এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • আমাদের বাবা

    Eman Bhasha লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৬ জুন ২০২৪ | ৩২০ বার পঠিত
  • আমার বাবা।। সারাজীবন ঠোঁট কাটা এবং গরিব আদিবাসী দলিতের বন্ধু ছিলেন। আড়ালে আবডালে বলা হতো-- সাঁওতাল বাগদি মুচি ছোটলোকদের নেতা। প্রকাশ্যেই বলতেন অনেকে: ছোটলোকদের মাথায় তুলছে। 
    গরিব মানে ৭০ এবং আশির দশকের মাঝ পর্যন্ত ছিল 'ছোটলোক'। গরিবপাড়াকে মধ্যবিত্তরা বলতেন, 'ছোটলোকদের পাড়া'। 
    বাবাদের সংগ্রাম ছিল একে বদলানো। তাই মুচিপাড়া হল দাসপাড়া। বাগ্দিপাড়া রসপুকুর। সাঁওতাল পাড়া প্রথমে আদিবাসী পাড়া পরে খাবড়িগড়।

    #
    সমানে তর্ক করেছি তাঁর সঙ্গে। ছোট থেকেই। তিনিই শিখিয়েছিলেন তর্ক।  তিনিই বলেছিলেন, যুক্তি ছাড়া কিছু মানবে না। আমি বললেও না। আগাছা হয়ো না গাছ হয়ো।  বঞ্চিতদের পাশে থেকো। নিন্দা প্রশংসার মুখাপেক্ষী হয়ো না।'
    #
    আর একটা কথাও বলতেন-- বন্ধু মহলে-- বিচারসভায়।
    চুলে কখনও ছেলে আটকায় না।
    চুলের হিন্দি প্রতিশব্দটি ব্যবহার করতেন, বলাই বাহুল্য।
    বলতেন, দোষহীন মানুষ হয় না। কম বা বেশি দোষ। 
    তবে সৎ মানুষ হওয়া যায়। চুরি না করেও বাঁচা যায়। 
    বন্ধু কৌশিক ভট্টাচার্য মনে করালেন কবিতার কথা। কবিতা লিখতেন। গান করতেন । সুর দিতেন।
    এক অনিন্দ্য ব্যানার্জি ছাড়া একসঙ্গে কারও এতগুণ আমি চেনাবৃত্তে দেখিনি।
    #
     আমার দেখা সেরা কমিউনিস্ট। জমি বেচে পার্টি করেছেন।
    ১৯৫৭ তে পার্টির সংস্পর্শে আসেন। ১৯৮৭ তে পার্টি সদস্যপদ ছেড়ে দেন। চিঠি লিখে বলেন, আমি কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হওয়ার যোগ্য নই, 
    কারণ আমার কিছু জমি আছে। 
    পরের পংক্তি ছিল: এই পার্টির কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যপদ দেওয়ার যোগ্যতা নেই। কারণ এই পার্টিটা কমিউনিস্ট পার্টি আর নেই । বড়লোকের ধামাধরা হয়ে উঠছে।
    #
    # সারা বছর পার্টিকে গাল দিতেন। ভোট এলেই জানপ্রাণ দিয়ে পার্টিকে বাঁচানোর জন্য খাটতেন।
    ২০০৯ তে যখন পার্টির ব্রাঞ্চ সদস্যরাও তৃণমূলের কাছে মুচলেকা দিয়ে দিল,  তিনি বলেছিলেন, কাউকে মুচলেকা দিতে শিখিনি। একঘরে করা হয়েছিল। দমেন নি।
    ১৯৮৭ তে পার্টি ছাড়ার পর কারো কারো মদতে পুকুরে বিষ পালুইয়ে আগুন দেওয়া হয়েছিল। আর ২০০৯ থেকে একঘরে। 
    মানুষ কথা বলতো লুকিয়ে
    ২০১৩ যে পার্টি পঞ্চায়েত নির্বাচনে যখন ভয়ে প্রার্থী দেবো না ঠিক করল নিজে ক্যান্সার রোগী হয়ে গ্রামে গ্রামে  বেরিয়ে পড়লেন ৭৯ বছর বয়সে প্রার্থী খুঁজতে। যেখানে পঞ্চাশ ষাট ও সত্তর দশকে পার্টি গড়েছিলেন। ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে হারা আসনে জেতালেন পার্টিকে। প্রচারক দুজন। আমার বাবা। আর পার্টি/ সমাজসেবা করে সম্পত্তি উড়িয়ে দেওয়ার জন্য দৈনিক গাল দেওয়া আমার মা। একাই লিখে বেড়ালেন দেওয়াল। একাই গেলেন গণনাকেন্দ্রে।
    মুসলিম ছাড়া কোনও দিন প্রার্থী করেনি যে আসনে কোন পার্টি সেখানে দাঁড় করালেন এক চর্মকারের সন্তানকে। জেতালেন।
    গোটা থানায় কোন লাল পতাকা উড়ত না। শুধু আমাদের বাড়িতে। ২০১৩ ভোটে জেতানোর পাঁচ মাস পর চলে গেলেন বাবা।
    মা সেই পতাকা রেখেই ছিলেন উড়িয়ে।
    কিন্তু মায়ের মৃত্যুর পর কোন নেতা এলেন না। যাঁরা সত্তর দশকে আশ্রয় নিয়েছিলেন। 
    কষ্ট পেয়েছি। কিন্তু কমিউনিস্ট মতাদর্শ এবং গরিবের পাশে থাকা ভুলি নি।
    #
    বাবা নাটক যাত্রা থিয়েটার করতেন। সাঁওতালদের সঙ্গে নাচতেন। খেলতেন সব ধরনের খেলা।
    সত্যম্বর অপেরায় যাত্রা করতে উৎপল দত্তের সংস্পর্শে আসেন। গ্রামে কংগ্রেসীদের সঙ্গে নিয়েই একযোগে সবাই মিলে, জুনিয়র হাইস্কুল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন।‌সহযোগী ছিলেন আমার বড় মামা। কংগ্রেসের দাপুটে শিক্ষক নেতা। কিন্তু ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল অটুট। মুখে যদিও বলতেন, বন্ধুর চেয়ে পার্টি বড়। 
    কাজে ব্যক্তিগত সম্পর্কে বিশ্বাসী ছিলেন।
    আমার ভাইয়ের বিয়ের সময় বউয়ের নাম/ পদবী বদলাতে হবে বলায় আপত্তি করেন। আমাদের অত্যন্ত প্রিয় এক আত্মীয় বলেন, হিন্দু নাম থাকলে আমরা কেউ খাবো না। চলে যাবো-- বাবা উত্তর দেন, এটা তোর ব্যাপার। তাঁরা চলে গেলেন। বাবা একবারও অনুরোধ করলেন না।
    আমাদের খারাপ লাগছিল।
    কিন্তু বাবার হ্যাঁ তো হ্যাঁ না তো না।
    যুক্তি বুদ্ধি দিয়ে যা বুঝবেন তাই করবেন।
    নাড়ায় কার সাধ্য।
    আমি মানবধর্মে এবং নবীর কথায় বিশ্বাসী। আমার ধর্ম আমার কাছে তোমার ধর্ম তোমার কাছে।
    একবার একজন রাগের মাথায় তালাক দিয়ে দেন। দিয়ে খুব কষ্ট পান। তিনি খুব ধর্মবিশ্বাসী। তাঁর বাবা এবং স্ত্রীও ধর্মপ্রাণ।
    কী হবে? খুব শোরগোল।
    শহর আর গ্রাম বা বস্তি এক নয়।
    সবাই সবকিছুতে যোগ দেয়। হিন্দু মুসলমান মিলে লোকে লোকারণ্য।
    বাবা খবর পেয়ে এলেন। দুজনকে টেনে দোতলায় নিয়ে গিয়ে ঘরে ঢুকে দিনে দুপুরে শিকল তুলে দিয়ে বললেন, যা।  মেটা ঝামেলা।
    সেকালে বিশ্বাস ছিল, স্বামী স্ত্রীর সব ঝামেলা বিছানায় মেটে।
    নারীবাদীরা রাগবেন না। তাঁরা এখন সুখী দম্পতি। তাঁদের নাতনির বিয়ে হল কদিন আগে।
    #
    আরেকজন বাবার খুব ভক্ত। দাবা খেলার পার্টনার। রেগে তালাক দিয়ে বসলেন। কী হবে এবার? খুব চিন্তা। 
    বাবা বললেন, তুমি তো কমিউনিস্ট পার্টি করো। তোমার আবার তালাক ফালাক কী।
    আর ধর্মেও তিন তালাক নাই। আমি বাংলায় কোরান পড়েছি।
    যাঁরা পড়েনি তাদের কথা শুনো না। তারা না পড়ে বড্ড বেশি ফরফরায়।
    আর যাঁরা আমাকে তৃণমূলের দালাল বলে আনন্দ পান-- তাঁদের জন্য, আমার বাবার গায়ে লাল পতাকা জড়িয়ে দিয়েছিলাম ধর্মীয় নেতা আর তৃণমূলের ভ্রূকুটি উপেক্ষা করে। কেউ কেউ বলেছিলেন, বাবার সঙ্গে আমাকেও কবরে পুঁতে দেবে গাঁয়ে ২০০৯ এর পর লাল পতাকা বের করায়‌। ২০১৬ তে আক্রান্ত হয়েছি শাসকদলের অন্যায় কাজের বিরোধিতা করায় জন্মভূমিতে। ২০১৮ তে দুবার কর্মক্ষেত্রে। 
     কাজ করে দেখাতে হয়। ফেসবুকে বাণী দিয়ে নয়।

    সংযোজন:

    #কাদামাটির_হাফলাইফ ৪৫
    আমার বাবার গল্প শুনতে চেয়েছেন এক মনস্ক পড়ুয়া বন্ধু। পৃথিবীর সব বাবার মতোই আমার বাবা স্বভাবে ভোলে ভালা। বাড়ির কথা মনে থাকে না, কিন্তু যখন থাকে তখন খুব মুশকিল। যা করবেন ১০০ শতাংশ। যা ছাড়বেন তাও একশো শতাংশ। খালি সামাজিক কাজ আর পড়া লেখার অভ্যাস ছাড়তে পারেন নি। মৃত্যুর দিন সকালেও বই পড়েছেন। হাসপাতালে শুয়ে শুয়ে গুনগুন করে গান গেয়েছেন। আলিপুর কমান্ড হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে এপিটাফ লিখেছেন।
    বাবা পার্টির কাজে কয়েকদিন কিন্তু যাত্রা নাটকের কাজে মাসের পর মাস উধাও হয়ে যেতেন। পেশাদারি যাত্রাদলেও একাধিকবার কাজ করেছেন। খ্যাতনামা সত্যম্বর থেকে বর্ধমান বাঁকুড়া মেদিনীপুরের দল শ্রীদুর্গা অপেরা বা আরো কোন দলে।
    রাখাল সিংহ, চণ্ডী কেস ছিল তাঁর ব্যক্তিগত বন্ধু। যাত্রাপালাকার শম্ভু বাগের সঙ্গে ছিল খুব ভাব। মধু গোস্বামীর সঙ্গেও আলাপ। শেখর গাঙ্গুলী আমাদের গ্রামে যাত্রা করতে এসে বাবা ও মালেকভাইয়ের প্রশংসা করে যান। 
    মা খুব রেগে যেতেন। কারণ যাবে সুস্থ শরীরে ফিরবে না খেয়ে না খেয়ে রাত জেগে যক্ষ্মা বাধিয়ে। আমি মুখ দিয়ে রক্ত পড়ার কথা শুনেছি। দেখিনি।
    এ-সব ১৯৬৬ র আগের গল্প।
    ১৯৮৮ তে পার্টির সদস্যপদ ত্যাগ করে আবার চার মাস যাত্রাদলে কাটিয়ে এলেন।

    আবার বিচিত্র পেশার গল্পও শুনেছি। পার্টির বই পত্রপত্রিকার বিক্রেতা। আনন্দমেলা নয় কিশোরভারতী পড়াতে হবে। ভূতের গল্প নয় সাহসের বিপ্লবের বিজয় শোনাতে হবে-- এই ইচ্ছা।

    বিক্রি নামে। ঘর থেকেই টাকা শোধ দিতে হতো।
    একবার এক ভিডিও হল খুলে ফেললেন যৌথভাবে। ভালো ছবি দেখাবেন কেরলের শাস্ত্রসাহিত্য পরিষদের ধাঁচে।
    মেহমুদ, দিলীপ কুমার, চার্লি চ্যাপলিন, মেল গিবসনের ছবি দেখাবেন স্বপ্ন।
    লোকে দেখতে চায় নীল ছবি।
    চললো না।
    মাথায় এলো হোটেল করবেন। ভারতের নানা রাজ্যের ভালো খাবার খাওয়াবেন। বাঙালির ডাল ভাত ছাড়াও পুষ্টিকর খাবার আছে-- বোঝাবেন।
     
    মা বললেন, যেদিকে দুচোখ যায় চলে যাবো। ঘরের হোটেল একমাস সামলাও, তারপর।
    মা তো জানেন,  জমি যাবে, লাভ কিছু হবে না।
    একবার ঠিক করলেন, ধান ব্যবসা।
    একজনকে নিয়ে এলেন, বললেন, এ বড়ো ব্যবসায়ী হবে, দেখে নিও। বাবার পুঁজি তাঁর শ্রম।
    বাবার দৃষ্টি ভালোই ছিল, বাবার সব পার্টনার বড়োলোক হতো, বাবাকে কেবল আর কয়েক বিঘা জমি বেচতে হতো এই যা।
    শেষ বয়সে খুব ইচ্ছে হয়েছিল, একটা ট্রাক্টর কেনার।আমি বলেছিলাম, কিনে দেবো।
    তুই কেন দিবি। দিলেও ধার হিসেবে। সুদ নিতে হবে।
    পাগল হয়েছো। সুদ নেবো।
    নিবি, ব্যাঙ্কে রাখলেও তো পেতিস। তিন পার্সেন্ট দেবো।
    তাহলে তুমি অন্য লোক দেখো। আমি দেবো না।

    আচ্ছা নেবো। তবে শোধ করে দেবো। নিতে হবে।
    আচ্ছা দেখা যাবে।
    তাহলে নেবো না
    ঠিক আছে আগে তো ভালো হও ঘরে চলো।
    #
    বাবার ঘরে ফেরা হলো না।
    অপারেশন করার দিনেই চলে গেলেন।
    বারবার ঠকঠক আওয়াজ করে ডাকছিলেন, বাবার সংক্রমণ হয়ে যাবে ভেবে পাশে গেলাম না।

    আর শোনা হলো না কী বলতে চেয়েছিলেন।

    বলবে আব্বা?
    বলবে!
    ১৮.০৭.২০২১

    Sisir Datta আমাদের প্রিয় শিক্ষক লিখেছেন:

    ওনার গল্প এত ছোট কিকরে  হয়। এই সামান্য কটা লাইনে ওনার কোন গুণমুগ্ধই সন্তুষ্ট  হবেন না।

    Pintu Kumar Majumder  শিক্ষক লিখলেন

    তোমাদের গ্রাম ও কোনা গ্রামের রান্না পূজা তে প্রায় সব নামী যাত্রা অভিনেতা ও অভিনেত্রী এসেছে। কোনা তে যাত্রার সময় এনামুল জেঠু এসে মজুমদার বাড়িতে উঠতেন। আমার বাবা দেহিপদ মজুমদারকে জেঠু খুব ভালোবাসতেন। রতন কোলে, স্বপ্না কোলে, জ্যোৎস্না দত্ত, মিতা দে, জ্যোতি ভট্টাচার্য, বিমল বোস, আরও অনেক দামী শিল্পী কোনা ও তোমাদের গ্রামে গেছেন। রাখাল সিং প্রায় প্রতি বছর যেতেন। উনি ও এনামুল জেঠু আমার মায়ের হাতের তৈরী আমতেল দিয়ে মুড়ি মাখা খুব ভালোবাসতেন। আমাদের কোণা গ্রামের বাড়িতে রান্না পুজোর সময় চাঁদের হাট বসতো। এনামুল জেঠু ভীষণ জ্ঞানী মানুষ ছিলেন। অনেক যাত্রা পালাকার যাত্রা লেখার সময় এনামুল জেঠুর সাথে পরামর্শ করতেন।

    আমার মনে হয় অনেক বিষয় তোমার জানা নেই, বিশেষত জেঠুর যাত্রাপালার বিষয় সম্পর্কে। শম্ভু বাগ, ভৈরব গাঙ্গুলী, বিমল বোস, শান্তি গোপাল, এদের অনেক যাত্রা গ্রন্থে জেঠুর তথ্য সরবরাহ হয়েছিল। জেঠু খুব ধীর স্থির ও নির্লিপ্ত মানুষ ছিলেন। বেশি নিজেকে প্রকাশ করা পছন্দ করতেন না। রাখাল সিং একবার নিউ গণেশ অপেরা তে "বিরোহী সুলতান" যাত্রা করার আগে বাবা কে নিয়ে এনামুল জেঠুর কাছে বসে চরিত্র সম্পর্কে পাঠ নেন।ক্রীতদাস বলে বিমল বোস এর যে যাত্রা বই আছে তাতে জেঠু তথ্য সরবরাহ করেছিলেন। বাবা এইসব আমাদের সব বলেছিলেন। তুমি যদি আগে বাবার সাথে বসতে তাহলে অনেক কিছু জানতে পারতে। আর উপায় নেই। পরে দেখা হলে আরো বলবো।

    বোন শাহানারা লিখেছেন:

    উৎপল দত্ত এর নাটকের গ্ৰুপে সুযোগ পেয়েছিলেন। শুধু ঘড়ি ধরে রিহার্সাল এ যেতে পারতেন না বলে,ভয়ে ছেড়ে দিয়েছিলেন। বাবার মুখে শোনা গল্পটা ছিল এমন– দাদুর বন্ধু তুলসী লাহিড়ী বাবাকে উৎপল দত্ত এর কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন পিতৃপরিচয়ে। দাদু স্টার থিয়েটরে অভিনয় করতেন।   রিহার্সালের  সময় ছিল বিকেল সাড়ে চারটে। উৎপল দত্ত সময়টা মনে রাখতে বলেছিলেন। বাবা প্রথম দিন ৪.৩৫ নাগাদ গিয়েছিলেন। উৎপল দত্ত বলেছিলেন আমার ৪.৩০ মানে ৪.৩০, ৪.৩৫ নয়। পরের দিন বাবা ৪.৩১ এ পৌঁছান। তাতে উৎপল দত্ত বলেছিলেন– শুধু মাত্র মুশা সাহেব এর ছেলে বলে কিছু বললাম না। সময়টা মনে রেখো। অনেক চেষ্টা করেও বাবা তার পরের দিন ৪.২৯-এও পৌঁছাতে পারেননি বলে ছেড়ে দিয়েছিলেন।

    @অহমিয়া কবি Pranab Hazarika লিখেছেন

    ওঁনাৰ উপৰে আমি একটা কবিতা লিখেছিলেন ২০১৩ সালে ৷ শ্যাম বাজাৰেৰ বীৰেন্দ্ৰ কৃষ্ণ মঞ্চে অনুস্হিত এক কবি সন্মেলনে ওঁটা পাঠ কৰেছিলাম ৷নিচে কবিতা টি দেওয়া হল : 

    বর্ধমান জেলার এক প্রান্তিক কবি - অভিনেতা জনদরদী এমানুল হক ২০১৩ সালে ইহ সংসার ত্যাগ করেন ৷ ওঁনার স্মৃতিতে একটি কবিতা রচনা করেছিলাম যেটা ১০ - ১১ - ১৩ তারিখে শ্যামবাজার বীরেন্দ্র কৃষ্ণ মঞ্চে আন্তর্জাতিক সাহিত্য সংস্কৃতি দ্বারা আয়োজিত কবি সন্মেলনে পাঠ করেছিলাম ৷

    ৷ মৃত্যু অপরাজেয় ৷

              প্রণব কুমার হাজরিকা 

    বিশ্ব মঞ্চে জীবন নাটের চরিত্র রূপায়ণ - মনুষ্য কুলের আগমন, অলিখিত নাট অভিনয় মৃত্যু অবধি ৷
    তার পর মঞ্চ থেকে প্রস্হান
    রেখে যায় কতগুলি স্মৃতি ৷
    আমাদের মধ্যে নাটের মাঝে 
    নাট লেখা হয় - মানুষের জীবন সংগ্রাম , হাসি কান্না, প্রেম ভালোবাসা সাবলীল গতিতে প্রতিফলিত হয় কাহিনীর মধ্য দিয়ে ৷
    সৃষ্টি হয় নৃত্য কবিতা গীত চিত্র গল্প - জনজীবনের দাপোন ৷ সুন্দরতম শিল্প বহিঃ প্রকাশ ,
    সে শিল্প প্রাণে জাগরিত জনজীবন ৷
    হে শিল্পী! সৃষ্টি অনুপ্রাণিত করে জনতাকে, প্রদান করে আনন্দ , পথ নির্দেশনা করে সুন্দর ও সংগ্রামের ৷
    সেই মৃত্যু অপরাজেয় যার সৃষ্টি রেখে যায় সুন্দর পিপাসু জনতার মাঝে অনুপম মধুর স্মৃতি ৷
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৬ জুন ২০২৪ | ৩২০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে মতামত দিন