এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • রক্তমাংস ও একটি মানুষের উৎসব

    শিবাংশু লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১২ মার্চ ২০১৯ | ১৮৮৮ বার পঠিত
  • হোরি খেলত নন্দলাল, বিরজমেঁ। ব্রজভূমিতে হোরি খেলতে গেলে কানু ছাড়া গীত নাই। ইতিহাস বলছে কানুই অনার্যদের আদি নেতা। বহিরাগত আর্যদের সঙ্গে সমানে সমানে লড়ে কখনও জিতেছিলেন, কখনও বা পারেননি ভারতভূমির এই কৃষ্ণবর্ণ ব্যক্তিত্বটি। ইনি পুরাণবর্ণিত দ্বারকার ন'ন, মথুরার ন'ন, ন'ন মহাভারতের গীতাকথক। ব্রাহ্মণদের ছাঁচে ফেলা 'ভদ্রলোক' সভ্যতার যেসব উৎসব অনুষ্ঠান, তার সমান্তরালে নিম্নবর্গীয়দের প্রাণের উদযাপন, যার আবশ্যিক অঙ্গ বন্ধহীন শৃঙ্গাররসে উত্তাল, আসব নিমজ্জিত হোলিকা দহন ও প্রমত্ত ব্যসন, তাকে আশ্রয় দিতে কানু ছাড়া আর কেই বা আছেন। অতএব ব্রজভূমির পশুপালক সমাজ, যাঁরা এ মাটির আদত সন্তান, বসন্তের ব্যাকানালিয়ায় প্রকৃতির সঙ্গে যখন একাত্ম হয়ে ওঠেন, কানু তখন তাঁদের স্বাভাবিক অবলম্বন হয়ে ওঠেন। মুক্তির, ভক্তির, শক্তির দেবতা। তাই ব্রজভূমির নন্দলালকে বন্দনা করেই এদেশের বসন্ত উৎসব, হোলি।বাঙালির দোলযাত্রা। ইস মেঁ বুরা ক্যা?
    হোলির বাজারে একটাই স্লোগান। বুরা না মানো, হোলি হ্যাঁয়। হাজার বছর আগে রাজারা বছরের এই একটা দিন ভাঁড়েদের অনুমতি দিতেন তাঁদের নিয়ে ঠাট্টা ইয়ার্কি করার জন্য। সেই ট্র্যাডিশন আজও চলেছে। তা কেউ না মানলেও বিহারিদের জন্মগত ভাঁড়ামির অধিকারে হোলির দিন " সা রা রা রা রা" র জলে এসব শৌখিন মজদুরিকে রঙের বালতিতে চুবিয়ে দেওয়ার গপ্পো শেষ হওয়ার নয়।
    বহুদিন হলো। খ্রিস্টিয় পঞ্জিকা শুরু হবার সমসময়। এদেশের আদি সামাজিক উৎসব ছিলো ফসল কাটার পর উদ্দাম বসন্ত উদযাপন। মানুষ তাদের গৃহ ও পরিবেশ সংস্কার করতো। সামাজিকভাবে সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতো সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্য। প্রত্যেকে নিজেদের বাসস্থান ধুয়ে-মুছে, তৈললেপন করে সুগন্ধি লতাগুল্মের ধূপদীপ দিয়ে সজ্জিত করতো তাকে। মাঘ-ফাল্গুন মাস জোড়া এই উদযাপনের মুখ্য অংশ ছিলো নির্বাধ ভোগসুখের পরম্পরা। এই উৎসবটি আসলে প্রাচীন প্রজননমুখী লোকবিশ্বাসের অঙ্গ । শৃঙ্গারকেন্দ্রিক খেলাধুলো, নৃত্যগীত ও ভাঁড়ামির প্রমত্ত আয়োজন। পুরুষ ও নারী, জাতি-বর্ণ নির্বিশেষে পরস্পরকে নানাভাবে রঙিন রঞ্জক দিয়ে আবৃত করতো। এই সময় এবিষয়ে কোনও রকম সামাজিক বিধিনিষেধ নিয়ে লোকে মাথা ঘামাতো না। সন্ধ্যা নামলে মানুষ ফুলসাজানো রথ আর জ্বলন্ত মশাল নিয়ে পুর বা গ্রামপরিক্রমা করতো। প্রথামাফিক এই সময় উদ্দাম নৃত্যগীতের সঙ্গে পরস্পরের প্রতি ফুল, তণ্ডুল ও সুগন্ধি নিক্ষেপ করার সঙ্গে ঢোলক, মৃদঙ্গ ও শঙ্খ বাজিয়ে উদযাপন করাই ছিলো বসন্ত-উৎসবের মুখ্য আকর্ষণ।

    এই অনুষ্ঠানের পর রাজা নিজে হলকর্ষণ করতেন। ঘৃতসিক্ত বীজ রোপন করে কৃষিকাজশুরু করা হতো। এর ঠিক পক্ষকাল পরেই ছিলো মদন আরাধনা বা কামমহোৎসব।

    'প্রদ্যোতস্য সুতা বসন্তসময়স্তংচেতি নাম্রা ধৃতি
    কামঃ কামমুপৈত্বয়ং মম পুনর্মনৈ মহানুৎসবঃ ।।'
    ( শ্রীহর্ষের রত্নাবলী নাটকে কামউৎসবে রাজার উক্তিঃ সপ্তম শতক)
    'প্রদ্যোতের কন্যা ( রতি দেবী), বসন্তসময় এবং তুমি বিদ্যমান। অতএব নাম দ্বারাই কাম পর্যাপ্ত সন্তোষ লাভ করুন। এই মহান উৎসবকে ( বসন্তকালীন কামমহোৎসবকে) নিজস্ব উৎসব মনে করছি। '

    জীমূতবাহন লিখেছিলেন দায়ভাগ গ্রন্থ দ্বাদশ শতকে। তা'তে রয়েছে হোলাক বা হোলক উৎসবের কথা। সারা উত্তর ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশেও এই উৎসবটির সম্যক প্রচলন ছিলো। সময়ের সঙ্গে এই পার্বণটির ক্রমবিবর্তন বেশ আকর্ষণীয় বিষয়। আদিযুগে এই উৎসবটি ছিলো কৃষিসমাজের পূজা অনুষ্ঠান। শস্যপূর্ণা চ বসুন্ধরার কামনায় নরবলি ও যৌনলীলাসম্পৃক্ত নৃত্যগীত উদযাপন ছিলো এর মুখ্য অঙ্গ। এই অনার্য ঐতিহ্যের সঙ্গে পরবর্তীকালের বৈদিক উপচার হোমযজ্ঞ মিলে যায়, নরবলির বদলে পশুবলি প্রচলিত হয়। সুশস্যকামনায় পূজা অর্চনার ক্ষেত্রে যেমন বলি ও যজ্ঞ গৃহীত হয়, একইভাবে হোলির শৃঙ্গাররসমুখর দিকটি কেন্দ্র করে বসন্ত, মদন ও কাম উৎসবের এবং রাধাকৃষ্ণের লীলাখেলার উৎপত্তি হলো। এর সঙ্গে কোন এক মূর্খ রাজাকে ব্যঙ্গবিদ্রূপ করার জন-ইচ্ছাটিও প্রথা হিসেবে সামগ্রিকভাবে হোলি উৎসবের অংশ হয়ে গেলো।
    যেরকম নথিভুক্ত ইতিহাসে দেখা যায়, তৃতীয়-চতুর্থ শতকে, অর্থাৎ গুপ্তযুগের প্রাথমিক সময়কাল থেকেই ষোড়শ শতক পর্যন্ত সম্পূর্ণ পুরাণযুগে বসন্ত বা মদন বা কামমহোৎসব নামে একটি উৎসব উত্তরভারতের সর্বত্র অতিসমারোহে পালিত হতো। এই উৎসবের উল্লেখ পাওয়া যায় তৃতীয়-চতুর্থ শতকে বাৎসায়নের কামসূত্রে, সপ্তম শতকে শ্রীহর্ষের রত্নাবলীতে, অষ্টম শতকের মালতী-মাধব নাটকে, একাদশ শতকে অল-বিরুনির লেখায়, দ্বাদশ শতকে জীমূতবাহনের কালবিবেক গ্রন্থে এবং ষোড়শ শতকে রঘুনন্দনের বিবরণে। এই উৎসবে প্রচুর নৃত্যগীতবাদ্য, শৃঙ্গারসূচক সংলাপ ও যৌনতাব্যঞ্জক অঙ্গভঙ্গি মুখ্য স্থান নিয়ে থাকতো। পূজা অনুষ্ঠানের অভীষ্ট দেবতা ছিলেন মদন ও রতি দেবী এবং পুষ্পময় চৈত্রের অশোকবৃক্ষের ছায়ায় তার আয়োজন করা হতো। সপ্তম শতকে রচিত শ্রীহর্ষের রত্নাবলী নাটকে মদন মহোৎসবে ভিজ্যুয়ালটি এইভাবের বর্ণনা করা হচ্ছে,
    'অহো, পৌরগণের আহ্লাদ অত্যন্ত উৎকর্ষ প্রাপ্ত হইতেছে, যেহেতু দিবস প্রারম্ভতুল্যকারী কুন্কুমচূর্ণবদ গৌর , বিক্ষিপ্ত পীত চূর্ণরাশি ও স্বর্ণালংকরণ দীপ্তি এবং কিণ্কিরাত পুষ্পশোভিত ভার অবনত পীত পরিচ্ছদশোভিত কৌশাম্বী নগর যেন স্বর্ণদ্রব মন্ডিত লোকযুক্ত হইয়া শোভা পাইতেছে'। (অর্থ, পীত বস্ত্রশোভিত পুরবাসীরা পীতচূর্ণরাশি ( আবির) প্রক্ষেপ করে অশোকবৃক্ষের ছায়ায় স্বর্ণমন্ডিত হয়ে কামউৎসব উদযাপন করছে।)
    ব্যাপারটি অবশ্য পুরোপুরি এদেশী নয়। য়ুরোপে এর প্রচলন দীর্ঘকাল ধরেই ছিলো। রোমান পঞ্জিকায় পয়লা মার্চ ছিলো বর্ষারম্ভ। মার্চ মাস মঙ্গলগ্রহের দেবতার নামে। যিনি পৌরুষের দেবতাও ছিলেন। এইদিনটি থেকে পুরোহিতরা একপক্ষকাল পথে পথে নেচে গেয়ে উল্লাস উদযাপন করতেন। ১৬ই ও ১৭ই মার্চ ছিলো ব্যাকাস নামে যে দেবতাটি গ্রিক ডায়োনিসাসের প্রতিরূপ, তাঁর পর্ব । সারা রোমান সাম্রাজ্য জুড়ে উদ্দাম পানভোজনের উৎসব হিসেবে পালন করা হতো সেটি। নিম্নবর্গীয়, অ-রোমান মানুষদের এই ব্যাপক উদযাপন দেখে রোমক অভিজাত শ্রেণীর সিনেট এই উৎসবটির উপর নানা বাধানিষেধ আরোপ করে। যদিও জুলিয়স সিজরের আদেশে এই উৎসবটির উপর রোমক সিনেটের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় যিশুর জন্মের বেশ আগেই।
    পুরোহিতদের এই নৃত্যগীতকে মহাজাগতিক শক্তির প্রতি আহ্বান মনে করা হতো। পরবর্তীকালে প্রায় সমগ্র খ্রিস্টিয় বিশ্বে যে কার্নাভল (Carnaval) শোভাযাত্রা দেখা যায়, তার উৎস প্রাচীন পুরোহিতদের নৃত্যসংকীর্তন। এর মূল রয়েছে সুমেরিয়দের পৃথিবীমাতা ও প্রজননমুখী লোকধারার (Fertility Cult) উত্তরাধিকার ।
    প্রাচ্যের এইসব লৌকিক উদযাপন খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয়শতক থেকেই প্রচলিত ছিলো। প্রকৃতিবাদী 'ধর্ম'বিশ্বাসের নানা অঙ্গ রোমান সভ্যতার আগে থেকেই প্রভাবিত করেছিলো য়ুরোপিয় লোকযাপনকে। আদি খ্রিস্টিয় লোকাচারের মধ্যে ব্যাকাসের নামে প্রকৃতিবাদী উৎসব ভালোভাবেই জায়গা করে নিয়েছিলো। কিন্তু কালক্রমে ক্যাথোলিক বিশ্বাসের প্রভাবে তা ক্ষীণ হয়ে যায়।
    রোমান সিনেটের পুরুষ সদস্যরা এর বিরোধিতা করলেও তাঁদের অন্তঃপুরিকারা প্রকৃতিবাদী ক্রিয়াকলাপের সঙ্গে বিশেষভাবে জড়িত ছিলেন। ব্যাকাস বা ডায়োনিসাসের নামে যে বাধাবন্ধহীন উৎসব পালন করা হতো তার মূল চালিকাশক্তি ছিলেন রোমান অভিজাত মহিলারা। মার্চমাসের ১৬ই ও ১৭ই তাঁরা রোমের অ্যাভেন্তাইন পাহাড়ে সিমিলিয়া কুঞ্জে প্রাচীন গ্রিকদের অনুসরণে জাঁকজমক সহকারে এই উৎসব উদযাপন করতেন। ক্ষমতাশালী নারীপুরোহিতদের নেতৃত্বে এই উৎসব সমাজের বিভিন্ন স্তরে বেশ আধিপত্য বিস্তার করে। বসন্তঋতুকালীন শৃঙ্গার উৎসব পালন সারা পৃথিবীতেই বিশেষভাবে প্রচলিত ছিলো। যদিও এই উৎসবটিকে ঘিরে ক্ষমতাশালী ও নিম্নবর্গীয় মানুষের মধ্যে ক্ষমতার রাজনীতির টানাপোড়েন কখনও স্তিমিত হয়নি।
    যেরকম অনুমান করা হয়, এদেশে ষোড়শ শতকের পরবর্তীকালে চৈত্রীয় কামমহোৎসব, ফাল্গুনী দোলপূর্ণিমায় প্রচলিত হোলি উৎসবের সঙ্গে মিলে যায় এবং পৃথকভাবে মদন উৎসব উদযাপনের দিন শেষ হয়ে যায়। আসলে মুসলিম রাজাদের আমলে হোলি উৎসব রাজ অনুগ্রহে প্রচুর পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করে এবং মদন উৎসবকে গ্রাস করে নেয়। তবে এর ধর্মীয় দিকটি বেঁচে থাকে যখন একাদশ শতক নাগাদ রাধাকৃষ্ণের ঝুলন উৎসব এই চৈত্রীয় পার্বনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হতে থাকে। অল-বিরুনির বিবরণ ছাড়াও গরুড় ও পদ্মপুরাণে এমত পড়া যায়। তারও পরবর্তীকালে এই অনুষ্ঠান চৈত্র পূর্ণিমা থেকে ফাল্গুনী পূর্ণিমায় এগিয়ে আসে। এই উৎসবের প্রধান পালনীয় কৃত্য ছিলো ঝুলন আরোহী রাধা ও কৃষ্ণের প্রতি সখিসহচরীরা আবীর, কুমকুম ও পুষ্পবৃষ্টি করবে। বাংলায় এই জন্যই উৎসবটিকে 'দোলযাত্রা' বলা হয়, ঝুলনে দোলায়িত পুরুষ-প্রকৃতির যুগ্মসম্মিলনের দৈবী মাহাত্ম্য মুখর এর গরিমা। প্রাক বৈদিক আদিম কৃষিজীবী সমাজের ব্যাকানালিয়ার উদযাপন ব্রাহ্মণ্য প্রভাবে হোলির বর্তমান রূপে বিবর্তিত হয়েছে। এখনও এই উৎসব মূলত 'শূদ্রে'র উৎসব। হোলিকাদহন বা বাংলায় যার নাম চাঁচর, তার আগুন অস্পৃশ্য শূদ্রদের থেকে গ্রহণ করার বিধি রয়েছে।

    উত্তরভারতের অন্যান্য প্রান্তের মতো বঙ্গদেশেও দোলপূণিমার দিন বসন্ত উৎসব পালন করা হতো।বস্তুত এদেশে এই উৎসবটির আর্যসংস্কৃতিমুখিন রূপরেখাকে অতিক্রম করে আর্যেতর উদ্দাম উদযাপন অনেক বেশি প্রকট হতে দেখা যেতো। কারণ এটি মূলত কৃষিজাত সমাজের উৎসব। 'নিম্নবর্গীয়'দের প্রাণের উদযাপন। পুরাণযুগের পর সুলতানি আমলে এই উৎসবের সঙ্গে কামদেবতার পরিবর্তে কৃষ্ণরাধার আধ্যাত্মিক সংযোগটিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। ফলে আর্যাবর্তের হোলি এবং বাংলার বসন্ত-উৎসব তার নবতর সংস্করণ 'দোলযাত্রা' নামে বৈষ্ণবমত বিশ্বাসীদের প্রধান উদযাপন হয়ে দাঁড়ায়। শ্রীচৈতন্য ছিলেন এই পরিবর্তনটির পথিকৃৎ। মূল বসন্ত বা কামমহোৎসবের সঙ্গে ওতপ্রোত শৃঙ্গারমুখী নগরভ্রমণ বৈষ্ণব অধ্যাত্মপ্রথায় নগরসংকীর্তনে বদলে যায়। বৌদ্ধ সহজযান থেকে উদ্ভূত বাংলা সহজিয়া লোকধর্মের বিভিন্ন শাখার অনুগামীদের কাছে দোলযাত্রা ক্রমে অত্যন্ত লোকপ্রিয় হয়ে ওঠে। নবাবি আমল শেষ হবার পর বৈষ্ণবদের দোলযাত্রা উদযাপন বড়ো মাপের সামাজিক অনুষ্ঠান হয়ে দাঁড়ায়। সমাচার দর্পণে (৯ই মার্চ, ১৮২২) দেখতে পাই, "মোকাম শ্রীরামপুরের গোস্বামিদিগের স্থাপিত শ্রীশ্রীযুত রাধামাধব ঠাকুর আছেন পরে এই মত দোল যাত্রাতে শ্রীযুত বাবু রাঘবরাম গোস্বামির পালা হইয়া দোল যাত্রাতে রোসনাই ও মজলিশ ও গান বাদ্য ও ব্রাহ্মণ ভোজন ও ব্রাহ্মণ পণ্ডিতেরদিগের পুরস্কার আশ্চর্য্য রূপ করিয়াছেন ইহাতে অতিশয় সুখ্যাতি হইয়াছে।"
    কয়েকবছর পরে এই সংবাদপত্রেরই ২৮শে মার্চ, ১৮৪০ সালে বঙ্গদেশে এই উৎসব পালনের একটি অন্য রূপের বর্ণনা পাওয়া যায়।
    "হুলির উৎসব।-বর্ত্তমান কালীন হুলির উৎসবে নানা দাঙ্গাহঙ্গামা ঘটিয়াছে বিশেষতঃ কলিকাতাস্থ শিক জাতীয়েরা ঐ উৎসবের ব্যয় নির্ব্বাহার্থ চাঁদা করিয়াছিল। পরে তাহারা অত্যন্ত মদ্য পানে মত্ততা পূর্ব্বক আবির দ্বারা অতি ভয়ঙ্কর রক্তবর্ণ হইয়া এবং নানা কুৎসিত গান করত পথে২ বেড়াইতে ছিল ইতি মধ্যে কাবল হইতে আগত কএক জন মহম্মদীয়েরদিগকে দেখিয়া তাহারদের গাত্রও আবিরাক্ত করিল।...." (বানান অপরিবর্তিত)। 'শিক' জাতীয় বলতে মনে হয় শুধু শিখধর্মীয়দের নয়, সামগ্রিকভাবে উত্তর ভারতীয়দের কথাই বলা হয়েছে। বস্তুত প্রায় দুশো বছর আগের এই বর্ণনা আজকের উত্তরভারতের হোলি উদযাপনের সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। বাঙালির 'দোলযাত্রা'র থেকে এর বিপুল ফারাক।
    উত্তর ভারতে প্রচলিত হোলি উৎসবের যে সাধিত অমার্জিত উদযাপন রয়েছে তার থেকে ঊনবিংশ শতকের বাবুকালচারভিত্তিক নাগরিক বাঙালির 'দোলযাত্রা'র চোরাস্রোত আর অবক্ষয়ের ডাইনামিক্সের মধ্যে বিশেষ পার্থক্য ছিলোনা। এই পর্যায় থেকে দোলউৎসব উদযাপনে ব্রাহ্ম রুচিবোধ ও য়ুরোপিয় সফিস্টিকেশন নিয়ে আসার কৃত্যটি করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সেকালের বাঙালির থেকে একালের বাঙালির রুচি ও মননবোধে আরো অসংখ্য পরিমার্জন সাধনের পথে কবির এই প্রয়াসটিও অল্পবিস্তর সফল হয়েছিলো। তবে শান্তিনিকেতনী দোলের পৌত্তলিকতা, কালিদাসের কুমারসম্ভব বা বিহার অওধের শারীরমাংসে তপ্ত "রং বরসে" জুনুন, সবই পরস্পর পৃথক নিগূঢ় রণিত সন্ধান। দিনের শেষে উৎস খুঁজতে গেলে হোলি একান্তভাবে মানুষের উৎসব। দৈবী মহিমা আরোপ করে তার প্রতি অবিচার করার কোনও হেতু নেই।
    আমাদের কবি যেমন বলেছেন, সহজসুন্দর,

    .....সেইখানে তার পরাণখানি, যখন পারি বহে আনি,
    নিলাজ রাঙা ফাগুন রঙে রাঙিয়ে দিতে থরে থরে ।।

    ফাগুন হাওয়ায় রঙে রঙে পাগলঝোরা লুকিয়ে ঝরে ....
    (সৌজন্যঃ ইরাবতী)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১২ মার্চ ২০১৯ | ১৮৮৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • শিবাংশু | ***:*** | ১২ মার্চ ২০১৯ ০৫:১৮49671
  • এইটি শোনা যেতে পারে,

  • শিবাংশু | ***:*** | ১২ মার্চ ২০১৯ ০৫:২৮49672
  • প্রিয় শিল্পী অশ্বিনী ভিড়ে দেশপাণ্ডের গাওয়া একটি সুললিত হোরি,
  • b | ***:*** | ১২ মার্চ ২০১৯ ০৫:৫৩49673
  • pi | ***:*** | ১৫ মার্চ ২০১৯ ০৩:০১49677
  • মকর সংক্রান্তিতে, মানে ভোগালি মাঘবিহুতে তো গাছের ডালপালা পোড়ানো হয় অসমে, খড় না।
    মানে আপার অসমে যা দেখি। কাঠের স্ট্রাকচর, মেজি। কাকভোরে মেজি জ্বালানো, তার আগে প্রায় রাতভর আগুন পোহাতে পোহাতে চড়ুইভাতি।

    লেখাটি অবশ্য পড়িনি এখনো। পড়ব
  • Prativa Sarker | ***:*** | ১৫ মার্চ ২০১৯ ০৫:১৪49674
  • হোলক থেকে হোলিকা ?
  • শিবাংশু | ***:*** | ১৫ মার্চ ২০১৯ ০৫:৩৭49675
  • @প্রতিভা,
    'হোলক' শব্দটির অর্থ 'তৃণাগ্নিভৃষ্ট অর্ধপক্ক শমীধান্য'। অর্থাৎ শষ্য অবশেষ (খড় ও শুকনো আগাছা) পুড়িয়ে দিয়ে নতুন শষ্যের আবাহন। পুরাণযুগে এর সঙ্গে দুটি অনুষঙ্গ যোগ করা হয়েছিলো। এক, রাধা ও কৃষ্ণের প্রমোদ উৎসবে (বসন্ত-উৎসব) সখিদের হোলকদাহন বা হোলিকা। অন্যটি, ভাগবত ও পুরাণে 'হোলিকা' নামের এক রাক্ষসীকে জীবন্ত দাহ করে শুভশক্তির আহ্বান করার আখ্যান। পরিস্থিতি বিচার করলে মনে হয় হোলিকা 'রাক্ষসী' অনার্যসভ্যতার প্রতীক। কারণ এই উৎসবটি মূলত অনার্য উদযাপন ছিলো। আর্যমতের বসন্ত-উৎসবকে হোলির ব্যাকানালিয়ায় পরিণত করার আগে আর্যরাজশক্তি পুরো উপলক্ষটিকেই গ্রাস করে নিতে চেয়েছিলো।

    উত্তর ও পশ্চিম ভারতের এই উৎসবটিকে বঙ্গদেশে 'চাঁচর' বা 'ন্যাড়াপোড়া' নাম দেওয়া হয়েছে। এই 'ন্যাড়া' বলতে আবার বৌদ্ধ সহজিয়া সাধনে বিশ্বাসী নিম্নবর্গীয় মানুষদের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।
  • b | ***:*** | ১৫ মার্চ ২০১৯ ১০:৫৯49676
  • আসাম বা কাছাড় অঞ্চলে (মণীন্দ্র গুপ্তের স্মৃতিকথা ন), এই খড় পুড়ানো হয় পৌষ সংক্রান্তিতে।
  • Sumit Roy | ***:*** | ২২ মার্চ ২০১৯ ০৪:২৬49679
  • লেখাটি পড়ে খুব ভাল লাগল। এসব নিয়ে গবেষণাগুলোর রেফারেন্স হবে? যেমন, যেরকম অনুমান করা হয়, এদেশে ষোড়শ শতকের পরবর্তীকালে চৈত্রীয় কামমহোৎসব, ফাল্গুনী দোলপূর্ণিমায় প্রচলিত হোলি উৎসবের সঙ্গে মিলে যায়... এখানে কিভাবে অনুমান করা হচ্ছে, এই সিদ্ধান্তগুলো গ্রহণ, আবিষ্কারের ব্যাপারগুলো নিয়ে রিসার্চ পেপারের সূত্র পাওয়া যাবে? বা কোন গ্রন্থে উল্লেখ থাকলে সেগুলোর নাম দেয়া যাবে? আমার এগুলো ঘেটে দেখার আগ্রহ আছে।

    অনেক জায়গায় দাবি করতে দেখেছি, প্রহ্লাদ, হিরণ্যকশিপু, হোলিকাদের ঘটনাটি সংঘটিত হয় মুলতানে। মুলতানে সংঘটিত হয়েছে সেটাই বা কেন দাবি করা হয়? সেখানেই কি এই মিথের উৎপত্তি? নৃসিংহ অবতারের গল্পে হোলিকার উপাখ্যানকে অতিরিক্তই মনে হয়। স্থানীয় হোলক উৎসবকে এডপ্ট করার জন্যই এরকম মিথ তৈরি হয়ে থাকতে পারে বলে মনে হয়।
  • Sumit Roy | ***:*** | ২৪ মার্চ ২০১৯ ০১:০১49681
  • অনেক ধন্যবাদ আপনাকে
  • শিবাংশু | ***:*** | ২৪ মার্চ ২০১৯ ১০:২৪49680
  • @Sumit Roy
    বিষয়টি নিয়ে নানা জায়গাতেই আলোচনা পাওয়া যায়। এই মুহূর্তে স্মৃতি থেকে উদ্ধার করে জানাই আপনার তোলা নির্দিষ্ট প্রশ্নটি প্রসঙ্গে আচার্য নীহাররঞ্জনের 'বাঙ্গালীর ইতিহাস-আদি পর্বে' আলোচনা রয়েছে। এছাড়া
    Daily Life in Ancient India : Jeannine Auboyer
    The Wonder that was India: A.L.Basham
    The Hindu History : A. K. Mazumdar বইগুলিতেও আলোচনা পাওয়া যাবে। তবে এটি অসম্পূর্ণ তালিকা।
  • . | 162.158.***.*** | ০২ মার্চ ২০২০ ১৯:২৪91205
  • তুলি।
  • ঋক | 162.158.***.*** | ০২ মার্চ ২০২০ ২০:৩৮91207
  • সমৃদ্ধ হলাম। হোলি আর দোলের মিশে যাওয়ার সময়টা আরও ভালো করে জানতে চাই সম্ভব হলে। আর হোলির উৎপত্তি এক্সাক্টলি কোন রিজিওনে?
  • শিবাংশু | ০৩ মার্চ ২০২০ ১৫:৫৫91217
  • @ঋক,
    দোল আর হোলি সে অর্থে মেলেনি কখনো'। এখনও একদিনের ব্যবধান থাকে উদযাপনে। দুটো ধারাই সমান্তরাল। ইংরেজ আমলে ব্যাপারটার প্রতি বিশেষ আমল দেওয়া হতোনা। 'হোলি' একান্ত ভাবেই উত্তরভারতের গাঙ্গেয় সমভূমির উৎসব।পরবর্তীকালে রাষ্ট্রশক্তি উত্তরভারত ভিত্তিক হয়ে যাবার ফলে বাঙালিজীবনে 'হোলি'র প্রভাব বাড়ে। কনওজিয়া সংস্কৃতির প্রভাব ছিলো উত্তর, মধ্য ও পশ্চিম ভারতে। হোলি সেসব জায়গায় প্রধান উৎসব। দক্ষিণ ভারতে হোলি নেই। পূর্বভারতে, অর্থাৎ বাংলা, ওড়িশা ও অসমে দোলযাত্রার রমরমা। কারণ বৈষ্ণব সংস্কৃতির প্রধান ভিত্তি রয়েছে এই প্রান্তে। হোলি ও দোলযাত্রাকে এক ব্র্যাকেটের মধ্যে আনার প্রয়াসটিকে তর্কশাস্ত্রের ভাষায় 'নিপাতনে সিদ্ধ '।
  • রৌহিন | 162.158.***.*** | ০৩ মার্চ ২০২০ ১৮:৫৫91218
  • প্রিমাভেরা আর হোলি (এবং দোল) - এরা মূলতঃ একই উৎসজনিত - একথা বরাবরই মনে হয় - মানে যবে থেকে প্রিমাভেরার কথা শুনেছি। এই লেখাটা পড়েও সেই ধারণাই আরও দৃঢ় হল বলা যায়। এই যে পৃথিবীজুড়ে বসন্তকালকেই যৌনতার উৎসবের সেরা সময় বলে ধরা হয় - এ নিশ্চই সমাপতন নয়। এ নিয়ে আরো বিশদে আলোচনা হোক

  • বিপ্লব রহমান | ০৪ মার্চ ২০২০ ০৩:৪৯91222
  • অনার্যের রাখাল রাজা মুক্তির, ভক্তির, শক্তির দেবতা হন কী উপায়, এ-ও এক বিস্ময়!     

  • শিবাংশু | ০৪ মার্চ ২০২০ ১২:০৪91226
  • @বিপ্লব রহমান,
    শুধুমাত্র বৈদিক দেবতারা ছাড়া এদেশে সব দেবতারই উৎস রয়েছে অনার্য সংস্কৃতির মধ্যে। একালে বৈদিক দেবতাদের মধ্যে শুধুমাত্র সরস্বতী ছাড়া আর কারও পূজা হয়না। অবশ্য আধুনিক সরস্বতীও পুরাণজাত। তাঁর মধ্যে বৈদিক লক্ষণ বিশেষ বেঁচে নেই। আমাদের সভ্যতায় 'দেবতাসংস্কৃতি' একটি বিস্ময়কর সন্ধান। মৎপ্রণীত 'হিন্দু দেবতা- এক অনির্বেদ অডিসি' গ্রন্থে এনিয়ে বিশদ আলোচনা রয়েছে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল মতামত দিন