“যথাসময়ে পরীক্ষা আরম্ভ হইল এবং যথাসময়ে শেষ হইল। পরীক্ষার ফল জানিবার জন্য সকলে আগ্রহ করিয়া আছে, নন্দও রোজ নোটিশবোর্ডে গিয়া দেখে, তাহার নামে সংস্কৃত প্রাইজ পাওয়ার কোনো বিজ্ঞাপন আছে কিনা। তারপর একদিন হেডমাস্টার মহাশয় এক তাড়া কাগজ লইয়া ক্লাশে আসিলেন, আসিয়াই গম্ভীর ভাবে বলিলেন, এবার দুই-একটা নতুন প্রাইজ হয়েছে আর অন্য বিষয়েও কোনো কোনো পরিবর্তন হয়েছে।" এই বলিয়া তিনি পরীক্ষার ফলাফল পড়িতে লাগিলেন। তাহাতে দেখা গেল, ইতিহাসের জন্য কে যেন একটা রূপার মেডেল দিয়াছেন। ক্ষুদিরাম ইতিহাসে প্রথম হইয়াছে, সে-ই ঐ মেডেলটা লইবে। সংস্কৃতে নন্দ প্রথম, ক্ষুদিরাম দ্বিতীয়— কিন্তু এবার সংস্কৃতে কোনো প্রাইজ নাই।
হায় হায়! নন্দর অবস্থা তখন শোচনীয়! তাহার ইচ্ছা হইতেছিল সে ছুটিয়া গিয়া ক্ষুদিরামকে কয়েকটা ঘুঁষি লাগাইয়া দেয়। কে জানিত এবার ইতিহাসের জন্য প্রাইজ থাকিবে, আর সংস্কৃতের জন্য থাকিবে না। ইতিহাসের মেডেলটা তো সে অনায়াসেই পাইতে পারিত। কিন্তু তাহার মনের কষ্ট কেহ বুঝিল না— সবাই বলিল, "বেড়ালের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়েছে— কেমন করে ফাঁকি দিয়ে নম্বর পেয়েছে।" দীর্ঘশ্বাস ছাড়িয়া নন্দ বলিল, "কপাল মন্দ!"”
(“নন্দলালের মন্দ কপাল”; সুকুমার রায়)
সম্প্রতি নীতি আয়োগ SDG India র তৃতীয় রিপোর্টটি প্রকাশ করল। সাসটেনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল রাজ্যদের ক্রমিক অবস্থান নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে মন্তব্য হওয়া সবে শুরু হ'ল। এরপর ধীরে সুস্থে সমাজ বিজ্ঞানীরা তলিয়ে দেখবেন রিপোর্টটা। আরেকটু বিশদে এর তাৎপর্য বুঝবো আমরা।
প্রাক্তন পেশা এবং বর্তমান নেশার সুত্রের প্রথমে নজর যায় এসডিজি ৩ এর দিকে, যেটি মুলত সুস্বাস্থ্য এবং সামাজিক কল্যাণ নিয়ে।
আন্তর্জাতিক স্তরে এই উন্নয়নের স্থায়ী অভীষ্টে পৌঁছনোর জন্যে যে সূচকগুলি ধরা হচ্ছে, সেগুলো হ'ল,
১) মাতৃমৃত্যুর হার,
২) প্রসবকালে দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীর উপস্থিতি,
৩) অনূর্ধ্ব পাঁচ বছর বয়সী শিশুমৃত্যুর হার (প্রতি হাজার জীবিত জন্মে),
৪) নবজাতকের মৃত্যুর হার (প্রতি হাজার জীবিত জন্মে),
৫) জেন্ডার, বয়স ও মূল জনসংখ্যা অনুসারে প্রতি হাজার অসংক্রমিত মানুষের মধ্যে নতুন এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা,
৬) প্রতি লাখ রোগে যক্ষা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা,
৭) প্রতি হাজার জনে ম্যালেরিয়া রোগের অবস্থা,
৮) প্রতি লাখে হেপাটাইটিস বি আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা,
৯) গুরুত্ব না দেওয়া উষ্ণমণ্ডলীয় রোগের কারণে (এন ডি টি) চিকিৎসার প্রয়োজন হওয়া মানুষের সংখ্যা,
১০) হৃদরোগ, ক্যানসার, ডায়াবেটিস অথবা দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসপ্রশ্বাস জনিত রোগে মৃত্যুর হার (৩০ থেকে ৭০ বয়সী),
১১) আত্মহত্যাজনিত মৃত্যুর হার,
১২) মাদকাসক্তিজনিত ভারসাম্যহীনতা নিরাময়ে চিকিৎসার হার (ওষুধ প্রয়োগ, মনস্তাত্বিক ও পুনর্বাসন এবং নিরাময় পরবর্তী সেবা),
১৩) ক্ষতিকর মাত্রায় অ্যালকোহল গ্রহণ,
১৪) সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার (প্রতি লাখ জনসংখ্যার বিপরীতে),
১৫) প্রজনন সক্ষম নারীদের (১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী) মধ্যে আধুনিক পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহারে সন্তুষ্ট জনগোষ্ঠীর হার,
১৬) প্রতি এক হাজার নারীর মধ্যে কিশোরী বয়সে সন্তানধারণকারীর হার (১০-১৪ বছর ও ১৫-১৯ বছরে গর্ভধারণের প্রবণতা),
১৭) জরুরি স্বাস্থ্যসেবার অবস্থান (জরুরি স্বাস্থ্যসেবার অবস্থান বলতে বোঝায় প্রজনন, মাতৃ, নবজাতক ও শিশুস্বাস্থ্য, সংক্রামক রোগ ও অসংক্রামক রোগে সেবাদানের সক্ষমতা এবং সাধারণ মানুষ ও সবচেয়ে সুবিধা বঞ্চিত মানুষের সেসব সেবাপ্রাপ্তির সুযোগের মাত্রা),
১৮) সংসারে ব্যয়ের অনুপাতে স্বাস্থ্যসেবায় বড় অঙ্কের ব্যয় হওয়া জনসংখ্যার অনুপাত (সংসারে মোট ব্যয় অথবা আয়ের >১০%),
১৯) রান্না ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের ফলে সংগঠিত মৃত্যুহার (প্রতি এক লাখ জনে),
২০) দূষিত জল, অস্বাস্থ্যকর স্বাস্থ্যবিধান ও স্বাস্থ্যবিধিসম্মত জীবনযাত্রার (ওয়াশ) অভাবজনিত মৃতুর হার,
২১) অনিচ্ছাকৃত বিষপ্রয়োগজনিত বায়ুদূষণে মৃত্যুর হার,
২২) বয়স অনুযায়ী ১৫ বছর বা তদূর্ধ্বের মধ্যে তামাক সেবন পরিস্থিতি,
২৩) জাতীয় স্বাস্থ্য কর্মসূচীর আওতায় সব ধরনের টিকাদান কার্যক্রমের আওতাভুক্ত জনসংখ্যার অনুপাত,
২৪) প্রতি ১০ হাজার জন জনগোষ্ঠীর বিপরীতে স্বাস্থ্যকর্মীর ঘনত্ব ও বণ্টন (চিকিৎসক,নার্স ও স্বাস্থ্য প্রযুক্তিবিদ).
২৫) আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্যবিধি সংশ্লিষ্ট সক্ষমতা ও জরুরি স্বাস্থ্য পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি।
এই সূচকপঞ্জি নিয়ে মেলাতে চেষ্টা করছিলাম গত বছরে প্রকাশিত এসডিজি রিপোর্টের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন রাজ্যগুলোর মধ্যে কী ধরনের অগ্রগতি হয়েছে। প্রথমে নজরেই মনে হ'ল খুব সফল হবে না এই প্রচেষ্টা। কারণ গত বছরে যে সব সূচক ধরে মাপা হয়েছিল, এ বছরে তার অনেক ক'টিই পরিত্যক্ত হয়েছে। আবার গত বছর রাখা হয়নি এমন কিছু সূচক এ বছরে এসেছে। আমরা আগে দেখতাম দারিদ্র্যরেখার নীচে অবস্থানকারী মানুষজনদের চিহ্নিত করার সূচক কোনো দুটি পর্বে এক থাকতো না। ফলে আগের বছরের গরিব এ বছরেও গরিব কি না তা বোঝার উপায় থাকতো না। কেবল বোঝা যেত এ বছর, ওঁদের মাপকাঠিতে কারা গরিব। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে সংশ্লিষ্ট কর্তারা জানাতেন এটা উন্নততর সূচক, অতএব অকারণে প্রশ্ন করো না। পরে দেখেছিলাম অমর্ত্য সেন, জঁ দ্রেজ রাও এই প্রশ্ন তুলেছিলেন।
আগের বছরের সঙ্গে এ বছরের সুচকগুলি যে তফাত আনা হয়েছে তা নীচের সারণিতে রাখা হ’ল।
গত বছরের SDG3 সূচক | SDG3 সদ্য প্রকাশিত রিপোর্টে ব্যবহৃত সূচক |
মাতৃমৃত্যুর হার (MMR)(প্রতি লক্ষ জীবিত জন্মে) | মাতৃমৃত্যুর হার (MMR)(প্রতি লক্ষ জীবিত জন্মে) |
প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের অনুপাত | সব ধরনের প্রসবের মধ্যে কতো শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব হয়েছে |
অনূর্ধ্ব পাঁচ বছর বয়সী শিশুমৃত্যুর হার (প্রতি হাজার জীবিত জন্মে) | অনূর্ধ্ব পাঁচ বছর বয়সী শিশুমৃত্যুর হার (প্রতি হাজার জীবিত জন্মে) |
০-৫ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে কতো শতাংশের পূর্ণ টিকাকরণ হয়েছে | ০-৫ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে কতো শতাংশের পূর্ণ টিকাকরণ হয়েছে |
প্রতি লাখ জনসংখ্যায় কতজন যক্ষা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা জানানো হয়েছে , | প্রতি লাখ জনসংখ্যায় কতজন যক্ষা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা জানানো হয়েছে , |
মূল জনসংখ্যা অনুসারে প্রতি হাজার অসংক্রমিত মানুষের মধ্যে নতুন এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা | মূল জনসংখ্যা অনুসারে প্রতি হাজার অসংক্রমিত মানুষের মধ্যে নতুন এইচআইভি আক্রান্তের সংখ্যা |
প্রজনন সক্ষম নারীদের (১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী) মধ্যে আধুনিক পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহারে সন্তুষ্ট জনগোষ্ঠীর হার, | এ বছর ধরা হয়নি |
প্রতি ১০ হাজার জন জনগোষ্ঠীর বিপরীতে স্বাস্থ্যকর্মীর ঘনত্ব ও বণ্টন (চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য প্রযুক্তিবিদ) | প্রতি ১০ হাজার জন জনগোষ্ঠীর বিপরীতে স্বাস্থ্যকর্মীর ঘনত্ব ও বণ্টন (চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য প্রযুক্তিবিদ) |
আত্মহত্যাজনিত মৃত্যুর হার, (প্রতি ১,০০,০০০ জনসংখ্যা পিছু) | |
সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার (প্রতি লাখ জনসংখ্য পিছু) | |
সংসারে মাসিক ব্যয়ের অনুপাতে স্বাস্থ্যসেবায় ব্যয়ের অনুপাত (সংসারে মোট ব্যয় অথবা আয়ের >১০%) |
তিনটি সূচক যোগ করা হ’ল। প্রশ্ন হ’ল ২৫ টা সূচকের দীর্ঘ তালিকা থেকে আগে ব্যবহৃত ন’টি তালিকা থেকে একটি বাদই বা দেওয়া হ’ল, আর বেছে বেছে ওই তিনটিকেই বা কেন জোড়া হ’ল? এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা শুরু করা যাতে পারে পুরনো গত বছরের এসডিজি ৩ এর সূচক অনুযায়ী কোন রাজ্যের অবস্থান কোথায় সেটা এক নজরে দেখে নেওয়া, নীচের সারণিতে সেটাই করার চেষ্টা করেছি ।
সারণি ১- এসডিজি ইন্ডিয়া ২০১৯-২০র ড্যাশবোর্ড অনুযায়ী এসডিজি ৩ সূচকগুলিতে বিভিন্ন রাজ্যের অবস্থান।
রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল | মাতৃমৃত্যুর হার (MMR)(প্রতি লক্ষ জীবিত জন্মে) | সব ধরনের প্রসবের মধ্যে কতো শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব হয়েছে | অনূর্ধ্ব পাঁচ বছর বয়সী শিশুমৃত্যুর হার (প্রতি হাজার জীবিত জন্মে) | অনূর্ধ্ব পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে কতো শতাংশের পূর্ণ টিকাকরণ হয়েছে | প্রতি লাখ জনসংখ্যায় কতজন যক্ষা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা জানানো হয়েছে | মূল জনসংখ্যা অনুসারে প্রতি হাজার অসংক্রমিত মানুষের মধ্যে নতুন এইচ আই ভি আক্রান্তের সংখ্যা | প্রজনন সক্ষম নারীদের (১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী) মধ্যে আধুনিক পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহারে সন্তুষ্ট জনগোষ্ঠীর হার | প্রতি ১০ হাজার জন জনগোষ্ঠীর বিপরীতে স্বাস্থ্যকর্মীর ঘনত্ব ও বণ্টন (চিকিৎসক,নার্স ও স্বাস্থ্য প্রযুক্তিবিদ) | এস ডি জি ৩ সূচক স্কোর |
কেরালা | ১০০ | ৫৮ | ১০০ | ৬৯ | ৮৬ | ৯৮ | ৪৩ | ১০০ | ৮২ |
অন্ধ্র প্রদেশ | ৯৭ | ৪৭ | ৭০ | ৭০ | ৬৫ | ৯০ | ৬৫ | ১০০ | ৭৬ |
মহারাষ্ট্র | ১০০ | ৪৬ | ৯৩ | ৫৩ | ৬৬ | ৯৬ | ৫৭ | ৯৫ | ৭৬ |
তামিলনাড়ু | ১০০ | ৪২ | ৯৭ | ৫১ | ৭৪ | ৯৬ | ৪৬ | ১০০ | ৭৬ |
কর্ণাটক | ৮৩ | ৩৪ | ৮৮ | ৫৬ | ৭৫ | ৯৪ | ৪৪ | ১০০ | ৭২ |
পাঞ্জাব | ৬৭ | ৪০ | ৮৫ | ৫৬ | ৬৪ | ৯৫ | ৬১ | ১০০ | ৭১ |
পুডুচেরি | Null | ১০০ | ১০০ | ২৪ | ৫২ | ৯২ | ৫৬ | Null | ৭১ |
পশ্চিমবঙ্গ | ৮৫ | ৪৪ | ৮৭ | ৬১ | ৭৯ | ৯৩ | ৫১ | ৬০ | ৭০ |
গুজরাট | ৮৯ | ৪৫ | ৬৫ | ৫৪ | ৫৫ | ৯৫ | ৩৫ | ৯৬ | ৬৭ |
হিমাচল প্রদেশ | Null | ২২ | ৭৬ | ৬৮ | ৫৬ | ৯৯ | ৪৫ | ১০০ | ৬৭ |
তেলঙ্গানা | ৯৬ | ৫৫ | ৮৭ | ৬৬ | ৭২ | ৮০ | ৫১ | ২২ | ৬৬ |
হরিয়ানা | ৮২ | ৩৯ | ৭০ | ৬৮ | ৫৪ | ৯৩ | ৫৩ | ৫৮ | ৬৫ |
আন্দামান এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ | Null | ৩০ | ১০০ | ৫৮ | ৭১ | ৮৯ | ৪০ | Null | ৬৫ |
মণিপুর | Null | ৩৪ | ৯৮ | ৭১ | ৮১ | ৫৬ | ০ | ৯৭ | ৬২ |
জম্মু ও কাশ্মীর | Null | ৪৬ | ৭৬ | ৫৯ | ৮২ | ৯৮ | ৩৮ | ৩৫ | ৬২ |
ওড়িশা | ৩৮ | ৩২ | ৫৬ | ৬২ | ৭৮ | ৯৫ | ৩৭ | ৯১ | ৬১ |
ত্রিপুরা | Null | ৪৩ | ৮৫ | ৩১ | ৮৭ | ৯৬ | ৩৪ | ৪৯ | ৬১ |
গোয়া | Null | ৩৯ | ১০০ | ৫৪ | ৬৮ | ৯০ | ১৪ | ৫৪ | ৬০ |
সিকিম | Null | ১৮ | ৮৬ | ৬০ | ৫৬ | ৯৮ | ৩৮ | ৫৩ | ৫৯ |
রাজস্থান | ২৭ | ২৮ | ৫২ | ৫১ | ৫৯ | ৯৭ | ৪৭ | ১০০ | ৫৮ |
উত্তরাখণ্ড | ৮৮ | ২৪ | ৬০ | ৬৬ | ৬১ | ৯৫ | ৪২ | ৩৩ | ৫৮ |
লাক্ষাদ্বীপ | Null | ৩৭ | ৯০ | ৬৬ | ৯৪ | Null | ৩ | Null | ৫৮ |
দাদরা ও নগর হাভেলি | Null | ৩৯ | ৬৮ | ৫৬ | ৬২ | ৮৯ | ২৯ | Null | ৫৭ |
ঝাড়খণ্ড | ৯৬ | ৪২ | ৪৫ | ৫২ | ৭৫ | ৯৫ | ২৮ | ৮ | ৫৫ |
চণ্ডীগড় | Null | ১০০ | ৭৫ | ৬০ | ২ | ৮৬ | ৫২ | ০ | ৫৪ |
দিল্লি | Null | ৪২ | ৬৮ | ৪০ | ০ | ৮৮ | ৪১ | ৯৮ | ৫৪ |
মেঘালয় | Null | ১৬ | ৭৩ | ৪৫ | ৭২ | ৯৫ | ১১ | ৬১ | ৫৩ |
ছত্তিসগড় | ৫৫ | ২৯ | ২৬ | ৬০ | ৭১ | ৯৫ | ৪৮ | ৩৪ | ৫২ |
মিজোরাম | Null | ৫৩ | ৬০ | ৬৯ | ৫৮ | ০ | ২৬ | ১০০ | ৫২ |
অরুণাচল প্রদেশ | Null | ১২ | ৮৫ | ৩৩ | ৫৭ | ৯৬ | ১৬ | ৫৩ | ৫০ |
মধ্য প্রদেশ | ২৬ | ১৮ | ২৫ | ৫৭ | ৬১ | ৯৮ | ৪২ | ৭৪ | ৫০ |
দামান ও দিউ | Null | ০ | ৮২ | ৩৭ | ৬৯ | ৯০ | ২২ | Null | ৫০ |
আসাম | ০ | ২৪ | ৪১ | ৩৮ | ৭৫ | ৯৭ | ২৮ | ৫০ | ৪৪ |
বিহার | ৪০ | ৮ | ৩৮ | ৪০ | ৮৩ | ৯৪ | ১২ | ৪০ | ৪৪ |
উত্তর প্রদেশ | ৮ | ৬ | ০ | ৪৮ | ৬৩ | ৯৮ | ২২ | ২৯ | ৩৪ |
নাগাল্যান্ড | Null | ৫ | ৭৭ | ০ | ৫৯ | ৫৫ | ১০ | ০ | ২৯ |
ভারত | ৬৭ | ২৭ | ৫৩ | ৫৩ | ৬৮ | ৯৫ | ৪০ | ৮৩ | ৬১ |
লক্ষ্য | ১০০ | ১০০ | ১০০ | ১০০ | ১০০ | ১০০ | ১০০ | ১০০ | ১০০ |
এই স্কোরে বাংলার অবস্থান ৮ নম্বরে। গুজরাট ৯ নম্বরে। পশ্চিমবঙ্গে মাতৃমৃত্যুর হার ৮৫, গুজরাটের ৮৯। প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবে বাংলা গুজরাটের থেকে এগিয়ে ছিল। অনূর্ধ্ব পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের মৃত্যু গুজরাটে কম, কিন্তু টিকাকরণে গুজরাট পিছিয়ে, যক্ষা রোগ পশ্চিম বঙ্গে বেশি, এইচআইভি পশ্চিম বঙ্গে কম, পরিবার পরিকল্পনায় পশ্চিমবঙ্গ এগিয়ে, স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যার অনুপাতে গুজরাটে অনেক বেশি। সব মিলিয়ে এসডিজি তিন এর সূচকে পশ্চিমবঙ্গের স্কোর ৭০ এবং গুজরাটের ৬৭।
এবার আমরা এই বছরের সূচকগুলোর ভিত্তিতে রাজ্যগুলির নতুন র্যাঙ্কিংটা দেখবো।
সারণী ২ঃ এসডিজি ইন্ডিয়া ২০২০-২১র ড্যাশবোর্ড অনুযায়ী এসডিজি ৩ সূচকগুলিতে বিভিন্ন রাজ্যের অবস্থান।
রাজ্য / কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল | মাতৃমৃত্যুর হার (MMR) (প্রতি লক্ষ জীবিত জন্মে) | অনূর্ধ্ব পাঁচ বছর বয়সী শিশুমৃত্যুর হার (প্রতি হাজার জীবিত জন্মে) | ৯-১১ মাস বয়সী শিশুদের মধ্যে কতো শতাংশের পূর্ণ টিকাকরণ হয়েছে | প্রতি লাখ জনসংখ্যায় কতজন যক্ষা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা জানানো হয়েছে | মূল জনসংখ্যা অনুসারে প্রতি হাজার অসংক্রমিত মানুষের মধ্যে নতুন এইচ আই ভি আক্রান্তের সংখ্যা | আত্মহত্যা জনিত মৃত্যুর হার,(প্রতি ১,০০,০০০ জনসংখ্যা পিছু) | সড়ক দুর্ঘটানায় মৃত্যুর হার (প্রতি লাখ জনসংখ্য পিছু) | সব ধরনের প্রসবের মধ্যে কতো শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব হয়েছে | সংসারে মাসিক ব্যয়ের অনুপাতে স্বাস্থ্যসেবায় ব্যয়ের অনুপাত (সংসারে মোট ব্যয় অথবা আয়ের >১০%) | প্রতি ১০ হাজার জন জনগোষ্ঠীর বিপরীতে স্বাস্থ্যকর্মীর ঘনত্ব ও বণ্টন (চিকিৎসক,নার্স ও স্বাস্থ্য প্রযুক্তিবিদ) | এস ডি জি ৩ সূচক স্কোর |
দিল্লি | Null | ১৯ | ৯২ | ৫৭৫ | ০.১৫ | ১২.৭ | ৭.৫৬ | ৯৬.০ | ৯.২০ | ৫০ | ৯০ |
গুজরাট | ৭৫ | ৩১ | ৮৭ | ২৩২ | ০.০৫ | ১১.২ | ১০.৮৮ | ৯৯.৫ | ৯.৫০ | ৪১ | ৮৬ |
মহারাষ্ট্র | ৪৬ | ২২ | ১০০ | ১৮৩ | ০.০৭ | ১৫.৪ | ১১.৯২ | ৯৯.৩ | ১৪.৫০ | ৪৩ | ৮৩ |
তামিলনাড়ু | ৬০ | ১৭ | ৮৪ | ১৩৮ | ০.০৪ | ১৭.৮ | ১৩.৮৮ | ৯৯.৯ | ৯.১০ | ৬৫ | ৮১ |
দাদরা ও নগর হাভেলি | Null | Null | ৭৫ | ২০৫ | ০.১৭ | ১৭.১ | ৮.৮১ | ৯৯.৬ | ৬.০০ | Null | ৮০ |
দামান ও দিউ | Null | Null | ৬৬ | ১৭৩ | ০.০৭ | ১০.৯ | ৬.৮৬ | ১০০.০ | ৫.১০ | Null | ৮০ |
মিজোরাম | Null | Null | ৯২ | ২৩৭ | ১.১৮ | ৫.৯ | ৫.২৭ | ৮৯.৯ | ৯.৯০ | ৫০ | ৭৯ |
হিমাচল প্রদেশ | Null | ২৩ | ৮৬ | ২৩৫ | ০.০২ | ৮.০ | ১৫.৩৭ | ৯২.৪ | ১৪.৪০ | ৬৬ | ৭৮ |
কর্ণাটক | ৯২ | ২৮ | ৯৪ | ১৩৫ | ০.০২ | ১৭.১ | ১৬.৬০ | ৯৯.৯ | ৯.৮০ | ৭০ | ৭৮ |
লক্ষদ্বীপ | Null | Null | ৯২ | ২৩ | Null | ০.০ | ০.০০ | ৯৯.৮ | ৯.৬০ | Null | ৭৮ |
অন্ধ্র প্রদেশ | ৬৫ | ৩৩ | ৮৭ | ১৮৯ | ০.০৫ | ১২.৪ | ১৫.২৬ | ৯৯.৬ | ১৩.৫০ | ৯৫ | ৭৭ |
পাঞ্জাব | ১২৯ | ২৩ | ৮৯ | ১৯৬ | ০.০৮ | ৭.৯ | ১৫.৪১ | ৯৮.৫ | ১৩.৫০ | ৫৬ | ৭৭ |
উত্তরাখণ্ড | ৯৯ | ৩৩ | ৯০ | ২২৭ | ০.০৪ | ৪.৬ | ৭.৭৫ | ৮৮.৮ | ১২.৫০ | ১৫ | ৭৭ |
পশ্চিমবঙ্গ | ৯৮ | ২৬ | ৯৭ | ১১১ | ০.০৪ | ১৩.০ | ৫.৮৯ | ৯৮.৬ | ১৬.৯০ | ২৭ | ৭৬ |
ঝাড়খণ্ড | ৭১ | ৩৪ | ৯৪ | ১৪৬ | ০.০৪ | ৪.৪ | ১০.১১ | ৯৫.৮ | ১১.০০ | ৪ | ৭৪ |
চণ্ডীগড় | Null | Null | ৭৭ | ৬০৬ | ০.০৮ | ১১.১ | ৮.৭৮ | ৯৯.৯ | ৯.৫০ | ১ | ৭৪ |
গোয়া | Null | Null | ৯৪ | ১৫৭ | ০.০৩ | ১৬.৮ | ১৯.৩৮ | ৯৯.৯ | ৯.০০ | ৩৩ | ৭২ |
হরিয়ানা | ৯১ | ৩৬ | ৮৭ | ২৫৫ | ০.০৯ | ১৪.৫ | ১৮.২৯ | ৯৫.৭ | ১০.৪০ | ২৬ | ৭২ |
কেরালা | ৪৩ | ১০ | ৯২ | ৭৫ | ০.০২ | ২৪.৩ | ১২.৪২ | ৯৯.৯ | ১৭.০০ | ১১৫ | ৭২ |
মেঘালয় | Null | Null | ৯৯ | ১৫৪ | ০.২৩ | ৬.১ | ৫.৪৫ | ৬০.৪ | ১০.৭০ | ২৫ | ৭০ |
রাজস্থান | ১৬৪ | ৪০ | ৬৯ | ২২৩ | ০.০৪ | ৫.৮ | ১৩.৬১ | ৯৮.২ | ১১.৮০ | ৪৯ | ৭০ |
জম্মু ও কাশ্মীর | Null | ২৩ | ১০৯ | ৮১ | ০.০২ | ২.১ | ৭.৬২ | ৯৪.৬ | ১৮.৬০ | ১৬ | ৭০ |
লাদাখ | Null | ২৩ | ১০৯ | ৮১ | ০.০২ | ২.১ | ৭.৬২ | ৯৪.৬ | ১৮.৬০ | ১৬ | ৭০ |
পুডুচেরি | Null | Null | ৫৪ | ৩১৪ | ০.১৬ | ৩২.৫ | ৯.৭০ | ১০০.০ | ৭.২০ | Null | ৭০ |
মণিপুর | Null | Null | ৮২ | ৮৩ | ০.৩৪ | ১.৯ | ৫.০১ | ৮৪.৬ | ১৪.৪০ | ৩৮ | ৬৮ |
আন্দামান এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ | Null | Null | ৬৬ | ১৫১ | ০.০৫ | ৪৫.৫ | ৫.০৩ | ৯৮.২ | ৭.০০ | Null | ৬৮ |
ওড়িশা | ১৫০ | ৪৪ | ৮৮ | ১১৭ | ০.০৫ | ১০.৫ | ১১.৮২ | ৯৭.২ | ১৩.১০ | ৩৯ | ৬৭ |
তেলঙ্গানা | ৬৩ | ৩০ | ৯৮ | ১৯২ | ০.০৮ | ২০.৬ | ১৮.৬৮ | ৯৯.৯ | ১৪.৪০ | ১০ | ৬৭ |
ত্রিপুরা | Null | Null | ৯৫ | ৭০ | ০.১১ | ১৮.২ | ৫.৯৭ | ৯৩.৫ | ১৪.২০ | ২২ | ৬৭ |
বিহার | ১৪৯ | ৩৭ | ৯৪ | ১০০ | ০.০৭ | ০.৫ | ৬.০০ | ৮৪.৮ | ১৪.৫০ | ১৭ | ৬৬ |
অরুণাচল প্রদেশ | Null | Null | ৬৮ | ১৮২ | ০.০৫ | ৭.৪ | ৭.২৩ | ৮৯.৬ | ১৭.০০ | ২২ | ৬৪ |
মধ্য প্রদেশ | ১৭৩ | ৫৬ | ৮৯ | ২২৬ | ০.০৪ | ১৫.১ | ১৪.৩৫ | ৯৫.৬ | ১২.২০ | ৩৩ | ৬২ |
সিকিম | Null | Null | ৬২ | ২১৮ | ০.০৩ | ৩৩.১ | ১২.৬৩ | ৯৯.৪ | Null | ২৫ | ৬২ |
নাগাল্যান্ড | Null | Null | ৫৪ | ২৩৩ | ০.৭৩ | ১.৯ | ১.০২ | ৮৩.০ | ৭.৯০ | ১ | ৬১ |
ছত্তিসগড় | ১৫৯ | ৪৫ | ৯৫ | ১৪৮ | ০.১০ | ২৬.৪ | ১৭.৩৪ | ৯৮.৩ | ৬.৬০ | ১৫ | ৬০ |
উত্তর প্রদেশ | ১৯৭ | ৪৭ | ৯৫ | ২১৩ | ০.০৩ | ২.৪ | ১০.৩০ | ৮৭.৬ | ১৬.৬০ | ১৪ | ৬০ |
আসাম | ২১৫ | ৪৭ | ৮৫ | ১৪১ | ০.০৪ | ৬.৯ | ৯.৪৩ | ৯১.১ | ১২.৯০ | ২৩ | ৫৯ |
ভারত | ১১৩ | ৩৬ | ৯১ | ১৭৭ | ০.০৫ | ১০.৪ | ১১.৫৬ | ৯৪.৪ | ১৩.০০ | ৩৭ | ৭৪ |
লক্ষ্য | ৭০ | ২৫ | ১০০ | ২৪২ | ০.০০ | ৩.৫ | ৫.৮১ | ১০০.০ | ৭.৮৩ | ৪৫ | ১০০ |
নতুন সূচক তিনটে জুড়তেই গুজরাট এক লাফে দ্বিতীয় স্থানে পৌঁছে গেল। গুজরাটের স্কোর, এসডিজি ৩ এর ক্ষেত্রে, একলাফে ৬৭ থেকে বেড়ে ৮৬। গুজরাটে মাতৃমৃত্যুর হার একবছরেই কমে এল ৭৫, পশ্চিমবঙ্গে এটা ৯৮ রয়ে গেল। অনূর্ধ্ব পাঁচ বছরে শিশুমৃত্যু নেমে এসেছে ৩১ (পশ্চিমবঙ্গ ২৬)এ। সম্পূর্ণ টিকাকরণে গুজরাট ৮৭ (পশ্চিমবঙ্গ ৯৭), টি বি নোটিফিকেশনে গুজরাট ২৩২ (পশ্চিমবঙ্গ ২৩২), এইচআইভিতে গুজরাটে ০.০৪ (পশ্চিম বঙ্গে ০.০৫)। নতুন সূচক আত্মহত্যার ক্ষেত্রে গুজরাটের ১১.২ পশ্চিমবঙ্গের ১৩ -র চেয়ে কম। সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে ও গুজরাটের ১০.৮৮, পশ্চিমবঙ্গের ৫.৮৯ এর চেয়ে বেশি। প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবে গুজরাট ৯৯.৫ পশ্চিমবঙ্গের ৯৮.৬ এর একটু ভাল। স্বাস্থ্যখাতে মাসিক আয়ের ৯.৫ শতাংশ ব্যয় হয় যা পশ্চিমবঙ্গের ১৬.৯ শতাংশের চেয়ে বেশ অনেকটা কম।
যে তথ্যটি অবাক করে তা হ'ল প্রতি ১০,০০০ জনসংখ্যায় ৪১ জন সব ধরনের স্বাস্থ্যকর্মী থাকা সত্ত্বেও গুজরাট বেশ কয়েকটি সূচকে ১০,০০০ প্রতি ২৭ জন স্বাস্থ্যকর্মী থাকা পশ্চিমবঙ্গের পেছনে।
দ্বিতীয় প্রশ্নটা ওঠে সূচক নির্বাচন নিয়ে। আগের বারের সূচকের সঙ্গে কি কেবল বেছে বেছে সেই সূচকগুলোকেই নেওয়া হ'ল, যা গুজরাটকে ভারত সভায় শ্রেষ্ঠ আসন দেবে?
যে কাজটা আমরা এক্ষুনি করে উঠতে পারলাম না, অথচ করা খুব দরকার, সেটা হ’ল আন্তর্জাতিক তালিকাভুক্ত ২৫ টি সূচক ধরেই রাজ্যগুলির অবস্থান দেখার চেষ্টা করা। আশাকরি সমাজবিজ্ঞানীরা নাড়াচাড়া শুরু করবেন বিষয়টিকে, সমগ্র রিপোর্টের যাবতীয় তথ্যই যাচাই করবেন তাঁরা।
আপাতত প্রাইজের নিয়ম পালটে গুজরাট নামক ‘খুদিরাম’ পশ্চিমবঙ্গ নামক নন্দলালকে পেছনে ফেলেছে।
সুস্বাস্থ্যের বিষয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতাই আমাদের মতো আমজনতার কাছে স্বাগত, যতক্ষণ সেটা সঠিক তথ্যভিত্তিক থাকে।
কৃতজ্ঞতা: http://www.trendswestbengal.org
কী ভয়ংকর কান্ড ! অযোগ্য ছাত্রকে প্রথম পুরস্কার প্রাপক ঘোষণা করে সেটাকে জাস্টিফাই করার জন্য যতরকম কূটক্যাচাল করা যায় আর কী !
খুব ভালো লিখেছেন, আমি এই ব্যাপারটা আগে দেখেছি কিন্তু মন দিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়নি। আপনি সেই কাজটা সহজ করে দিলেন, ধন্যবাদ। সূচক নির্বাচন তো অবশ্যই রাজনৈতিক, এবং সেটা যে ব্যবহার করা হচ্ছে তা দুঃখজনক হলেও আর আশ্চর্য হই না।
"যে কাজটা আমরা এক্ষুনি করে উঠতে পারলাম না, অথচ করা খুব দরকার, সেটা হ’ল আন্তর্জাতিক তালিকাভুক্ত ২৫ টি সূচক ধরেই রাজ্যগুলির অবস্থান দেখার চেষ্টা করা।" -- সূচকগুলি কি আপনি বলেই দিয়েছেন, কিন্তু সেগুলো ক্যালকুলেট করার মতন যথেষ্ট তথ্য কি পাবলিক স্পেসে আছে? সেটা থাকলে আমি-ই অত্যন্ত আগ্রহী - অন্ততঃ কয়েকটা দেখার। আমি যদিও সমাজবিজ্ঞানী নই, রাশিবিজ্ঞানী (স্ট্যাটিশটিশিয়ান)।
গুরুত্ত্বপূর্ন কাজ। নন্দলালের উপমাটি লেখকের রসবোধের পরিচয় বহন করে।
তবে সারণীগুলি সম্পর্কে কয়েকটি প্রশ্ন থেকে যায়।
সারনিদুটি সরাসরি তুলনীয় নয়।
প্রথম সারণির হেডিং গুলিকে বলা হয়েছে হার এবং পুরো সারণি জুড়ে পরিসংখ্যান দেয়া হয়েছে । কিন্তু এগুলি আসল হার নয়। এগুলি পারফরমেন্স অনুযায়ী দেয়া কিছু স্কোর (০-১০০) . এগুলি নর্মালাইস্ড স্কোর যার মানে সবচেয়ে খারাপ হল ০ এবং সবচেয়ে ভালো মানে ১০০। ডানদিকে শেষ কলামে দেয়া ফাইনাল স্কোর হচ্ছে এই সব স্কোরগুলির একটি সাধারণ গড়। আসল রিপোর্ট দেখলে এই পার্থক্যগুলো সহজেই চোখে পড়বে। যেমন ২০১৯-২০ সালে কেরালাতে মাতৃমৃত্যুর হার ছিল ৪২ যা সব রাজ্যের মধ্যে সেরা। তাই কেরালা পেয়েছে ১০০। আবার আসামে এই হার ২২৯ যা সবচেয়ে কম। তাই আসামের স্কোর ০।
দ্বিতীয় সারণিতে আছে প্রকৃত হারগুলি। আর শেষ কলামে আছে স্কোর। সেই কারণে শেষ কলামটি কিন্তু অন্য কলামের সংখ্যাগুলির সাধারণ গড় কষলে পাওয়া যাবে না। কেরালার মাতৃমৃত্যু হার ২০২০-২১ তে প্রতি লক্ষ জীবিত মৃত্যুতে ৪৩ এবং সারণি তাই দেখাচ্ছে।
দুটো দুরকমের সারণি পরপর দিলে এবং আলোচনার মূল হাতিয়ার পরিসংখ্যানের তুলনা হলে , এই ধরনের অসমঞ্জস ডেটা একটু অসুবিধাজনক বৈকি! মানছি এতটা গণনা পরিশ্রম সাপেক্ষ। তবে কলাম হেডিং ঠিক করে নেয়া যেতেই পারে।
পরিশেষে বলি , 'নাল' মানে কি ডেটা নেই অর্থাৎ এন এ?
আবার আসামে এই হার ২২৯ যা সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ সবচেয়ে খারাপ। মুদ্রণ প্রমাদ মার্জনীয়।
অনিন্দিতা রায় সাহাকে অনেক ধন্যবাদ প্রশ্নগুলি তোলার জন্য। যে ত্রুটি গুলির কথা উনি লিখেছেন, সেগুলি আছেই লেখাতে। সমস্যা হ'ল, যে ভাবে ওয়েবস্প্রেড তৈরী করা হয়েছে, তাতে পড়ে ওঠাই আমার মতো সত্তর ছোঁয়া, চক্ষুরোগ গ্রস্ত বৃদ্ধের পক্ষে দুরূহ কাজ। পরে লেখাটিকে ত্রুটীমুক্ত করার চেষ্টা করবো। আসল উদ্দেশ্য ছিল যাঁরা এই বিষয়গুলি বোঝেন তাঁদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। সেটা খানিক টা হয়েছে বুঝতে পারছি। নাল মানে ডাটা নেই। অনিন্দিতা দেবী কে অনুরোধ করবো তিনি যদি নিজেও নীতি আয়োগের সাইটে গিয়ে রিপোর্ট টা একটু ঘাঁটেন, তাহলে আমরা সবাই উপকৃত হ'ব।
যদুবাবুর প্রশ্নের উত্তরে বলি, এস ডি জি র সব তথ্য সম্ভবত নেই সব রাজ্যের জন্য। খোঁজার প্রক্রীয়া সবে শুরু করেছি মাতে। আপনার মতো রাশিবিজ্ঞানীরাও খুঁজতে আরম্ভ করলে সেটা নিঃসন্দেহে অনেক উন্নত মানের খোঁজ হবে।