লিখে কিছু হয়না। বিশেষ করে সেই লেখাপত্র যদি বড় বড় আনন্দের মিডিয়াতে না ছাপা হয়।
ডিপ্রেসিং বিষয় নিয়ে লেখা অতি ডিপ্রেসিং। কেউ পড়েনা। যাঁরা পড়েন, তাঁরাও আগে থেকেই নিজের মতামত ঠিক করে রেখেছেন। তাঁদের সে মত একচুল নড়চড় হবার নয়।
খুব বেশি মনে কষ্ট হলে, বা বিরিয়ানি রেজালা ইত্যাদি খাবার সময়ে হেঁচকি উঠলে তাঁরা লেখকের আদ্যশ্রাদ্ধ করেন। বিষয় ছেড়ে ব্যক্তিকে ধরেন। ব্যাস, বিবেকদংশন সেখানেই শেষ।
আবার একদল আছেন, তাঁরা বলেন, নতুন কী বলছেন আপনি? এ তো সবই জানা কথা। ফালতু কথা লিখে লাভ কী হচ্ছে আপনার?
অর্থাৎ, জানা কথা বলে তা আর লেখা যাবেনা। আসলে, এসব কথা শুনলে। ... ওই যে বললাম। ... রেজালা হেঁচকি?
সুতরাং, আদ্যশ্রাদ্ধ। এবং সেখানে গুণকীর্তন। সেই সাইবার ট্র্যাডিশন সমানে চলেছে।
___________
স্যাক্রামেন্টো আর শ্রীলঙ্কা ধরনের ট্র্যাডিশনও তাই। এ এক জগদ্দল অচলায়তন। একে একচুল নড়ায়, কার ড্যাডির সাধ্য?
ফুটনোট, অর্থাৎ পাদটীকা।
(১) ক্যালিফোর্নিয়ার স্যাক্রামেন্টো নামক শহরে গতকাল বন্দুকবাজের গুলিতে ছজন পটল তুলেছে। তবে, আমেরিকায় যে এরকম ঘটনা দিবারাত্র ঘটে চলেছে, তা সকলেই জানে। নতুন খবর আর কী? আজ শিকাগো, কাল কানেক্টিকাট, পরশু কলোরাডো, তরশু টেক্সাস, নরশু এ্যারিজোনা -- নতুন কিছু বলার থাকলে বলুন।
তাছাড়া, ওসব জায়গায় না থাকলেই হলো। ব্যাস, মিটে গেলো। এতো হৈহৈ করার কী আছে? দেখছেন না, স্বয়ং আমেরিকাবাসীরাই হৈহৈ আর করেনা। আবার পরের খুনগুলো হলে আবার যেন সে নিয়ে লিখতে বসবেন না। ফালতু লিখে লাভ নেই জানা সব কথা। নতুন কিছু লিখুন।
(২) শ্রীলঙ্কা ব্যাংকরাপ্ট -- দেউলিয়া। এও জানা কথা। আগেও ফিলিপিন্স, আর্জেন্টিনা, গ্রীস আরো কী কী সব দেশ দেশ দেউলিয়া হয়েছে। আজেবাজে খর্চা করলে যে কোনো লোক, যে কোনো দেশ দেউলিয়া হবে। অরগ্যানিক ফার্মিং এসব নিয়ে ফালতু খরচ। তারপর সবাই জানে, চাইনিজ ডেট (debt) এই মহা সর্বনাশটি ঘটিয়েছে।
আই এম এফ, ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক, তাদের স্ট্রাকচারাল অ্যাডজাস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (SAP)? ওসব বাজে কথা। মিডিয়াতে কখনো ওসব কথা শুনেছেন?
যা শোনেন নি, যা দেখেন নি, তা হয়না, তা হয়নি। ব্যাস, ফুরিয়ে গেলো।
আবার বলছি, ফালতু সব জানা কথা নিয়ে লিখে ফালতু সময় নষ্ট করবেন না।
সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলছে। চলছে, চলবে। চলছে, চলবে।
_____
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।