম্বোরা| এই অনাথালয়ে আরো কিনতে পাওয়া যায় হাতির বর্জ্য মন্ড করে তা থেকে তৈরী কাগজের ডায়েরী, ক্যালেন্ডার, গ্রীটিংস কার্ড| পাওয়া যায় কিনতে এই অনাথালয়ের লোগো লাগানো টি-শার্ট বা অন্যান্য কিউরিও-ও|
    কলস্বনা: কেনাকাটার কথায় মনে পড়লো, এই এ-ওয়ান রাস্তার ধারে অনেক কুমোর-দের আর বেতশিল্পীদের গ্রাম আছে| দিনের বেলা, হাতে সময় থাকলে এগুলোর কোন কোনটায় নেমে দেখতে পারেন, চাই তো কিনেও ফেলা যায় কিছু গিফ্‌ট আইটেম|
    কম্বু: আর শ্রীলঙ্কার চা যদি কিনতে চান, তাহলেও এই হাইওয়ের ধারের কোন পাইকারী দোকান থেকে কেনা ভালো| কলম্বোর ট্যুরিস্ট এলাকা থেকে কেনার চেয়ে এখানে অনেক সস্তায় পাওয়া যাবে| পাওয়া যাবে নানান ধরণের মশলা চা-ও|

    -=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-=-

    কলস্বনা: কলম্বো! শ্রীলঙ্কার বাণিজ্যিক রাজধানী|
    কম্বু: হুঁ| ২০০০ বছরেরও পুরোন শহর| দেশের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত| অক্ষাংশ ৬ ডিগ্রী ৫৪ মিনিট উত্তর, দ্রাঘিমা ৭৯ ডিগ্রী ৫০ মিনিট ৩৪ সেকেন্ড পূর্ব| শহরটা বেশ আধুনিক| রাস্তাঘাট খারাপ নয়| তবে এই শহরে ঢুকলেই বোঝা যায় সবকিছু ঠিক নেই| নিরাপত্তাব্যবস্থার বেশ কড়াকড়ি সব জায়গাতেই|
    কলস্বনা: একটা অস্বচ্ছন্দ স্তব্ধ শান্তি ছেয়ে থাকে এখানকার প্রায় প্রত্যেক রাস্তায়, মোড়ে| সমুদ্রতীরের পাশে কোন হোটেলে থাকলে যাতায়াতের পথে মূহুর্মূহু গাড়ী থামিয়ে তল্লাশী করবে কার্বাইনধারী সামরিকবাহিনী| বেশ বোঝা যায়, এক যুগ ধরে চলা গৃহযুদ্ধ শুধু জীবনের বা সম্পত্তির প্রত্যক্ষ ক্ষতিতেই সমাপ্ত হয় নি, কেড়ে নিয়ে গিয়েছে বেঁচে যাওয়া বাকী মানুষগুলোর বাকী দিনগুলোতে নিশ্চিন্ততার, নির্ভরতার নির্ভার অনুভূতিগুলূ| তবে সামরিক বাহিনী কখনৈ পর্যটকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে না|
    কম্বু: হুঁ, যা বলছিলুম| শহরটিকে ভাগ করা হয় ১৫টি ডাক এলাকায়| এখন প্রশাসনিক রাজধানী কাছেই কোট্টে জওয়ার্দানাপুরাতে চলে গেলেও অধিকাংশ দূতাবাসই শহরের ১২ নম্বর অঞ্চলের অভিজাত বসতিতে অবস্থিত| কলম্বো শহরের দ্রষ্টব্যগুলোর মধ্যে আছে বিহারমহাদেবী পার্ক, স্বাধীনতা অঙ্গন যেখানে সমস্ত রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানগুলো হয়ে থাকে| কলম্বো পৌরসভার বাড়ী বা চত্বরটাও বেশ সুন্দর| এখানেও আছে একটা সুন্দর বুদ্ধমূর্তি|
    কলস্বনা: এদেশে কিন্তু বুদ্ধমূর্তির খুব ছড়াছড়ি|
    পথের বাঁকে, পাহাড়ের ফাঁকে, সদাহাস্যরত
    শায়িত, আসীন বা দন্ডায়মান আছেন তথাগত
    হি হি, আমিও কবিতা লিখছি আজকাল|
    কম্বু: হুঁ, সাধারণভাবে গন্তব্যের তালিকায় থাকে না, তবে কোট্টে জওয়ার্দানাপুরাতে ঝিলের প্যাগোদা আকৃতির নতুন সংসদভবনটিও সময় পেলে দেখে আসা উচিৎ| কলম্বোতে একটা ম্যিউজ্যিয়মও আছে| তবে তটভূমি কলম্বোতে আজকাল ততটা উপভোগ্য নয়| সান-সি-স্যান্ডের ভক্তদের জন্যে আছে নেগোম্বো| বন্দরানাইকে বিমানবন্দর থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে বলে বিদেশী পযটকদের কাছে এর জনপ্রিয়তা ক্রমবর্ধমান|

    *

    কম্বু: আমাদের ছোট্ট পাশবিক ভ্রমণের সমাপ্তির সময় সমাগত|
    কলস্বনা: এত সুন্দর একটা দেশ| সেখানে এতদিন ধরে এত যুদ্ধ হল| মানুষের এই জানোয়ারের মত জিঘাংসা কবে শেষ হবে?
    কম্বু: লঙ্কাকান্ড শেষ হওয়ার পরেও ধিকিধিকি জ্বলছে এক যুগেরও বেশী সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধের আঁচ| বিশ্বাস ফিরতে কেটে যাবে হয়তো আরো কয়েক প্রজন্ম| এশিয়ারই অন্য এক দেশে এরকমই মারণযজ্ঞের পরে সেদেশের এক সাধারণ মানুষ স্বীকারোক্তি দিয়েছিলেন এক ভারতীয় লেখকের কাছে 'খঁ পতঢ়বনক্ষ ড়তঁড় ঢ়ষ লন, ঢ়বনক্ষনং ভরর থন সনতদন ভশঁ ষয়ক্ষ রভপনঢ়ভলন তশধঁ ষয়ং ভরর থন বতসসঁ' ... খঁ ফক্ষতশধপতঢ়বনক্ষ য়ড়নধ ঢ়ষ ঢ়নরর লঁ পতঢ়বনক্ষ ঢ়বন ড়তলন ঢ়বভশফ, তশধ শষং ঐ ড়তঁ ঢ়বন ড়তলন ঢ়বভশফ ঢ়ষ লঁ শনসবনংড় তশধ শভনদনড়. ঐঢ়'ড় তরংতঁড় ঢ়বন ড়তলন. '" এই আশাতেই বেঁচে থাকে মানুষ, জন্তুর দন্তুর অস্তিত্ব থেকে এখানেই সভ্যতা মানুষকে পৃথক করেছে|
    কলস্বনা: এবার সেখানে কী হবে? ফিরবে কি শান্তি?
    কম্বু: মহাকাল একাই জানেন কী লেখা আছে এই সুন্দর দ্বীপটির ভাগ্যে| যে কবির ও কবিতার হাত ধরে এই আখ্যানের শুরু করেছিলুম, তাঁর সেই কবিতার শেষ দিয়েই এই বিবরণীর ইতি টানা যাক -
    কম্বু + কলস্বনা: ঞ্ছঐ সিংহল দ্বীপ সুন্দর, শ্যাম,- নির্ম্মল তার রূপ,
    তার কন্ঠের হার ল'ঙ্গর ফুল, কর্পূর কেশ-ধূপ;
    আর কাঞ্চন তার গৌরব, আর মৌক্তিক তার প্রাণ,
    আর সম্বল তার বুদ্ধের নাম, সম্পদ নির্ব্বাণ|ঞ্জ

    ছবি- মোল্লা সাগর
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ইস্পেশাল | ০১ অক্টোবর ২০১০ | ৬১৮ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    কবিতা  - S Azad
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় প্রতিক্রিয়া দিন