প্রথম পর্বটা আগেই পড়েছিলাম, আজ দ্বিতীয় পর্বটা পড়লাম। লেখক একেবারে ঠিকঠাক জায়গায় আক্রমণ হেনেছেন যদিও সম্ভবত বিতর্ক এড়াতে লেখাটা ১৮২০-তেই থামিয়ে দিয়েছেন। আসলে কিন্তু এই সংস্কৃতায়ন প্রক্রিয়া ১৮৬০ অবধি যথেষ্ট সক্রিয় ছিল। এর বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদ করেন বঙ্কিম এবং পরে রবীন্দ্রনাথ। যদিও তাঁরা উনিশ শতকে চলিত ভাষা ব্যবহারের ক্ষেত্রে কুণ্ঠিত হন কিন্তু লেখাতে সংস্কৃতগন্ধী বাংলার ঝোঁক কমে আসে। তবে এ বিষয়ে নিঃসন্দেহে সেরা বিপ্লবীর নাম বিবেকানন্দ যিনি ডেঁটে চলিত বুলিকে তাঁর লেখায় স্থান দেন। বিশেষত কেবল গদ্যমাধুর্যের জন্য প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য বার দশেক পড়া যায়। আমি অবশ্য সচেতনভাবে এই তালিকা থেকে হুতোম ও আলালকে বাদ রাখছি। যেহেতু আপনি এটা নিয়ে একটি দীর্ঘ প্রবন্ধ লিখেছেন, সে কারণে এই লেখাটার খানিক ফাঁক ভরাট করার জন্য কিছু উদ্ধৃতি এখানে রেখে দিচ্ছি। তাহলে আপনার লেখাটি আরও বেশি পরিপূর্ণ ও অর্থবহ বলে আমার ধারণা। এ ব্যাপারে আমার তেমন খাটনি নেই, খানিক কপি-পেস্ট করলেই চলে যাবে কারণ এই অধমের লেখা 'বাংলা ভাষার সংস্কৃতায়ন' নামক একটা আস্ত অধ্যায় থেকে উদ্ধৃতিগুলো নেওয়া হবে।
১. হ্যালহেড - কবে বাংলা শিখলেন, কার কাছে শিখলেন, কত বছর শিখলেন কেউ জানে না। অথচ তিনি একটি গোটা ব্যাকরণ বই লিখে ফেললেন এবং সেই নিয়ে কেউ প্রশ্ন পর্যন্ত করে না। এই হ্যালহেড A Grammar of the Bengal Language গ্রন্থে লিখছেন --- Hitherto we have seen the formation and construction of the Bengal language in all its genuine simplicity; when it could borrow Shanscrit terms for every circumstance without the danger of becoming un-intelligible, and when tyranny had not yet attempted to impose its fetters on the freedom of composition.
...how far the Modern Bengalees have been forced to debase the purity of their native dialect, by the necessity of addressing themselves to their Mahommedan Rulers ... [who] obliged the natives to procure a Persian translation to all the papers which they might have occasion to present. This practice familiarised to their ears such of the Persian terms as more immediately concerned their several affairs; and by long habit, they learnt to assimilate them to their own language, by applying the Bengal inflexions and terminations.অর্থাৎ মুসলমান শাসনের আগে, বাংলা ভাষায় প্রয়োজনমাফিক সংস্কৃত শব্দসম্ভার আহরণ করা হত বলে বাংলা ভাষার প্রকৃতি অকৃত্রিম ও সরল ছিল। কিন্তু মুসলমান শাসনকর্তাদের অত্যাচারের ফলে সমস্ত বিষয়ে রাজভাষা ফারসির ব্যবহার বাধ্যতামূলক হওয়ার কারণে, চলিত বাংলা ভাষার শুদ্ধতা নষ্ট হয়ে গেছে এবং অভ্যাসের দোষে বহু ফারসি শব্দ বাংলা ভাষার আবশ্যিক অঙ্গ হয়ে গেছে।
কাজেই সেসব বাদ দেওয়া শুরু হল। শুরু করলেন ফরষ্টার ও কেরি। এই কেরি ১৭৯৩ সালে জাহাজে কলকাতা আসার সময় বাংলা শিখতে শুরু করলেন। তার আট বছরের মধ্যে লিখে ফেললেন আস্ত একটা বাংলা ব্যাকরণ। সেই নিয়ে কেউ প্রশ্ন পর্যন্ত করে না।
২. সজনীকান্ত দাস লিখেছেন —
১৭৭৮ খ্রীষ্টাব্দে হালহেড এবং পরবর্তী কালে হেন্রি পিট্স ফরষ্টার ও উইলিয়ম কেরী বাংলা ভাষাকে সংস্কৃতজননীর সন্তান ধরিয়া আরবী পারসীর অনধিকার প্রবেশের বিরুদ্ধে রীতিমত ওকালতি করিয়াছেন এবং প্রকৃতপক্ষে এই তিন ইংলণ্ডীয় পণ্ডিতের যত্ন ও চেষ্টায় অতি অল্প দিনের মধ্যে বাংলা ভাষা সংস্কৃত হইয়া উঠিয়াছে। ১৭৭৮ খ্রীষ্টাব্দে এই আরবী-পারসী-নিসূদন-যজ্ঞের সূত্রপাত এবং ১৮৩৮ খ্রীষ্টাব্দে আইনের সাহায্যে কোম্পানীর সদর মফস্বল আদালতসমূহে আরবী পারসীর পরিবর্তে বাংলা ও ইংরেজী প্রবর্তনে এই যজ্ঞের পূর্ণাহুতি। বঙ্কিমচন্দ্রের জন্মও এই বৎসরে। এই যজ্ঞের ইতিহাস অত্যন্ত কৌতূহলোদ্দীপক, আরবী পারসীকে অশুদ্ধ ধরিয়া শুদ্ধ পদ প্রচারের জন্য সেকালে কয়েকটি ব্যাকরণ অভিধানও রচিত ও প্রচারিত হইয়াছিল, সাহেবেরা সুবিধা পাইলেই আরবী-পারসীর বিরোধিতা করিয়া বাংলা ও সংস্কৃতকে প্রাধান্য দিতেন, ফলে দশ পনর বৎসরের মধ্যেই বাংলা-গদ্যের আকৃতি ও প্রকৃতি সম্পূর্ণ পরিবর্তিত হইয়াছিল।
৩. অথচ সুনীতি চট্টোপাধ্যায়ের হিসেব অনুযায়ী অতীতের জনপ্রিয় বাংলা কথ্য কাহিনিগুলির কেবল এক-তৃতীয়াংশ তৎসম শব্দ, বাকি তদ্ভব।
৪. এই বিষয়ে দীনেশচন্দ্র সেন লিখেছেন –
ইতরের ভাষা বলিয়া বঙ্গভাষাকে ব্রাহ্মণ পণ্ডিত-মণ্ডলী ‘দূর দূর’ করিয়া তাড়াইয়া দিতেন, হাড়ি-ডোমের স্পর্শ হইতে ব্রাহ্মণেরা যেরূপ দূরে থাকেন, বঙ্গভাষা তেমনই সুধী-সমাজের অপাংক্তেয় ছিল — তেমনই ঘৃণা, অনাদর ও উপেক্ষার পাত্র ছিল।
কিন্তু হীরা কয়লার খনির মধ্যে থাকিয়া যেমন জহুরীর আগমনের প্রতীক্ষা করে, শুক্তির ভিতর মুক্তা লুকাইয়া থাকিয়া যেরূপ ডুবারীর অপেক্ষা করিয়া থাকে, বঙ্গভাষা তেমনই কোন শুভদিন, শুভক্ষণের জন্য প্রতীক্ষা করিতেছিল।
মুসলমান বিজয় বাঙ্গলাভাষার সেই শুভদিন, শুভক্ষণের সুযোগ আনয়ন করিল। গৌড়দেশ মুসলমানগণের অধিকৃত হইয়া গেল, — তাঁহারা ইরান, তুরাণ যে দেশ হইতেই আসুন না কেন, বঙ্গদেশ বিজয় করিয়া বাঙ্গালী সাজিলেন। আজ হিন্দুর নিকট বাঙ্গলাদেশ যেমন মাতৃভৃমি, সেইদিন হইতে মুসলমানের নিকট বাঙ্গলাদেশ তেমনই মাতৃভুমি হইল। তাঁহারা বাণিজ্যের অছিলায় এদেশ হইতে রত্নাহরণ করিতে আসেন নাই, তাঁহারা এদেশে আসিয়া দস্তুর মত এদেশ-বাসী হইয়া পড়িলেন। হিন্দুর নিকট বাঙ্গলাভাষা যেমন আপনার, মুসলমানদের নিকট উহা তদপেক্ষা বেশী আপনার হইয়া পড়িল।অতঃপর তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন এই কথা লিখে,
এ হেন প্রতিকূল ব্রাহ্মণ-সমাজ কি হিন্দুরাজত্ব থাকিলে বাঙ্গলাভাষাকে রাজসভার সদর দরজায় ঢুকিতে দিতেন? সুতরাং এ কথা মুক্তকঠে বলা যাইতে পারে যে, মুসলমান সম্রাটেরা বাঙ্গলাভাষাকে রাজ দরবারে স্থান দিয়া ইহাকে ভদ্র সাহিত্যের উপযোগী করিয়া নূতন ভাবে সৃষ্টি করিয়াছিলেন।
৫. পণ্ডিত মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার --- তেমনি শাস্ত্রসিদ্ধান্ত লৌকিক ভাষাতে থাকে না যেমন রূপালঙ্কারবতী সাধ্বী স্ত্রীর হৃদয়ার্থবোদ্ধা সুচতুর পুরুষেরা দিগম্বরী অসতী নারীর সন্দর্শনে পরাঙ্মুখ হন তেমনি সালঙ্কারা শাস্ত্রার্থবতী সাধু ভাষার হৃদয়ার্থবোদ্ধা সৎ পুরুষেরা নগ্ন উচ্ছৃঙ্খলা লৌকিক ভাষা শ্রবণ মানেই পরাঙ্মুখ হন।
৬. রামমোহন রায় --- যাঁহাদের সংস্কৃতে বুৎপত্তি কিঞ্চিতো থাকিবেক আর যাহারা বুৎপন্ন লোকদের সহিত সহবাস দ্বারা সাধু ভাষা কহেন আর শুনেন তাঁহাদের অল্প শ্রমেই ইহাতে অধিকার জন্মিবেক।
৭. ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় --- ... ভদ্র লোকের মধ্যে অনেক লোক স্বজাতীয় ভাষায় অন্য জাতীয় ভাষা মিশ্রিত করিয়া কহিয়া থাকেন ... ইহাতে বোধহয় সংস্কৃত শাস্ত্র ইহারা পড়েন নাই এবং পণ্ডিতের সহিত আলাপও করেন নাই তাহা হইলে এতাদৃশ বাক্য ব্যবহার করিতেন না স্বজাতীয় এক অভিপ্রায়ের অধিকভাষা থাকিতে যাবনিক ভাষা ব্যবহার করেন না।
৮. ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর --- ...সংস্কৃতভাষানুশীলনের এক অতি প্রধান ফল এই যে, ইদানীন্তন কালে ভারতবর্ষে হিন্দী, বাঙ্গালা প্রভৃতি যে সকল ভাষা কথোপকথনে ও লৌকিক ব্যবহার প্রচলিত আছে, সে সমুদয় অতি হীন অবস্থায় রহিয়াছে। ইহা একপ্রকার বিধিনির্বন্ধস্বরূপ হইয়া উঠিয়াছে যে, ভুরি পরিমাণে সংস্কৃত কথা লইয়া ঐ সকল ভাষায় সন্নিবেশিত না করিলে তাহাদের সমৃদ্ধি ও শ্রীবৃদ্ধি করা যাইবেক না। কিন্তু, সংস্কৃতভাষায় সম্পূর্ণরূপ বুৎপত্তিলাভ ব্যতিরেকে, তৎসম্পাদন কোনও মতে সম্ভাবিত নহে।
৯. শিবনাথ শাস্ত্রীর তীব্র সমালোচনা --- একদিকে পণ্ডিতবর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, অপরদিকে খ্যাতনাম অক্ষয়কুমার দত্ত, এই উভয় যুগপ্রবর্তক মহাপুরুষের প্রভাবে বঙ্গভাষা যখন নবজীবন লাভ করিল, তখন তাহা সংস্কৃত-বহুল হইয়া দাঁড়াইল। বিদ্যাসাগর মহাশয় ও অক্ষয়বাবু উভয়ে সংস্কৃত-ভাষাভিজ্ঞ ও সংস্কৃত-ভাষানুরাগী লোক ছিলেন; সুতরাং তাঁহারা বাঙ্গালাকে যে পরিচ্ছদ পরাইলেন তাহা সংস্কৃতের অলঙ্কারে পরিপূর্ণ হইল। অনেকে এরূপ ভাষাতে প্রীতিলাভ করিলেন বটে, কিন্তু অধিকাংশ লোকের নিকট, বিশেষতঃ সংস্কৃতানভিজ্ঞ শিক্ষিত ব্যক্তিদিগের নিকট, ইহা অস্বাভাবিক, কঠিন ও দুর্বোধ্য বলিয়া বোধ হইতে লাগিল। সে সময়ে পাঁচজন ইংরাজীশিক্ষিত লোক কলিকাতার কোনও বৈঠকখানাতে একত্র বসিলেই এই সংস্কৃতবহুল ভাষা লইয়া অনেক হাসাহাসি হইত।
১০. বিদ্যাসাগরের আরেক স্নেহভাজন হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর বিরোধিতা --- কথাটি এই যে, যাঁহারা এ পর্যন্ত বাংলাভাষায় লেখনী ধারণ করিয়াছেন, তাঁহার কেহই বাংলাভাষা ভালো করিয়া শিক্ষা করেন নাই। হয় ইংরেজি পড়িয়াছেন, না-হয় সংস্কৃত পড়িয়াছেন, পড়িয়াই অনুবাদ করিয়াছেন। কতকগুলি অপ্রচলিত সংস্কৃত ও নূতন গড়া চোয়ালভাঙা কথা চলিত করিয়া দিয়াছেন। নিজে ভাবিয়া কেহ বই লেখেন নাই, সুতরাং নিজের ভাষায় কী আছে না আছে তাহাতে তাঁহাদের নজরও পড়ে নাই।
...
এই শ্রেণীর লেখকের হস্তে বাংলাভাষার উন্নতির ভার অর্পিত হইল। লিখিত ভাষা ক্রমেই সাধারণের দুর্বোধ ও দুষ্পাঠ্য হইয়া উঠিল। অথচ এডুকেশন ডেস্প্যাচের কল্যাণে সমস্ত বঙ্গবাসী বালক এই প্রকারের পুস্তক পড়িয়া বাংলাভাষা শিখিতে আরম্ভ করিল। বাংলাভাষার পরিপুষ্টির দফা একেবারে রফা হইয়া গেল।
১১. বঙ্কিমচন্দ্র --- গদ্য গ্রন্থাদিতে সাধুভাষা ভিন্ন আর কিছু ব্যবহার হইত না। তখন পুস্তকপ্রণয়ন সংস্কৃত ব্যবসায়ীদিগের হাতে ছিল। অন্যের বোধ ছিল যে, যে সংস্কৃত না জানে, বাঙ্গালা গ্রন্থ প্রণয়নে তাহার কোন অধিকার নাই, সে বাঙ্গালা লিখিতে পারেই না। যাঁহারা ইংরেজিতে পণ্ডিত, তাঁহারা বাঙ্গালা লিখিতে পড়িতে না জানা গৌরবের মধ্যে গণ্য করিতেন। সুতরাং বাঙ্গালায় রচনা ফোঁটা-কাটা অনুস্বারবাদীদিগের একচেটিয়া মহল ছিল। সংস্কৃতেই তাঁহাদিগের গৌরব। তাঁহারা ভাবিতেন, সংস্কৃতেই তবে বুঝি বাঙ্গালা ভাষার গৌরব; যেমন গ্রাম্য বাঙ্গালী স্ত্রীলোক মনে করে যে, শোভা বাড়ুক না বাড়ুক, ওজনে ভারি সোনা অঙ্গে পরিলেই অলঙ্কার পরার গৌরব হইল, এই গ্রন্থকর্তারা তেমনি জানিতেন, ভাষা সুন্দর হউক বা না হউক, দুর্বোধ্য সংস্কৃতবাহুল্য থাকিলেই রচনার গৌরব হইল।
১২. এবং রবীন্দ্রনাথ --- বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলমান যখন ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী, পরস্পরের সুখ-দুঃখ নানা সূত্রে বিজড়িত, একের গৃহে অগ্নি লাগিলে অন্যকে যখন জল আনিতে ছুটাছুটি করিতে হয়, তখন শিশুকাল হইতে সকল বিষয়েই পরস্পরের সম্পূর্ণ পরিচয় থাকা চাই। বাঙালি হিন্দুর ছেলে যদি তাহার প্রতিবেশী মুসলমানের শাস্ত্র ও ইতিহাস এবং মুসলমানের ছেলে তাহার প্রতিবেশী হিন্দু শাস্ত্র ও ইতিহাস অবিকৃতভাবে না জানে তবে সেই অসম্পূর্ণ শিক্ষার দ্বারা তাহারা কেহই আপন জীবনের কর্তব্য ভালো করিয়া পালন করিতে পারিবে না।... বাংলা বিদ্যালয়ে হিন্দু ছেলের পাঠ্যপুস্তকে তাহার স্বদেশীয় নিকটতম প্রতিবেশী মুসলমানদের কোনো কথা না থাকা অন্যায় এবং অসংগত।
ইংরাজি শিক্ষার যেরূপ প্রচলন হইয়াছে, তাহাতে ইংরাজের ইতিহাস, সমাজতত্ত্ব, আচার-বিচার আমাদের কাছে লেশমাত্র অগোচর থাকে না; অথচ তাহারা বহুদূরদেশী এবং মুসলমানরা আমাদের স্বদেশীয়, এবং মুসলমানদের সহিত বহুদিন হইতে আমাদের রীতিনীতি পরিচ্ছদ ভাষা ও শিল্পের আদান-প্রদান চলিয়া আসিয়াছে। অদ্য নূতন ইংরাজি শিক্ষার প্রভাবে আত্মীয়ের মধ্যে প্রতিবেশীর মধ্যে ব্যবধান দাঁড়াইয়া গেলে পরম দুঃখের কারণ হইবে। বাঙালি মুসলমানের সহিত বাঙালি হিন্দুর রক্তের সম্বন্ধ আছে, এ কথা আমরা যেন কখনো না ভুলি।
কাজেই এটা শুধু বাংলা ভাষার সংস্কৃতায়নই নয়, বাংলা ভাষাকে নিয়ে ব্রিটিশের বিভাজনের রাজনীতিও বটে। প্রথমে সাহেবদের হাত ধরে এর সূত্রপাত, পরে সুবোদের সাহায্যে তার বিস্তার। যার ফল এখনও আমরা ভুগে চলেছি।