এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • নোটবাতিলের আসল উদ্দেশ্য কী ছিল ?

    সৌভিক ঘোষাল লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | ২১৬২ বার পঠিত
  • নোট বাতিল নিয়ে একপ্রস্থ তর্ক বিতর্ক, যুক্তির চাপান উতোর শুরু হয়েছিল নোট বাতিল প্রক্রিয়াটি ঘোষণার পর থেকেই। মানুষের হয়রানি, অনেক মানুষের মৃত্যু, অর্থনীতির ওপর এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে নানা চেতাবনী স্বত্ত্বেও শাসক দল ও তার সমর্থকেরা সেই সময় জোর গলায় দাবি করছিলেন এই সাময়িক দুর্ভোগ আমাদের মেনে নিতেই হবে বৃহত্তর স্বার্থের জন্য। তাদের বক্তব্য ছিল ভারতের কালো টাকার অর্থনীতিকে ধ্বংস করার জন্য এই ইকনমিক সার্জিক্যাল স্ট্রাইক অতি দরকারি এক পদক্ষেপ। ভারতের অর্থনীতিকে সাদা করার জন্য নেওয়া এই পদক্ষেপে দুর্নীতিবাজদের কাছে থাকা সব জাল নোট ধরা পড়ে যাবে, আটকে যাবে কর না দিয়ে বাড়িতে সাজিয়ে রাখা নোটের পাহাড়ও।

    অবশেষে রিজার্ভ ব্যাঙ্কই কালো টাকা উদ্ধারের গল্পটাকে ফাঁসিয়ে দিল

    রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ তাদের যাবতীয় হিসাবনিকাশের পর জানিয়ে দিল যে ১৫.৪৪ লক্ষ কোটি টাকার নোট বাতিল করা হয়েছিল, তার ৯৯ শতাংশ রিজার্ভ ব্যাঙ্কে আবার ফিরে এসেছে, যার পরিমাণ ১৫.২৮ লক্ষ কোটি টাকা। ফেরেনি মাত্র ১৬ লক্ষ টাকা বা ১ শতাংশ। এই ঘোষণার পর আমরা সবাই জেনে গেছি যে ভারতীয় অর্থনীতির যে টাকাটা নোটে সার্কুলেটেড হত, তার প্রায় সবটাই ফিরে এসেছে পুরনো পাঁচশো হাজার টাকার নোট বাতিলের পর। কালো টাকা বা জাল টাকা তেমন কিছুই ধরা পড়ে নি। কেন এই ঘটনাটা ঘটল তা আমাদের যেমন বুঝে নিতে হবে, তেমনি বুঝে নিতে হবে নোট বাতিলের আসল উদ্দেশ্যটা তাহলে কী ছিল! কেন মোদি এত ঢক্কানিনাদ করে এত বড় একটা প্রক্রিয়া আদৌ নামিয়েছিলেন? পুরোটাই মিস ক্যালকুলেশন নাকী না প্রচার করা কোনও গোপন অভিসন্ধি ? কোনও হিডেন অ্যাজেন্ডা যাকে চাপা দিয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও কালো টাকা বাতিলের জনমোহিনী গল্প দেশবাসীকে শোনানো হয়েছিল ?

    কালো টাকা বা সম্পদ আসলে কীভাবে থাকে ?

    প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিমুদ্রাকরণের নীতি নেবার পেছনে দুটি কারণের কথা উল্লেখ করেছিলেন। এক – সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর অর্থের যোগান বন্ধ করা এবং জাল টাকা উদ্ধার করা। দুই – কালো টাকা উদ্ধার করা। এই কালো টাকার পরিমাণ অত্যন্ত বেড়ে গেছে এবং ভারতের দারিদ্র ও অন্যান্য আর্থিক সঙ্কটের মূল কারণ। কিন্তু জাল টাকার পরিমাণ ভারতে খুব বেশি এরকম তথ্য নেই। দশ লক্ষ পিছু তা চারশোর বেশি নয় এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার তথ্যমতো সামগ্রিক ভাবে তা ৪০০ কোটি টাকার বেশি নয়। যদি আমরা মাথায় রাখি ১৭.৫ লক্ষ কোটি টাকার নোট বাজারে ঘোরাফেরা করে তবে শতাংশমাত্রার নিরিখে একে খুবই সামান্য মনে হবে। সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলি টাকার প্রয়োজনে নোট জাল করে ঠিকই, কিন্তু রাষ্ট্রের ভেতরকার কিছু লোকের সাহায্য ব্যতীত এটা তারা করতে পারে না। এই অসাধু যোগাযোগ বন্ধ না করে বিমুদ্রাকরণের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। কারণ নতুন নোট ছাপার পরেও একইভাবে তা জাল হতে পারে।

    কালো টাকা বা কালো সম্পত্তি কি নেই ? অবশ্যই আছে। বিপুল পরিমাণেই আছে। কিন্তু মোদী যেভাবে বোঝাতে চেয়েছিলেন - সিনেমায় যেভাবে দেখানো হয় - কালো টাকা আলমারীতে বা সিন্দুকে পাঁজা করে করে ভরে রাখা থাকে, তেমনটা আদৌ নয়। কালো টাকা বা কালো সম্পদের বিষয়টি, অর্থাৎ যে সম্পদের জন্য সরকারকে কর দেওয়া হয় নি, তা কীভাবে থাকে তা একটু বুঝে নেওয়া যাক।

    যে কোনও আয়ের একাংশকে যখন আমরা সঞ্চয় করি, তখন সেই সঞ্চয়ের মাধ্যমে থাকে জমি বাড়ি ফ্ল্যাট, সোনা, শেয়ারে বিনিয়োগ ইত্যাদি। এর পাশাপাশি কিছুটা থাকে নোট হিসেবে। অর্থাৎ গোটা সঞ্চয়ের একটা অংশমাত্র নোটে থাকে। ভারতের জিডিপি ১৫০ লক্ষ কোটি টাকার মতো হলে অনুমান এর ৬২ শতাংশ হল কালো অর্থনীতি, যার পরিমাণ হবে ৯৩ লক্ষ কোটি টাকার মতো। এটা জমতে থাকে এবং সম্পদে পরিণত হয়। কালো সম্পদের পরিমাণ হবে ৩০০ লক্ষ কোটি টাকার মতো। এর মাত্র এক শতাংশ, তিন লক্ষ কোটি টাকার মতো নোটে থাকা সম্ভব।

    এই তিন লক্ষ কোটি টাকার পুরোটাকেও যদি পাকড়াও করা যায়, তাও কালো সম্পদের মাত্র এক শতাংশকে পাকড়াও করা যাবে। বাস্তবে সেটাও সম্ভব নয়। কারণ নোট বাতিলের দিন ভোর রাত অবধি সোনার দোকান খোলা ছিল আর সেখানে ব্যাকডেটে কেনাবেচা হয়েছে। জনধন যোজনায় প্রচুর টাকা ফেলা হয়েছে পরে তুলে নেওয়া হবে বলে। ক্ষমতাবানেরা সাময়িকভাবে বিভিন্ন লোকের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকিয়ে রেখেছে যাতে টাকাটা নষ্ট না হয়। অনেকে কর্মীদের বেশ কয়েক মাসের মাইনে আগাম হিসেবে দিয়ে দিয়েছে। এর ফলে শেষমেষ পঞ্চাশ থেকে সত্তর হাজার কোটি টাকার বেশি কালো টাকা উদ্ধার করা যাবে না বলে অরুণ কুমার সহ অনেক কালো টাকা বিশেষজ্ঞ অর্থনীতিবিদই ডিমানিটাইজেশন প্রক্রিয়া চলাকালীন মত প্রকাশ করেছিলেন। এখন আমরা দেখছি পরিমাণটা তার চেয়েও অনেক কম। যে টাকা ফিরেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কে তার মধ্যে আয়কর ইত্যাদি না দেওয়া টাকা আইনী প্রক্রিয়ায় ও তদন্তের মাধ্যমে বাজেয়াপ্ত করলে হয়ত এই অঙ্কটায় পৌঁছানো যাবে।

    এই প্রসঙ্গে যেটা আবারো নতুন করে বলার, তা হল - এক বছরে খানিকটা কালো টাকা উদ্ধার করে প্রকৃতপক্ষে খুব বেশি লাভও হবে না। কারণ কালো টাকা যে পদ্ধতিতে জন্ম নেয়, সেই পদ্ধতিটা আটকাতে না পারলে কালো টাকা আগের মতোই তৈরি হতে থাকবে নিয়ম করে। ড্রাগের ব্যবসা আটকানো, ক্যাপিটেশন ফি নেওয়া বন্ধ করা, ব্যবসার লাভ ক্ষতির অঙ্কর হিসেবকে কমিয়ে বাড়িয়ে দেখিয়ে ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়া – এগুলো আটকাতে না পারলে কালো টাকার উৎপাদনকে আটকানো যাবে না।

    ডি মানিটাইজেশন ভারতীয় অর্থনীতির ওপর বড় ধাক্কা কেন ?

    ডি মানিটাইজেশনের ঢক্কা নিনাদ মানুষের জন্য প্রচুর দুর্ভোগ ডেকে এনেও কালো টাকার সমস্যা সমাধানেই যে শুধু ব্যর্থ হল তাই নয়, এর মধ্যে দিয়ে অর্থনীতির ওপর নেমে এলো আরো নানা আঘাত এবং সেগুলোর অনেকগুলিই বেশ দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা তৈরি করার মতো।

    ভারতে কালো টাকা এবং সাদা টাকা অনেকটাই হাত ধরাধরি করে চলে। রিয়েল এস্টেটের সম্পত্তি (জমি বাড়ি ফ্ল্যাট ইত্যাদি) কেনাবেচা করলে একই সাথে সাদা টাকা এবং কালো টাকা তৈরি হয়। এই নীতি তাই কালো টাকার পাশাপাশি সাদা টাকার অর্থনীতিকেও ভীষণভাবে আঘাত করেছে। বাজারে কোনও জিনিসের চাহিদা ভীষণভাবে কমে গেছে। মলের বিক্রিবাটা যেমন কমেছে, তেমনি কমেছে বেলুন বিক্রেতার বিক্রি। ছোট ছোট দোকানিদের জিনিস বিক্রিতে সমস্যা হয়েছে। বড় দোকানিরাও মুশকিলে পড়েছেন। অর্থনীতির সঞ্চালনই সমস্যার মুখে এসে দাঁড়িয়েছে।

    এই প্রক্রিয়ার ফলে আয়ের সঞ্চালনের গতি কমে যায়। এর ফলে কমে বাজারে জিনিসপত্রের চাহিদা। চাহিদা কমায় উৎপাদন কমে। উৎপাদন কমায় কর্মসংস্থান হ্রাস পায় এবং লগ্নীও হ্রাস পায়। লগ্নী কমলে তার প্রতিক্রিয়া হয় দীর্ঘমেয়াদী।

    গোটা প্রক্রিয়ায় ফলে বিরাট সংখ্যক মানুষ অর্থনৈতিক পঙ্গুত্বের শিকার হলেন। গ্রামীণ কৃষকেরা বীজ সার কিনতে পারেন নি। মহাজনের কাছ থেকে টাকা ধারও পান নি। এর ফলে কৃষি উৎপাদন আগামী মরশুমে সঙ্কটের মুখোমুখি হবে।

    গরীব মানুষ নোটবন্দি শুরু হবার পরেই বিরাট দুর্ভোগ এর মুখোমুখি হয়েছেন। মধ্যবিত্তরা, যাদের কাছে ডেবিট কার্ড ক্রেডিট কার্ড আছে, তারা তুলনায় কম সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন। কিন্তু যেই উৎপাদন কমতে শুরু করবে তাদের চাকরি সঙ্কটে পড়বে।

    কালো টাকার মোকাবিলা করার আসল রাস্তা কোনগুলো ?

    কালো টাকার সমস্যা সমাধানের জন্য অন্যান্য অনেক রাস্তা নেওয়ার ছিল। এই কালো টাকা সত্তর বছর ধরে তৈরি হয়ে আসছে এবং এক মুহূর্তে কোনও এক জাদুদণ্ড বুলিয়ে তা নির্মূল করা সম্ভব নয়। গোটা ব্যবস্থাকে দায়বদ্ধ করে তোলার জন্য লোকপাল নিয়োগ করা সম্ভব। ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, আমলা, পুলিশ, বিচার ব্যবস্থা – এরা দায়বদ্ধ নয়। এদের দায়বদ্ধ করে তোলার মধ্যে দিয়েই কালো টাকাকে ধ্বংস করা সম্ভব।

    রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের ক্ষেত্রে আর টি আই কে প্রসারিত করা দরকার। কিন্তু তারা তাতে রাজী নয়। প্রয়োজন হুইসল ব্লোয়ার আইনকে দৃঢ় করা। যারা দুর্নীতি ফাঁস করে দেবে, দেয় – সেই হুইসল ব্লোয়ারদের পক্ষে আইনকে শক্ত করার পরিবর্তে তাকে আরো দুর্বল করা হচ্ছে। অথচ আদর্শ আবাসন কেলেঙ্কারি বা ব্যাপম কেলেঙ্কারির কথা হুইসল ব্লোয়ারদের মাধ্যমেই জানা গেছে। হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা লেনদেন এর খবর গোয়েন্দাদের কাছে থাকে। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ করা হয় না।

    ১৯৯৭ সালে ষষ্ঠবারের মতো এককালীন ভলিন্টিয়ারী ডিসক্লোসার স্কিম আনা হয়েছিল। সেই সময়ে সরকার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে বলতে বাধ্য হয়েছিল এরকম স্কিম আর কখনো আনা হবে না। কারণ এতে সৎ আয়করদাতারা বঞ্চিত হন। ১৯৯৭ সালের ভলিন্টিয়ারি ডিসক্লোসার স্কিম সম্পর্কে ক্যাগ রিপোর্ট বলেছিল অনেকে অভ্যাসগতভাবে কর ফাঁকি দেন। আগে পাঁচবার যারা এই স্কিমের সুবিধে নিয়েছিলেন, তারা ষষ্ঠবারেও নিয়েছেন। তাঁরা অপেক্ষায় থাকেন আবার কবে এই স্কিম আসবে, এবং কর ফাঁকি দিয়ে চলেন। সৎ করদাতারা বঞ্চিত হন। সুপ্রিম কোর্টের হলফনামার জন্য ১৯৯৭ এর পরে আর ভলান্টিয়ারি ডিসক্লোসার স্কিম সরকার আনতে পারে নি। কিন্তু সাম্প্রতিক ইনকাম ডিসক্লোসার স্কিম ভিন্ন নামে একই ধরনের একটা ব্যবস্থা।

    মরিসাস পথটিও অনেকটা ভলান্টিয়ারি ডিসক্লোসার স্কিম এর মতো। টাকাকে প্রথমে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর মরিসাস ঘুরে টাকা ভারতে ফেরে এবং তাকে আর কর দিতে হয় না। এভাবেই ব্যবস্থাটার মধ্যেই থেকে যাচ্ছে কালো টাকা ও কালো সম্পদ তৈরির পথ। আমাদের অনেক ভালো ভালো আইন আছে। কিন্তু আমরা সেগুলোকে প্রয়োগ করি না। সেগুলো প্রয়োগ করার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা দরকার।

    কালো টাকা উদ্ধারের জন্য যা যা করা দরকার তা তো করা হয় না। কিন্তু যেটা করে কালো টাকা উদ্ধার করা সম্ভব নয়, সেটাই করা হল কেন ? কী ছিল এর পেছনে আসল উদ্দেশ্য ? সেই আলোচনা ক্রমশ ঘনীভূত হয়ে উঠছে।

    ডিমানিটাইজেশন এর আসল উদ্দেশ্য বা হিডেন অ্যাজেন্ডা কী ছিল?

    কালো টাকা কোথায় কীভাবে থাকে তা কি মোদি জানতেন না?  জেনেশুনে আম আদমির ওপর দুর্ভোগ নামিয়ে আনা এই পদক্ষেপ কেন, কাদের লাভের স্বার্থে -এই প্রশ্নের উত্তরটা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।

    দেখতে হবে ডিমানিটাইজেশন বা বিমুদ্রাকরণের ফলে লাভ কি কারো হয় নি? সবারই ক্ষতি? তা বলা যাবে না। যাদের লাভ হল তাদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর নামে ভূয়সী প্রশংসা আমরা শুনেছি। তাদের দেওয়া পাতা জোড়া বিজ্ঞাপনে থেকেছে প্রধানমন্ত্রীর ছবি। নোট বাতিলের ফলে প্রাথমিকভাবে সবচেয়ে বেশি লাভ হচ্ছে দেশের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ যাদের হাতে আছে, সেই আম্বানী আদানি মিত্তল জিন্দল ইত্যাদি কর্পোরেট ব্যবসায়ীদের। তাঁরা কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়ে রেখেছেন ব্যাঙ্কগুলো থেকে কিন্তু ফেরৎ দিচ্ছেন না। বিপুল অনাদায়ী ঋণের ভারে ব্যাঙ্কগুলো দেউলিয়া হতে বসেছিল আর তা হলে গোটা দেশের আর্থিক ব্যবস্থাটাই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ত। ব্যাঙ্কগুলোকে বাঁচাতে যারা তাকে ছিবড়ে করে দিচ্ছে, তাদের দিকে আইনি হাত বাড়ালো না সরকার। বাড়াতে পারল না। কেন না তাদের দেওয়া টাকাতেই বিপুল প্রচার করে মোদি সিংহাসনে বসেছেন। তাই শিল্পপতিদের ঋণের ভার ঘুরিয়ে চাপিয়ে দেওয়া হল জনগণের ওপর। জনগণকে ভয় দেখানো হল টাকা বাতিল হয়ে যাবে। কদিনেই ব্যাঙ্কগুলোতে জমা হল সাধারণ মানুষের বিপুল টাকা। ব্যাঙ্কগুলো দেউলিয়া হওয়া থেকে বাঁচল। জমা টাকা এখন ক্যাশলেস এর নামে আর ফিরবে না জনগণের ঘরে। এভাবে শিল্পপতিদের হাত না মুচড়েই কৌশলে কালো টাকা উদ্ধারের গল্প ফেঁদে ব্যাঙ্কগুলোকে বাঁচানোর কাজ হাসিল করতে চাইলেন চতুর মোদি।

    বড় বড় ঋণ খেলাপী শিল্পপতিদের পাশাপাশি লাভ হয়েছে, হতে চলেছে কাদের ? পেটিএম কোম্পানির। শপিং মলগুলোর। বিগ বাজার, মোর, রিলায়েন্স ফ্রেস, স্পেনসার্স এর মতো একচেটিয়া খুচরো ব্যবসার কারবারিদের,যারা খুচরো ব্যবসায়ে ক্রমশ জাঁকিয়ে বসেছে গত কয়েক দশকে আর অধিকার করে নিতে চাইছে দেশের খুচরো ব্যবসার বিশাল বাজারটা,যার সিংহভাগ এখনো ছোট মাঝারি ব্যবসায়ীদের দখলে আছে। লেসক্যাশ ও ক্যাশলেস ট্রানজাকশান এর প্রায় বিকল্পহীন বন্দোবস্তের মধ্যে দিয়ে ছোট ব্যবসায়ীদের হটিয়ে খুচরো ব্যবসার বৃহৎ বাজারে একচেটিয়া ব্যবসায়ীদের জাঁকিয়ে বসার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।

    সরকার পক্ষ থেকেই ক্রমশ প্রকাশ করে দেওয়া হয়েছে ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে তারা ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান। কেনাবেচায় ইলেকট্রনিক কার্ডের ব্যবস্থা,মানি ওয়ালেট এর ব্যবস্থা ইত্যাদির কথা জোরের সাথে বলা হচ্ছে। এর অবশ্যম্ভাবী ফলাফল ব্যবসার ধরণটির পরিবর্তন। হকদোকানদো অসংগঠিত খুচরো ব্যবসা থেকে ক্রমশ সংগঠিতদের একচেটিয়াদের বড় ব্যবসার দিকে সরে যাওয়া। পাড়ার অসংগঠিত ছোট ছোট দোকানের চেহারাটা বদলে শপিং মল, বিগ বাজার, স্পেনসার, রিলায়েন্স ফ্রেস, মেট্রো ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারির আউটলেট এর রমরমা হওয়া। এর সামাজিক অর্থনৈতিক রাজনৈতিক প্রভাব স্বাভাবিকভাবেই হবে ব্যাপক। কারণ সাড়ে চারশো বিলিয়ন ডলার (প্রায় ২৫ লক্ষ কোটি টাকা) মূল্যের ভারতীয় খুচরো ব্যবসা দেশের জিডিপির প্রায় ১৪ শতাংশ,যা চার কোটির বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের উপায়। বস্তুতপক্ষে কৃষির পরে ভারতে এটিই প্রধান জীবিকার ক্ষেত্র। খুচরো ব্যবসা কৃষির পরে ভারতের সবচেয়ে বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের জায়গা। ভারতীয় সমাজে এই পেশা অনেক ক্ষেত্রেই বেঁচে থাকার শেষতম উপায়। বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানার মজুর, বেকার যুবক, বৃদ্ধিহার হারিয়ে ফেলা কৃষিক্ষেত্রের বাইরে থাকা উদবৃত্ত গ্রামীণ মানুষ সপরিবার যে খুচরো ব্যবসাকে অবলম্বন করে টিঁকে থাকেন তাকে সামান্যতম আঘাত করার অর্থ দেশে অনাহার মৃত্যুমিছিল ও সামাজিক নৈরাজ্যের পথ খুলে দেওয়া। একদিকে ডিমানিটাইজেশন, অন্যদিকে জিএসটি কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা হিসেবে ভারতের অর্থনীতির এই জায়গাটিকে পাকাপাকিভাবে বদলে দিতে চাইছে। এখানে আমরা ডিমানিটাইজেশন নিয়েই আলোচনা করলাম, সামগ্রিক ছবিটা বুঝতে এর সাথেই মিলিয়ে পড়তে হবে “জি এস টির নীল নক্সা” সংক্রান্ত আলোচনা।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | ২১৬২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সম্বুদ্ধ বিশী | ***:*** | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৫:৪১82068
  • দ্বর্থহীন সাবলীল ভাষায় লেখা, জার্গন মুক্ত। প্রচুর শেয়ার হওয়া দরকার। সাধুবাদ থাকল।
  • অনামী | ***:*** | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৯:১৭82069
  • দারুন লেখা।দুর্ভাগ্যের বিষয়, এখনো কিছু মানুষ অন্ধভাবে, চোখ বুঝে নোটেবাতিলকে সমর্থন করে চলেছেন।
  • পৃথা | ***:*** | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৫:৫৯82070
  • খুব সহজ স্বচ্ছ লেখা। বিষয়টি বুঝতে সাহায্য করল। বহু মানুষ কিন্তু এখনও নোটবন্দীর গুনগান ই করছে।
  • মানব | ***:*** | ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১২:৫০82072
  • সত্যি বলতে কী, বাংলাদেশে বসে পাশের দেশের এই ঘটনাটা বোঝা আমার জন্য প্রথম প্রথম, মানে গত শীতে, খুবই কঠিন ছিলো। এরপর ট্র্যাজেডিটা বুঝতে বুঝতে আরো কিছুদিন লেগে গেলো, প্রথমে ত জটিলতাগুলো বিশ্বাসও করতে পারি নাই। পুরা ঘটনাটা দূর থেকে শুরুতে মনে হচ্ছিলো মঙ্গলগ্রহের কারবার, এরপর প্রহসন-মতন, আর এরপর আরেকটু চোখ কান খুলে দেখি, এই রে, এইটা ত ইকনমিক হরর মুভি।

    পেটুয়া কর্পোরেটদের সাথে এই অভূতপূর্ব ঘটনাটির যোগসাজশ তুলে ধরার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আমাকে এই ঘটনা নিয়ে আগ্রহী হতে দেখে লোকজন দুইটা কথা বলেছিলো, এক, এইটা ত বাইরের দেশের ব্যাপার, আমাদের কী এসে যায়, দুই, এই ঘটনা ত শেষ, এখনো আগ্রহ কেনো। কিন্তু কথা হচ্ছে যে এই ঘটনাটা পর্দ্দার আড়ালে কর্পোরেট আর রাষ্ট্রের আঁতাতের ব্যাপার, মানুষের জীবনের মূল্য দুই পয়সা থেকে কমিয়ে দেড় পয়সা বানানোর ব্যাপার, এইসব নিওলিবারেল কুচক্রীদের কোনো বর্ডার নাই। আর দ্বিতীয়ত, এই ঘটনার ত শেষ নাই, কেনোনা নিও-দের কোনো দেশকালপাত্র নাই, এরা জানে শুধু উন্নয়নের নামে হুজুগে হুজুগে মানুষের পেটে লাথি চালাইতে।

    সেই প্রেক্ষিতে, এরকম একটা লেখার জন্য আপনার কাছে কৃতজ্ঞতা। লড়াই দীর্ঘজীবী হোক, সেই সাথে আলোচনাও।
  • মানব | ***:*** | ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১২:৫০82071
  • সত্যি বলতে কী, বাংলাদেশে বসে পাশের দেশের এই ঘটনাটা বোঝা আমার জন্য প্রথম প্রথম, মানে গত শীতে, খুবই কঠিন ছিলো। এরপর ট্র্যাজেডিটা বুঝতে বুঝতে আরো কিছুদিন লেগে গেলো, প্রথমে ত জটিলতাগুলো বিশ্বাসও করতে পারি নাই। পুরা ঘটনাটা দূর থেকে শুরুতে মনে হচ্ছিলো মঙ্গলগ্রহের কারবার, এরপর প্রহসন-মতন, আর এরপর আরেকটু চোখ কান খুলে দেখি, এই রে, এইটা ত ইকনমিক হরর মুভি।

    পেটুয়া কর্পোরেটদের সাথে এই অভূতপূর্ব ঘটনাটির যোগসাজশ তুলে ধরার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আমাকে এই ঘটনা নিয়ে আগ্রহী হতে দেখে লোকজন দুইটা কথা বলেছিলো, এক, এইটা ত বাইরের দেশের ব্যাপার, আমাদের কী এসে যায়, দুই, এই ঘটনা ত শেষ, এখনো আগ্রহ কেনো। কিন্তু কথা হচ্ছে যে এই ঘটনাটা পর্দ্দার আড়ালে কর্পোরেট আর রাষ্ট্রের আঁতাতের ব্যাপার, মানুষের জীবনের মূল্য দুই পয়সা থেকে কমিয়ে দেড় পয়সা বানানোর ব্যাপার, এইসব নিওলিবারেল কুচক্রীদের কোনো বর্ডার নাই। আর দ্বিতীয়ত, এই ঘটনার ত শেষ নাই, কেনোনা নিও-দের কোনো দেশকালপাত্র নাই, এরা জানে শুধু উন্নয়নের নামে হুজুগে হুজুগে মানুষের পেটে লাথি চালাইতে।

    সেই প্রেক্ষিতে, এরকম একটা লেখার জন্য আপনার কাছে কৃতজ্ঞতা। লড়াই দীর্ঘজীবী হোক, সেই সাথে আলোচনাও।
  • tuhin | ***:*** | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৪৮82073
  • ১: "কেন না তাদের দেওয়া টাকাতেই বিপুল প্রচার করে মোদি সিংহাসনে বসেছেন। তাই শিল্পপতিদের ঋণের ভার ঘুরিয়ে চাপিয়ে দেওয়া হল জনগণের ওপর।" -- এটা খুব খেলো যুক্তি। খুবই খেলো।

    ২: "বড় বড় ঋণ খেলাপী শিল্পপতিদের পাশাপাশি লাভ হয়েছে, হতে চলেছে কাদের ? পেটিএম কোম্পানির। শপিং মলগুলোর। বিগ বাজার, মোর, রিলায়েন্স ফ্রেস, স্পেনসার্স এর মতো একচেটিয়া খুচরো ব্যবসার কারবারিদের,যারা খুচরো ব্যবসায়ে ক্রমশ জাঁকিয়ে বসেছে গত কয়েক দশকে আর অধিকার করে নিতে চাইছে দেশের খুচরো ব্যবসার বিশাল বাজারটা,যার সিংহভাগ এখনো ছোট মাঝারি ব্যবসায়ীদের দখলে আছে। লেসক্যাশ ও ক্যাশলেস ট্রানজাকশান এর প্রায় বিকল্পহীন বন্দোবস্তের মধ্যে দিয়ে ছোট ব্যবসায়ীদের হটিয়ে খুচরো ব্যবসার বৃহৎ বাজারে একচেটিয়া ব্যবসায়ীদের জাঁকিয়ে বসার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।"

    --- আপনি চীনে আসুন, শপিং মলের চেয়ে লোকাল বাজারে গেলে দেখবেন লোক কিলবিল করছে, অনেক রাত অবধি সেসব মার্কেট খোলা। ধরুন সামান্য মাছওলার কাছ থেকে মাছ কিনবেন, হাত দিয়ে দেখুন, দরদাম করুন, তারপর কেনার সিদ্ধান্ত নিলেন, এইবার পেমেন্ট করবেন জাস্ট ক্রেতা আর বিক্রেতা নিজের মোবাইলটা বের করে টাচ করানোর মতন দূরত্বে নিয়ে যাবেন, পেমেন্ট কমপ্লিট। আলিবাবা পেমেন্ট আছে, wechat (হোয়াটস্যাপ এর চাইনিজ ভার্সন, একচুয়ালি হোয়াটস্যাপ এর বাপ্) পেমেন্ট, অক্টপাস পেমেন্ট ইত্যাদি। ক্যাশলেস। মিনি মিনি বাস বাস যেগুলো আমাদের এখানে ওই অটোর (বা অধুনা টোটো) বিকল্প বলতে পারেন সেগুলো তেও পেমেন্ট তাই, কেউ খুচরো দিলে তার কার্ডে সমস্যা হয়েছে কিছু ধরে নেওয়া হয়। একজনই ড্রাইভার কোনো কন্ডাক্টার নেই, লোকে বাসে ওঠে পকেট থেকে কার্ড বা মোবাইল জাস্ট টাচ করে পেমেন্ট কমপ্লিট, পিক পিক আওয়াজ ড্রাইভার এর কানে যায়, ড্রাইভার গাড়ি চলতে শুরু করে আবার। ইউরোপ আমেরিকা তেও তাই, তবে তাদের কথা টানলেই অন্য প্রসঙ্গে চলে যাবেন ভেবে টানিনি।
  • tuhin | ***:*** | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৫৪82075
  • আমার মনে হয়েছে মোদী বা তাঁকে যারা বুদ্ধি দিয়েছেন তারা বুঝতেই পারেননি যে এতো টাকা ব্যাংকগুলোতে ফিরে আসবে, মাত্র ১৬০০০ কোটি টাকা সম্ভবত ফেরেনি, ওনারা ভেবেছিলেন সেটা লক্ষ কোটি টাকা হবে। উনি করাপশন নির্মূল, নিউ ইন্ডিয়া ইত্যাদি উপর নিজের দায়বদ্ধতা দেখতে গিয়ে বেশ কিছু পরীক্ষা মূলক কাজকর্ম করেছেন বা করতে চাইছেন, কিন্তু বাস্তবে এই নিরীক্ষণটা যে যেমন সাফল্য আশা করেছিল সেটা এনে দিতে পারেনি সেটা আজ প্রমাণিত হয়েছে।
  • tuhin | ***:*** | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৫৪82074
  • আমার মনে হয়েছে মোদী বা তাঁকে যারা বুদ্ধি দিয়েছেন তারা বুঝতেই পারেননি যে এতো টাকা ব্যাংকগুলোতে ফিরে আসবে, মাত্র ১৬০০০ কোটি টাকা সম্ভবত ফেরেনি, ওনারা ভেবেছিলেন সেটা লক্ষ কোটি টাকা হবে। উনি করাপশন নির্মূল, নিউ ইন্ডিয়া ইত্যাদি উপর নিজের দায়বদ্ধতা দেখতে গিয়ে বেশ কিছু পরীক্ষা মূলক কাজকর্ম করেছেন বা করতে চাইছেন, কিন্তু বাস্তবে এই নিরীক্ষণটা যে যেমন সাফল্য আশা করেছিল সেটা এনে দিতে পারেনি সেটা আজ প্রমাণিত হয়েছে।
  • lcm | ***:*** | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:১৫82076
  • ভবদুলাল কেশতৈল খুবই ভাল, মাথায় চুল গজাবে, এবং শুধু তাই নয় বেছে বেছে করাপ্টেড কেশ উৎপাটন-ও করে।

    মঙ্গলবার রাতে সরকার-বাহাদুর তাই নির্দেশ দিলেন বুধবার সকাল থেকে সবাই ন্যাড়া হয়ে দুবেলা ভবদুলালের তৈল মাথায় দেবেন। মানুষের মাথায় ঝলমল করবে থাকবে দুর্নীতিমুক্ত কেশরাজি।

    বুধবার ভোররাত থেকে ন্যাড়া হবার জন্য লাইন পড়ল। যথেষ্ট নাপিত না থাকায় জায়্গায় জায়্গায় লাইন লম্বা হতে থাকল। কেউ কেউ দুদিন ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে রইলেন। কেউ কেউ অজ্ঞান হয়ে মারা গেলেন। নাপিতরা ওভারটাইম করতে থাকলেন। একটানা কাজ করার ফলে কয়েকজন নাপিতও মারা গেলেন। এদিকে বাজারে যথেষ্ট ভবদুলাল তৈল-র সাপ্লাই না থাকায় লোকজন ন্যাড়া মাথায় পাগলের মতন দোকান থেকে দোকানে ঘুরতে থাকলেন।

    অবশেষে মাস দুয়েক বাদে ব্যাপারটা স্থিত হল।
    এবং জানা গেল সামান্য ভুল হয়ে গেছে, ভবদুলাল-এর তেলটা আসলে দাদ-হাজা-চুলকানির ওষুধ, তুলোয় করে লাগাতে হয়। যাই হোক, দুর্নীতি তো মুক্ত হল, তুলো ছাড়াই।
  • tuhin | ***:*** | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৫:৪৫82077
  • ^^কিন্তু এর সাথে মূল প্রশ্নটার কি সম্পর্ক ?? "নোটবাতিলের আসল উদ্দেশ্য কী ছিল ?"
    ফারাক্কা বাঁধ- ভারতের গর্ব, একথা বাঁধের গায়ে বড় হোর্ডিঙে লেখা। এবার বহু পন্ডিত দেখালেন দেখো বাপু ফারাক্কা বাঁধ দেওয়াটাও সম্পূর্ণ ভুল হয়েছিল, এতে আদতে কাজের কাজ কিছু হয়নি উল্টে এটা ওটা ক্ষতি হয়েছে।
    এবার একটা আর্টিকেল লেখা হবে : ফারাক্কা বাঁধ দেওয়ার আসল উদ্দেশ্য কি ছিল ? এতো বড় প্রজেক্ট, প্রচুর পয়সা স্যাংশান হবে ; আর কন্ট্রাক্টর দের কাছ থেকে দুটো কাটমানি নেতা দের পকেটে ঢুকবে বা যারা মাল সাপ্লাই এর দায়িত্ব পাবে তারা সামনের ইলেকশানে আমাদের মোটা চাঁদা দেবে, এই জন্যই ফারাক্কা বাঁধ। কত গরিব মানুষ কে এর জন্য বস্তু ভিটে ছাড়তে হলো, প্রাণ গেলো ইত্যাদি ।
  • lcm | ***:*** | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৮:৫২82078
  • নোট বাতিলের আসল উদ্দেশ্য শুরুতে যা বলা হয়েছিলঃ

    ১) কালো টাকা উদ্ধার (এইটের ওপর সব্থেকে বেশি জোর দেওয়া হয়েছিল)
    ২) জালি নোট (কাউন্টারফিট) বন্ধ করা
    ৩) টেররিজ্‌ম আটকানো
  • | ***:*** | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৮82079
  • ডিমানি নিয়ে নাকি সাংবাদিকরা কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও মন্ত্রীকে কোনও প্রশ্ন করতে পারবে না -- এই মর্মে অলিখিত মৌখিক নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে? কোনও সাংবাদিক করে ফেললে সে পরের সাংবাদিক সম্মেলনে আর এন্ট্রি পাবে না?

    জরুরী অবস্থা?
  • সৌভিক | ***:*** | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৮:১২82080
  • @তুহিনবাবু আমাদের দেশে জি এস টি, নোটব্যান ইত্যাদি ছোট ব্যবসায়ীদের যে বড় ধরনের সমস্যায় ফেলছে এবং তার ফলে বিগ জায়েন্টরা লাভবান হচ্ছেন, উল্লসিত হচ্ছেন সেই সংক্রান্ত আজকের খবরের কাগজ থেকেই একটি নিউজ লিংক দিই।
    http://www.epaper.eisamay.com/Details.aspx?id=34646&boxid=145418749
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। কল্পনাতীত মতামত দিন