ছোট থেকেই যে গ্রামটির আলো-বাতাসে বড় হয়ে উঠলাম, কখনও আমার মনে হয় নি যে এখানে দুটি সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করে। মোট আটটি পাড়া। তারমধ্যে আমার বাড়ি গ্রামের মধ্যবর্তী একটা স্থানে। ডানপাশে গরাই পাড়া, লোহার পাড়া। বাঁ পাশে রায় পাড়া।
আমার বড়ো ফুপুর গ্রামেই বিয়ে হয়েছে। ফুপুদের ঘরের পাশেই লেউল গরাইয়ের বাড়ি। বলা চলে একটাই উঠোন। ছোটবেলায় ফুপুদের বাড়িতেই সারাটাক্ষন পড়ে থাকতাম। ফুপুর সেজ ছেলে খাইরুল, আমার সমবয়সী। দু'জনে কাদা দিয়ে ছ'চাকার লরি বানাতাম, ডি .জে বক্স তৈরি করতাম। লেউল গরাইয়ের নাতি তাপস আমাদের সঙ্গে খেলতে আসত। ভাত খাবার সময় হলে আমাদের তিনজনকেই ভাত বেড়ে দিত ফুপু। কোনোদিন বুঝতেই পারি নি তাপস অন্য ধর্মের, অন্য সম্প্রদায়ের ছেলে। পিসিদের বাড়িরই একজন সদস্য ভাবতাম।
তাপসার মা হয়তো মল্লিক পাড়ার আবুলের দোকানে হাটবাজার করতে যাচ্ছে, বড় ফুপু হাঁক পাড়ল, ও বাসন্তী, একবার দাঁড়া গো। শুকনো লঙ্কা শেষ হয়ে গেছে। বলেই দৌড়ে গিয়ে হেঁশেল ঘরে ঢুকে ফুপু চালের ড্রাম থেকে মুঠো কতক চাল বের করে একটা পলিথিনে ভরে তাপসার মায়ের হাতে তুলে দিত। কোনো দিন দরমা থেকে হাঁসের ডিম। চাল, ডিম বিক্রি করে সংসারের টুকিটাকি জিনিস আসত। ফুপু দোকান গেলে তাপসার মায়েরও কিছু লাগলে আনতে দিত।
খয়েরী রঙের শাড়ি পরা তাপসার মায়ের মুখটা খুব মনে পড়ে আজ। মোটা করে সিঁথিতে সিঁদুর পরা। হাসলে মনে হত পৌষসংক্রান্তির রাতে রায়পাড়ায় জাগরণের গান শুনতে গিয়ে দেখা তুসু ঠাকুরটির মতো। তাপসার মাকে খাইরুল ছোট চাচি বলে ডাকত। দেখাদেখি আমিও চাচি বলতাম। সেই ছোট্ট বয়সে কেউ আমাদের চাচি বলতে বারন নি। তাপসার মা খুব ভালো বাসত আমাদের। বাড়িতে গেলে দুধের স্বর দিয়ে মুড়ি খেতে দিত। দোকান গেলে আমাদের জন্য আনত, মদন কটকটি, মাছ চকলেট।
তেঁতুলগোড়ের পুকুর ঘাটে সবাই একসাথে স্নান করে। দৃশ্যগুলো দেখে মনেও শান্তি আসে। মনোয়ারা চাচি গা ধুয়ে শুকনো কাপড় পরে, ঘাটের পাথরে বসে নামাজ পড়ার জন্য ওজু করছে, তখন হয়তো সুনীলের মামা জগদীশ দাদু স্নান সেরে পানিতে দাঁড়িয়েই সূর্যের দিকে দু'হাত জড়ো করে মন্ত্র জপ করছে। মল্লিকদের মা মরা বাছুর ছানা ছুটে গিয়ে কার্তিক রায়ের উঠোনে বাঁধা গাইগোরুর বাটে মুখ লাগিয়ে দুধ খেয়ে নেয়। কার্তিকের বউ বলে, ও সামসুরা চাচি। দড়ি দিয়ে বাঁধতে হবে কেনে গো! খেলিই বা একটুকুন দুধ। আজ যদি আমাদেরটা গাইটা মরত! তাহলে পারতে তাড়াতে?
রমজান মাস পড়ল। সে সময় চলছে বাগদি পাড়ার পুন্যি পুকুরে জবকার্ড থেকে মাটি কাটার কাজ। বেলা বারোটা। সব পাড়া থেকেই দু-চারজন করে কাজে লেগেছে। যারা রোজা রেখেছে, খালি পেটে টলছে। তখন বাগদি পাড়ার কেউ একজন বলে উঠল, তুমরা যারা রোজা রেখেছ, ঘর যাবে তো চলে যাও। বাকি কাজ আমরাই করে দিব। এত রোদে খালি পেটে আর খাটতে হয় না।
দুগি বাগদির মেয়েটার বিয়ে লেগেছে মাছডোবায়। জামাইকে দিতে হবে একখানা নতুন সাইকেল, হাত ঘড়ি, আর নগদ পনেরো হাজার টাকা। কোথায় পাবে দুগি! খালেবিলে, নদীতে, মুয়ানে মাছ ধরে সে। দুগি গেল মল্লিকপাড়ার ঝড়ো মল্লিকের কাছে। গিয়ে সব কথা বলে আবদার করে বসল, ও চাচা, দুগিটার বিয়ে লাগাইছি। তুমি কিছু দিবে নাই?
ঝড়ো মল্লিক বলল, ও মা, এ তো খুশির খবর! মেয়ের বিয়ে দিচ্ছিস, কিছু দিতে হবে বইকি। তা কী দিলে খুশি হবি বলত?
আবদুল চাচা তো সাইকেলটা দিচ্ছে, তুমি একখানা ভালো হাত ঘড়ি কিনে দিও তাইলে।
এভাবেই তো গ্রামের মানুষগুলোকে একে অপরের পাশে দাঁড়াতে দেখে আসছি। জাতপাতের বিচার কখনো করতে দেখিনি। উৎসবকে ভাগ করে নেয় একে অপরে। কালি পুজোর পাঁঠাবলি যেমন আমরা দেখতে যাই দল বেঁধে, তেমনই আমাদের মহরমে লাঠিখেলা হলে ওরা আসে।
রমজান মাসের সন্ধ্যায় বড়ফুপুর বউমা, মানে সাবিনা ভাবির কোরান পড়ার সুর শুনে থমকে দাঁড়ায় তুলশি তলায় সাঁজ দিতে আসা ওবাড়ির ছোট বউ শিউলি। তারপর যখন শাকে ফুঁ দেয়, কোরান পাঠ থামিয়ে কানখাড়া করে থাকে এবাড়ির বউ।
সরস্বতী পূজা এলেই পঞ্চমির সকালে আমাকে ভিজে পান্তা খেয়ে আসতে হয় সরমিলা কাকিমাদের ঘরে। নীবারণ কাকা প্রতিবছর ডেকে নিয়ে যায়। আর ঈদ এলে আমার মা সেমাই, চালগুড়ির রুটি, লাচ্ছা দিয়ে পাঠায়।
একটু বড় হতেই কিছু কিছু ব্যাপার আমাকে অনেক প্রশ্নের মুখে ফেলে দিতে লাগল। একবার মা হাতে টাকা দিয়ে বলল, তেমাথার মোড় থেকে ঘুরে আয় তো খোকা। পোলটির মাংস কিনে আন।
মোড়ে দুটি দোকান। সামনেই লখা বাগদি মুরগী কাটে, তারপর সামাদ মন্ডল। সামনের দোকানেই দাঁড়ালাম। বললাম, এক কিলো মাঝারি সাইজের পিস করে দাও তো লখা কাকা।
লখা বাগদি আমার দিকে কেমন করে তাকাল। বলল, তুই বাসেদের নাতি না?
বললাম, হ্যাঁ। আমি হানিফের ছেলে।
শুনে ফ্যাক ফ্যাক করে হেসে উঠল লখা। কি ব্যাপার বুঝতে পারলাম না। হাসি থামিয়ে বলল, ধুর খ্যাপা, এত বড় ছেলে হয়েছিস, এখনো গেয়ান হয় নাই? ওই দেক সামাদের দোকান। ওখান থেকে নিয়ে যা।
বাড়ি ফিরে মাকে বললাম সব কথা। মাও রেগে মারতে গেল আমাকে। তুই কি খ্যাপায় থেকে যাবি খোকা! ওরা মুরগি পিটিয়ে মেরে কাটে। আর আমরা গলার দিকে জবাই করে। আর কখনও লখার দোকানে যাস না। যখন গোটা মুরগী আনবি, তখন যেখানে খুশি আনবি।
মায়ের কথা শুনে মনে প্রশ্ন জাগল কেন?
তারপর যত বড় হলাম, ধীরে ধীরে বেশকিছু জিনিস বুঝে গেলাম। সবাইকে সবকিছু করতে নেই। সবাইকে সবকিছু খেতে নেই। সবার কিছু আলাদা আলাদা নিয়মকানুন, আচার বিধি আছে। এভাবেই তো বসবাস, আমাদের বেঁচে থাকা।
গ্রামের বাইরের পরিবেশটা কিন্তু আলাদা। আমাদের এখানের অধিকাংশ ছেলে-ছোকরারাই বাইরে খাটতে যায়। কেরলা, চেন্নাই, ব্যাঙ্গালোর, মহারাষ্ট্র। কেউ রাজমিস্ত্রী হয়ে, কেউ রঙমিস্ত্রি। এখানে সারাদিন গাধার মতো খেটে যা রোজকার হয়, বাইরে ডবলের থেকেও বেশি। ছেলে-ছোকরারা মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক দেওয়া হলেই ট্রেনের টিকিট কাটে।
উচ্চমাধ্যমিক পাস করে আমারও পালা পড়ল। লোহার পাড়ার কয়েকজন ছেলে কেরলায় ছিল, কার্তিক পূজোর জন্য কিছুদিন ছুটি নিয়ে এসেছিল। পূজো শেষ হতেই আবার যাওয়ার জন্য তোড়জোড় শুরু করছিল। গণা মিস্ত্রি নিয়ে যাচ্ছে সাতজন নতুন লেবার। রাজমিস্ত্রীর জোগাড়ে। আমিও নাম লেখালাম।
আব্বা বলল, যাচ্ছিস যা। কিন্তু ওখানে কাদের সঙ্গে থাকবি?
বললাম, কেন? যাদের সঙ্গে যাচ্ছি।
আমাদের পাড়ার হাপিজুল, শরিফুল ওরা যেখানে আছে, ফোন করে যোগাযোগ করে নিবি। ওদের কাছে চলে যাবি।
জেনারেল কামরায় গা ঠেঁসাঠেসি ভিড়! দু'দিন, দু'রাত ধরে ট্রেন যাত্রা। অধিকাংশ যাত্রীই ছিল আমাদের মতো খেটেখেকো মানুষ। কিছু বেশি রোজকারের ধান্দায় কেউ যাচ্ছে বউ-ছেলেমেয়েকে ফেলে, কেউ বাপ-মাকে ছেড়ে। বিশ্বাস করুন, সেই ভিড়ের মধ্যে আমি হিন্দু-মুসলিম দেখতে পাই নি। কতগুলো মানুষের খিদে দেখতে পেয়েছিলাম। আর পেয়েছিলাম মুঠো মুঠো সাদা ভাতের গন্ধ।
তামিলনাড়ু ঘেঁষা ডিস্ট্রিক্ট এর্নাকোলামে আমাদের কাজ। সাতজন নতুন লেবারদের জন্য আলাদা থাকার রুম পেলাম। থাকা খাওয়ার খরচ নিজের বেতন থেকে মেটাতে হবে।
বললাম, তোদের সঙ্গে থাকলে কোনো অসুবিধা নাই তো রে!
অসুবিধা বলতে?
এই ধর, রান্না-খাওয়া....
শোন ভাই, এখানে সবাই পেটের টানে কাজ করতে এসেছি। জাতপাতের ব্যাপার এখানে চলে না। তুই কি ভাবছিস শুধু তুই আছিস? পাশের রুমগুলো খোঁজ নিয়ে দেখ। সব একসাথে কেমন মিলেমিশে রয়েছে।
যেদিন যার রান্নার পালি পড়ত, ভোর ভোর উঠে হাঁড়ি কড়াই মেঁজে রান্না বসাতে হত। সকালে খেয়েদেয়ে বাসে চেপে কাজের সাইডে।
সপ্তাহে এক আধদিন মাংস হতো। মাছ হতো। ওখানে লখা বাগদি, আর সামাদ মন্ডলের দোকানের মতো ভাগাভাগির ব্যাপার ছিল না।
মাসতিনেক পর হঠাৎ জ্বরে পড়লাম। প্রথমে ভেবেছিলাম সকালে বেরিয়ে রাত আটটায় ফিরে স্নান করার জন্য শরীর খারাপ। ধারনাটা ভুল প্রমানিত হল। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি গায়ে, মুখে, পিঠে জল ফসকার মতো কি যেন বেরিয়েছে। শরীরটা প্রচন্ড দূর্বল। প্রকাশকে দেখালাম, ও দেখেই শিউরে উঠল। বলল, পক্স হয়েছে যে রে!
বেশ চিন্তিত দেখাল রুমের বাকিদেরও। তারপর আমাকে সাহস জোগানোর জন্য বলল, তেমনকিছু নয়। কিছু নিয়মকানুন আছে তা পালন করলেই ভালো হয়ে উঠবি। তবে ছোঁয়াচে রোগ, অন্য কারও রুমে যাস না। আজ থেকে কাজে যেতে হবে না তোকে। মালিককে বলে তোর ছুটির ব্যবস্থা করে দেব।
খুব ভয় পেয়ে গেলাম। ছোঁয়াচে রোগ! তাহলে তো এই রুমের বাকিদেরও হয়ে যেতে পারে? কি করব এখন? আলাদা রুম ভাড়া নেব? তা-ও তো সম্ভব নয়।
ওরা কাজে চলে গেলে আমার বিছানাটা নিজেই ঘরের এককোনে টেনে নিয়ে গেলাম।
এগারোদিন স্নান করিনি। রান্নাবান্না কিছুই করতে হয়নি। সময়ে সময়ে খাবার বাড়িয়ে দিয়েছে সামনে। খাওয়া হলে এঁটো থালাটা কলতলায় গিয়ে ধুয়ে এনে দিয়েছে।
আমার ওই অসুস্থতার সময় যেভাবে গ্রামের কয়েকজন অমুসলিম ছেলে আমার পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। আমার সেবাশুশ্রূষা করেছিল, তা সারাজীবন মনে থাকবে।
বোরো ধান চাষ করেছি বিঘাখানেক। চাঁদিফাটা রোদে ধান নিড়াচ্ছি জমিতে। গ্রামের পাশেই মাঠ। জমিতে কাজ করতে করতে হাঁফিয়ে গিয়ে রায়পাড়ার গোপাল কাকা খেত থেকে উঠে খেঁজুর তলায় বসল। গলায় কয়েক ঢোক পানি ঢেলেই আমাকে হাঁক পাড়ল, ভাইপো উঠে আয় রে। একটু জল খেয়ে যা। খানিক জিরো কেনে।
মাঠে পানি আনিনি। ভেবেছিলাম ছোট জমি, একদমে পুরোটা নিড়িয়ে দিয়ে ঘরে খেতে চলে যাব। কিন্তু রোদের যা তেজ গলাটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। সারা শরীর ভ্যাপসা গরমে ঘেমে জবজবে হয়ে গেছে। এমন সময় গোপাল কাকার আন্তরিক ডাক শুনে মনটা আনন্দে ভরে গেল। মাথায় পাগড়ি বাঁধা গামছাটা খুলে মুখ মুছতে মুছতে উঠে এলাম। পগাড়ে দুটো পাশাপাশি খেঁজুর গাছ। কতটুকু আর ছায়া! সেখানেই গোপাল কাকার পাশে বসলাম। পানি খেতে গেলাম, আমাকে থামিয়ে থলের ভেতর হাত ভরে বের করল পলিথিনের পুঁটুলি থেকে দুটো বাতাসা। হাতে দিয়ে বলল, খালি পেটে জল খাস না, এগুলো মুখে নে বাপ। পুজোর প্রসাদ। তোর জ্যেঠি ভরে দিয়েছে।
বাতাসা খেয়েই গলাটা ভেজালাম। ধড়ে প্রাণ ফিরে এল। বললাম, তুমি না পানি খাওয়ালে আজ পুরো জমিটা নিড়াতে পারতাম না।
গোপাল কাকা বলল, তুই আনলে কি আমাকে খাওয়াতিস না?
আচমকা এমন প্রশ্ন শুনে যেন ইলেক্ট্রিক শক খেলাম। বললাম, তোমার এমন কেন মনে হল? যে পানি থাকলেও দিতাম না?
তুই দিতিস, কিন্তু সবাই দেয় না রে বাপ। তোকেও সবাই দিত না।
কথা ঘুরিয়ে গোপাল কাকা বলল, যাক গে বাদ দে এসব কথা। ক'টা বাজবেক বলদিনি এখন?
বললাম, মোবাইল তো আনিনি গো। কাদাপানির কাজ। যদি পড়ে যায়! জোহরের আজান তো এখনও দেয়নি। তাহলে বোধহয় একটাও বাজে নি এখন।
গোপাল কাকা বলল, যায় বলিস বাপ আজানটা দেয় বলেই মাঠে এলে সুময়টা জানতে পারি।
বাপ-দাদোদের আমল থেকেই মাঠে আজান শুনে সময় জেনে আসছে সব। শুধু শুক্রবারে বারোটায় আজান দেয়। সেকথা মাঠে খাটতে আসা সব মানুষই জানে।
গোপাল কাকা বলল, তুই তো লেখা পড়া জানা ছেলে বাপ, তুই বলত কোনোদিনও তোর কীর্তনের সুর শুনে বিরক্তি লাগে?
বিরক্তি কেন লাগবে!
সেখপাড়ার ক্লাবের ছেলেগুলো যে গিয়ে এতবড় ঝামেলাটা করল, তার কোনো মানে আছে? আর লোহার পাড়ারও কয়েকটা ছাগল আছে। বলে কিনা মসজিদের মাইকগুলো অন্য দিকে ঘুরাতে। এতদিন বাস করছি রে। কুনুদিন তো আমাদের ওসব কথা মাথায় আসেনি!
ইদানিং ওদের মাথায় পোকা ঢুকেছে কাকা। আর সেগুলো কারা ঢোকাচ্ছে সেকথা আর স্পষ্ট করে বলতে হবে না তোমাকে।
জানি রে জানি। মানুষগুলোকে খ্যাপা কুকুরের পারা লেলিয়ে দিয়ে সব ভোট নিবার ধান্দা করছে। এতদিন মিলেমিশে আছি। 'আমরা-তুরা' বলে কখনও তো ভাবিনি।
গোপাল কাকার কথা শুনে কোনো উত্তর দিতে পারলাম না। নিজের অভিজ্ঞতায় বুঝেছি, কয়েকটি মানুষের জন্য গ্রামের, দেশের পরিস্থিতিটাই কেমন পালটে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস গোপালকাকার মতো মানুষরা যতদিন বেঁচে আছে, ততদিন আমাদের বন্ধন কেউ ঘোচাতে পারবে না।
মাঠ থেকে যখন উঠে এলাম, তখন জোহরের আজান হাঁকল মোয়াজ্জিন। রায় পাড়া থেকে ভেসে আসছিল হরিসংকীর্তনের সুর। দুই সুর বাতাসে ভাসতে ভাসতে একসাথে মিশে যাচ্ছিল।
Khub valo laglo