এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  স্মৃতিকথা

  • হারিয়ে যাওয়া কোলকাতার গল্পঃ পর্ব ১

    Ranjan Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | স্মৃতিকথা | ২৯ এপ্রিল ২০২১ | ৩৪৮১ বার পঠিত
  • | | | | | | | | | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬
    পঞ্চাশ-ষাটের হারিয়ে যাওয়া কোলকাতার চালচিত্র

    (একে চন্দ্র, দুইয়ে পক্ষ। সমুদ্রমন্থনেও দুই দল, এ ধরেছে শেষনাগের মাথা, তো ও মুড়ো। এদিকে বিষ্ণুর মোহিনীমায়ায় সব লন্ডভন্ড। উঠল গরল, উঠল অমৃত। ভাই–ভাই ঠাঁই–ঠাঁই হল। আজও সেই দায় বয়ে চলেছি আমরা। এটি তারই এক আখ্যান, এক বাঙাল কিশোরের চোখে। এর ইতিহাস হওয়ার দায় নেই।)

    ভণিতা - ‘কলিকাতা চলিয়াছে নড়িতে নড়িতে’

    (১)

    সেই সব দিন। সেই সব দিনকালে শহর কোলকাতায় ফ্লাইওভার-মাল্টিস্টোরিজ-হাইরাইজ-সুপারমল-আইনক্স কিস্যু ছিল না। মোবাইল দূরের কথা, এসটিডি বুথও ছিল না। বুথ ভুলে যান, ঘরে ঘরে আজকের মত টেলিফোন ছিল না। স্যাম পিত্রোদার নামও কেউ শোনেনি। ফোন করতে হলে স্থানীয় ডাকঘরে বা কোন ওষুধের দোকানে লাইন লাগাতে হত।

    তখন মুদি দোকানের জিনিসপত্র কেনাবেচা হত ছটাক-পোয়া-সের আর মণের দামে। চালের মণ ছিল একটাকা, দেড়টাকা। না, না, শায়েস্তা খাঁর আমলে নয়, স্বাধীনতার ঠিক পরে পরেই। তখন রুইমাছ ছিল সেরা মাছ, মাথামোটা কাতলা তার পরে। ঘটিদের ‘মিষ্টি মাছ’ মৃগেল এর পরে। ভেটকি, আড়, বোয়াল - সেকেন্ড ডিভিশনের প্লেয়ার। সমস্ত ছোটমাছ - সে ট্যাংরা, কই, খলসে, পাবদা যাই হোক - থার্ড ডিভিশন। অবশ্য চিংড়ি ও ইলিশ অতিথির সম্মান পেত। চিতল মাছের মুইঠ্যা? সেসব উদ্বাস্তু বাঙালদের সদ্য আমদানি।

    কম জলের জিওল মাছগুলো? মানে শোল, মাগুর, শিঙি, ল্যাটা, বেলে? এরা অতিথিদের পাতে পড়ত না।

    তখন বাঙালী রুটি তরকারি খেত জলখাবারে, ভাত খেত তিন বেলা। রোববারে ছোলার ডাল, বিশেষ দিনে লুচি।

    তখন সবাই বাড়িতে গিয়ে কড়া নাড়ত, কলিং বেল বাজাত না। যে কেউ যখন তখন আত্মীয়স্বজন বা বন্ধুবান্ধবের বাড়িতে গিয়ে হাজির হয়ে কড়া নাড়ত। আর ঘরে ঢুকতে পেলে সহজে উঠত না। সময় বয়ে যেত আদিগঙ্গার কালো জলধারার মত ধীর লয়ে।

    আর খাস মধ্য দক্ষিণ কোলকাতায় দোতলার তিন কামরার সাদামাটা ফ্ল্যাটের বাড়ি ভাড়া? আটচল্লিশ টাকা!

    সেই কোলকাতায় মিনিবাস-অটোরিকশা নেই, পুল কার, ঝাঁ-চকচকে মোটরবাইক নেই। খালি নেই আর নেই। তবে কী ছিল?

    ট্রাম ছিল, বাস ছিল - বাঘমার্কা সরকারি, দোতলা ও একতলা; আর সবুজরঙা পেরাইভেট। ছিল ট্যাকসি - ও তার সর্দারজি ও বিহারী ড্রাইভার। ছিল রিকশা - পাড়ার ভেতরে ঢুকতে; করপোরেশন এলাকায় মানুষে টানা, মিউনিসিপ্যালিটি এলাকায় সাইকেলে।

    ও হ্যাঁ, পাড়ায় পাড়ায় রোলের দোকান গজায় নি। ফুচকাওলারা ছিল। ঘুগনি,আলুকাবলি খেয়ে - খাইয়েই স্কুলের ছেলেমেয়েরা খুশি হয়ে যেত। চার আনা দামে কালো কোকাকোলা ছিল। আর দু’পয়সায় বরফ ঘসে তাতে লাল-সবুজ-হলুদ মিষ্টি সিরাপ ঢেলে কাঠি লাগিয়ে চাটা যেত। ম্যাগনোলিয়া আর কোয়ালিটি আইসক্রিমের ঠেলা থেকে দু’আনায় দুধ আইসক্রিম পাওয়া যেত। কাপ কিনলে চার আনা।

    বিস্কুট? লেড়ো, হাতিঘোড়া, ব্রিটানিয়া থিন এরারুট, সারকাস আর লিলি - কোলে কোম্পানির। বড়লোকেরা খেত ক্রিম ক্র্যাকার।

    হজমিগুলি, ত্রিফলা লজেন্স। একটু পয়সা পেলে লর্ডসের জেলিভরা লজেন্স, মর্টনের টফি, ক্যাডবেরি নয়।

    একটু বড় হলে চপ-কাটলেট-মোগলাই; শ্যামবাজারের পাঁচমাথার মোড়ে পাঞ্জাবীর দোকান, অনাদি ও দিলখুসা। না, স্যাঙ্গুভ্যালি, বিজলি গ্রিল বা আমিনিয়া আউট অফ কোর্স। বড়জোর গরমের দিনে বান্ধবীকে লস্যি খাওয়ানো। মোকাম্বো, মূল্যাঁ রুজ? স্বপন দেখার সাহসও নেই।

    সিগ্রেট? ষাটের দশকের শেষে চারমিনারের প্যাকেট ২৮ পয়সা, পানামা ও কাঁচি ৫ পয়সা। ক্যাপস্টান ও উইলস ৮ পয়সা, ফিল্টার হলে ১০ ।পাড়ার দোকানে কাঁচের গেলাসে চা দু’আনা। ওমলেট চার আনা।কফি হাউসে কফির কাপ চার আনা, কোল্ড কফি চল্লিশ পয়সা। ইউনিভার্সিটি ক্যানটিনে কোন ধিনিকেষ্ট ২৫ নয়া পয়সার প্যাকেজে একটুকরো প্লাম কেক, এককাপ কফি ও একটি পানামা সিগ্রেট দিয়ে দিত।

    আসুন, সেই নেই-হয়ে-যাওয়া কোলকাতার গল্প বলি।

    হ্যাঁ, তখনও ১৯৫৭ তে শুরু হওয়া মেট্রিক পদ্ধতির নয়া পয়সা, সংক্ষেপে লেখা হত ন’প, প্রচলিত ছিল।

    মদের দোকান লজ্জায় অধোবদন হয়ে গড়িয়াহাট-ভবানীপুর-চৌরঙ্গী-শ্যামবাজারে নেতাজির ঘোড়ার লেজের দিকে ছোট্ট করে ঝাঁপ খুলত। খালাসিটোলার সন্ধান উঠতিরা পেত না।

    খেলাধূলো? মধ্য কোলকাতায় অলিগলিতে পিচের রাস্তায় ইঁটের উইকেটে বেদম ক্রিকেট পিটিয়ে দোতলা বাড়ির জানলার কাঁচ ভেঙে ভারি ক্যাচাল। কিন্তু শহরতলির বাঙালপাড়াগুলোতে জলকাদার মাঠে ফুটবলের ধূম।

    আর স্কুলকলেজ? হাতে গোণা ইংরেজি মিডিয়ামের এলিট স্কুল ছাড়া কোন কো-এড ছিল না। মধ্যবিত্ত বাঙালী সহশিক্ষাকে ভাল চোখে দেখেনি। সাকুল্যে তিনটে পরীক্ষা হত। কোয়াটার্লি, হাফ-ইয়ার্লি, অ্যানুয়াল। ইউনিট টেস্ট, উইকলি টেস্টের উপদ্রব তখনো অজানা।

    সরস্বতী পূজো ছিল ছাত্রছাত্রীদের কার্নিভাল। সেদিন অবাধ মেলামেশার সাহস। টিচাররাও চোখ ফিরিয়ে নিতেন।

    এমনি এক বসন্তপঞ্চমীর সন্ধেতে স্কুলের ফাংশান থেকে ফেরার পথে নাকতলা শক্তি সংঘের মাঠের পাশে হলদেটে বাতির আলোছায়ায় শানু বা শান্তশ্রীর রাস্তা আটকে চয়ন বলল - তোমাকে আমার খুব ভাল লাগে।

    শানুর চকচকে চোখ হেসে ওঠে - ধ্যেৎ!

    – কেন, আমি কি খুব খারাপ?
    ––– তা নয়, তুমি দেরি করে ফেলেছ। আমি এখন এনগেজড।
    ––– বিশ্বাস করি না। তুমি কথা ঘোরাচ্ছ। আমি ছেলেদের কাছে খোঁজ নিয়ে তবে এগিয়েছি।
    ––– সত্যি বলছি, বিদ্যা ছুঁয়ে। এখন বিশ্বাস করা না করা –– –––!
    ––– ছেলেটা কে? নাম বলতে আপত্তি আছে?
    ––– ছেলে নয়, স্যার! অংকের স্যার বিশ্বনাথদা।

    এহ বাহ্য। এসব তো ষাটের দশকের শেষ। আমাকে ফিরতে হবে গোড়ায়। ১৯৫০ এর মার্চ মাসে। মাতৃজঠরে দোলা খেতে খেতে এক বাঙালশিশুর ভ্রূণ অবস্থায় কোলকাতা পোঁছনোর দিনের কথকতা থেকে, তবে তো “লীলে পোষ্টাই হবে”, বুইলেন কি না! তাই এই ভণিতা।

    গৌরচন্দ্রিকা-১ : জলে বাঘ ডাঙায় কুমির


    ১৯৫০ সালের মার্চমাসের এক রাত্রি। শিয়ালদহ স্টেশনের বড় ঘড়িতে বারোটা বাজিয়া দশ মিনিট। একটি পরিবার একের পর এক ট্যাক্সিচালককে কাকুতিমিনতি করিতেছে - বাপধন হে! আমাদের লইয়া চল, বাড়িতে পৌঁছাইয়া দাও। আমরা দ্বিগুণ ভাড়া দিব , তোমাকে প্রাণ ভরিয়া আশীর্বাদ দিব। পাঁচজন মহিলা, একজন পুরুষ এবং এক বালক; সাকুল্যে সাড়ে ছয় জন। কিন্তু গন্তব্যস্থানের নাম - পার্কসার্কাস বাজারের সামনে - শুনিবামাত্র সবাই দুই দিকে মাথা নাড়িয়া সরিয়া যাইতেছে।

    উহা নাকি মুসলমান অধ্যুষিত দাঙ্গাপ্রবণ এলাকা! কিন্তু পরিবারের অন্য সদস্যরা বিগত দুই বৎসর যাবৎ ওইখানেই বসবাস করিতেছে। প্রতিবেশি মুসলমান বটেন, কিন্তু কোন অসদ্ভাব অথবা জানমালের ব্যাপারে কোন দুশ্চিন্তা কখনও মনে উদিত হয় নাই।

    এক ছোকরা ড্রাইভার বলিল - ওপার থেইক্যা শ্যাকের লাথ খাইয়া এপারে আইলেন, কিন্তু আস্তানা করলেন নাইড়াদের মইধ্যে! আর কুনখানে বাড়ি পান নাই? হেইখানে ছিল জলে বাঘ, এইখানে ত ডাঙায় কুমির।

    আগন্তুক পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি মুখ খুলিলেন - তুমি তো দেহি, আমরার মত, কইলকাতার ঘটি না। দেশ কোথায়?

    --ঢাকা; শাঁখারিপাড়া।
    -- আমরা পাঁচজন মাইয়ামানুষ নিয়াও ভয় পাই নাই, তুমি ঢাকার ছ্যারা, ডরাইতে আছ?
    -- না, ডর কিসের? তবে কখন যে কী হয় !

    শেষে অনেক দরাদরির পরে পরিবারটি বাইশ টাকা ভাড়া - প্রায় দশগুণ - দিয়া রাত্রির দ্বিতীয় যামে পার্কসার্কাস ধাঙড় বাজারের সার্কাস হোটেলের সামনে ১/সি, সার্কাস মার্কেট প্লেস এর ভাড়াবাড়িতে পৌঁছিতে পারিল।

    এক ট্যাক্সিতে সাড়ে ছয়জন এবং কয়েকটি বাক্স-পিটারা!

    না, কল্পকথা নহে। চল্লিশ হইতে পঞ্চাশের দশকের গোড়ায় যে ট্যাক্সি কলিকাতার রাজপথে দেখা যাইত, তাহার আকার ও ভিতরে যাত্রীর স্থান বর্তমান প্রজাতির হইতে কিঞ্চিৎ বৃহৎ ছিল । বর্তমান প্রজাতি, অর্থাৎ পিছনে তিন ও সামনে একজনের বসিবার স্থান, যাহার আবির্ভাব কয়েক বছর পরে বিড়লার আনুকুল্যে, তাহার নামকরণ হইয়াছিল ‘বেবি ট্যাক্সি’ । এক দশক পরে ‘বেবি’ বড় হইয়া বাবা হইল। প্রাচীন বাবাদের কলিকাতা ভুলিয়া গেল। যেমন নয়া-পয়সা ভুলিয়া কেবল পয়সা হইয়াছে।

    তিনটি ঘর, সামনে টানা বারান্দা, একটি পাকের ঘর ও একটি স্নানঘর ও লাগোয়া পায়খানা। এই দাদুর দস্তানায় সদস্য সংখ্যা ক্রমে বাড়িতে লাগিল এবং অচিরাৎ বাইশজনে গিয়া জনসংখ্যা বৃদ্ধিতে বিরাম লাগিল।

    পরিবারটি হিন্দু কায়স্থ, সাকিন আঠারবাড়িয়া ও বাজিতপুর। মহকুমা কিশোরগঞ্জ, জেলা ময়মনসিংহ, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বৃহত্তম জেলা। ইহা শেরশাহ সুরির সময়কালীন তৈরি হাজরাদি পরগণার অন্তর্গত।

    জনান্তিকে বলি, এই পরগণার মানুষজনের কুতার্কিক বলিয়া বিশেষ খ্যাতি আছে। তর্কচূড়ামণি নীরদ সি চৌধুরি, রাজ্যসভার তার্কিক ভুপেশ গুপ্ত (সিপিআই), র‍্যাংলার আনন্দমোহন বসু, ব্রাত্য গায়ক জর্জ বিশ্বাস, ভারতবিদ্যার বিশেষজ্ঞ নীহাররঞ্জন রায় ও বঙ্গজননীর মুখোজ্জ্বলকারী বংশ উপেন্দ্রকিশোর, তস্য পুত্র সুকুমার রায়, তস্য পুত্র সত্যজিৎ ও তস্য পিতৃশ্বসা লীলা মজুমদার সকলে একই পরগণা ও মহকুমার সন্তান।

    যাহা হঊক, দাঙ্গাবিধ্বস্ত সীমান্ত পার হইয়া নগর কলিকাতায় ঠাঁই প্রাপ্ত এই পরিবারটির পদবী ‘ইন্দ্র’, কিন্তু দুই জেনারেশন হইতে ইঁহারা তালুকদারি পদবি ‘রায়’ লিখিতে অভ্যস্ত হইয়াছেন।

    সাতদিনের মধ্যে ইঁহারা বুঝিলেন যে নবীন পরিস্থিতির সাথে মানাইয়া লইতে হইবে। ইহাই রাষ্ট্রবিপ্লবের কালে আত্মরক্ষার উৎকৃষ্ট পন্থা। অর্থাৎ?

    অর্থাৎ,
    এক, আঠারবাড়িয়ার আটচালা বাড়ি, ভিতরের বিরাট উঠান, সামনে বিশাল পুষ্করিণী ও গোবিন্দজীউর নাটমন্দির ভুলিয়া যাইতে হইবে।

    দুই, বাইশজন সদস্যকে তিনকামরায় চৌকি ও মাটিতে বিছানা করিয়া শুইতে হইবে। এইভাবে বাইশজনের স্থান সংকুলান না হওয়ায় ছাতের সিঁড়ির ‘ল্যান্ডিং’ - বাঙাল জিহবায় ‘হাঁটুভাঙ্গা’ - এবং ছাতের চিলেকোঠায় তথা খোলা ছাতে আবশ্যকতানুসার আশ্রয় লইতে হইবে। এই প্রাচীন মুসলমানী কায়দার ফ্ল্যাট বাড়িতে দোতলায় চারিখানি তিনকামরার ফ্ল্যাট। তাহারা আয়তক্ষেত্রাকারে বিস্তৃত। দুইটি ফ্ল্যাট সার্কাস মার্কেট প্লেসের উপর ও বাকি দুইটি কড়েয়া রোডের উপর। অর্থাৎ, ইহার দুইটি বাহু দুইরাস্তার সংযোগস্থলে একটি সমকোণ নির্মাণ করিয়াছে।

    তিন, বাড়ির মহিলাদের আব্রু সুরক্ষিত নয়। কারণ ঘর হইতে বারান্দা দিয়া বাথরুম যাইতে হইলে তাঁহারা রাস্তার বিপরীত ফুটপাথে অবস্থিত সার্কাস হোটেলের কর্মচারি, খরিদ্দার, গ্রাহক ইত্যাদি ইতরজনের নয়নপথে দৃশ্যমান হয়েন। অবিলম্বে পুরানো শাড়ি কাটিয়া পর্দা বানাইয়া সমগ্র বারান্দার রেলিং এর উপর তারের সহায়তায় টাঙাইয়া মহিলা সদস্যদের অসূর্যস্পর্শা করা হইল। রাত্রিকালে বাতি নিভিলে হাওয়ার আবাগমন হেতু পর্দা সরাইয়া দেওয়া হইত। বাড়িতে ডিসি কারেন্ট, কোন পাখা নাই। তালপত্রের চিত্রিত পাখা কয়েক গণ্ডা আনা হইয়াছে। তাহাতেই নিশাকালে ব্যজন করিতে করিতে মানুষজন ঘুমে ঢুলিয়া পড়িতেন।

    চার, সভয়ে মহিলারা আবিষ্কার করিলেন যে পাশের ১/বি ফ্ল্যাটের মুসলমান পরিবারটি শিক্ষিত ভদ্রলোক বটেন, কিন্তু বাড়ির কর্তাটি পূর্ব পাকিস্তানের হিন্দু নিধনের অন্যতম হোতা আকরাম খাঁ সায়েবের জামাই। আক্রাম খাঁ স্বনামধন্য পুরুষ ছিলেন। ভুক্তভোগী হিন্দুজন উঁহার নাম রাখিয়াছিলেন ‘আক্রমণ খাঁ’। আবার নীচের ১/এ ফ্ল্যাটেও মুসলমান - তৈয়ব খাঁ সায়েব। কী জ্বালা! কোথায় আসিলাম! রক্ষা আয়তক্ষেত্রের বাকি দুই বাহুতে হিন্দু পরিবারের বাস।

    পাঁচ, কিন্তু নীচে সবচেয়ে বড় এক দোকান মমতাজ স্টোর্স যাহা সমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস সরবরাহ করিয়া থাকে। পিছনে ডোমিনিয়ন টী এন্ড কোং এবং তাহার বিপরীতে ইসলাম টি দার্জিলিং টি’র বিক্রেতা। সর্বত্র মুসলমান, তবে নিকটেই কড়েয়া থানা। তাহাই ভরসা।

    ছয়, কিন্তু সর্বাপেক্ষা জ্বালাতন সামনের হোটেলে সকাল হইতেই গোমাংসের শিককাবাব ও বিরিয়ানি পাক করিবার কার্যবিধি। বারান্দাতেই উনান নির্মাণ করিয়া উহারা আদিম প্রক্রিয়ায় বড় বড় মাংসখন্ড মশলা মাখাইয়া শূল্যপক্ক করিয়া উৎকট গন্ধ ছড়াইয়া থাকে।

    বাড়ির কর্তা সতীশচন্দ্র, তাঁহার মাতা সুখময়ী ও স্ত্রী সরযূবালা সকলেই দীক্ষিত বৈষ্ণব; ত্রিপুরার পত্তন গ্রামের গোস্বামী পরিবারের যজমান। সতীশচন্দ্রের প্রয়াত পিতা গগনচন্দ্র ‘পঞ্চাশোর্ধে বনং ব্রজেৎ’ এই আপ্তবাক্য অনুসরণ করিয়া সন্ন্যাস ধারণ করিয়া বৃন্দাবনে কুঠিয়ায় থাকিয়া মাধুকরী বৃত্তির মাধ্যমে জীবনযাপন করিতেন। সুখময়ী প্রত্যহ স্নান সমাপনে শ্বেতচন্দন পিষিয়া তিলক ধারণ করিতেন। এখন কিম কর্তব্যম?

    ধীরে ধীরে উঁহাদের উপলব্ধি হইল যে নীচের ছাপোষা পরিবারটি নিরীহ ভদ্রলোক। আর আক্রাম খাঁর জামাই আব্দুর রেজ্জাক খান অনুশীলন দলের প্রাক্তন স্বাধীনতা সংগ্রামী। কালাপানির সাজা কাটিয়া দেশ স্বাধীন হইলে মুক্তি পাইয়া তথা অনেক কালাপানিতে সাজাপ্রাপ্তদের মত কমিউনিস্ট হইয়া কলিকাতায় আসিয়াছেন। ইনি বঙ্গদেশের কমিউনিস্ট পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। আড়াই দশক পরে যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভায় সিপিআইয়ের প্রতিনিধি হইবেন তাহাই বিধিলিপি।

    এই সময় এই উদ্বাস্তু পরিবারে শুধু বড় ছেলের বিবাহ হইয়াছে এবং বড় বৌমা সন্তানসম্ভবা। বড় ছেলে ভারতরাষ্ট্রের নিষ্ঠাবান সৈনিক। ফোর্ট উইলিয়ামে ডিউটি করিয়া সন্ধ্যায় হাঁটিয়া বাড়ি ফেরে।

    যথাসময়ে আমার জন্ম হইল। জন্মস্থান কলিকাতা মেডিক্যাল কলেজের জেনারেল ওয়ার্ডের মাটিতে টানা বিছানায়। সেই দুর্দিনে মাতা ঠাকুরাণীর খাট জোটে নাই। কর্তৃপক্ষ ‘ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই’ বলিয়া প্রসূতিকে ফিরাইয়া দিতে তৎপর। শেষে ধরাধরি করিতে পাওয়া গেল ডঃ ক্ষিতীন্দ্র মোহন গুণকে, পরবর্তীকালের বিশিষ্ট স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ। তখন উনি সদ্য পাশ করিয়া ইন্টার্নশিপ করিতেছেন। কিন্তু আত্মীয়তা বড় বালাই। উনি আমার জ্যেষ্ঠ মাতুলের শ্যালক বটেন। উহার সুপারিশে আমার মাতা স্মৃতিকণা জেনারেল ওয়ার্ডের মাটিতে অনেক আসন্নপ্রসবার পাশে একফালি জায়গা পাইলেন।

    স্মৃতিকণা বিস্মিত হইয়া দেখিলেন রোগীর দুধ বিড়ালে খাইয়া যায়, কেহ বারণ করে না। আহা কেষ্ট’র জীব! কিন্তু মধ্যরাত্রে এক বিকট আর্তনাদ ও ক্রন্দন। কোন রোগিণীর বামপদের কনিষ্ঠা অঙ্গুলিতে বিড়াল কামড় দিয়াছে, সম্ভবতঃ নেংটি ইঁদুর বলিয়া ভুল করিয়াছিল।

    আতংকিত স্মৃতিকণা ঈশ্বরের নাম জপিতে লাগিলেন ও গর্ভস্থ সন্তানকে অনুরোধ করিলেন শীঘ্র ভুমিষ্ঠ হইয়া তাঁহাকে এই নরকবাস হইতে উদ্ধার করিতে। পরের দিন কৃষ্ণজন্মাষ্টমীতে আমার জন্ম হইল। গায়ের রঙ ঘোর কৃষ্ণবর্ণ। মিল আরও আছে।

    বসুদেব রাষ্ট্রবিপ্লবের সময় সন্তানকে কোলে করিয়া নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ঘোর দুর্যোগের মধ্যে যমুনা পার করিয়াছিলেন। আমার পিতা সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে লইয়া পদ্মা পার করিয়াছেন। আর যৌবনকালে শ্রীকৃষ্ণ বৃন্দাবনে যাদবকুলের ষোলহাজার নারীর হৃদয়েশ্বর ছিলেন বলিয়া জনশ্রুতি।

    কিন্তু উহা দ্বাপরযুগের কথা। কাশীরাম দাস লিখিয়াছেনঃ

    “ - মাংসশ্রাদ্ধ, গোমেধ, অশ্বমেধ,
    দেবর হইতে পুত্র কলিতে নিষেধ”

    ইহার ইতরযানী রূপ হইল ‘কৃষ্ণ করলে লীলা, আর আমি করলে বিলা’।

    যাহা হউক, আমি স্বভাবে কাপুরুষের ডিম্ব, কোন ক্রমে এক ঘোষ পরিবারে দারপরিগ্রহ করিয়াছি মাত্র।

    মেডিক্যাল কলেজ হইতে ছুটি পাওয়ার পূর্বে স্মৃতিকণা সভয়ে লক্ষ্য করিলেন যে সদ্যোজাত সন্তানটি হাতবদল হইয়াছে। তৃতীয় দিন ধাত্রী যে শিশুকে স্নান করাইয়া তাঁহার কোলে তুলিয়া দিল সেটি অপেক্ষাকৃত গৌরবর্ণ। তাঁহার চিল-চিৎকারে সেবিকা ও ধাত্রীর কোন চিত্তবিক্ষেপ হইল না । বৈকালে পরিবারের লোকজন আসিয়া আবার ডঃ গুণের মধ্যস্থতায় সমস্যার সমাধান করিল।

    আমি আশ্চর্য, মাতাঠাকুরাণী কেন এমন ঈশ্বরপ্রদত্ত বর, অর্থাৎ গৌরবর্ণ পুত্রের মাতা হওয়ার সুযোগ হেলায় প্রত্যাখ্যান করিলেন!

    উত্তরে উনি বলিলেনঃ

    ‘সন্তান যদি বা হয় অসিতবরণ,
    জননীর চোখে সে যে কষিতকাঞ্চন।’

    এইভাবে আমি পিতৃপুরুষের ভিটা হইতে উচ্ছেদ হওয়া এক বাঙাল পরিবারে বাইশজন সদস্যের মধ্যে গা ঘেঁষাঘেঁষি করিয়া যুদ্ধোত্তর কলিকাতায় ‘দাদুর আহ্লাইদ্যা নাতি’ হিসাবে বিশেষ প্রশ্রয়ের মধ্যে গোকুলে বাড়িতে লাগিলাম। সকলে আশা এবং বিশ্বাস করিতেন যে নবীন প্রজন্মের এই প্রথম নবজাতকটি - যে নাকি জন্মাষ্টমী তিথিতে এবং দার্শনিক রাধাকৃষ্ণনের জন্মদিন ৫ই সেপ্টেম্বরে জন্মিয়াছে - সে বংশের কুলপ্রদীপ হইয়া স্বর্গে বাতি দিবে, বিদ্যাদিগগজ মহাধনুর্ধর হইবে।

    কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী, আমি সকলকে হতাশ করিয়াছি। যেমন মহানগরী কলিকাতা অনেককে হতাশ করিয়াছে। আসলে আমি ও কলিকাতা একইসঙ্গে কলেবরে বর্ধিত হইয়াছি, গরিমায় নহে। কেন?

    হয়ত গোড়ায় গলদ ছিল । ইহা হয়ত আমার ও কলিকাতার প্রতি সমানভাবে প্রযোজ্য। জব চার্ণকের পত্তনী বেনিয়া কলিকাতার জন্ম বংগসংস্কৃতির পীঠ হুগলীর মত ঐতিহ্যবাহী নহে।

    হয়ত আমি আসলে ভ্রমক্রমে হাতবদল হওয়া ভুল সন্তান; রায়পরিবারের কেহ নই। এই সংশয়, এই দ্বিধা আমাকে আজীবন তাড়াইয়া ফিরিয়াছে।

    তাই জীবনসায়াহ্নে এই সত্তর ছুঁই ছুঁই সময়ে বিস্মৃতপ্রায় পঞ্চাশ-ষাটের কলিকাতার স্মৃতি লিপিবদ্ধ করিতে চাহি, ‘নশটালজিয়া’ সদাই মোহক, কিন্তু কর্মনাশা। অতএব, সাধু সাবধান!
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    | | | | | | | | | ১০ | ১১ | ১২ | ১৩ | ১৪ | ১৫ | ১৬
  • ধারাবাহিক | ২৯ এপ্রিল ২০২১ | ৩৪৮১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • santoshbanerjee | 43.239.***.*** | ২৯ এপ্রিল ২০২১ ২০:৪০105274
  • ভালো লাগছে !!প্রেমে পড়লাম !!আরো পড়তে চাই !!

  • সমরেন্দ্র বিশ্বাস | 182.7.***.*** | ৩০ এপ্রিল ২০২১ ০০:৪৬105281
  • জীবনের তীব্র বাস্তবতাকে রসসিক্ত করে এখানে পরিবেশিত করা হয়েছে। বেশ ভালো লাগলো! 

  • Amit | 203.***.*** | ৩০ এপ্রিল ২০২১ ০২:৫৫105285
  • শুরুটা জব্বর হয়েছে রঞ্জনদা। আগে বাড়ান। 


    ঘরের সকলে সুস্থ আছেন আশা করি। 

  • বোধিসত্ত্ব | 122.175.***.*** | ৩০ এপ্রিল ২০২১ ১০:২৬105286
  • এ স্মৃতি তোর মনে ফিরে ফিরে আসে! 

  • শেখরনাথ মুখোপাধ্যায় | 117.194.***.*** | ৩০ এপ্রিল ২০২১ ১১:৪১105287
  • শুরুটা আশাপ্রদ। উৎসাহ নিয়ে পড়ব।

  • Arati chanda | 182.7.***.*** | ৩০ এপ্রিল ২০২১ ১২:২৩105288
  • খুব ভাল লাগছে। এসব কথা আপনার  মুখে  অনেক শুনেছি  তবে ছাপার অক্ষরে  বেশি ভালো  লাগছে 

  • Ranjan Roy | ৩০ এপ্রিল ২০২১ ১৩:২৮105290
  • সবাইকে ধন্যবাদ, পড়ার এবং উৎসাহ দেয়ার জন্যে।


    অমিত,


      হ্যাঁ, আমরা ভাল আছি। মেয়ে ষেরে উঠছে।

  • manimoy sengupta | ০১ মে ২০২১ ১১:৫৯105324
  • আমার বয়স এখন পঁয়ষট্টি ছুঁইছুঁই। মনে আছে, ক্লাসফোরে পড়ি তখন,  গড়ের মাঠে হাওয়া খেতে গিয়ে খেয়েছিলাম, ভিমটো, ঠান্ডাপানীয়। বাক্স থেকে বার করে দিয়েছিলো। রংটা মনে আছে। সবজেটে হলুদ। স্বাদ কেমন ? মনে নেই।  

  • Abhyu | 47.39.***.*** | ০১ মে ২০২১ ১২:২৭105325
  • রঞ্জনদা, সবাই ভালো আছেন জেনে স্বস্তি পেলাম।

  • দীপঙ্কর দাশগুপ্ত | 202.142.***.*** | ১১ মে ২০২১ ১৩:০২105859
  • সাম্প্রতিকতম কিস্তিটা প্রথমে চোখে পড়েছে। লেখার শিরোনাম দেখে খুঁজে বের করলাম প্রথম কিস্তি। আর শুরু করে শেষ যে কখন হল বুঝতেই পারলাম না। ষাটের দশকের একেবারে গোড়ায় জন্মেছি তো তাই পড়তে গিয়ে বাবা-মায়ের কাছে মামা-মাসির কাছে শোনা অনেক কথা মনে পড়ছে। আপনি গল্প বলে থুড়ি লিখে চলুন আমরা পড়তে থাকি দেখ্তে থাকি পুরনো কলকাতার আটপৌরে ছবি।      .

  • শুভংকর ঘোষ রায় চৌধুরী | ২৮ মে ২০২১ ০০:৪৯106493
  • অসামান্য! অসামান্য! আমার গুরুচণ্ডা৯-তে আসা সার্থক! লাজবাব শুরুয়াত! দেখি, সামনে কী আছে...

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল মতামত দিন