"নো ভোট টু বিজেপি" ক্যাম্পেনের সবথেকে বড়ো সমালোচনা সম্ভবত এই দিক থেকেই এসেছে যে বিজেপিকে ভোট দিতে বারণ করলে; কাকে ভোট দিতে হবে সেটাও বলা দরকার; না হলে মানুষ বিভ্রান্ত হবেন। যদিও এই বিতর্কে সামাজিক মাধ্যমে গালাগালি ছাড়া খুব একটা কিছু হয় না; তবুও বিষয়টা স্পষ্ট হওয়া দরকার।
২০২১ এর বাংলার নির্বাচনে স্পষ্টত বিজেপি বিরোধী দুটি দিক থাকবে। এক, তৃণমূল এবং দুই, বাম কংগ্রেস। বাম সমর্থকদের একটা অংশ "নো ভোট টু বিজেপি"-র ক্যাম্পেনারদের "তৃণমূলের দালাল" হিসাবে দাগিয়ে দিয়েছেন। তাঁদের দাবী মতে বিজেপিকে ভোট দিতে বারণ করা মানেই তৃণমূলকে ভোট দিতে বলা। নতুবা "বিজেপিকে একটিও ভোট নয়"- প্রচারকারীদের বাম কংগ্রেস জোটকে ভোট দিতে বলতে হবে। বেশ চমৎকার দাবী সন্দেহ নেই। আরও একটি দাবী সিপিএম সমর্থকরা করে থাকেন; বিজেপি এবং তৃণমূল একই। যদিও তাঁদের দলের ঘোষিত বক্তব্য সেরকমটা নয়; তবুও বলে যান। বিজেপিকে বেশি ক্ষতিকারক বললেই তেড়ে আসেন। এদিকে মানিক সরকারও বলছেন তপ্ত কড়াই থেকে উনুনে ঝাঁপ না দিতে। তপ্ত কড়াই আর উনুনের মধ্যে তফাৎটা না বুঝলে অবশ্য কিছু করার নেই। তৃণমূল কেন; দেশে এই মুহূর্তে অন্য কোনও শক্তির সঙ্গে বিজেপির তুলনা করা মানে বিজেপিকে অনেক কম ক্ষতিকারক বলে সমাজে প্রতিষ্ঠা দেওয়া হয়। এটুকু রাজনৈতিক বোধ না থাকাটা দুঃখজনক।
সিপিএম, কংগ্রেস, তৃণমূল- এই সবকিছুর বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা একজন ব্যক্তি মানুষ হিসাবে এদের কারও হয়েই ভোট চাওয়ার প্রবৃত্তি হয় না। বাংলায় কংগ্রেস আমলের কথা ছেড়েই দেওয়া যাক। কেন্দ্রেও ইউপিএ সরকার থাকাকালীন এমন বহু কাজ হয়েছে যা সমর্থনযোগ্য নয়। বাংলায় বাম আমলে বহু নিন্দনীয় ঘটনা ঘটেছে। মরিচঝাঁপি, বানতলা সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামে গণআন্দোলনে শুধু গুলি চালনা নয়; "শিল্পায়ন এবং কর্মসংস্থান"-র যে মডেল সিপিএম সমর্থকরা এখনও দিয়ে থাকেন; তার সঙ্গেও বিন্দুমাত্র একমত নই। তৃণমূল সরকারের আমলেও লাগামছাড়া দুর্নীতি হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগ হয়নি। গণআন্দোলনের কর্মীদের ওপরে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস হয়েছে। তাই এদের কারও হয়েই ভোট চাওয়ার প্রবৃত্তি নেই। কিন্তু বিজেপিকে ভোটের ময়দানে আটকানোর প্রবৃত্তি আছে। কারণ যাই হয়ে যাক না কেন; সিপিএম, কংগ্রেস বা তৃণমূল- এরা কেউ ফ্যাসিস্ট নয়। এরা সকলেই বিজেপির থেকে কম ক্ষতিকারক। বিজেপিহীন বাংলার রাজনৈতিক পরিসর অনেক সুস্থ। আমরা চাই বাংলার রাজনৈতিক পরিসরে আগের মতই বিজেপি "সাইনবোর্ড" হয়ে যাক। একইসঙ্গে বাংলায় বিজেপি বিরোধী কোনও নির্বাচনী জোট নেই। সুতরাং যারা এই তিন দলের কাউকেই সমর্থন করেন না কিন্তু মনে করেন এদের থেকে বিজেপি অনেক বেশি খারাপ; তাঁরা "নো ভোট টু বিজেপি" বলে বাংলায় বিজেপিকে ভোট দিতে বারণ করছেন।
সুতরাং "বিজেপিকে ভোট নয়" বললেই মানুষ বিভ্রান্ত হবেন; এসব বলা বন্ধ করুন। বিজেপি কোনও ভোটিং অপশন হতে পারে না। ফুচকা খেয়ে অম্বল হয়েছে বলে বিষ খাওয়া যেতে পারে না। তাই খুব স্পষ্ট ভাবে বারবার বলে যেতে হবে-"No Vote to BJP- বিজেপিকে একটিও ভোট নয়।"
সহমত
আমার এক বন্ধু আমাকে যখন জিজ্ঞাসা করে বা করবে ।.."""ভোট কাকে দেবে ???"""" আমি বলেছি এবং বলবো """বিজেপি কে নয় """"!!!এবার প্রশ্ন হলো কাকে তাহলে ভোট দেব ???ব্যক্তিগত মত হলো ( প্রকাশ করা উচিত বলে মনে করছি ) ।...বাম পন্থী পার্টি কে ।..সেটা সিপিম বা সিপিআই বা সিপি(এম এল ) যে হোক না কেন !!!আমার কাছে প্রধান শত্রু হলো বিজেপি আর তৃণমূল ।..দুটোই !! ব্যাস !!!
বিজেপি যে দশ বছরে এত বড় বিপদ হয়ে উঠেছে তার একটা বড় কারণ রাজ্যে রাজ্যে আদর্শহীন দুর্নীতিপরায়ণ আ`ঞ্চলিক দলগুলির রমরমা যাদের দেশের সাধারণ স্বার্থ নিয়ে কোন মাথাব্যথা নেই অথবা টিকি বা`ন্ধা ইডির কাছে তারা একের পার এক আসা`মবিধানিক আইন ,অমানবিক বিল গুলো রাজ্যসভায় পাশ হতে দিচ্ছে বিজেপি সংখ্যালঘু হাওয়া সত্ত্বেও , কোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে কোন মোমেনটাম তারা বৃদ্ধি করে না। তাছাড়া ব্যক্তি এমেলে এমপিদের কেনাবেচা তো আছেই .
"নো ভোট টু বিজেপি"
মনে করুন কেউ বিজেপিকে দিলনা। তাহলে ৯০+% ভোট তিনোকে দিতে হয়। সেটা কোনকালেই হয়না। অতএব ৪৫% যদি তিনোরা পায় তাহলে ৫৫% ভোট পাবে কং+বাম। সেটা বিজেপি ও বিশেষতঃ তিনোদের পক্ষে বেজায় ক্ষতিকারক। তিনোরাই আপ্রাণ চেষ্টা করবে বিজেপিকে ভোট পাইয়ে দেওয়ার। দরকার হলে RSS-এর নির্দেশে বিজেপি তিনোকে ক্ষমতায় রাখবে বামেদের আটকানোর জন্য। কেননা, "নাগপুরের ইচ্ছাফুল, পচ্চিমবঙ্গে তিনোমুল"!!
অতএব শুধুমাত্র "নো ভোট টু বিজেপি" বাক্যটি একটি নির্বোধ স্লোগান মাত্র। এমনকি "নোটায় ভোট" দেওয়ার চাইতেও নির্বোধতর স্লোগান.
পিটি,
বুঝলাম না। এভাবে যদি ৫৫% কং+ বাম পায় তাহলে ওরা সরকার গড়বে। তাতে ক্ষতি কী? বিজেপির অশ্বমেধের ঘোড়া তো থামবে, যেটা এই শ্লোগানটার উপপাদ্য। তাহলে নির্বোধ স্লোগান কী করে?
আর কার নির্দেশে ২০১৯শে সিপিএমের সমর্থকের ভোট বিজেপিতে চলে গেল? তিনোর তো কমেনি, কিন্তু বিজেপির ততটাই বেড়েছে যতটা সিপিএমের কমেছে।
আপনার যুক্তিতে সিপিএমের একা চলা উচিত কারণ যে কংরেসের হাত ধরেছেন সেই রাহুলের কংগ্রেসের গুজরাতে গোয়ায় প্রায় সবকটা বিধায়ক, মধ্য প্রদেশে এবং কর্ণাটকে ১৭ জন করে বিধায়ক বিজেপিতে গিয়ে নির্বাচিত সরকার ফেলে দিল। এখানেও যে হবেনা তার গ্যারান্টি? ইউপিতে রীতা বহুগুণা, পন্ডিচেরিতে ইদানীং ৪ জন বিজেপিতে গেছেন। যে দলের এমন ট্র্যাক রেকর্ড--!
RR
ঠিকই ধরেছেন। তাই এই জাতীয় "প্রাণ চায় চক্ষু না চায়" জাতীয় স্লোগান অর্থহীন। এ সবই পাঁচিলে বসে থাকার ব্যবস্থা। আর কে না জানে বিজেপি এবারে হঠাৎ ১০%-এর নীচে নেমে যাবেনা। তাই স্লোগান দিতে হলে পোষ্কার করে বলাই ভাল যে ভোট হয় তিনো নয় বাম-্কং কে দিন।
"কার নির্দেশে ২০১৯শে সিপিএমের সমর্থকের ভোট বিজেপিতে চলে গেল?"
ভোটার কারো পিতৃদেবের হয় বলে আমার জানা নেই।দলে দলে নেতা-অভিনেতারা যদি বিজেপিতে যায় তো সাধরণ ভোটারের আর দোষ কি? কারো নির্দেশে এসব হচ্ছে কিনা সে সব পন্ডিতেরা জানে-আমাকে কেউ খপর করেনিকো।
কিন্তু পবতে চোখের সামনে এত্তোগুলো তিনো নেতা বিজেপিতে চলে গেল। ত্রিপুরাতে গোটা তিনোটাই উড়ে গিয়ে বিজেপিতে জুড়ে বসল। সেসব বাদ দিয়ে আপনি হঠাৎ কংগ্রেসকে নিয়ে উদ্বিগ্ন হলেন কেন?
আবাপের সমীক্ষাটা মন্দ নয়। ৪৫% বলছে তিনোদের সরকার ভালো। ১৭% বলছে আগের বাম সরকার ভালো। ৩২% বলছে কোনও সরকারি ভালো নয়। সংখ্যাগুলো যতটা মনে পড়ছে। এই ৩২% হল বিজেপির ভোটার। এই সংখ্যাটা অনেকদিন ধরেই বাড়ছিলো। এখন ভালো কনসলিডেট করেছে। এর জন্য অনেক গুলো ফ্যাক্টর দায়ী। আচ্ছে দিনের স্বপ্ন, দিদির পলিসি পলিটিক্স, তিনোদের গুন্ডাগিরি, বামেদের অকর্মণ্যতা এবং অপদার্থতা, ন্যাশনাল পলিটিক্স, দেশভক্তি, রাম মন্দির, মুকুল এবং তার উপযুক্ত চেলারা সবাই বিজেপিকে এই জায়্গায় নিয়ে গেছে। আর তিনোদের ভোটের একটা বড় অংশ এখন মাইনরিটি, যেটা একসময় মুলতঃ বামেদের সঙ্গে ছিল। সেটাও ক্রমে তিনোতে চলে গেছে। আবার শহরের ভোট যেটা একসময় কঙ্গের সঙ্গে ছিল, সেটা বেশ কিছুটা বুদ্ধবাবুর সঙ্গে এসেছিল। এখন সেটা বিজেপি মুখী। পুরোনো বাম এবং কঙ্গ ভোটাররা এখন অনেকেই নেই, থাকলেও বুথে কমই যান। অন্যদিকে নতুন ভোটাররা সবই বিজেপিতে। গ্রামের যে ভোটটা একসময় বামেদের সঙ্গে ছিল, সেটারও একাংশ তিনো হয়ে এখন বিজেপিতে গেছে, আরেকাংশ বাম থেকে ডাইরেক্ট বিজেপিতে গেছে। কারণ সেখানে লোকজন লোকাল বাম নেতাদের তিনোতে যেতে দেখেছে, পরে তিনো নেতাদের বিজেপিতে যেতে দেখেছে। ফলে সব ঘেঁটে গেছে।
অতএব এই ওয়ান টু ওয়ান ভোট ট্রান্সফারের গল্পটা বড্ড লিনিয়ার। ঐভাবে পবে কেন কোথাও ভোট হয়না, বিশেষত যেখানে দুইয়ের বেশি পার্টি রয়েছে। যদিও মোটাদাগের মিডিয়াদের সেই গল্প লিখতে এবং স্টুডিও গরম করতে সুবিধা হয়।
"নো ভোট টু বিজেপি"-র মানে কারো কারো কাছে এমনটাও হতে পারেঃ
"Hossain said, “No one can go to vote except the Trinamool people. Those who do not want to vote for Trinamool will be sleeping at home. The central forces will guard the booths, our boys will play on the field.”"
https://www.opindia.com/2021/02/trinamool-congress-modassar-hossain-west-bengal-assembly-elections/
পিটি
গুলিয়ে ফেলেছেন।
1.
2019শে বামেদের ভোট রামে গেল, তখন তিনোর ভোট কমেনি এবং দলে দলে নেতা অভিনেতা বিজেপিতে যায়নি। তাহলে নেতা অভিনেতার পেছন পেছন বাম সমর্থক ভোটার বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন এটা দাঁড়ায় না।
2
একদিকে বলছেন ভোট কারো বাপের নয়। অথচ আগের দিন লিখলেন-- "আর এস এসের নির্দেশে বিজেপি তিনোদের ক্ষমতায় রাখবে। কোনটা ঠিক?
কিচ্ছু গোলায়নি। দুটো-ই ঠিক।
RSS তিনোকে ক্ষমতায় রেখে তাদের বামবিরোধীতার তত্ব execute করাতে চায়। ভোটারের মস্তিষ্ক প্রক্ষালণ তার পরের ধাপ। ২০২১ এর লড়াইটা বিজেপির ক্ষমতা দখলের। না পারলে পরবর্তী কালে ঐ স্ট্রাটেজি নেবে। তবে কতদিন ভোটারকে বাগে রাখতে পারবে সে অন্য প্রশ্ন।