আশির দশকে এক অন্য ভাবাবেগের ঘরাণার সিনেমার অবিসংবাদিত নায়কের চরিত্রের নাম হতো বিজয়। উদার অর্থনীতির পরে সেই চরিত্ররাই কেমন করে যে বদলে রাজ বা রাহুল হয়ে যেতে থাকে!! এই বদলটার যতোখানি নামে, তার চাইতেও অনেক বেশী করে নায়ক-চরিত্রের ধ্যানধারণা-যাপন-উদ্দেশ্য- জীবনদর্শনে। কিন্তু, আজকের গল্পের নায়ক রাজ বা রাহুল নয়, নায়ক সেই বিজয়।
আশ্চর্যের বিষয় এই যে, এখনও কৈশোর পার হয়ে তারুণ্যের সন্ধিস্থলে রাজ-রাহুলদের দেখে অভ্যস্ত হওয়া কিছু মানুষেরা মনে মনে বিজয় রয়ে যায়। এও এক সেইরকম বিজয়ের গল্প।
যে বিজয়ের মনে দেশ মানে দেশের মানুষ, দেশপ্রেম মানে শুধুই দাঁত কিড়মিড় করে টিউবওয়েল উপড়ে বিজাতীয় শত্রুর দিকে ধাওয়া করা নয়, তার চেয়ে আলাদা কিছু ভাবার বুদ্ধি বা কাণ্ডজ্ঞান রাখা। যে বিজয়ের কাছে, কর্তব্য মানে ব্যক্তিজীবনে সৎ থাকা, আপোসহীন থাকা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। না, সিনেমা বাদ দিয়ে বাস্তবজীবনে অগ্নিপথ বেছে নেওয়া প্রায় কারোরই হয়ে ওঠে না - কিন্তু অন্যায়কারী যতো ক্ষমতাশালীই হোন না কেন, রুখে দাঁড়ানো বাদ দিয়ে কোনো আপোসের চিন্তা মাথায় আনাও বিজয়দের কাছে পাপ। এই সময়ে, গোলমেলে পরিস্থিতিতে খুব দলছুট, এমনকি কোণঠাসা - বিজয়, বিজয়রা।
স্কুলজীবনে, সবার মতোই, বিজয়েরও বন্ধুবান্ধব ছিলো বিস্তর। ইতিহাসের বইয়ের পাতায়, স্বাধীনতার বীরগাথা শুনে উদ্বুদ্ধ হতো সবাই মিলেই। দেশ ব্যাপারটা ঠিক কী, গুছিয়ে বুঝে ওঠার আগেই দেশকে নিজের মতো করে ভালোবাসার একটা অভ্যেস ছিলো।
কিন্তু, কলেজজীবনের বন্ধু বা বান্ধবীদের মধ্যে বাস্তবসম্মত স্বপ্ন দেখার প্রবণতা বেশী। সেখানে স্বপ্ন একটা কাঠামো পায়। সেখানে বিজয়ের অনেক বন্ধুরই স্বপ্ন ছিলো, গাড়ি হবে, বাড়ি হবে, উজ্জ্বল কোনো দেশে চকচকে জীবন কাটাবে। দেশকে ভালোবাসার ব্যাপারটা আস্তে আস্তে কিছুটা চলতি লব্জ হয়ে যেতে থাকে, মানে এমন একটা কথা, যার সাথে ভাবনার বা যাপনের সম্বন্ধ থাকে না।
স্বপ্নের ব্যাপারটায়, নিজের নিজের মতো করে অনেকেই সফল হয়। কেউ কেউ এই জীর্ণ-অপরিচ্ছন্ন দেশ ছেড়ে প্রথম বিশ্বের উজ্জ্বলতায় বাসা বাঁধে। সরকারি উচ্চপদস্থ বন্ধুরা লালবাতি গাড়ি চড়ে বস্তির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় ঘেন্নায় নাক কুঁচকায়। চার্টার্ড একাউন্ট্যান্ট বন্ধু ধনীদের ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার উপায় বাতলায়। দেশের মধ্যেও কেউ কেউ বহুজাতিক সংস্থার হিসেবনিকেশ সামলায়, ঠিক কোন পথে কোম্পানির ট্যাক্স বাঁচানো যেতে পারে, ঠিক কোন পথে বাস্তুচ্যুতকে কম ক্ষতিপূরণ দিয়ে কোম্পানির স্বার্থরক্ষা হতে পারে। কেউ গরীবের অধিকার নিয়ে কথা বলতে এলে, তাকেই উলটে বাস্তববোধহীন বা ধান্দাবাজ বলার অভ্যেস তাদের করায়ত্ত। কিন্তু, ঝলমলে কথায়বার্তায়, বিজয়ের বন্ধুরা সবাই দেশকে ভালোবাসে।
আরেকদিকে, বন্ধুদের মতো অতোটা চাকচিক্যের জীবন না জুটলেও, বন্ধুদের মতো করে দেশপ্রেমিক তকমা না থাকলেও, বিজয় দেশ নিয়ে ভাবে, এই সময় নিয়েই চিন্তায় পড়ে থাকে। স্বাধীনতার যোদ্ধাদের মতো করে না হলেও, বিজয় দেশকে ভালোবাসে। না, তথাকথিত রণ-রক্ত-সফলতার হিসেবে তার বিফলতার কুযুক্তি হিসেবে নয়, দেশের প্রতি বিজয়দের ভালোবাসা নিবিড় - এই কথাটুকু শুরুতেই মেনে নিয়ে পরের কথাগুলো পড়ুন।
না, দেশকে ভালোবাসে মানেই, বিজয় দেশের সেনাবাহিনীতে যোগ দেবে, এমন নয়। দেওয়ার কথা বিজয় স্বপ্নেও ভাবে না। অবশ্য, চেষ্টা করলেই বা ভাবলেই সে পারতো, এমনও নয়। তবু, বিজয় আটপৌরে মধ্যবিত্ত বাঙালী, এবং রেজিমেন্টেশন তার ঘোর অপছন্দ। তার কাছে সেনাবাহিনী, অথবা অন্য যে কোনো বাহিনীই, আচরণ এবং চিন্তা, উভয়ত রেজিমেন্টেশন-নির্ভর। না, বিজয় সেনাদের অশ্রদ্ধা করে, তেমন নয়। সে শুধু জানে, ও পথ তার জন্যে নয়।
দেশ বলতে বিজয় বোঝে দেশের মানুষ। যে মানুষগুলোর অধিকাংশই খেতে পায় না, যে মানুষগুলোর অনেকেই নিরক্ষর - যে মানুষগুলো রোজ যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে, খাবার জোগাড় করতে, চিকিৎসা করতে। বিজয়ের কাছে, বিজয়ের চোখে দেশে এক যুদ্ধ চলছে - দেশের বেশীর ভাগ মানুষ প্রতিদিন, প্রত্যেকদিন লড়ছেন, যুদ্ধ করছেন - খিদের বিরুদ্ধে - স্রেফ আজকের দিনটা টিকে থাকতে।
বিজয় দেশকে ভালোবাসে, কিন্তু এই মৃত্যু উপত্যকাকে দেশ বলে মানতে চায় না।
আসলে বিজয় খুব কনফিউজড।
দেশের একটি অংশে, দেশের কিছু স্কুলে-পড়া কিশোরকে দেশেরই পুলিশ অকারণে ডেকে গালিগালাজ করে, করেই থাকে - কেননা করাটাই দস্তুর, করাটা দেশের রক্ষকদের অধিকারের মধ্যে পড়ে - এমনটা জানতে পারলে বিজয়ের খুব খুউব রাগ হয়। কিন্তু, তার বিপরীতে, স্রেফ এই কারণেই, এদেরই মধ্যেই একটা ছেলে রাষ্ট্রশক্তির বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিয়েছে, সেনাদের বোমা দিয়ে উড়িয়ে দিয়েছে - এমন যুক্তি খাড়া করা হলে, বা এমন খুনের নৃশংসতাকে যুক্তিযুক্ত প্রমাণ করতে উপরের পুলিশি অত্যাচারের উদাহরণ খাড়া করার চেষ্টা দেখলে সে একেবারে তাজ্জব বনে যায়।
আবার, সেই উড়ে-যাওয়া ছিন্নভিন্ন সেনাদের কথা ভাবলে বিজয় রাতে ঘুমোতে পারে না। না, শুধু এই কথা ভেবে নয়, যে, তারা তথাকথিত দেশের জন্যে প্রাণ দিয়েছে। বিজয় শোকগ্রস্ত হয়, সেই মৃত মানুষের পরিজনের কথা ভেবে, তাদের পথ-চেয়ে-থাকা সদ্যবিবাহিত স্ত্রীর কথা ভেবে, নির্ভরশীল পিতার কথা ভেবে, বাবাকে চিনতে পারার সুযোগটুকুও না পাওয়া সন্তানের কথা ভেবে - সেইসব কিছু তাজা জীবন কেন এতো অকারণে অবহেলায় ঝরে গেলো এই ভেবে।
আসলে, বিজয় মফস্বল শহরে সেনায় যোগদান করতে এসে রাত জেগে রাস্তার উপর বসে থাকা কিছু মানুষকে চেনে, তাদের অবস্থা জানে। যেদেশে চাকরির অকুলান, সেই দেশে সেনাবাহিনীতে যোগদান লোভনীয় চাকরি। ঝুঁকিবহুল, তবু লোভনীয় চাকরি। না খেতে পেয়ে, খুঁটে খেয়ে প্রতিদিন তিল তিল করে মরে যাওয়ার নিশ্চয়তার বিপরীতে সে ঝুঁকি কিছুই নয়। (না, বিজয়ের সীমিত জ্ঞান অনুসারে, সেনা-জওয়ানদের খুব কম অংশই সৈনিক স্কুল বা ন্যাশনাল ডিফেন্স একাডেমীর ছাত্র হয়ে আসেন। সেই পথে আসা মানুষগুলো হয়তো প্রাণ দিয়ে হলেও দেশের সীমান্ত রক্ষা করবেন, এই মহৎ স্বপ্ন মাথায় নিয়ে আসেন। কিন্তু, বিজয়ের দেখা লাইনে দাঁড়ানো ছেলেগুলো?)
এইসব মানুষের প্রাণ গেলে, তাদের জন্যে তো বটেই, পাশাপাশি তাদের আয়টুকুর দিকে পথ চেয়ে থাকা মানুষদের কথা ভাবলেও, বিজয় খুব অস্থির বোধ করে। শহীদের মর্যাদা-মহত্ব-শৌর্য-দেশের জন্যে ত্যাগ, এইসবই তো দুদিনের হইচই। তারপর? তার পর?
দেশপ্রেমিক আর দেশদ্রোহী - দুভাগে আড়াআড়ি ভাগ হয়ে যাওয়া এই সমাজে, বিজয় ঠিক কোনখানে, নিজেই বুঝে উঠতে পারে না।
না, যাঁরা প্রতিশোধ চাইছেন, বিজয় সেই দলে নয়।
কার বিরুদ্ধে, কাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ?
যে রাজ্যকে দেশের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবে মেনে নিচ্ছেন, যে রাজ্যকে দেশের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবে বজায় রাখার জন্যেই এতো রক্তপাত এতো হিংসা এতো খুনোখুনি, লাশের পাহাড় - সেই রাজ্যের মানুষকে বয়কট করার ডাক দিয়ে কীসের যুদ্ধ!!
বিজয়েরই সহনাগরিক কিছু মানুষ, স্রেফ একটি বিশেষ রাজ্যে জন্ম নেওয়ার দুর্বিপাকে যাদের কিনা প্রতিরাতে নিজের বাড়িতে খেয়ে ঘুমিয়ে সকালে চান করে ভাতটাত খেয়ে বাসে চেপে চাকরি করে বাড়ি ফিরে সন্ধ্যের পর বাচ্চার হোমওয়ার্ক নিয়ে বকাঝকার স্বতঃসিদ্ধ অধিকারের স্বপ্নটুকুও নেই, প্রতিশোধের হুমকি তাদের বিরুদ্ধে?
প্রতিশোধের যুদ্ধশেষে আরো অনেক অনেক লাশের পাহাড়, আর তার কয়েকগুণ অসহায় মুখ - প্রতিশোধটা নেওয়া হবে ঠিক কাদের বিরুদ্ধে আর প্রতিশোধের শান্তিই বা উপভোগ করবেন ঠিক কারা?
কিন্তু, না, বিজয় শান্তিকামী নয়। শান্তি বলতে তো এই স্থিতাবস্থা বজায় রাখার শান্তিকল্যাণ।
বিজয় যুদ্ধ চায়।
না, সীমানার ওপারে গিয়ে গোলাবন্দুক নিয়ে ‘'দেশপ্রেমিক” যুদ্ধ নয়।
দেশের মধ্যেই যে অসংখ্য সীমানা রয়ে গিয়েছে, সেইসব সযত্ন রক্ষিত লাইন অফ কন্ট্রোলের ওপারে যুদ্ধ করলে কেমন হয়!!
দেশের সব টাকাপয়সা-ধনসম্পত্তি তিন কি চার শতাংশ মানুষ মিলে আগলে রয়েছেন। কেমন হয়, সেই রক্ষণ ভাঙার জন্যে অস্ত্র শানালে?
ঊনপঞ্চাশজন সশস্ত্র সেনার অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র, যে অস্ত্র হাতে তোলার আগেই আগেই তাঁরা উড়ে গেলেন বিস্ফোরণে - আদিলের গাড়িতে রাখা সাড়ে তিনশো কেজি বিস্ফোরক - প্রতিশোধের প্ল্যানের সাথে সাথেই গুছিয়ে রাখা হচ্ছে যে সমরাস্ত্র-যুদ্ধবিমান - সবই আসছে তো সেই একই গুদামঘর থেকে - কেমন হয় সেই গুদাম, সেই গুদামগুলো উড়িয়ে দেওয়ার হিসেব কষলে?
দেশের বেশীর ভাগ মানুষ পেটভরে দুবেলা খেতে পান না, আর কিছু মানুষ কোন কোন খাবার এড়িয়ে ডায়েটিং করবেন, তার হিসেব কষেন। কেমন হয় এই খেতে-না-পাওয়াদের হয়ে প্রতিশোধ নিলে?
একদিকে বোমা মেরে মানুষ খুন করতে পারলে বেহেস্তে যাওয়ার স্বপ্ন, আরেকদিকে যারা গোহত্যা করে তাদের মেরে ফেলতে পারলে পুণ্যার্জনের আশা। এই দুইপক্ষের মাঝে সুনিপুণ দক্ষতায় ব্যালান্সের খেলাটা খেলছেন যে একই খেলোয়াড়রা, কেমন হয় প্রতিশোধের হিসেবটা যদি তাদেরই বিরুদ্ধে কষা যেতো!!
বিজয় বোঝে, একটা গন্ডীর মধ্যে আশ্চর্য এক খেলা চলেছে। অস্বচ্ছ কাচে ঢাকা নিরাপত্তার বেষ্টনীর মধ্যে খেলোয়াড়দের চেহারা খুব অস্পষ্ট। কিন্তু, সেই খেলার অনিবার্য ক্রিয়ায় প্রশ্ন করলেই একপাল মানুষ ফোঁস করে উঠছেন, দেশপ্রেম আর দেশদ্রোহিতার সংজ্ঞা নির্ধারিত হয়ে চলেছে, দেশপ্রেমের ঠিকেদাররা বাড়ি বাড়ি জাতীয়তাবাদের সহজপাঠ পৌঁছে দিচ্ছেন, অর্ধশত জীবনের অপচয়ের হিসেব চাইলে তাকে অশ্রদ্ধা বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
বিজয় যুদ্ধ চাইছে। যুদ্ধ এই কাচের দেওয়াল চুরমার করে খেলোয়াড়দের মুখগুলো সামনে আনার।
দেশে বিদেশে, স্বাচ্ছন্দ্যের শিখরে বসে, বিজয়ের কৃতি ও সফল বন্ধুবান্ধবেরা বলছে RIP. পাঁচতারায় ডিনারের মাঝে এক ফাঁকে তারা হোয়াটস্যাপে তীব্র দেশপ্রেমের মেসেজ ফরোয়ার্ড করছে, পানীয়ের গ্লাসটুকু ভরে নেওয়ার মাঝে টুক করে ছড়িয়ে দিচ্ছে দেশের মধ্যে লুকিয়ে থাকা শত্রুদের নিকেশের আহবান। বিজয়ের সাথে স্কুলে ভরতি হয়েও মাঝপথে পড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হওয়া বন্ধুরা পানের দোকানে আড্ডা দিতে দিতে কাঁচা খিস্তি করছে প্রতিশোধ চাইছে আর ফেসবুকে বলছে, RIP.
বিজয়ের মনে হয়, না, রেস্ট ইন পীস বলার সময় এটা নয়।
ঊনপঞ্চাশজন জওয়ান শান্তিতে নেই। তাঁরা শহীদ কিনা তর্ক অবান্তর, কিন্তু তাঁদের ছিন্নভিন্ন শরীর দিয়ে তাঁরা দেশের ছিন্ন আত্মাকে জুড়তে পারলেন কই!! তাঁদের পরিজনেরা আরেকটা যুদ্ধের শেষে আরো কয়েক হাজার সহমর্মী সমব্যথী স্বজনহারানোকে পাশে পেলেই, বা পেলেও, শান্তি পাবেন কি?
কেমন আছে আদিল? বেহেস্ত নাকি জাহান্নাম, কোথায় পৌঁছালো সেই স্বপ্নহারানো কিশোর? শান্তিতে নেই সেও। শান্তিতে নেই তার বাবা-মা।
শান্তিতে আছে কি বিজয়? বিজয়রা?
রাজ-রাহুলদের মতো বিজয়দের সামনে সহজ উত্তর থাকে না।
বিজয় শুধু জানে, সীমানাগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া দরকার, দেওয়ালগুলো চুরমার করা দরকার। সবাই মিলে এক আকাশের নীচে খোলা মাঠে এসে দাঁড়ানো জরুরী।
সেই মাঠখানার দখল নেওয়ার জন্যে, সেই মাঠের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্যে যুদ্ধ ছাড়া পথ নেই।
বিজয় যুদ্ধ চাইছে। যুদ্ধগুলো শেষ করার যুদ্ধ।
না, প্রিয় পাঠিকা, এতোক্ষণ আপনাকে ধোঁকা দেওয়া হয়েছে। এইটা বিজয়ের গল্প নয়। এইটা কোনো গল্পই নয় আদতে।
কেননা, এই সময়ে দাঁড়িয়ে, বিজয় জানে, একটু সাবধানে থাকা ভালো। বিজয় খবর রাখে, আলফাল লেখার ওস্তাদি করতে গিয়ে, লোকজন চাকরি হারাচ্ছে - সরকারি অফিসে, বেসরকারি ইস্কুলে।
প্রতিবাদ জরুরী অবশ্যই, কিন্তু উইকেটে টিকে না থাকলে খেলা দেখানোর সুযোগ কোথায়। তাছাড়া, শ্রদ্ধার অসহিষ্ণুতা বড়ো বিষম বস্তু।
অতএব, বিজয়, একবিংশ শতকের ডিজিটাল বিজয়রা ভাবে, ভাবতে থাকে। পাশবালিশ আঁকড়ে ঘুমিয়ে অনেক ভোরের আর লড়াইয়ের, ভোরের জন্য লড়াইয়ের স্বপ্ন দেখে।