এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  গপ্পো

  • এক দুগুণে শূন্য - ৯

    Kishore Ghosal লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | গপ্পো | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ৮৭৭ বার পঠিত


  • সদর দরজার বাইরে গাড়ির আওয়াজ, বেশ কিছু লোকজনের চেঁচামেচি শোনা গেল। বেলও বেজে উঠল বার তিনেক। প্রদীপবাবু দরজা খুলতেই বেশ কয়েকজন পুলিশ এবং তাদের পিছনে এক মহিলা ও এক ভদ্রলোক ঢুকে পড়ল। মহিলা কমলবাবুর পুত্রবধূ বিশাখা, আর ভদ্রলোক কমলবাবুর ছেলে রাজু। বিকাশবাবু বললেন, “প্রদীপ, চটপট এ দুজনকে ভ্যানে তোলো...অন্ততঃ দুজন কন্সটেব্‌ল্‌ যেন এদের প্রোটেকশনে থাকে। আর...”।
    বিকাশবাবুর কথার মধ্যেই বিশাখা মেঝেয় শুয়ে থাকা সনৎবাবুর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, ডুকরে চেঁচিয়ে উঠল, “ও বাবা, বাবাগো, এ তোমার কী হল বাবা...ও মা, এতো বাবা নয়, এ যে সনৎজ্যেঠু...বাবা, কোথায়?”
    রাজু বিকাশবাবুকে জিগ্‌গেস করল, “অফিসার, আমার বাবা কোথায়?”
    “আপনি কে? কে আপনার বাবা?”
    “আমি রাজু - রজতকান্ত মাইতি, আমার বাবা কমলকান্তি মাইতি। আমিই আপনাদের থানায় ফোন করেছিলাম”।
    “বাঃ, আমাদের উদ্ধার করেছিলেন। আমরা কৃতার্থ হয়ে গেছি...”।
    বিকাশবাবুর বিদ্রূপে কান না দিয়ে রাজু বলল, “বাবা কোথায়? প্রশাসন থাকতেও প্রকাশ্য দিনের বেলা এমন একটা ঘটনা ঘটে গেল”?
    বিকাশবাবু ধমকে বলে উঠলেন, “প্রশাসন কী বাড়ি বাড়ি বসে পাহারা দেবে? আপনার পিতৃদেব গোপনে টাকা ডবল করাচ্ছিলেন, টাকা ডবল হলে কী প্রশাসন জানতে পারতো? আপনার বাবা, কমলবাবু দোতলায় ঘুমোচ্ছেন। আপনারা তদন্তের কাজে বাধা দেবেন না...আমাদের ডিউটি করতে দিন”।
    রাজু কেটে কেটে প্রশ্ন করল, “এতক্ষণে আপনাদের ডিউটির কথা মনে পড়ল, চোরদুটো ধরা পড়েছে”?
    বিকাশবাবু বললেন, “ধরা পড়েছে, আমরা ওদের অ্যারেষ্ট করেছি। আপনি যান বাবাকে দেখে আসুন”।

    এতক্ষণের হৈ চৈ আর হট্টগোলে সনৎবাবু এবং পৃথাদেবীর ঘুম ভাঙলো। দুজনেই উঠে বসে ঘুমজড়ানো চোখে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলেন, ঘরের ভেতর এত লোকজন ও পুলিশ দেখে। বিপদতারণ ও গোপালকে হাতকড়া বাঁধা অবস্থায় পুলিশেরা বাইরে নিয়ে গেল। ওদের দেখে বাইরের হট্টগোল আরো বেড়ে উঠল। রাজু হাতকড়া পরা বিপদতারণ আর গোপালকে দেখে বলল, “ব্যাটাদের সাজিয়ে থানায় নিয়ে যাচ্ছেন? শালা, ঠগবাজ, জোচ্চোর, ডাকাত! শুয়োরের বাচ্চাদের কেলিয়ে হাড় ভেঙে দেবো”।
    “আইন নিজের হাতে নেবেন না, আমরা তদন্ত করছি, অপরাধী শাস্তি পাবেই...” বিকাশবাবু গম্ভীর গলায় বললেন।
    রাজু উত্তেজিত হয়ে বলল, “আইনের নিকুচি করেছে, থানায় নিয়ে গিয়ে সব শালা গট-আপ খেলে ছেড়ে দেবেন...সে আর জানি না, আমাদের হাতে ওদের তুলে  দিন...”।
    এবার বিকাশবাবু উঠে দাঁড়ালেন, খুব কড়া ভাবে বললেন, “আপনি যদি এভাবে পুলিশের কাজে বাধা দেন, তাহলে কিন্তু আপনাকেও অ্যারেষ্ট করতে বাধ্য হবো। থানায় চলুন, আপনাদের যার যা কমপ্লেন থানায় গিয়ে রিপোর্ট করুন...”!
    এসময় ওপর থেকে কমলবাবুর নেমে এলেন, কিছুটা আলুথালু অবস্থা, বিশাখা দৌড়ে গিয়ে কমলবাবুকে ধরল, বলল, “বাবা...কেমন আছো বাবা? তোমার এ অবস্থা কেন?”
    হতভম্ব কমলবাবু অবাক হয়ে সবাইকে দেখতে দেখতে বললেন, “কী হয়েছে রে, সনৎ? এত চেঁচামেচি কিসের? ওরা কোথায়?”
    সনৎবাবু খুব আদর করে বন্ধুকে ডাকলেন, বললেন, “আয় এখানে এসে বস, মনে হচ্ছে সব গেল, ওদের পুলিশ ধরেছে...”!
    “সে কী রে? আমাদের টাকা? আমার ছয়..”?
    রাজু হঠাৎ বাবার কথার মধ্যে চেঁচিয়ে উঠে বলল, “ছয় কোথায় বাবা? তোমার কী ভীমরতি হয়েছে? আমাদের দশ লাখ...”!
    বিশাখা ধরা ধরা গলায় বলল, “ভীমরতি কী বলছো, গো? বাবাকে ওরা ছাইপাঁশ কীসব খাইয়ে দিয়েছে, মনে হয় বাবার মাথাটাই গেছে”!
    রাজু বিকাশবাবুকে জিগ্‌গেস করল, “অফিসার, টাকাগুলোর কোন হদিশ পাওয়া গেছে?”
    “পাওয়া গেছে, আমাদের কাস্টডিতেই এখন থাকবে। কেস মিটলে, মহামান্য আদালত যেমন বলবেন, আপনারা টাকা ফেরত পাবেন”।
    “কত টাকা পাওয়া গেছে?”
    “থরো চেক আপ এখনো করা হয়ে ওঠেনি, চোদ্দটা নোটের বাণ্ডিল মিলেছে!”
    রাজু বলল, “ওর মধ্যে দশটা আমাদের...”।
    রাজুর কথায় সনৎবাবু বললেন, “ওরে কমল তোর তো ছয় ছিল, আমার ছিল আট...”।
    কমলবাবু ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলেন ছেলের দিকে, বললেন, “তাই তো, কিন্তু এখন রাজু যে বলছে দশ, আমার কী তবে গুনতে ভুল হয়েছিল?”
    বিকাশবাবু হো হো করে হাসলেন, বললেন, “রাজুবাবু, কাল থানায় ব্যাংকের স্টেটমেন্ট জমা দেবেন, আদালত কিন্তু জানতে চাইবে, ক্যাশ দশ লাখ কোথা থেকে পেলেন, কীভাবে পেলেন...”
    রাজু থতমত খেয়েও উত্তেজিত হয়ে বলল, “কেন? ব্যাংকের স্টেটমেণ্ট দিতে হবে কেন? টাকা আমাদের ঘরেই ছিল...”
    “সে কথা আমাদের বলে লাভ নেই, রাজুবাবু। আদালতে বলবেন, আদালত প্রমাণ চাইবে। চল হে প্রদীপ, এঁনাদের সকলেরই যখন ঘুম ভেঙেছে, আমাদের কাজ শেষ। পারলে আজ রাত্রে চলে আসুন, নয়তো কাল সকালে সবাই থানায় আসবেন, রিপোর্ট লিখিয়ে যাবেন... প্রদীপ, সনৎবাবু আর ম্যাডামকে দিয়ে সিজার লিস্ট সই করাও, রাজুবাবু আর এঁনারা উইটনেস থাকবেন, ওঁনাদেরও সবাইকে দিয়ে সই করাবে...”। মুচকি হেসে আবার বললেন, “যে ভাবে টাকার হিসেব বাড়ছে...বেশিক্ষণ থাকলে আরো বাড়বে...পরে থানা থেকে না ভরতুকি দিতে হয়! আমি বাইরে ওয়েট করছি, চটপট ফর্ম্যালিটিস শেষ করো”।
    বিকাশবাবু বেরোতে যাচ্ছিলেন, সনৎবাবু ডাকলেন, বললেন, “আপনি কী চলে যাচ্ছেন নাকি?
    “হ্যাঁ, কিছু বলবেন?”
    “আপনার নামটা জানতে পারি?”
    “বিকাশ ঘোষ”।
    “ঠিক ঠিক মনে পড়েছে, আপনার সঙ্গে বেশ কিছুদিন আগে একবার আলাপ হয়েছিল...আমাদের সমিতির পুজোর ব্যাপারে থানায় গিয়েছিলাম, তখন”।
    এই অবান্তর কথায় বিকাশবাবু একটু বিরক্ত হয়ে বললেন, “বাঃ শুনে খুব আনন্দ পেলাম, কিন্তু এখন কী কিছু বলবেন”?
    “বলব...কিন্তু ওরা দুজন কোথায়”?
    “কারা দুজন?”
    “ওই যে বিপদ আর গোপাল”।
    “ওটা ওদের আসল নাম নয়, ওদের নাম নেপাল আর হরি”।
    “ওরে বাবা, ওদের অষ্টোত্তর শত নাম থাক, তারা এখন কোথায়”?
    “বললাম না, ওরা পালাতে পারেনি, অ্যারেষ্টেড হয়েছে। বাইরে ভ্যানে আছে। আর টাকার প্যাকেটও উদ্ধার হয়েছে”।
    “ধুর বাবা, পালাবার কথা আসছে কোথা থেকে? ওরা পালাবার লোকই নয়”!
    বিকাশবাবু তাঁর সারা পুলিশ জীবনে এমন অবাক আগে কোনদিন হননি, বললেন, “তার মানে”?
    “মানে-টানে পরে হবে, আগে ওদের এখানে আনুন, ছি ছি, ভদ্রলোকের এমন হেনস্থা”!
    রাজুও অবাক হয়ে বলল, “কাকে কী বলছো, কাকু? দুটো চোর, ক্রিমিন্যালকে ভদ্রলোক বলছো”?
    সনৎবাবু খুব গম্ভীরভাবে ধমক দিলেন রাজুকে, “আঃ রাজু, বড়দের কথায় কথা বলতে নেই, কমল তোর ছেলেটা আর মানুষ হল না...কই হাঁ করে দাঁড়িয়ে রইলেন কেন, বিকাশবাবু? ওদের ছেড়ে দিন, এখানে নিয়ে আসুন”।
    বিকাশবাবু সনৎবাবুর দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে, প্রদীপবাবুকে বললেন, “প্রদীপ, যাও তো ওদের নিয়ে এসো”।
    প্রদীপবাবু বাইরে গেলেন, ভ্যান থেকে বিপদতারণ আর গোপালকে আনতে। পৃথাদেবী এবার মুখ খুললেন, “তোমার কী ভীমরতি হল? নাকি ঘুমের ওষুধে মাথাটা বিগড়োলো?”
    একথার উত্তরে সনৎবাবু নাটকীয় ভঙ্গীতে চিৎকার করে ধমকে উঠলেন স্ত্রীকে, বললেন, “স্তব্ধ হও নারী, তব অসার বাক্যবাণে আর না রহিব অসাড়....” সকলের দিকে তাকিয়ে আবার বললেন, “বাঃ বেশ একটা ইয়ে অনুভব করছি... মানে তেজ!” মুখে তৃপ্তির হাসি নিয়ে সনৎবাবু সবার দিকে তাকালেন, তাঁর ভাবখানা কেমন দিলাম!
    তাঁর ব্যাপার স্যাপার দেখে বিশাখা ঘাবড়ে গেল, রাজুকে বলল, “হ্যাঁগো শুনছো, বাবাকে নিয়ে বাড়ি চলো...শেষে পাগলের পাল্লায়...”! তার কথা শেষ হবার আগেই বিপদতারণ ও গোপালকে নিয়ে প্রদীপবাবু ঘরে এলেন। দুজনের হাতে হাতকড়ি, মাথা নিচু।
    সনৎবাবু ওদের দেখে খুব আনন্দ পেলেন, বললেন, “এসেছো বিপদ? ওদের হাতে হাতকড়ি কেন? ছি ছি ছি, খুলে দিন”।
    বিকাশবাবু বললেন, “ওরা পালালে কিন্তু আপনাকেও অ্যারেষ্ট করতে বাধ্য হবো সনৎবাবু। ক্রিমিন্যালদের পালাতে সাহায্য করার জন্যে। প্রশাসনের কাজে বাধা দেওয়ার জন্যে”!
    সনৎবাবু বললেন, “আরে ভালো বিপদ তো, ওরা চোর না ডাকাত...সেই থেকে পালাবে পালাবে করছেন? খুলুন বলছি”!
    বিকাশবাবু প্রদীপকে বললেন, “খুলে দাও তো, প্রদীপ। দেখি এখন আবার কী নাটক হয়!” পকেট থেকে চাবি বের করে প্রদীপবাবু দুজনের হাত মুক্ত করে দিলেন।
    সনৎবাবু খুব খুশি হয়ে বললেন, “এখানে এসো বিপদ, সোফায় বসো...ওরা তোমায় মারধোর করেনি তো?”
    “না, কাকু। আর আমি বিপদতারণ নই, নেপাল। ওর নাম গোপাল নয়, হরি”।  
    “না না, বিপদ নামটাই তোমাকে বেশি মানায়, বিপদ নামটাই আমি বলবো”। সনৎবাবুর কথায় কমলবাবুও সমর্থন করে বললেন, “যা বলেছিস, যা বিপদে আমাদের ফেলেছিল”!
    সনৎবাবু গর্জে উঠে কমলবাবুকে ধমকে বললেন, “একদম ফালতু কথা বলবি না, কমল। ওরা বিপদে ফেলেছিল, না আমরা বিপদ ডেকেছিলাম?”
    রাজু সনৎবাবুর রকমসকম দেখে বেশ ঘাবড়ে গেল, বাবাকে বলল, “বাবা, তুমি এসবে থেকো না, চলো বাড়ি যাই”।
    সনৎবাবু আরো জোরে ধমকে উঠে বললেন, “চোপ, একটা কথা বললে...” কথা শেষ করলেন না, কিন্তু যেভাবে ধমকে উঠলেন, তাতে সকলেই চুপ করে গেল!
    কমলবাবু একটু ভয়ে ভয়েই জিগ্‌গেস করলেন, “তোর কী হল বল তো? তোকে তো এত হম্বিতম্বি করতে কোনদিন দেখিনি!”
    পৃথাদেবীও এখন মুখ খুললেন, বললেন, “চিরকেলে মেনিমুখো, হঠাৎ আজকে এতো...” তাঁর কথার মধ্যেই সনৎ বাবু আবার ধমকে উঠলেন, “একদম চোওওওপ! এতদিন তোমাদের মাথায় তুলেছি বলে, ভেবো না চিরকাল রাখবো। বিকাশবাবু টাকার বাণ্ডিল কোথায়?”
    বিকাশবাবু প্রদীপবাবুর দিকে তাকিয়ে জিগ্‌গেস করলেন, “কোথায়?”
    “আমার কাছে, এই ব্যাগে”।
    গমগমে স্বরে সনৎবাবু বললেন, “বের করুন”। প্রদীপবাবু ইতস্ততঃ করছিলেন দেখে সনৎবাবু আবার ধমকে উঠে বললেন, “কথাটা কানে যাচ্ছে না?”
    বিকাশবাবুও বললেন, “বার করো হে, দেখি না কোথাকার তেল কদ্দূর গড়ায়”। ব্যাগ থেকে টাকার প্যাকেট বের করে সনৎবাবুর হাতে তুলে দিলেন প্রদীপবাবু। সনৎবাবু একটা প্যাকেট পৃথাদেবীকে দিয়ে বললেন, “এটাই আমাদের প্যাকেট না? দেখো তো কটা বাণ্ডিল আছে”। অন্য প্যাকেটটা কমলবাবুকে দিয়ে বললেন, “তোরটা তুইও চেক করে নে”। পৃথাদেবী প্যাকেট গুনে বললেন, “আটটাই আছে। ঠাকুরপো তোমার?”
    কমলবাবুও গুনে বললেন, “আমারও ছটাই আছে”।
    সনৎবাবু গম্ভীর গলায় বললেন, “আমি এর থেকে ষোলো দেবো, তুই কত দিবি কমল”?
    কমলবাবু অবাক হয়ে জিগ্‌গেস করলেন, “কী দেব?”
    “টাকা”
    “কাকে দেব?”
    “বিপদকে”।
    “কী আশ্চর্য কেন দেবো? চোর...জোচ্চোর চিটিংবাজ...”! কঠিন দৃষ্টিতে তাকিয়ে, যেভাবে বিচারক ফাঁসির ঘোষণার আগে অপরাধীর দিকে তাকান, বললেন, “তুই চিরকালই চার অক্ষরের বোকা ছিলি মনে আছে? ওরা কী আমাদের বাড়ি এসে বলেছিল, হ্যাগো আমায় জোচ্চুরি করতে দেবে?”
    “তাতে কী?”
    “তাতে কী? আমরা ওদের খোশামুদি করে বাড়ি নিয়ে আসিনি”?
    “বা রে, সে তো টাকা ডবলের লোভে...হতভাগা যা টোপ ফেলেছিল..”!
    “অ্যাই...পথে এসো বাছাধন। টোপ দিয়ে মাছ কারা ধরে?”
    কমলবাবু ফ্যাক করে হেসে বললেন, “কারা আবার ধরে, আমরা, মানুষরা। কী যে আবোল তাবোল বকছিস...”!
    “বাঃ বুদ্ধি খুলছে...টোপ খেয়ে মাছের কী হয়?”
    “তোর নির্ঘাৎ ভীমরতি হয়েছে সনৎ, হে হে হে হে, টোপ খাওয়া মাছের আবার কী হবে? ভাজা হবে, ঝাল হবে...”
    “আমি আর তুই টোপ গিলেছি, তাহলে আমাদের কী হবে”?
    “অ্যাঁ?”
    “অ্যাঁ নয় রে হতভাগা, হ্যাঁ”।
    এই সময় পৃথাদেবী খুব ন্যাকা ন্যাকা গলায় বললেন, “হ্যাঁগো, তোমার কী নিজেকে মাছ মনে হচ্ছে? বাবা রাজু, ডাক্তার সামন্তকে খবর দেবে বাবা? বলো এখনই একবার আসতে”।
    সনৎবাবু স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে অদ্ভূত হেসে বললেন, “তোমার প্যাকেট থেকে ষোলো বের করো, মৎস্যকন্যা”। তারপর পৃথাদেবীর মুখের সামনে হাত নেড়ে নেড়ে গান গাইলেন, “মাছ লয় গো মচ্ছকন্যা...রূপেগুণে অথৈ বন্যা”। টাকা ডবল করে ইওরোপ যাবে না?”
    পৃথাদেবী সকলের মুখের দিকে অসহায় তাকিয়ে, কয়েকটা নোট গুণে বের করে বললেন, “এই নাও ষোলো”।
    সনৎবাবু বিচ্ছিরি একটা মুখের ভঙ্গি করে বললেন, “কাৎলার মুড়ো দেখতেই ঢাউস, ঘিলু থাকে এক ছিটে। ষোলোশ নয়, ষোলো হাজার”। পৃথাদেবী আকাশ থেকে পড়লেন যেন, “হা জা র”?
    কমলবাবুরও একই উক্তি, “হা জা র”?
    সনৎবাবু মুখ ভেংচি করে বললেন, “না, হাজার কেন হবে? ষোলটাকা। আর এই যে তুই বৌদির সুরে সুর মেলাচ্ছিস্‌...তুই দিবি বারো হাজার”!
    কমলবাবু রাগ করে বললেন, “তোর মতিচ্ছন্ন হয়েছে, তুই দিতে হয় দিগে যা, আমি দেবো না, টাকা কী গাছে ফলে”?
    “গাছে টাকা ফলে না, আগে জানতিস না? লেজ নেড়ে কেন ওদের ডাকলি”?
    “তুইও তো ডেকেছিলি। আমি একলা নাকি”?
    “সেই জন্যেই তো প্রায়শ্চিত্ত করছি। আহাম্মকির প্রায়শ্চিত্ত। লোভের প্রায়শ্চিত্ত। হতভাগা কাল সকালে পাড়ার লোক, সামতাপুরের লোক যখন আওয়াজ দেবে...কী কমলবাবু...টাকা ডবল হলো না? খুব দাঁও মারতে গেছিলেন...একটুর জন্যে ফস্কে গেল...মুখ দেখাতে পারবি তো”?
    কমলবাবু এবার খুব লজ্জিত মুখে বললেন, “সত্যি...খুব গুখুরি হয়ে গেছে...ছেলে বুড়ো সবাই টিটকিরি দেবে রে...”
    “হতভাগা এখনো সময় আছে...”
    “কিসের সময়?”
    “ওদের দুটোকে কিছু টাকা দিয়ে ছেড়ে দিই। ওরা আজ রাত্রেই সামতাপুর থেকে কেটে পড়ুক”।
    “তাতে লোকে আর টিটকিরি দেবে না?”
    “বিকাশবাবুকে রিকোয়েস্ট করবো কোন কেস না দিয়ে, এই ঘটনার কথা চেপে যেতে!”
    বিকাশবাবু আপত্তি করলেন, “তা কী করে হবে? আমরা এলাম, পুলিশের ভ্যান এল”!
    “তাতে কী? মিস আণ্ডারস্ট্যান্ডিং...একটা ভুল খবর পেয়ে এসেছিলেন!”
    বিকাশবাবু চিন্তা করতে করতে বললেন, “হুঁ”।
    কিন্তু প্রদীপবাবু বললেন, “স্যার, আমরাই না কেস খেয়ে যাই”!
    বিকাশবাবুও গম্ভীরভাবে বললেন, “চোপ! এটা এখন বিবেকের কেস... প্রতিবেশীর ছিছিক্কার থেকে বাঁচার কেস”!
    “কিন্তু আপনিও চোপ বলছেন, স্যার?”
    “হুঁ, মনে হচ্ছে ওটা ছোঁয়াচে। একটা ব্যাপার ভেবে দেখেছো প্রদীপ, আদালতে উঠলে এ কেস কতদিনে নিষ্পত্তি হবে কে জানে! কিন্তু শুনানি শুনতে ভিড় ঠেকানো দায় হবে। আমাদের থানায় কজন কনস্টেবল আছে প্রদীপ? সে ভিড় সামলাতে পারবে?”
    “আদালতে ভিড় হবে কেন, স্যার?”
    “শহরের মান্যিগণ্যি দুই মাতব্বর চব্বিশ ঘন্টায় টাকা ডবল করতে গেছিল, এমন দুই খোরাক পিস্‌ পেলে পাব্লিক ছেড়ে দেবে? গাঁটের কড়ি খরচ করে লোকে আলিপুর চিড়িয়াখানায় যাবে কেন? আদালতেই ভিড় জমাবে!”
    “তাহলে উপায়?”
    “এঁনারা যা করছেন করুন। আমরা নীরব সাক্ষী থাকি।  একদম চোপ!”
    সনৎবাবু ছলছল চোখে বিকাশবাবুকে বললেন, “আপনাকে কী বলে যে ধন্যবাদ দেবো, বিকাশবাবু? কি রে কমল? এখনো কী ভাবছিস?”
    কমলবাবু অনেক ইতস্ততঃ করেও টাকা বের করে সনৎবাবুর হাতে তুলে দিতে দিতে বললেন, “এই নে, বারো হাঃ...জার”।
    মুচকি হেসে সনৎবাবু টাকাটা হাতে নিলেন, তারপর বললেন, “হাজার বলতে একেবারে হাহাকার করে উঠলি যে, কমল! বিপদ, এই টাকা কটা রাখো, বাবা। আজ রাতটুকু কাটিয়েই যেতে বলতাম, কিন্তু সে উপায় নেই। একেবারে ঘাড়ে সংক্রান্তি! অন্ধকারে গা ঢাকা দিয়ে এখনই সরে পড়ো, বাবা”।
    বিপদতারণ মাথা নিচু করে বলল, “ও টাকা আমি নিতে পারবো না, কাকাবাবু”।
    “ন্যাকামি করে সময় নষ্ট করো না, বাবা। তুমিও মরবে, আমরাও। তুমি তো আমাদের বলেছিলে, পাঁচ দশ হাজার টাকার স্যাম্পল নিয়ে ট্রায়াল করতে। আমরাই তো লাফিয়ে উঠে বলেছিলাম, পাঁচলাখ আর ছয় লাখ। মারি তো গণ্ডার লুটি তো ভাণ্ডার। তোমার কাকিমা আবার তিন লাখ বাড়িয়ে তুলল, বলল আটলাখ। নাও ধরো”।
    বিপদতারণ টাকাটা নিল, বলল, “আপনাদের কথা কোনদিন ভুলবো না, কাকাবাবু”।
    “আমরাও না। অন্ততঃ আমি তো ভুলবোই না। এই বুড়ো বয়সে কী বোকামি আর কী লোভ – আজ বাদে কাল খাটিয়ায় চড়বো...তাও ফোকটে টাকা ডবলের কথা শুনে এমন খেপে উঠলাম! ছি ছি। তুমি আমাদের চোখ খুলে দিয়েছো বাবা। এসো দুগ্‌গা, দুগ্‌গা। আর দেরি কোর না। আটটা বাহান্নয় একটা ডাউন ট্রেন আছে না, কমল? ধরতে পারবে তো?”
    কমলবাবু বললেন, “দরকার কী? রাজু, যা তো একটা রিকশ ডেকে ওদের তুলে দে, ভাড়াটা আমিই দিয়ে দেব...স্টেশনে ছেড়ে দিয়ে আসুক”!
    “ওফ্‌ কমল, একদম মনের কথা বলেছিস, সেই ভালো। যা যা, রাজু ওদের রিকশয় তুলে দিয়ে আয়”।
    বিপদতারণ ও গোপাল নিচু হয়ে সকলকে নমস্কার করল, তারপর রাজুর সঙ্গে বেরিয়ে গেল।

    ওরা বেরিয়ে যাওয়ার পর কমলবাবু হাসতে হাসতে বললেন, “হ্যারে সনৎ, একটা কথা ভেবে আমি অবাক হচ্ছি”।
    “কী?”
    “এতদিন পরে তুই হঠাৎ এমন চেগে উঠলি কী করে? একেবারে বিবেক-টিবেক ঘাড়ে নিয়ে হুড়মুড় করে”? কমলবাবুর কথায়, পা দুলিয়ে দুলিয়ে মুচকি মুচকি হেসে সনৎবাবু বললেন, “সে একটা ব্যাপার আছে!”
    “ব্যাপার তো কিছু আছেই, তা নইলে এমন হরণ কালে মরির নাম আসে কী করে”?
    “হতভাগা, কথাটা মরণকালে হরির নাম...তুই সেই চার অক্ষরেরই রয়ে গেলি! আসল ব্যাপারটা হল সলিড একটা ঘুম”।
    “যাচ্চলে, কী আবোল তাবোল বকছিস? সলিড ঘুম মানে”?
    “বিয়ের পর থেকে আজ অব্দি তুই ক রাত নিশ্চিন্তে ঘুমিয়েছিস”?
    “কেন প্রায় সব রাতই, ট্রেন জার্নি, বাস জার্নি কিংবা বিয়ে-টিয়ে, শ্মশানযাত্রা – এরকম দু চারটে রাতের ব্যাপার ছাড়া”!
    “হতে পারে তুই তার মানে ভাগ্যবান। আমি কিন্তু বিয়ের পর থেকে এমন নিটোল ঘুম আজ ঘুমোলাম”।
    “কী ছাতার মাথা বকছিস বুঝছি না”। তারপর পৃথাদেবীর দিকে তাকিয়ে জিগ্‌গেস করলেন, “সনৎ, কী বলছে গো, বৌঠান?”
    পৃথাদেবী মুখ ঝামটা দিয়ে বললেন, “হুঃ, ছাড়ো তো ঠাকুরপো, বুড়োর মতিচ্ছন্ন ধরেছে”।
    স্ত্রীর দিকে কটমট করে তাকিয়ে সনৎবাবু বললেন, “বিয়ের পর নতুন বউ নিয়ে মাস দুই-তিন রাত্রে কেন ঘুম হয় না, সে কথা ছেলেপুলেদের সামনে আর বলবো না। সে তুইও জানিস”।
    পৃথাদেবী লজ্জা পেয়ে মুখ ঘোরালেন, মুচকি হেসে বললেন, “আ মলো যা, এতদিন পর আবার সে সব কথা কেন”?
    স্ত্রীর কথার কোন সাড়া না দিয়ে সনৎবাবু বললেন, “কিন্তু তারপর থেকে নতুন বউ যতো পুরোনো হয়েছে, রাতের ঘুম রোজ তত চটকে দিয়েছে! কিন্তু তার সঙ্গে মধুচন্দ্রিমার কোন সম্পর্ক নেই”। 
    কমলবাবু বললেন, “সে আবার কী”?
    “গরমকালে মাঝরাত্রে ঠেলে তুলেছে, পাখার স্পিডটা দেখোতো কমানো আছে কী না! নয়তো জানালাগুলো খুলে দাও তো দমবন্ধ হয়ে আসছে। শীতকালে, জানলার ফাঁকে গামছা গুঁজে দাও তো, আদ্যিকালের লজঝড়ে জানালার ফাঁক দিয়ে হিলহিলে ঠাণ্ডা বাতাস ঢুকছে..”!
    “তা মন্দ বলিস নি...”
    “দাঁড়া আরো আছে। কিচ্ছু না পেলে, মশারিতে মশা ঢুকেছে...লাইটটা জ্বালিয়ে দেখো তো...। নয়তো নিচের ঘরে একটা আওয়াজ পেলাম না, হ্যাগো, চোর-টোর ঢোকেনি তো? যাও না দেখে এসো না একবার”।
    “হে হে হে হে...মোক্ষম বলছিস, চালিয়ে যা!”
    “শুনছো, বিকেলে ছাদের দরজাটা বন্ধ করতে ভুলে গেছি মনে হচ্ছে, যাও না, একবার দেখে এসো না। তা নইলে ভাম ঢুকে হেগে দিয়ে যাবে বাড়িময়...”
    কমলবাবু হাসতে হাসতে বললেন, “সে যাই হোক সে আর কদিন?”
    “রোজ রে ভাই, রোজ। বিয়ের পর আজ এই প্রথম টানা চার-সাড়েচার ঘন্টা সলিড ঘুমোলাম”।
    “আর তাতেই তুই চেগে উঠলি”?
    “আলবাৎ। ভালো ঘুম মানুষকে চাঙ্গা করে তোলে, আর আধঘুম-আধজাগা মানুষেরা সর্বদা অবসাদে ভোগে”।
    “তুই পারিসও বটে!”
    “তুই মানিস কিংবা না মানিস...আমার মধ্যে কিন্তু একটা জোর এসেছে... বুদ্ধি-শুদ্ধি, বিবেক-টিবেকগুলোও ঠিকঠাক সাথ দিচ্ছে। মাইরি বলছি, অ্যাদ্দিন কেমন যেন ম্যাদামারা হয়ে ছিলাম, কোন উৎসাহ নেই, সবই মনে হতো য্যাগ্‌গে যা হচ্ছে হোক... আজ....”
    অধৈর্য হয়ে বিকাশবাবু উঠে দাঁড়ালেন, বললেন, “খুবই আনন্দের কথা সনৎবাবু, খুবই চমৎকার। আরেকদিন এসে আপনার আরো গল্প শুনবো। এখন আমরাও তাহলে উঠি, সনৎবাবু, কমলবাবু?  ভ্যান নিয়ে এসে অনেক ভ্যানতাড়া দেখলাম, এবার চলি?” সনৎবাবু একটু লাজুকভাবেই বললেন, “সত্যিই অনেক কষ্ট দিলাম, ভাই। আজকে চা খাওয়ানোর মতো অবস্থাতেও নেই, নইলে...একদিন চলে আসবেন, ছুটিছাটার দিনে...হাতে সময় নিয়ে”।
    “আচ্ছা সে হবে না হয় আরেকদিন, এখন চলি। চলো হে প্রদীপ, আমরাও কেটে পড়ি”।
    বিকাশবাবু আর প্রদীপবাবু বেরিয়ে গেলেন, সনৎবাবু আর কমলবাবু দুজনেই সদর দরজায় দাঁড়িয়ে হাত নাড়লেন। ভ্যান বেরিয়ে যেতে সনৎবাবু কমলবাবুকে বললেন, “ঘুম ঘুম ভাবটা পুরো কাটেনি, একটু চা খেলে হতো। তোর বৌমাকে বল না, বেশ কড়া করে একটু চা করতে। আমার বৌকে বললে এখনই  শ্যালের মতো খেঁকিয়ে উঠবে”!
    কমলবাবু হেসে ফেললেন, এক চোখ টিপে বললেন, “হতভাগা, আজকে তোকে ঠিক সেই ন্যাংটো-পোঁদা সনতের মতোই লাগছে!”

    (এ আহাম্মকি আর নয়)
     
    ..০০..
     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ৮৭৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে মতামত দিন