এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  রাজনীতি

  • কিষেণজি মৃত্যু রহস্য - পর্ব ৯ 

    বিতনু চট্টোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | রাজনীতি | ১৭ মে ২০২৪ | ৫৪৪ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • বাসুদেব ভকত, ঝাড়খন্ড পার্টি এবং পঞ্চায়েত ভোট ২০০৩ 
     
    নয়ের দশকের মাঝামাঝি অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলায় কাজ করা আইপিএস অফিসার প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘ঝাড়খন্ড পার্টি মানেই সেই সময় সিপিআইএমের জাত শত্রু। ঝাড়খন্ডিদের সঙ্গে লড়াইয়ে জঙ্গলমহলে সিপিআইএমের আধিপত্যবাদের রাজনীতির মুখ তখন বাসুদেব ভকত।’ জামবনির চুটিয়া গ্রামের বাসিন্দা, পুরো ঝাড়গ্রাম তাঁকে চিনত বাসু ভকত নামে। তাঁর নেতৃত্বে সিপিআইএম বাহিনীর সঙ্গে ঝাড়খন্ডিদের লড়াইয়ের একটা অধ্যায় শেষ হল ২০০৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের দিন। একুশ শতকের প্রথম পঞ্চায়েত ভোট রাজ্যে। তখনও পিপলস ওয়ার গ্রুপের (পিডব্লুজি) সঙ্গে এমসিসি যুক্ত হয়ে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি মাওবাদী তৈরি হয়নি ঠিকই, তবে তার সলতে পাকানো শুরু হয়ে গিয়েছ। পশ্চিমবঙ্গে মাওবাদী কার্যকলাপের যে সূচনা লগ্ন তার প্রাক্কালে জঙ্গলমহলে পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘটল এক নৃশংস হত্যাকাণ্ড। যে ঘটনা জঙ্গলমহলে হত্যা-পাল্টা হত্যার রাজনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ চ্যাপ্টার।     
    পুরো জামবনি, বেলপাহাড়ি তখন জ্বলছে। একদল একটা খুন করে তো আর একদল পালটা একটা খুন করে। এরা কারও হাত কেটে নেয় তো ২৪ ঘন্টার মধ্যে ওরা এদের কারও হাত কেটে নেয়। বাস্তবিকই এমন হিংসা-প্রতিহিংসার রাজনীতি তখন ঝাড়গ্রাম মহকুমার বিভিন্ন জায়গায়। থানা, পুলিশের মনোবল পুরো তলানিতে। এরই মধ্যে এগিয়ে আসছিল পঞ্চায়েত ভোট। ভোট কীভাবে করানো যাবে তা ভেবেই তখন  রাতের ঘুম চলে গিয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পুলিশ প্রশাসনের। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার তখন কে সি মিনা। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজেশ সুবর্ণ। এসডিপিও ঝাড়গ্রাম বাস্তব বৈদ্য এবং ঝাড়গ্রাম থানার ওসি দীপক সরকার। ভোটের আগে এক-দেড় মাসে মধ্যে পরপর কয়েকটা খুন-পালটা খুন হল। 
     
    ঝাড়গ্রাম পুলিশ একটা চ্যালেঞ্জ নিল, ভোটের দিন কাউকে কোনও ঝামেলা করতে দেওয়া হবে না। কিন্তু সেই সময় ঝাড়গ্রাম মহকুমার যা অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি, এটা কঠিন কাজ। কোথাও ঘন জঙ্গল, কোথাও বসতি, মাইলের পর মাইল ফাঁকা এলাকা, তার মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে সমস্ত বুথ। আর অস্ত্রে শান দিয়ে রয়েছে যুযুধান দু’পক্ষ, ঝাড়খন্ড পার্টি এবং সিপিআইএম। এই পরিস্থিতিতে বিনা রক্তপাতে পঞ্চায়েত ভোট পরিচালনা করা...কার্যত অসম্ভব। ভোটের আগের দিন যতটা কাজ করা সম্ভব এবং খাতায়-কলমে যতটা নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায় তা সম্পুর্ণ করে  প্রায় মাঝ রাতে একটু বিশ্রাম নিতে গেল জেলা পুলিশ। ঘুমোতে নয়, তার সময় নেই আর। ভোর চারটে-সাড়ে চারটের মধ্যে রেডি হয়ে বেরোতে হবে। ভোটের আগের দিন সিনিয়র পুলিশ অফিসারদের আলোচনায় ঠিক হল, ঝাড়গ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজেশ সুবর্ণ থাকবেন বেলপাহাড়িতে এবং এসডিপিও বাস্তব বৈদ্য থাকবেন জামবনিতে। সিনিয়র অফিসাররা এলাকায় থাকলে কিছুটা সুবিধে। কিন্তু এই যে বিভিন্ন এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে, এটাও পুলিশ অফিসারদের একটা মানসিক সান্তনা মাত্র। নিরাপত্তা কখনও নিশ্ছিদ্র হয় না, জঙ্গলমহলে তো তা আরও অবাস্তব আইডিয়া।
    সকাল থেকে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন শুরু হল গোটা রাজ্যে। এবং একই সঙ্গে প্রাক মাওবাদী যুগের ঝাড়গ্রামেও। সকাল সাড়ে দশটা-পৌনে এগারোটা হবে। ল্যান্ডলাইনে ফোন বাজল জামবনি থানায় ওসির ঘরে। ঘরে তখন বসে এসডিপিও বাস্তব বৈদ্য। তিনিই ফোন তুললেন।
    ‘জামবনি থানা?’
    ‘হ্যাঁ, কে বলছেন?’
    ‘স্যার, গড়বেতা থেকে দুটো গাড়িতে ১০-১২ জন প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জামবনি গেছে ভোট করাতে। গাড়ির নম্বর দুটো লিখে নিন।’
    ‘আপনি কে বলছেন?’
    ‘স্যার, নাম বলতে পারব না। এটুকু বলছি, আমিও সিপিআইএম করি। গড়বেতায় থাকি। গড়বেতার সিপিআইএম অফিস থেকে দু’গাড়ি সশস্ত্র লোক আজ ভোরবেলা জামবনিতে গেছে। গাড়ির নম্বর আপনাকে বললাম। আপনি দেখে নিন।’
     
    এই কয়েকটা কথা বলেই ফোনের লাইন কেটে দিলেন ওই অপরিচিত ব্যক্তি। স্তম্ভিত হয়ে গেলেন এসডিপিও। বলে কী লোকটা! অবিলম্বে গাড়ি দুটোকে আটকাতে হবে। বাস্তব বৈদ্য বুঝে গেলেন, সিপিআইএমের গড়বেতা বাহিনীকে ধরতে না পারলে সর্বনাশ হবে আজ একটা। কিন্তু খবরটা কি ঠিক?
    সেই সময় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সিপিআইএমের প্রায় একচ্ছত্র নেতা দীপক সরকার। দোর্দণ্ডপ্রতাপ জেলা সম্পাদক। দীপক সরকারের বিরোধী একটা শিবিরও রয়েছে জেলা জুড়ে। তবে সংখ্যায় তাঁরা নগন্য এবং স্বাভাবিকভাবেই দলীয় রাজনীতিতে যথেষ্ট দুর্বল। দীপক সরকারের সবচেয়ে বিরোধী তখন সূর্যকান্ত মিশ্র। কিন্তু জেলার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সূর্যকান্ত মিশ্র নিজেকে খুব একটা জড়াতেন না। এছাড়া দীপক সরকারের বিরোধী শিবিরের লোক বলে পরিচিত কেশপুরের কৃষকসভার নেতা তরুণ রায়ও। আর ঝাড়গ্রাম মহকুমায় দীপক সরকার বিরোধী ডহরেশ্বর সেন। প্রকাশ্যে জেলা সম্পাদক দীপক সরকার এবং তাঁর অনুগামীদের বিরোধিতা কেউ বিশেষ করতে পারতেন না ঠিকই, কিন্তু তা বলে সিপিআইএমের নেতা-কর্মীদের মধ্যে প্রচণ্ড গোষ্ঠী কোন্দল গোপনও ছিল না। নয়ের দশক থেকেই মেদিনীপুর জেলায় দীপক সরকারের কী সর্বগ্রাসী প্রভাব ছিল তার জন্য ২০১১ সালের একটা ঘটনার উল্লেখই যথেষ্ট। সেই ঘটনার কথা বলেই ব্যাক করব ২০০৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের দিনে। 
    ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগের আগের ঘটনা। সিপিআইএম রাজ্য দফতর সমস্ত জেলায় বার্তা পাঠাল বিধানসভা ভোটের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলার সব আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম চেয়ে। এটাই ৩১ আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের বহু বছরের দস্তুর। খুব প্রয়োজন না পড়লে প্রার্থী তালিকা নিয়ে জেলা কমিটির প্রস্তাবের ওপর রাজ্য দফতর কখনই খুব একটা কাটাছেঁড়া করত না। পশ্চিম মেদিনীপুরে ১৯টি আসন। শরিক দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের প্রস্তাবিত প্রার্থীদের নাম নিলেন সিপিআইএম জেলা সম্পাদক। তারপর জেলার ১৯টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম পাঠালেন মুজফফর আহমেদ ভবনে। সেই তালিকা দেখে দলের তৎকালীন রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু, মুখ্যমন্ত্রী এবং পলিটব্যুরো সদস্য বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং আর এক শীর্ষ নেতা নিরুপম সেন তো হতবাক। ১৯ জনের তালিকায় ১৮ জন সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম রয়েছে। নারায়ণগড় কেন্দ্রে প্রার্থীর নামের জায়গা ফাঁকা। সেই ১৯৮২ সাল থেকে নারায়ণগড়ের বিধায়ক সূর্যকান্ত মিশ্র। রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী, তার চেয়েও বড় কথা, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। সিপিআইএমের সর্বোচ্চ কমিটির সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্রর নাম না লিখে নারায়ণগড়ে প্রার্থীর জায়গা ফাঁকা রেখে তালিকা আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন দীপক সরকার। স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিলেন রাজ্য নেতৃত্বকে, সূর্যকান্ত মিশ্র নারায়ণগড় কেন্দ্রে জেলা সিপিআইএমের অনুমোদিত প্রার্থী নন। তাই জায়গাটা ফাঁকা রাখা হল। রাজ্য পার্টি তাদের মতো নাম বসিয়ে নিতে পারে। 
     
    বিষয়টা জানতে সূর্যকান্ত মিশ্রর বেশি সময় লাগেনি। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা নেতৃত্বের এই চরম ঔদ্ধত্যে তীব্র অপমানিত সূর্যকান্ত মিশ্র রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুকে জানিয়ে দেন, তিনি ভোটে লড়বেন না। সূর্যকান্ত মিশ্র কথা বলতেন কম, কিন্তু তাঁর চারিত্রিক দৃঢ়তা নিয়ে সম্যক ধারণা ছিল সিপিএমের শীর্ষ নেতাদের। সূর্যকান্ত মিশ্র খানিকটা মান্য করতেন নিরুপম সেনকে। তাঁকেই দেওয়া হল দায়িত্ব। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, নিরুপম সেনরা রুদ্ধদ্বার ঘরে বারবার বোঝালেন রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে। সূর্যকান্ত মিশ্র ভোটে না লড়লে রাজ্যজুড়েই ভুল বার্তা যাবে। এমন একটা কারণে তিনি ভোটে লড়তে চাইছেন না যা প্রকাশ্যে বলাও যায় না। তবে তো পার্টি শীর্ষ নেতৃত্বের গোষ্ঠী কলহের নগ্ন, জরাজীর্ণ চেহারার পলেস্তারাটা খসে পড়বে। জানাজানি হয়ে যাবে ভারতের মার্ক্সবাদী কমিউনিস্ট পার্টির নিঃস্বার্থ ভাবমূর্তি গড়ে তোলা নেতাদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের সমীকরণ।
    এদিকে রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভোটে না লড়লে কী বার্তা রাজ্যজুড়ে যাবে তা ভালই বুঝতেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিমান বসু, নিরুপম সেনরা। নিশ্চিত পরাজয়ের আশঙ্কায় রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী নির্বাচনে লড়ছেন না, বিরোধীদের এই প্রচারের মোকাবিলা করার মতো সাংগঠিক শক্তি বহু বছর আগেই চলে গিয়েছে। নিরুপম সেন লাগাতার বোঝালেন সূর্যকান্ত মিশ্রকে। বোঝালেন, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পার্টির, আরও নির্দিষ্টভাবে দীপক সরকারের এই গোষ্ঠী রাজনীতির জন্য এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না যাতে দলের আশু ক্ষতি হয়। বরফ গলল, ২০১১র ভোটে লড়তে রাজি হলেন সূর্যকান্ত মিশ্র। সমস্যার আশু সমাধান হল বটে, কিন্তু আসল ক্ষতটা থেকেই গেল। আসলে সমস্যাটা তো শুরু হয়েছিল সেই আটের দশকে। ২০১১ সালে এসে তা কীভাবে, কোন ম্যাজিকে এক মুহূর্তে কেটে যাবে? 
     
    ব্যাক টু ২০০৩। স্থান, জামবনি থানা। পঞ্চায়েত ভোট চলছে মোটামুটি নির্বিঘ্নে। কথা নেই, বার্তা নেই, আচমকা বজ্রপাতের মতো একটা টেলিফোন এল থানার ওসির ঘরে, গড়বেতা থেকে দুটো গাড়িতে চেপে সিপিআইএমের লোক ঢুকেছে জামবনিতে। আর এই এক ফোনেই তাল কেটে গেল ঝাড়গ্রাম মহকুমা পুলিশের। নিস্তরঙ্গ ভোটের সকালে আচমকা ঝড় উঠল জামবনি থানায় ওসির ঘরে। ফোনটা আসার আগে পর্যন্ত সব কিছু স্বাভাবিকই ছিল। এক একটা বুথের সামনে লাইন। যেখানে জোর যার, সেখানে ভোট তার। এটাই তখন পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন জায়গায় ভোটের নিয়ম। থানায় বসে পুরো এলাকার খোঁজ নিচ্ছেন বাস্তব বৈদ্য। কোথাও কোনও গণ্ডগোলের খবর নেই। শুরুটা ভালো হয়েছে। প্রথম সাড়ে তিন-চার ঘন্টা ঠিকঠাক চলছে সব কিছু। সমস্ত বুথ থেকে ব্যালট পেপার বের করে ঝাড়গ্রামে না পৌঁছানো পর্যন্ত শান্তি নেই যদিও! তবু, মর্নিং শোজ দ্য ডে। কিন্তু হঠাৎই আসা একটা ফোনে এসডিপিও বুঝে গেলেন, গড়বেতা-চন্দ্রকোণার সশস্ত্র বাহিনী এলাকায় ঢুকে পড়েছে মানে ঝাড়খন্ডিদের শক্ত ঘাঁটিতে বুথ দখলের পরিকল্পনা করছে সিপিআইএম। এবং তার অনিবার্য পরিণতি সংঘর্ষ। আর মেদিনীপুরের পশ্চিম প্রান্তের জঙ্গলে ঘেরা এই রুক্ষ এলাকায় সংঘর্ষ মানেই একাধিক মৃত্যু, রক্তস্রোত। খুন-পালটা খুন। 
    সেই সময় থানায় উপস্থিত সামান্য কয়েকজন অধস্তন পুলিশ কর্মী, হোমগার্ডরাও ঠিকই বুঝতে পারলেন, কিছু একটা হয়েছে। সিনিয়র অফিসারদের চেহারাটা বদলে গিয়েছে এক মুহূর্তে। শান্ত, নিশ্চিন্ত ভাবটাই নেই আর। কেমন যেন অস্থির, অস্থির করছেন। 
    গড়বেতা থেকে ফোনটা আসার পর মিনিট চার-পাঁচেক চুপ করে বসে থাকলেন বাস্তব বৈদ্য। তারপর ওয়্যারলেসে খবর পাঠাতে শুরু করলেন সমস্ত টহলদারি পুলিশের গাড়িকে। এটা তো প্রায় প্রাক মোবাইল ফোনের যুগ। প্রায় বলার কারণ, মোবাইল ফোন এসেছে বটে। কিন্তু সবার হাতে নেই। আর থাকলেই বা কী? জঙ্গলের অধিকাংশ জায়গায় নেটওয়ার্কও নেই। খবর পাওয়া এবং দেওয়া এত সহজ নয় তখন। তবুও যতটা সম্ভব জামবনি এবং বেলপাহাড়ির সমস্ত বুথে ডিউটিরত পুলিশ এবং টহলদারি ফোর্সকে থানা থেকে জানিয়ে দেওয়া হল গড়বেতা থেকে পাওয়া গাড়ি দুটোর নম্বর। বলা হল, যত দ্রুত সম্ভব ধরতে হবে গাড়ি দুটোকে।
    পুলিশ অফিসারদের খবর পাঠানোর পর বাস্তব বৈদ্য ফোনে ধরলেন রবি সরকারকে। রবি সরকার তখন ঝাড়গ্রামে সিপিআইএমের গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং তাঁর একটা বড় পরিচয়, তিনি জেলা সম্পাদক দীপক সরকারের বিরোধী। 
    ‘গড়বেতার দিক থেকে আপনাদের বেশ কিছু সশস্ত্র ছেলে দুটো গাড়িতে করে ঝাড়গ্রামে ঢুকেছে শুনছি। আপনি কি কিছু জানেন?’ প্রতিটা মুহূর্ত গুরুত্বপূর্ণ, সময় নষ্ট না করে সরাসরি রবি সরকারের কাছে জানতে চাইলেন ঝাড়গ্রামের এসডিপিও।
    ‘না তো। আমি কিছু জানি না।’
    ‘দেখুন, খোঁজ নিন। যদি জানা থাকে কিংবা জানতে পারেন এখনই উইথড্র করুন গাড়ি দুটোকে। কোনও বুথ দখল, গোলমাল কিন্তু বরদাস্ত করব না।’
    ‘সত্যিই আমার জানা নেই। তাছাড়া যদি এই খবর ঠিকও হয় আমাকে জানাবে না।’
     
    আধ ঘন্টা-চল্লিশ মিনিট বাদে জামবনি থানায় খবরটা এল ওয়্যারলেসে। যে দুটো নম্বরের গাড়ির খোঁজে আকাশ-পাতাল তল্লাশি শুরু হয়েছিল, তার মধ্যে একটার হদিশ মিলেছে। জামবনি থানা এলাকার দুবরা গ্রামে নম্বর মিলিয়ে একটি গাড়িকে আটক করেন মেদিনীপুর জেলা পুলিশের এক সাব ইন্সপেক্টর। কিন্তু সেখানে পুলিশের সংখ্যা ছিল কম। পুলিশ দেখেই গড়বেতার গাড়িটা থেকে নেমে কয়েকজন পালায়। পুলিশ তাদের মধ্যে দুজনকে ধরে ফেলে। সেই সঙ্গে গাড়ি থেকে উদ্ধার হয় একাধিক বন্দুক। তার মধ্যে একটা বন্দুকের লাইসেন্সও রয়েছে। দুপুর সাড়ে ১২টা বেজেছে, মাথার ওপরে গনগনে সূর্য। ভোটের বুথগুলোতে ভিড়টা আস্তে আস্তে কমতে শুরু করছে। এবং নির্বাচন এখনও পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ। হিংসা-প্রতিহিংসার কোনও খবর নেই, কিন্তু মেদিনীপুরে ডিউটি করা যে কোনও পুলিশ অফিসারই জানেন, কঠিন সময় এবার শুরু হল। জঙ্গলের মাঝে অনেক দূরে দূরে বুথ। অধিকাংশই প্রায় ফাঁকা। রাজনৈতিক দলের সশস্ত্র বাহিনীর বুথ দখল নেওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ, পরিস্থিতি। গড়বেতা থেকে আসা সাদা বড় গাড়িটা দুপুর একটার কাছাকাছি জামবনি থানায় নিয়ে এল পুলিশ। সঙ্গে আটক দুজন এবং বাজেয়াপ্ত পাঁচটি বন্দুক। একটা গাড়ি ধরা পড়েছে আধ ঘন্টা আগে পাওয়া এই খবরে যতটা নিশ্চিন্ত হয়েছিলেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে দুশ্চিন্তাটা কয়েক গুণ বেড়ে গেল ঝাড়গ্রাম মহকুমার এসডিপিওর। কারণ, দ্বিতীয় গাড়িটা ধরা পড়েনি, এটা বড় কথা নয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেল, অন্য গাড়িটা রয়েছে খোদ বাসু ভকতের সঙ্গে।  
    আরও এক ঘন্টা কাটল, দু’ঘন্টা কাটল। দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামছে জঙ্গলমহলে। বড় গণ্ডগোলের কোনও খবর নেই, কিন্তু গড়বেতা থেকে আসা দ্বিতীয় গাড়িটারও তখনও কোনও খোঁজ মিলছে না। গাড়িটাকে হদিশই করা যাচ্ছে না। গড়বেতার সশস্ত্র বাহিনী নিশ্চই জামবনির কনকদূর্গা মন্দির দেখতে আসেনি পঞ্চায়েত ভোটের দিন! তবে গেল কোথায় গাড়িটা? কী করছে শাসক দলের এই বহিরাগত সশস্ত্র বাহিনী?
    টানটান উত্তেজনার এই পঞ্চায়েত ভোটের দুপুর থেকে জামবনি এলাকায় পুলিশ যখন সিপিআইএম গড়বেতা বাহিনীর দ্বিতীয় গাড়ির খোঁজে ব্যস্ত, ওই এলাকায় আরও একটা ঘটনা ঘটছিল একই সঙ্গে। ঠিক তখন নয়, আসলে ঘটনাটা ঘটছিল সকাল থেকে এবং চলছিল কয়েক ঘন্টা ধরে। স্থান, জামবনি এবং ঝাড়গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সীমানা বরাবর ডুলুং নদীর তীরবর্তী এক এলাকা। স্কেল, কম্পাসে মেপে বললে নদীর একদিকে সাপধরা গ্রাম। অন্যদিকে পাঁচামি গ্রাম। পাঁচামি গ্রাম থেকেই শুরু হচ্ছে পাঁচামির ঘন জঙ্গল।  
     
    বম্বে রোড ধরে কলকাতা থেকে মেদিনীপুরের দিকে গেলে কোলাঘাট, পাঁশকুড়া ছাড়িয়ে খড়গপুর মোড়। সেখান থেকে একটা রাস্তা চলে যাচ্ছে মেদিনীপুর শহর হয়ে বাঁকুড়ার দিকে। আর খড়গপুর থেকে সোজা চলে গেলে লোধাশুলি মোড়। লোধাশুলি মোড় ছাড়িয়ে চন্দ্রি, আরও একটু এগোলে চিঁচিড়া। লোধাশুলি থেকে ডানদিকে ঘুরে সোজা ঝাড়গ্রাম শহর ১০-১২ কিলোমিটার। চন্দ্রির কাছে রয়েছে আরও একটা রাস্তা যা যাচ্ছে জামবনির দিকে। সেই রাস্তা ধরে ৪-৫ কিলোমিটার গেলে ডুলুং নদীর ওপর একটা কংক্রিটের ব্রিজ। সেই ব্রিজের একটু আগেই একটা কালভার্ট। কালভার্টের একদম লাগোয়া সাপধরা প্রাথমিক বিদ্যালয়। ভোটের বুথ। সেই বুথ ছাড়িয়ে জামবনির দিকে আরও খানিকটা এগোলে ডুলুং। নদী পেরোলেই বড় রাস্তার ধারে ডানদিকে পাঁচামি গ্রাম এবং শুরু হয়ে যাচ্ছে জঙ্গল। একদিকে ঝাড়গ্রাম পঞ্চায়েত সমিতি, অন্যদিকে জামবনি পঞ্চায়েত সমিতি। সেদিন ঘটনাটার সূত্রপাত ওই সাপধরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, আর শেষ তার থেকে সামান্য দূরে পাঁচামির গ্রামে।
    সাপধরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথ ছাড়িয়ে কালভার্ট এবং ডুলুং নদীর ওপর ব্রিজটা পেরিয়েই রাস্তার ধারে পাঁচামি গ্রামের বুথ। দুটো বুথের মধ্যে দূরত্ব কম-বেশি এক কিলোমিটার। মাঝখানে রাস্তা এবং কংক্রিটের ব্রিজ। সাপধরা গ্রামে সিপিআইএমের দাপট বেশি। অন্যদিকে পাঁচামি গ্রাম এবং জঙ্গল আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকা, সেখানে প্রভাব বেশি ঝাড়খন্ড পার্টির। সেদিন সাপধরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথটাতে সকাল থেকে ঝাড়খন্ড পার্টির সঙ্গে সিপিআইএমের ছোটখাট গণ্ডগোল চলছিল। সেই এলাকায় সিপিআইএমের শক্তি তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি হওয়ায় ভোট শুরু হওয়ার দু’তিন ঘন্টা পরই সিপিআইএমের লোকজন ঝাড়খন্ডিদের বুথ থেকে বের করে দেয় এবং বুথের দখল নেয়। তারপর শাসক দলের লোকজন সারাদিন ঝাড়খন্ড পার্টির বাছাই করা কর্মী, সমর্থকদের আর ওই বুথে যেতে দেয়নি। সারাদিন ওই বুথে ঝাড়খন্ড পার্টির লোকজন ঢুকতেই পারেনি। এই নিয়ে ঝাড়খন্ড পার্টির লোকজন অত্যন্ত ক্ষুব্ধ ছিল। পাঁচামি গ্রামে আবার ঝাড়খন্ডিদের প্রভাব কিছুটা বেশি থাকলেও তারা সেখানে বুথের ওপর ততটা নিয়ন্ত্রণ নিতে পারছিল না যতটা শাসক দলের ক্যাডাররা করতে পেরেছিল সাপধরা এলাকায়। সিপিআইএম এবং ঝাড়খন্ড পার্টির এই টানাপোড়েনে সারাদিন ভোট চলে ওই দুই বুথ এলাকায়। সময় যত গড়াচ্ছিল তৈরি হচ্ছিল উত্তেজনা।

    নির্বাচনের আগের দিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঠিক করা ছিল, ভোট মিটে গেলে পুলিশের গাড়ি ঝাড়গ্রাম থেকে চন্দ্রির মোড় দিয়ে গিয়ে প্রথমে সাপধরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথের ব্যালট পেপারের বাক্স তুলবে। তারপর ওই গাড়িই ডুলুং নদী পেরিয়ে পাঁচামির বুথ থেকে ব্যালট পেপার নিয়ে ঝাড়গ্রামে ফিরবে। ঝাড়খন্ড পার্টির লোকজনও প্রশাসনের এই প্ল্যানিংয়ের কথা জানত। কিন্তু ভোটের দিন ওই দুই বুথ এলাকায় সারাদিন ধরে সিপিআইএম এবং ঝাড়খন্ড পার্টির মধ্যে চলা টেনশনের খবর দুপুর থেকেই পৌঁছোচ্ছিল জেলা প্রশাসনের কাছে। বিকেলের আগেই ওই এলাকার ঝাড়খন্ড পার্টির নেতারা বুঝে গিয়েছিলেন, সাপধরা বুথে তাদের রেজাল্ট খুব খারাপ হবে। কারণ, সিপিআইএমের বুথ দখল এবং তাদের লোকজনের বুথে ঢুকতেই না পারা। ভোট শেষের মুখে স্থানীয় ঝাড়খন্ডি নেতারা পরিকল্পনা করেন, দখল হয়ে যাওয়া সাপধরা বুথের ব্যালট বাক্স লুঠ করার। অত্যন্ত গোপনে তাঁরা প্ল্যান করেন, সাপধরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথের ব্যালট পেপার নিয়ে প্রশাসনের গাড়ি ডুলুং নদী পেরিয়ে পাঁচামির বুথে পৌঁছানোর আগেই রাস্তায় তাকে আটকানো হবে। তারপর গাড়ি থেকে নামিয়ে নেওয়া হবে ব্যালট পেপারের বাক্স। রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে ব্যালট পেপারের গাড়ি আটকানোর প্ল্যান চূড়ান্ত হয়ে যায়।
    ঝাড়খন্ড পার্টির এই প্ল্যানিংয়ের খবর ছিল না প্রশাসনের কাছে। কিন্তু ঝাড়গ্রামের মহকুমা শাসক দুপুর থেকে ওই এলাকায় লাগাতার গণ্ডগোলের খবর পেয়ে একটা কিছু আশঙ্কা করছিলেন। এমনিতেই এই সব এলাকায় নির্বিঘ্নে ভোট পরিচালনার একটা গুরুত্বপূর্ণ চ্যাপ্টার ব্যালট পেপার বিনা বাধায় স্ট্রং রুমে পৌঁছনো। ওই এলাকার দুটো বুথ থেকে ব্যালট বাক্স ঝাড়গ্রামের স্ট্রং রুমে আনার জন্য আগের পরিকল্পনা ভোটের বিকেলে হঠাৎই পালটে দিলেন মহকুমা শাসক এবং ঝাড়গ্রাম থানার ওসি দীপক সরকার। সাপধরা এবং পাঁচামির বুথ থেকে ব্যালট পেপার আনার জন্য একটার বদলে দুটো গাড়ি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেন তাঁরা। প্রশাসন ঠিক করল, একটা গাড়ি চন্দ্রি দিয়ে গিয়ে শুধু সাপধরা বুথের ব্যালট বাক্স নিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে ঝাড়গ্রাম শহরের স্ট্রং রুমে ফিরবে। অন্য একটা গাড়ি জামবনি থেকে যাবে পাঁচামির বুথে। মহকুমা শাসকের এই বদলে দেওয়া পরিকল্পনার কথা জানা ছিল না ঝাড়খন্ড পার্টির লোকজনের। তারা তো ভোট মিটে যাওয়ার পরই পাঁচামি গ্রামে ঢোকার মুখে রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে লুকিয়ে অপেক্ষা করছে কখন সাপধরার বুথ থেকে ব্যালট বাক্স নিয়ে প্রশাসনের গাড়ি আসবে। তারপর তারা গাড়ি থামিয়ে সেই ব্যালট বাক্স লুঠ করবে। 
    এদিকে গড়বেতা থেকে আসা একটা গাড়ি তো সশস্ত্র সিপিআইএম ক্যাডার সহ ধরা পড়ে গিয়েছে সেই দুপুরেই। উদ্ধার হয়েছে অস্ত্রও। কিন্তু দ্বিতীয় গাড়িটার হদিশ বিকেল পর্যন্ত করতে পারল না পুলিশ। সেই গাড়িতেও ছিল সশস্ত্র ৫-৬ যুবক। 
     
    ক্রমশ।.. 
     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ১৭ মে ২০২৪ | ৫৪৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • অসিতবরণ বিশ্বাস | 2409:4061:2d49:869::d309:***:*** | ১৭ মে ২০২৪ ১২:৪৮531857
  • রোমাঞ্চকর।লেখককে অজস্র ধন্যবাদ।
  • b | 14.139.***.*** | ৩১ মে ২০২৪ ১৯:১৫532539
  • ম্যাপ দেখছিলাম । এরকম  লেখার সাথে ভূগোলটা জানা উচিৎ এই ভেবে।  চন্দ্রি থেকে , সাপধরা হয়ে , পাঁচামি যাওয়ার রস্তায় তো ডুলুং (তীর দিয়ে দেখানো ) পড়ছে না।  ওর কোনো শাখানদী হবে কি ? 
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন