ঋভু ,দুজন মাসিমনি তোকে যে গল্প লিখতে বলেছিলেন লিখলি নাতো!
মা আমি তো লিখলাম, তুমি তো বললে ছোট কুট্টিরাও অনেক ভালো লেখে।
তাছাড়া তুমি যে বললে আমার যখন স্পেলিং দেখলে লোক জখম হয়ে যাবে।
আচ্ছা ঠিকাছে, তোকে বানাতে হবে না, তুই তোর জামশেদপুরের ট্রিপটা মুখে বলে যা আমি লিখে নেই।
ঠিকাছে।
(এবার ছেলে শুয়ে, গড়িয়ে ,উল্টে ,পাল্টে বলে যেতে লাগলো আর মা লিখে যেতে লাগলো।)
জামশেদপুর ট্রিপ:
আমি যখন ক্লাস ফোরে ছিলাম তখন আমি হস্টেলে থাকতাম।একদিন আমি শুনলাম যে আমাদের স্কুল থেকে জামশেদপুর যাওয়া হবে।তো, যেদিন যাওয়া হবে সেদিন আমরা সকাল চারটেতে উঠে জামা কাপড় প্যাক করে বাসে উঠলাম।স্কুল বাসে করে একঘন্টা পরে আমরা স্টেশনে পৌছালাম।সেখানে পৌছে নেমে আমরা কিছু খাবার খেলাম।তারপর আমাদের যখন ট্রেন এসে গেলো তখন আমরা রওনা দিলাম।তারপর আমরা জামশেদপুর পৌছালাম।জামশেদপুর খুব গরমের জায়গা।এবার আমাদের বাস আসলো।আমরা বাসে চড়ে আমাদের ক্যাম্পিং এরিয়াতে পৌছালাম।সেখানে কিছুক্ষন বসার পর সেখানকার চেয়ারম্যান এসে আমাদের ক্যাম্পের কিছু নিয়ম বললেন।তারপর আমরা আমাদের টেন্ট বানাতে শুরু করলাম।টেন্ট বানানোর পর আমরা বসে খেলাম।তখন একটা ছোট টুইষ্টার দেখলাম।সেটা আমাদের একটা স্যারের টেন্টের কাছে এসে টেন্টটা উল্টে দিলো আর হঠাৎ করে সেই টুইষ্টার উধাও হয়ে গেলো।সেদিন রাতে আমরা খাচ্ছিলাম মাছ,ভাত আর ডাল।তারপর যখন রাত্রে শোওয়ার সময় হয়ে এসেছে তখন আমাদের যে স্লিপিং ব্যাগ দেওয়া হয়েছিলো তাতে চাপাচাপি করে শুলাম। রাত্রির এগারোটা হবার পর ওখানে ভীষন ঠান্ডা হয়ে গেছিলো।তো আমি একটু বেরিয়ে টয়লেট করে আবার আমার লেদার স্লিপিং ব্যাগে ঢুকে শুয়ে পড়লাম।
পরেরদিন সকাল পাঁচটায় উঠে আমাদের কফি দেওয়া হলো।তারপর আমরা এক্সেরসাইজ শুরু করলাম।তারপর ব্রেকফাষ্ট করলাম।তারপর আমাদের দেখিয়ে দেওয়া হলো কোথায় টয়লেট বা পটি করতে হবে।সেগুলো ছিলো ঝোপের কাছে।তাই যতদিন আমি ছিলাম ততদিন আমি পটি করিনি।তারপর দুপুর হয়ে আসলো,আমাদের ট্রেকিং শুরু হলো।আমাদের দেখালো কিরম ভাবে পাহাড়ে দেখেশুনে চলতে হয়।তারপর রাত হয়ে আসলো,তখন আমাদের রাত্রিরের খাবার ছিলো ফুলকপির ঝোল,রুটি ও চিকেন কোপ্তা, ওয়াক! খাবার পর আমরা একটা নাইট ওয়াকে গেলাম।নাইট ওয়াকে আমরা প্রায় চার কিমি হাঁটলাম।মাঝখানে থেমে ক্যাম্পফায়ার হলো।তারপর আমরা একটু ভুতের গল্প করে ঘুমোতে চলে গেলাম।
পরের দিন আমরা সকাল সকাল উঠে অন্য একটা জায়গায় ক্যাম্পিং করতে গেলাম যেটা জামশেদপুর থেকে একটু দুরে একটা আইল্যান্ড ছিলো, যেটা ছিলো রিভারের মাঝখানে।কিন্তু ঐ আইল্যান্ডটার একটা রাস্তা শুকিয়ে গেছিলো বলে আমাদের নৌকাতে চড়তে হলো না।শুধু আমাদের লাগেজ নৌকাতে পাঠিয়ে দেওয়া হলো।আর আমরা সেই শুকিয়ে যাওয়া পথ দিয়ে চলে গেলাম।তারপর আমাদের নিজেদের আবার টেন্ট বানাতে হলো। কিন্তু এবারে টেন্টটা হাল্কা পোল্কা জিনিসের, যেমন মোটা প্ল্যাস্টিক দিয়ে উপরটা কভার করে আর ঘাসের উপরে শোলা টোলা পেতে আর কি।তারপর ওখানে রাত্রিরে আমাদের খাবার ছিলো ভাত,চিংড়িমাছ ভাজা,ডাল ও আলুভাজা।ইয়াম! খাবার খেয়ে আমরা শুয়ে পড়লাম।
পরের দিন উঠে আমরা আমাদের সুইমিং স্যুট পরে লাইফ জ্যাকেট নিয়ে নৌকা নিয়ে ঐ নদীতে নৌকা চালালাম।আমাদের নৌকা নদীর মাঝখানে উল্টে গেলো।তো, আমরা কোনক্রমে নৌকাটাকে সোজা করে আবার উঠলাম।ডাঙায় এসে সিলিন্ডার,বাঁশ ও দড়ি দিয়ে আমাদের ভেলা বানাতে শেখানো হলো।তারপর আমাদের নিজেদের ভেলা বানালাম।ভেলাটা আমরা যখন ডাঙা থেকে একটু দুর গেছি তখন আদ্ধেক হয়ে গেলো।তারপর আমাদের ভেলা নষ্ট হয়ে গেলো।তারপর আমরা ডাঙায় ফিরে একটু রেষ্ট নিলাম।তারপর আমাদের বাস এসে গেলো, আমরা স্টেশন থেকে ট্রেনে রওনা হয়ে ফিরে আসলাম।
শেষ।
তমাল
বয়স: বারো বছর
সেকিরে? আরো যেন কিসব করেছিলিস না?
হ্যাঁ , কিন্তু এখন ঘুম্পাচ্ছে তাই এখানেই শেষ।
বলেই উল্টে পাশবালিশ জাপ্টে ঘুমের দেশে ...........