১৫ই এপ্রিল ২০২০ তারিখে ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দেওয়া আদেশ (No. 40-3I2020-DM-I(A)) এর সংক্ষিপ্তসার
COVID-19 মহামারীর বিস্তারকে নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সরকার লকডাউনের সময়সীমা ২০২০ সালের ৩রা মে অবধি বাড়িয়েছেন। ১৪ই এপ্রিল ২০২০ তারিখে এই মর্মে ঘোষণা করা হয়েছে। তবে জনসাধারণের কষ্ট কমানোর জন্য, আগামী ২০ শে এপ্রিল, ২০২০ থেকে কিছু কিছু নির্বাচিত অতিরিক্ত কাজের অনুমতি দেওয়া হবে। লকডাউনের নিয়মাবলী কঠোরভাবে মেনে চলার ভিত্তিতে এবং অফিস, কর্মক্ষেত্র, কারখানা এবং প্রতিষ্ঠানে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা সম্পর্কিত সব রকমের প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে বিভিন্ন রাজ্য / কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল (ইউটি) / জেলা প্রশাসন এবাবদে এই নির্দেশিকা অনুসারে ধাপে ধাপে ছাড়ের সিদ্ধান্ত নেবেন।
এই দফার লকডাউনের কিছু বিধিনিষেধ আগের দফার মতই একইভাবে বহাল থাকবে। আবার বেশ কিছু নিয়মাবলীতে পরিবর্তনও করা হয়েছে। নতুন নিয়মাবলীর মধ্যে যেগুলি আগের পর্যায়ের লকডাউনের সময়েও বহাল ছিল, সেগুলো বাঁকা হরফে উল্লেখ করে দেওয়া হল।
সরকারী সংশোধিত নির্দেশিকার বয়ান অনুযায়ী, ৩রা মে অবধি সারা দেশে নীচের তালিকাভুক্ত কাজগুলি নিষিদ্ধ:
• স্বাস্থ্য পরিষেবার ও নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে ছাড়া যাত্রীদের সমস্ত অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক বিমান বা ট্রেনে চলাচল; গণ পরিবহনের বাস, মেট্রোরেল, ট্যাক্সি, অটোরিক্সা, সাইকেল রিক্সা, ক্যাব পরিষেবা আর এই নির্দেশিকায় অনুমোদিত কাজের জন্য বা মেডিক্যাল কারণে ছাড়া সব রকমের আন্তঃজেলা বা আন্তঃরাজ্য মনুষ্য চলাচল (** অগ্নি, আইনশৃখংলা ও জরুরী পরিষেবার জন্য চলাচল ২৪ তারিখ দেশজোড়া লকডাউন শুরুর থেকেই বহাল ছিল।)
• সকল শিক্ষামূলক, প্রশিক্ষণমুলক ও কোচিং দেওয়ার প্রতিষ্ঠান, নির্দেশিকায় বলা বিশেষত অনুমোদিত সংস্থা বাদে সমস্ত শিল্প ও বাণিজ্যিক কাজকর্ম ও আতিথেয়তা পরিষেবা দেওয়া সংস্থা, সিনেমা হল, মল, শপিং কমপ্লেক্স, জিমনেসিয়াম, স্পোর্টস কমপ্লেক্স, সুইমিং পুল, বিনোদন পার্ক, থিয়েটার, বার এবং অডিটোরিয়াম, সমাবেশের জায়গা জাতীয় সবকিছু, সকল ধর্মীয় বা উপাসনার জায়গা
• সমস্ত সামাজিক বা রাজনৈতিক বা খেলাধুলা বা বিনোদন বা শিক্ষামূলক বা সংস্কৃতি বা ধর্মীয় বা অন্যান্য জমায়েত বন্ধ – ধর্মীয় জমায়েত কঠোর ভাবে নিষিদ্ধ;
• শেষকৃত্যের ক্ষেত্রেও কুড়ি জনের বেশি লোকের জমায়েতের অনুমতি দেওয়া হবে না।
তবে শিক্ষাকেন্দ্রগুলিকে অনলাইন মাধ্যমে পড়া চালিয়ে যেতে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। দুরদর্শন ও অন্যান্য শিক্ষামূলক চ্যানেল ব্যবহার করা যেতে পারে।
সরকারী স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের জারি করা নির্দেশিকা অনুসারে, রাজ্য / কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল (ইউটি) / জেলা প্রশাসন 'হটস্পটস', অর্থাৎ যেখানে অনেকেই কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত বা যেখানে এটা খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে সেই জায়গাগুলি চিহ্নিত করবেন। রাজ্য / কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল / জেলা প্রশাসন যে জায়গাগুলোকে ইতিমধ্যেই নিয়ন্ত্রণ অঞ্চল (containment zones ) বলে চিহ্নিত করেছেন, সেখানে এই সংশোধিত নির্দেশিকা প্রযোজ্য হবে না। যদি কোনও নতুন অঞ্চলকে কন্টেইনমেন্ট অঞ্চলের তালিকায় ঢোকানো হয়, তাহলে সেই অঞ্চলে শুধুমাত্র সুনির্দিষ্টভাবে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রকের নির্দেশিকা দ্বারা অনুমোদিত কার্যক্রমগুলি ছাড়া অন্য সব চলতে থাকা কাজ কর্ম বন্ধ করে দেওয়া হবে। অপরিহার্য পরিষেবাগুলি ( জরুরি চিকিত্সক ব্যবস্থা এবং আইন শৃঙ্খলা সংক্রান্ত ব্যবস্থা সহ) এবং সরকারী ব্যবসায়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য যেটুকু দরকার তা ছাড়া এই অঞ্চলের পরিসীমার ভিতর থেকে বাইরে যাওয়া বা বাইরে থেকে ভিতরে আসা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে।
আঞ্চলিক প্রশাসন কোন অবস্থাতেই লকডাউনের নির্দেশিকাকে লঘু করতে পারবেন না। বরং প্রয়োজনে তাঁরা কঠোরতর ব্যবস্থা নিতে পারেন। তবে সেই নির্দেশিকা মেনে তাঁরা ২০ শে এপ্রিল থেকে আরও কিছু কিছু কাজ করার অনুমতি দিতে পারেন।
হাসপাতাল, নার্সিং হোম, ক্লিনিক, টেলিমেডিসিন ব্যবস্থা সহ সমস্ত স্বাস্থ্য পরিষেবা (আয়ুশ সহ) কার্যকরী রাখা। তার জন্য যা যা লাগে সেগুলো চালু রাখা। যেমন ডিসপেনসারি, কেমিস্ট, ফার্মাসি, জন ওষধি কেন্দ্র ও চিকিত্সা সরঞ্জামের দোকান সহ সব ধরণের ওষুধের দোকান, মেডিকেল ল্যাবরেটরিজ এবং সংগ্রহ কেন্দ্র, ফার্মাসিউটিকাল এবং চিকিত্সা-বিজ্ঞানের গবেষণাগার ও সংস্থা যারা কোভিড -19 সম্পর্কিত গবেষণা করছে, পশু হাসপাতাল, ডিসপেনসারি, ক্লিনিক, প্যাথলজি পরীক্ষা কেন্দ্র খোলা রাখা। টিকা ও ওষুধ বিক্রয় ও সরবরাহ বজায় রাখা। বাড়ি গিয়ে স্বাস্থ্য-সেবা দেন বা রোগ-নির্ণয়ের জন্য বা হাসপাতালে সরবরাহ করেন এমন সংস্থা সহ যে সব অনুমোদিত বেসরকারি সংস্থা প্রয়োজনীয় পরিষেবা দেওয়ার বন্দোবস্ত করতে সাহায্য করে বা কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণের কাজে সাহায্য করছে সেগুলো খোলা রাখা। ওষুধ বা ওষুধ তৈরিতে প্রয়োজনীয় দ্রব্য, চিকিৎসার সরঞ্জাম, চিকিৎসার কাজে ব্যবহার হওয়া অক্সিজেন তৈরি করার কারখানা বা তাঁর প্যাকেজিং , কাঁচামাল, বা মাঝের পর্বে যারা জড়িত সেসব কারখানা খোলা রাখা। অ্যাম্বুলেন্স তৈরি সহ চিকিৎসা পরিকাঠামো তৈরি চালু রাখা। সমস্ত চিকিত্সা এবং পশুচিকিত্সা কর্মী, বিজ্ঞানী, নার্স, প্যারা-মেডিক্যাল স্টাফ, ল্যাব-টেকনিশিয়ান, ধাই প্রমুখের এবং অ্যাম্বুলেন্স সহ হাসপাতালের অন্যান্য সহায়ক পরিষেবার বিমান চলাচল সহ রাজ্যের মধ্যে এবং আন্তঃরাজ্য চলাচল চালু রাখা। (** সরকারী, বেসরকারী হাসপাতাল ও যাবতীয় চিকিৎসাসংক্রান্ত সংস্থা, উৎপাদন ও সরবরাহ কেন্দ্র, কর্মীদের যাতায়াত ২৪ তারিখ দেশজোড়া লকডাউন শুরুর থেকেই বহাল ছিল।)
কৃষি ও সম্পর্কিত ক্ষেত্রে কৃষি, উদ্যানপালনসংক্রান্ত সংক্রান্ত কাজ পুরো চালু রাখা। কৃষক ও কৃষি শ্রমিকদের কাজ, শষ্য–সংগ্রহ বা ন্যুনতম সহায়ক মূল্য সংক্রান্ত কাজ করেন যারা, মান্ডির কাজ পুরো চালু রাখা। রাজ্য বা কেন্দ্র-শাসিত অঞ্চলগুলো গ্রামে গ্রামে বিকেন্দ্রীকৃত সংগ্রহ ও বিপণনের ব্যবস্থাকে উৎসাহ দিতে পারে। কৃষি-যন্ত্র আর তার খুচরো যন্ত্রাংশের দোকান, তার সরবরাহ, সেসব ভাড়া করার দোকান খোলা রাখা। সার, কীটনাশক, বীজ তৈরি, সরবরাহ আর বিক্রি চালু রাখা। ফসল কাটা, বীজবপন করা সহ বিবিধ যন্ত্রপাতির রাজ্যের ভিতর ও আন্তঃরাজ্য যাওয়া-আসা চালু রাখা। সামুদ্রিক ও মিষ্টি জলের মাছের চাষ, মাছ ধরা, তার প্যাকেজিং, সংরক্ষণ, বিপণন জাতীয় কাজ, মাছ চাষের জন্য প্রয়োজনীয় হ্যাচারি, খাবার, বাণিজ্যিক জলাধার চালু রাখা। মাছের বা চিংড়ির চালান, মাছের পোনার আর মাছ চাষের সঙ্গে জড়িত লোকজনের যাতায়াতের ব্যবস্থা চালু রাখা। দুধ ও দুধের থেকে তৈরি জিনিষের সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ, তার পরিবহণ সরবরাহ, বিতরণ ও বিক্রির ব্যবস্থা চালু রাখা। পোলট্রি, হ্যাচারি, পশুপালন খামার, গোশালা-সহ খোঁয়াড় খোলা রাখা , কাঁচামাল সহ পশুখাদ্য তৈরি ও সরবরাহ ব্যবস্থা চালু রাখা। সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ কর্মী সহ চা, কফি ও রাবারের বাগান খোলা রাখা এবং কাজু সহ এগুলির প্রক্রিয়াকরণ, প্যাকেজিং, বিপণন ও বিক্রির ব্যবস্থা চালু রাখা।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ও তার নিয়ন্ত্রণাধীন বাজার ও সংস্থাগুলি, সেবি ও ক্যাপিটাল ও ঋণপত্রের বাজার, আইআরডিএআই ও ইন্স্যুরেন্স সংস্থা, ব্যাঙ্কের শাখা, তাদের যে সব সংস্থা তথ্য-প্রযুক্তি সহায়তা দে্য়, ব্যাঙ্কিং করেস্পন্ডেন্ট, এটিএম আর নগদ ব্যবস্থাপক সংস্থা গুলি খোলা রাখা। ব্যাঙ্কের শাখাগুলিকে ও ব্যাঙ্কিং করেস্পন্ডেন্টদের ক্ষেত্রে দুরত্ব ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সাহায্য করার জন্য আঞ্চলিক প্রশাসন নিরাপত্তাবাহিনীর ব্যবস্থা করবে।
সামাজিক ক্ষেত্রে শিশু, প্রতিবন্ধী, মানসিক রোগী, বয়স্ক, গৃহহীন, মহিলা, বিধবাদের হোম, কিশোর অপরাধীদের থাকার জায়গা খোলা রাখা। বৃদ্ধ, বিধবা, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সামাজিক সুরক্ষা পেনসন, ইএফপিও র পেনসন ও প্রভিডেন্ট ফান্ড পরিষেবা চালু রাখা। পনেরদিনে একবার করে শিশু, মহিলা ও বুকের দুধ খাওয়ান এমন মাদের পুশ্টিকর খাবার অঙ্গনঅয়াড়ির তরফ থেকে পৌঁছে দেওয়া।
দুরত্ব বজায় রেখে ও মাস্ক পড়ে MNREGA র কাজ, বিশেষতঃ সেচ ও জলসংরক্ষণের কাজ চালু রাখা। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের অন্যান্য সেচ ও জলসংরক্ষণ প্রকল্পের কাজও এর সঙ্গে জুড়ে দেওয়া যেতে পারে।
গণপরিষেবার ক্ষেত্রে তেল ও গ্যাস সংস্থাগুলির পরিশোধন, পরিবহন, বিতরণ, সঞ্চয় এবং পেট্রোল, ডিজেল, কেরোসিন, সিএনজি, এলপিজি, পিএনজি ইত্যাদি পণ্যের খুচরা বিক্রয়, রাজ্য ও কেন্দ্র স্তরে বিদ্যুতের উৎপাদন ও সরবরাহ, ডাকঘর সহ ডাক পরিষেবা, স্থানীয় পর্যায়ে জল, স্যানিটেশন এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট ব্যবস্থা চালু রাখা।
পণ্যপরিবহনের ক্ষেত্রে রাজ্যের মধ্যে ও আন্তঃ রাজ্য পণ্য পরিবহণ, লোডিং ও আনলোডিং চালু রাখা। পণ্যপরিবহনের বাবদে ট্রাক চলাচল, রেলওয়ে, বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর, অভ্যন্তরীণ কনটেইনার ডিপো (আইসিডি), কাস্টমস ক্লিয়ারিং ও ফরয়ার্ডিং এজেন্টদের কাজ চালু রাখা ও যথোপযুক্ত কর্তৃপক্ষের দেওয়া পাসের ভিত্তিতে তাদের কর্মীদের ও চুক্তিবদ্ধ শ্রমিকদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করা । নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস, পেট্রোলিয়াম পণ্য এবং এলপিজি, খাদ্যদব্র্য, স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত পণ্যের আন্তঃরাষ্ট্র পরিবহনের জন্য স্থল-বন্দর চালু রাখা। হাইওয়ের ধারে ধাবা ও ট্রাক সারাই এর জায়গা চালু রাখা। (**অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিবহন প্রথম থেকেই চালু ছিল।)
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে, পাড়ার দোকান, বড় ইঁট-সুরকির দোকান বা ই-কমার্স সংস্থাগুলির মাধ্যমে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের উত্পাদন, পাইকারি বা খুচরা বিক্রির সঙ্গে জড়িত, পণ্যের সরবরাহ-ব্যবস্থার অংশ সংস্থাগুলিকে খোলা রাখতে দেওয়া হবে। খাবার, রোজকার ব্যবহারের মুদির দোকানের জিনিস, স্বাস্থ্য-সামগ্রী, ফল ও সবজি, দুধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য, হাঁস-মুরগির ডিম, মাছ-মাংস, পশুখাদ্য, ঘাস-বিচালি ইত্যাদি নিয়ে পিডিএস চালিত রেশনদোকান সহ যেসব দোকান (কিরানা ও প্রয়োজনীয় দ্রব্য বিক্রি করা একক দোকান) বা খাবারের গাড়ি ব্যবসা করে, তারাও দোকান খোলা রাখতে পারবে। দুই ক্ষেত্রেই দোকান খোলা-বন্ধের সময়ের উপর কোন বিধি-নিষেধ আরোপ করা হবে না। তবে তাদের সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে চলতেই হবে। লোকজনের বাড়ির বাইরে চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য জেলা কর্তৃপক্ষ হোম ডেলিভারিতে উত্সাহ দিতে পারে।
বাণিজ্যিক ও বেসরকারী যে সব প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যাবে:
• সম্প্রচার, ডিটিএইচ এবং কেবল পরিষেবা সহ প্রিন্ট এবং বৈদ্যুতিন মিডিয়া
• আইটি এবং আইটিইএস সর্বোচ্চ ৫০% কর্মী সহ (** নিত্যপ্রয়োজনীয় পরিষেবার সঙ্গে জড়িত আইটি এবং আইটিইএস প্রথম থেকেই খোলা)
• শুধুমাত্র সরকারী কাজে ব্যবহৃত হওয়া ডেটা এবং কল সেন্টার
• গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে চলা সরকার অনুমোদিত কমন সার্ভিস সেন্টার (সিএসসি)
• ই-কমার্স সংস্থা। ই-কমার্স অপারেটরদের বাহনগুলি প্রয়োজনীয় অনুমতি থাকলে চলার অনুমতি পাবে। (** অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সরবরাহের জন্য প্রথম থেকেই খোলা)
• কুরিয়ার সার্ভিস
• বন্দর, বিমানবন্দর, রেল স্টেশন, কনটেইনার ডিপো, স্বতন্ত্র ইউনিট এবং লজিস্টিক চেইনের অন্যান্য লিঙ্কগুলিতে কোল্ড স্টোরেজ এবং গুদামীকরণের পরিষেবা দেয় যেসব প্রতিষ্ঠান
• অফিস এবং আবাসনগুলির রক্ষণাবেক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ব্যক্তি-মালিকানাধীন সুরক্ষা পরিষেবা এবং ফেসিলিটি ম্যানেজমেন্ট পরিষেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠান
• লকডাউনে আটকে পড়া পর্যটক এবং ব্যক্তিদের, স্বাস্থ্য ও জরুরী পরিষেবার কর্মী, বিমান এবং জাহাজের কর্মীদের আশ্রয় দেওয়া হোটেল, হোমস্টে, লজ এবং মোটেলগুলি
• কোয়ার্যান্টাইনের জন্য ব্যবহৃত নির্ধারিত সংস্থা
• ইলেক্ট্রিশিয়ান, আইটির যন্ত্র মেরামতকারী, প্লাম্বার, মোটর মেকানিক, ছুতোর সহ স্ব-নিযুক্ত ব্যক্তিদের দেওয়া পরিষেবা।
সরকারী এবং বেসরকারী যেসব শিল্প বা শিল্পসংস্থা চালানো যাবে:
• পৌর কর্পোরেশন এবং পৌরসভার সীমানার বাইরে গ্রামাঞ্চলের শিল্পগুলি
• বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) এবং রফতানি কেন্দ্রিক ইউনিট (ইওইউ), শিল্পতালুক এবং শিল্প-শহরে অ্যাক্সেস নিয়ন্ত্রণ সহ উত্পাদন ও অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানগুলো সংযোজনী ২ অনুসারে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রোটোকল (এসওপি) মেনে চলার ব্যবস্থা করবে। এঁরা নিজেদের চত্বরে বা কাছেপিঠে যতটা সম্ভব কর্মীদের থাকার ব্যবস্থা করবে এবং নিয়োগকারী কর্মীদের সামাজিক দুরত্ব মেনে নির্দিষ্ট যানে করে নিরাপদ যাতায়াতের ব্যবস্থা করবেন।
• ওষুধ বা ওষুধ তৈরিতে প্রয়োজনীয় দ্রব্য, চিকিৎসার সরঞ্জাম সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ও তাদের কাঁচামাল বা তৈরি করতে লাগা অন্য সব জিনিষের উত্পাদনকারী সংস্থা
• পৌর কর্পোরেশন এবং পৌরসভার সীমানার বাইরে গ্রামাঞ্চলের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প,
• নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদন চলে যেখানে সেই সব শিল্প এবং তাদের সরবরাহকারী শিল্পগুলি
• আইটি হার্ডওয়্যার উত্পাদন
• কয়লা উত্পাদন, খনি এবং খনিজ উত্পাদন, তাদের পরিবহন, খনির অপারেশন সংক্রান্ত কাজ ও বিস্ফোরক সরবরাহ
• প্যাকেজিং উপাদান উত্পাদনকারী শিল্প
• পাট শিল্পগুলি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং এমন ভাবে শিফট প্ল্যান করে যাতে সব শ্রমিক একসাথে না এসে পৌঁছায়
• তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান / শোধনাগার
• পৌর কর্পোরেশন এবং পৌরসভার সীমানার বাইরে গ্রামাঞ্চলের ইঁট ভাটাগুলি
নির্মাণকাজের মধ্যে পৌর কর্পোরেশন এবং পৌরসভার বাইরে গ্রামাঞ্চলে এমএসএমই সহ রাস্তাঘাট, সেচ প্রকল্প, বাড়ী বানানো ও সকল ধরণের শিল্প প্রকল্প নির্মাণ, শিল্প তালুকের সব ধরণের প্রকল্পের কাজ , পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি প্রকল্প তৈরির কাজ চালানো যাবে। পৌর কর্পোরেশন এবং পৌরসভা সীমার মধ্যে যেসব নির্মাণপ্রকল্পে কাজ চালিয়ে যাওয়ার মত কর্মীরা প্রকল্পের জায়গাতেই আছেন, বাইরে থেকে কোনও শ্রমিক নিয়ে আসার দরকার নেই, সেই সকল নির্মাণকাজও চালান যাবে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সংগ্রহের জন্য এবং মানব ও পশু চিকিৎসা সহ জরুরি পরিষেবার জন্য ব্যক্তিগত যানের ব্যবহার চলবে। এই বাবদে. চারচাকার যানের ক্ষেত্রে প্রাইভেট যানবাহনের চালক ছাড়াও একজন যাত্রীকে পিছনের সিটে বসার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে; তবে, দ্বি-চাকার যানের ক্ষেত্রে কেবলমাত্র গাড়ির চালককেই অনুমতি দেওয়া হবে। রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে প্রশাসনের স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুসারে, যে সকল কাজের জায়গা লকডাউনের থেকে ছাড় পেয়েছে, তাদের সকল কর্মীদের কর্মস্থলে যাতায়াত করা অনুমোদিত।
ভারত সরকার এর অধীনের সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার নিম্নলিখিত দপ্তর খোলা থাকবে:
প্রতিরক্ষা, কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, বিপর্যয় মোকাবিলা ও প্রারম্ভিক সতর্কতা এজেন্সিগুলি (আইএমডি, আইএনসিওআইএস, এসএএসই এবং ন্যাশনাল সেন্টার অফ সিসমোলজি, সিডাব্লুসি), জাতীয় তথ্য বিজ্ঞান কেন্দ্র (এনআইসি), ভারতের খাদ্য কর্পোরেশন (এফসিআই), এনসিসি, নেহেরু যুব কেন্দ্র (এনওয়াইকে) এবং শুল্কবিভাগ কোনও বিধিনিষেধ ছাড়াই কাজ করবে।
অন্যান্য মন্ত্রনালয় এবং বিভাগ এবং তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন অফিসগুলি ডেপুটি সেক্রেটারি ও তার উপরের পদের লোকদের ১০০% উপস্থিতি এবং অবশিষ্ট কর্মীদের প্রয়োজন অনুসারে ৩৩% পর্যন্ত উপস্থিতি দিয়ে কাজ করতে হবে।
রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও স্থানীয় প্রশাসনিক দপ্তরের মধ্যে যা খোলা থাকবে:
পুলিশ, হোম গার্ড, অসামরিক প্রতিরক্ষা , অগ্নি ও জরুরী সেবা, দুর্যোগ পরিচালনা, কারাগার এবং পৌর পরিষেবাগুলি কোনও বিধিনিষেধ ছাড়াই কাজ করবে।
রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের সরকারী অন্য সব দপ্তর সীমিত কর্মী নিয়ে কাজ করবে। গ্রুপ ‘এ’ এবং ‘বি’ আধিকারিকরা প্রয়োজন মতো উপস্থিত থাকতে পারেন। গ্রুপ ‘সি’ ও নীচের স্তরের লোকেরা দরকার মত সর্বোচ্চ ৩৩ শতাংশ আসতে পারেন।
জেলা প্রশাসন এবং ট্রেজারি (একাউন্টেন্ট জেনারেলের অধীনস্থ ফিল্ড অফিসগুলি সহ) সীমিত কর্মীদের নিয়ে কাজ করবে। তবে, গণপরিষেবা দেওয়া নিশ্চিত করা হবে এবং সেজন্য প্রয়োজনীয় কর্মীদের কাজে লাগাতে হবে।
নয়াদিল্লিতে রাজ্যের / কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের আবাসিক কমিশনাররা শুধু কোভিড-১৯ সংক্রান্ত কাজ ও আভ্যন্তরীণ লঙ্গরের কাজের সমন্বয় করবেন।
বনদপ্তরের কর্মীদের মধ্যে চিড়িয়াখানা, নার্সারি, বন্যপ্রাণ, অরণ্যে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা, বৃক্ষরোপণ, গাছে জল দেওয়া ও টহল দেওয়ার এবং কর্মীদের পরিবহনের কাজে ও তার তদারকির কাজে যারা যুক্ত তাঁদের কাজ চলবে।
স্বাস্থ্যকর্মীরা যাঁদের কোয়ার্যান্টাইনে থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন তাঁদের নির্দেশ অনুসারে নির্ধারিত সময়কালের জন্য নিয়ম মেনে ঘর-বন্দী বা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টিনের থাকতে হবে। না মানলে আইপিসি, 1860 এর ধারা 188 এর অধীনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যারা ১৫.০২.২০২০ এর পরে ভারতে এসেছেন, তাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের জারি করা প্রোটোকল মেনে বন্দীত্বের মেয়াদ শেষ হলে ও পরীক্ষায় কোভিড -19 সংক্রমণমুক্ত প্রমাণ হওয়ার পরে কোয়ারান্টাইন থেকে ছুটি দেওয়া হবে।
লকডাউনের নির্দেশিকা বলবত করার নির্দেশ এবং প্রয়োজনে দন্ডবিধান:
সমস্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের কঠোরভাবে জাতীয় কোভিড-19 নির্দেশিকা প্রয়োগ করতে বলা হয়েছে। না মানলে সংযোজনী ৩ অনুসারে দণ্ডবিধান করা হবে। কাজ শুরুর আগে সব সংস্থাকেই সংযোজনী ২ তে বলা নিয়ম মেনে কাজ করার ব্যবস্থা করতে হবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রতি এলাকার জন্য একজন করে ইন্সিডেন্ট কম্যান্ডার নিয়োগ করবেন – তাঁর অধীনে সবাই কাজ করবেন। তিনি প্রয়োজনীয় যাতায়াতের পাস দেবেন। আর স্বাস্থ্য পরিকাঠামো সম্প্রসারণের জন্য কর্মী, সামগ্রী ও অন্যান্য যা কিছু লাগে তার জোগাড়ের কাজ যাতে বিনা বাধায় এগোতে পারে সেটাও দেখা তাঁর একান্ত দায়িত্ব।
সংযোজনী – ১
COVlD-19 মোকাবিলার জন্য জাতীয় নির্দেশিকা
বিপর্যয় মোকাবিলা আইন 2005 এর বিধি অনুসারে জরিমানা ও শাস্তিদানের মাধ্যমে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জাতীয় নির্দেশিকা বলবত করবেন।
পাবলিক প্লেস বা জনসমাগমস্থল
১)সমস্ত জনসমাগমস্থলে, কর্মস্থলে ফেসকভার পরা বাধ্যতামূলক।
২) জনসমাগমস্থলে, কর্মস্থলে এবং পরিবহণের দায়িত্বে থাকা সমস্ত ব্যক্তির স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রনালয়ের জারি করা নির্দেশিকা অনুসারে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা নিশ্চিত করা কর্তব্য।
৩) কোনও সংস্থা বা পাবলিক প্লেসের কোন ব্যবস্থাপক ৫ বা ততোধিক লোকের জমায়েত করতে পারবেন না।
৪) বিবাহ বা শেষকৃত্যের জমায়েত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ন্ত্রণ করবেন।
৫) পাবলিক স্পেসে থুথু ফেলা জরিমানাযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচ্য হবে।
৬) মদ, গুটখা, তামাক বিক্রির উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা থাকা উচিত এবং থুতু ফেলা একদম নিষিদ্ধ।
কর্মস্থল
৭) সমস্ত কাজের জায়গাগুলিতে তাপমাত্রা পরীক্ষার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং সুবিধাজনক জায়গায় স্যানিটাইজার সরবরাহ করতে হবে।
৮) সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা সুনিশ্চিত করতে কাজের জায়গাতে শিফটের মধ্যে এক ঘন্টার তফাৎ রাখতে হবে থাকবে এবং কর্মীদের মধ্যাহ্নভোজ বিরতি সময়ের ব্যবধানে দিতে হবে।
৯) ৬৫ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তি, অন্য অসুস্থতা-যুক্ত ব্যক্তি এবং যাঁদের ৫ বছরের কম বয়সী বাচ্চা আছে, তাঁদের
বাড়ি থেকে কাজ করতে উত্সাহ দিলে ভালো।
১০) সরকারী ও বেসরকারী কর্মীদের আরোগ্য সেতু ব্যবহার করতে উত্সাহিত করতে হবে।
১১) সকল সংস্থা শিফটের মাঝখানে কাজের জায়গা জীবানুমুক্ত করবে।
১২) বড় সভা বন্ধ করতে হবে।
উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলি
১৩) সাধারণ তলগুলির ঘন ঘন নির্জীবাণুকরণ এবং বাধ্যতামূলক হাত ধোয়ার নির্দেশ দিতে হবে।
১৪) দুটি শিফটের মধ্যে কোন ওভারল্যাপ থাকা চলবে না ও কর্মীদের মধ্যাহ্নভোজের বিরতির সময় আগুপিছু করে দিতে হবে যাতে তারা ক্যন্টিনে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে পারে।
১৫) ভাল স্বাস্থ্যবিধি বাবদে বার বার সবাইকে সচেতন করতে হবে আর প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
সংযোজনী - ২
অফিস, কর্মক্ষেত্র, কারখানা এবং বিভিন্ন সংস্থায় সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার জন্য স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি:
১) প্রবেশদরজা, ক্যাফেটেরিয়া ও ক্যান্টিন, সরঞ্জাম ও লিফট, ওয়াশরুম, টয়লেট, সিঙ্ক, জলের প্রাপ্তিস্থান, দেওয়াল সহ সকল তল, মিটিং রুম, কনফারেন্স হল / খোলা অঞ্চল / বারান্দা ইত্যাদি জীবানুনাশক ব্যবহার করে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
২) গণপরিবহন ব্যবস্থার উপর নির্ভর না করে, বাইরে থেকে আসা শ্রমিকদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ পরিবহনের ব্যবস্থা করতে হবে। এই বাহনগুলি তাঁদের যাত্রীক্ষমতার ৩০-৪০% বহন করতে পারবে।
৩) চত্বরে ঢোকা সকল যানবাহন ও যন্ত্রপাতি স্প্রে করে জীবানুমুক্ত করা বাধ্যতামুলক।
৪) কাজের জায়গায় ঢোকা এবং বেরনোর সময় প্রত্যেকের বাধ্যতামূলক তাপ-পরীক্ষা করতে হবে।
৫) প্রত্যেক কর্মীর স্বাস্থ্য বীমা বাধ্যতামূলক ।
৬) সব সাধারণ জায়গায় আর ঢোকা-বেরনোর জায়গাগুলোতে না ছুঁয়ে ব্যবহার করা যায় এমন হ্যান্ড ওয়াশ ও স্যানিটাইজারের পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যবস্থা করতে হবে।
৭) কাজের জায়গায় শিফটগুলির মধ্যে অন্ততঃ এক ঘণ্টার ব্যবধান থাকতে হবে। কর্মীদের মধ্যাহ্নভোজের বিরতির সময় আগুপিছু করে দিতে হবে যাতে তারা সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে পারে।
৮) ১০ বা ততোধিক ব্যক্তির বিশাল সভাগুলি নিরুৎসাহিত করতে হবে। কাজের জায়গায়, জমায়েত, সভায় বা প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে অন্যদের থেকে কমপক্ষে ৬ ফুট দূরে থাকতে হবে।
৯) লিফটে বা হয়েস্টে একসঙ্গে আকারের উপর নির্ভর করে ২/৪ জনের বেশি উঠবে না।
১০) সিঁড়ি ব্যবহারকে উত্সাহিত করা উচিত।
১১) গুটকা, তামাক ইত্যাদির কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকতে হবে এবং থুথু ছেটান কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
১২) অপ্রয়োজনীয় দর্শনার্থীদের সাইট পরিভ্রমণের উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা থাকা উচিত।
১৩) কোভিড-১৯ রোগীর চিকিত্সার জন্য অনুমতি পাওয়া কাছাকাছি হাসপাতাল / ক্লিনিক চিহ্নিত করতে হবে আর সেই তালিকাটি সর্বদা কাজের জায়গায় পাওয়া যেতে হবে।
সংযোজনী - ৩
লকডাউন ব্যবস্থার লঙ্ঘনের জন্য অপরাধ এবং দণ্ড
বিপর্যয় মোকাবিলা আইন ২০০৫ এর ৫১-৬০ ধারা
৫১) বাধা ইত্যাদির শাস্তি — যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়াই (ক) কেন্দ্রীয় সরকার বা রাজ্য সরকারের কোনও কর্তা বা কর্মচারী, বা জাতীয় / রাজ্য /জেলা কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত কোনও ব্যক্তিকে এই আইনের অধীনে কার্যাদি সম্পাদনে বাধা দিলে অথবা (খ) এই আইনের অধীনে কেন্দ্র / রাজ্য সরকার বা জাতীয় / রাজ্য নির্বাহী কমিটি বা জেলা কর্তৃপক্ষের দেওয়া বা তাঁদের বকলমে থেকে দেওয়া কোনও নির্দেশনা মেনে চলতে অস্বীকার করলে, দোষী সাব্যস্ত হলে এক বছরের কারাদন্ড বা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দন্ডিত করা যায়। যদি এইরকম বাধাদানের ফলে বা নির্দেশনা মেনে চলতে অস্বীকার করার ফলে প্রাণহানির আশঙ্কা দেখা দেয় বা বিপদের সম্ভাবনা বাড়ায়, তবে কারাদন্ডের মেয়াদ দুই বছর পর্যন্তও বাড়তে পারে।
৫২) মিথ্যা দাবির জন্য শাস্তি — কেউ যদি জেনেবুঝে মিথ্যে কথা বলে দুর্যোগের পরে কেন্দ্রীয় বা রাজ্যের কোনও আধিকারিকের থেকে কোনও ত্রাণ, সহায়তা, মেরামত, পুনর্গঠন বা অন্যান্য সুবিধা নেয়, দোষী সাব্যস্ত হলে দুই বছরের কারাদন্ড এবং জরিমানাও হতে পারে।
৫৩) অর্থ বা উপকরণ ইত্যাদির অপব্যবহারের শাস্তি — বিপর্যয়ের পরে ত্রাণের জন্য নির্দিষ্ট অর্থ বা উপকরণ ইত্যাদি কারোর হেফাজতে থাকলে, সে যদি তার অপব্যবহার করে বা নিজে হাতিয়ে নেয় বা টাকা বা দ্রব্যাদি গোটাটাই বা অংশতঃ হাপিস করে দেয় বা ইচ্ছে করে অন্য কাউকে তা করতে বাধ্য করে, তাহলে দোষী সাব্যস্ত হলে তার সর্বাধিক দু বছরের কারাদন্ড ও জরিমানা হতে পারে।
৫৪) মিথ্যে সতর্কবার্তার জন্য শাস্তি — কেউ যদি বিপর্যয় বা তার তীব্রতা নিয়ে কোন মিথ্যে সর্তকীকরণ তৈরি করে বা প্রচার করে, যার থেকে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়, দোষী সাব্যস্ত হলে, তার এক বছর অবধি কারাদণ্ড বা জরিমানার হতে পারে।
৫৫) সরকারী দপ্তরের করা অপরাধ — বিভাগের প্রধান অপরাধ হিসাবে দোষী হিসাবে গণ্য হবে এবং সর্বাধিক এক বছর অবধি কারাদন্ড বা জরিমানা সহ কারাদন্ড হতে পারে। (১) এই আইনের অধীনে সরকারী বিভাগের করা কোন অপরাধের জন্য সেই বিভাগের প্রধানকে দোষী বলে গণ্য করা হবে এবং যদি না তিনি প্রমাণ করতে পারেন যে অপরাধটি তাঁর অজ্ঞাতসারে করা হয়েছিল বা তিনি অপরাধমুলক কাজটি বন্ধ করার জন্য যথেষ্ট চেষ্টা করেছিলেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা যেতে পারে এবং সেই অনুযায়ী শাস্তিও দেওয়া যেতে পারে। (২) উপ-ধারা (১) এর বক্তব্যের উপরেও, সরকারী দফতরের দ্বারা বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের অধীনে কোন অপরাধ ঘটলে এবং যদি প্রমাণিত হয় যে এই অপরাধটি বিভাগীয় প্রধান ছাড়াও অন্য কোন আধিকারিকের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্মতিতে বা পূর্ণ বা অংশত অবহেলার কারণে ঘটেছে, তাহলে সেই আধিকারিককেও সেই অপরাধের জন্য দোষী বলে গণ্য করা হবে এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং তদনুসারে শাস্তি দেওয়া হবে।
৫৬) কোন আধিকারিক কর্তব্য সম্পাদনে ব্যর্থ হলে বা এই আইনের বিধানসমূহ লঙ্ঘনে তার পরোক্ষ সম্মতি থাকলে — কোনও আধিকারিক, যার উপরে এই আইনের জেরে কোন কর্তব্যভার ন্যস্ত হয়েছে ও যিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের থেকে লিখিত অনুমতি ছাড়াই বা অন্য আইনানুগ কারণ ছাড়াই নিজের দায়িত্ব পালন না করেন বা করতে অস্বীকার করেন বা নিজেকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেন, শাস্তি হিসেবে তাঁকে এক বছর অবধি কারাদন্ড দেওয়া যাবে বা জরিমানা আদায় করা যাবে।
৫৭) অধিগ্রহণ বিষয়ক কোন আদেশনামার লঙ্ঘনের শাস্তি — ৬৫ নং ধারার অধীনে বলবত করা কোন আদেশ কেউ লঙ্ঘন করলে, তার শাস্তি এক বছর অবধি কারাবাস বা জরিমানা বা দুইই।
৫৮) সংস্থার করা অপরাধ — (1) কোন সংস্থা বা কর্পোরেট বডি যদি এই আইনের অধীনে কোন অপরাধ করে, তাহলে সেই অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সময়ে, যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন এবং কোম্পানির ব্যবসা চালনার জন্য দায়বদ্ধ ছিলেন এমন প্রত্যেকে এবং সংস্থাটি সবাই দোষী বলে গণ্য হবে এবং সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা করা হবে এবং তদনুযায়ী শাস্তি পেতে হবে: তবে যদি কেউ প্রমাণ করতে পারেন যে এই অপরাধটি তার অজান্তেই সংঘটিত হয়েছিল বা তিনি এইরকম অপরাধমূলক কাজ বন্ধ করতে যথাযথ চেষ্টা করেছিলেন, তাহলে তাঁকে ছাড় দেওয়া হবে। (২) পরন্তু সংস্থার কোন ডিরেক্টর, ম্যানেজার, সেক্রেটারি বা অন্য আধিকারিকের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্মতিতে বা পূর্ণ বা আংশিক অবহেলার কারণে অপরাধটি ঘটলে সেই ব্যক্তিরাও সেই অপরাধের জন্য দোষী বলে গণ্য হবেন এবং তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং সেই অনুযায়ী শাস্তি পাবেন।
ব্যাখ্যা — এই বিভাগের ব্যাখ্যার জন্য - (ক) "সংস্থা" মানে একটি কর্পোরেট বডি - কোন ফার্ম বা ব্যক্তিদের সমিতি এর অন্তর্ভুক্ত এবং (খ)ফার্মের প্রেক্ষিতে, "পরিচালক" অর্থ ফার্মের অংশীদার।
৫৯) মামলা করার জন্য প্রসিকিউশনের জন্য পূর্ববর্তী অনুমোদন — ৫৫ আর ৫৬ ধারায় শাস্তিযোগ্য কোন অপরাধের জন্য মামলা শুরু করার আগে কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের ( যেখানে যেমন প্রযোজ্য ) বা তাঁদের সাধারণ বা বিশেষ আদেশবলে অধিকারপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
৬০) অপরাধের বিচারাধিকার – এই আইনের অধীনে কোন অপরাধ কোন কোর্ট বিবেচনা করবেন না যদি না সেই নালিশ (ক) জাতীয় বা রাজ্য কর্তৃপক্ষ, কেন্দ্রীয়/ রাজ্য সরকার বা জেলা /অন্য কোন কর্তৃপক্ষ বা সরকারী অধিকারপ্রাপ্ত কোন আধিকারিক করেন বা (খ) কোন ব্যক্তি যিনি জাতীয় বা রাজ্য কর্তৃপক্ষ, কেন্দ্রীয়/ রাজ্য সরকার বা জেলা /অন্য কোন কর্তৃপক্ষ বা সরকারী অধিকারপ্রাপ্ত কোন আধিকারিককে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে অন্ততঃ তিরিশ দিন আগে অপরাধটির বিষয়ে জানান এবং তাঁর নালিশ করার ইচ্ছার কথাও জানান।
ভারতীয় দন্ডবিধি আইন ১৮৬০ এর ১৮৮ অনুচ্ছেদ
১৮৮ - সরকারী কর্মচারী কর্তৃক ঘোষণা করা আদেশ না মানা — যে কোনও সরকারী কর্মচারীর আইনানুগভাবে ঘোষণা করা আদেশের বলে কাউকে কোনো বিশেষ কাজ করতে বারণ করা হলে বা তার মালিকানাধীন বা পরিচালনাধীন কোন সম্পত্তির বাবদে তাঁকে কোন বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হলে, তিনি যদি সেই আদেশ অমান্য করেন এবং সেই অবাধ্যতার কারণে আইনানুগভাবে নিযুক্ত যে কোনও ব্যক্তির কাজে বাধা, তাঁকে বিরক্ত করা বা আহত করা হয় অথবা বাধা দেওয়া, বিরক্ত বা আহত করার মত কোনো ঝুঁকির সম্ভাবনা তৈরি হয়, তাহলে তার একমাস অবধি সাধারণ কারাদণ্ড বা ২০০ টাকা অবধি জরিমানা বা দুইই হতে পারে। আর এই অবাধ্যতা যদি মানুষের জীবন, স্বাস্থ্য বা সুরক্ষার জন্য বিপদ ডেকে আনে বা দাঙ্গা বা বিপর্যয় সৃষ্টি করে বা সেরকম সম্ভাবনা তৈরি করে তাহলে কারাদন্ডের মেয়াদ বেড়ে ছয় মাস অবধি হতে পারে বা জরিমানার পরিমাণও বেড়ে এক হাজার টাকা অবধি হতে পারে বা কারাদন্ড ও জরিমানা দুইই হতে পারে।
ব্যাখ্যা — এমন হওয়ার দরকার নেই যে অপরাধী ইচ্ছে করে ক্ষতি করছেন বা এটা বুঝে করছেন যে তার অবাধ্যতার ফলে কোন ক্ষতি হতে পারে। একটা আদেশ তিনি জেনেবুঝে অমান্য করেছেন এটাই যথেষ্ট এবং তার অবাধ্যতার ফলে ক্ষতি হল বা ক্ষতির সম্ভাবনা তৈরি হলেই হল।
উদাহরণ দিয়ে বলতে গেলে, কোন অধিকারপ্রাপ্ত সরকারী কর্মী আইনানুগভাবে একটি আদেশ দিয়েছেন যে একটি নির্দিষ্ট রাস্তায় একটি ধর্মীয় মিছিল যাবে না। ‘অ’ জেনেশুনে আদেশ অমান্য করে এবং এর ফলে দাঙ্গার আশঙ্কা দেখা দেয়। ‘অ’ এই বিভাগের সংজ্ঞা অনুসারে অপরাধ করল।