এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • প্রবেশ, অনুপ্রবেশের আখ্যানঃ অবৈধতার নির্মাণ, মিথ ও সন্ত্রাসের রন্ধনশালা
    (আমেরিকায় অবৈধ-বসবাসকারী নারীর স্বাস্থ্য-বিপন্নতার ঝলক খতিয়ান)

    অনামিকা বন্দ্যোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ২৪ মার্চ ২০১৯ | ১৩৮৩ বার পঠিত


  • গাড়ি চালাইতেছিলাম শহরের ব্যস্ত রাস্তায়। আমার সঙ্গে ছিলেন আঞ্চলিক রিফিউজি সংস্থার এক সাফাই কর্মী - মারিয়া। মারিয়ার ড্রাইভিং লাইসেন্স নাই। তাই তাহাকে মাঝেমাঝে অনেকেই রাইড দিয়া থাকেন। আমিও দিতেছিলাম। তার কিছু ঔষধ আমাকে কিনিয়া দিতে হইয়াছিল। যদিও কিনিতে বেগ পাইতে হয় নাই। ওভার দ্য কাউন্টারই সব মিলিল। তবুও। এই 'তবুও' লইয়াই এই আখ্যান - যা লিখিতে বসিয়াছি। বলা ভাল, যাহা বলার চেষ্টা করিব। যাহা হউক, এদিকে গোল বাঁধিল যখন পুলিশ-শেরিফের গাড়ি আমার পিছনেই ট্র্যাফিকে আটকাইয়া থাকিল। মারিয়া প্রায় মরিয়া হইয়া উঠিল। আতঙ্কে দমবন্ধ অবস্থা। তাহাকে যতই শান্ত থাকিতে অনুরোধ করি সে ততই অস্থির হইয়া ওঠে। অবশেষে বাতি সবুজ হইল এবং আমি তাকে লইয়া বড় রাস্তা ছাড়িয়া ছোট রাস্তাপথ নির্বাচন করিয়া নির্জনে তার বাড়ির দিকে আগাইতে থাকিলাম।

    এই হল আখ্যা আমেরিকার অনুপ্রবেশকারীদের, 'অবৈধ' বসবাসকারীদের চব্বিশ ঘণ্টার আন-অফিসিয়াল ফাইল-চিত্র। প্রতিটি দিন দমবন্ধ করা। প্রতি মুহুর্তে ধরা পড়িবার, তাড়া খাইবার ত্রাসে শরীরে-মস্তিষ্কে আতঙ্কের টক্সিন প্রেরণ করা। প্রায় স্টিরিওটাইপে পরিণত এই আখ্যান, এই চিত্রাবলী। যেভাবে আমিও নাম গোপন করিবার কালে স্টিরিওটাইপ মতে বাছিয়া লইয়াছি এই নাম - মারিয়া। এই মারিয়ার আসল নাম যা খুশি হইতে পারে। পারিতও। মারি, মেরী, মারিনোভা, মেহেরুন্নিসা কিম্বা মীরা। যাহা খুশি। কিন্তু তা হইবেনা। যতদিন আমেরিকায় অনুপ্রবেশের আখ্যান লইয়া মিথ ও মিথ্যার, জাতি-ঘৃণার ও সাদা সুপ্রিমেসির গরিষ্ঠতা বর্তমান থাকিবে, ততদিন তাহা হইবেনা। অন্তত মেইনস্ট্রীমে হইবে না।

    কেন হইবেনা তাহা আপাত বুঝিয়া লইবার জন্য আমাদের মত সুবিধাভোগীরা বেশীরভাগ সময়ই ঝলক-চিত্রে উৎসাহিত বোধ করি। মানে ট্রেইলার। মানে ব্লার্ব। কারণ উহা অনতিকায়। লিখিতে ও পড়িতে শ্রম কম। আসুন সেটি নির্মাণ করি। তথ্য সরলীকরণ করে সাজিয়ে ফেললে দাঁড়াচ্ছে মোটামুটি এই-

    অর্থনৈতিক দিক থেকে আনডকুমেন্টেড বসবাসকারীরা অর্থনীতির মইয়ের সর্বনিম্ন স্তরে থাকা মানুষ। এরা শ্রমের বাজারে সবথেকে কম টাকায় কাজ করতে বাধ্য হন। নারীদের ক্ষেত্রে আরও কম। রাষ্ট্রীয় আইনে বাধ্যতামূলক সর্বনিম্ন মজুরিও এদের পাওনা হয়না। কারণ আইনের খাতায় এরা ইনভিসিবল্। কিন্তু এদের অদৃশ্য শ্রম অর্থনীতিতে কাজে লাগে। এবং এরা বেশীরভাগই অর্ধাহারে, অল্পাহারে থাকতে বাধ্য হয়ে থাকেন। ফেডেরাল আইন অনুযায়ী ইন্সিওরেন্স কেনার সামর্থ্য ও আইনগত অধিকার দুটোর কোনটিই এদের নেই। নিম্ন রোজগারের মানুষের জন্য সরকার থেকে যে ভর্তুকি দেওয়া হয়, সেই বিমার আওতা থেকে এরা বাদ। বিমা ছাড়া আমেরিকায় চিকিৎসা অত্যাশ্চর্য রকমের ব্যয়বহুল। ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ভিন্ন ঝালমুড়ি বা কন্ডোমের মত এখানে ঔষধ ক্রয় করা যায়না; গা-ব্যথা, হাঁচি বা আরও কিছু ওভার দ্য কাউন্টার ড্রাগ (যা কাউন্টারে বলিলেই পাওয়া যায়) ছাড়া।

    তো, এই হল মোটামুটি উঁকিগত একটি কাছাকাছি সামারি।

    এবার সংখ্যার হিসেবে খাড়াচ্ছে - সারা পৃথিবীতে আন্ডকুমেন্টেড মানুষের সংখ্যা প্রায় চল্লিশ মিলিয়ন। এবং আমেরিকায় থাকেন তার ১২ মিলিয়ন। যা কিনা হাঙ্গেরি, চেক রিপাবলিক এবং টিউনিশিয়ার সম্মিলিত জনগোষ্ঠীর সমান সংখ্যক। এই বারো মিলিয়নের ১.৪ মিলিয়ন এশিয়ান বংশোদ্ভূত। ৬০০,০০০ জন ইউরোপিয়ান ও কানাডিয়ান দেশ-জাতি সূত্রের মানুষ। ৪০০,০০০ জনের আফ্রিকা ও মধ্য প্রাচ্যে শিকড় ও বাকি ৫৫০,০০০ জন ক্যারিবিয়ান অঞ্চল থেকে এসেছেন।

    পরিচয়হীন মানুষ ছাড়াও এ মুহূর্তে এগারো শতাংশ পরিণত বয়স্ক আমেরিকান স্বাস্থ্যবিমার বাইরে। আর, গুরুত্বপূর্ণ হল - এ মুহুর্তে আমেরিকা হচ্ছে পৃথিবীর ১১ নম্বর ধনীতম দেশ।

    বলা হয়, না বললেও বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় যে আনডকুমেন্টেড মানুষেরা পৃথিবীর সবচেয়ে পীড়িত জনগোষ্ঠী। রিফিউজি বা অ্যাসাইলাম প্রার্থীদের মত এরা সোচ্চারে সরাসরি সুবিধা চাইতে পারেননা। কারণ পরিস্থিতির শিকার বা অন্যত্র অপরাধের ভিক্টিম হলেও অনুপ্রবেশকারী হিসেবে বসবাসকারী রাষ্ট্রের চোখে তারা অপরাধী।

    অ্যাফোর্ডেবেল কেয়ার অ্যাক্ট বা ACA আইন এদেশে স্বাস্থ্য পরিষেবার নজরদারিও কলকাঠি চালায়। আন্ডকুমেন্টেডদের স্বাস্থ্য পরিষেবার বিষয়টি আমেরিকায় সর্বার্থেই খেজুরের আমসত্ত্ব। অত্যন্ত নেতিবাচক ও একইসাথে ঘোড়েল বিষয়।

    ACAআইন সুপরিকল্পিতভাবেই 'বৈধ' আওতায় না-থাকা বসবাসকারীদের থেকে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য-ইন্সিওরেন্স পরিষেবার সব সুযোগ বন্ধ করে রেখেছে। ফেডেরাল সরকারের ভর্তুকি-প্রাপ্ত সস্তা ইন্সিওরেন্স, যেমন - মেডিকেয়ার, মেডিচিপ, এবং শিশুদের জন্য চিপ (CHIP) এইসব সুলভে কম রোজগারের মানুষদের সুবিধার্থে চালু করা হয়েছে। কিন্তু এই সবই নাগরিক বা 'বৈধ' বসবাসকারীদের জন্য। তার মানে যারা আনঅথরাইজড্ রইলেন তাদের জন্য শুধু খোলা রইল মূলত এমার্জেন্সি। এছাড়া কিছু কমিউনিটি এবং মাইগ্রান্ট স্বাস্থ্য-কেন্দ্র বা EMTALA (The Emergency Medical Treatment and Active Labor Act)। এর ফলে আনডকুমেন্টেডরা আপাত ভাবে সামান্য কিছু সুবিধা পান – যেমন, সন্তানের জন্ম দেওয়া বা মারণ অসুখ বা দূর্ঘটনায় হাসপাতালে ভর্তি হতে পারা। কিন্তু অনুপ্রবেশ বিরোধী আইনের চোখে এই ন্যূনতম সুবিধা নেওয়ার ব্যাপারটিও মোটেই সহজ কিছু নয়। এ বিষয়ে পরে আসছি।

    আসলে কথা হচ্ছিল। কথা হচ্ছিল আমার ছাত্রী অ্যালেনার সাথে। তার বাবা-মা বসনিয়া থেকে এদেশে এসেছিলেন। ওর ছোটবেলা কেটেছে আনডকুমেন্টেড - রাষ্ট্র-পরিচয়হীন হয়ে। “আনডকুমেন্টেড” থাকার অর্থ হল এটা নিজেকে বোঝাতে পারা যে - স্বাস্থ্য পরিষেবা আমার জন্য একটি লাক্সারি। জরুরি নয়। টিকে থাকার জন্য, আমেরিকায় বাস করতে চাওয়াকে পরিস্থিতির চাপে বা স্ব-ইচ্ছায় বেছে নেয়ার জন্য এইটি আমার “ট্যাক্স”। পড়ে আসা শীতে অল্পঅল্প তুষার জমে থাকা সাইড-ওয়াকে সাবধানে পা ফেলতে ফেলতে শীতল স্বরে বলে চলে অ্যালেনা। "স্বাস্থ্য পরিষেবা পাবেনা। মেনে নাও।"

    শিক্ষাক্ষেত্রে আমেরিকায় এই সমস্যাটি তত প্রকট নয়। কারণ, পলিটিক্যালি কারেক্ট হওয়া না, শিশুশ্রম ও অপরাধ বন্ধ করতে আমেরিকা দেশে বসবাসকারী সব শিশুকেই স্কুলে পাঠানো বাধ্যাতামুলক করেছে বা করতে পেরেছে। যা অন্তত আপাত সুখের। অ্যালেনা এই সুবিধার জেরেই হাইস্কুল শেষ করতে পেরেছে। এখন সে এদেশের স্থায়ী বাসিন্দা। তার বাবা-মাও।

    আমি তার মুখের দিকে তাকাই। চলার ছন্দে তার কালো চুলগুলিতে পশমের টুপির পমপমটি আনমনা খেলা করে। সন্ত্রাসের শেষে সব শিশুর হেসে উঠিবার মত।

    মিথ্ এর রন্ধনশালা

    বলছিলাম মিথ ও মিথ্যার নির্মাণ নিয়ে কথা। কেন মারিয়ার গল্প শুরু করেছিলাম, বলছিলাম মারিয়ার গল্প কেন মারিনোভার বা মেহেরুন্নিসার হবেনা। স্টিরিওটাইপ মতে মিডিয়ায় সেটির কেমন আবর্ত চলে তার একটি ফ্ল্যাশ-ধারণা দেবো। একটি ন্যানো কোলাজ।

    অবৈধ ইমিগ্রান্টস্ নিয়ে মিডিয়া বেশ কিছু খাদ্য পরিবেশন করে তাদের মধ্যে সরলীকৃত করলে কোলাজটি দাঁড়ায় মোটামুটি এরকম-

    মরুপ্রান্তর, কাঁটাগাছ পেরিয়ে শরণার্থী। চোরা-অনুপ্রবেশকারীরা হেঁটে চলেছেন। অনুপ্রবেশকারীরা আসছেন।

    রাতের অন্ধকারে কালো সমুদ্রে দিশাহীন ভাসিয়েছে ডিঙ্গা। অনুপ্রবেশকারীরা আসছেন।

    ড্রাগ-ভর্তি ট্রেনে চেপে বগলে বন্দুক বাগিয়ে অন্ধকারে চলেছে সদলে। অনুপ্রবেশকারীরা আসছেন।

    এবং অনুপ্রবেশকারীরা আসছেন। এবং তারা কেবলই আমেরিকায় আসছেন। কেবলমাত্র আমেরিকাতেই আসছেন।

    আর 'পেত্নীগুলির সবসময় লম্বাপানা হাত হয়', এই রকম ভাবার মতই এর সবথেকে সহজ স্টিরিওটাইপটি হল - এরা সবাই মেক্সিকান, নিদেনপক্ষে লাতিন আমেরিকান তো বটেই।

    বাস্তব তথ্য অনুযায়ী ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আফ্রিকা, এশিয়া, ক্যারিবিয়ান, এবং ওসিয়ানিয়া থেকে মানুষ এলেও তারা ঘরের পাশের ভূখণ্ড থেকে আসা মানুষের চেয়ে সংখ্যায় কম, অতএব সাদা-সুপ্রীমেসিস্টদের যাবতীয় হেট রেটরিক এদের দিকেই ধাবিত। রক্ষনশীল রাজনীতি ও তাদের মিডিয়ারা এরকমই প্রচার করে।

    এভাবেই হলিউডি অ্যাকশন সিনেমার মত এগুলিকে গিলিয়ে দেওয়া হয়। এই প্রোপাগ্যান্ডা গিলিয়েই সাদা-বাড়িতে গেঁড়ে বসেছেন ট্রাম্প ও সম্প্রদায়। সম্প্রতি তার আইনজীবী, বলা ভাল প্রাক্তন আইনজীবী মাইকেল কোহেনের কবুল আখ্যা-আমেরিকা ভ্যাবলা হয়ে সকালবেলা শুনেছে। কোহেন তার ট্রায়ালে বললেন - ট্রাম্প ভাবতেই পারেননি যে তিনি এই নির্বাচন জিতে যাবেন। জিতে গিয়ে উনি একটু বিভ্রান্তও হয়েছিলেন। এ শুনে সক্কাল সক্কাল আমাদের অনেকেরই লে-হালুয়া অবস্থা। উনি আরও বললেন - ট্রাম্প হলেন আদ্যন্ত এক রেসিস্ট মানুষ। উনি মেহিকান ও কালো মানুষদের অন্তর থেকে ঘৃণা করেন। আমরা শুনলাম। কিন্তু কথা হল আবার বললে আমরা আবার শুনবো। তারপর বড়জোর একটু নাক খুঁটে নেব। অফিসে গিয়ে সকালের কফিটায় একটু সময় নিয়ে চিনি গুলবো। কিন্তু ট্রাম্প-ভোটারদের প্রশ্ন করবো না, আপনি জানতেন ট্রাম্প নিজের ক্ষমতায় জেতেননি? জিতিয়েছে আপনাদের ঘৃণা আর অশিক্ষা। মিসজিনি আর রেসিজম। ট্রাম্প আপনার এই বিষাক্ত কফি ধারণ করার একটি স্বচ্ছ পেয়ালা মাত্র। করবোনা। কারণ আমরাও এই মিথের নির্মাণের অংশীদার হব। ভাবব, আমাদের আমেরিকান ড্রিম হবে। আমরা ড্রিম ভাঙলে ব্যাটারি চালিত বুরুশে দাঁত মেজে নিতে পারব। আসলে প্রস্তুতি নেব। সারাদিন ধরে চলা ধারা বিবরণীর প্রস্তুতি; ড্রিম নয়, আমেরিকান নাইটমেয়ারের । আর তা মিথ্যার ইউটোপিয়াগুলি আরও সযত্নে বুনে দেবে। অনেকেই তাই আবারো লুকিয়ে বর্ডার, কাঁটাতার পেরোবেন। চলে আসবেন আমেরিকা নামক এই কল্পিত স্বর্গে। যেখানে ড্রাগ নেই, বন্দুক নেই, মাসে মাসে স্কুলে বিদ্যালয়ে ফুটফুটে ছাত্র-মৃত্যু নেই, কর্মাভাব নেই - এমন কিছুই নেই তেমনি এক মৌ-ধরোধরো ইউটোপিয়ায়।

    সারা বিশ্ব জুড়ে এই যে ডলারের মহিমা তারই ভালো নাম - 'আমেরিকান ড্রিম'। এই ড্রিম দেখতেই তারা আসেন, নাকি তাদের না এসে উপায় থাকেনা - সে অন্য খতিয়ান। তার জন্য বিশদ আলোচনা প্রয়োজন। এখানে তা আমি সচেতন ভাবেই এড়িয়ে যাচ্ছি।

    আপাতত আরেকবার পরিসংখ্যানে ফেরা যাক। কথা হচ্ছে এইযে সারি সারি কাঁটাতার পার হয়ে আসেন যে বিপুল মানুষ, তারা সত্যিই মোট কত শতাংশ?

    ফোর্বস সংস্থার রিপোর্ট বলছে - চল্লিশ শতাংশ। মানে এদেশে মোট অবৈধভাবে বসবাসকারী জনসংখ্যার চল্লিশ শতাংশ। বাকী ষাট শতাংশ তাহলে কারা?

    তারা, যারা একদিন বিধি-সম্মত ভাবেই এই উত্তর আমেরিকায় এসেছিলেন। কর্মসূত্রে। ছিল বৈধ স্ট্যাটাসও। আসলে বৈধভাবে এদেশে বাস করছেন কিন্তু নাগরিক নন, এমন যেকোনো মানুষই যেকোন দিন অবৈধ বসবাসকারী হয়ে যাওয়ার যোগ্য সম্ভাবনা নিয়েই এদেশে বাঁচেন।

    আরেকটু খোলসা করতে মূলত তিনধরনের সম্ভাবনার হদিশ দিচ্ছি। এক - যারা কর্ম করবেন ও কর্ম-ভিসায় আসেন ও পরে চাকরি খুইয়ে ভিসা হারান এবং থেকে যান, দুই - আন্তর্জাতিক ছাত্ররা যারা পড়া-লেখা শেষ করে কাজ খুঁজছেন ও মেয়াদের চেয়ে বেশীদিন থেকে ফেলেছেন। তিন - যারা গ্রীনকার্ড খুইয়েছেন। গ্রীন কার্ডও সহায়ক নয়। আপনি আইনবিরোধী কাজ করলেই সেটি বাজেয়াপ্ত হবে। এখন, আইন বিরোধিতার একটি নমুনা দিই। তা কিন্তু খুনখারাপি বা চোরাচালান নয়। ইস্যু-ভিত্তিক লড়াই, সামাজিক উন্নয়নের জন্য লড়াই, অ্যাক্টিভিজমের জন্যও খোয়া যেতে পারে আপনার সবুজ-পত্র'টি।

    যেমনটি হল আলেহান্দ্রো পাবলোসের বেলায়।

    সন্ত্রাসের কার্যক্রম

    গত ডিসেম্বর মাসে তার গ্রীনকার্ড সরকার থেকে বাজেয়াপ্ত করা হল। আলেহান্দ্রো এদেশে আসেন ইমিগ্রান্ট হয়ে। ১৭ বছর তার কোন বৈধ পরিচয়পত্র ছিলনা। পড়াশোনায় মেধাবিনী আলেহান্দ্রো অনেক পরিশ্রম শেষে, যোগ্যতা প্রমাণ করে গ্রীনকার্ড পেতে সমর্থ হন। অ্যাবরশন বিরোধী বিল নিয়ে কাজ করতে করতে অ্যাক্টিভিস্ট হয়ে ওঠেন তিনি। অ্যাবরশন বিরোধী বিক্ষোভ ও অবস্থানের জন্য তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। 'রাষ্ট্র-বিরোধী' - এই অভিযোগ দেখিয়ে তার গ্রীনকার্ড কেড়ে নেওয়া হল গত শীতে।

    অ্যাবরশন নিয়ে আন্দোলন এদেশে পুরাতন ঘটনা। কন্সারভেটিভ নারীরা বিশ্বাস করেননা, তাহারা অপমানিত জীবন কাটাইতেছেন, তাহাদের স্বাস্থ্য-শরীর সম্পর্কিত ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে বাধা আরোপ করা হইতেছে অথবা তাহাদিগকে ধোঁকা দেওয়া হইতেছে। পক্ষী যেরূপ বাঁধা থাকিলেও বন্ধনকারীর শিখানো বুলি আউড়াইতে চাহে, তাহারাও পিতৃতন্ত্রের ভঙ্গ-ধ্বজ'কে (ভঙ্গ-ধ্বজ মানে 'ধ্বজভঙ্গ' পড়িবেন না। আমি শারীরিক অক্ষমতাকে খিস্তিরূপে ব্যবহার করিনা) হাউই-উড়ন্ত ধ্বজা ভাবিয়াই পূজা করিয়া থাকেন। যে নারীরা পুরুষবাদ অভ্যাস করেন তারা তাহা অবৈজ্ঞানিক হইলেও করেন। কারন অবশ্যই একমেবাদ্বিতীয়ম্ - অশিক্ষা ।

    আর অশিক্ষাই সেই তাস, যাহা ট্রাম্প-কে পপুলার বানায়। ট্রাম্প ক্ষমতায় না আসিলে জানাই প্রায় যাইতনা, সারা আমেরিকা এই হেট-স্পিচের জন্যে ওইরূপ আকুল হইয়া থাকিয়াছে এতকাল। তাহা যেমনই মিসজিনিস্ট, তদ্রূপই জাতি-ঘৃণাকর।

    দেখা যায় যে ইল্লিগ্যাল ইমিগ্রান্টদের জন্য এই অ্যাবরশন অনেক সময়ই সন্তানের চেয়েও অনেক বেশী জরুরি। বৈধ কাগজপত্র না থাকায় যৌন হেনস্থা ও ধর্ষণের ঘটনা সমান্তরাল ভাবে ঘটে চলে তাদের জীবনে। এতে আসতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত ভ্রূণ। অনেক সময় বৈধ কাগজ পাওয়ার আশায় নকল বিয়েতে রাজি হতে হয়। এ ধরণের বিয়েতে প্রায়শই দেখা যায় পুরুষটি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন। মেয়েটি গর্ভবতী হয়ে পড়েন। মিথ্যার বিয়ে ও তার থেকে সন্তান, এই দুইয়ের কোনটিই তার কাম্য নয়। দেশে হয়তো তার মা-বাবা, ক্ষুধার্ত, অসুস্থ ভাইবোন থাকেন। তাদের মুখে সামান্য খাবার তুলে দিতে সামান্য ডলারের বিনিময়ে রেস্টরুমে মানুষের গু-মুত্র পরিষ্কার করে সে। বিয়ে-সন্তান এসব কিছুই তার জীবনের পরিকল্পনায় না থাকার কথা হতেই পারে। তখন অ্যাবরশনই তার বেঁচে থাকার একমাত্র সহায়ক। আর এই অ্যাবরশন করাতে গিয়েই ধরা পড়েন 'ইল্লিগ্যাল' ইমিগ্রান্ট। ফেডেরাল আইনে অ্যাবরশন অপরাধ না হলেও ওকলাহোমার মত কয়েকটি কনজারভেটিভ রাজ্য অ্যাবরশনকে 'অপরাধ' ঘোষণা করে রেখেছে। অতএব গ্রেপ্তার ও দেশে ফেরত পাঠানো।

    ওবামা সরকারের আমলে অবৈধ বসবাসকারী কেবলমাত্র অপরাধে জড়িয়ে পড়লে ডিপোর্ট করার নির্দেশ চালু ছিল। ট্রাম্প সরকারের আমলে ফোকাস হইল - যে কোনো আনডকুমেন্টেড ইমিগ্রান্টকেই গ্রেপ্তার করে সরাসরি ফেরত পাঠানো। ট্রাম্প সরকারের হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সচিব জন কেলি ইহাকে বাস্তবায়িত করিতে উঠে পড়ে লাগিয়াছেন। আর তাহারই ফলশ্রুতি - টেক্সাসের নতুন এই ডিটেনশন ক্যাম্প। অসুস্থ, প্রেগন্যান্ট মানবীদেরও কোন ছাড় নেই।

    বিচ্ছিন্ন মানুষ মাত্রেই শক্তিহীন। অতএব শক্তিহরণ পালা খুবই কার্যকরী। সব যুগে। সব রাষ্ট্র ব্যবস্থায়। ট্রাম্প জমানায় তার চূড়ান্ত ফ্যাসিস্ট চেহারা দেখছি মাত্র। আমেরিকান সেটলাররা ছিলেন বিশেষ করিৎকর্মা। নেটিভদের দেশ থেকে মুছে দিতে এ ধরনের কুমানবিক পদ্ধতি তারা আগেই প্রয়োগ করে ফেলেছেন। ট্রাম্প সেই পথে নতুন ডিজিট্যাল আলো দিয়েছেন মাত্র। তাতেই জেগে উঠেছে নতুন করে কু-ক্লাক্স-ক্লান। বর্ডারে নতুন সাজে ডিটেনশন ক্যাম্প। গত গ্রীষ্মে শত শত শিশুকে মা-বাবার থেকে কেড়ে নিক্ষেপ করা হয়েছিলো সেই কারায়। সারা দেশব্যাপী গনবিক্ষোভের জেরে ট্রাম্প-প্রশাসন সেই 'জিরো টলারেন্স' অবস্থান থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়। এখনও ডিটেনশন ক্যাম্পের বাইরে থেকে শোনা যাচ্ছে শিশুর কান্না। প্রেগন্যান্ট মায়েরা বাধ্য হচ্ছেন শারীরিক কষ্ট, ঝুঁকি অগ্রাহ্য করে দেশ ছাড়তে। মৃত্যু আসন্ন জেনেও, মারণ রোগ নিয়েও চিকিৎসার বদলে ফের বর্ডার পেরিয়ে অনিশ্চিত ধোঁয়া-পথে এগিয়ে যেতে।

    সেরা হের্নান্দেজের কথা মনে পড়ছে। ২০১৭ সালে টেক্সাসে বসবাসকারী সেরা মাথার টিউমরে আক্রান্ত হয়ে এমার্জেন্সি চিকিৎসার সুবিধা নেওয়ার কথা ভাবতে বাধ্য হন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর ল-এনফোর্সমেন্টের কর্মীরা হাসপাতাল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেন। তাকে নিয়ে গিয়ে রাখা হয় ডিটেনশন ক্যাম্পে। সেরা-র ঘটনা মনে করায় কেন অবৈধ বসবাসকারীরা এই সুবিধা নিতে রীতিমত তটস্থ হয়ে থাকেন ও আছেন। সেরা-র বোন ও তার কমিউনিটির লোকজন ইমিগ্রেশন অ্যাক্টিভিস্টদের সাথে যোগাযোগ করেন ও সেরা-কে একজন আইনজীবী দেওয়া হয়। ক্রিস হ্যামিল্টন নামের আমেরিকান এই আইনজীবী সেরার সাথে ডিটেনশন ক্যাম্পে দেখা করার চেষ্টা করলে তাকেও গ্রেপ্তার করার হুমকি দেওয়া হয়। ক্রিস মিডিয়াকে জানান - "ইহা গণতন্ত্র-বিরোধী। এবং আপামর আমেরিকাবাসীদের মনোভাব এত অমানবিক নয়। কিছু অনুদার মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি ও কুৎসিত-অমানবিকতায় আমরা লজ্জিত।"

    এরকম লজ্জিত কিছু মানুষ রহিয়া যান সর্বদেশে, সর্বকালে। তাহারা কেউ কেউ সরকারেও থাকেন। তাহারা কেউ কেউ অমানবিকতার বিনাশ চাহেন। তাহারা কেউ কেউ ঘৃণার প্রতিশব্দ নহেন। তাই দুনিয়া-ব্যাপী সন্ত্রাস ও ঘৃণার পরেও এই গ্রহটির কিছুটা সভ্য থেকে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েই যাবে।

    কিছু শহর ও রাজ্যে আনডকুমেন্টেড ইমিগ্রান্টসদের প্রাইমারি কেয়ারের একটা মডেল খাড়া করার চেষ্টা হয়েছে। যেমন নিউইয়র্ক শহরে যেহেতু সবথেকে বেশী বেসরকারি ও কমিউনিটি স্বাস্থকেন্দ্র এবং দেশের সবচেয়ে বড় জনস্বাস্থ্য-ব্যবস্থাও এই রাজ্যেই, তাই এই শহরের হাসপাতাল ও স্বাস্থকেন্দ্রগুলিতে মেলে কাগজবিহীন বসবাসকারীদের চিকিৎসাও। সহজেই। ক্যালিফোর্নিয়া বহুদিন থেকেই এ ব্যাপারে উদার মনোভাব দেখাতে পেরেছে। এই রাজ্যের 'মেডিক্যাল' ( MEDI-Cal) অত্যন্ত সহানুভূতিশীল একটি স্বাস্থ্য পরিষেবা। ডকুমেন্টেড, বা আন-ডকুমেন্টেড সকলেই এর ভোক্তা হতে পারেন। সকলেই এর চিকিৎসার আওতায় পড়েন।

    জোরদার হচ্ছে ইমিগ্রান্ট রিফর্মেশনের আন্দোলনও। ইমিগ্রান্ট'দের দাবী-দাওয়া নিয়ে যারা আন্দোলন করেন, তাঁরা দাবী করেছেন - চাই ভিন্ন সংস্কৃতির প্রতি সংবেদনশীল মনোভাবের স্বাস্থ্য-পরিষেবা। চাই এমন প্রশিক্ষিত, উদার মনোভাবের কর্মী, যারা ল্যাঙ্গোয়েজ-শেমিং করবেননা। অর্থাৎ 'মেল্টিং-পটের' এই দেশে ইংরেজি না বলতে পারাকে 'অপর' যেন না প্রতিপন্ন করা হয় । বলা হচ্ছে - ইংরেজী 'অ্যাক্সেন্টেড' মানে তিনি অন্য আরও একটি ভাষা জানেন। অতএব তার ভাষা-জ্ঞান সীমিত নয়। তাই তার অ্যাক্সেন্টেড ইংরেজিকে খাটো ও করুণা করবেন না। বরং তার প্রাথমিক ভাষাটিকে মান্য করে রোগীর আস্থা অর্জন করতে হবে। যাহাতে সেই অনুপ্রবেশকারীটি নিশ্চিন্ত মনে তার চিকিৎসক ও ইন্সিওরেন্সকে ভরসা করতে পারেন।

    গেল শীতে দেশে গিয়ে দেখলাম – মফঃস্বলের এক বাঙ্গালি সল্টলেকের এক ঝকঝকে বেসরকারি স্বাস্থ্য-কেন্দ্রে আপ্রাণ হিন্দি-ইংরেজী মিশিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার পরিচয়পত্র আমি স্বচক্ষে দেখিনি। মফস্বলের নামটি শুনে ধরে নিচ্ছি তিনি ভারতের ও পশ্চিমবঙ্গের নাগরিক। স্বাস্থ্য-খানার কর্মীদের কাছে তার আস্থা অর্জন করার কায়দাটি আমার কাছে ছিল রোমহর্ষক। বাহু ও বাহুমূলের রোম চাঁচা না থাকলে নির্ঘাত খাড়াই হত মালুম করি।

    লোকটি কি মাইনরিটির? কিরূপ মাইনরিটির? মানসিকভাবে মাইনরিটি? এইসব ভাবিতে ভাবিতে কলিকাতার রাস্তা ফেলিয়া চলিয়া আসিতেছি - আর আমার বৈধ-অবৈধ সমস্ত প্রকার বসবাসকারী, দেশ-বিদেশ, অনুপ্রবেশকারী বিষয়ক সব আখ্যান উলটাইয়া-পাল্টাইয়া যাইতেছে। লেখা শেষ করিব ভাবিতেছি। কিন্তু তাও মনে পড়িতেছে কিয়ের্কেগার্দের সেই অমোঘ উপলব্ধি- “Truth always rests with the minority, and the minority is always stronger than the majority”, কারণ - মাইনরিটি এইরূপেই তৈয়ারি হয়। মাইনরিটি প্রস্তুত হয় যখন সত্যই তাহাদের কোন অবস্থান থাকে। সংখ্যা-গরিষ্ঠ গোষ্ঠীর শক্তি আসলে একটি মিথ। ভুলভুলাইয়া। যাহারা বহতা। নিজেদের অবস্থানের থেকেও যাদের বেশী অবস্থানবিহীনতা। যাহারা করে চলেছেন অন্যের প্রভাবে প্রভাবিত এক বহুল শেয়ারিত মতপ্রকাশ - নিন্দুকের ও ফেসবুকের, জলের ও জঙ্গলের, এই গ্রহের ও বিগ্রহের, মঙ্গলের ও আমেরিকাস্তানের।

    মেজরিটি নামের এই দানব, আসলে সত্যিই এক দৈত্য যাহার ভালোনাম 'পাব্লিক' হ্যায়, আউর যো সব জানতি হ্যাঁয়, কিন্তু সব জানিলেও তাহারা কোন দৃঢ় অবস্থানে নেই। তাহারা ম্যানুফাকচার্ড। তাই সত্য হল তাহা - যা বাস্তব, যেখানে অভাব, যেখানে পীড়ন চলিতেছে, যাদের প্রয়োজনীয় পাওনা উসুল করিতে হবে এই গ্রহটিতে টিকে থাকার জন্য, যা ন্যূনতম এবং প্রাপ্য, সেই সত্যই তখন মাইনরিটি।

    আমরা কখনও কি এই সংস্কৃতি নির্মা্ণ করিতে পারিব - যাহা মাইগ্রেশনকে চ্যালেঞ্জ করিবে? আমরা কখনও কি এই প্রশ্নের উত্তর করিতে সক্ষম হইব - মানুষেরা কেন পরিচয়হীন, 'অবৈধ' হইয়া যান? এতক্ষণে প্যারাডক্সের সমাধান হইল। পরিচয়হীন মানুষ অদৃশ্য। অতএব অশরীরী। অতএব তাহার চিকিৎসাও নিষ্প্রয়োজন।














    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২৪ মার্চ ২০১৯ | ১৩৮৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • স্বাতী রায় | unkwn.***.*** | ২৫ মার্চ ২০১৯ ০২:২৪79139
  • দরকারি লেখা. চিন্তা জাগাল.
  • বিপ্লব রহমান | unkwn.***.*** | ২৫ মার্চ ২০১৯ ০৪:৫১79138
  • লেখাটি খুব ভাবাচ্ছে। অভিবাসী সমস্যা সারা দুনিয়া জুড়েই চলছে। ছোট্ট দেশ বাংলাদেশেও রোহিংগা উদ্বাস্তু সমস্যার কবলে পড়েছে। ১০ লাখ মানুষের অন্ন সংস্থান, পুষ্টি, আশ্রয়, চিকিৎসা, শিক্ষা, নিরাপত্তা -- খুব সহজ কথা নয়।

    লেখার গুরুচন্ডালি অহেতুক একে জটিল করেছে।
  • রোকেয়া ভানুমতী | unkwn.***.*** | ২৫ মার্চ ২০১৯ ০৮:৫৪79140
  • @বিপ্লব রহমান- ধন্যবাদ
  • অনামিকা বন্দ্যোপাধ্যায় | unkwn.***.*** | ২৫ মার্চ ২০১৯ ০৮:৫৬79141
  • @স্বাতী রায়- ধন্যবাদ
  • অনামিকা বন্দ্যোপাধ্যায় | unkwn.***.*** | ২৫ মার্চ ২০১৯ ০৮:৫৮79142
  • @বিপ্লব রহমান- ধন্যবাদ
  • | unkwn.***.*** | ২৬ মার্চ ২০১৯ ০২:৩৬79143
  • লেখা টা আ্যকচুয়ালি ভাল হয়েছে
  • অনামিকা বন্দ্যোপাধ্যায় | unkwn.***.*** | ২৭ মার্চ ২০১৯ ০৭:৪২79144
  • @খ :D
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই মতামত দিন