আমরা তখন করোনা-লকডাউন-মৃত্যু-ড্যাশবোর্ড নিয়ে ব্যস্ত। এদিকে উত্তরাখন্ডের রিজার্ভ ফরেস্টের জমি কুম্ভমেলার প্রস্তুতির জন্য ন মাসের জন্য মেলাকমিটিকে দেওয়ার জন্য চেষ্টা চলছে। আইন কানুনের পরোয়া না করেই। সেই রাজাজী রিজার্ভ ফরেস্ট যেখানে গত কুড়ি বছরে বাঘের সংখ্যা সত্তর থেকে এমনিতেই দুই হয়ে গেছে। রাস্তা আর রেললাইনের দৌলতে হাতিদের অবস্থাও সঙ্গিন। তাই প্রতিবাদ উঠছে বটে। এমনিতেই হরিদ্বারের মত ছোট জায়গায় কুড়ি কোটির বেশি জনসমাগম হলে কি যে হতে পারে ভাবতে ভয় হয়। তার উপর জঙ্গলের জমিতে হাত পড়লে তার যে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব, পরিবেশ-প্রকৃতির যে প্রচণ্ড ক্ষতি, গাছপালা-পশুপাখির সঙ্গে সঙ্গে মাটি, জলের যে ক্ষতি, তা কিভাবে সামলানো যাবে?
প্রসঙ্গতঃ ২০১৯ এর প্রয়াগরাজের অর্ধকুম্ভের সময়, মেলা চলাকালীন ফেব্রুয়ারি মাসে গঙ্গার সঙ্গম ঘাটে প্রতি ১০০ মিলিলিটার জলে ১২৫০০০ লক্ষ মলজ কলিফর্ম ব্যাকটিরিয়া মেলে। স্নানের যোগ্য জলে যতটা থাকতে পারে, তার ৫ গুণ। তাছাড়াও মেলার পরে ২০০০ টন কঠিন বর্জ্য রয়ে যায়। সেটা ধীরে ধীরে যমুনার মাধ্যমে এসে গঙ্গায় পড়ছে। পতিতোদ্ধারিনী গঙ্গা পাপ আর বর্জ্য দুটোই সইবেন বৈকি! কিন্তু পরিবেশ নিয়ে ভাবনাকে শাসক, বিশেষত আমাদের দেশে, কবেই বা পরোয়া করেছে। তাই হরিদ্বারে কুম্ভমেলার প্রস্তুতি চলছে জোরকদমে। অবশ্য শুধু তো রাজাজী নয়, সারাদেশেই পরিবেশ বনাম উন্নয়নের যুদ্ধে পরিবেশ পিছু হটছে। এমনকি প্রোটেক্টেড অঞ্চলে যেখানে মানুষের অবাধ যাতায়াতও মানা, সেই সব জায়গাতেও উন্নয়ন পৌঁছে গেছে।
এ সবে এমনিতে চোখ বন্ধ করে রাখাই নিয়ম। মাথাব্যথা তো হয় পরিবেশ নিয়ে যারা কাজ করেন, তাঁদের। আমরা সাধারণ মানুষ, আমরা রাস্তা চাই, বিদ্যুৎ চাই, বাড়ি-গাড়ী-গ্যাজেট চাই, বিলাস চাই, স—ব চাই, আরও আরও চাই। ওই খুব মাঝে সাঝে, আম্ফানের হাত থেকে প্রায় দৈবী-কৃপায় বেঁচে গেলে, সেই সব ক্ষণমুহূর্তে ভাবি, ভাগ্যিস সুন্দরবন ছিল। নাহলে “এক্সোটিক ট্রাভেল ডেসটিনেশন” ছাড়া সাধারণত প্রকৃতি নিয়ে আমাদের মাথা ব্যথা নেই।
তবে কিনা গত দুমাসেরও বেশি লকডাউন আমাদের জীবনের গতিতে একটু লাগাম টেনে ধরেছে। একদিকে এতদিনের বাধ্যতামুলক ঘর-বন্দীজীবন, থেমে-থাকা অর্থনীতির নীচের দিকে ছুট আর অন্য দিকে তুমুলভাবে উপর দিকে উঠতে থাকা করোনা-আক্রান্তের গ্রাফ – দুয়ের চাপে পড়ে জুন মাসের লকডাউন থেকে আনলক পর্ব নিয়ে কেমন একটা গুলিয়ে-যাওয়া অনুভূতি হচ্ছে অনেকেরই। কেমন হবে আগামী দিনগুলো? এদিকে খবর আসছে যে জাপানের হক্কাইডোতে প্রথম দফার লকডাউন তোলার এক মাসের মধ্যে আবার লকডাঊন জারী করতে হয়েছে। সব মিলিয়ে অবস্থাটা তেমন সুবিধার না। সামনেটা বড্ড অস্বচ্ছ, ঘোলাটে দেখাচ্ছে।
আগামীদিনের পৃথিবীটা ঠিক কেমন হবে বা হওয়া উচিত? আমরা কি যেমন চলছিলাম, ঠিক তেমনই চলতে থাকব? নাকি এই বিশ্বব্যাপী ধাক্কার থেকে কিছু শিক্ষা নিয়ে একটু নিজেদের পাল্টানোর চেষ্টা করব? ইতিমধ্যেই অনেক দেশেই সরকার ভেঙ্গে-পড়া অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য বিভিন্ন প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। আমাদের দেশের ক্ষেত্রে অন্তত যে কোভিদ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে প্রচলিত পথেই হাঁটা হয়েছে। সেই পথই কি শ্রেয়?
বিশ্বজুড়ে একটা অন্য স্বর শোনা যাচ্ছে। সারা বিশ্বের স্বাস্থ্যকর্মীরা জি-২০ দেশের রাষ্ট্রনায়কদের কাছে “স্বাস্থ্যকর আরোগ্যের” দাবী জানিয়ে চিঠি লিখেছেন। প্রায় একই সুরে কথা বলেছে WHO. চেতাবনি দিয়েছে যে এই সুযোগ। একটা প্রেসক্রিপশনও দিয়েছে, কিভাবে একটা সুস্থ, সবুজ আরো ভালো বিশ্ব গড়ে তোলার। কি আছে সেই প্রেসক্রিপশনে? আর আমরা ভারতীয়রাই বা সেই প্রেসক্রিপশনে বলা পয়েন্টগুলোর বাবদে কেমন আছি? দেখে নেওয়া যাক।
প্রথমেই দরকার প্রকৃতিকে বাঁচানো। প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের স্বাস্থ্যের যে অঙ্গাঙ্গী যোগ সে কথা অনেকেই বার বার বলেছেন। শুধু করোনা নয়, SARS, NIPA প্রভৃতি সাম্প্রতিক পৃথিবীর অনেকগুলো মারীর সঙ্গেই কিন্তু জঙ্গলধ্বংস এবং প্রাণীদের বসবাসের জায়গা হারিয়ে যাওয়ার সমস্যা সরাসরি যুক্ত। আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভারতের জনঘনত্ব এবং অন্যান্য প্রাণীদের সঙ্গে অনেক বেশি কাছাকাছি থাকার দরুণ ভারতে অন্যান্য প্রাণীদের দেহে থাকা ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ফাঙ্গাস বা প্যারাসাইটের থেকে অসুখ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা খুবই বেশি। বিজ্ঞানীরা বলেন, প্রতি দশটা সংক্রমক ব্যাধীর মধ্যে ছটাই এই প্রাণী থেকে মানুষের দেহে চলে আসা অসুখ বা zoonotic disease. আর ভবিষ্যতেও নতুন যেসব অসুখ আসবে তারও ৭৫%ই নাকি এই রকম অসুখই হবে। আর করোনাকে যারা চৈনিক অসুখ ভেবে নিশ্চিন্তে আছেন, তাঁদের মনে রাখা দরকার, ভারতও কিন্তু পৃথিবীকে নিপা ভাইরাস বা এঁটুলির মাধ্যমে ছড়ানো কেএফডি (Kyasanur Forest disease) উপহার দিয়েছে। তাই যতই আমরা রাস্তা, জঙ্গল ইত্যাদির জন্য প্রকৃতি ধ্বংস করব, ততই করোনাতুল্য অসুখের সম্ভাবনা বাড়বে। অথচ আমরা অর্থনৈতিক বৃদ্ধির প্রতি এমনই মনোযোগী, প্রকৃতি পাত্তা পায় না আমাদের কাছে।
আমরা ইতিমধ্যেই আবহাওয়ার যথেষ্ট ক্ষতি করেছি, তাকে আরও বেশি ক্ষতির থেকে বাঁচানোও অত্যন্ত জরুরী। বিশেষ করে বায়ুদূষণ কমাতেই হবে – পৃথিবীর প্রতি ৮ টি মৃত্যুর ১টি হয় দূষিত বায়ুর কারণে। দূষণের কারণে বিভিন্ন অসুখের প্রকোপ বাড়ার কথা তো ছেড়েই দিলাম। করোনা ভাইরাসের আক্রমণে আমরা দেখেছি কিভাবে অন্য অসুখ থাকলে ভাইরাসের আক্রমণ আরও মারাত্মক হয়। বায়ুদূষণে ভারত পৃথিবীর সব থেকে খারাপ দশটি দেশের মধ্যে একটি। ভারতে বাতাসের মান মাপতে বিভিন্ন ভাসমান কণা ও গ্যাসের যা সব গ্রহণযোগ্য মান ধরা হয়, তা এমনিতেই WHO র বলা মাত্রার থেকে অনেক খারাপ। আমরা অবশ্য সেই ভারতীয় মানেও পৌঁছাতে পারি না। ভারতে বায়ুদূষণের একাধিক কারণ। রোজকার রান্নার জ্বালানী থেকে ঘরের মধ্যে যে বায়ুদূষণ হয়, তা কমানোর জন্য কেন্দ্রীয় স্তরে উজ্জ্বলা প্রকল্প চালু হয়েছিল। এলপিজির ব্যবহার বাড়াতে। অথচ দেখা গেছে বাড়িতে এলপিজি কানেকশন থাকা সত্ত্বেও ৩৫% লোক আবার রান্নার ট্র্যাডিশনাল জ্বালানীতে ফিরে গেছেন। মূল কারণ দামের ফারাক। যানবাহনের থেকে দূষণ বা বর্জ্য পোড়ানর থেকে দূষণ কমানোর জন্য কিছু কিছু চেষ্টা চোখে পড়ে। প্রয়োজনের তুলনায় নেহাতই কম। আর ইন্ডাস্ট্রিয়াল দূষণ নিয়ে কথা বলাই বৃথা। আমাদের দেশের কেন্দ্রীয় পরিবেশ কন্ট্রোল বোর্ড দেশের ১০০টি শিল্পাঞ্চলের অর্ধেকের বেশিকেই বায়ুদূষণের জন্য দায়ী করেছেন। দূষণ কমানোর জন্য কাজ করতেও বলা হয়েছে। কাজের কাজ কি হল? আমাদের পরিবেশমন্ত্রকের পরিবেশবিমুখীনতা দেখলে সন্দেহ হয় আদৌ কিছু হবে কিনা! সব মিলিয়ে পরিস্থিতি বিশেষ সুবিধার নয়। ইতিমধ্যে WHO যে কোন রকম ফসিল-ফুয়েলের উপর সরকারী সাবসিডি তুলে দেওয়ার পক্ষেও জোর সওয়াল করেছেন। বলেছেন, ফসিল-ফুয়েলজাত শক্তির থেকে পুর্নবীকরণযোগ্য শক্তির দিকে যাওয়া আশু কর্তব্য। আমাদের দেশে এখন মোট উৎপাদিত শক্তির ২৩% (৮৫.৯জিগাওয়াট) পুর্নবীকরণযোগ্য সুত্র থেকে আসে। এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন ভারতের শক্তির চাহিদা কমবে না, ফলে ২০৫০ এও ভারতের ৫০% শক্তি আসবে ফসিল-ফুয়েল থেকে। তাহলে আমাদের দেশের মানুষ কি কোনদিনই বিশুদ্ধ বাতাসে শ্বাস নিতে পারবে?
শুধু প্রকৃতিকে বাঁচানোই যথেষ্ট নয়, সবার কাছে জীবানুমুক্ত জল এবং বর্জ্যনিষ্কাশনের সুবিধা পৌঁছে দিতে হবে। নাহলে একবার রোগের আক্রমণ হলে, হু হু করে ছড়িয়ে পড়া ঠেকানো যাবে না। আমাদের দেশের অবস্থাটা কি? নভেম্বর ২০১৯ এ প্রকাশিত NSO র তথ্য অনুসারে আমাদের দেশের ৪৪% লোক পাইপের পরিশোধিত জল পান। বাকীদের ভরসা হ্যান্ডপাম্প (৩০.৫%), টিউবওয়েল (১০.৭%), বোতলের জল (৬.৮%) কুয়ো (৬.২%) ইত্যাদি। আর সারা বছর পর্যাপ্ত জল পান ৮৮.৭%। আর সেই একই রিপোর্টে বলছে দেশের ২০% লোক কোনরকম শৌচালয়ের এর সুবিধা পায় না। মনে রাখতে হবে ভারতের ঘরহীন মানুষদের কথা, ২০১১ র সেন্সাসে যাঁদের সংখ্যাটা ছিল ১৮ লাখের কাছে। এতদিনে আরও অনেকটাই বাড়ার কথা। এঁরা কিন্তু গ্রামেও আছেন, শহরেও। মাথার উপর ছাদ না থাকলে বোধহয় জল, শৌচালয় কিছুরই কোন মানে থাকে না। স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য প্রতিটি মানুষের পুষ্টিকর স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যও দরকার। সেই উদ্দেশ্যে তৈরি “ফল, শাকসবজি, ডাল/বীন, বাদাম আর গোটা শস্য ” সমৃদ্ধ খাদ্য তালিকা দেখি আর আমাদের দেশের রেশনে পাওয়া খাদ্যের তালিকা দেখি। যারা রেশনের ভরসায় দিন কাটান, ধরেও যদি নিই যে রেশনের জিনিসপত্র একদম ঠিকমত পাওয়া যায়, তাঁরাও কিন্তু চাল, গম আর কিছু ক্ষেত্রে চিনি ছাড়া আর কিছুই পান না। শুধু রেশনের ভরসায় থাকলে পুষ্টি বিশবাঁও জলে। এমনিতেই গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স অনুযায়ী ভারতের স্কোর (৩০.৩) বোঝায় যে ভারতের মানুষের পুষ্টির অভাব খুবই সিরিয়াস স্তরে। বিশেষত অন্য সব প্যারামিটারে ক্রমান্বয়ে উন্নতি করলেও পাঁচ বছরের নীচের বাচ্চাদের উচ্চতার তুলনায় ওজন কম হওয়ার পরিসংখ্যান (২০১৯ এ ২০%) গত নয় বছরে বেশ খানিকটা বেড়েছে। কি ভাবে মেটান যাবে এ ঘাটতি?
নাগরিক সভ্যতায় শহরগুলোতেই সব থেকে বেশি লোক, হিসেব বলছে ২০৫০ সালে পৃথিবীর ৭০% লোকই শহরে থাকবে - তাই ভবিষ্যতে আমাদের শহরগুলোকে আরও পরিবেশবান্ধব ও স্বাস্থ্যকর করার প্রয়োজন। গ্রামের থেকে মানুষ যখন শহরের দিকে ছুটেছে তখন তার লক্ষ্য ছিল আরও উন্নততর জীবন – আরও বেশি সুযোগ, আরও বেশি অর্থ, জীবনযাপনের মাপ বাড়ানো – তাই যদি হয় তাহলে সেখানে শুধু শরীর-মনের স্বাস্থ্য অবহেলিত হবে কেন? আমাদের ভালো-থাকাটা কমে যাবে কেন? শহরের প্ল্যানিং তো এমন হওয়া দরকার যাতে সে মানুষের ভালো থাকাকে আর একটু বাড়াতে সাহায্য করে।
করোনা-উত্তরকালে তাই একমুখী হয়ে বাকী সব কিছু ভুলে জিডিপি বাড়ানোর সাধনার চেয়ে দরকার জিডিপির বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মানুষের ভালো থাকার দিকে আর পরিবেশকে বাঁচানোর দিকে নজর রাখা। মার্কেটিং জগতের গুরু ফিলিপ কোটলারও এই আগামী পৃথিবীতে ক্রেতাচরিত্রের কিছু বদল ঘটার ভবিষ্যতবাণী করেছেন। তাঁর মতে, মানুষের মধ্যে ভোগবাদ বিরোধিতা ধীরে হলেও বাড়ছে - ফলে ক্যাপিটালিজমের চরিত্রে কিছুটা বদল আসবে - গণতন্ত্র আর সামাজিক ন্যায়ের ভিত্তিতে নিজেকে শুধরে নিয়ে সবাইকে জড়িয়ে বাঁচতে হবে।
আর এখানেই আসে মোট জাতীয় আনন্দের বা গ্রস ন্যাশনাল হ্যাপিনেসের মত ধারণা। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভুটানে এর জন্ম। এখন সেটি ছড়িয়ে পড়েছে গোটা পৃথিবীতে। গ্রস ন্যাশনাল হ্যাপিনেস মাপা হয় ছটি দিক দিয়ে –
• জিডিপি পার ক্যাপিটা
• সামাজিক সহায়তা (বিপদে পড়লে যখন প্রয়োজন আপনার বন্ধু / স্বজনেরা সাহায্য করবে কি?) ভারতের র্যাঙ্ক ১৪৫/১৫৩
• জন্মকালীন স্বাস্থ্যকর জীবনের আশা (Healthy life expectancy at birth)
• জীবনে নিজের ইচ্ছেমত বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা (জীবনে কি করবেন সেটা বেছে নেবার যে স্বাধীনতা পেয়েছেন তাতে কি আপনি খুশী?) ভারতের র্যাঙ্ক ৩৭/১৫৩
• উদারতা (গত এক মাসে কি কোন সংস্থাকে টাকা দান করেছেন?) ভারতের র্যাঙ্ক ৪৭/১৫৩
• দুর্নীতির ধারণা (সরকার এবং বাণিজ্যস্তরে দুর্নীতি কি ছড়িয়ে পড়েছে?) ভারতের র্যাঙ্ক ৮২/১৫৩
যে সমাজে পারস্পরিক বন্ধন, বিশ্বাস এবং ভরসা বেশি, প্রতিবেশী ও সরকার দুয়ের প্রতিই, সেখানে বিপর্যয় প্রতিরোধের ক্ষমতাও বেশি। দুঃখের বিষয় এই ইনডেক্স অনুযায়ী আমরা ক্রমশই নীচের দিকে গড়াতে গড়াতে শেষ দশে পৌঁছে গেছি (১৫৩ টি দেশের মধ্যে ১৪৪ তম স্থান) । ঘুরে দাঁড়াতে হলে আমাদের ব্যক্তিগত স্তরে যেমন আরেকটু ভালো হওয়ার চেষ্টা করতে হবে তেমনই সামগ্রিকভাবেও কিছু বদল প্রয়োজন, সামুদিক এবং সরকারী দুই ক্ষেত্রেই। তবে সবার আগে বোঝা প্রয়োজন যে আমার প্রতিবেশি খারাপ থাকলে আমি ভালো থাকতে পারি না – তাই আর কিছু না হোক নিজের স্বার্থেও আমাকে পাশের লোকটাকে ভালো রাখতে হবে। নিজেরা বুঝলে তবে না সামাজিক বদল আনা যায়। বা সরকারী বদল ঘটাতে বাধ্য করা যায়! অবশ্য আমাদের সরকার (এবং এক দল দেশের সাধারণ মানুষও) যে কোন মূল্যে ২.৯৪ ট্রিলিয়ন থেকে ২০২৪-২৫ সালের মধ্যে ৫ ট্রিলিয়ন জিডিপিতে পৌঁছানর নেশায় বিভোর – তাদের ঘুম কি আদৌ ভাঙবে?
আপনার লেখাটি আইডিয়ালিস্টিক দৃষ্টিভঙ্গী থেকে চমৎকার এক লেখা। পুরোটা মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। দুটি বিষয়ে মতামত দিতে চাই: ১. ভারত-বাংলাদেশের মতো দেশে প্রণোদনা প্যাকেজের ক’ভাগ দরিদ্র মানুষ পাবে সেটা একটা বড়ো প্রশ্ন। ২. আমার মনে হয়, করোনা-উত্তরকালে অর্থবান দেশগুলো তাদের অর্থনীতিকে মেরামত করার জন্য দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সাহায্যের পরিমাণ কমিয়ে দেবে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু বড়ো সাহায্য-সংস্থা প্রথমবারের মতো তাদের স্টাফ ছাঁটাই করেছে। আমফান পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশে বেসরকারি সংস্থাকে (সরকারকে নয়, সরকার সাহায্য চাইও নি) কাঙ্ক্ষিত সাহায্য দেয়নি। পরিবেশ-প্রতিবেশ উন্নয়নে কোনো দেশই খুব বেশি কিছু করবে না।
মো. রেজাউল করিম ভারতে এখন অন্তত দরিদ্র মানুষের কথা ভাবাটা ফ্যশনসম্মত নয়। আর পরিবেশও না। অগত্যা।
সবার অবগতির জন্য জানাই, এই লেখাতে একটা ছোট তথ্যগত ত্রুটি আছে। বলা আছে নিপা ভাইরাস ভারত থেকে ছড়িয়েছে, সেটা ঠিক না। এই ভাইরাসের প্রথম আউটব্রেক হয় মালয়েশিয়ায়। পাই কে ধন্যবাদ জানাই ভুলটা ধরিয়ে দেওয়ার জন্য।
স্বাতী দি পড়লাম। উজালা প্রকল্প খুব কাছ থেকেদেখছি। এদিকে বস্তিতে সবাইকে এসব সুযোগ দেওয়াহয়। রিসেন্ট এদের এর জন্য একাউন্টে টাকা আসে। টাকা নেবার পাবার মজা সবাই বোঝে কিন্তু ব্যবহারকরছে সেই উনুন। আর কি না কি পোড়ায় এখন কয়লা তেমন না পেয়ে। বায়ু দূষণ ব্যাপারটা সত্যি মারাত্মক। এসির ব্যবহা, এত গাড়ি ইত্যাদিও আছে। কিছুই শোধরাবে না।সব নিয়ে চলতে হবে।
যা খুশি তা করব। এটাই আমাদের জাতীয় অভ্যাস । আর সবজান্তা রাজনীতিকরা আছে তারা যা মনে করবে তাই করবে। আপনারা কষ্ট করে লিখবেন আর আমরা বাহবা দেব। কিন্তু থাকবে হতাশা । এত চারিদিকে সাবধান বাণী কিন্ত মাস্ক পরা ছেড়ে দিয়েছে। কি বাহাদুরি।