এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  রাজনীতি

  • ট্রাম্প কি ইয়োরোপের জুজু দেখছে? 

    Barnali Mukherji লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ০৩ মার্চ ২০২৫ | ৫৬১ বার পঠিত
  • প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ভুগেছে ইয়োরোপ, তাই তাদের সামাজিক মননে রয়েছে যুদ্ধ বিরোধী ঘৃণা। এদিকে যুদ্ধবাজ ট্রাম্প, যুদ্ধবাজ পুতিন, যুদ্ধবাজ এলন মাস্কের মত লক্ষ কোটিপতিরা আণবিক যুদ্ধ থেকে নিজেদের বাঁচার জন্য বাংকার বানিয়ে রেখেছেন। যদিও গোবেচারা (পড়ুন মূর্খ) লিবারালদের মনে হয় যে পুঁজিবাদ নাকি আর যুদ্ধ চায় না। আর আজ যুদ্ধবাজদের অশ্বমেধের ঘোড়ার সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে ইউরোপীয় জনতা, ইউরোপীয় পুঁজিবাদের শাসক শ্রেণী। ঝেলেনস্কিকে বাঁচাচ্ছে ইয়োরোপ। 

    জার্মান মিউনিখ সিকিউরিটি বৈঠক ২০২৫ একটি নতুন ঐতিহাসিক সমীকরণ সৃষ্টি করল। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ তাদের ইউরোপীয় বন্ধুদের ছেড়ে যে রুশপন্থী হল তার প্রকাশ্য অভিব্যক্তি ঘটলো কনফারেন্সে। "ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিকে রাশিয়া বা চীনকে ভয় পেতে হবে না,"  জানিয়ে দিলেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যানস। প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বৈঠকে সেনাবাহিনীর প্রতিনিধিদের মাঝে মার্কিন ভ্যান্স নারীবাদ, গর্ভপাত, নাস্তিকতা নিয়ে ভাষণ দিয়ে এলেন!!! যে ভান্স নিজেদের দেশে অতিথি জেলেনস্কির সাথে অভব্য ব্যবহার করেন (যতই যুদ্ধবাজ হোন, পুতিনের দম্ভ ঘুঁচিয়ে দিয়েছে ইউক্রেন। এতদিনেও যুদ্ধে জিততে পারেনি পুতিন। তাই অতিথি জেলেনস্কির সাথে ট্রাম্প আর জি ডি ভ্যান্সের অসভ্য অভদ্র আচরণ দেখে পুতিন নিশ্চয়ই আপ্লুত) তিনিই আবার জার্মানিতে গিয়ে গণতন্ত্রের মুরুব্বি হলেন। 

    ট্রাম্পের এই প্রতিনিধি বললেন যে ইউরোপকে নাকি অনেক সহনশীল হতে হবে!! কোরআন পোড়ালে গ্রেপ্তার করা যাবে না। নারীবাদ বিরোধী উক্তি করলে শাস্তি দেওয়া যাবে না। গর্ভপাতের বিরুদ্ধে বাফার zone এ প্রার্থনা করলেও গ্রেপ্তার করা যাবে না। আসলে ইয়োরোপে জাতি, রঙ, ধর্ম, লিঙ্গকে কেন্দ্র করে বিদ্বেষমূলক ভাষণ বা আচরণ হল ক্রাইম বা অপরাধ --- এটাই  নাকি বদলাতে হবে। ইয়োরোপে ধর্ম ও ঈশ্বর অবিশ্বাসীর সংখ্য বাড়ছে। সেটা ট্রাম্প দের কাছে অসহ্য। আমেরিকা এখনও বিদ্বেষ মূলক ভাষণ কে অপরাধ বলে না। আমেরিকাতে কয়েকদিন আগেই DOGE এর এক ইঞ্জিনিয়ার মার্কিন ভারতীয়দের বিরুদ্ধে টুইট করেছেন, যার ফলে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। অথচ ব্যান্স যার নিজের স্ত্রী নাকি মার্কিন ভারতীয়, এই বহিষ্কারের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছেন, এলন কথা দিয়েছেন তাকে কাজে ফেরানো হবে। যদিও নিন্দুকেরা বলছেন যে মাগা(make America great again) কিন্তু ডাঙ্কিন ডোনাট এর বিরুদ্ধে বয়কটের ডাক দিয়েছিল, যখন ২০১৭ সালে কালো খেলোয়াড়রা জাতীয় সঙ্গীতের সময় হাঁটু গেড়ে বসে প্রতিবাদ জানিয়েছিল তাদের নিষিদ্ধ করার ডাক দিয়েছিল।

    আসলে আমেরিকা এখন চাইছে ইউরোপ যুদ্ধ প্রবণ হয়ে উঠুক। যা AFD (নতুন জার্মান ফ্যাসিস্ট দল ) র কর্মীদের ভাষণ দিয়েছেন মাস্ক, বলেছেন যে অতীত নিয়ে ইয়োরোপীয় পিটপিটানি কমাতে হবে, বিশ্বযুদ্ধের সৈনিকদের নিয়ে গর্বিত হতে হবে জার্মানিকে। 
     
    এবারে তাই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বিজয়ের দিনের গুরুত্ব বেশ অন্যরকম। আর দুই মাস পর সেই দিবসে যুদ্ধবাজ নেতা পুতিন আমন্ত্রণ জানিয়েছে ট্রাম্প, শি জিং পিন, মোদিকে, পুর্ব ইয়োরোপের ন্যাটো ভুক্ত দেশগুলিকেও যারা আবার ইউক্রেন প্রশ্নে পুতিনের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন খোলাখুলি। 

    কিন্তু সাম্রাজ্যবাদ, পুঁজিবাদ এমনই ব্যবস্থা, তাদের অনৈক্যই প্রধান। পুঁজিবাদী দেশগুলোর মধ্যে বিরোধের ফাঁক গলে গণতন্ত্র তাই আজও টিকে থাকে, যারা বিরোধী পক্ষ হয়ে যায় তারাই গণতন্ত্রের ধারক বাহক হয়ে ওঠে। এখন যেমন ইয়োরোপের দেশগুলি হয়ে উঠেছে গণতন্ত্রের প্রতিনিধি। তারাই আজ ঝেলেনস্কিকে আশ্রয় দিতে চাইছেন।  যদিও পুঁজিবাদে নিজেদের পতন ছাড়া আর কিছুই নিশ্চিত নয়। 

    ঝেলেনস্কি কি 2025 সালের অস্ট্রো হাঙ্গেরিয়ান রাজা ফার্দিনান্দ? 

    ঝেলেনস্কি হোয়াইট হাউসে অপমানিত হলেন, যখন এক কর্মকর্তা তাকে জিজ্ঞাসা করেন কেন তিনি স্যুট পরেননি এবং আদৌ তার কোনো স্যুট আছে কিনা। এছাড়াও, ট্রাম্প আর ভ্যান্স তাকে কথা বলার সুযোগ প্রায় দেননি। শেষ পর্যন্ত, তাকে চলে যেতে বলা হয়। তবে, মনে হচ্ছে তিনি ইউক্রেনের খনিজ সম্পদের অধিকার যুক্তরাষ্ট্রকে হস্তান্তর না করেই চলে গেছেন।  এই অপমান ইউক্রেনের জনগণের জন্য জাতীয় অসম্মানের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।

    এই বৈঠক কার্যত ঝেলেনস্কির ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড হতে পারে, যা হয় ইউক্রেনের অভ্যন্তর থেকেই আসতে পারে, শুধু ট্রাম্পের একার পরিকল্পনা হতে পারে বা পুতিন ট্রাম্পের যৌথ পরিকল্পনাও হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেনে বেশ কয়েকটি কৌশলগত খনিজের প্রয়োজন এবং ডনবাস অঞ্চলের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান খাদ্য কোম্পানিগুলো বিশাল বিনিয়োগ করেছে। ডনবাসকে বলা হয় "ইউরোপের শস্যভাণ্ডার"—যা ইউরোপের ক্ষতির বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বেশি মুনাফা নিশ্চিত করতে পারে। অবশ্য পুতিন আর ট্রাম্প যদি হাত না মেলায় তবে ঝেলেনস্কির বেঁচে থাকা আবার পুতিনের কাছে মন্দের ভালো। 

    এদিকে, কানাডা খুব রেগেছে, কারণ ট্রাম্প তাদের যুক্তরাষ্ট্রের একটি রাজ্য হিসাবে যোগ দিতে বলেছে এবং শুল্ক বৃদ্ধি করেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কানাডা থেকে কৌশলগত খনিজ আমদানিকে প্রভাবিত করবে।  ওদিকে চীন রাশিয়ার সমীকরণ কি দাঁড়বে সেটা অস্পষ্ট।

    বিশ্ব হয়তো যুদ্ধ-কেন্দ্রিক আন্তর্জাতিক রাজনীতির এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। ঝেলেনস্কির  অপসারণ (রাজনৈতিক বা শারীরিকভাবে) একটি সংঘাতের ট্রিগার হতে পারে... আশঙ্কা প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ফার্দিনান্দ না হয়ে যান তিনি।

    বেসামরিক সাহায্য চলবে না?

    মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী নীতির মধ্যে বেসামরিক আর্থিক সাহায্য গুরুত্বপূর্ণ অংশ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মার্শাল পরিকল্পনার কথা আমরা জানি। যে সাহায্য ইয়োরোপীয় পুঁজিবাদকে আবার বাঁচিয়েছিল। ট্রাম্প বলছেন যে USAID তিনি আর বরদাস্ত করবেন না। ট্রাম্প বলবেন এটা তার MAGA নীতি। কিন্তু আসলে এটা তার যুদ্ধবাজ নীতি। 

    কেনেডির আমলে , ১৯৬১ সালে, মার্কিন বেসামরিক সাহায্যকে সামরিক খাত থেকে পৃথক করা হয়। সোভিয়েত বেসামরিক সাহায্যগুলির সাথে টক্কর দিতে। ওই আমলেই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী সাহায্যে ভারত পায় সবুজ বিপ্লব, একটা আইআইটি আর কয়েকটা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। আবার সোভিয়েত সাহায্যে 1959 সালে ভারত পায় ভিলাই ইস্পাত কারখানা.। নিখাদ বেসামরিক সাহায্য হলে কিন্তু সরাসরি আর্থিক, রাজনৈতিক লাভ কম। অনেক বাধা নিষেধ অতিক্রম করতে হয় দাতা কে। পরিবেশ, শ্রম আইন ইত্যাদির নিয়ম মেনে চলতে হয়। কিন্তু সোভিয়েতের সাথে টক্কর ছিল পুঁজিবাদের বেঁচে থাকার ন্যূনতম শর্ত। তাই এসেছিল বেসামরিক USAID। 
    আজ ট্রাম্প খরচ কমানোর আছিলায় ঘোষণা করছেন যে USAID তিনি আর দেবেন না। তবে কি সামরিক সাহায্যও তিনি বন্ধ করলেন? পেন্টাগনের বেহিসেবী বৈধ গোপন খরচ কি বন্ধ করলেন তিনি? না। অথচ বেসামরিক সাহায্য বন্ধ!! যার অর্থ হল, উন্নয়নশীল, অনুন্নত বা বিপদগ্রস্ত দেশগুলিকে বেসামরিক সাহায্য পেতে হলে মার্কিন সামরিক সাহায্য নিতে হবে? মিলিটারি base বাধ্যতামূলক হবে ? যার বাড়তি সুবিধা হল পরিবেশ নিয়ে আর ভাবতে হবে না। কারণ All is fair in war...
    মার্কিন বেসামরিক সাহায্য বন্ধ করলে বা কমালে সেই জায়গা ভরাট করতে, ফাঁকা মাঠে গোল দিতে এগিয়ে আসবে চীন রাশিয়া। অর্থাৎ বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদী মানচিত্রে মার্কিন আধিপত্য বাড়ানোর যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ট্রাম্প ভোটে জিতলেন সেটার বদলে ঠিক বিপরীত হওয়ার দিকে ইতিহাস দৌড়তে শুরু করবে। যা রুখতে আমেরিকাকেই হয়তো যুদ্ধ পরিস্থিতির রাস্তা প্রশস্ত করতে হবে। 
    রাশিয়া এখনও যুদ্ধ পণ্য বিক্রয়ে সামনের সারির রপ্তানিকারক দেশ। সাঁজোয়া গাড়িতে লাল পতাকা উড়িয়ে তারা তিন বছর ধরে যুদ্ধের এক ব্যর্থ হাত মকসো করে নিয়েছে। আবার চীন বেল্ট এন্ড রোড ইনিশিয়েটিভ যেভাবে গ্রহীতা দেশগুলিকে ঋণ ফাঁদে জড়াচ্ছে (যদিও এই নিয়ে বিতর্ক আছে ) এবং যেভাবে এল্ টি টি ই নিকেশ অভিযানে শ্রীলঙ্কাকে সামরিক সাহায্য করে সেই দেশকে ঋণ ফাঁদে ফেলেছে তাতে চিনের যুদ্ধে জড়ানোতে খুব অসুবিধা আছে মনে হয়নি। যাই হোক, কুরুক্ষেত্রের আগে যেমন জোট গঠন চলছিল, এখন তেমনই স্পষ্ট জোট গঠনে নেমেছে আমেরিকা, পুতিন, ট্রাম্পের নেতৃত্বে।
     
    রাশিয়াকে বন্ধু হিসেবে পেতে বা চিনকে একা করে দিতে জেলেনস্কিকে বিপদে ফেলে দিয়েছেন ট্রাম্প। বিরাট বিল ধরিয়ে দিয়েছেন। ঠিক যেমন মোদিকে বিপদে ফেলতে হাতে পায়ে শিকল পরিয়ে অনেক খরচ (DOGE এই ব্যাপারে খরচ কমানোর কথা বলেনি) করে ভারতে লোক ফেরত পাঠানো হল এবং ভারতের উপর শুল্ক কমাতে চাপ সৃষ্টি করা হল। 

    শিক্ষা বিরোধী মৌলবাদী পুঁজিবাদী নীতি

    মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের অন্যতম ভিত্তি হল তাদের উচ্চ শিক্ষা কেন্দ্রগুলি। যেখানে গণিত, পদার্থবিদ্যা বিভাগগুলিতে মূলত বাম গণতান্ত্রিক ডেমোক্র্যাটদের অস্তিত্ব। এক কথায় সকলেই প্রায় রিপাব্লিকান পার্টি বিরোধী। পদার্থবিদ্যা আর গণিত বিভাগে নিজেদের লোক ঢোকানোর এক প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। আবার রেসিস্ট তত্ত্বের বিরুদ্ধে চর্চা হয় ইতিহাস বিভাগে। আবার দর্শন বিভাগে হয় পুঁজিবাদী দর্শন নিয়ে চর্চা। ডিইআই (Diversity Equity Inclusion) হল মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই বিভাগ যা racism তত্ত্বের বিরুদ্ধে চর্চা হয়, দেশ বিদেশ থেকে ছাত্ররা আসেন গবেষণা করতে।  সেই বিভাগ বন্ধ করার হুকুম এসেছে, দুই সপ্তাহের মধ্যে নাকি বন্ধ করতে হবে, ১৪ই ফেব্রুয়ারি জানিয়েছেন ট্রাম্প প্রশাসন। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়গুলি মাথা নত করবে কি না জানা যায়নি এখনো। ওদিকে ভোট বিরোধী পুতিন বলেছেন শিক্ষকরাই ইতিহাস রচনা করে, এবং রুশ ইস্কুলে উগ্র জাতীয়তাবাদের শিক্ষা দেওয়া হয়, দেশের পতাকা যে বহন করছেন তার প্রতি প্রশ্নহীন আনুগত্য করতে শেখানো হয়।  ওদিকে জার্মান ভোটে যদি ফ্যাসিস্ট দল এ এফ ডি র জিতে যায় তারাও শিক্ষা কাঠামো বদলাবে বলেছে। আর ট্রাম্প বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে সনাতনী পাঠক্রম চালু করতে হবে। 
    একদিকে পুঁজিবাদের সনাতন শিক্ষা, সনাতন যুদ্ধর ডাক আর তাই এর বিরুদ্ধে আমাদের মনে পড়ে সেই অমোঘ আন্তর্জাতিক সঙ্গীত --- সনাতন জীর্ণ কুআচার, ছিন্ন করি জাগো জনগণ....
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ০৩ মার্চ ২০২৫ | ৫৬১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • জয় | ০৩ মার্চ ২০২৫ ১৮:১৪541466
  • বর্ণালী  জরুরি লেখা। অভিনন্দন।
     
    ইউরোপ বাস্তবে কি করবে বা করার মতো অবস্থায় আছে (এই মুহূর্তে) সেটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি সন্দেহবাতিক। রবিবারে লন্ডনে যা হল তা কি শুধুই মিডিয়ার জন‍্য?  ইউরোপের  ইউএসের সাহায্য ছাড়া মিনিংফুল কিছু করার জায়গায় পৌঁছাতে তিন বছর লাগবে শুনছি। ট্রাম্প পুটিন সেটা জানে। ইউরোপ কি ঝেলিন্স্কিকে ডিচ করবে? ইউক্রেনকে না মিনারেল ডিল করতে বাধ্য করে। ইউক্রেনকে  আপাতত নেটোতে নেবেনা (নেটোর নিজের কোমরভাঙা) -বোধহয়।
  • MP | 2409:4060:2e06:e99e:1496:709a:7771:***:*** | ০৩ মার্চ ২০২৫ ২০:১৫541467
  • লেখিকা বর্ণালীকে অভিনন্দন জানাই খুব ভালো একটা এনালিসিস করবার জন্য l তবে কয়েকটা বিষয় খুব জটিল l.                                                দেখুন আমি তৃতীয় বিশ্বের গরীব দেশের মানুষ l আমার কাছে এখন মূল সমস্যা হচ্ছে প্যালেস্টাইনের গাজাতে জায়োনবাদীদের দ্বারা করা জেনোসাইড l এটার বিরুদ্ধে আপনার জেলেনস্কিকে তো মুখ খুলতে দেখিনি l জেলেন্সকি নিজে যেহেতু একজন জায়নবাদী কাজেই সেজন্যই সে গাজা জেনোসাইডকে সমর্থন করেছে l  তাছাড়া এই জেলেন্সকি লোকটা যেহেতু জায়নবাদী তাই সে ইউক্রেনের অর্থডক্স খ্রিস্টানদের উপরে অনেক অত্যাচার করেছে  l  সেটাও এই ইউক্রেন যুদ্ধের অন্যতম কারণ l এটা আপনার এনালাইসিসে বলা উচিত l                                                                        ট্রাম্প এর বিরুদ্ধে আপনার অভিযোগ সত্য কিন্তু ও ভোটে জিতেছে যুদ্ধবিরোধী প্ল্যাটফর্মে l আমরিকী সাম্রাজ্যের দুটো স্তম্ভ হচ্ছে USAID পেন্টাগন এবং CIA l ট্রাম্প এগুলো বন্ধ করলে তো তৃতীয় বিশ্বে আম্রিকি সাম্রাজ্যবাদ ধাক্কা হবে l তৃতীয় বিশ্বের মানুষ হিসেবে এটাই তো চাইবো l এখন যেই একাজ করবে সেই আমার কাছে ঠিক l তাছাড়া ট্রাম্পের প্ল্যাটফর্ম কিন্তু ঘোষিত ভাবেই যুদ্ধ বিরোধী যেহেতু তারা মনে করে যে আম্রিকি জায়নবাদীরা যুদ্ধ করে মুনাফার জন্যে এবং এর ফলে বহু আম্রিকি শ্বেতাঙ্গ বিদেশে যুদ্ধ করতে গিয়ে মরে কিন্তু জায়নবাদীদের পকেট ভরে ওঠে l কাজেই ট্রাম্প যদি যুদ্ধ করতে যায় তাহলে নিজের প্ল্যাটফর্মকে ও কি বোঝাবে ?                                ট্রাম্প পুতিনের মিত্রতা হওয়া অত সহজ নয় l ট্রাম্প পুতিন দুজনেই ইউরোপ ভারতকে তেল গ্যাস বেচতে চায় কাজেই দুজনের মধ্যে এই স্বার্থের সংঘাত আছে l এটার জন্যে ট্রাম্প পুতিনের মিত্রতা হওয়া কঠিন l                               চীনের বেল্ট এন্ড রোড প্রকল্প খারাপ কেন হবে ? তৃতীয় বিশ্বের কাছে আধুনিক পরিকাঠামোর আর কি উপায় ? ঋণ তো সবাই দেয় ওয়ার্ল্ড ব্যাংক আইএমএফ এরাও দেয় তাহলে চীন ঋণ দিয়ে আলাদা করে কি দোষ করলো ? তামিল টাইগারদের প্রতি আপনার  সহানুভূতির কারণ টাও ঠিক বুঝলামনা l                               আম্রিকার ইউনিভার্সিটি গুলোও তো প্যালেস্টাইনে জেনোসাইড সত্তেও ইসরাইলী আর্মি ফউন্ডেড প্রোজেক্টে কোলাবোরেশন বন্ধ করেনি l ইস্রাঈলের যত আধুনিক অস্ত্র তার গবেষনা সব  আম্রিকি ইউনিভারসিটিতে হয় l কাজেই এরকম ইউনিভার্সিটিগুলো থাকলো না ট্রাম্প ফান্ডিং বন্ধ করে তুলে দিলো তাতে তৃতীয় বিশ্বের কি আসে যায় ?                                                                 ইউরোপের দেশগুলো তো প্যালেস্টাইনের জেনোসাইডের থামানো নিয়ে কিছুই করেনি l কাজেই তারা যুদ্ধ বিরোধী শুধু শ্বেতাঙ্গ জায়নবাদী জেলেনস্কির স্বার্থে l এটাতে তৃতীয় বিশ্ব কেন শ্বেতাঙ্গ জায়নবাদী জেলেন্সকিকে সাপোর্ট করবে ?               
  • ধোরবা | 2405:8100:8000:5ca1::3d5:***:*** | ০৩ মার্চ ২০২৫ ২০:৩২541468
  • ওরে তৃতীয় বিশ্বের গরীব দেশের ছাগু তৃতীয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যা জিনিষপত্রের দাম, বেকারি, চিকিৎসার আকাশজোড়া খরচ। তোর গাজা তুই তোর পোঙায় গুঁজে রাখ।
  • . | ০৪ মার্চ ২০২৫ ০১:০৯541472
  • ঝেলেন্সকি কে?
    Zelensky?
  • . | ০৪ মার্চ ২০২৫ ০১:২৩541473
  • "প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ভুগেছে ইয়োরোপ, তাই তাদের সামাজিক মননে রয়েছে যুদ্ধ বিরোধী ঘৃণা।"
    কতকটা ঠিক প্রথম পার্টটা। সেই ইয়োরোপের অংশ ছিল রাশিয়া শ্বেতরাশিয়া ইউক্রেন ইত‍্যাদি, অর্থাৎ তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন ও। যারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ট্রমা কালেকটিভ মেমোরিতে এখনও বহন করে চলেছে। হিটলারের পতনের জন‍্য যারা বিশাল মূল্য দিয়েছে, তারা এখনও ঘরে ঘরে অন্তত বেশ কয়েক মাস বা বছরের খাবার মজুদ করে রাখে।
    দ্বিতীয় পার্টটা ঠিক না। যুদ্ধ অন‍্য কোনও দেশে হলে ইয়োরোপের কিছু এসে যায় কি? যায় না। এমনকি বসনিয়া টসনিয়ার মত কম ইমপরট্যান্ট জায়গায় (প্রাক্তন  ইউগোস্লাভিয়া) যখন তুমুল জেনোসাইড হচ্ছিল, ইয়োরোপের কতটা এসে যাচ্ছিল সঠিক জানা যায় না।
  • MP | 2409:4060:2e06:e99e:1496:709a:7771:***:*** | ০৪ মার্চ ২০২৫ ০৮:৫৩541475
  • " ইয়োরোপে ধর্ম ও ঈশ্বর অবিশ্বাসীর সংখ্য বাড়ছে। সেটা ট্রাম্প দের কাছে অসহ্য। আমেরিকা এখনও বিদ্বেষ মূলক ভাষণ কে অপরাধ বলে না। ".     জার্মানীর গত সপ্তাহের নির্বাচনে একটা অদ্ভূত ব্যাপার দেখা গেছে l অতি দক্ষিণপন্থী দল AfD কে মুক্তহস্তে ভোট দিয়েছেন জার্মানীর নাস্তিকেরা এবং ঈশ্বর অবিশ্বাসী জনগণ l পূর্ব জার্মানিতে এদের সংখ্যা এবং AfD সবচেয়ে বেশী l  তুলনামূলক ভাবে যারা এখনো কিছুটা খ্রিস্টান বা মুসলমান তারা ট্রাডিশনাল দলগুলো যেমনঃ CDU বা বামপন্থী ও গ্রিনকে ভোট দিয়েছেন l কাজেই নাস্তিকতা বাড়লেই দেখা যাচ্ছে উগ্র দক্ষিনপন্থার প্রাধান্য বাড়ে l                                     সেকেন্ড স্টেটমেন্টটি ডাহা মিথ্যা l আম্রিকাতে সবই allowed যতক্ষননা জায়নবাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলছে l জায়নবাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা আম্রিকাতে মোটেই allowed নয় l 
  • হীরেন সিংহরায় | ০৫ মার্চ ২০২৫ ১১:২০541497
  • সুন্দর আলোচনা। 
     
    যদি অনুমতি করেন দু একটি কথা যোগ করি .
     
    ইউক্রেনকে ইউরোপের শস্য ভান্ডার বলা হয় , ডনবাসকে নয়; সেটি নিপার নদীর পুব পাড়ে  খনিজ পদার্থে ধনী অঞ্চল যার  সম্পদ  ট্রাম্প কিনতে বা দখল করতে চাইছেন।আমরা একদা সেখানে ফাইনান্সিং করেছি। 
     
    AfD কে নতুন ফ্যাসিসট পার্টি  ঠিক বলা যায় না হয়তো। প্রায় পনেরো বছর আগে ফ্রাঙ্কফুর্টের অদূরে বাদ নাউহাইমে গঠিত আলেক্সান্দার গাউলানডের Alternative Liste বা বিকল্প তালিকা যুদ্ধোত্তর জার্মানির প্রথম প্রতিবাদী ( ইউরো , ইমিগ্রান্ত , ইসলাম বিরোধী) ও দক্ষিণপন্থী সংগঠন । বিগত দশ বছরে এই অতি দক্ষিণ মুখি গতি দেখে  পার্টির প্রথমদিকের কিছু নেতা সরে এসেছেন কিন্তু AfD ভোট শেয়ার বেড়েছে।  ১৯৩২ সালে নাৎসিরা পেয়েছিল ২১.৬% ( ১৩৩ আসন)  ২০২৫ সালে AfD পেলো ২০.৮% ( ১৫২ আসন)।  অশনি সঙ্কেত?  
  • জয় | ০৬ মার্চ ২০২৫ ২৩:৫৯541505
  • ইউক্রেন নিয়ে আপনারা কি পড়ছেন/ শুনছেন/ দেখছেন (সিরিয়াসলি) তার একটা লিস্টি দিন না  প্লীজ। ঋদ্ধ হই। অবশ‍্যই আবাপ আর ফেসবুক বাদে...
  • জয় | 82.39.***.*** | ০৮ মার্চ ২০২৫ ১৯:৫৯541535
  • বিবিসির পডকাস্ট হলেও ফ‍্যাকচুয়াল মনে হল। সব দেশেই এটা শোনা যায় কিনা জানি না।
    (লিঙ্কটা ঠিক পোষ্টালাম কি? নাহলে <Ukrainecast>বলে খুঁজে দেখতে পারেন।) ৩২ মিনিট।
     
    কি ডিপ্রেশিং। কবে যে এর শেষ? বোধহয় কোনদিনই শেষ হবার নয়। মানুষের ডিএনএতেই লোভ আর হিংসা! 
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে প্রতিক্রিয়া দিন