এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • মৃত্যুরাখাল ও সদানন্দ -দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি

    শিবাংশু দে লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ১২ আগস্ট ২০১৩ | ১৪৪৮ বার পঠিত
  • (প্রথম কিস্তির পর)

    ৫.

    ১৯১৮ সালের গ্রীষ্মকালে তাঁর বড়ো মেয়ে বেলা ছিলেন রোগশয্যায়। থাকতেন তাঁর স্বামীগৃহ জোড়া গির্জার কাছে শরৎচন্দ্র চক্রবর্তীর বাড়িতে। কবি তখন জোড়াসাঁকোয়। মেয়ে'কে দেখতে প্রতিদিন সকালে সেই বাড়ির দোতলায় যা'ন।  একদিন বাড়িতে ঢুকেই বেরিয়ে এলেন। সহযাত্রী প্রশ্ন করলেন, কী হলো? তিনি বললেন, ''নাহ, আর দোতলায় উঠলাম না। সে আর নেই, আমি পৌঁছোবার আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে।''

    জোড়াসাঁকোয় ফিরে কিছুক্ষণ তিনতলার ঘরে চুপ করে বসে রইলেন। তারপর বললেন, '' কিছুই তো করতে পারতুম না। অনেকদিন ধরেই জানি ও চলে যাবে। তবু রোজ সকালে গিয়ে ওর হাতখানি ধরে বসে থাকতুম। ছেলেবেলায় যেমন বলতো বাবা গল্প বলো, অসুখের সময়ও অনেক সময় তাই বলতো। যা মনে আসে কিছু বলে যেতুম। আজ তাও শেষ হয়ে গেলো।'' এতোটুকু বলেই আবার শান্ত সমাহিত হয়ে বসে রইলেন।

    সেদিন বিকেলে তাঁর নানা সামাজিক কাজ ছিলো । ঘনিষ্ঠজনেরা চাইলেন সে সব থেকে তাঁকে অব্যাহতি দিতে। কিন্তু কবি নিষেধ করলেন। বললেন, এরকম তো আগেও হয়েছে। তাঁর মেজো মেয়ে রানি'র চলে যাওয়ার গল্পটা জানতো কেউ কেউ। সেই সময়টাতে স্বদেশী আন্দোলন চলছিলো পুরো দমে। রানি খুব অসুস্থ। আলমোড়া থেকে কবি তাঁকে নিয়ে ফিরে এসেছেন। নিজের হাতে অক্লান্ত শুশ্রূষা করতেন। পিতা নোহসি মন্ত্র শোনাতেন। রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী মশায় রোজ সন্ধেবেলা আসেন জাতীয় শিক্ষা পরিষদের ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করতে। যাবার সময় মেয়ের কুশলসংবাদ নিয়ে যান। সেদিনও যাবার সময় জানতে চাইলেন রানি কেমন আছেন? কবি শুধু বললেন, ''সে মারা গিয়েছে''। রামেন্দ্রসুন্দর  কিছুক্ষণ কবির মুখের দিকে চেয়ে ধীরে সিঁড়ি দিয়ে নেমে গেলেন। 

    কবি দুই কন্যাকেই হারিয়েছিলেন যক্ষ্মারোগে। 

    ৬.

    '' হে রুদ্র, তোমার দুঃখরূপ, তোমার মৃত্যুরূপ দেখিলে আমরা দুঃখ ও মৃত্যুর মোহ হইতে নিষ্কৃতি পাইয়া তোমাকেই লাভ করি। .... তোমার সেই ভীষণ আবির্ভাবের  সম্মুখে দাঁড়াইয়া যেন বলিতে পারি , আবিরাবীর্ম এধি, রুদ্র বত্তে দক্ষিণং  মুখং তেন মাং পাহি নিত্যম।''

    (মাঘ উৎসবের ভাষণ থেকে, ১৩১৪ সাল)

    কবির ছোটো ছেলে শমীন্দ্র বেড়াতে গিয়েছিলেন মুঙ্গেরে, কবির এক বন্ধুর বাড়িতে। এগারো বছরের বালক, লোকে বলতো কনিষ্ঠ সন্তানটি কবির প্রিয়তম আত্মজ,  সেখানে কলেরায় আক্রান্ত হন। কবির কাছে খবর এলো শমীন্দ্র খুব অসুস্থ। তিনি পৌঁছে দেখলেন সে চলে গিয়েছে। তিনি  তখন ব্যস্ত হয়ে পড়লেন গৃহকর্তা বন্ধুটির শোকসন্তাপ নিবারণ করতে। লোকে বুঝতেই পারলো না কার সন্তান গত হয়েছে। কবি ফিরে এলেন শান্তিনিকেতনে, একা। রেলস্টেশনে তাঁকে আনতে গিয়েছিলেন জগদানন্দ রায়। গোরুর গাড়ি করে তাঁরা ফেরার সময়ও জানতে পারেননি শমীন্দ্র কেন আসেননি। পরে জানতে পারলেন সে আর নেই। কবির বাহ্যিক ব্যবহারে কোনো বিচলন ছিলোনা। শান্তিনিকেতনে ফিরে কর্মব্যস্ততার মধ্যে তাঁর এক মূহুর্তও কোনও ছেদ পড়েনি। 

    শমী গত হবার পর তাঁকে কেউ কখনও প্রকাশ্যে শোক করতে দেখেননি। কিন্তু অনেক বছর পরেও শমীর প্রসঙ্গ উঠলে তাঁর চোখ অশ্রুসজল হয়ে উঠতো। তাঁর তখন ষাট বছর বয়স পেরিয়ে গিয়েছে। একদিন প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ জোড়াসাঁকো বাড়িতে গিয়ে শোনেন কবি রীতিমতো সরবে কবিতা আবৃত্তি করে চলেছেন। তিনি একটু অবাক হলেন তিনি। কবি'কে একথা জানাতে তিনি একটু অপ্রতিভ হলেন। তার পর বললেন, '' একটু জ্বর হয়েছে কিনা, তাই মাথাটা একটু উত্তেজিত হয়েছে। শমীরও এরকম হতো। ওর মা যখন মারা যায় তখন ও খুব ছোটো। তখন থেকে ওকে আমি নিজের হাতে মানুষ করেছিলেম। ওর স্বভাবও ছিলো ঠিক আমার মতো। আমার মতই গান করতে পারতো আর কবিতা ভালোবাসতো। এক এক সময় দেখতুম চঞ্চল হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে কিংবা চেঁচিয়ে কবিতা আবৃত্তি করছে। এই রকম দেখলেই বুঝতুম ওর জ্বর এসেছে। ....শমী বলতো বাবা গল্প বলো। আমি এক একটা কবিতা লিখতুম আর ও মুখস্থ করে ফেলতো। সমস্ত শরীর মাথা ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে আবৃত্তি করত। ঠিক আমার নিজের ছেলেবেলার মতো। ছাতের কোণে কোণে ঘুরে বেড়াত। নিজের মনে কত রকম ছিল ওর খেলা। দেখতেও ছিল ঠিক আমার মতো।'' 

    প্রশান্তচন্দ্র লক্ষ্য করলেন শমীর কথা বলতে বলতে কবির চোখ জলে ভরে এসেছে। ঊদ্ধৃত মাঘ উৎসবের ভাষণটি শমীর মৃত্যুর ঠিক দু'মাস পরের লেখা। 

    ৭.

    '' .... ভোরবেলা উঠে এই জানালা দিয়ে তোমার গাছপালা বাগান দেখছি আর নিজেকে ওদের সঙ্গে মেলাবার চেষ্টা করছি। বর্ষায় ওদের চেহারা কেমন খুশি হয়ে উঠেছে। ওদের মনে কোথাও ভয় নেই। ওরা বেঁচে আছে এই ওদের আনন্দ। নিজেকে যখন বিশ্বপ্রকৃতির সঙ্গে মিলিয়ে দেখি তখন সে কী আরাম। আর কোনো ভয়ভাবনা মনকে পীড়া দেয়না। এই গাছপালার মতো-ই মন আনন্দে ভরে ওঠে,''

    ( রানী মহলানবীশ'কে কবিঃ ১৯৩২ সালের অগস্ট মাস)

    কবির তিন মেয়ের মধ্যে কনিষ্ঠা মীরাদেবীই শেষ পর্যন্ত তাঁর কাছে থাকতেন। পাঁচ সন্তানের মধ্যে তাঁর জীবনকালে তিনজনের দেহাবসান হয়েছিলো। মীরাদেবীর দাম্পত্যজীবন পরিপূর্ণতা পায়নি। কবি তাঁর এই কন্যাটির দুঃখযন্ত্রনার একান্ত শরিক ছিলেন চিরকাল। মীরাদেবীর একমাত্র ছেলে নীতিন্দ্রনাথ বা নীতু। বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য গিয়েছিলেন। কবির পৌত্র বা দৌহিত্র বলতে তিনিই ছিলেন একমাত্র উত্তরপুরুষ । দুঃখী মা'য়ের সন্তান এবং কবির প্রাণপ্রিয় এই মেধাবী, সুদর্শন যুবকটি ছিলেন সবার কাছে প্রেয়, স্নেহিত একটি মানুষ। বিলেতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লেন গুরুতরভাবে। এন্ড্রুজ সাহেবের সঙ্গে মীরাদেবী যাত্রা করলেন সেদেশ থেকে ছেলেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে। একদিন ভোরবেলা কবি রানী মহলানবিশকে বললেন, যদিও এন্ড্রুজ সাহেব লিখেছেন নীতু ভালো আছেন কিন্তু তবু মন ভারাক্রান্ত রয়েছে। তারপর অনেকক্ষণ ধরে রানীর সঙ্গে মৃত্যু প্রসঙ্গে তাঁর অনুভূতির কথা বর্ণনা করলেন। 

    এইদিন সকালের সংবাদপত্রেই রয়টারের খবর, নীতু মারা গিয়েছেন। কিছুক্ষণ পরে রথীন্দ্রনাথ এলেন বরানগরের বাড়িতে। কবির কাছে গিয়ে বললেন, ''নীতুর খবর এসেছে।'' কবি প্রথমে ঠিক বুঝতে পারেননি। প্রশ্ন করলেন, '' কী, একটু ভালো?'' রথীন্দ্রনাথ বললেন, না, ভালো নয়। রথীকে মৌন থাকতে দেখে কবি বুঝতে পারলেন। স্তব্ধ হয়ে বসে থাকলেন, চোখ থেকে কয়েকফোঁটা জল গড়িয়ে পড়লো। আর কিছু নয়। 

    তখন তিনি পুনশ্চের কবিতাগুলি লিখছিলেন। একটু পরে সম্বিত ফিরে পেলে 'পুকুরধারে' নামে কবিতাটি লেখা হলো। পরদিন শান্তিনিকেতন ফিরে গেলেন। তখন সেখানে বর্ষামঙ্গল উৎসবের আয়োজন চলেছে। কবির এই শোকসংবাদে বিচলিত আশ্রমিকেরা উৎসব বন্ধ রাখার  প্রস্তাব করলেন। কিন্তু কবি রাজি হলেন না। নিজেও উৎসবে পূর্ণতঃ অংশগ্রহণ করলেন। মীরাদেবীকে লিখলেন, '' ... নীতুকে খুব ভালোবাসতুম, তাছাড়া তোর কথা ভেবে প্রকান্ড দুঃখ চেপে বসেছিলো বুকের মধ্যে। কিন্তু সর্বলোকের সামনে নিজের গভীরতম দুঃখকে ক্ষুদ্র করতে লজ্জা করে। ক্ষুদ্র হয় যখন সেই শোক, সহজ জীবনযাত্রাকে বিপর্যস্ত করে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ,.... অনেকে বললে এবারে বর্ষামঙ্গল বন্ধ থাক আমার শোকের খাতিরে। আমি বললুম সে হতেই পারেনা। আমার শোকের দায় আমিই নেবো। ... আমার সব কাজকর্মই আমি সহজভাবে করে গেছি। ...''

    ৮.

    মীরাদেবীকে লেখা এই চিঠিতেই বাংলাভাষার অতিচর্চিত শ্রেষ্ঠ মৃত্যুসাহিত্যের স্তবকটি সংলগ্ন ছিলো। 

    ''..... যেরাত্রে শমী গিয়েছিলো সেরাত্রে সমস্ত মন দিয়ে বলেছিলুম বিরাট বিশ্বসত্তার মধ্যে তার অবাধ গতি হোক, আমার শোক যেন তাকে একটুও পিছনে না টানে। তেমনি নীতুর  চলে যাওয়ার কথা যখন শুনলুম তখন অনেকক্ষণ ধরে বারবার ক'রে বলেছি, আর তো আমার কোনো কর্তব্য নেই, কেবল কামনা করতে পারি এর পরে যে বিরাটের মধ্যে তার গতি সেখানে তার কল্যাণ হোক। .... শমী যেরাত্রে গেলো, তার পরের রাত্রে রেলে আসতে আসতে দেখলুম জ্যোৎস্নায় আকাশ ভেসে যাচ্ছে, কোথাও কিছু কম পড়ছে তার লক্ষণ নেই। মন বললে, কম পড়েনি- সমস্তর মধ্যে সবই রয়ে গেছে, আমিও তার মধ্যে। সমস্তের জন্যে আমার কাজও বাকি রইলো। যতদিন আছি সেই কাজের ধারা চলতে থাকবে। সাহস যেন থাকে, অবসাদ যেন না আসে, কোনোখানে কোনোসূত্র যেন ছিন্ন হয়ে না যায়। যা ঘটেছে, তা'কে যেন সহজে স্বীকার করি, যা কিছু রয়ে গেলো তাকেও যেন সম্পূর্ণ সহজ মনে স্বীকার করতে ত্রুটি না ঘটে। ( ২৮শে অগস্ট,১৯৩২) 

    ৯.

    ''দুঃসহ দুঃখের দিনে

    অক্ষত অপরাজিত আত্মারে নিয়েছি আমি চিনে

    আসন্ন মৃত্যুর ছায়া যেদিন করেছি অনুভব

    সেদিন ভয়ের হাতে হয়নি দুর্বল পরাভব।

    .... আমি মৃত্যু চেয়ে বড়ো এই শেষ কথা বলে

    যাবো আমি চলে।''

    উনচল্লিশ সালের শেষ দিকে নাৎসি বাহিনী যখন নরওয়ে আক্রমণ করলো, কবি বললেন,'' অসুররা আবার নরওয়ের ঘাড়ে পড়লো। ওরা কাউকে বাদ দেবেনা। নরওয়ের লোকজনদের কথা মনে পড়ছে আর আমার অসহ্য লাগছে। তাঁদের যে কী হচ্ছে কে জানে।''   

    ১৯৪০শের বর্ষার পর তিনি গিয়েছিলেন মংপু, মৈত্রেয়ী দেবীর কাছে। কিন্তু অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়ায় সেপ্টেম্বর মাসে তাঁকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় কালিম্পঙ থেকে কলকাতায় ফিরিয়ে আনা হয়। বেশ কিছুদিন চিকিৎসার পর একটু সামলে ওঠেন, কিন্তু অতীব দুর্বল হয়ে পড়েন। এ রকম একটা সময়ে প্রশান্তচন্দ্র খবর পেলেন কবি তাঁকে বারবার ডেকে পাঠিয়েছেন, জরুরি কথা আছে। নানা কাজে ব্যস্ত থাকায়  প্রশান্তচন্দ্রের পৌঁছোতে একটু বিলম্ব হ'লো। তিনি কবির কাছে যাবার পর দেখলেন কবি বিশেষ উত্তেজিত এবং ঐরকম দুর্বল শরীর এতো উত্তেজনার ভার নিতে পারছে না। প্রশান্তচন্দ্রকে দেখেই কবি বললেন, '' অনেকক্ষণ ধরে তোমাকে ডাকছি, চীনদেশের লোকেরা যে যুদ্ধ করছে....'' বলতে বলতে কথা জড়িয়ে এলো। একটু থেমে সম্বিত ফিরে পেয়ে আবার বললেন, '' এতো দেরি করলে কেন? যা বলতে চাইছি বলতে পারছিনে। একটু আগে কথাটা স্পষ্ট ছিলো, এখন ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে...'' প্রশান্তচন্দ্র নীরবে অপেক্ষা করতে লাগলেন। খানিকটা পরে থেমে থেমে দম নিয়ে তিনি বলতে লাগলেন, ...'' চীনদেশের লোকেরা চিরকাল যুদ্ধ করাকে বর্বরতা মনে করেছে। কিন্তু আজ বাধ্য হয়েছে লড়াই করতে, দানবরা ওকে আক্রমণ করেছে বলে। এতেই ওদের গৌরব। ওরা যে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়েছে এই হলো বড়ো কথা।  ওরা যুদ্ধে হেরে গেলেও ওদের লজ্জা নেই। ওরা যে অত্যাচার সহ্য করেনি, তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে, এতেই ওরা অমর হয়ে থাকবে।''  আশি বছর বয়সে, বিছানায় উঠে বসার ক্ষমতা নেই, সেই অবস্থায় অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে তিনি আকুল হয়ে পড়েন। 

    রাশিয়া'কে নিয়ে তাঁর মনে ছিলো বিপুল আশ্বাস। তাঁদের দেশ ঘুরে এসে কবির মনে গভীর আস্থা জন্মেছিলো। জার্মানি যখন রাশিয়া আক্রমণ করলো তখন তিনি প্রায় শেষ শয্যায়। প্রতিদিন যুদ্ধের খবর নিতেন। বারবার বলতেন, এই যুদ্ধে যদি রাশিয়া জেতে, তবে তিনি খুব খুশি হবেন। সকালবেলা খবর কাগজ এলে সবার আগে দেখতেন ফ্রন্টের খবর কী। রাশিয়ার জন্য কোনও খারাপ খবর থাকলে বিষণ্ণ হয়ে যেতেন, কাগজ ছুঁড়ে ফেলে দিতেন। 

    যেদিন তাঁর অপারেশন হবে সেদিন সকালে বললেন, ''রাশিয়ার খবর বলো''। উত্তর এলো , ''  একটু ভালো মনে হচ্ছে। হয়তো একটু ঠেকিয়েছে।''   কবির মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠলো, '' হবেনা? ওদেরই তো হবে। পারবে। ওরাই পারবে।'' রোগকষ্টের ব্যক্তিগত সংলাপের বাইরে সম্ভবত এই ছিলো তাঁর শেষ কথা। 

    এর তিন মাস আগেই তিনি লিখেছেন, '' ... আজ পারের দিকে যাত্রা করেছি--পিছনের ঘাটে কী দেখে এলুম, কী রেখে এলুম, ইতিহাসের কী অকিঞ্চিৎকর উচ্ছিষ্ট সভ্যতাভিমানের পরিকীর্ণ ভগ্নস্তূপ। কিন্তু মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো পাপ, সে বিশ্বাস শেষ পর্যন্ত রক্ষা করবো। আশা করবো মহাপ্রলয়ের পরে বৈরাগ্যের মেঘমুক্ত আকাশে ইতিহাসের একটি নির্মল আত্মপ্রকাশ হয়তো আরম্ভ হবে এই পূর্বাচলের সূর্যোদয়ের দিগন্ত থেকে। আর একদিন অপরাজিত মানুষ নিজের জয়যাত্রার অভিযানে সকল বাধা অতিক্রম করে অগ্রসর হবে তার মহৎ মর্যাদা ফিরে পাবার পথে।'' 

    ------------------------------------------------------------------

    মৃত্যুরাখাল আবার ফিরে গেলো। সদানন্দের  চ্যালেঞ্জ ছিলো সে মৃত্যু চেয়ে বড়ো। আনন্দসমুদ্র পেরিয়ে সদানন্দের মাটির রাজপ্রাসাদ।রাখালের পক্ষে সমুদ্র  পেরোনো  আর সম্ভব হলোনা।  মাঝে মাঝে এই সব পরাভব তার ভালো-ই লাগে। তারও তো কখনও, কোনো দুর্লভ মুহূর্তে ভালোবাসতে ইচ্ছে করে।  

     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১২ আগস্ট ২০১৩ | ১৪৪৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Az | ***:*** | ১২ আগস্ট ২০১৩ ০৪:৫৫77308
  • কোনো দুর্লভ মুহূর্তে নয়, সবসময়েই তাঁর ভালোবাসতে ইচ্ছে করে, সব সময়েই তাঁর বাঁশিতে সেই সুর বাজছে যে, "অবিদ্যয়া মৃত্যুংতীর্তা বিদ্যয়ামৃতমস্নুতে।"
    আমাদের ছোটো ছোটো প্রেম-ঘৃণা আনন্দ-বেদনা যন্ত্রণা-আর্তি পাওয়া না পাওয়া কাছের মানুষ দূরের মানুষ এইসব সীমাবদ্ধ বোধ আর বিভাজন দিয়ে ঘেরা জগতে যা দেখতেই পাই না, সেইখানেই তো সে নিয়ে যায় হাত ধরে, সেখানে আর অন্যকিছু নেই, শুধু ভালোবাসার মহাসমুদ্র।
    "তুমি কারে করিও না দৃকপাত/ আমি নিজে লব তব শরণ/ যদি গৌরবে মোরে লয়ে যাও/মরণ হে মোর মরণ।"
  • I | ***:*** | ১২ আগস্ট ২০১৩ ০৫:১১77309
  • বড় ভালো লাগলো।
  • nina | ***:*** | ১২ আগস্ট ২০১৩ ০৫:২১77310
  • সুন্দর!
  • sumit roy | ***:*** | ১২ আগস্ট ২০১৩ ০৫:৪৬77311
  • যাঁরা নিয়মিত গুচ পড়েন তাঁরা নিশ্চয় লক্ষ্য করছেন যে কী সুন্দর করে গুছিয়ে লেখাটা শিবাংশু নামিয়ে দিলেন, একবারও "দাড়িদাদু" শব্দটা ব্যবহার না করে। লেখার প্রসাদগুণের কারণে তো বটেই, এই প্রলোভন রোধ করার জন্যও শিবাংশুকে এ+ ।
  • Ishani | ***:*** | ১২ আগস্ট ২০১৩ ০৬:১৩77312
  • "শমী যেরাত্রে গেলো, তার পরের রাত্রে রেলে আসতে আসতে দেখলুম জ্যোৎস্নায় আকাশ ভেসে যাচ্ছে, কোথাও কিছু কম পড়ছে তার লক্ষণ নেই। মন বললে, কম পড়েনি- সমস্তর মধ্যে সবই রয়ে গেছে, আমিও তার মধ্যে। " ..... শেষ কথা . শুরুরও.
  • nina | ***:*** | ১২ আগস্ট ২০১৩ ০৭:৪১77313
  • শমী জাবার পরই বোধহয় লিখেছিলেন

    আমার এ ধূপ না পোড়ালে
    গন্ধ কিছুই নাহি ঢালে
    আমার এ দীপ না জ্বালালে দেয়্না কিছুই আলো!
    এই করেছ ভাল নিঠুর হে-
  • ranjan roy | ***:*** | ১২ আগস্ট ২০১৩ ০৭:৪৬77314
  • এই লেখার প্রসংগে সুমিত রায়ের বক্তব্যের সঙ্গে গলা মেলালাম।
  • sumit roy | ***:*** | ১২ আগস্ট ২০১৩ ০৯:৫০77315
  • @নিনা: তোমার আন্দাজটা ঠিক নয়। শমী মারা গেলেন ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৩১৪। তার পর কবি যে গানগুলি লেখেন তার প্রথমটি হোলো "অন্তর মম বিকশিত করো"-- ২৭শে অগ্রহায়ণ, শিলাইদহে বসে।

    শমীর খুব প্রিয় বন্ধু ভোলা শান্তিনিকেতনেই মারা যান ১০ই আষাঢ়, ১৩১৭। রবীন্দ্রনাথ তাঁকে অপত্যবত্‍‌ দেখতেন। ১১ই আষাঢ় লিখলেন "আজি বরষার রূপ হেরি"। তোমার উল্লেখ করা "এই করেছো ভালো নিঠুর হে" লিখেছিলেন ৪ঠা আষাঢ়, ১৩১৭।

    http://www.harmonyindia.org/hportal/VirtualPageView.jsp?page_id=15346
    -তে সুন্দর আলোচনা পেলাম এই বিষয়ে।

    একটু তথ্য-ভারাক্রান্ত হোলো, অপরাধ নিও না, কিন্তু প্রাসঙ্গিক হবে শঙ্খ ঘোষের "দামিনীর গান" বইয়ের কথা বলা, যেখানে শঙ্খ দেখিয়েছেন যে কী ঘটনা কখন কীভাবে কবির মনে কী ছায়া ফেলেছে তার হদিশ পাওয়া মুস্কিল।
  • nina | ***:*** | ১২ আগস্ট ২০১৩ ১০:৪০77316
  • সুমিতদা
    থ্যাঙ্কু---তোমার দেয়া তথ্যে ভারাক্রান্ত হয়না----তোমার তথ্যের অপেক্ষায়ই তো থাকি---শঙ্খ ঘোষের বইটি যোগাড় করব। লিঙ্কটাও পড়ব।
    আরও একজনকে এই আলোচনায় টানার চেষ্টায় আছি --দেখি পারি কিনা----
  • ম্যাক্সিমিন | ***:*** | ১২ আগস্ট ২০১৩ ১১:০১77317
  • খুব restrained লেখা।
  • sumit roy | ***:*** | ১৩ আগস্ট ২০১৩ ০২:১৫77320
  • @শিবাংশু:

    "দাদু", তার ওপর আবার "দাড়ি"-- যেন চূড়োর ওপর ময়ূরপাখা"! :-)

    আপনার এবং আপনার লেখনীর উত্তরোত্তর শ্রীবৃদ্ধি কামনা করি।
  • ranjan roy | ***:*** | ১৩ আগস্ট ২০১৩ ০২:৩৪77321
  • শিবাংশুকে হিংসে করি।
    অনেক সময় যে কথাগুলো ভাবি, কিঞ্চিৎ অগোছালো ভাবে, উনি সেগুলো কেমন অনায়াস ঋজু বাক্যবন্ধে প্রকাশ করে ফেলেন।
    এই 'দাড়িদাদু' ও 'বিবুদা' নিয়ে আমার ব্যক্তিগত irritation কখনো কখনো প্রকাশ করেছি, কিন্তু তাকে একটি নৈর্ব্যক্তিক ভিত্তিতে দাঁড় করাতে পারিনি, যেটা শিবাংশু অনায়াসে করলেন।
  • শিবাংশু | ***:*** | ১৩ আগস্ট ২০১৩ ১১:৫৪77318
  • Az, ডাক্তার, নিনা,সুমিতদা, ইশানী,রঞ্জন, ম্যাক্সিমিন,

    সবাইকে অনেক ধন্যবাদ। ঃ-)

    সুমিতদা,

    রবীন্দ্রনাথ বা বিবেকানন্দ বা এরকম আরো কিছু নাম আমার কাছে ঠিক কোনো ব্যক্তিবিশেষের নাম নয়। তাঁরা এক ধরনের চেতনাসম্ভব বাতিঘর। যেহেতু আমাদের মতো ইতর লোকেদের জগতটা অতি খন্ডিত এবং দৃষ্টিক্ষমতাও নিতান্ত সীমাবদ্ধ, তাই এই সব ব্যক্তিত্বকে একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে না দেখলে তাঁদের পরিপ্রেক্ষিতটা ঠিক বোঝা যায়না। কবি'কে 'দাদু' বা স্বামীজীকে 'দাদা' বলতে পারার মধ্যে হয়তো একটা রসসিক্ত নৈকট্যবোধ কাজ করে, কিন্তু ঐ নৈকট্য যে তাঁদের থেকে সঠিক পথনির্দেশ এনে দিতে পারবে, আমি তেমনটি নিশ্চিত নই। পিতামহ হিসেবে কবি'কে পেলে নিশ্চয় বিশেষ শ্লাঘাবোধ করবো। কিন্তু যখন তা ঘটনা নয়, তখন 'কুল' হবার তাড়নায় 'দাদু' বা 'বিবু' সম্বোধন করার মেট্রোনাগরিক প্ররোচনা থেকে দূরে থাকি।

    কবি'কে কেন্দ্র করে আপনার শ্রম ও মেধাসাধ্য যে সৃষ্টি আমরা দেখেছি, তার জন্য আমরা আপনার প্রতি কৃতজ্ঞবোধ করি । এই সুযোগে তার সঙ্গে শ্রদ্ধাও জানিয়ে গেলাম।
  • de | ***:*** | ১৩ আগস্ট ২০১৩ ১২:১৩77319
  • অসাধারণ!! প্রথম পর্ব পড়ে অপেক্ষায় ছিলাম, শেষ পর্বের!
  • Pramit | ***:*** | ১৫ আগস্ট ২০১৩ ০৫:২২77322
  • অনবদ্য। প্রতিবার-ই শিবাংশু-দার লেখা পড়ে বলতে ইচ্ছে করে "ডুবি অমৃতপাথারে" ঃ)

    এই প্রসঙ্গে সৈয়দ মুজতবা আলির একটা বিবরণ পাওয়া যায়। ওনার নিজের প্রত্যক্ষ অথবা প্রত্যক্ষদ`্র্শীদের থেকে শোনা অভিজ্ঞতার কথা। কবির সাথে এক অদ্ভুত নৈকট্য থেকে এই বিবরণ। নিচের লিঙ্ক টাতে সেটার কিছুটা আছে।



    এই বছর ২২ শে শ্রাবণ প্রতিদিন কাগজে রঞ্জন বন্দ্যোপধ্যায়ের একটা লেখা ছিলো কবির শেষ এক ব্ছরের নিজের অসুস্থতার কথা বেশ খুটিনাটি বিবরণ সমেত। এই লিঙ্কটা কাজ করবে কিনা জানি না। তবে খুলতে পারলে অনেক অজানা তথ্য জানা যাবে।

    http://epratidin.in/Details.aspx?id=14487&boxid=12194162

    আর শমীর মৃত্যু প্রসঙ্গে আমার খুব-ই সীমিত জ্ঞান থেকে কতগুলো গানের কথা জানি। যদি ভুল হয় অনুগ্রহ করে শুধরে দেবেন।

    জাগে নাথ জোছ্নারাতে - রচনাকাল ১৩১৬
    আজ জ্যোত্স্নারাতে - রচনাকাল ১৩২০
    আজ তারা তারায় - রচনাকাল ১৩২৯
    খেলাঘর বাঁধতে লেগেছি - রচনাকাল ১৩২৯
  • ন্যাড়া | ***:*** | ১৯ আগস্ট ২০১৩ ০৮:৩০77324
  • চমৎকার লেখা। এর সঙ্গে বুনে নেওয়া যায় রবীন্দ্রনাথের গানের অনুষঙ্গকে। শুধু মৃত্যু বা শোকই নয়, রবীন্দ্রনাথের গানে বার বার এসেছে যে 'দুখের ফলের ভার'-ই স্থায়ী। কাজেই তাকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা বৃথা। সুখের মুহূর্ত সংক্ষিপ্ত - "আজ এনে দিলে, হয়তো দিবে না কাল"।

    এইরকম অবস্থান থেকে আন্দাজ করা হয় নীতুর মৃত্যুর কিছু পরেই লেখা "অল্প লইয়া থাকি তাই, মোর যাহা যায় তাহা যায়।" সেই গানের শেষের যে প্রত্যয়ী উচ্চারণ "তোমাতে রয়েছে কত শশীভানু, হারায় না কভু অণু-পরমাণু" তাকে শমীর মৃত্যুর পরের বর্ণনা "দেখলুম জ্যোৎস্নায় আকাশ ভেসে যাচ্ছে, কোথাও কিছু কম পড়ছে তার লক্ষণ নেই" মিলিয়ে নিলে মৃত্যুরাখালের জীবনের সদানন্দের মূল সুরটা ধরা যায়। হয়তো।
  • rani | ***:*** | ১৯ আগস্ট ২০১৩ ০৮:৪৬77323
  • এমন লেখা পড়লে কিছু কষ্ট সহনীয় হয়ে ওঠে ।
  • শিবাংশু | ***:*** | ২০ আগস্ট ২০১৩ ০৬:০৬77325
  • de, প্রমিত, রানি, ন্যাড়া,

    মনের পর্দা যখন মেলে তখন কড়ি ও কোমলে সুর মেলার মতো-ই তৃপ্তি হয়। আপনাদের অনেক ধন্যবাদ।

    @ প্রমিত এবং ন্যাড়া,

    অন্যান্য অনেক বড়ো শিল্পীর মতো রবীন্দ্রনাথেও দেখেছি বাহ্যিক ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় মনোজগতের টালমাটাল তৎক্ষণাৎ লক্ষ্যিত হয়না। তাঁদের মনোসাগরের গভীরতা অতল। ঘটনাগুলি থিতিয়ে যায় ধীরে ধীরে। কিন্তু তার অভিঘাত হিসেবে যে সৃষ্টিগুলি আমাদের চোখে পড়ে, তা কিন্তু সময়ের হিসেবে অনেক ক্ষেত্রেই দীর্ঘকাল পেরিয়ে আসার পর মূর্ত হয়। কবি'র লেখায় কিছু বিশেষ মোটিফের নানা রূপে আসাযাওয়া আমরা দেখেছি। সূর্যচন্দ্র, রোদজ্যোৎস্না, ফুলফল ইত্যাদি প্রতীকে জীবনের নানা ভাবরূপকে ধরতে চাওয়ার প্রয়াস তাঁর সারাজীবন ধরে চলে এসেছে।

    যে'টা আমাকে বা আমার মতো কোটি ইতর জনতাকে বিস্মিত করে, তা হলো শত বিরুদ্ধ প্ররোচনা থাকা সত্ত্বেও একটা রক্তমাংসের মানুষ আমৃত্যু কী করে এতো ইতিবাচক, সৃষ্টিশীল হয়ে থেকে যেতে পারে। কী ধনে হইয়া ধনী.... ইত্যাদি।

    আমার এই তুচ্ছ প্রতিবেদনটি সেই বিস্ময়বোধেরই এক অক্ষম আঁকিবুকি।
  • san | ***:*** | ২১ আগস্ট ২০১৩ ০৩:৫৫77326
  • হ্যাঁ , কষ্ট সহনীয়ই হয়ে ওঠে । শিবাংশুদাকে ধন্যবাদ লেখার জন্য।

    আর এই দাড়িদাদু আর বিবুদা প্রসঙ্গে কী সুন্দর করে মনের কথা বলে দিলেন !
  • rupak bandyopadhyay | ***:*** | ০৮ মে ২০১৫ ০৯:১৪77327
  • ek kathaay..anabadyo !''..... smritike bidesi upaaye kharbo naa kariyaa,byartho naa kariyaa,kebal nagar er ka-ekjan sikshito loker madhye baaddha naa kariyaa desaprachalito sahaj upaaye sarbaakaale ebong sarbasadharaner madhye byapto karibar chestaa kariben ki !''---(''SMRITIRAKSHA...swades o samaj....rachanabali'').....apni ei kajti-i korechen....pochise baisakher mukhe etaai pronaam !
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি মতামত দিন