এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  রাজনীতি

  • রাডিয়া ফাইলস হল ক্রোনি পুঁজিবাদ আর অনুব্রত মন্ডল হল চুরি!!

    Barnali Mukherji লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৩৮২ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • ক্রোনি পুঁজিবাদ বললে ভোটের মধ্যে দিয়ে বহুজাতিক নীতি বা দুর্নীতি রোধের দরকার হবে না। সেক্ষেত্রে বিপ্লব করতে হবে, অতএব বুদ্ধিজীবীরা জানেন সেটা আপাতত হচ্ছে না। আর চুরি বললে ভোটের মধ্য দিয়ে সরকার বদল হবে, ইডির সাহয্যে গ্রেপ্তার হবে। তাই এই ভিন্ন শব্দ চয়নের রাজনীতি। বহুজাতিক, আইএএস , আইপিএস দের ক্ষেত্রে ক্রোনি আর অনুব্রতের ক্ষেত্রে চুরি।

    Eclecticism

    মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের দাবি ছিল যে তার সাথে বৈঠকে চীনের প্রেসিডেন্ট শিজিংপিং তাকে জানিয়েছেন, প্রযুক্তি বিপ্লবের এই যুগে গণতন্ত্র আর সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তার কথা অনুযায়ী প্রযুক্তির দ্রুততার সাথে তাল মিলিয়ে গণতন্ত্র চলতে পারছে না। সিদ্ধান্ত নিতে বহু সময় লাগছে যা দেশের উন্নতির পরিপন্থী। যদিও প্রযুক্তিরই ব্যবহারে মার্কিনি ভোট নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে বারবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে। তাছাড়া প্রযুক্তি ব্যবহার করে মিথ্যা খবর ও উস্কানিমুলক খবর পেশ করার অভিযোগ তো আছেই। Freelon and Wells (2020) ইতিমধ্যেই বেশ গবেষণা করে ফেলেছেন। ইতিমধ্যেই চীন নিজের দেশের জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিতে এক বিরাট প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ঘটিয়েছে, আন্তর্জাতিক তথ্য প্রযুক্তির সেন্সরশিপ বলা চলে একে, কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত: the Great Firewall. আট বছর আগে থেকেই রাশিয়া সহ বেশ কিছু দেশ এই ধরণের প্রযুক্তির বিকাশে বিনিয়োগ করছে, কারণ জ্ঞানের বিস্তার আর গণতন্ত্রের চাহিদা সমানুপাতিক। চীন-রাশিয়ার জনগণ এই ধরনের কাণ্ড মেনে নিচ্ছেন না নিশ্চয়ই, কিন্তু এখনো সেই সংশয় সংগঠিত রূপ নেয় নি। অন্তত আমরা দেখতে পাচ্ছি না। ট্রাম্পের দ্বিতীয় দফার কাণ্ড কারখানা দেখে মার্কিনিরা এখন উচ্চ শিক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তায়। ফ্যাসিস্টদের রাজত্বে ইতিহাস, দর্শন, সমাজবিদ্যা, ইত্যাদি বিষয়ের বিশ্ববিদ্যালয় কাঠামো বিপজ্জনক। আমাদের দেশের ফ্যাসিস্ট দর্শনের একটি বিশেষ দিক নিয়েই আজকের আলোচনা। ইডি কেচ্ছার পর থেকে সেটা আরও স্পষ্ট হচ্ছে। 

    একদিকে শাসকদের দালালদের কন্ঠে ইডির জয়গান চলছে আর অন্যদিকে জনপ্রতিনিধিদের পেনসনের অধিকার কেড়ে নেওয়ার আওয়াজ উঠছে। জনগণের সামনে প্রগতিশীলতার ঝান্ডা নিয়ে যাঁরা দাঁড়িয়ে আছেন তারাও উঠতি ফ্যাসিস্ট গুণসম্পন্ন চীন-রাশিয়ার মধ্যে মাও-লেনিন-স্তালিন কে খুঁজে পাচ্ছেন। আজও দেখা যাচ্ছে যে লেখায় আলোচনায় এক বিচিত্র ঝোঁক।  টাটা-আম্বানি-আদানি-বিজেপি-আমলা-আইপিএস-আইএএস কর্তা- বিচারপতিরা চুরি করলে, ঘুষ খেলে সেটার নাম হয় ক্রোনি পুঁজিবাদ। যেন বা বিজেপির নেতারা সৎ হিন্দুত্ববাদী, তারা আদর্শের জন্য যেন বা আত্মত্যাগ করতে প্রস্তুত, যেন বা তারা শুধু পার্টি ফান্ডের জন্যই টাকা নেয়, নিজেদের পকেট ভরান না!! অথচ রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রে শব্দ চয়ন কিন্তু চুরিই। রাডিয়া ফাইলস হল ক্রোনি পুঁজিবাদ আর অনুব্রত মন্ডল হল চুরি!!

    মালদহতে এক মাছ ব্যবসায়ীর কাছে থেকে সিআইডি দেড় কোটি টাকা উদ্ধার করেছিলো, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে সে কাশির ওষুধে ড্রাগ পাচার করে। বিচলিত হওয়ার মত বিষয় হল এই যে ব্রেকিং নিউজের শিরোনামে এই ভয়ংকর অপরাধের অভিযোগটাই নেই। চোখে পড়ছে একটাই কথা, দেড় কোটি টাকা উদ্ধার। যেন একজন মাছ ব্যবসায়ীর বাড়িতে দেড় কোটি টাকা থাকাটাই অপরাধ!! তার কয়েক দিন পরেই গার্ডেনরিচের এক ব্যবসায়ীর বাড়ির খাটের তলা থেকে উদ্ধার হল আঠারো কোটি টাকা। যেন সেটাই অপরাধ। সেই ব্যবসায়ীর 'গেম অ্যাপ' ব্যবসা নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাচ্ছে না মিডিয়া। আবার দেখা গেল মন্ত্রী মলয় ঘটকের তিনটে ফোন আর পাঁচটা বাড়ির হদিস পেয়ে মিডিয়া ভীষণই উত্তেজিত। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে অমিতাভ বচ্চনের বাড়ি , গাড়ির সংখ্যা বা মুকেশ আম্বানির ২৭ তলা বাড়ির অন্দরমহলে মিডিয়া প্রবেশ করার অনুমতি পেলে কৃতার্থ হলেও মাছ ব্যবসায়ী বা ক্ষুদ্র মাঝারি ব্যবসায়ীদের হাতে কোটি কোটি টাকা নিয়ে তারা বিরক্ত। অথচ প্রায় ৮০ লাখ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প রয়েছে এই দেশে। এবং তারা আমাদের জাতীয় আয়ের প্রায় ৪০% বহন করে। দমদম বাজারের একটু বড় মাছ বিক্রেতা, ইলিশ, কাতলা, চিংড়ি, পাবদা নিয়ে যারা বসেন, তাদের দৈনিক রোজগার (টার্ন ওভার) অন্তত ৩০ হাজার এবং তারা প্রতিদিন বাড়ি ফিরে ব্যংকে সেই টাকা জমা করেন না। মেটিয়াবুরুজের একজন একটু বড় জামা কাপড়ের ব্যবসায়ীর প্রতিদিন টার্নওভার লাখের কাছাকাছি। দুর্গা পুজোর অর্ডারের কাজ শুরু হলে কয়েক কোটি টাকা তার বাড়িতে পাওয়াই যাবে। সোদপুরের নাম করা মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে প্রতি দিন বিক্রি হয় তিরিশ হাজারের মত। তাদের কিন্তু শুধু একটা দোকান নেই। খাটাল থাকে, কখনও একটা ডেকরেটার্সের ব্যবসা থাকে, বিউটি পার্লার আছে। বরানগরের একটি ওষুধের দোকান ‘দাস মেডিকেল শপ’, দৈনিক তাদের টার্ন ওভার কয়েক লাখ। এছাড়াও তাদের দুটো গাড়ি বাজারে ভাড়া খাটে। গড়িয়াহাটের ঢাকেশ্বরী বস্ত্রালয়, বলরাম মল্লিকের মত মিষ্টির দোকানের কত টার্ন ওভার হয় দৈনিক? পুজোর সময় কোটি ছাড়ার কথা। এবং এরা কেউই ব্যাংকে টাকা জমা করেন না। সেটা এই জন্য নয় যে তারা সরকারের ক্ষতি করতে চান মনে প্রাণে। আসলে তারা এটা মনে করেন যে ব্যংকে টাকা রাখলে তারা আর আদৌ ব্যবসা করতে পারবেন না। প্রথম কথা হল এই যে এই লাখ লাখ ব্যবসায়ীরা ব্যংকে টাকা জমা রাখেন  না, তার ফলেই অন্তত বাকি সাধারণ মানুষ ব্যংকে ঢুকতে পারেন। প্রতিদিন যদি লাখ লাখ ক্ষুদ্র মাঝারি ব্যবসায়ী ব্যংকে ঢুকতো তাহলে সেখানকার যে কি দশা হতো তা কল্পনাও করা যায় না!! এখন অবশ্য অনলাইন আছে, কিন্তু সেটাও করেন না তারা। যাই হোক, যেটা আলোচনা হচ্ছিল। যেমন ধরা যাক,  টিডিএস। বছরে বিশ লাখ বা এক কোটি টাকা (ক্ষেত্র বিশেষে) ব্যংক থেকে টাকা তোলা হলে ২% টাকা কেটে নেওয়া হয়। যাদের দৈনিক টার্ন ওভার ৩০ হাজার তাদের দৈনিক মোট লাভ হয়তো দুই হাজার। এই টিডিএস কাটলে তারা কোথায় যাবে? এর সঙ্গে আছে জিএসটি কেটে নেওয়া। এবং এই সমস্ত কেটে নেওয়ানোর জন্য কাগজপত্রের জটিলতা। ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহীতাদের সাথে কথা বললেই ব্যংকের সমস্যা বোঝা যায়। কেন মানুষ বন্ধন ব্যাংক বা তার চেয়েও ছোট অনামী সংস্থার কাছে যায়? অত চড়া সুদে? অমন অমানবিক শর্তে? মূলত একটাই কারণ। কাগজপত্রের ঝামেলা কম। বাড়িতে বাউন্সার পাঠালেও সেটাই ক্ষুদ্র ঋণ গ্রহীতারা বেছে নিচ্ছেন। কেইনস বলেই গেছিলেন যে জনসাধারণের নগদ টাকার প্রতি স্পৃহা আছে। এই স্পৃহার তিনটি কারণ তিনি উল্লেখ করেছেন। এক, দৈনন্দিন কাজকারবার চালু রাখার জন্য অর্থের প্রয়োজনীয়তা ২) কেনা বেচার জন্য টাকার হঠাৎ প্রয়োজন মেটাতে সতর্কতামূলক অর্থের প্রয়োজনীয়তা। ৩) ফাটকার মাধ্যমে কিছু অতিরিক্ত আয়ের উদ্দেশ্যে অর্থের প্রয়োজনীয়তা। এই তিন নম্বর ক্ষেত্রে বর্তমানে সুদ কম থাকলে জনগন আরো বেশি টাকা ধরে রাখবেন। উপরন্তু কেইনস সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের এমন সংজ্ঞা দিয়েছেন যাতে ব্যক্তিগত জমা এবং বিনিয়োগের মধ্যে তারতম্য হতে পারে কিন্তু সমষ্টিগতভাবে জমা এবং বিনিয়োগ সর্বদাই সমান হতে বাধ্য। যাই হোক্‌, আদানি-আম্বানির টাকার অভাব হলে (সরকারি ব্যাংকে টাকা ভর্তি না থাকলে তারা বিনিয়োগ করবেন কোথা থেকে) তবে আমাদের পরামর্শ তারা যেন ইডিকে দেশ জুড়েই লাখ লাখ খাটের তলা খুঁজতে নির্দেশ দেন। লক্ষ লক্ষ ক্ষুদ্র মাঝারী ব্যবসায়ীরা ছড়িয়ে আছেন দেশ জুড়ে। আর যদি কেউ এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে চান তবে ব্যংক ব্যবস্থার আমূল রূপান্তর তাদের করতে হবে। সম্পূর্ণ জাতীয়করণ করে নেওয়াই সবচেয়ে সহজ ও কার্যকর উপায়। 

    এদিকে সাংসদদের মাইনে কম করে দেড় লাখ। আর তার সাথে বহু কিছুই নিখরচায় পান তারা। ফলে মাসে যদি তারা একলাখ সঞ্চয় করেন তবে একজন সাংসদ দুই বছরে একটা বাড়ি কেনার ক্ষমতা রাখেন। কেউ আবার বিভিন্ন জায়গায় বিনিয়োগ করে থাকেন, শেয়ার, ইকুইটি ইত্যাদি। (ধরে নিচ্ছি কেউ বে আইনি কাজের সঙ্গে যুক্ত নয়। যুক্ত থাকলে আয়কর দপ্তর, সেন্ট্রাল ভিজিলেন্স এজেন্সি খেয়াল করবে নিশ্চয়ই) সরকারী চাকুরে, প্রফেসর ডাক্তারবাবুদের ক্ষেত্রেও একই কথা সত্যি।  যদিও অর্থনীতির সুস্বাস্থ্যের জন্য এই সব সঞ্চয় কিভাবে বিনিয়োগে বদলে ফেলা যায় ভাবা উচিত ছিল সেটাই। চার পাঁচ জায়গায় জমি কিনে রেখে টাকাকে অলস করে রাখা নিয়ে মাথা ঘামানো উচিত ছিল সরকারের বা আর্থিক উপদেষ্টাদের। 

    কিন্তু তার বদলে পাঁচটা বাড়ি থাকলেই চোখ কপালে তুলে ফ্যাসিস্ট দর্শনের প্রসার ঘটানো হচ্ছে। 

    বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে ২০১৪ সালে। এমন এক সময়ে যখন দুনিয়া স্বীকার করে নিতে শুরু করেছে যে রাষ্ট্রীয় সাহায্যেই ফিরতে হবে। কেইনসীয় মডেলের চাহিদা যখন আবার ইয়োরোপ আমেরিকায় তুঙ্গে। কংগ্রেস দল সেই মত নিজেকে পালটেও নিল। তারা নিজেদেরই মনমোহন সিং-এর মডেলকে প্রত্যাখ্যান করা শুরু করলো। অবশ্য কেউ বলতেই পারেন যে ভাগ্য তাদের সহায় ছিল। বিরোধী পক্ষে চলে আসায় 'ন্যায় প্রকল্পে'র মত দাবি তারা করতে পেরেছে সহজেই, ২০০৯ থেকে ২০১৪ এই কয়েক বছরে তারা নিজেদের পুরোনো অবস্থান থেকে সরেনি। যাই হোক, ফিরে আসি বিজেপি প্রসঙ্গে। তারা ক্ষমতায় এসেই আবার সেই তথাকথিত ধ্রুপদী মুক্ত অর্থনীতির ঢাক পেটাতে শুরু করলো। অথচ বাস্তবে বিশ্ব জুড়েই সরকারি সাহায্যের উপরেই বেঁচে রয়েছে বিনিয়োগকারীরা, এদেশেও তাই। বিজেপি কিন্তু সেটা স্বীকার করবে না। কারণ আগের চার দশকের তথাকথিত মুক্ত বাজারি অর্থনীতি যা আসলে ঘুষখোর ক্রোনি পুঁজিবাদ, সেই ঘুষ খাওয়ার সুযোগ ছাড়তে বিজেপি রাজী নয়। তথাগত রায় নিজেই স্বীকার করেছিলেন, কামিনি এবং কাঞ্চন ছাড়া বিজেপি নেতাদের চলে  না। ঘুষ ছেড়ে দিলে যে দলই থাকবে না। তাই তাদের সবটাই জুমলা। কেইনসকে স্বীকার করলে তাদের শুধু আদানি আম্বানি নয়, অন্য দিকটাকেও মান্যতা দিতে হবে যে!! মিষ্টির দোকানের হাতে কয়েক কোটি টাকা দেখে খুশী হতে হবে। তাছাড়া কেইন্স অনুযায়ী সরকারি নিয়ন্ত্রণে উৎপাদন, সরকারি নিয়ন্ত্রণে অর্থের যোগানের ব্যবস্থা, মজুরি হ্রাস না করে ১০০% কর্মসংস্থান-- এই সব অ আ ক খ অন্তত নীতি হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। তারা ডিবিটি চালাবেন কিন্তু নীতি হিসেবে সেটা ঘোষণা না করেই। একেই বলে ফ্যাসিস্ট দর্শন-- eclecticism এক্লেক্টিসিজম।    

    পুঁজিবাদ যখন মডেলহীন 

    দুনিয়া জুড়েই এখন পুঁজিবাদের মডেলহীনতার সংকট। ২০০৬/৭ সাল পর্যন্ত কোনো না কোনো মডেলের কথা পুঁজিবাদ বলেছে। সে মডেল যতই অবাস্তব বা অসত্য হোক, কিন্তু তারা বলেছে। এতদিন ধরে মডেলই ছিল তাদের ধ্যানজ্ঞান। যেমন, 
    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই আড়াই দশক কেইনস মডেলঃ- যুদ্ধজাত বিপুল মুনাফার একাংশকে ব্যবহার করে মার্শাল পরিকল্পনা। যে সাহায্য ইয়োরোপ, জাপানকে দাঁড় করিয়েছিল। কার্যত সমাজতান্ত্রিক কর্মসুচী গ্রহণ করেছিল তারা। এটাই কেইনস মডেল। যদিও সুদের নিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়ে বিনিয়োগের বাড়তি লাভ হয়েছিল বলে জানা যায়নি। এদেশেও কমবেশী তাই। কিন্তু সেই যুগ টেকেনি। পাশ্চ্যাতে টেকেনি, রাশিয়াতেও না। ভারতেও না।
    ১৯৭০-র দশক থেকে প্রায় চার দশক পর্যন্ত নিও লিবারাল মডেলঃ- একচেটিয়াদের বিকাশের পর সাম্রাজ্যবাদী দুনিয়ায় চরম বেকারত্ব, মুদ্রাস্ফীতি আর আর্থিক অবগতির মোকাবিলা করার একটাই উপায় ছিল। খরচ কমানো। কেইন্সীয় সমস্ত খরচ প্রত্যাহার করা। এই আর্থিক সংকট শুধু সোভিয়েতের সাথে বিবাদ চরমে ঠেললো না, নেটো দুনিয়ার অভ্যন্তরেও বিবাদ পেকে উঠলো। তেল সংকট যার একটা বহিঃপ্রকাশ মাত্র। অনেক চেষ্টায় একদিকে পেন্টাগন তথ্য প্রযুক্তি বিপ্লব ঘটালো আর অন্যদিকে সমাজতান্ত্রিক দুনিয়ার পতন ঘটালো। সমাজতান্ত্রিক দুনিয়াকে ভাগ বাটোয়ারা করে নিয়ে নতুন করে শ্বাস নিল পুঁজিবাদ। দাবি করলো যে এবার তারা কর্মক্ষম, তাই আবার তারা ফিরতে চায় ধ্রুপদী তথাকথিত মুক্ত মডেলে। আর ১০০% কর্মসংস্থান নয়, এবার থেকে নাকি তারা মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করেই রপ্তানি বাড়াবে। কিছুদিন টাকা চুঁইয়ে নামলো, তথ্য প্রযুক্তি বিপ্লব সেক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু ১৯৯০-র মাঝামাঝি এসেই জানা হয়ে গেল যে এই মডেলও নাকি সরকারি বদান্যতা নির্ভর করে বেঁচে থাকে!! সরকারি যুদ্ধ, সরকারি অস্ত্র ব্যবসা, দুই দেশের সরকারি চুক্তি। তার উপর ঘুষ আর দুনিয়া জোড়া নানা মাপের রাডিয়া ফাইলসের ছড়াছড়ি। মন্ত্রী, আমলা থেকে শুরু করে মিলিটারি, আদালতকে কব্জা করে প্রতিযোগিতা তুলে দেওয়ার ফন্দি, আর বিপদে পড়লেই সরকার বাঁচাবে, এই আশ্বাস। ধ্রুপদী পুঁজিবাদের নামে বা বিশ্বায়নের নামে যা চলেছে তা আসলে ঘুষ আর জুমলার কারবার। ভারতেও হাজার কিসিমের ঘুষ ও ভাঁওতাবাজি হয়েছে। কিন্তু বিনিময়ে এমন বেসরকারি বিনিয়োগ হয়নি যার মধ্য দিয়ে রপ্তানিমুলক অর্থনীতি গড়ে উঠবে। 
    ২০০৯ পরবর্তী মডেলহীন পুঁজিবাদী বিশ্বে এখন কোনো মডেল নেই। কেইন্সের জন্য মার্শাল নেই। ক্রোনির জন্য ব্যংক নেই। এদেশে বিজেপি এখনও বাস্তবে কেইন্সের ফর্মূলা কাজে লাগাচ্ছে কিন্তু মুখে স্বীকার করছে না। বিজেপি দুর্নীতির আর ঘুষের ক্রোনি পুঁজিবাদের কোনো সুযোগ ছাড়তে চাইছে না। কেইন্সও থাক আবার ক্রোনিও থাক। এ এমন এক সময় যে সুদের এতটুকু তারতম্য হলেই বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বাজার থেকে তোলা পুঁজি নিয়ে চম্পট দেয়। পাতা নড়লেই এদের প্রাণ বেরিয়ে যায়। অথচ বিজেপি এই সব অকর্মণ্যের ঢেঁকিদের জন্য ব্যাংকের দরজা হাট করে খুলে দিয়েছে। আম্বানি না হয় আপাতত ধার ফেরত দিচ্ছেন, কিন্ত তার বিনিয়োগের ক্ষেত্রগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে না তো? আদানির সাথে আম্বানির বিবাদ লাগছে না তো? আম্বানি-আদানি ক্রমেই বিশ্বের প্রথম সারির ধনী হচ্ছেন, কিন্তু ধনী হলেই তো বিনিয়োগ করা যায় না। আদানি শক্তি রপ্তানি করবে বাংলাদেশে। জমি বিনা পয়সায় দেবে সরকার। অস্ট্রেলিয়া থেকে তাদেরই কয়লা আনতে খরচ দেবে সরকার। রেল লাইন পেতে দেবে সরকার। ব্যংকের ঋণ দেবে সরকার, ফেরত না দিতে পারলে রাইট অফ্‌ করবে সরকার। এদেশে যাতে কোনো শক্তি দিতে না হয় তাই আইন বদলে দেবে সরকার। বিনিময়ে নেতা, মন্ত্রী, আমলাদের জন্য ঘুষ। অরুণ জেটলি যখন ৭০০০০ কোটি রাস্তা বানানোর জন্য মঞ্জুর করেছিলেন, তখন প্রশ্ন উঠেছিল, সম্পূর্ণ সরকারি টাকায় পরিকাঠামো তো হবে, কিন্তু বিনিয়োগ হবে তো? কারণ এই বিনিয়োগ পিপিপি মডেলে হচ্ছে না, পুরোটাই জনগণের টাকা খরচ করে হচ্ছে। সত্যি হয়ওনি। বরং ততদিনে ভারতের অনাদায়ী ঋণ আকাশ ছুঁয়েছে। কিন্তু এই রাস্তা বানানোর জন্য ঘুষ খেয়েছে তারা এন্তার। এই তো গুজরাট সরকার বেদান্ত ফক্সকমকে ৪০০০০ কোটির ভর্তুকি দিচ্ছে। বিনিময়ে গুজরাটের মন্ত্রীরা ঘুষ খেলেন, ভোটের তহবিলেও টাকা জমবে, মোদী আবার আকাশে উড়বেন। আজ সকলেই জানে কেইন্স মেনে চলতে বাধ্য হলেও তার আর্থিক ভিত্তিটাই এখন নেই। মার্শাল ঋণের মত দিলদার সাহায্য ছাড়া কেন্সীয় কোনো উপপাদ্যই টেনে নিয়ে যাওয়া যাবে না। এখন কে দেবে এই সাহায্য? চীন ধার দিচ্ছে কিন্তু ঋণ ফাঁদে জড়িয়ে ফেলছে। সুতরাং আজ চুঁইয়েই পড়াও বাদ, পুরোনো সেই কেইন্সের জমানাতেও ফেরা যাচ্ছে না। এখন বিনিয়োগ, জনগণের দেদার খরচ, সঞ্চয় সমান বিনিয়োগ, এসব অলিক কল্পনা। অথচ জনগণের হাতে টাকা দিতেই হচ্ছে। ডিবিটি চলছে। এখনো বাজার থেকে ধার করেই চলছে। কোষাগার ভরার প্রশ্নই নেই। একবার বিজেপি চেষ্টা করেছিলো। কোষাগার ভরতে। নোটবন্দি করে। তারা ভেবেছিল ২-৩ লাখ কোটি টাকা ব্যংকে ফিরবে না। সেটা তারা ছাপিয়ে ব্যংক ডাকাতির সংকট কিছুটা হলেও মেটাবেন। কিন্তু সবটাই ফেরত এসেছিল। ফলে বিজেপির কোনো দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা নেই। মডেলও নেই। আছে শুধু চুরি। সেই নোটবন্দীকেই কেন্দ্র করে আর এক বিরাট চুরি করেছিল বিজেপির মন্ত্রীসভা। যার মধ্যমণিও মোদী ও অমিত শাহ। আন্তর্জাতিক মাফিয়া ডন, যে কিনা কালো তালিকাভুক্ত ছিল, তাকেই চুপিসারে বরাত পাইয়ে দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা। নতুন ৫০০ ও দুই হাজার টাকার নোট ছাপানোর বরাত। মন্ত্রীসভার কতজন ঘুষ খেল, মধ্যমণি কিছুই বলেননি। ইডিও নির্বিকার। (দোসর পুঁজি, শুভাশিস মুখোপাধ্যায়)। যেখানে যতটুকু সঞ্চয় আছে তা কেড়ে নেওয়ার বাসনা বিজেপির। পাশাপাশি কেড়ে নেওয়া হচ্ছে মানুষের উদারমনস্ককতা। নিম্ন স্তরের শ্রেণী সংগ্রাম আর ফ্যাসিবাদের মধ্যে চীনের প্রাচীর নেই। তাছাড়া সারগ্রাহীতাবাদ বা (ইধর উধর) খামচা মারা মতাদর্শের সুবিধা অনেক। যখন শ্রমিকদের বেতন কমানোর দরকার হবে তারা কেইন্স থেকে ধার নিয়ে একাংশ বুদ্ধিজীবীদের দিয়ে বলিয়ে নেবেন যে সার্বিকভাবে মজুরী যদি কম হয়, সব জিনিসের দামই কমবে। রপ্তানি বাড়বে, দেশের উন্নতি হবে। আবার এই একই কারণে আমদানি কমবে, ফলে আভ্যন্তরীণ উতপাদন বাড়বে। কর্মসংস্থান হবে। রপ্তানির টাকায় হাসপাতাল, রাস্তা, ইস্কুল,কলেজ, নতুন কারখানা হবে। আবার যদি কেউ খরচ না করে বিনিয়োগ করতে চায় তবে নির্মলাদেবী আবার কেইন্সের আংশিক কথা আউড়াবেন। বলবেন বিনিয়োগ না করে যদি শুধু খরচ করে তাতেও লাভ। খরচই অর্থনীতির আত্মা। ডিবিটির বিরুদ্ধে আবার আরা ধ্রুপদী পন্থীদের দিয়ে বলাবেন যে ফ্রিবির মধ্য দিয়ে সরকারি কোষাগার ফাঁকা না করে সরকার যদি সেই টাকায় বিনিয়োগকারীদের কর মাফ করতো তবে উৎপাদন হতো। কারণ খরচ না, উৎপাদনই অর্থনীতির আত্মা।  ব্যংকে যা টাকা জমবে সবটাই বিনিয়োগ হবে। ফলে আদানি, আম্বানি, নীরব মোদীদের টাকা ধার দিয়েই যাও। সঞ্চয় আর বিনিয়োগ সমান হবে। আবার কখনো সুদ কমিয়ে তার কেইনসকে মনে করাবেন, যে সরকারের উচিত অর্থের যোগান বাড়িয়ে সুদের হার কম রাখা। ফলে এই ধরনের মডেল হীন আর্থিক জীবন মানেই টাকার যোগান, টাকার চলাচলের গুরত্বকে লঘু করা। টাকার যোগান হবে কিন্তু মানুষ সেটাকে ভিক্ষে ভাববে। মানুষের আত্মসম্মান তলানিতে গিয়ে ঠেকবে। জনগণের ঐক্যে ফাটল ধরবে।

    দেখে শুনে মনে হচ্ছে, বিজেপি এবার নিজেদের মডেলহীন অবস্থান ছড়ে সমাজতন্ত্রেই মনোনিবেশ করছে। কেইন্স কার্যকর করতে হলেও প্রাথমিক পুঁজি দরকার। সেই লক্ষ্যে মোদীর সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জনযুদ্ধ বিরোধীদের রাজ্যের খাটের তলা থেকে পুঁজি যোগাড় করে তার পর তারা দেশ জুড়ে খাটের তলায় উঁকি মারবেন। তার পর তারা দেশজুড়ে একচেটিয়া কালো টাকার কারবারিদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তারা টাকা বিলিয়ে দেবেন। স্বভাবতই দেশের সমাজতান্ত্রিক শক্তি ঝাঁপিয়ে পড়েছে এই সমাজতান্ত্রিক primary accumulation এর মহৎ কর্মকাণ্ডে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৩৮২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে প্রতিক্রিয়া দিন