এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  উপন্যাস

  • এক দুগুণে শূণ্য - ৪

    Kishore Ghosal লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | উপন্যাস | ০২ জানুয়ারি ২০২৩ | ৭৬৭ বার পঠিত | রেটিং ৪.৫ (২ জন)


  • সনৎবাবু সদরের কলিংবেল বাজাতেই, সনৎবাবুর স্ত্রী পৃথাদেবীর কম্বুকণ্ঠ শোনা গেল, “দরজা খোলা আছে। বেল বাজিয়ে আর পাড়া মাথায় করতে হবে না”। দরজা খুলে সনৎবাবু ভেতরে ঢুকতে পৃথাদেবী আবারও ঝলসে উঠলেন, “কী হল আজ এত দেরি যে? পতিতের চায়ে আফিং-টাফিং মেশায় নাকি বলতো? বাড়ির কথা আর মনেই পড়ে না?”।
    সনৎবাবু আমতা আমতা করে বললেন, “ওই একটু দেরি হয়ে গেল, মিনিট পনেরো মতো”।  কাঁসার বাসন হাত থেকে মেঝেয় পড়ে যাওয়ার মতো ঝনঝনে আওয়াজে পৃথাদেবী বললেন, “আমি কি ঘড়ি দেখতে জানি না, আমাকে টাইম বোঝাচ্ছো? রোজ সাতটায় চা করে তুমি ডাকো। আজ সাড়ে সাতটা বাজলো, তাও তোমার পাত্তা নেই দেখে, আমিই উঠে চা করলাম”।
    সামান্য ঝাঁজ নিয়ে এবার সনৎবাবু বললেন, “একটা দিন যদি সকালে উঠে চা করেই থাকো, তাতে হয়েছেটা কী?” আগুনে ঘিয়ের ছিটে দিলে যা হয়, তাই হল।
    পৃথাদেবী দপ করে জ্বলে উঠলেন যেন, বললেন, “তোমার ওই মিচকে পোড়া বুদ্ধি আমি বুঝি না মনে করেছো? চা বানাতে গেলেই তোমার গায়ে জ্বর চলে আসে। ফাঁকি মারার কিছু না কিছু একটা ছুতো ঠিক বের করে ফেলবে!”
    “ওওওওঃ ভাষার কী ছিরি – “মিচকে পোড়া বুদ্ধি”! সারারাত কি যত্তো আজেবাজে কথা চিন্তা করে, খুলির মধ্যে জমা করে রাখো, নাকি? যাতে সকালে ঘুম থেকে উঠেই তোমার বুলি ঝাড়তে পারো!”
    এবারে কাচ ভাঙার শব্দে পৃথাদেবী বললেন, “অ্যাই যেএএএ, এ সব বুলি, তোমাদের বাড়ি থেকেই শেখা। আমাদের বাড়িতে এরকম ছোটলোকের ভাষা কোনদিন শুনেছো? বিয়ের পর এ বাড়িতে পা দেওয়া থেকে যেমন শুনেছি, তেমনি শিখেছি!”
    “বাজে কথা ছেড়ে কাজের কথা শোনো, দেখি! আমার চা কোথায়, বানাওনি?”
    “তোমাদের বাড়ির কথা বললেই বাজে কথা হয়ে যায়, না? আর তোমার মতো আমার মন কুচুটে নয়, নিজের চা করলে তোমারও চা করি। রান্নাঘরে চাপা আছে, নিয়ে এসে গিলে নাও”। সনৎবাবু রান্নাঘর থেকে চায়ের কাপটা নিয়ে এলেন।
    স্ত্রীর পাশে সোফায় বসে, চায়ের কাপে একবার চুমুক দিয়ে বললেন, “তোমার হাতে জাদু আছে, পিথু, এমন চা আমি সাতজন্মেও বানাতে পারবো না”।
    “ওসব মন ভুলোনো তেল মাখানো কথায় আমি ভুলছি না। কী কাজের কথা আছে বলছিলে, সেটা ঝেড়ে কাশো”।
    “ঠাণ্ডা মাথায় শুনতে হবে কিন্তু, খুব গোপন কথা! তোমার যা চেঁচামেচি করা স্বভাব, ভয় হয় পাড়ার লোক জেনে যাবে”।
    “আমার মাথা গরম? আমি চেঁচামেচি করি? আমার গলা পড়শিদের সবাই শুনতে পায়?”
    “আঃ, তাই বললাম বুঝি?”
    “বলতে বাকি কী রাখলে? এসবও তোমাদের বাড়ির শিক্ষা। তোমার মা থাকতে তো বাড়িতে কাগ-চিল বসতে ভয় পেত! এখন দেখ গে, ছাদের আলসেতে কত কাগ বসে বসে হাগছে! হুস্‌ হুস্‌ করলেও ওড়ে না”।
    “আচ্ছা, বাবা, আচ্ছা, তোমার কণ্ঠস্বর কোকিলপোড়া-মধুমাখা, আর এবাড়ির সবার গলা চিরতা মাখা! কথাটা বলতে দেবে”?
    “ছিলই তো! পাড়ার পাঁচজনকে জিগ্‌গেস করে এসো না, তোমার মায়ের গলার আওয়াজে পাশের বাড়ির বাচ্চা ডুকরে কেঁদে উঠতো কিনা? পুকুরের ওপাড় থেকে চৌকিদার পবন সিং দৌড়ে আসেনি, এ বাড়িতে ডাকাত পড়েছে ভেবে?”
    “এখন আবার নতুন ইতিহাস বানাতে বসলে? বলি, কথাটা শুনবে কি?”
    “বললেই শুনবো। তুমি পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া করবে, আর আমি কাটাকাটা উত্তর দিলেই অমনি লেজ গুটিয়ে কেঁউ কেঁউ...আচ্ছা বলো”।
    সনৎবাবু উত্তেজিত হয়ে বললেন, “মোক্ষম একটা সুযোগ এসেছে, চব্বিশঘণ্টার মধ্যে ঘরে বসে টাকা ডবল”।
    “আজকাল পতিত চায়ে গ্যাঁজার রসও মেশাচ্ছে নাকি? হতভাগাকে আমি জেলে পাঠাবো!”
    একটু বিরক্ত হয়েই সনৎবাবু বললেন, “আরে, ধ্যাত্তেরি। পুরোটা না শুনেই আবোলতাবোল বকে চলেছে। এই জন্যেই বলে মেয়েলি বুদ্ধি!”
    “মেয়েছেলের মেয়েলি বুদ্ধি হবে না তো কি, ষাঁড়ের বুদ্ধি হবে? তোমার ধানাইপানাই রেখে আসল কথাটা কখন বলা হবে শুনি?”
    “সেটাই তো বলার চেষ্টা করছি, তুমিই তো বার বার ব্যাগড়া দিয়ে খেই হারিয়ে দিচ্ছো! পতিতের দোকানে আজ দুজনের সঙ্গে আলাপ হলো, বিপদতারণ আর গোপাল। দুজনে যাচ্ছিল মংলার বাড়ি টাকা ডবল করতে”।
    “মংলার বাড়ি? তার টাকার অভাব? তাকেও টাকা ডবল করতে হয়?”
    “সেই কথাই তো ওদের বললাম, আমরা গরিবদুঃখী থাকতে তোমরা মঙ্গলবাবুর বাড়ি যাবে কেন, ভাই? আমাদের বিপদের হাত থেকে তোমাকেই রক্ষা করতে হবে, বাবা”।
    “এই আমরাটা আবার কে? তোমার সঙ্গে আর কে ছিল?”
    “কেন? কমল ছিল, রোজই তো আমরা একসঙ্গে মর্নিং ওয়াকে যাই”।
    “আবার সেই কমল? তাকেও তুমি এর মধ্যে জোটালে?”
    “আরে বুঝছো না, পুরোনো বন্ধু সঙ্গে থাকলে যুক্তি শলা-পরামর্শ করতে সুবিধে হয়”।
    “ছাই হয়। সব ব্যাপারে ওর তোমাকে টেক্কা দেওয়ার স্বভাব – এ আমি বরাবর দেখে আসছি। কুচুটে আর হাড়ে বজ্জাত!”
    “যাঃ। এ তোমার রাগের কথা। তারপর কী হল শোনোই না!”
    “আর কী শুনবো, আমার গা জ্বলে যাচ্ছে। আমাদের টাকা ডবল হলে, ওদের ওপর আমরা একটু ইয়ে করতে পারতাম! কমলের বউয়ের যা গুমোর! আমার থেকে অন্ততঃ দশ বছরের বড়ো...” মুখ ভেংচে ব্যাঁকা ব্যাঁকা উচ্চারণে পৃথাদেবী কমলবাবুর স্ত্রীর নকল করে বললেন, “দিদিভ্যাই, তুমি না থ্যাকলে একা একা বাড়িতে আমি তো ভয়েই মরে যেতাম”। ন্যাক্কাআ! আমি যেন সাতকেলে বুড়ি, আর উনি কচি খুকি, নাক টিপলে দুধ বেরোয়। আদিখ্যেতা একদম সহ্য হয় না!”
    “তুমি কী এখনই কমলের বউয়ের গুষ্টি উদ্ধার করতে বসলে? এদিকে কত কাজ পড়ে আছে, জানো?”
    “আচ্ছা বলো”।
    “ওরা সাড়ে আটটা নাগাদ আমাদের এখানেই আসবে”।
    “কারা আসবে”?
    “বললাম যে, বিপদতারণ আর গোপাল – ওরাই তো টাকা ডবল করবে!”
    “তা আসে আসুক না, আমি কি তাদের বাড়া ভাতে ছাই ঢালতে যাবো নাকি?”
    “ওরা দুপুরে খাবে। রাত্রে থাকবে, রাত্রেও খাবে। কাল সকালে আমাদের ডবল টাকার হিসেব বুঝিয়ে তারপর যাবে”।
    “তার মানে? এটা কি সরকারি লঙ্গরখানা, নাকি বিনি পয়সার ভাতের হোটেল! চারবেলা করে শুধু থাকবে আর খাবে! আমি ওসব পারবো না”।
    “ওফ্‌ কথাটা বুঝছো না! ওদের হাতে টাকা তুলে দেবো, তারপর যদি গা ঢাকা দেয়! আমাদের বাড়িতেই রাখবো, যতক্ষণ না টাকা ডবলের হিসেব দিচ্ছে, ততক্ষণ ছাড়া হবে না!”
    “অ তাই বুঝি? কদিন আগে টিভিতে দেখাচ্ছিল বটে, চিটিংবাজ কিছু লোক এইভাবে টাকা নিয়ে গায়েব হয়ে যায়, তারপর আর ফেরে না”।
    “তবে? আমাকে কি অত বোকা পেয়েছো? আমি কড়ার করে নিয়েছি, কোত্থাও বেরোনো হবে না, টাকা ডবল হলে, পাওনাগণ্ডা মিটিয়ে তবে মুক্তি!”
    “পাওনাগণ্ডা? ফোকটে থাকবে, খাবে, তারপরেও আবার পাওনা কিসের?”
    “বাঃ রে, ওরা একটা কমিসন নেবে না?”
    “সেটা কত?”
    “পাঁচলাখে পঞ্চাশ চেয়েছিল...”
    “তার মানে?”
    “আমি ওদের পাঁচ লাখ দেব, ওরা আমাকে সাড়ে ন লাখ দেবে!”।
    “প-ন-চা-শ? টাকা কি খোলামকুচি নাকি?”
    “আরে না রে, বাবা, না। আমাকে অত বোকা পেয়েছো নাকি? পঞ্চাশ বললেই অমনি পঞ্চাশেই রাজি হয়ে যাবো? পঁচিশ দিয়ে শুরু করেছিলাম, অনেক দরদাম, আকচাআকচি করে তিরিশে নামিয়েছি”।
    “মাথামোটা, তুমি আর বুদ্ধির বড়াই করো না। আমি হলে দশ দিয়ে শুরু করে পনেরোয় রফা করে ফেলতাম। তোমরা ব্যাটাছেলেদের এমন আলবড্ডে-উড়নচণ্ডে স্বভাব কেন বলো তো? হাতে কিছু টাকা আসতে না আসতেই ওড়াতে শুরু করো? টাকা রোজগার করতে কতো মেহনত করতে হয় জানো?”
    “বা রে সারাজীবন চাকরি করলাম, সংসার পালন করলাম, আমি জানবো না?”
    “যাও যাও আমার কাছে আর ঝাঁপ খুলো না। বাপ কিছু ইঁটকাঠ লোহা যোগাড় করে বাড়িটা রেখে গেছিলেন, তাই তোমার এত ফোপরদালালি! তারপর আমি এসে সংসারের হাল ধরাতে, এ যাত্রায় কোনরকমে উৎরে গেলে। অন্য কেউ হলে তোমার নাকের জলে চোখের জলে অবস্থা হতো”।
    “আচ্ছা, আচ্ছা, সে সব কথা পরে শুনবো। আমি পাক্কা দশটায় ব্যাংকে যাবো। তার আগেই সব ঠিকঠাক করে ফেলতে হবে!”
    “ব্যাংকে কেন?”
    “টাকা তুলতে হবে না? ঘরে আর কত আছে? ভাবছি পাঁচ তুলবো...” । সনৎবাবুর কথা শেষ হবার আগেই সদর দরজায় বেল বাজল। “ওই ওরা এসে গেল মনে হয়”।
    “কারা আবার এল এই অসময়ে?
    “বললাম যে বিপদতারণ আর গোপাল আসবে, যারা টাকা ডবল করবে। আমাদের এখানে থাকবে”! সনৎবাবু সোফা থেকে উঠে দরজা খুলতে গেলেন। দরজা খুলতেই ঘরে ঢুকে পড়ল বিপদতারণ আর গোপাল।
    বিপদতারণ পৃথাদেবীকে দেখেই, নিচু হয়ে প্রণাম করল, বলল, “আপনি নিশ্চয়ই কাকিমা?”
    পৃথাদেবীর মতো ভারি ভারিক্কি জাঁদরেল মহিলাও বিপদতারণের এই আচমকা ভক্তিতে থতমত খেয়ে বললেন, “হ্যাঁ...মানে না, ইয়ে আমিই...”
    “ও আমি দেখেই বুঝেছি! সাক্ষাৎ অন্নপূর্ণা দর্শন হল। গোপাল, প্রণাম কর, এমন সুযোগ বড়ো আসে না, রে!” গোপালও প্রণাম করতে পৃথাদেবী ভক্তের ভক্তিতে আপ্লুত হলেন, বললেন, “আরে বোসো বোসো, চা খাবে তো? চা করে আনি”।
    বিপদতারণ বাধা দিয়ে বলল, “ব্যস্ত হবেন না কাকিমা! বরং আপনারা দুজনে পাশাপাশি বসুন, দু চোখ ভরে একটু দেখি”! সনৎবাবু বিপদতারণের কথায় মুগ্ধ হয়ে পৃথাদেবীর পাশে সোফায় বসলেন, উচ্ছ্বসিত বিপদতারণ বলল, “আহা, যেন হরগৌরী, শিব-পার্বতী!  বেশ মানিয়েছে! এবার চট করে কিছু কাজের কথা সেরে নিই? প্রথমেই জিগ্‌গেস করি, ওই কাকুটা – কমলকাকু আপনার স্কুলের বন্ধু বললেন, কেমন লোক?”
    সনৎবাবু অবাক হয়ে জিগ্‌গেস করলেন, “কেন বলো তো?”
    “ছোটমুখে বড়ো কথা শুনে রাগ করবেন না যেন, উনি কিন্তু তেমন সুবিধের লোক নন”।
    বিপদতারণের কথাটা পৃথাদেবীর ভীষণ মনঃপূত হল, তিনি উত্তেজিত হয়ে বললেন, “ওই কথাটাই তো আমি সারাটা জীবন তোমার কাকুকে বলে আসছি। কিন্তু আমার কথা কানে তুলবে কেন? ওই প্রাণের বন্ধুর জন্যে তোমার কাকুর সংসার-পরিবার সব শত্রু হয়ে গেছে!”
    বিপদতারণ খুব চিন্তান্বিত মুখে বলল, “না, না, কাকাবাবু, কথাটা হাল্কাভাবে নেবেন না। উনি কিন্তু চান না, আপনার ভালো হোক, আপনার উন্নতি হোক”।
    বিপদতারণের কথায়, পৃথাদেবীর মনে বহুদিনের জমানো ক্ষোভ যেন ফেটে বেরিয়ে এল, বললেন, “যে দেখবে, সেই বলবে! কী জাদুতে যে তোমার কাকুকে ও বশ করেছে, কে জানে! কিছু বলতে গেলেই একেবারে ফোঁস করে ওঠে। বলে, আমার স্কুলের বন্ধু!”
    “কাকাবাবু শিবতুল্য মানুষ। উনি কী করে আন্দাজ পাবেন কোন লোকের পেটে কী চাল আছে?”
    বিপদতারণ এবার সনৎবাবুর হয়ে সাউখুরি করতে গেল, তাতে ফল হল উলটো, পৃথাদেবী ঝংকার দিয়ে বলে উঠলেন, “শিবতুল্য না ছাই, মাথামোটা আর একলষেঁড়ের একশেষ! যে পারে এসে মাথায় কাঁঠাল ভাঙে”।
    “সে যাই হোক, কমলকাকু আসবেন, আসুন। ওঁনার সঙ্গে যেন কেউ না আসে, এ কথাটা একটু কড়া করে বলে দেবেন”।
    পৃথাদেবী আকাশ থেকে পড়লেন, বললেন, “কমলও আসবে নাকি?  কই আমাকে তো বলোনি? সেও এখানে থাকবে, খাবে?”
    “বলার আর সুযোগ দিলে কোথায়?” সনৎবাবু আমতা আমতা করলেন।
    পৃথাদেবী বললেন, “আমি সুযোগ দিলাম না? এতক্ষণ এত আবোলতাবোল বকতে পারলে, আর ওই কথাটাই বলা হল না? ভাগ্যিস বিপদ বলল, তা নইলে তো বিপদ আরো বাড়তো। তোমারই নাম বিপদ তো?”
    বিপদতারণ বিনয়ের অবতার হয়ে বলল, “আজ্ঞে, হ্যাঁ। আমিই বিপদতারণ, কিন্তু পুরো নামটা না বলে, সবাই বিপদ ডেকে আনে”।
    বিপদতারণের কথায় পৃথাদেবী মজা পেলেন, বললেন, ““বিপদ ডেকে আনে”? হি হি হি হি, বেশ বলেছো কথাটা”। পৃথাদেবী যে হাসতে জানেন, সে কথাটা সনৎবাবুও ভুলে গেছিলেন। মুগ্ধ নেত্রে তাকিয়ে রইলেন স্ত্রীর মুখের দিকে।
    ওদিকে গোপাল বলল, “এ সেই কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলার মতো! বিপদ ডেকে বিপদ তাড়ানো”! গোপালের রসিকতায় সনৎবাবুও এবার হাসলেন খুব, সঙ্গে পৃথাদেবী!
    হাসি থামলে বিপদতারণ বলল, “আর হাসি ঠাট্টা নয়, কাজের কথা। আজকের এই যজ্ঞের জন্যে অনেক আয়োজন করতে হবে। আমাদের কিন্তু বেশি সময় নেই, কাকাবাবু। প্রথমেই আমাদের একটা নির্জন ঘর দরকার, যেখানে টাকা ডবল হবে!”
    পৃথাদেবী জিগ্‌গেস করলেন, “নির্জন মানে?”
    “একটু আলাদা, যেখানে আপনারা কয়েকজন, মানে আপনি, কাকাবাবু, বিমলকাকু ছাড়া, আর কেউ ঢুকবে না”। 
    “কতক্ষণের জন্যে”?
    “মোটামুটি চব্বিশ ঘন্টা ধরে রাখুন। কাকাবাবু ব্যাংক থেকে কখন আসবেন?”। বিপদতারণের প্রশ্নের উত্তরে সনৎবাবু বললেন,
    “ব্যাংকের ব্যাপার তো, কতক্ষণ লাগবে কে জানে? দশটায় ব্যাংক খুলতেই যাবো, একটা দেড়টা তো হয়েই যাবে”!
    গভীর চিন্তা করতে করতে বিপদতারণ বলল, “হুঁ, আজ দেড়টা-দুটোর মধ্যে যদি শুরু করতে পারি, আশা করি কাল দশটা এগারোটার মধ্যে আপনাদের খুশি করতে পারবো”।
    পৃথাদেবী ব্যাকুল হয়ে বললেন, “তাই? কাল সকালেই ডবল? বিশ্বাসই হচ্ছে না!”
    সনৎবাবুও বললেন, “প্রথম শুনে আমারও বিশ্বাস হয়নি”।
    “আজ্ঞে সে কথা একশ বার, বিশ্বাস না হবারই কথা। সবই মা বিপত্তারিণীর কৃপা। কিছুটা গঙ্গাজল লাগবে। একছড়া কলা লাগবে, হাইব্রিড নয়, দিশি মর্তমান কিংবা কাঁটালি। কিছু কুচো ফুল, তুলসী, দুব্বো আর বেলপাতা। আর যদি পাঁচটা ফল দেন, ব্যস্‌। মা ওতেই সন্তুষ্ট!”
    পৃথাদেবী অবাক হয়ে জিগ্‌গেস করলেন, “কার মা সন্তুষ্ট হবেন?”
    গোপাল বলল, “দাদার মা, মা বিপত্তারিণী!”
    “বিপত্তারিণী মায়ের পুজো হবে নাকি?”
    “পুজোই তো! মা বিপত্তারিণীর পুজো, আমার দাদা যে তাঁর মানস পুত্র!”
    গোপালের কথায় বিরক্ত বিপদতারণ আবার বাধা দিয়ে বলল, “গোপাল তোকে বলেছি না, আমার কথা নয়, কাজের কথা বল। এ বাড়িতে আপনারা দুজন ছাড়া আর কে আছেন?”
    “কেউ না। ছেলে থাকে ব্যাঙ্গালুরু, মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে, দিল্লীতে থাকে। কেন?” পৃথাদেবী জিগ্‌গেস করলেন।
    “কাজের লোক-টোক, মাসি-টাসি?” বিপদতারণ জিগ্‌গেস করল।
    “তা আছে, তবে তারা কাজ সেরে চলে যায়”।
    “ভালই হয়েছে, আজ বিকেলে তাদের ছুটি দিয়ে দিন। বলবেন কাল একটু বেলা করে আসতে”!
    পৃথাদেবী ভুরু কুঁচকে জিগ্‌গেস করলেন, “তাহলে ঘরের কাজকম্মো?”
    বিপদতারণ খুব আবদারের গলায় বলল, “একটাই বেলা, একটু সামলাতে পারবেন না, কাকিমা? আসলে সংসারে সকলেরই টাকাপয়সার খুব দরকার। কিন্তু অর্থ অনর্থের মূল সেটা তো মানবেন? কার মনে কী আছে, কী থেকে কী হয়, সে কি আর বলা যায়? একটু সাবধান হওয়াই ভালো!”
    সনৎবাবু পূর্ণ সমর্থন করে বললেন, “খুবই সত্যি কথা”।
    গোপাল ফোড়ন দিল, “টাকার গন্ধ – কাঁঠালের মতো। ছাড়ালেই মাছির উপদ্রব শুরু হয়ে যায়”।
    বিপদতারণ বলল, “ঠিক কথা। আর টাকাও তো খুব কম নয়, কাকুর দশ লাখ, কমলকাকুর বারো – মোট বাইশ”। পৃথাদেবী চমকে উঠে বললেন,
    “তার মানে? কমলের বারো কেন? আমাদের কম আর ওর বেলায় বেশি হবে নাকি?”
    সনৎবাবু বললেন, “না, না, কমল বলছিল ও ছয় মতো তুলবে, ডবল করার জন্যে!”
    পৃথাদেবী আবার ঝংকার তুলে বললেন, “দেখেছো, তুমি কেমন ম্যাদামারা? আমরা সব ঝক্কি পোয়াবো, আর তোমার প্রাণের বন্ধু কমল, গায়ে হাওয়া দিয়ে বারো লাখ কামিয়ে বগল বাজাবে!”
    সনৎবাবু বললেন, “ব্যাপারটা আমাদের হাতের মধ্যে থাকবে, সেটা বুঝছো না কেন? ওর বাড়িতে হলে আমাকে ছাড়া ওরা আর কাউকে ঢুকতে দিত?”
    একথাটা পৃথাদেবী কিছুটা যুক্তিযুক্ত মনে করে বললেন, “তা বটে। ওর ওই গুণ্ডা ছেলে আর পটেরবিবি ছেলের বৌটাও সারাক্ষণ মাতব্বরি করতো”।
    স্ত্রীর সমর্থনে সনৎবাবু কিছুটা জোর পেয়ে বললেন, “তবে? আমাকে কী এতই বোকা ঠাউরেছো?”
    “থাক থাক খুব বাহাদুরি করেছো। তবে আমি এই কিন্তু বলে রাখলাম, কমল যদি বারো লাখ কামায়, আমার চোদ্দ চাই। আমার অনেকদিনের শখ, ইওরোপ যাবো, লণ্ডন, প্যারিস, বার্লিন, রোম...”।
    পৃথাদেবীর স্বপ্নকথায় সনৎবাবু খুব একটা উৎসাহ পেলেন না, বললেন, “আচ্ছা, আচ্ছা, সে হবে খন, কিন্তু সাত লাখ তুলতে হলে, এত তাড়াতাড়ি হবে না, মনে হয়, কেভিপি ভাঙাতে হবে”।
    “পরে আবার করা যাবে না? মানে দশ লাখ থেকে বিশ লাখ! তখন তোমার কমলকে না বললেই হল”।
    পৃথাদেবীর সমাধানের উত্তরে বিপদতারণ বলল, “কাকিমা, একই পরিবারে বছরে একবারের বেশি টাকা ডবল করা যায় না। মায়ের সেরকমই নির্দেশ”।
    “কার মায়ের নির্দেশ?”
    অবাক হয়ে পৃথাদেবী জিগ্‌গেস করলেন, উত্তরে গোপাল বলল, “মা বিপত্তারিণীর, দাদা যে তাঁর বরপুত্র”।
    “ও বাবা, খুব জাগ্রত বুঝি? তাহলে শুনছো, এক কাজ করো না, ফুটিকে বলে দাও, তোমার অ্যাকাউণ্টে তিনলাখ পাঠিয়ে দেবে...বলবে ধার, কাল বা পরশু আবার ফিরিয়ে দেবে!” ফুটি পৃথাদেবীর মেয়ে, জামাইয়ের সঙ্গে দিল্লিতে থাকে। সনৎবাবু বললেন, “কথাটা মন্দ বলোনি, কিন্তু মেয়ে-জামাইয়ের থেকে ধার করবো?”
    পৃথাদেবী বললেন, “তাতে কী? আজকাল মেয়ে আর ছেলেতে কোন তফাৎ আছে নাকি? আর ফুটির বরের মতো ছেলে হয়? ও খুশি হয়েই দেবে!”
    “তা ঠিক, কিন্তু জামাই তো!”
    “জামাই তো কী হয়েছে? অমন জামাই লাখে একটা মেলে, আমার ফুটির কথায় কেমন ওঠে বসে! তোমার ছেলের মতো নয়, বউ ছাড়া তার এক পা চলার ক্ষমতা আছে? পোড়ারমুখো বউয়ের আঁচলে বাঁধা, হতভাগা জরু কা গোলাম”।
    সনৎবাবু বললেন, “আচ্ছা, ফুটিকেই বলছি”! তারপরই হঠাৎ মহা আনন্দে উত্তেজিত হয়ে বললেন, “তাহলে আমাদের আটদুগুণে ষোলো হয়ে যাবে গো!”
    গোপাল বলল, “আলবাৎ, ষোলো কলা পূর্ণ হবে”।
    পৃথাদেবী খুব রাগ রাগ স্বরে বললেন, “তোমার ওই কমলের নাকে ঝামা না ঘষলে আমার শান্তি নেই, ও করবে বারো, আমাদের ষোলো”।
    মহা আনন্দের উচ্ছ্বাসে সনৎবাবু অল্প নাচতে নাচতে বললেন, “ওফ্‌, কমলটা দেখবে আর জ্বলবে – লুচির মতো ফুলবে”।
    সনৎবাবুর কথায় গোপাল বড়ো দুখি গলায় বলল, “কতদিন কালো জিরে ফোড়নের আলু চচ্চড়ি দিয়ে ফুলকো লুচি খাইনি, দাদা!”
    ভীষণ রেগে গেল বিপদতারণ, বড়ো বড়ো চোখ করে ধমকে উঠল, “বেরিয়ে যা, আমার চোখের সামনে থেকে তুই, দূর হয়ে যা। ছি ছি, এত্তো লোভ তোর?”
    গোপাল খুব কাঁচুমাচু হয়ে বলল, “ও দাদা, তোমার দুটি পায়ে পড়ি দাদা, আর কক্‌খনো লোভ করবো না, এবারকার মতো ক্ষমা করে দাও”। 
    পৃথাদেবীর মনটা খুব তরল হয়ে এল দুজনের কথাবার্তায়, তিনি বললেন, “কি বিপদ, দুখানা লুচি খেতে ইচ্ছে হয়েছে বলে, ওকে অমন ধমকাচ্ছো কেন, ও বিপদ? তোমার ইচ্ছে হয় না?”
    গোপাল ভীষণ আতঙ্কে কান নাক মুলে, এতবড়ো জিভ বের করে বলল, “ইসস্‌স্‌স্‌, দাদা যে সব কিছুর ঊর্ধ্বে – নির্বিকার, উদাসীন”!
    পৃথাদেবী তাও শুনলেন না, বললেন, “তা হোক, কলমির মা আসুক, আমি ময়দা মাখিয়ে খান কতক লুচি ভেজে দিচ্ছি। ছেলেটা বড়ো মুখ করে খানকতক লুচি খেতে চাইল...! কিন্তু তুমি কি বসে বসে শুধু লেজ নাড়বে, না বাজারেও যাবে?” শেষ কথাটা তিনি সনৎবাবুকে বললেন।
    সনৎবাবু থতমত খেয়ে বললেন, “লেজ আবার কখন...কী আনতে হবে বলো না ছাই...”।
    “ও মা! বিপদ যে বলল, পুজোর বাজার। তার ওপর তিন তিনজন বাইরের লোক খাবে, প্লাস আমরা দুজন, কিছু আনবে না? এই মাছ, টাছ...?”
    গোপাল আগের মতোই ভীষণ আতঙ্কে যেন শিউরে উঠল, বলল, “ইস্‌স্‌স্‌স্‌, দাদা যে শুদ্ধ শাকাহারী। গরম ভাত, একটু ঘি, নুন, কাঁচা সরষের তেল, দুটো কাঁচা লংকা। সঙ্গে দুটো আলুপটল ভাতের চালের মধ্যে টবাং...ব্যস্‌”।
    সনৎবাবু অবাক হয়ে জিগ্‌গেস করলেন, “টবাং মানে”?
    “হাঁড়িতে জল আর চাল চাপিয়ে, তার মধ্যে একটু ওপর থেকে আলু ছেড়ে দেখবেন, ওই রকমই আওয়াজ হয়!”। গোপালের কথায় সনৎবাবু খুব হাসলেন, পৃথাদেবীও হাসলেন, মুখে আঁচল চাপা দিয়ে। বিপদতারণ হাসল না, বরং কড়া চোখে তাকিয়ে রইল গোপালের দিকে।
    হাসি থামলে পৃথাদেবী সনৎবাবুকে তাগাদা দিলেন, বললেন, “এই তোমার দোষ, একবার আড্ডা মারতে বসলে তোমার আর কাজের কথা মনে থাকে না। ফুটিকে ফোন করো। বাজারে যাও। ততক্ষণে আমি ওদের ওপরে নিয়ে গিয়ে টাকা ডবলের ঘর দেখাই...ওদিকে কলমির মায়ের আসার সময় হয়ে যাচ্ছে, বসে থাকার সময় আছে? যে দিকটা না দেখবো সেদিকেই সবাই অনর্থ বাধিয়ে বসবে। তোমরা আমার সঙ্গে ওপরে চলো, বাবা, তোমাদের ঘর দেখাই”।
    পৃথাদেবী ওদের নিয়ে ওপরে উঠলেন, সনৎবাবু তিনখানা থলি - একটা মাছের, একটা পুজোর, আরেকটায় অন্য বাজা্র - নিয়ে বেরিয়ে গেলেন বাজারে।
     
    (ক্রমশঃ)

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ০২ জানুয়ারি ২০২৩ | ৭৬৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ধুরধুর | 2405:8100:8000:5ca1::13:***:*** | ০৮ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:১২515072
  • পৃথার গলার আবাজের এত্ত বিশেষণ সনৎের কিচ্ছুটি না। এমন সঞ্জীব চাটুজ্জেমার্কা গপ্প মেয়েদের লাউড  হাঁদা দেখানো এসব গপ্প এখনো লোকে পড়ে?
    ধুরধুর বেকার দু তিন মিনিট নষ্ট হল পড়তে গিয়ে।
  • :|: | 174.25.***.*** | ০৮ জানুয়ারি ২০২৩ ১১:৩১515075
  • "সঞ্জীব চাটুজ্জেমার্কা গপ্প"-- বিশেষণটা কি লোটাকম্বল জাতীয় উপন্যাস মাথায় রেখে দেওয়া?  
     
    এই ধারাবাহিকটা একটা হহপা সিনেমার স্ক্রিপ্টের মতো লেখা। উপন্যাস ক্যাটেগরিতে দেওয়ায় কনফিউশন হয়েছিলো প্রথমে। স্ক্রিপ্ট প্রচেষ্টা হিসেবে খারাপনা। এখানে বহু লোক হাত পাকান। ঠিকই আছে। চেষ্টায় সব হয়। 
  • Kishore Ghosal | ০৮ জানুয়ারি ২০২৩ ১২:০৪515076
  • @ হীরেন স্যার, অনেক কৃতজ্ঞতা নেবেন। 
  • Kishore Ghosal | ০৮ জানুয়ারি ২০২৩ ১২:১১515077
  • ধুরধুর বাবু  মেয়েদের "লাউড"  দেখিয়েছি  সত্যি তবে "হাঁদা" - আপনার তাই মনে হল ? সে যাক আপনার দু তিন মিনিট  বেকার সময়  নষ্ট করে দিলাম বলে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। 
     
    ঃ।ঃবাবু  কৃতজ্ঞতা জানাই, আমার চেষ্টাকে প্রশ্রয় দেওয়ার জন্যে। 
     
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। সুচিন্তিত মতামত দিন