এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • নারীদিবসঃ ২। ‘ঘরকন্যা’দের বেতনক্রম

    তির্যক লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ১০ এপ্রিল ২০১৫ | ৮৭৬০ বার পঠিত
  • হ্যাঁ, নারীকে নিয়েই কথা আসে সারাবছর, অজস্র কথা। জীবন এফোঁড়-ওফোঁড় করে চলে যায় নানারঙের কথা। সেইসব কথার পিঠে চড়ে আসে ভাবনারা। প্রশ্নেরা। ঘুরে বেড়ায় আলগোছে। নারীদিবসের আশেপাশে এইসব ভাবনাগুলো জমাট বাঁধে, মাথায় চড়ে বসে।  আমাদের তাগাদা দেয় পুরোনো পড়া ঝালিয়ে নিতে। আর সেই পুরোনো পড়া পুরোনো ভাবনা নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতেই কোথাও কোথাও নতুন কথাও জুড়ে যায় জায়গামত। এবারের পুরোনো পড়া ঝালানোর সময়েই পড়লাম স্বাতী ভট্টাচার্যের ‘ঘরোয়া’ (আনন্দবাজার পত্রিকা, ৮ই মার্চ)। খোদ নারীদিবসে দাঁড়িয়ে একজন নারীই যখন মেয়েদের ‘গুছিয়ে সংসার করার মোহে’র দিকে আঙুল তোলেন, তখন একটু ধাক্কা খেতে হয় বইকি, মানে এইটা ঠিক পুরোনো পড়ার সিলেবাসের মধ্যে ছিল না তো বরং (এই সাংবাদিকের লেখা) যেসব পুরোনো পড়া মনে পড়ে যায়, সেখানে উনিই সওয়াল করে এসেছেন মেয়েদের ঘরোয়া কাজের মূল্যায়নের পক্ষে; সারামাসের রান্নার লোকের মাইনের সঙ্গে বা বারো ঘন্টার আয়ার মাইনের সঙ্গে ড্রাইভার বা মিস্ত্রীর মাইনের একেবারে সোজাসুজি তুলনা করেছেন। তাহলে কি দুটোই সত্যি ! এইখান থেকে শুরু হয়ে যায় আমাদের লেখাপড়াশোনা যার সরল অর্থ হল আজকের পড়ার মধ্যে নতুন ও পুরোনো সবরকমের কথাই থাকবে, নারী ও আনাড়ি সকলের কথাই নামে ও বেনামে থাকবে।


     


    মেয়েলী ও ঘরোয়া


    তবে মেয়েদের যাবতীয় ‘মেয়েলী’ কাজকারবারের মূল্যায়নের কথা উঠলে প্রথমে একতরফা চাট্টি কথা শুনতেই হবে। কারণ সোজা কথাটা হল, যুগ যুগ ধরে যেসব কাজ মেয়েরাই পেরে এসেছে আর করে এসেছে সংসারে সেগুলোকে যথেষ্ট মূল্যবান বলে কেউ ভাবেন নি আর তার কোনও স্বীকৃতিও সেভাবে দেননি। বাড়ির পুরুষটি বাইরে কাজ করেন, তাঁর কাজটা গুরুত্বপূর্ণ, তাঁর বিশ্রাম এমনকি তাঁর বিনোদনটিও গুরুত্বপুর্ণ। কিন্তু বাড়ির মহিলাটিকে ‘হাউসওয়াইফ’ থেকে ‘হোমমেকার’ যে নামই দিন না কেন তাঁর কাজটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেছেন, আর কতটুকু স্বীকৃতি দিয়েছেন, সে প্রশ্নটা এবার নিজেকেই করুন। সেটা কাপড়ে সূক্ষ্ম ফোঁড় তুলে নকশা তোলাই হোক কি রোজকার থোড়-বড়ি-খাড়ার মধ্যে থেকেই বিচিত্র পদের রান্না হোক, বা বড়ি-আচার-উলবোনা-আলপনা থেকে ঘরদোর পরিপাটি সাজিয়ে রাখা্র নিপুণ ঘরকন্না হোক। ভেবে দেখেননি এই কাজগুলোও নেহাৎই প্রয়োজনভিত্তিক নয়, এদেরও কিছু নান্দনিক মূল্য আছে, এদের পেছনেও কিছু চিন্তা-ভাবনা-সৃজনীশক্তি খরচা হয়, যা সকলের ক্ষেত্রে ঠিক একইরকম নয়। অর্থাৎ ওই যে সর্ষেবাটা-মোচাকাটা থেকে শুরু করে সুগোল ধপধপে লুচি সমেত যা যা আপনি ‘আহা মায়ের হাতে কি চমৎকার হত !’ ভেবে এখন আপ্লুত হয়ে পড়েন, আর ভাবেন ঠিক মায়ের মত কেউ পারে না, ভেবে দেখবেন যখন নিয়মিত সেগুলো পেয়েছেন, তখন সেগু্লো কতটা দামী ভেবেছিলেন, আর তার জন্য  মাকেই বা তখন কতটুকু ধন্যবাদ দিয়েছিলেন ? আর আপনার ঘরে যে মহিলা ‘মায়ের মত’ পারেন না, তিনি যা যা পারেন সেটাই বা এখন কতটুকু মনো্যোগ দিয়ে লক্ষ্য করেন ? তিনি সারাদিন বাইরে না গিয়ে ঠিক কি কি করেন, বিশ্রাম পেলেন কিনা বা ইচ্ছে থাকলেও কি কি করে উঠতে পারলেন না, সে খবরই বা কতটা রেখেছেন ? খেয়াল করলে দেখবেন দুদিনের জায়গায় তিনদিন একঘেয়ে রান্না খেতে হলে বা ঘরদোর অপরিস্কার বা অগোছালো থাকলে আপনারও ভালো লাগছে না, লাগার কথাও নয়। তখন আপনিই বলে উঠছেন (উচ্চগ্রামে কিম্বা মনে মনে) ‘সারাদিন কি যে করে’। কিন্তু যখন সব কিছু ঠিক ঠিক চলে তখনও মনে করেন ‘সারাদিন তো ঘরেই থাকে...’ অর্থাৎ ঘরের কাজটা ঠিক যেন কোনও কাজই নয়। আপত্তিটা এখানেই। 


    না, এই আলোচনায় কর্মরতা মেয়েদের কথা এখনই আনছি না। আর মনে রাখতে বলছি যে এই লেখা একটা বিস্তৃত মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীর কথা মাথায় রেখে লেখা যেখানে মেয়েরা মূলতঃ ঘরের কাজ করেন এবং সব ঘরের সব কাজই করেন। তাই যে সব উচ্চশিক্ষিত নেটিজেন এই লেখা পড়ছেন আশা করব তাঁরা নিজের পরিবারের সঙ্গে মিল না পেলেই এই সব কিছুকে যেন কষ্টকল্পনা ভেবে বসবেন না। 


    যে কথা বলছিলাম, এই আলোচনা মেয়েদের ওপর সংসারের চাপ নিয়ে নয়, চাপ পুরুষের ওপরও কিছু কম নয়। শ্রম বন্টনের নিয়ম মেয়েরা (বা যিনি ঘরে থাকেন) তিনি ঘরের কাজ করবেন, এর মধ্যে অন্যায় কিছু নেই। কিন্তু সেই কাজকে এবং সেই সম্পর্কিত দক্ষতাকে যথেষ্ট গুরুত্ব না দেওয়াটা যে এক রকমের অজ্ঞতা, সেটাই এখানে বলবার কথা। মেয়েরা যে স্রেফ ‘হৃদয়তাপের ভাপে ভরা ফানুস’ তাদের হি-হি হাসি কিম্বা চোখের জল, সকলই নেহাৎ অকারণ, তাতে বিশেষ মনোযোগ না দিলেও চলে, এই ধারণা বংশানুক্রমে চারিয়ে গেছে সমাজে। মেয়েদের শাড়ি-গয়নার আলোচনাই হোক বা রান্নাবান্না বা শাশুড়ি-ননদের নিন্দে, সবই শুধুমাত্র ‘মেয়েলী’ বলেই যেন তা ছেলেদের গাড়ির ‘মডেল’(উভয় অর্থেই) বা বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে আলোচনা কি অফিসের বসের / সহকর্মীদের নিন্দেমন্দ থেকে ইতরগোত্রীয়। অথচ যে যে জগতে থাকে সে তো সেই জগতের কথাই আলোচনা করবে, কোন জগতটাই তো মিথ্যে নয়, অর্থহীনও নয়, এর মধ্যে উচ্চ-নীচ ভেদাভেদ আসছে কোথা থেকে ? সেসব কেউ ভেবে দেখে না। এমনকি মেয়েরাও না।


     


    বাইরে আসা


    হ্যাঁ, ভেবেচিন্তেই বললাম। মেয়েলী গুণপনাকে এই যে পাইকারী হারে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা, এই অবহেলা পেতে পেতেই একটা সময়ে মেয়েরাও নিজেদের ‘মেয়েলী গুণ’গুলোকে (এবং মেয়েলী কাজগুলোকে) মূল্যহীন ভাবতে শুরু করেছে। ‘নিজের পায়ে দাঁড়ানো’র কথা ভাবতে শুরু করেছে যার একমাত্র অর্থ হল বাইরে বেরিয়ে ‘পুরুষের মত’ উপার্জন করা। আজ যে মেয়েরা চল্লিশ-পঁয়তাল্লিশ-পঞ্চাশের কোটায়, তারা যে একদিন সংসারের প্রয়োজনে নয়, নিজের প্রয়োজনেই দলে দলে বেরিয়ে এসেছিল, তার একটা কারণ কিন্তু এই যে তাদের শিশুকালে অনেকেরই মায়েরা ভেবেছেন তাঁর মেয়ে যেন তাঁর জীবন না পায়। অর্থাৎ শুধুমাত্র সংসারের ‘থ্যাঙ্কলেস জব’-এই মেয়েরা আটকে থাকুক সেটা মেয়েরাই (মানে মায়েরাই) চাননি, চেয়েছেন যে কাজ অর্থমূল্যে বিচার হয় সেইরকম কিছু করতে। যার ফল হল আজকের কর্মরতা মহিলা প্রজন্ম, যাঁরা সংসার ও চাকরী মোটামুটি নিপুণভাবেই সামলে নেন কিন্তু হয়তো ওই তথাকথিত ‘মেয়েলী’ কাজগুলোর জন্য খুববেশী সময় দিতে পারেন না। একটা সময় অবধি যেটা অলিখিত নিয়ম ছিল, অর্থাৎ মেয়েরা শুধু ঘরের কাজ করবে, সন্তানের দেখাশোনা করবে, সেটা নিঃসন্দেহে খুব খারাপ ছিল। সেই নিয়ম চুলোয় গেছে, মেয়েরা স্বাধীনভাবে কাজকর্ম করছে, নিজের বিদ্যেবুদ্ধির সদব্যবহার করছে, এর কোনও বিকল্প হয় না। কিন্তু এইখানে এসে একটা প্রশ্ন খুব তীব্র হয়ে ওঠে, স্বাধীন হতে গেলে, নিজের পায়ে দাঁড়াতে গেলে বাইরে এসেই কাজ করতে হবে কেন ? বাইরে কাজ করেন না যে মহিলা, তিনি কি নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে নেই ? যাঁর নিরন্তর সেবা বা পরিষেবাটুকু বাদ দিয়ে তাঁর সংসার নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে না, তিনি বাইরে না বেরোনো অবধি নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছেন এমনটা ভাবতে পারেন না কেন ! তার মানে শুধু বাইরে বেরিয়ে উপার্জন না করা অবধি একজন নারী যথার্থ স্বাধীন হচ্ছেন না, তাঁর গুণাবলীর এমনকি মতামতেরও কোনও মূল্য থাকছে না, যদিচ তিনি গৃহকর্ম দ্বারা সংসারকে একরকম ধারণ করেই আছেন। এতদ্বারা গৃহকর্মের মূল্যের যে অবনমন হচ্ছে ব্যাপারটা কি সত্যিই ততটাই অর্থহীন ? দারুণ রান্না বা সেলাই করতে পারা, ঘর সাজাতে পারা, গান গাইতে পারা, এইসবের কি সত্যিই কোনও মূল্য নেই ! 


    হ্যাঁ, ততটাই অর্থহীন না হলেও ততটাই মূল্যহীন, যতক্ষণ না সেটা অর্থমূল্যে বিচার হচ্ছে। না হলে এত বছরে এত কিছু বদলে গেল কিন্তু কেউ শুধু সংসারের কাজ করাকে একটা পেশা হিসেবে দেখতে শিখল না কেন ? আর যিনি নিজে সংসারের উনকোটি কাজ করে চলেছেন, তিনিই বা কেন ‘আমি কিছু করি না’ জাতীয় হীনমন্যতায় ভোগেন ? কেনই কোন মহিলার স্বামী ঘরের কাজ করলে তিনি সেটা স্বীকার করতে লজ্জা পান ? আমি বেশ কয়েকজন মধ্যবিত্ত বাড়ির মহিলার কথা জানি, যাঁরা শুধু ‘নিজের হাতে রোজগার’ করার তাগিদে কেউ দিনের শেষে ব্লাউজে বোতাম পরাচ্ছেন, কেউ কোন কোম্পানীর প্রসাধন সামগ্রীর এজেন্সী নিয়েছেন, কেউ কোন ব্যাঙ্কের জনসংযোগ বাড়াবার জন্য ফোন করছেন। এই কোন কাজই তাঁদের বিশেষ পারদর্শীতার চর্চার জন্য নয়, ভালবেসে করা কাজ নয়, এই কাজ করে যা হাতে আসে তা সংসার খরচে বিশেষ সুবিধে ঘটাবার মত নয়, কিন্তু সেটা তার ‘নিজের রোজগার’। সেইটুকু রোজগারের সময় বার করার জন্য তাঁরা অতিরিক্ত পরিশ্রম করেন, স্বামী-ছেলেমেয়েদের কাছে হয়তো নানারকম কথাও শোনেন, কিন্তু তাঁরা জানেন এইটা ছেড়ে দিলে তাঁর নিজের উপার্জন কিছু থাকবে না। স্বামীরা হরদম বলবেন ‘তুমি কাজটা ছেড়ে দাও, ওইটুকু টাকা আমিই তোমায় দেব’, কিন্তু আসলে তা দেবেন না। কারণ গৃহশ্রম অ-মূল্য নয়, মূল্যহীন। সেইটুকু উপার্জন না করতে হলে সেই মহিলা হয়তো সেই সময়ে নিজের শখেই কিছু সেলাই করতেন, নতুন কিছু রান্না করতেন, ঘর সাজাতেন, বা গান নিয়ে বসতেন, কিন্তু সেই ‘মেয়েলী’ কাজের কোনও অর্থমূল্য নেই, তা তাঁকে স্বাভাবিক মুক্তি দিতে পারেনি, তাই তাকে বিসর্জন দিতে হল স্রেফ উপার্জনের চাপে। অথচ সেই মেয়েদের হাতের তৈরী বড়ি-আচার-নাড়ু-পিঠে বা হাতে সেলাই করা আসন-কাঁথা-সুজনিই আপনি কিনে আনছেন মেলা থেকে, কিঞ্চিৎ গর্বিত হয়েই দেখাচ্ছেন সবাইকে, তখন তা অবশ্যই ‘মূল্যবান’।


     


    আসল কথাটিঃ বেতনক্রম


    যাঁরা ভাবছেন এইবার ঝোলা থেকে বেড়াল বেরোল বলে, তাঁদের সবিনয়ে জানাই, এক্কেবারে ঠিক কথা ভেবেছেন, এই বেড়ালটিকে যথাস্থানে বের করার জন্যই অর্থাৎ গৃহশ্রমকে সবৈতনিক করে তোলার দাবীকে যুক্তিযুক্ত ও যাথাযথভাবে পেশ করার জন্যই এত গৌ্রচন্দ্রিকা। একান্ত বাসনাটি হল যে এই ব্যাপারটি নিয়ে একটু ‘সলিড’ চিন্তাভাবনা হোক। কারণ এই বিষয়টা নিয়ে মূলতঃ কথা ছোঁড়াছুঁড়িই শুনতে পাই, কিন্তু গঠনমূলক বাস্তবসম্মত কিছু প্রস্তাব অন্ততঃ আমার চোখে পড়েনি। বরং এই প্রশ্ন উঠলেই সবাই গেল গেল রব তোলেন যেন এই বিষয়টির পণ্যায়ন হলেই সামাজিক কাঠামো ভেঙ্গে পড়বে, গৃহকর্ম যে ভালোবাসার বিনিময়মূল্যে দেওয়া-নেওয়া হয় তা নষ্ট হবে। কিন্তু ভেবে দেখুন গায়ক, লেখক, বিজ্ঞানী, শিল্পী সবাই যদি পারিশ্রমিকের বিনিময়েই ভালোবাসার কাজ করে থাকেন তবে ঘরের কাজের ক্ষেত্রে আলাদা হবে কেন ? উপরন্তু গৃহকর্ম সবৈতনিক হলে মেয়েদের এই ‘নিজের পায়ে দাঁড়ানো’র জন্য বাইরে বেরোনোর দরকার কমবে আর সংসারের কাজে সময় দেওয়া বা ভালবাসাও বাড়বে বই কমবে না। তবে হ্যাঁ, কারণে অকারণে ‘রোজগার তো করতে হয় না, তাহলে বুঝতে!’ বলার কু-অভ্যেসটা আপনাকে ছাড়তে হবে। সত্যি বলতে কি ৫২ গুন ৭ দিন সংসারের ‘ভালবাসার দাবী’ যাঁরা মেটাচ্ছেন দিনের শেষে তাঁদের মুখে ‘ভূতের বেগার খাটার’ হতাশা তো কখনো না কখনো বেরিয়েই আসে, তাই মনকে চোখ না ঠেরে তাঁর প্রাপ্যটা স্বীকার করেই নিন না ! 


    তবে বেতনের পরিস্কার একটা কাঠামো থাকা দরকার। এটা স্পষ্ট হওয়া দরকার যে এটা তার বেতন, উপহার বা হাতখরচা নয় আর স্বামী এখানে দাতা নয়। যে ভাবে স্বামীর অবর্তমানে তার পেনশন স্ত্রীর কাছে আসে, ডিভোর্সী স্ত্রীর কাছে খোরপোষের টাকা আসে, তেমনিই যেকোন বিবাহিত পুরুষের বেতনের একটা অংশ তার স্ত্রীর কাছে আসবে যেটা ঘরের কাজ করার জন্য তাঁর বেতন, তাঁর নিজস্ব উপার্জন। তিনি যদি ঘরের কাজের জন্য পরিচারিকা রাখতে চান তো সেই বেতন থেকেই পরিচারিকার মাইনে হবে। (ফলে পুরুষটিও কিছুটা শান্তি পাবেন এই ভেবে যে তাঁর অর্থের সাশ্রয় হচ্ছে)। কিন্তু এছাড়া সেই টাকা মহিলাটি কিভাবে খরচ করবেন, কি কিনবেন, কাকে দেবেন সেটা তাঁর ব্যাপার। মহিলাটি চাকরী করলে এই বেতন বন্ধ হয়ে যাবে, সে ক্ষেত্রে ঘরের কাজ তাঁরা দুজনে ভাগ করে করবেন না ‘আউটসোর্স’ করবেন, সেটা নিজেরা ঠিক করবেন। তবে হিসেব মত ‘আউটসোর্সিং’-এর খরচ দুজানেরই দেওয়া উচিৎ। এই পদ্ধতি মেনে চললে যে মহিলা নিজের হাতে সব করেন এবং যিনি সব কাজের জন্যই কাজের লোকের ওপর নির্ভর করেন তাঁদের মধ্যে নিজস্ব উপার্জনের ভিত্তিতে একটা তফাৎ থাকবে, সেটাও যুক্তিযুক্ত। আর যদি কোন সংসারে মহিলাটি বাইরে কাজ করেন, এবং স্বামীটি ঘরে থাকেন, তবে একইভাবে তাঁর বেতনের একটা অংশ তাঁর স্বামীর কাছে বেতন হিসেবে আসবে, সেটাও কোনোভাবেই ‘বৌ-এর পয়সায় খাওয়া’ হিসেবে বিবেচ্য হবে না। 


    এই লেখায় ভুল বোঝার বহু সুযোগ আছে, সে সব মাথায় রেখেই লিখছি। এই লেখা থেকে কেউ যদি মেয়েদের চাকরী করার বিরোধি বা মেয়েদের গৃহকর্ম অভিমুখী হবার দরকারী জাতীয় কোন বার্তা পান তো সেটা নেহাৎই লেখকের বোঝানোর ত্রুটী। এমনকি এই লেখা সরাসরি নারী-পুরুষ মেরুকরণের কোনো ধারণাকেও প্রশ্রয় দিচ্ছে না। সাধারণভাবে মহিলারাই গৃহকর্ম করেন বলে এখানে বার বার মহিলাদের কথাই আসছে কিন্তু এর মূল উপজীব্য হল গৃহকর্ম। গৃহশ্রমকে একেবারেই গুরুত্বহীন ভাবার যে সামাজিক নির্মাণ সেটা এবং তার প্রভাব (মূলতঃ মেয়েদের ওপর) নিয়ে এই লেখায় একটু চিন্তাভাবনা করার চেষ্টা হয়েছে। যে মেয়েরা বাইরে কাজ করতে চান, নিজেকে প্রমাণ করতে চান করুন, কিন্তু যারা জমিয়ে সংসার করতে ভালবাসেন তাঁরাও যেন নিজের পায়ে না দাঁড়াবার হীনমন্যতা থেকে বেরোতে পারেন। আর সে জন্য তাঁদের নিজস্ব মেয়েলী গুণপনাগুলোকে বিসর্জন দিতে না হয়। 


     


    বিপদসঙ্কেত


    এই পদ্ধতি একেবারে ত্রুটিহীন এমন দাবী করা যায় না এবং সমস্ত পদ্ধতির মতই এখানেও কিছু ধোঁয়াশাপূর্ণ জায়াগা থাকবে, সেগুলোও একটু ভেবে রাখা ভালো। যেমন কোন কোন কাজ ঠিক গৃহশ্রমের মধ্যে পড়বে, সেটা ঠিক করাই সবচেয়ে কঠিন। যাঁরা ব্যাবসা করেন তাঁদের স্ত্রীরা বেতন কিভাবে পাবেন বা গৃহবধুটি যদি কাজের ক্ষেত্রে বাড়ির অন্যন্য সদস্যের (শাশুড়ি, ননদ)সাহায্য নেন তবে বেতন ভাগাভাগি কি ভাবে হবে সেটা নিয়েও পরিস্কার করে কিছু ঠিক করা মুস্কিল । তাছাড়া গৃহ-পরিষেবা ক্রয়যোগ্য হলে পুরুষটির দাবী হয়তো বেড়ে চলবে, উল্টোদিকে মেয়েদের ‘পারব না’ বলার সুযোগ কমে যাবে। এতে মেয়েদের ওপর চাপ কার্যতঃ বেড়ে যেতেও পারে। তবে আমার ধারণা একটা মানুষ কতটা ‘ডিম্যান্ডিং’ হবেন সেটা কিছুটা তাঁর চরিত্রগত। যিনি এমনিতে নিজের টুকিটাকি কাজ করে নেন, শুধুমাত্র স্ত্রী মাইনে পাচ্ছে বলেই নিজে জলটুকুও ঢেলে খাবেন না, এমনটা হবার কথা নয়। আর তেমন হলে সেই প্রতিবাদ মহিলাটিই করবেন, তিনি তো স্বাবলম্বী। 


    তবে ওই যে কথা বলা আছে ওই ‘ঘরোয়া’ প্রবন্ধে, যে মেয়েদের চুটিয়ে সংসার করার এক তীব্র আকর্ষণ, সেটা কিন্তু সমস্যার আর একটা দিক। ওই ‘ঘরোয়া’ বিষয়ে কথা বলেছিলাম অনেকের সঙ্গে, দেখা গেল পুরুষেরা অনেকেই রে-রে করে উঠলেও লেখাটার সঙ্গে মেয়েরা (ব্যক্তিগত অভজ্ঞতার মাপে) বিভিন্ন মাত্রায় একমত, মানে এই সংসারের ঝুল ঝাড়া-কাপড় কাচা-পর্দার সঙ্গে চাদরের রঙ মেলানো (কাজগুলো ঠিক এইই নয় সব সময়, বদলে যায় এক নারী থেকে অন্য নারীতে) এতে মনে প্রসারতা বাড়ুক না বাড়ুক মেয়েদের কাছে যে এগুলো খুব জরুরী এবং সেই জরুরী ভাবাটা মেয়েদের এগিয়ে যেতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়, সেটা মেয়েরা কেউ  সরাসরি অস্বীকার করতে পারছেন না। এই কাজগুলো চলনসই ঘরনের অর্থকরী হয়ে উঠলে মেয়েরা অনেকেই হয়তো বাইরের জগতের ‘চ্যালেঞ্জিং’ কাজে সেভাবে দলে দলে এগিয়ে নাও যেতে পারেন। আবার যেহেতু স্বামীর বেতন থেকে স্ত্রীর বেতন হচ্ছে, তাই স্ত্রীকে চাকরী করতে না দেওয়াটা স্বামীর অধিকারের মধ্যে পড়ে যেতে পারে (মানে স্বামী সেটা ভেবে ফেলতে পারেন !)। সেটা কি তথাকথিত ‘নারীমুক্তি’র বিরোধী হয়ে উঠবে বা বাইরের জগতে যে নারী-পুরুষ সাম্য আস্তে আস্তে গড়ে উঠছে, তাকে টাল খাইয়ে দেবে ? বিশেষ করে ততটা অর্থকরী নয় এমন যে কাজগুলো মূলতঃ সময় কাটাবার জন্যই মেয়েরা করে থাকেন, যেমন বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজ, বৃদ্ধ, নারী ও শিশুকল্যাণেরই তো কাজ বেশীর ভাগ, সেসবও যদি একেবারে বন্ধ হয়ে যায়, সেও তো খুব ভালো হবে না ! অনেক সময় মেয়েরা প্রথম দিকে কাজের জগত থেকে সরে দাঁড়ালেও, সংসারের চাপ কিছুটা কমলে আবার কাজের জগতে ফিরে আসতে চান, বেতনক্রম চালু হয়ে গেলে সেই তাগিদটাও কমে যাবে না তো ! 


    তবে এইসব প্রান্তিক সমস্যার কথা ভেবে তো কেন্দ্রীয় সমস্যাটাকে দুরে সরিয়ে রাখা চলে না। আসলে একটা পদ্ধতি বাস্তবায়িত হতে শুরু না করলে তার ত্রুটিগুলো বোঝা যায় না, সমস্যাগুলোরও মোকাবিলা করা যায় না। তাই সাহস করে মেয়েদের বেতন দেওয়াটা চালু করে না ফেললে কিচ্ছু বোঝা যাবে না। তাই আসুন আমরা এই বিষয়টা নিয়ে আলোচনা শুরু করি, কারণ আজকের আলোচনাই কালকের তুলোধোনা (বিরোধি-পক্ষকে) হয়ে উঠবার ক্ষমতা রাখে !


    পুনশ্চঃ আগেই বলেছি এই লেখা আসলে অনেকের লেখা। অনেকের মতামত, বক্তব্য শুধুমাত্র গুছিয়ে তোলা, তাই একে বলা যায় আসলে লেখা-পড়া-শোনা। এই বিষয়টা নিয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই, জোরদা্র তক্কাতক্কি যাই হোক সব সেই অ্যাকাউন্টেই জমা ড়বে।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১০ এপ্রিল ২০১৫ | ৮৭৬০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • sosen | ***:*** | ২৪ মার্চ ২০১৬ ০৮:৫৭86493
  • খাকরা আর মস্ত মস্ত আচার খেতে পাওয়া যাবে।
  • S | ***:*** | ২৪ মার্চ ২০১৬ ০৯:০০86494
  • ধোকলা কিন্তু স্ন্যাক্স হিসেবে ভালই ঃ))

    মস্ত মস্ত লড়কি শুনেছিলাম (মনে রাখবেন আমি এখন গুরুর রেসিডেন্ট সেক্সিস্ট)। আচারও?

    আর গান্ধিজী আম পোড়া খেয়েই দেশ স্বাধিন করে ফলেছিলেন। কে যেন ঐসব খাবার খেয়েই ৫৬ ইন্চির ছাতি চওড়া করে ঘুড়ে বেড়াচ্ছেন। আর আপনারা ইসের সমালোচনা করছেন?
  • Atoz | ***:*** | ২৪ মার্চ ২০১৬ ০৯:০২86495
  • মস্ত মস্ত আচার খেয়েই তো----
    ইয়ে মানে ---
    বুঝে নিন।
    ঃ-)
  • Atoz | ***:*** | ২৪ মার্চ ২০১৬ ০৯:১১86496
  • শুধু আমপোড়া নাকি? ছাগলের দুধ এর কথা ভুলবেন না কমরেড।
    ঃ-)
  • S | ***:*** | ২৪ মার্চ ২০১৬ ০৯:১৭86497
  • উচ্চমাধ্যমিকে একটা পিস ছিলোনা উনার দৈনন্দিন জীবনের উপরে? সেইটা পড়ে এতো লজ্জা পেয়েছিলাম (মানে নিজের উপরে) যে কি বলবো। আমপোড়াটা স্পস্ট মনে আছে, ছাগলের দুধের কথাতো মনে নেই। আচ্ছা গান্ধিজি কি এখন ইন থিঙ্গ নাকি উনাকেও পাকিস্তানে পাঠানো হয়েছে?
  • Atoz | ***:*** | ২৪ মার্চ ২০১৬ ০৯:২৪86498
  • ঐ উ মা র পিসে আমপোড়া ছিলো না, আম ফুটো করে খাওয়া ছিল।
    ঃ-)
  • S | ***:*** | ২৪ মার্চ ২০১৬ ০৯:২৮86499
  • ঠিক ঠিক। বয়স হয়েছে। আম ফুটো করে আমিও তো ছোটোবেলা থেকে খেলাম কই কেউ তো আমাকে নিয়ে দেওয়াল পত্রিকাতেও পোবোন্ধো নামালো না। ডিসক্রিমিনেশন।
  • pi | ***:*** | ২৪ মার্চ ২০১৬ ০৯:৩৩86500
  • গান্ধীজি, আম্বেদকর, ভগৎ সিং সবাই এখন বিজেপি-আর এস এস এর তো।
  • S | ***:*** | ২৪ মার্চ ২০১৬ ০৯:৩৪86501
  • আর গডসে?
  • Atoz | ***:*** | ২৪ মার্চ ২০১৬ ১১:০০86502
  • সাপ আর নেউলকে এক খাঁচায় দিয়েছে নাকি? ঃ-)
    কিংবা বাঘ আর গরুকে এক ঘাটে ঘোল খাইয়ে দিয়েছে?
    ঃ-)
  • রোবু | ***:*** | ২৫ মার্চ ২০১৬ ০৪:২৯86503
  • পাইদি নেতাজীর নাম ভুলে গ্যাছে। এখনো আম্বেদকার, পেরিয়ার আর জয়প্রকাশ নারায়ন বিজেপি জয়েন করেননি। তবে আর দুবছরের মধ্যে করে ফেলবেন শোনা যায়।
  • S | ***:*** | ২৫ মার্চ ২০১৬ ০৪:৩০86504
  • বিদ্যাসাগর আর রামমোহন শেষবার যখন মোদিজী এলেন তখন জয়েন করেছেন।
  • | ***:*** | ২৫ মার্চ ২০১৬ ০৪:৩২86505
  • কিন্তু মোদি বোধহয় ঘরকন্যাদের বেতন দিতে চায় না। যশোদাবেনকে তো কিছু দেয় টেয় না।
  • S | ***:*** | ২৫ মার্চ ২০১৬ ০৪:৩৩86506
  • বলা যায়না। ট্যাক্সোর লোভে রাজিও হয়ে যেতে পারে।
  • ছাগলছানা | ***:*** | ১৬ মার্চ ২০১৮ ০৩:১২86513
  • quora এর লিংক টার উত্তরে দুদিন আগে আমি অন্য এক ফোরাম এ এই চাট্টি কথা লিখেছিলাম। সেটা এখানেও থাকলো।

    "একদম এ সত্যি কথা লিখেছে। এবং ইটা চলতেই থাকবে কিছু কোম্পানি wise corrective অ্যাকশন না নিলে।
    প্রেগন্যান্সি তা বাদ দিয়ে বাকি গুলো আমার যুক্তিযুক্ত ই মনে হলো. এবারে কিছু কথা, যারা বেশি কাজ করেছে তাদের রিওয়ার্ড দিয়েছে ঠিক আছে. কিন্তু এভাবেই চললে সেটা ওভারটাইম করাকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়. ওয়ার্ক culture এর পেছন মারা যাই এভাবেই। ম্যানেজার রা এক্সপেক্ট করা শুরু করে যে অতটা কাজ না করলে সেটা যথেষ্ট কাজ নোই.

    যাক গল্প না দিয়ে আমরা কিভাবে এটাকে সল্ভ করি সেটাই বলি.

    - আমাদের ম্যাটারনিটি এবং প্যাটার্নিটি দুটোর এ পেইড লিভ আছে. যদিও সেটা শুধু ইঞ্জিনিয়ার দের জন্যে।
    - আমাদের প্রত্যেক এর কাজ করার জন্যে trello তে কাজ এসাইন করা হয় এবং সে সেটা সল্ভ করে. কখন সল্ভ হচ্ছে দেরি হচ্ছে কিনা সেসব trello তে সবাই দেখতে পায়.
    - সব কাজ. সেটা ফীচার রিকোয়েস্ট এ হোক বা বাগ সল্ভ এ হোক বা নতুন প্রপোসাল এ হোক. সেটা গিটহাব ইসু তে ওপেনলি ডিসকাস করে decide করা হয়. সুতরাং কোনো আলোচনার মধ্যে কেউ হঠাৎ রেপ্লি না দিলে (ফাঁকি মারলে) বা timely অংশগ্রহণ না করলে সেই কাজ তা অন্য কেউ নিজে থেকে নিয়ে করে দেয়. অবশ্যই গিটহাব, সুতরাং সবাই জানে এবং দেখতেও পায় সেটা কার করা. সুতরাং work attribution নিয়ে আমাদের কোনো প্রব্লেম নেই.
    - আমরা প্রত্যেকবছর নিজেদের টার্গেট নিজেরাই ফিক্স করি. workday তে.ম্যানেজার কিছু বলেনা। বেশি কম যা খুশি।বৎসরান্তে ম্যানেজার শুধু বসে কত hike হবে সেটা ডিসাইড করে. সারাবছর এ লোকেরা এই টার্গেট চেঞ্জ ও করতে পারে। এবং সাধারণত কাজ করাটাই মুখ্য নোই. কনফারেন্স এ টক্ দেওয়া, W৩C এর ওয়ার্কগ্রুপ এর অবদান ইত্যাদি ম্যাটার করে.

    এবং আরো অনেক কিছু। কিন্তু এর ফলে যা হয়.

    - যারা পেইড হলিডে তে আছে তারা নিজেরাই জানে যে hike হবেনা। কারণ তারা workday তে টার্গেট এ কিছু দেয়নি। বা দিলেও সেটা করতে পারেনি। সুতরাং সেই নিয়ে কোনো বাওয়ালি নয়
    - বাবা এবং মা দুজনেই ছুটি নিতে পারে। এবং নেয় ও. তার জন্যে কোনো টীম ডিপেন্ডেসি নেই. আমাদের সবাই প্রাই সব কাজ কম বেশি জানে। এবং দরকার পড়লে আমরা পেইড কন্ট্রাক্টর দিয়ে তাদের কাজ সামলে দেই কদিনের জন্যে যদি আমাদের নিজেদের সময় না থাকে।
    - কে কাজ করেছে কে করেনি সেটার প্রমান গিটহাব এ দিয়ে দেয়. এমনকি কে আলোচনা তে অংশগ্রহণ করেছে সেটাও।সুতরাং ওই Women 3, 4, 5, 6 এর scenario তা হয়না।
    - Women 2 এর scenario ও হয়না কারণ এখানে ওয়ার্ক ফর্ম হোম encourage করা হয়. কিন্তু trello ,গিটহাব ensure করে যে কাজ সমান ভাবেই হচ্ছে কিনা। সুতরাং প্রোডাক্টিভিটি মার্ খেলে সেটাও বোঝাই যাই. ক্যান্ডিডেট নিজেই বুঝতে পারে।"
  • ছাগলছানা | ***:*** | ১৬ মার্চ ২০১৮ ০৩:১৩86514
  • এর সঙ্গে জাস্ট দুটো জিনিস অ্যাড করার আছে. যখন দরকার পরে সবাই হামলে পরে কাজ ও সামলে দেয়. নিজেদের গরজেই।
    উদাহরণ : http://www.guruchandali.com/guruchandali.Controller?portletId=8&porletPage=2&contentType=content&uri=content1517048067887

    আর যারা বেশি কাজ করবে তাদেরকে ম্যানেজার রা বেশি প্রেফার করবে সেটা নতুন কথা নয়. কিন্তু "বেশি কাজ করলেই একমাত্রও ভালো রেটিং পাওয়া যাবে" এই culture তা বিষাক্ত। আমরা নিজেরাই এটা তৈরী করি যদিও। কেউ ফাঁকি মেরে, অন্যকে বাধ্য করতে বেশি কাজ করার। ম্যানেজার রা ওভারকমিট করে. কেউ জাস্ট বেশি কাজ করে.
  • স্বাতী রায় | ***:*** | ১৬ মার্চ ২০১৮ ০৬:২১86508
  • quora র লিঙ্কটা পড়ে একটা মিশ্র অনুভূতি হল। অনেক কথা, পক্ষে ও বিপক্ষে বলার আছে। প্রথমতঃ একজন প্রোজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে ভদ্রলোকের দুঃখটা আমি হাড়ে হাড়ে অনুভব করছি। একবার একটা শিডিউল কমিট করলে তারপরে যখন সেটা মিট করতে সমস্যা হয়, তখন যে ফাস্ট্রেশন হয়, তার তুলনা নেই। এবং উনি যেগুলো বলেছেন, তার সবগুলোই আমি দেখেছি। টিসিএসের একটি মেয়েকে জানতাম সে রোজ ( হ্যাঁ রোজ ) তিনটের সময় বাড়ি চলে যেত , তার বাচ্চা ছোট বলে। ১৯৯৫ -৯৬ র কথা। টিসিএসের আগে ও যেখানে কাজ করত, সেখানে কোন আগাম নোটিস ছাড়াই বৌভাতের এক সপ্তাহ পরে এসে রেসিগনেশন দিয়ে ঠিক পরের দিন বরের সঙ্গে বিদেশে চলে যায়। অফিসকে এমনকি কাজ হ্যান্ড-ওভারও করে নি। আর অফিসে এসে গজল্লা করা, শপিং সাইট খুলে শপিং করা , লাঞ্চে গেলে এক ঘন্টার কমে না ফেরা - এ সবও দেখে দেখে বোর হয়ে গেছি। আরও যে কত অদ্ভুত অদ্ভুত কথা শোনার অভিজ্ঞতা আছে। ইমারজেন্সি তে একটি মেয়েকে থাকতে বলেছি রাতে, অফিসের গাড়ী থাকতো আর ডেভেলপমেন্টের মেয়েদের চেষ্টা করা হত যত কম extended hour এ কাজ করানোর, সেফটির জন্যেই - তো নেহাত-ই সেবার ঠ্যাকায় পড়ে ওকে থাকতে বলতে হয়েছে - প্রথম প্রশ্ন, আমি কি করে বাড়ি ফিরব? সেদিন রাত একটার সময় আমি ওকে নামিয়ে দিয়ে তারপর বাড়ি ফিরেছিলাম, ও কিন্তু একবারও জানতে চায় নি যে আমি কি করে বাড়ি ফিরব।
    কিন্তু সমস্যা টা হল, আমি একমাত্র মাতৃত্ব- রিলেটেড সমস্যাটা বাদ দিয়ে বাকী সব কটা সমস্যা ছেলেদের মধ্যেও দেখেছি। একটি ছেলেকে সন্ধ্যে ছ'টার পরে এক মিনিটও এক্সট্রা সাপোর্ট দিতে বললেই সে বলত, আমার তাহলে বাড়ি অবধি ট্যাক্সি ফেয়ার লাগবে। সলটলেক টু উত্তরপাড়া । রিলিজের আগের রাতে ঝামেলা হয়েছে, টিমের বাকী সবাই রয়েছে, সমস্যা সমাধানের প্রচুর চেষ্টা চলছে - তার মধ্যে একজন মেয়েও রয়েছে। হঠাৎ একটি ছেলে , সে আবার টিমলিড, সে এসে বলল, আমার বৌ বাড়ি যেতে দেরী হলে খুব বকবে। প্লীজ আমাকে ছেড়ে দাও। একজন ছেলে কে দেখেছি যে কোন ছলে ছুতোয় সপ্তাহে চারদিন অফিস করতে।

    আবার উল্টোটাও দেখেছি। কাজের টানে বাড়ি থেকে লগিন করে সপ্তাহে পাঁচ দিনই রাত একটা -দেড়টা অবধি কাজ করতেও দেখেছি - ছেলে মেয়ে দুদলকেই। দিনের পর দিন উইকএন্ডে কাজ করছে প্রোজেক্ট তোলার জন্য - ছেলে মেয়ে সবাই।

    কাজেই এই সমস্যাটা বোধহয় সেক্স রিলেটেড নয়। কাজ করার ক্ষিধে, পারফরমেন্স এগুলো attitude র উপর নির্ভর করে। সেটা ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে কারোর থাকে, কারোর থাকে না।

    আর এমনিতে এই কোরার এই লিঙ্কটার সঙ্গে তির্যকের মূল লেখার বিশেষ সম্পর্ক নেই। তবে ভালো করে তলিয়ে দেখলে একটা যোগসূত্র আছে ও। সেটা হল ওয়ার্ক কালচারে। আমাদের এখানে একমাত্র বেশির ভাগ বেসরকারী চাকরীতে, বিশেষত সারভিস ইন্ডাস্ট্রি তে, একটা অসম্ভব আনহেলদী ওয়ার্ক কালচার আছে। যেখানে ঘুমোনোর সময় টা বাদ দিয়ে তুমি অফিসের জন্য বলি প্রদত্ত। অফিসে নিয়মিত দশ- বার ঘণ্টা কাজ করার পরে বাড়ি থেকেও কাজ কর, কোন রকম ইমারজেন্সি ছাড়াই। এই জীবনটা সামলানো সম্ভব না যদি না বাড়িতে কেঊ হাল ধরার থাকে। সে বৌ হলে বৌ, বর হলে বর , না হলে অন্য কেউ। এই ধরণের ওয়ার্ক কালচার যতদিন থাকবে ততদিন অন্তত যিনি সেই কর্মক্ষেত্রে থাকবেন, তার সংসারের কাজে হাত লাগানোর সুযোগ খুব কম থাকবে, ইচ্ছে যদিও বা থাকে। ( প্রসঙ্গত এই নোংরা স্বভাবটা আমরা আমেরিকানদের থেকে পেয়েছি। ইউরোপে কিন্তু আমার জ্ঞান মতে কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনের কম্পারটমেন্তালাইজেসন টা খুব পোক্ত। ) কাজেই এক্সটেন্ডেড আওয়ার চাকরী হলে, সেখানে একটা ঘরকন্না -কম্পেন্সেটরী allowance দেওয়া হোক। এবং সেটা ট্যাক্স ফ্রী করা হোক। যিনি ঘরকন্না সামলাবেন, এটা তাঁর প্রাপ্য হোক। এই ঘরকন্নার মধ্যে বাচ্চা সামলানোটাও ইনক্লুডেড। যদি নিজে হাতে সব করতে চান , করবেন। নাহলে লোক দিয়ে করাতে হলে, এই টাকার থেকেই যাক। ...।

    সরকারী চাকরীর ব্যাপারে কিছু জানি না বলে সেটা বাদ দিলাম।

    যদিও কেউ আমাকে অপশন দিলে, আমি ওই ধরণের ওয়ার্ক কালচারের সমুলে বিনাশ চাইব, অন্য যে কোন দাবীর তোলার হাজার হাজার মাইল আগে। আট ঘন্টার কাজের দাবীতে একটা লং মার্চ , সেতো এখনো স্বপ্ন।
  • pinaki | ***:*** | ১৬ মার্চ ২০১৮ ০৭:৫১86509
  • আমাদের এখানে তো ওভারটাইম পেমেন্ট রয়েছে। সন্ধ্যে পাঁচটা থেকে আটটা অব্দি একটা রেট। আটটার পরে আরও বেশী রেট। উইকএন্ডে প্রায় নর্মাল স্যালারির ডাবল। এ বাদেও একজনকে দিয়ে কতক্ষণ টানা ওভারটাইম করানো যাবে ম্যাক্সিমাম, তার বিধিনিষেধ আছে। কিছু স্পেশাল সিচুয়েশনে, যেমন অনসাইট কমিশনিং এর সময় টানা ওভারটইম করতে হয় অনেকসময়। তারজন্য পরে এক্সট্রা ছুটির ব্যবস্থা থাকে। আইডিয়াটা হল কাজ করতে গিয়ে কেউ পর্যাপ্ত বিশ্রাম না পেলে ফ্যাটিগ ইত্যাদির কারণে লংটার্মে কাজের কোয়ালিটি ইত্যাদি ঝুলবে, তাতে কোম্পানির আরও বেশী ক্ষতি হবে। এবার এগুলো স্ক্যান্ডিনেভিয়ান ক্যাপিটালিজমের বৈশিষ্ট্য না ইওরোপের অন্যত্রও এরকম ব্যবস্থা, তা জানি না অব্শ্য।
  • pi | ***:*** | ১৬ মার্চ ২০১৮ ০৮:২৪86510
  • দেশে বা আম্রিগায় স্বামী স্ত্রী দুজনে আইটি হলে?

    আর সায়েন্সে কিন্তু নিজেদের কাজের জন্যেই সময়ের কোন বাঁধাধরা থাকেনা, বহু ক্ষেত্রেই।
  • স্বাতী রায় | ***:*** | ১৬ মার্চ ২০১৮ ১০:২৭86511
  • @Pinaki exactly the point. দরকারে কাজ করতে পিছপা হয় না , এমন লোক প্রচুর। কিন্তু সেটা একটা সময় অবধি sustainable. দীরঘসময় ধরে সেটা চলে না। আমি যতদূর জানি, অধিকাংশ বড় সার্ভিস কোম্পানি- ই অফশোরে ওভারটাইম দেয় না। প্রডাক্ট কোম্পানিও পারমানেন্ট এমপ্লয়ীদের দেয় বলে শুনি নি। তবে হ্যাঁ সেখানে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে কিছুটা পুরিয়ে যায়। ওভারটাইম মেলে কন্ট্রাক্টর দের। তবে সেটা কি রকম স্পেস্যাল রেটে, সে কথা শুনলে ঘুড়ায় ও হাসব। তবে এগুলো সবই বোধ হয় কোম্পানি ভেদে তফাত হতে পারে। তাই আমার জানাটাই বিশ্ব-দরশন এমন বলতে পারি না।

    আর @pi আমিগ্রার কথা জানি না, তবে দেশে দুজনই আই টি হলে এবং দু জনেই একটু এক্সটারনাল ফেসিং রোলে থাকলে, সে সংসার অন্য লোকের ভরসাতেই বেশি চলে বোধহয়, সে বাবা-মা-স্বশুর-শাশুড়ি বা কাজের লোক যাই হোক।
  • স্বাতী রায় | ***:*** | ১৬ মার্চ ২০১৮ ১২:০৮86512
  • একটা সংশোধন দরকার বোধহয় - বড় কোম্পানির অফশোর ডেভেলপমেন্ট সেন্টারে বোধহয় ওভারটাইম দেয়, পার্মানেন্ট এমপ্লয়ীদেরও।
  • | ***:*** | ১৭ মার্চ ২০১৮ ০৫:২৫86515
  • আহাগো, সিটিএসের প্রোজেক্ট ম্যানেজারের জন্য খুউব দুঃখু হল। বেচারীর টিমের সবকটা মহিলা অপদার্থ, অলস, সস্তায় বাজিমাত করার মেন্টালিটিসম্পন্ন আর সবকটা ছেলে কি ভাল, কি ভাল, কত উৎসাহী ধীমান। আর ওনাকেই কিনা সেক্সিস্ট বলছে! ছি ছি!
    নিন্দুকদের মাথায় পড়ুক বাজ।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় প্রতিক্রিয়া দিন