এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  পরিবেশ

  • প্রকৃতির রুদ্রমূর্তির কাছে সুন্দরবনের আত্মসমর্পণ বিনা আর কি কোন পথ নেই!

    ডঃ দেবর্ষি ভট্টাচার্য
    আলোচনা | পরিবেশ | ১৫ জুলাই ২০২৪ | ৭৯৩ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৩ জন)

  • সমুদ্রগর্ভ থেকে উঠে এসে ঝাঁপিয়ে পড়া সর্বগ্রাসী তাণ্ডব চূর্ণবিচূর্ণ করে ফেলে নিত্যনৈমিত্তিক দ্বীপ-যাপন। তার পোশাকি নাম যাই হোক না কেন, দ্বীপভূমিতে ফি বছরই বিধ্বংসী আঘাত হানে সেই হিংস্র দানব। তছনছ করে দেয় ঘর-গেরস্থালী। কূলপ্লাবী নোনা জলোচ্ছ্বাসে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় স্বপ্নমাখা পোয়াতি শস্যক্ষেত্র। জীবিকা আগলানোর দায় তখন শিকেয়। প্রাণপণে অসহায় জীবন আগলে রাখার পরিত্রাহি কলরবেই ত্রস্ত চরাচর। নৃশংস মৃত্যুদানব যেন গিলে খেতে আসছে একের পর এক আস্ত জীবনকে। আজন্মের ভিটেমাটির মায়া ত্যাগ করে, উঁচু রাস্তার ঠিকানায় আশ্রিত সর্বস্বান্ত মানুষগুলো থরথর করে কাঁপতে থাকে জীবনের ভার অমোঘ অদৃষ্টের কাছে গচ্ছিত রেখে।

    কালের নিয়মে, হিংস্র মৃত্যুদানবের উন্মত্ত নেশাতে এক সময় অবসাদ এসে জমাট বাঁধে। অহর্নিশি তোলপাড়ের ক্লান্তিতে খরস্রোতা নদীর চোখ ক্ষণিকের তরে বুজে আসে। বিধ্বস্ত চরাচরে ঝুপ করে নেমে আসে শ্মশানের স্তব্ধতা। গোবর নিকানো আদুরী উঠোনময় শুধু চরে বেড়ায় স্মৃতির বিধ্বংসী খণ্ডচিত্র। সুন্দরবনের মানুষদের আছেটাই বা কি, যে হারাবে! কিঞ্চিত জমি-জিরেত, খান কয়েক গবাদি পশু, স্বপ্ন বোঝাই ডিঙি নৌকো, আর নদীর ওপারের ভয়াল বাদাবন। অতএব, নতুন চাক বাঁধার স্বপ্নে বিভোর হয়ে আবার নতুন করে শুরু হয় বিন্দু বিন্দু মধু সঞ্চয়ের দিবারাত্রির কাব্য। স্বপ্নের শরীরে একটু একটু করে আশার পলি গেঁথে ফের মাথা তোলে স্বস্তির বাঁধ। মৃত্যুর ঘোর স্তিমিত হতেই আবার ডালপালা মেলে জাঁকিয়ে বসে দ্বীপ-জীবন। মেঠো ফুলের খিলখিল হাসিতে ভরে যায় আবাদ প্রান্তর। ঝাঁক ঝাঁক পাখির কোলাহলে মুখরিত হয়ে ওঠে নদী বেষ্টিত চর-জীবন। নোনা হাওয়ায় শ্বাস ভরে সুন্দরবন ব-দ্বীপ আবার খুঁজে নেয় নতুন জীবনের সুলুক সন্ধান।

    ক্যালেন্ডারের দিনক্ষণ মেনে সাক্ষাৎ মৃত্যুদূত ঝাঁপিয়ে পড়ে লণ্ডভণ্ড করে দেয় দ্বীপ জীবনের বারোমাস্যা। ফি বছর নদী বাঁধ গড়া হয়। আবার ফি বছর সেই বাঁধ চৌচির করে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ে বিষাক্ত নোনা জল। দ্বীপভূমির মিঠে স্বাদে এক লহমায় ভরে ওঠে নোনতা গরল। রক্ত জল করে ফলানো ফসল উজাড় হয়ে যায় নোনা গরলের দংশনে। পাক্কা তিন বছর লেগে যায় আবাদি জমির জিভ থেকে নোনা স্বাদ ধুয়ে মুছে সাফ করতে। এভাবেই মরে যেতে যেতে আবার বেঁচে থাকার খড়কুটোর সন্ধানে ঝাঁপিয়ে পড়ে শোলমাছের মতো গড়নের বাদাবনের লড়াকু মানুষজন।

    নদীর জল পলিকে সঙ্গী করে ছুটে আসে সাগরের অমোঘ টানে। জোয়ারের সময়ে সমুদ্রের বিপরীতমুখী জলোচ্ছ্বাসের ধাক্কায় সেই পলিগুলো ছড়িয়ে পড়ে চারিপাশে। ভাঁটা আসতেই পলিগুলো নদীবক্ষের চারিপাশে থিতু হয়ে জমতে শুরু করে। এমনিভাবেই জোয়ার-ভাঁটার অমোঘ নিয়ম মেনে পলি জমে জমে নদীবক্ষে গজিয়ে ওঠে নতুন চরাচর। নতুন জীবনের সুলুক। একদিন কাকভোরে সেই চরাচর ফুঁড়ে উঁকি মারে তিরতিরে চারাগাছ। আকাশের ঠিকানায় লেখা চিঠির গন্ধে ঠিক খবর যায় পাখিদের ডেরায়। কিচিরমিচির কলকাকলিতে ঘুম ভাঙে নব্য চরভূমির। জীবন যুদ্ধে দগ্ধ কিছু মানুষও এসে জড়ো হয় জনশূন্য দ্বীপের প্রশান্তির আশ্রয়ে। শুরু হয় জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার অদম্য লড়াই। প্রতিকুল প্রকৃতিকে একটু একটু করে বাগে আনার নাছোড় প্রয়াসের হাতে হাত রেখে শুরু হয় নতুন দ্বীপ-জীবন।

    পৃথিবীর অন্যান্য ব-দ্বীপগুলোর তুলনায় সুন্দরবনের দ্বীপগুলো বয়সে ও গঠনে অপেক্ষাকৃত নতুন এবং যারপরনাই অপরিপক্ব। গঠনগতভাবে একটা মজবুত দ্বীপ গড়ে উঠতে দীর্ঘ সময় ধরে চরভূমিতে নদীবাহিত পলিমাটির আনাগোনা অবশ্য প্রয়োজন। কিন্তু নদীবাহিত পর্যাপ্ত পলিমাটি সমৃদ্ধ পরিপক্ব দ্বীপভূমি গঠিত হওয়ার প্রাক্কালেই সুন্দরবনের দ্বীপগুলোতে মানুষের আনাগোনা শুরু হয়ে যায়। মানুষ তাঁর বেঁচে থাকা ও জীবিকা নির্বাহের অমোঘ তাগিদে দ্বীপের অভ্যন্তরে সর্বনাশা নোনা জল আটকানোর প্রয়োজনে বসতি স্থাপনের শুরুতেই নদীবাঁধ তৈরি করে ফেলে। দ্বীপের চারিপাশে বাঁধ থাকার দরুন নদীবাহিত পলি দ্বীপের অভ্যন্তরে আনাগোনায় বাধাপ্রাপ্ত হয়ে নদীগর্ভেই থিতু হয়ে পড়ে। যার ফলস্বরূপ, নদীতল অগভীর হয়ে নদীর নাব্যতাকে কমিয়ে আনে এবং সাধারণ জোয়ারের সময়েই নদীজলের উচ্চতা প্রায় বাঁধের কাছাকাছি চলে আসে। সামুদ্রিক ঝড়ের প্রভাবে নদীতে যখন অস্বাভাবিক রকমের জলস্ফীতি হয়, তখন নদীবাঁধ উপচে বা ভেঙে চুরমার করে দ্বীপভূমিতে নোনা জল হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ে। যার অবধারিত ফল হল, মিঠা মাটিতে ফলিত শস্যের অনিবার্য ধ্বংস, মিঠা জলে লালিত মাছের অবধারিত মৃত্যু, নোনা জলের ছোঁয়ায় আবাদি জমির ফসল উৎপাদন ক্ষমতার নিশ্চিত সর্বনাশ, পানীয় মিঠা জলের চরম আকাল এবং সর্বোপরি, নদী বেষ্টিত চরাচরের বাসিন্দাদের ঘোরতর জীবন সংশয়।

    গঠনগত দিক থেকে সুন্দরবনের দ্বীপগুলোর মধ্যেই বিস্তর তারতম্য রয়েছে। বৃহত্তর সুন্দরবন ব-দ্বীপের পশ্চিমাংশের দ্বীপগুলো, যেমন সাগরদ্বীপ, বকখালি-ফ্রেজারগঞ্জ ইত্যাদি, আকারে যথেষ্ট বড় এবং গঠনগত ভাবে অপেক্ষাকৃত পরিপক্ব। আবার সুন্দরবনের পূর্বাংশের দ্বীপগুলো, অর্থাৎ জঙ্গল লাগোয়া গোসাবা ব্লকের অন্তর্গত অধিকাংশ দ্বীপগুলো, আকারে অপেক্ষাকৃত ছোট এবং গঠনগত ভাবে অপেক্ষাকৃত অপরিপক্ব। অর্থাৎ, নদী বাহিত পলিমাটির সর্বোত্তম স্তূপাকৃতির বেশ কিছুকাল আগে থেকেই এইসকল দ্বীপগুলোতে মানুষ বসতি গড়েছে। বেঁচে থাকা ও জীবিকা নির্বাহকে সুনিশ্চিত করার নিদারুণ প্রয়োজনে দ্বীপের চারিপাশে বাঁধ নির্মাণ করেছে। সেহেতু, মজবুত দ্বীপ গঠিত হওয়ার আগেই এই দ্বীপগুলিতে নদী বাহিত নতুন পলির আনাগোনা প্রকটভাবে ব্যাহত হয়েছে। ফলস্বরূপ, নদীবক্ষে জলস্ফীতির কারণে সুন্দরবনের পূর্বাংশের দ্বীপগুলোই অপেক্ষাকৃত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ছে।

    পরিসংখ্যান বলছে, ফি বছর গড়ে পাঁচ থেকে ছয়টি ঘূর্ণিঝড় বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলে সৃষ্টি হয়, যার মধ্যে অন্ততপক্ষে দুটি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হয়ে ভারতের পূর্ব উপকূলকে বিধ্বস্ত করে। গত কয়েক বছরে ভারতীয় উপকূলীয় অঞ্চল যে কয়টি ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবলীলা প্রত্যক্ষ করেছে, তার মধ্যে চারটিই উদ্ভূত হয়েছে বঙ্গোপসাগরে। বঙ্গোপসাগরে এত ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার পেছনে নির্দিষ্ট কিছু কারণ রয়েছে। বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের চারিপাশে মন্থর বাতাস এবং উষ্ণ বায়ুস্রোতের সাথে অধিক পরিমাণ বৃষ্টিপাত এমনিতেই সারা বছর উপসাগরীয় তাপমাত্রাকে তুলনামূলকভাবে ঊর্ধ্বমুখী রাখে। ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গার মতো বহুবর্ষজীবী (পেরিনিয়াল) নদী বাহিত উষ্ণ জলের ধারাবাহিক প্রবাহ সমুদ্রের নীচের শীতল জলের সাথে মিশে যাওয়ার দরুন পরিস্থিতিকে আরও ঘোরালো করে তোলে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চ তাপমাত্রা বঙ্গোপসাগরের বায়ুর চাপকে ক্রমাগত নিম্নমুখী করে ফেলার ফলে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনা উদ্ভূত হয়। প্রশান্ত মহাসাগর এবং বঙ্গোপসাগরের মধ্যবর্তী অঞ্চলে প্রশস্ত স্থলভূমির অভাবে ঘূর্ণায়মান বায়ু উপসাগরীয় অঞ্চলের দিকে অবাধে ধাবিত হয়। এই ধাবিত ঘূর্ণায়মান বায়ু সমুদ্রপৃষ্ঠে সৃষ্ট ঘূর্ণাবর্তের আকর্ষণে পুঞ্জীভূত হয়ে নিম্নচাপকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তর করে ফেলে। ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য যেখানে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রার (এসএসটি)প্রান্তিক মান ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস প্রয়োজন, সেখানে বঙ্গোপসাগর পৃষ্ঠের তাপমাত্রা (এসএসটি) প্রায়ই ৩১-৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকে। ফলস্বরূপ, বঙ্গোপসাগরে ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সম্ভাবনা জোরালো হয়।

    এই কঠিন সময়ের মৌলিক প্রশ্নটা হল, সুন্দরবন ব-দ্বীপকে কি প্রকৃতির রোষানল থেকে আদৌ বাঁচানো সম্ভব? নাকি প্রকৃতির আপন খেয়ালেই সুন্দরবন একদিন তলিয়ে যাবে নদীগর্ভের অতলে? প্রশ্নটা নিঃসন্দেহে দুরূহ, কিন্তু সদিচ্ছা ও সুপরিকল্পনা থাকলে সুন্দরবনের দ্বীপগুলোকে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করা কি আদৌ অসম্ভব? পৃথিবীর অন্যান্য দ্বীপপুঞ্জের মতোই ঘূর্ণিঝড়ের ঝাপটায় সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের ফলে বাঁধভাঙা বন্যার কারণে সুন্দরবনের দ্বীপগুলো ভয়ঙ্করভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভারতীয় সুন্দরবন ব-দ্বীপ অধীনস্থ মোট ১০২ টি দ্বীপের মধ্যে মানুষের বসবাস ৫৪টি দ্বীপে। বাকি ৪৮টি দ্বীপ জঙ্গলাকীর্ণ এবং সুন্দরবন জাতীয় উদ্যানের অধীনস্থ। মনুষ্য অধ্যুষিত ৫৪টি দ্বীপের মধ্যে কোন্‌ কোন্‌ দ্বীপগুলোর ক্ষেত্রে কংক্রিটের পাকা নদী বাঁধ নির্মাণ আশু প্রয়োজন, তা নদী ও নির্মাণ বিশেষজ্ঞ, স্থানীয় প্রশাসন ও অভিজ্ঞ জনসাধারণের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে স্থির করা হল প্রথম আবশ্যিক কাজ। দ্বিতীয় ধাপে, নির্মাণ প্রস্তাবিত নদীবাঁধগুলোর উচ্চতা ঠিক কতটা হওয়া সমীচীন, সেই সম্বন্ধে বিশেষজ্ঞ, গবেষক ও স্থানীয় অভিজ্ঞ মানুষদের মতামত অগ্রাধিকারের সাথে বিবেচনা করা প্রয়োজন। তৃতীয় ধাপে, কতটা দৈর্ঘ্য জুড়ে এই কংক্রিটের নদীবাঁধ নির্মাণ আশু প্রয়োজন, তা জরিপ করা এবং যথাযথ নকশা ও অর্থমূল্যের প্রয়োজনীয়তা সমৃদ্ধ একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ। এর পরের ধাপটি হল, প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ এবং বরাদ্দ অর্থ অনুযায়ী ধাপে ধাপে নিষ্ঠার সাথে পাকা নদীবাঁধ নির্মাণ।

    সেই সঙ্গে আরও দুটি অতি গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্যকে বিন্দুমাত্র অবহেলা করলে সুন্দরবন ব-দ্বীপ অঞ্চলের কোন দ্বীপ এবং দ্বীপ বেষ্টিত কোন নদীবাঁধকেই কিন্তু টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। প্রথমটি হল, সুন্দরবনের মনুষ্য অধ্যুষিত দ্বীপের নদীবাঁধকে আবৃত করে এবং জঙ্গলাকীর্ণ দ্বীপগুলির অভ্যন্তরে প্রচুর সংখ্যায় ম্যানগ্রোভ বৃক্ষ রোপণ। সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ের বিধ্বংসী তাণ্ডবকে রুখে দেওয়ার জন্য এই ম্যানগ্রোভ বৃক্ষরাশিই প্রাকৃতিক ঢাল হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। ফলে, সুন্দরবন অঞ্চলের স্থলভূমিকে নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা থেকে রক্ষা করার স্বার্থে দ্বীপের চারিপাশে পর্যাপ্ত সংখ্যায় ম্যানগ্রোভ বৃক্ষ রোপণ, লালন ও যথাযথ সংরক্ষণ অবশ্য প্রয়োজন। দ্বিতীয়টি হল, সুন্দরবনের মনুষ্য অধ্যুষিত দ্বীপগুলোর চারিপাশের নদীগুলিতে নিয়মিত ড্রেজিং-এর সুবন্দোবস্তের মাধ্যমে নদীবক্ষের নাব্যতা ফিরিয়ে আনা। লোকালয় বেষ্টনকারী নদীগুলো নাব্যতা ফিরে পেলে, জলস্ফীতির সময়ে বাঁধ উপচে বা ভেঙে নদীর নোনাজল সুন্দরবনের আবাদি দ্বীপগুলোতে ঢুকে পড়ার সম্ভাবনাকে অনেকাংশেই হ্রাস করা সম্ভব হবে। সুন্দরবনের ব-দ্বীপ এবং দ্বীপে বসবাসকারী মানুষগুলোকে বাঁচানোর লক্ষ্যে এই অতি প্রয়োজনীয় কাজগুলো করতে হবে দ্রুততা ও সততার সাথে। নচেৎ, প্রকৃতির রুদ্রমূর্তির কাছে অবনত মস্তকে আত্মসমর্পণ করা ছাড়া আর কোন্‌ বিকল্পই বা খোলা রয়েছে পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্য সুন্দরবন ব-দ্বীপ ও অসহায় দ্বীপবাসীদের বাঁচানোর জন্য?




    তথ্যসূত্রঃ
    1. Island area changes in the Sundarban region of the abandoned western Ganga–Brahmaputra–Meghna Delta, India and Bangladesh
    2. The Indian Sundarban Mangrove Forests: History, Utilization, Conservation Strategies and Local Perception
    3. Sea level rise and Sundarban islands: A time series study
    4. The Dynamic change of climate and struggle for existence of Indian Sundarban
    5. Indian Sundarbans Delta: A Vision
    6. Ghosh, A., Schmidt, S., Fickert, T., & Nüsser, M. (2015). The Indian Sundarban Mangrove Forests: History, Utilization, Conservation Strategies and Local Perception. Diversity, 7, 149-169.

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১৫ জুলাই ২০২৪ | ৭৯৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | ১৫ জুলাই ২০২৪ ২১:০৪534732
  • জরুরী লেখা।
    একটা খটকা, কংক্রীটের বাঁধ বোধহয় খুব একটা ভাল সমাধান নয় নদীর জন্য। তিস্তার ওপরে বাঁধ দিয়ে দিয়ে গোটা এলাকা মারাত্মক ধ্বসপ্রবণ হয়ে গেছে। ভাকরা নাঙ্গালের বাঁধ লং টার্মে ক্ষতিকর দেখা গেছে। অন্য কিছু ভাবা দরকার বোধহয়।
  • Argha Bagchi | ১৬ জুলাই ২০২৪ ১৯:৩৩534771
  • খুব খুব সময়োপযোগী ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় নিয়ে অপূর্ব বিশ্লেষণ। পাঠ প্রতিক্রিয়া হিসেবে মন্তব্য করতে গিয়ে দেখি, আমার বক্তব্য মূল লেখার কলেবর পেয়ে যাচ্ছে, তাই আলাদা একটা খাতা খুলতে বাধ্য হলাম। আগ্রহী পাঠক চাইলে সেই লেখাটায় একবার চোখ বোলাতে পারেন। নীচে লিঙ্ক দিচ্ছি।

    সুন্দরবন - সুন্দর মন - আর কিছু পাগলের বৃত্তান্ত
  • Supriyo Mondal | ১৮ জুলাই ২০২৪ ১২:৩৬534872
  • @দ, লেখক কংক্রিটের যে বাঁধের কথা বলেছেন সেটা দ্বীপগুলোর চারপাশে নদীর নোনা জল আটকাতে যে রিং বাঁধ দেওয়া হয় সেটা। সেটা ঠিকভাবে করলে প্রায়ই বাঁধ ভেঙে জল ঢোকার সমস্যা থেকে মুক্তি দেবে তবে এই বাঁধ আঞ্চলিক জীববৈচিত্রে কোনও প্রভাব ফেলবে কিনা জানিনা।
  • | ১৮ জুলাই ২০২৪ ১৪:০৭534882
  • সুপ্রিয়, ধন্যবাদ। তবে সেটা নিয়েও খটকা রইল। 
  • অরিন | ১৯ জুলাই ২০২৪ ০৫:১২534957
  • দ "কংক্রীটের বাঁধ বোধহয় খুব একটা ভাল সমাধান নয় নদীর জন্য। "
    কংক্রিটের বাঁধ দিলে আরো ক্ষতি বই লাভ কিছু হবে না, মানুষ তো মাটির বাঁধ দিয়ে দেখেছে | উষ্ণায়ণ থামবে না, ক্রমশ বেড়ে চলবে, যার জন্য প্রতি বছরের সাইক্লোনের তীব্রতা আরো বাড়বে, পাল্লা দিয়ে গরম, ও এসির ব্যবহার | সুন্দরবন ডুববে, কেউ ভাবে না, তবে যেদিন কলকাতায় জলে কুমীর ডাঙায় বাঘ পরিস্থিতি হবে, সেদিন টনক নড়বে |
    একটা ভিডিও রইল,
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল মতামত দিন