এই প্রবন্ধটির আলোচনার বিষয় ধ্যান এবং স্নায়ুবিজ্ঞানএর পারস্পরিক সম্পর্ক, বা বলা যেতে পারে স্নায়ুবিজ্ঞান এর "চোখ" দিয়ে ধ্যানের মতো একটি বিষয়কে বোঝার চেষ্টা করা। আজ অবধি এই বিষয়ে মোটামুটি যা যা জানা হয়েছে ও জানা হচ্ছে তার একটি অতি সংক্ষিপ্ত, হয়তো কিছুটা লঘু ধরণের অবতরণিকা পেশ করা। এখন প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে হঠাৎ করে এইরকম একটি বিষয় নিয়ে, বিশেষ করে ধ্যান ও স্নায়ুবিজ্ঞান নিয়ে দু চার কথা পাড়তে গেলে যা হয়, আপনারা যারা পাঠক আপনাদের কারো কারো মনে হতে পারে যে কোথায় কি নিয়ে গপ্পো? মানে কোথায় ধ্যানের মতো গুরুগম্ভীর ধর্মীয় বিষয়, রীতিমতন সাধারণ ভাবে যার সঙ্গে নানারকমের ধর্ম কর্মের যোগ প্রবল, আর কোথায় নিউরোসায়েন্স, অতি জটিল বিজ্ঞান, বিশেষত মস্তিষ্কের জটিল অন্তর্জগতের হদিস দেওয়া যার কাজ - এই দুটো বিপ্রতীপ বিষয় কি তেল আর জল মেশানোর মতো অসম্ভব ব্যাপার নয়? এখানে আমার উত্তর "না নয় :-) ", কিন্তু কেন নয়, ক্রমশ প্রকাশ্য ।
এ নিয়ে সন্দেহ নেই যে মস্তিষ্ক ও স্নায়ুবিজ্ঞান অতি জটিল বিষয়, এবং অনেকেই হয়তো ভাবেন যে যাদের ও বিষয়ে ব্যুৎপত্তি নেই, তাদের পক্ষে ও বিষয় না যায় বোঝা, না যায় বোঝানো । তার থেকে অপেক্ষাকৃত ভাবে ধ্যান ব্যাপারটি আপাতভাবে আরেকটু সোজাসাপ্টা ও হাতেকলমে করে দেখা যেতে পারে। এইটা আমার মনে হয়, তাই এই লেখাটিতে প্রথমে ধ্যান ব্যাপারটিকে নিয়ে চর্চা করা যাক। তারপর পর্যায়ক্রমে ধ্যানের সঙ্গে নানান রকমের ব্যবহারিক প্রয়োগ, এই করে আমরা স্নায়ু, মস্তিষ্ক, সেখান থেকে নির্গত সংবেদনাকে ধরার জন্য ইলেক্ট্রোএনকেফালোগ্রাফি (EEG), মস্তিষ্কের অভ্যন্তর দেখার জন্য MRI ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যাবে, কারণ ধ্যান, এবং মনোবিজ্ঞান এবং স্নায়ুবিজ্ঞান ইত্যাদি বিবিধ বিষয়ের অবতারণা করতে গেলে এই বিষয়সমূহ আসবেই ।
লেখাটার গোড়ায় এখানে একটা কৈফিয়ত দেবার ব্যাপার আছে। সেটা এই যে আমাদের এই আলোচনা কিন্তু ধ্যানের ধর্মীয় দিকগুলো নিয়ে আমরা করব না, আমরা বরং বিষয়টিকে বৈজ্ঞানিক পরিপ্রেক্ষিতে দেখার চেষ্টা করব। তার অর্থ অবশ্য এই নয় যে ধ্যানের ধর্মীয় ব্যাপারটি কম গুরুত্বপূর্ণ, বরং উল্টোটা। ধ্যানের অবশ্যই একটি ধর্মীয় দিক রয়েছে, এবং সে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । এবং সে দিকটি বিভিন্ন ধর্মের ধ্যানের চর্চায় দেখা যায়। উপনিষদিক ব্রাহ্মণ্যাধৰ্মে যেমন হঠযোগ (বিশেষ করে প্রাণায়াম প্রক্রিয়া ইত্যাদিতে) এবং রাজযোগে ধ্যানের অপরিসীম গুরুত্ব, তেমনি বৌদ্ধধর্মে অনপনসতী (শ্বাস প্রশ্বাস এর দিকে নজর রেখে ধ্যান), বা কায়াগত সতী (শরীরের বিভিন্ন অংশে নজর রেখে ধ্যান) বা বিপাসনা (আসলে বলা উচিত বিপস্যনা), তেমনি আবার খ্রীষ্ট ধর্মেও সুপ্রাচীন কাল থেকে ধ্যানের তাৎপর্য রয়েছে (মরু যাজকদের সূত্রে, desert fathers , দেখুন, https://www.contemplativeoutreach.org/the-christian-contemplative-tradition/ ), তেমনি ইসলাম ধর্মেও ধ্যানের ভূমিকা রয়েছে। সেইসব জটিল পারমার্থিক বিষয়ের মধ্যে না গিয়ে আমরা আপাতত ধ্যান কি সেই দিকটায় প্রাথমিক মনোনিবেশ করি, কারণ ধ্যান কি ও কত রকমের । এছাড়াও ধ্যান বিষয়টিকে কেন্দ্র করে যে কতরকমের অদ্ভুত ধারণা আমাদের সমাজে আছে, সে সমস্ত নিয়ে দু একটি কথা আলোচনা এখানে প্রাসঙ্গিক হবে বলে মনে নয়। এখানে আরেকবার লিখে রাখা যাক যে ধ্যান মানেই ধর্ম-কর্মের ব্যাপার নয়, এই ব্যাপারটা স্পষ্ট করে না লিখলে এ আলোচনা এগোনো যাবে না।
ধ্যান বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা
এক কথায় ধ্যান কথার সঙ্গে মনোনিবেশ বা মনঃসংযোগ ব্যাপারটির একটি যোগাযোগ রয়েছে, যদিও সচরাচর বাংলা ভাষায় ধ্যান কথাটি বললে সেই ব্যাপারটা চোখের সামনে ভেসে ওঠে না । সে তুলনায় হিন্দি ভাষায় যদি "মন দিন" বলতে হয়, বলা হয় "কৃপয়া ধ্যান দিজিয়ে"। আমরা বাংলা ভাষায় ধ্যান বলতে অনেকটা এইরকম একটা ছবির কথা ভাবি সাধারণত :
(জনৈকা ধ্যানরতা)
ছবিটা "মন দিয়ে" দেখুন । ছবিতে যে মানুষটিকে দেখা যাচ্ছে তাঁর চোখদুটি বন্ধ, দুই হাত দুই হাঁটুতে রেখে, তিনি বসে আছেন। ধ্যানরত লিখলাম বটে, তিনি কি প্রকৃত পক্ষে ধ্যান করছেন? অস্যার্থ , কারোর এই রকম ছবি দেখে কি বোঝা যায় যে তিনি সত্যি সত্যি ধ্যান করছেন? সেটা আমরা জানছি কি করে? ধ্যান ব্যাপারটা কি শুধুই হাতের মুদ্রা আর বিশেষ রকম পিঠ টান টান করে বসে থাকার ব্যাপার? ইনি ধ্যান আদৌ করছেন কিনা আমরা কিন্তু জানি না, কাজেই যে কেউ তাঁর ধ্যানস্থ অবস্থায় বসে থাকার নানাবিধ ছবি দেখাতে পারেন (আজকাল বৈদ্যুতিক সামাজিক মাধ্যমের যুগে অনেকেই সেই ধরণের ছবি পেশ করে থাকেন), তা থেকে কিন্তু প্রমাণিত হয় না যে তিনি অভিনয় করছেন, না সত্যিকারের ধ্যান করছেন । আপাত ছবি দেখে যদি সত্যিকারের ধ্যানের কথা ভাবা যায়, তাহলে ভুল হবে । একথা লিখছি কেন? একটা সহজ উদাহরণ দিয়ে বোঝাবার চেষ্টা করি ।
চুপটি করে বসে থাকো, কিছু কোরো না যেমন ধরুন, ছোট বয়েসে "চুপটি করে বসে থাকো, কিচ্ছু করো না" এই কথাটা আমরা হয়তো অনেকেই শুনেছি । কিন্তু এই ব্যাপারটাই, যে কোন কাজ কর্ম না করে চুপ করে বসে থাকার ব্যাপারটি প্রাপ্ত বয়েসে কেমন হয়? মনে করুন আপনি স্থির হয়ে বসে থাকা মনস্থ করলেন। আরো মনে করুন আপনি স্থির করলেন প্রায় ২০-২৫ মিনিট মতন ঐরকম এক ঠায় একটি চেয়ারে বা আসনে বসে থাকবেন। কাজ কর্ম কিছু করবেন না, শুধু এক জায়গায় চোখ বুজে চুপ করে বসে থাকবেন। প্রথমত ঐরকম করে বসে থাকা, নেহাত সহজ নয়, বা করলেও যেটি অবধারিত ভাবে হবে, মনে নানান রকমের চিন্তা ভিড় করে আসতে থাকবে, মন যেন জংলী বাঁদরের মতন, এক গাছ থেকে অন্য গাছে লাফিয়ে বেড়ায় (বৌদ্ধ ধর্মে এই মনের অবস্থাকে বলে "কপিচিত্ত ", আমরা আপাতত ধর্মকর্ম জাতীয় আলোচনা না করা মনস্থ করেছি, অতএব এ নিয়ে কথা বাড়াবো না)। এখন "কপিচিত্ত " দশা প্রাপ্ত হলে যা হয়, মনে নানান রকমের চিন্তা ভিড় করে আসে, এক চিন্তা অন্য চিন্তায় মিশে যায় বিস্তর দিবাস্বপ্ন দেখা হয়। বাইরে থেকে আপনাকে দেখলে মনে হবে আপনি বুঝি গভীর ধ্যানে নিমগ্ন, আসলে তা তো নয়। এবং এই ব্যাপারটি ধ্যানও নয় কারণ ধ্যানের অন্যতম শর্ত মনোনিবেশ করা, সেটি না হলে ধ্যান বলা যাবে না।
এবার আমরা আরেকবার বিষয়টিকে বিবেচনা করে দেখি । এইবার, আবার, বসে থাকার একই ব্যাপার, কিন্তু আগের থেকে এবারের তফাৎ, এবার চোখ বন্ধ করে ও সুখাসনে উপবেশিত হয়ে আপনি "মনোনিবেশ" করবেন, মনকে একেবারে লাগামহীন অবস্থায় ছেড়ে দেবেন না । অতএব আবার সেই ব্যাপার, একই রকমের বসার ভঙ্গি, এবারও ২০ মিনিট ঘড়ি ধরে একটি নরম গদিতে ধরুন আসন পিঁড়ি হয়ে বসলেন, বা একটি চেয়ারে বসলেন । চোখ বন্ধ করলেন, এবং , এইবার স্থির করলেন যে "মনোনিবেশ" করবেন, মনকে লাগামহীন ঘুরতে দেবেন না । এই অবধি তো হল, এখন মনোনিবেশ করবেন কিসে?
সব ধ্যান একরকম নয় (যে ধরণের ধ্যানের কথা আমরা এই প্রবন্ধে আলোচনা করছি না )
এইখানে দুটি কথা বলার আছে। প্রথমত, মনে করুন মনোনিবেশ করবেন কোনো একটি রূপকল্পনায়, কোনো একটি শব্দে, বা কোন একটি মন্ত্রে । মহাঋষি মহেশ যোগী বলতেন শব্দের ওপর "ধ্যান দিতে", যাকে এখন বলা হয় transcendental meditation । এই ধরণের ধ্যান করার সময় অন্য কোন কিছুকে মনে স্থান দেওয়া যাবে না । অনেকে তাই এই ধরণের ধ্যান কে চিন্তাশূণ্য ধ্যান বলেন । এই জাতীয় ধ্যান বা মনোনিবেশ আমাদের এই আলোচনার বিষয় নয়, অন্য কোনো সময় একে নিয়ে চর্চা করা যাবে। দ্বিতীয়ত, আমরা যে ধরণের ধ্যান নিয়ে এই প্রবন্ধে আলোচনা করতে চাই তাকে "মুক্ত ধ্যান" (open awareness meditation) বলা যেতে পারে। সে কিরকম ধ্যান? আসছি সে কথায় ।
আমাদের আলোচ্য ধ্যান: মনোনিবেশিত ধ্যান বা Mindfulness Meditation
আগের বারের মতন এবারেও আপনি মনে করুন ২০-২৫ মিনিট সময় নিয়ে ঘড়ি ধরে ধ্যান করতে শুরু করেছেন। এইবার আপনি "মন" দেবেন আপনার শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রতি, আপনার নাসারন্ধ্রে শ্বাস নেবার সময় হাওয়া প্রবেশ করছে, শ্বাস নির্গত হচ্ছে ওই পথে, আপনি তার প্রতি মনোনিবেশ করবেন । এবার দেখবেন কিছু পরে পূর্ববর্ণিত কপিচিত্তের কার্যকলাপ শুরু হবে, আপনার মনে নানান রকমের চিন্তাভাবনা আসতে থাকবে। এক্ষেত্রে আপনি সেইসব চিন্তাসমূহ দূরে কোথাও সরিয়ে রাখবেন না, বরং নিজেকে বলুন যে "আমি আর আমার মন আমার চিন্তা এক নয়, অতএব সবিশেষ কৌতূহল নিয়ে তাদের দেখি", এই বলে নিজের শরীর থেকে মন সরিয়ে নিয়ে কৌতূহল সহকারে এই যে নানান ধরণের চিন্তা মনে আসছে, তাদের দেখতে থাকুন । এই ব্যাপারটা মোটেও সহজ নয়, এই কাজটি করতে আপনার সময় লাগবে, ধৈর্য্য লাগবে । আপনার ভাবনাচিন্তা এমন ভাবে "দেখতে" থাকুন, যেন গ্যালারিতে বসে খেলা বা নাটক দেখছেন । চিন্তার উদয় হওয়া মাত্রই, তাদের একটি নাম দিন, এবং তারপর আবার পুনরায় আপনার শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রতি মনোনিবেশ করুন। যেমন ধরুন, ধ্যান শুরু করেছেন, শ্বাস প্রশ্বাস এর দিকে নজর রাখতে শুরু করেছেন, এমন সময় মনে একটি চিন্তা উদিত হল যে অমুকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে, এখন অবধি করা হয়ে ওঠেনি । সে চিন্তা ভারী প্রবল হয়ে মনে উপস্থিত হল । এখন আপনি ধ্যান করা ছেড়ে উঠে গিয়ে অমুকবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন, কিন্তু তা না করে, এই চিন্তাটির যে উদয় হয়েছে, তার প্রতি কৌতূহল প্রকাশ করে মনে মনে নিঃশব্দে নিজেকে বলতে লাগলেন "যোগাযোগ", "যোগাযোগ", এবং একাগ্র মনে আবার শ্বাস প্রশ্বাসের প্রতি নজর ফিরিয়ে আনলেন । এই ধরণের যে ধ্যান, যেখানে মনোসংযোগ করা হচ্ছে ঠিকই, তবে অন্যান্য ধারণাকে দেখে, তাদের অগ্রাহ্য করা হচ্ছে না, এই ধরণের ধ্যান নিয়ে আমাদের আলোচনা (এর ইংরেজি পরিভাষায় "open awareness meditation" বলা হয়, আমরা বাংলা করে বলতে পারি "মুক্ত চেতনার ধ্যান" ।
আকাশ ও মেঘ
এবার এখানে একটা ব্যাপার নজর করুন । এই যে পদ্ধতিতে ধ্যানের কথা বলা হচ্ছে, এই যে শ্বাসের প্রতি মন নিবিষ্ট রেখে অন্যান্য যে সমস্ত চিন্তা ভাবনা মনে আসছে তাকে চিহ্নিত করতে থাকছেন, তাতে করে কিন্তু মন থেকে চিন্তা "দূর" করার কোন ব্যাপার নেই, মনকে "চিন্তাশূণ্য" করার কোন প্রয়োজন নেই। ক্রমাগত যদি চিন্তা ভাবনাগুলোকে চিহ্নিত করে তাদের উদয় এবং অস্ত যাওয়া লক্ষ করতে থাকেন , তাহলে একটা ব্যাপার অচিরে বুঝতে পারবেন। প্রতিবার এই যে চিন্তাভাবনাগুলোকে চিহ্নিত করতে থাকবেন, এরা একবার করে উদিত হবে, তারপর আবার মিলিয়ে যাবে। ধ্যানের বিভিন্ন ঘরানায় (বিশেষত বিভিন্ন ধর্মে), এর একটা উপমা দেওয়া হয়, এ যেন অনেকটা নীল আকাশে সাদা মেঘের আনাগোনার মতন ব্যাপার। রবীন্দ্রনাথের পূজা ও প্রার্থনা পর্যায়ের "মাঝে মাঝে তবে দেখা পাই" গানের কথা স্মরণ করলে দেখবেন কবি লিখেছিলেন, "কেন মেঘ আসে হৃদয়-আকাশে তোমারে দেখিতে দেয় না", এও তাই । আপনার হৃদয় একটি আকাশের মতন, সেখানে নানান চিন্তা ভাবনা মেঘের মতন আসে, কিছু সময় যেন ভেসে বেড়ায়, তারপর মিলিয়ে যায় । আপনার মন আকাশ, আর চিন্তা ভাবনা, ধারণাসমূহ মেঘের মতন ভেসে বেড়ায় । উপনিষদেও "চিদাকাশ" কথাটির ঐরকম একটি ধারণা পাওয়া যায় । এই রকম করে, আপনি যতক্ষণ অবধি ধ্যান করবেন, আপনার মনে একেকবার একেকটি চিন্তা আসতে থাকবে, আপনি তাদের চিহ্নিত করবেন, তারপর আবার ধীরে ধীরে শ্বাসপ্রশ্বাসের দিকে মন নিবদ্ধ করতে থাকবেন । কালক্রমে ক্রমশ এলোমেলো চিন্তা ভাবনার মনে আসা যাওয়া কমে আসবে, মন পুরোপুরি শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রতি নিবদ্ধ হবে। আমি যেভাবে লিখলাম, কথাটা লেখা সহজ, কিন্তু বাস্তবে ব্যাপারটি অমন সহজ নয় । বেশ কয়েকদিন নিয়ম করে ধ্যান করতে থাকলে তখন দেখবেন এই ব্যাপারটি হয়তো কিছুটা সম্ভব হবে, তবে সে হতে দীর্ঘ সময় ধরে আপনাকে প্রায় প্রতিদিন কিছুটা সময় ধ্যানে ব্যয় করতে হবে ।
তার পর লক্ষ করবেন, মন হয়তো কিছুক্ষন এর জন্য শ্বাসপ্রশ্বাসে নিবেশিত হয়েছে । তারপর, শরীরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নানান রকমের ব্যাথা বেদনা সংবেদনা এসে উপস্থিত হবে। আপনি এই অবস্থায় ধ্যান করার অভ্যাসে রণে ভঙ্গ দিতে পারেন, আবার নাও পারেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে হয়তো ক্ষণকালের জন্যে আপনার মনকে শরীরের থেকে "আলাদা" করে নিয়ে ভাবতে শেখাতে হবে যে, এই সাময়িক শারীরিক সংবেদনা নেহাতই শারীরিক ব্যাপার, একে আপাতভাবে শরীরের "হাতেই" ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে । তবে এখানে একটা কথা মনে রাখবেন বলে সব রকমের শারীরিক সংবেদন উপেক্ষা করার বিষয় নয়, কোনটা করার আর কোনটা নয় ধরে নেওয়া যেতে পারে সে বোধ আপনার রয়েছে । বেশ কিছুক্ষন যদি এইভাবে স্থির থাকেন, তখন দেখবেন ঠিক যেমন প্রাথমিক উড়ো চিন্তাভাবনা গুলো প্রথমে জড়ো হয়ে তারপর ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেল (অবিশ্যি মিলিয়ে আর গেলো কোথায়, মনের গভীরে কোথাও সে রয়ে গেলো, শুধু আপনাকে আপনার ধ্যান থেকে সরিয়ে দিতে পারল না), এই শারীরিক ব্যাপারগুলো সেইরকম, উদিত হবে, কিছুক্ষন জ্বালাতন করবে, তারপর অস্তমিত হবে। তারপর আবার যখন আপনার শ্বাসপ্রশ্বাসের দিকে মনোনিবেশ করেছেন, তখন আবার অন্য রকমের কিছু মানসিক চিন্তা ভাবনার উদয় এবং অস্ত হতে থাকবে। এরকম চলতেই থাকবে। ব্যাপারটি অনেকটা এইরকম,
এখন, এই যে ধরুন মনের মধ্যে একেকটি ভাব চক্রাকারে চলতে থাকছে এবং একে যদি আপনি নিয়ম করে প্রতিনিয়ত ধ্যান করে যেতে থাকেন, বিশেষ করে এই যে নানান রকমের ভাব উদিত হচ্ছে, তা থেকে আপনি নিজেকে সরিয়ে রাখতে সক্ষম হন, কোনো রকম আলাদা করে ভালো মন্দর বিচারবোধ দিয়ে তাকে না দেখেন, এই ব্যাপারটিই মনোনিবেশিত ধ্যান যাকে ইংরেজি পরিভাষায় mindfulness meditation বলা হয় । একে যদি আপনি মাস দুয়েক নিয়ম করে চালিয়ে যেতে সক্ষম হন, আপনি "নিজের মধ্যে" দুটি ব্যাপার লক্ষ করবেন ১: এক, আপনার শারীরিক, মানসিক বা চেতনায় যে সমস্ত সংবেদন আসবে, তার কোনটির প্রতি কতটা মনোসংযোগ করবেন, আপনি স্বয়ং তার নিয়ন্ত্রক, অর্থাৎ, ক্রমাগত আস্তে থাকা অনুভূতি গুলো আপনাকে আপনার একাগ্রতা থেকে সরাতে সক্ষম হবে না । দুই, এই যে আপনার বিভিন্ন রকমের অনুভূতি, সে যা হোক, ব্যাথা, বেদনা,মানসিক উদ্বেগ, বিষন্নতা, প্রতিটির প্রতি আপনার এক ধরণের ঔৎসুক্য বলুন, কৌতূহল বলুন, এমন একটা সম্পর্ক স্থাপিত হবে, যেন আপনি আর তারা আলাদা, আপনি ও আপনার অনুভূতি, আপনার মন এক নয়, ব্যাপারটির উপলব্ধি হবে । বিশেষ করে, যত দিন যাবে, তত ক্রমশ নিজের মধ্যে নজর করবেন মনের মধ্যে এক ধরণের পরিবর্তন আসছে যে আপনি যা ছিলেন, তার তুলনায় আরো অনেক নিস্পৃহ ও শান্ত হয়ে পড়ছেন । আপনাকে বাইরে থেকে দেখলে হয়তো কেউ বুঝতে পারবে না, সে পরিবর্তন অন্তরের পরিবর্তন । আপনার উদ্বেগ, রাগ, একই কথার চর্বিতচর্বন, এই ধরণের চিন্তা ভাবনা গুলো ক্রমশ কমতে থাকবে । সে ধরণের পরিবর্তন হয়তো আপনি নিয়মিত ধ্যান না করলে হত না, আর আপনি যদি ধরুন কয়েক সপ্তাহ ধ্যান করা বন্ধ করে দেন, আপনি আবার আপনার পুরোনো অবস্থায় ফিরে যাবেন । এই ব্যাপার গুলো থেকে মনে হতে পারে আপনার অন্তরের যে পরিবর্তন তাতে ধ্যানের একটা প্রভাব রয়েছে ।
স্নায়ুবিজ্ঞানের কথাটা আসছে কেন?
এই ব্যাপারগুলো যেহেতু সাধারণ মানুষের মধ্যে লক্ষ করা যায়, স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন ওঠে যে কি কারণে এমন হচ্ছে? তাহলে কি ধ্যান ব্যাপারটি কোন ভাবে আমাদের চেতনায় একটা পরিবর্তন আনছে? তাই যদি হয়, তাহলে তাকে কিভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে? যেহেতু মস্তিষ্ক এবং চেতনার কথা উঠছে, তাই স্নায়ু এবং সেই সূত্রে স্নায়ুবিজ্ঞানের বিষয়টিও আসছে । সেই সূত্রে যে প্রশ্নগুলো অবধারিত ভাবে আসবে, ধ্যান যদি/হয়ত "কাজ" করে, কিন্ত তার কারণ কি? এখন, চিকিৎসাবিজ্ঞানে এমন অনেকবার হয়েছে যে প্রামাণ্য তথ্য মিলেছে, কিন্তু তার মূল কারণ কি জানতে বহু সময় পেরিয়েছে । হাতের কাছে চটজলদি উদাহরণ ১৮৫৪ সালে ব্রিটিশ চিকিৎসক জন স্নো সাহেবের লন্ডনে কলেরা মহামারীর প্রতিকার । যখন তিনি প্রতিকার করেছিলেন, তখন কলেরার জীবাণু কি তাই নিয়ে স্পষ্ট ধারণা ছিল না, কলেরার জীবাণু আবিষ্কার করবেন ১৮৮৩ তে রবার্ট কখ (তার সঙ্গে অবশ্য কলকাতার একটি যোগাযোগ আছে, এখানে সে সব আলোচনার অবকাশ নেই) । এইরকম আরেকটি আবিষ্কার, অষ্টাদশ শতাব্দীতে, ১৭৪৭ সালে ব্রিটিশ চিকিৎসক জেমস লিন্ড স্কার্ভি অসুখের চিকিৎসা করার জন্য এর নাবিকদের লেবু খাবার পরামর্শ দেওয়া ও ১৯৩৩ সালে চার্লস কিং এর ভিটামিন সি আবিষ্কার করবেন । অতএব চিকিৎসাবিজ্ঞানের ইতিহাস ঘাঁটলে এমন অনেক উদাহরণ পাওয়া যাবে যেখানে ডাক্তাররা কিছু একটা লক্ষ করছেন, রোগীদের পরামর্শ দিচ্ছেন, পুরো ছবিটা তৎক্ষণাৎ জানা যায় না, পরে জানা যাবে । এই ধরণের ব্যাপারগুলো কেন্দ্র করে আজকের দিনের evidence based medicine গড়ে উঠেছে, কাজেই আজকে ধ্যান কেন কাজ করে, তার একেবারে ঠিক মূল্যায়ন যদি আমরা নাও জানি, কাল যে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে না, কেউ বলতে পারেন না । সে সব পরের কথা, আপাতত যে বিষয়টি নিয়ে শুরু করেছিলাম,তার উত্তর খোঁজা যাক,যে, এই যে মনোনিবেশিত ধ্যান (mindfulness meditation ) এর কথা আলোচনা করা হচ্ছে, এর সঙ্গে মনোবিজ্ঞান, সাইকিয়াট্রি, চিকিৎসা, এমনকি স্নায়ুবিজ্ঞান কে জড়ানোর কারণটি কি? এই ধরণের ব্যাপারগুলো কারা শুরু করেছিলেন এবং কোথা থেকে শুরু হয়েছিল?
অন্তত বাংলায় বা বাঙালির পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রশ্নগুলো অবান্তর নয় । কারণ ধ্যান ব্যাপারটা আমরা যতদূর বেশির ভাগ সাধারণ মানুষ বুঝি তাতে সাধু বা ধরুন, সাধু সন্তদের ভেক ধরে যারা ধর্মের বা ধর্মের "ব্যবসার" সঙ্গে জড়িত, এই সমস্ত লোকজন লোক দেখানো ধ্যান ইত্যাদি করে থাকেন । দুঃখের বিষয়, এদের সবাই যে সৎ , এমন বলা যাবে না, অনেকেই নানারকম অলৌকিক ব্যাপার স্যাপার নিয়ে মানুষকে হতচকিত করে ঠকিয়ে দেবার চেষ্টা করেন, শুধু তাই নয়, যুক্তির বদলে, তর্কের বদলে, এরা চান মানুষ এদের বিশ্বাস করুন, যার জন্য এমনিতেই যুক্তিবাদী লোক এদের ব্যাপারে বিরক্ত , বিশ্বাস করার প্রশ্নই ওঠে না । আরো একটা ব্যাপার রয়েছে । মনে করুন যদি ধ্যান ব্যাপারটায় মানুষের সত্যি সত্যি মানসিক পরিবর্তন হয়ও, যারা ধর্মের ব্যবসায়ী, তারা ব্যাপারটাকে "ধর্মীয় কীর্তি" বলে চালিয়ে দেবেন, সে পরিবর্তনের পশ্চাৎপটে নিয়মিত ধ্যান করার একটা "মনস্তাত্বিক" ব্যাপার আছে, সেই প্রসেস বা সেই প্রচেষ্টাকে সেভাবে এরা গুরুত্ব দেবেন না । এই সমস্ত নানান কারণে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, যে হঠাৎ মনোবিদ, স্নায়ু বৈজ্ঞানিক, ডাক্তার, যারা পেশাগত ভাবে বিজ্ঞান চর্চা করেন, এরা এইসব নিয়ে কেন মাথা ঘামাচ্ছেন । তো এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে দেখতে দুটি ভিন্ন বিষয়ে লিখতে হয়, দুটিই এই ধরণের ধ্যানের সঙ্গে সম্পৃক্ত । স্নায়ুবিজ্ঞানের সূত্রে ধ্যানের তাৎপর্য নিয়ে লেখার আগে ধ্যান ও স্নায়ুগত আরো দুয়েকটা ব্যাপার দেখা যাক: (১) একটা ধ্যান এবং Flow (জানিনা, বাংলায় ইংরেজির ফ্লো কথাটিকে হয়তো প্রবাহ বলা যেতে পারে), (২) ধ্যান এবং আধুনিক মনোবিজ্ঞানে ও চিকিৎসায় তার তাৎপর্য ।
(এর পরের পর্বে বাকিটা, চলবে )
--- তথ্যপঞ্জী ১) Keng SL, Smoski MJ, Robins CJ. Effects of mindfulness on psychological health: a review of empirical studies. Clin Psychol Rev. 2011 Aug;31(6):1041-56. doi: 10.1016/j.cpr.2011.04.006. Epub 2011 May 13. PMID: 21802619; PMCID: PMC3679190পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
বোঝার ভুল? | 97.8.***.*** | ২৮ জুন ২০২৪ ২১:৫৫533839
@শ্রমিক শ্রেণীর অগ্রগামী বাহিনী
দেবাশিসবাবু আর যাই হোক, "জ্যোতিষ , জন্মান্তর এসবে বিজ্ঞান খুঁজে পাচ্ছেন" না। উনি সম্ভবতঃ চোখে আঙুল দিয়ে দেখাতে চেয়েছেন যে চাইলে অনেক হাবিজাবি জিনিসেও "সায়েন্টিফিক রিসার্চের" রেফারেন্স বার করা সম্ভব। খেয়াল করে দেখুন, নতুন টই খোলা হয়েছে যাতে এখন কপালভাতি ইত্যাদি নিয়েও পেপারের রেফারেন্স দেখা যাচ্ছে।
আপনি প্রশ্ন তুলেছেন, এমন হতে পারে কিনা যে, ইতিবাচক ফলাফলটুকু হয়ত শুধু ধ্যান-অভিজ্ঞদের ক্ষেত্রেই ঘটছে, এবং, মেটা-অ্যানালিসিসে সবাইকে ধরে একসাথে দলা পাকানোর ফলে ওইটুকু ইতিবাচক ফল সমস্ত পরীক্ষাধীন ব্যক্তিদের ঘাড়েই চেপে গেছে, যা এমনিতে হবার কথা ছিল না। আমার মতে, প্রশ্নটি যথার্থ। কিন্তু, আরেকটু এগিয়ে ভেবে দেখতে অনুরোধ করি। এ প্রশ্নটাকে কি আরেকটু গোড়া থেকে করা যায় না?
মানে, ধরুন, এমন যদি হয় যে, দুর্বল ডিজাইন বা বিশেষত কন্ট্রোল-এর ফলে ত্রুটিপূর্ণ ইতিবাচক ফলাফল আসছে, এবং এই জায়গাটা ঠিক করলেই ধ্যান-অভিজ্ঞ বা ধ্যান-আনাড়ি সবার ক্ষেত্রেই এফেক্ট সাইজ শূন্যের দিকে এগোবে --- তাহলে?
আমার তো সাধারণ বুদ্ধিতে মনে হচ্ছে, এখানে প্লাসিবো এবং হথর্ন --- দু রকমের প্রভাবই কাজ করবার কথা, এবং সেগুলো তাড়াবার পক্ষে কন্ট্রোল খুব একটা ভালভাবে নেওয়া হয়নি। অরিনবাবু আশ্বাস দিয়েছেন যে এখানে ওই দুই প্রভাব কাজ করবে না, কিন্তু আমি তার কারণ খুব ভাল বুঝতে পারিনি।
আপনি কিন্তু 'ভাববাদী মদিরা'-র তালিকায় শুধু জ্যোতিষ আর জন্মান্তর ঢুকিয়ে হুমোপাখি বাদ দিলেন। এ কি অবিচার নয়? অথচ, হুমোপাখি ওষুধেও মদিরা থাকে। অবিশ্যি, বেশি না, এট্টু এট্টু।
মনে করুন মেডিটেশনের ("মেডি") সঙ্গে এক্সিকিউটিভ ফাংশনের ("একস") সম্পর্ক নিরূপনের গবেষণা হচ্ছে। তো এতে একটা ব্যাপার বোঝা যাচ্ছে যারা অনেকদিন ধরে মেডি অভিজ্ঞ, তাদের মেডি ক্ষমতা বেশী (মেডি++) আর একই রকম ভাবে যাদের জীবন অভিজ্ঞতা (অভি++) বেশী, তাদের একস ও বেশী (একস++)। এখন জীবনের অভিজ্ঞতা মেডির অভিজ্ঞতা ধরুণ মোটামুটি সমার্থক ধরে নিন (যুক্তির খাতিরে)। তার মানে, আঁক কষলে দাঁড়াবে:
অভি++ --> একস++
অভি++ --> মেডি++
মানে, এক কথায়,
মেডি <-- অভি --> একস
এবার ধরুন কেউ মেডিটেশনের সঙ্গে একস নিয়ে স্টাডি করতে গিয়ে পেল যে
মেডি++ --> একস++
মানে, যারা বেশী বেশী মেডি করছে তাদের একসওবেশী দেখা যাচ্ছে। তার মানে মেডিটেশনের জন্য একস বেশী হয়েছে?
না।
তাদের মধ্যে যারা বেশী অভিজ্ঞ তাদের কারণে এরকম একটা ব্যাপার দেখা যাচ্ছে। তা, এই ব্যাপারটাকে "কন্ট্রোল" কি করে করবেন? হয় অভির ওপরে randomise করে, যাতে একসপেরিমেনটাল আর কন্ট্রোল গ্রুপে একই রম অভিজ্ঞ লোক থাকেন, না হলে ম্যাচিং করে, না হলে মালটিভ্যারিয়েট মডেলিং করে, আর তাও না হলে সাবসেট , মানে শুধু তাদের ওপর, যারা কম বা বেশী অভিজ্ঞ, সেই রকম লোক নিয়ে স্টাডি করে। আমরা এরকম লিখব,
মেডি --> [অভি] --> একস
কন্ট্রোল করার পর যদি দেখা যায়, তখনো
মেডি++ --> একস++
তখন বলতে হবে মেডির হয়ত কোন প্রভাব থাকতে পারে যেটা অভিজ্ঞতা দিয়ে ব্যাখ্যা করা যাবে না।
এখন এরা যেহেতু meta analysis করছে, তাই হয়ত আলাদা করে সাবসেট analysis করেছে।
আপনি চাইলে এদের কাছ থেকে মনে হয় raw data নিয়ে একটা mixed model টাইপের কিছু করে চেক করতে পারেন, যেমন
আলাদা করে আপনাকে নিজের ডাটা সংগ্রহ করতে নাও হতে পারে।
বাকী রইল ছোট এফেক্ট সাইজ। আসলে একসিক ফাংশন এতটাই কমন যে, এর ভ্যারিয়েশনকে নানা ভাবে ব্যাখ্যা করা যায়, তার মধ্যে মনে করুন মেডিটেশন করা না করা একটা ব্যাপার মাত্র। খুব বড় এফেকট সাইজ হলেই বরং সন্দেহ হত, :-)
আমি আপনার দেওয়া meta analysis টার full text টা পড়ে উঠতে পারিনি, আমাদের এখানে এখন সকাল, হয়ত re-analysis করে দেখা যেতে পারে।
@দেবাশিসবাবু, আপনি দেখলাম কতগুলো পেপারের উদাহরণ দিয়েছেন। হয়ত বলতে চাইছেন দেখুন হোমিওপ্যাথি টেলিপ্যাথি নিয়ে পেপার পাবলিশ করেছে,তাই বলে এগুলোও কি বৈজ্ঞানিক?
এখন শুধু গবেষণা করে পেপার পাবলিশ অরলেই কী আর বৈজ্ঞানিক বলা চলে? আপনি যদি এই। পেপারগুলোর সাইটেশনের সঙ্গে এদের গবেষণার গলদগুলোও উল্লেখ করতেন,তাহলে বোঝা যেত যে কেন এগুলো প্রকাশিত হলেও একে ঠিক ব্যাপারগুলো র ভ্যালিডেশন বলা চলে না।
যে কারণে এতগুলো কথা লেখা।
বিজ্ঞানিরা কিন্তু কোন কিছুই অবজ্ঞা করেন না,শুধু ধৈর্য ধরে কৌতূহল প্রকাশ করে পর্যবেক্ষণ কলরে দেখতে থাকেন।
কাজেই যেখানে peer reviewed journal এ যাই প্রকাশিত হবে, আমরা (বিজ্ঞানমনস্করা) পড়ব, শেয়ার করব, আলোচনা করব, লিখিত কথাগুলোকে তাদের প্রাপ্য সম্মানটুকুই দিতে পারি, যেটা ভুল, সেইটুকু ধরিয়ে দেবার বাইরে আর তো কিছু করার থাকে না।
বা থাকে হয়ত, সেটা আমার মত লোকের কর্তব্য বলে আমি মনে করি না।
@দেবাশিসবাবু, ২২:৩৯, Hawthorne Effect হচ্ছে যে কেউ যদি আমাকে 'লক্ষ' করতে থাকে, আর আমি যদি সেটা টের পাই, আমি আমার আচরণ পরিবর্তন করব। এবার মেডিটেশন আর মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে এই ব্যাপারটা আলবাৎ হবে।
কিন্তু।
গবেষণার সময়, বিশেষ করে randomised control trial এর সময় এই যে randomisation procedure, এতে করে যেহেতু উভয় গ্রুপে ব্যাপারটা এক রকম করে distributed হয়ে যায়, যখন গবেষণা পরবর্তী analysis করা হয়, তখন এই ব্যাপারগুলো controlled হয়।
যে গবেষণায় experimental design হয় না, সেখানে Hawthorne Effect এর প্রভাব থাকতে পারে, তবে সেক্ষেত্রে কি ধরণের outcome দেখা হচ্ছে, সেই ব্যাপারটি গুরুত্বপূর্ণ।
cognition | 199.255.***.*** | ২৯ জুন ২০২৪ ০৩:৩৩533850
লেখক এখনও পর্যন্ত একটাও রেফারেন্স দিতে পারেননি যেখানে ধ্যানের ফলে মস্তিষ্কে কি প্রভাব পড়ে এর বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ কজালিটি, কোরিলেশন নয়। ওসব কন্ট্রোল ট্রায়াল উল্লেখ করে বিশেষ লাভ নেই। এইসব ধ্যান-ট্যান জাতীয় ধোঁয়াটে বিষয়গুলিকে রিগোরাসলি ডিফাইন না করে আদৌ ঠিকঠাক এক্সপেরিমেন্ট ডিজাইন করা যায় কিনা সন্দেহ আছে। এমনিতে বাজারে মেশিন লার্নিং আসার পর এসব বেইসিয়ান এনালিসিসের লোক প্রচুর। তবে ওই আর কি, স্ট্যাট খুব গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলেও উহা বিজ্ঞান নয়। যদি মেডিক্যাল সায়েন্সের রিসার্চ মেথডোলজির সঙ্গে এই ধ্যান-ট্যানের গবেষণা পদ্ধতি তুলনা করা হয়, দেখা যাবে মেডিক্যাল সায়েন্সে সবকিছুর কার্যকারণ ব্যাখ্যা করার তত্ব আছে। ধ্যানের পিছনে কোনো বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব নেই।
না, cause-effect ধরণের প্রামাণ্য গবেষণা দেওয়া যায়নি কারণ ঐ ধরণের অকাট্য প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। এখন অবধি কোরিলেশন থেকে কতটা কার্যকারণ হতে পারে সেই ধারণাটুকু নিয়েই আলোচনা হতে পারে।
ধ্যানের "পেছনে" বলতে কি বলতে চাইছেন? এই যে তত্ত্ব "নেই" বলছেন,এরকম মনে করার কারণটি কি? তত্ত্ব মানে যদি থিওরি বোঝাতে চান, তাহলে সব কিছুরই একটা না একটা থিওরি থাকে তো। ধ্যানের ও নিশ্চিত করে একটা থিওরি আছে। সাইকোলজির প্রেক্ষিতে সে থিওরি মনের বিবিধ ধারণার মধ্যে একটি সমন্বয় সাধন।
cognition | 199.255.***.*** | ২৯ জুন ২০২৪ ০৪:৪৬533854
দেখুন তত্ত্ব দিতে গেলে আগে ধ্যান নামক ঘটনাটিকে ডিফাইন করতে হবে, তাই না? দেবাশীষ বাবু আগে কোথাও বোধহয় লিখেছিলেন, এক সেকেন্ড চোখ বন্ধ রাখলে সেটা ধ্যান কিনা। আবার ধরুন ঘুমকে কি আপনি ধ্যান বলবেন? সম্ভবত না। আপনি বলবেন ঘুমে মানুষ অচেতন থাকে। তাহলে আবার চেতনা জিনিসটা ডিফাইন করতে হবে। ব্যাপারটা সামান্য, ওই ট্যুরিংয়ের ক্যান মেশিন থিংক? প্রশ্নটির মত। চিন্তা ব্যাপারটাকে সংজ্ঞায়িত না করতে পারলে এ প্রশ্ন অর্থহীন। যেমন এরোপ্লেন কি ওড়ে? এর উত্তর হয় না যতক্ষণ না ওড়া ব্যাপারটার আপনি একটা সংজ্ঞা নির্ধারণ করছেন। তেমনি ধ্যান কি মানুষের উপকার করে? এটা অর্থহীন প্রশ্ন, কেননা ধ্যান ব্যাপারটার কোন বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞা আপনি দিতে পারবেন না। খেয়াল করুন প্রশ্নগুলো ভুল বা ঠিক বলছি না, বলছি অর্থহীন অর্থাৎ ননসেন্স। যেমন ফ্রি উইল আছে কিনা একটা ননসেন্স প্রশ্ন কারণ ফ্রি উইল টার্মটা আপনি ডিফাইন করতে পারবেন না।
ফলে বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব নেই শুধু নয়, তত্ত্ব পাবারও কোন আশা নেই এই লাইনে। ধরুন আপনি কন্ট্রোল ট্রায়াল করবেন একটা ওষুধে কাজ হয় কিনা। তো কিছু লোককে দেবেন। একজন লোক ওষুধটা খেল কিনা এইটের আপনি অবজেকটিভ উত্তর দিতে পারেন। কিন্তু ধরুন একজন লোককে ধ্যান করতে বললেন। কি করে মাপবেন যে সে ধ্যান করছে কিনা। প্রশ্নটার জবাব 'লোকটা নিজেই তো বলছে' হতে পারেনা, কারণ এইটে সাবজেকটিভ। আপনার হাতে কোন ডিটেক্টর আছে কি যা দিয়ে আপনি ডিটেক্ট করতে পারেন লোকটা ধ্যান করছে? একটু ভাবলেই বুঝতে পারবেন এ নিয়ে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে এগোনোই অসম্ভব।
প্রচুর এরকম প্রশ্ন করা যায়, বিশেষত দর্শনে, যা ননসেন্স। আর রিসার্চ প্ৰব্লেমটাই ননসেন্স হলে বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব মিলবে কি করে?
কেন সব দার্শনিক প্রশ্নই বৈজ্ঞানিক গবেষণার বিষয় হতে পারেনা তা বুঝতে এই আলোচনাটি দেখতে পারেন।
[আচ্ছা, আমার এই টইতে এটাই শেষ কমেন্ট, কারণ ডাইগ্রেশন হয়ে যাচ্ছে + যা বলার বলা হয়ে গেছে + ম্যালা কাজ পড়ে।]
@দেবাশিস-বাবু, একদম ঠিক ঐটাই বলতে চাইনি। আমি ইনডিভিজুয়াল আর্টিকলের থেকে মেটা-অ্যানালিসিসে বেশি বিশ্বাস করি কারণ এই ধরণের বিভিন্ন বায়াসড স্টাডি ফিল্টারড হয়ে যায়। ঐ উপরে যেটা লিংক করেছিলাম তাতেও তাইই হয়েছে, যেখানে যেখানে অথর-দের মনে হয়েছে বাজেরকমের বায়াস থাকতে পারে, সেইগুলো সব ধাপে ধাপে বাদ দিয়েছেন। এইটা খুব কঠিন এবং শ্রমসাধ্য ব্যাপার।
আমার বক্তব্য এই যে, এরকম একটা মিসইণ্টারপ্রিটেশন বা "জাম্প-দ্য-গান" হওয়ার সম্ভাবনা আছে এমন বিষয়ে যে কোনো পেপার পড়লে এইসব পোটেনশিয়াল বায়াস মাথায় রাখা উচিত। আর এটা তো পাবলিক ফোরাম - আর আমার ধারণা, ধারণা কেন বিশ্বাস যে যাঁরা এই টই পড়ছেন, তাদের অলরেডি একটা জোরালো বিশ্বাস আছে, তাই এসব বলা আর কি।
@ অরিনদা, হ্যাঁ, এই মেটা-অ্যানালিসিস পেপারটা ডেটা ওপেন সোর্স - https://osf.io/pdtwv/, এটা ভালো। দেখবো উইকেণ্ডে। কিন্তু, সে তো শুধু "মেটা"-ডেটা, আপনি যেমন বললেন ঐ রকম মিক্সড এফেক্ট মডেলিং বা কোনো কিছুই করতে গেলে ইনডিভিজুয়াল পেপারের ডেটা লাগবে। সে হওয়ার জো নেই। বেশিরভাগ-ই পেপারের ডেটা শেয়ার করা নেই। অন্তত সহজে খুঁজে পাওয়ার মত না। সে আর কী করা যাবে? রিপ্রোডিউসিবিলিটি আজকাল আগের থেকে বেশি, কিন্তু তাও বহু দূর।
বাকি আপনি যা বলেছেন সেগুলো সব-ই বুঝলাম, এগুলো তো আমাদের ব্রেড-অ্যাণ্ড-বাটার, কিন্তু আমার যা সন্দেহ সেটা থাকছেই। অবভিয়েট করার মত এভিডেন্স পাই নি।
আর আপনি যেটা বললেন, "খুব বড় এফেকট সাইজ হলেই বরং সন্দেহ হত", সে তো দেখিই, কিন্তু তাই বলে কি ছোট-মাঝারি দেখে ভ্রূ কোঁচকাবো না? :)
আমি ক্রাইম মডেলিং-এও কিছু কাজ করি, কী ভাবে "বিল্ট এনভায়রনমেন্ট" ক্রাইমকে প্রভাবিত করে, তাতে কোনো মডেল-ই বিশাল কিছু ব্যাখ্যা করতে পারে না, কারুর-ই এফেক্ট সাইজ় বা গুডনেস-অফ-ফিট বড়ো না, আর মেকানিজ়ম-ও তেমন জানা নেই। এর-ও বাজার-চলতি নাম "এভিডেন্স-বেসড পোলিশিং"। এবার এই সব স্টাডি-তে কি বায়াস থাকে না? সাঙ্ঘাতিক থাকে। আমি হট-স্পট অ্যানালিসিসের বায়াস নিয়ে একটা ছোট্ট পপুলার সায়েন্সি আর্টিকেল-ও লিখেছিলাম এক কালে। এক-ই রকম কারণে। পেপার অজস্র - টুল-ও প্রচুর - কিন্তু সাবধানে পা ফেলতে হবে।
আর ঐ এগজ়িকিউটিভ ফাংশনের মত, ক্রাইম কে অগুণতি জিনিষ প্রভাবিত করে, সব মডেলে ঢোকানো সম্ভব না, মেজ়ার-ও করা যায় না। যেমন, ফাঁকা পার্কিং লট বা লিকার স্টোর বা পন-শপ এগুলো সব যে ক্রাইম অ্যাট্রাক্টর সে সহজেই দেখা যায়। কিন্তু, "কেন?", মানে যাকে "মেকানিজ়ম" বলে সেটা ব্যাখ্যা করা কঠিন।
আবার, রিসেন্টলি সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার স্কিম (যেমন কন্ডিশনাল ক্যাশ ট্রান্সফার) - চাইল্ড ম্যারেজ ইত্যাদি নিয়ে একজনের সাথে কাজ করছি। তাতেও ঐ। এফেক্ট সাইজ় ছোটো বা মাঝারি - মেকানিজ়ম অস্পষ্ট। কিছু কিছু থিওরি আছে - ভাসা ভাসা। (আগে ভাটে বলেছিলাম বোধহয়।)
এগুলো তো থাকেই, কিন্তু এই জন্যেই আমরা খুব যত্ন নিয়ে কজ়াল ল্যাঙ্গোয়েজ বর্জন করে লিখি, নিঃসন্দেহ হই না। এই আর কি।
"এই জন্যেই আমরা খুব যত্ন নিয়ে কজ়াল ল্যাঙ্গোয়েজ বর্জন করে লিখি, নিঃসন্দেহ হই না। এই আর কি। "
Causality জটিল বিষয়, অনেক ক্ষেত্রেই দেখবেন এর কোন সহজ সবাই মেনে নেবে এমন একটা ব্যাপার হবে না। আপনি খুবই সঙ্গত ভাবেই causal language বর্জন করে লেখার যে ব্যাপারটা লিখেছেন খূবই তাৎপর্যপূর্ণ।
তা সেটা একটা দিক।
এই অনিশ্চয়তা নিয়ে ভাব প্রকাশের আরো একটা দিক আছে, সেটা নিয়ে কিছু লেখা যেতে পারে।
যেমন ধরুন, সিগারেট খেলে লাং ক্যান্সার হতে পারে অনেকে জানেন, বা মানুষের কীর্তিকলাপের দরুন ক্লাইমেট চেঞ্জ হচ্ছে, বিশ্বের উষ্ণায়ন হচ্ছে এই ব্যাপারটাও অনেকে জানেন, কিন্তু দুটোই সবাই মানেন না। এবং উভয় ক্ষেত্রেই কার্য কারণ গত সম্পর্ক কেউ একবাক্যে মেনে নেন নি (বা নেন না )।
অন্যে পরে কা কথা, স্বয়ং রোনাল্ড ফিশারের মতন দিকপাল সিগারেট ইন্ডাস্ট্রির হয়ে আজীবন লড়ে গেলেন এই বলে যে causal প্রমাণ কোথায় যে সিগারেট খেলে ক্যান্সার হয়? :-), বেন ক্রিস্টোফারের একটি চমৎকার ব্লগ পোস্ট,
পল স্টোলি র পেপার আছে (এছাড়াও একাধিক লেখালিখি আছে) এই নিয়ে
আমাদের সকলেরই তো কমবেশি একটা বিশ্বায়িত দর্শন রয়েছে, যেখানে যে ব্যাপারগুলো কে আমরা আমাদের জীবন দর্শনে বিশ্বাস করি, আপাত ভাবে তার বাইরে কেউ কিছু বললে প্রথমেই মনে হয়, এ ভুল বকছে, একে শুধরে দেওয়া দরকার। যাঁরা খুব সচেতন, তাঁরা নানান রকমের যুক্তি তর্ক বিস্তার করে যে ব্যাপারটা existing, তাকে defend করতে থাকেন (;-), যে কারণে আলফা এরর পাঁচ পার্সেন্ট আর বিটা এরর ২০%, এমনি বললাম, status quo ব্যাপারটাকে মেনে নেওয়ার একটা আকর্ষণ আছে, এক ধরণের নিশ্চিন্ততা আছে) ।
এখন "ধ্যান" ও বিজ্ঞান জাতীয় নাম দিয়ে কিছু লিখলেই হবেই হবে। কিচ্ছু করার নেই, :-), ধ্যান শব্দটা পড়লেই মনের মধ্যে এমন সব imagery চলে আসে, তখন আর কিছুতেই ব্যাপারটাকে যে একটা "নির্মোহ" দৃষ্টিতে নিজেদের প্রেজুডিস বাদ দিয়ে দেখা যেতে পারে, আর মনেই হয় না। তখন মনে হয়, আরো একটু একিউরেট কিছু না হলে আমি ঠিক মেনে নেবো না। যেকোন ক্লাইমেট চেঞ্জ denier কে জিজ্ঞেস করুন, যে কোন টোবাক্কো লবিস্টকে জিজ্ঞেস করুন, এই ধরণের উত্তর পাবেন (মানে আমি বলছি না যারা ধ্যান ব্যাপারটির বৈজ্ঞানিক গবেষণা কে মেনে নিতে প্রস্তুত নন তারা ওই গোত্রের লোকজন,কিন্তু তর্ক দেবার ব্যাপারে এই একটা মোটিফ দেখা যায়)। এইসব নিয়েই এগোতে হয় তো। এ ব্যাপারে আপ্তবাক্য বলেছিলেন সার অস্টিন হিল, তাঁর ১৯৬৫ সালে কার্যকারণ নিয়ে এক অমোঘ বক্তৃতায়, যেখান শেষের কয়েকটা লাইনে তিনি বলেছিলেন,
"All scientific work is incomplete - whether it be observational or experimental. All scientific work is liable to be upset or modified by advancing knowledge. That does not confer upon us a freedom to ignore the knowledge we already have, or to postponethe action that it appears to demand at a given time. Who knows, asked Robert Browning, but the world may end tonight? True, but on available evidence most of us make ready to commute on the 8.30 next day"
দেবাশিসবাবুর resistance টা কিছুটা এখন বুঝতে পারছি, তাঁর একটি নির্দিষ্ট ভিউপয়েন্ট রয়েছে, যেহেতু তাঁর ধারণা ধ্যান ব্যাপারটি mainstream medicine এর অন্তর্গত নয় (সেটি যদিও সর্বাংশে ঠিক নয়, কারণ সাইকিয়াট্রি ও মনোবিজ্ঞানে ধ্যান এবং নাম না করে বৌদ্ধ কনসেপ্ট যেমন Acceptance Commitment Theory বিস্তর চলে), অতএব এরকম একটি বিষয়কে বিজ্ঞানের চোখে দেখার বিষয়টি তিনি মেনে নিতে পারছেন না। ধ্যান ও হোমিওপ্যাথি ইত্যাদিকে এক করে ফেলছেন।
এখন হয় একটি generalist forum এ এইগুলো নিয়ে লিখতে নেই, না হলে বিরূপ মন্তব্য হজম করতে হবে। দ্বিতীয়টাই সই।
Cognition বাবুকে দুটি কথা বলার ছিল। আপনার মূল আপত্তি মনে হয় এই নিয়ে আপনার ধারণা "ধ্যান" বা যেটা আমাদের এখানে বিচার্য "mindfulness meditation" এই ব্যাপারটির কোন সংজ্ঞা নিরূপিত হয় নি । এই ধারণাটি ঠিক নয়, কারণ আজ থেকে প্রায় বছর কুড়ি আগে স্কট বিশপ প্রমুখেরা Mindfulness Meditation কথাটির একটি সংজ্ঞা নিরূপিত করেছিলেন, সেটি নিম্নলিখিত প্রবন্ধে "প্রস্তাব" বলে লেখা আছে বটে, তবে তাদের প্রস্তাবনা মোটামুটি যারা এই লাইনে কাজ করেন, তাঁরা ব্যবহার করেন । সেটি এইরকম,
"The first component involves the self-regulation of attention so that it is maintained on immediate experience, thereby allowing for increased recognition of mental events in the present moment. The second component involves adopting a particular orientation toward one’s experiences in the present moment, an orientation that is characterized by curiosity, openness, and acceptance"
(সূত্র: Bishop, S. R., Lau, M., Shapiro, S., Carlson, L., Anderson, N. D., Carmody, J., … Devins, G. (2006). Mindfulness: A Proposed Operational Definition. Clinical Psychology: Science and Practice, 11(3), 230–241. doi:10.1093/clipsy.bph077 )
তারপর বাকি লেখাটিতে এই দুটি অংশ নিয়ে আলোচনা রয়েছে। তার পরের ২০ বছরে এই দুটি অংশ নিয়ে প্রচুর আলাপ আলোচনা লেখালিখি মাপজোক হয়েছে, আমি আর তাদের বিস্তারিত আলোচনার মধ্যে যাচ্ছি না, আপনি বা আপনারা চাইলে নিজেরা খোঁজ খবর করে নিতে পারবেন।
যাই হোক, আমার নিবেদন, যাদের মনে সন্দেহ রয়েছে, সন্দেহ ইত্যাদি নিয়ে নিশ্চিত ভাবে আলোচনা চলুক, তবে আমার প্রস্তাবিত প্রবন্ধের বিষয় মানবশরীরে ও মনে ধ্যানের কি উপকারিতা তাই নিয়ে নয়, ধ্যান বলে যে ব্যাপারটিকে আমরা সচরাচর জানি, সেই ব্যাপারটির সঙ্গে আমাদের স্নায়ু ও মস্তিষ্কের কি সংযোগ নাই নিয়ে। লেখাটা আরেকটু এগোলে আমার মনে হয়ে বিষয়টা অনেকের কাছে মনে হয় আরেকটু গ্রহণীয় হবে।
cognition | 199.255.***.*** | ২৯ জুন ২০২৪ ০৮:৪৪533858
এই লেখার শিরোনামে দেখছি স্পষ্ট লেখা আছে ধ্যান ও স্নায়ুবিজ্ঞান। অর্থাৎ রীতিমত মানবমস্তিষ্কে ধ্যানের কী প্রভাব পড়ে সেইটে আলোচনার প্রতিশ্রুতি। শুরুতে এফএমআরআই ছবিও ছিল। এখন আলোচনা সাইকোলজিতে এসে ঠেকেছে। খুব ভাল কথা। তবে আলোচনার সায়েন্টিফিক রিগর কমছে। নিউরোসায়েন্স ও কগনিটিভ সায়েন্সের তুলনায় মনোবিজ্ঞান বেশ খানিকটা জল মেশানো বলেই জানি।
সংজ্ঞাটি অসংখ্য ধোঁয়াটে শব্দে ভর্তি যার ওপর ভিত্তি করে কোনো রিগোরাস বৈজ্ঞানিক গবেষণা করা সম্ভব বলে মনে হয় না। তবে সাইকোলজি তো ওরকমই।
মাইন্ডফুলনেসের লিটারেচর সম্বন্ধে সম্যক ধারণা নেই। তাই সার্ভে পেপার খুঁজতে গিয়ে দেখলাম 'Chiesa, A. The Difficulty of Defining Mindfulness: Current Thought and Critical Issues. Mindfulness4, 255–268 (2013). https://doi.org/10.1007/s12671-012-0123-4'. এখানে বলছে -
"If one considers the increasing evidence about the clinical benefits and the psychological and neurobiological correlates of current mindfulness based interventions (MBIs), it is surprising that significantly lower effort has been directed towards the achievement of a consensus about an unequivocal operationalization of mindfulness within modern Western psychology. Accordingly, the present review aims to summarize traditional and current perspectives about mindfulness, to discuss the extent to which modern definitions of mindfulness differ from more traditional definitions and, more specifically, the limitations of current questionnaires that are thought to measure mindfulness levels, and to provide suggestions for future research on this topic. In sum, according to authors well versed in the original Buddhist literature, from which several MBIs are overtly or implicitly derived, modern attempts to operationalize mindfulness have consistently failed to provide an unequivocal definition of mindfulness, which takes into account the complexity of the original definitions of mindfulness."
আপনি লিখেছেন "তার পরের ২০ বছরে এই দুটি অংশ নিয়ে প্রচুর আলাপ আলোচনা লেখালিখি মাপজোক হয়েছে।" এই মাপজোকের রেফারেন্স পেলেই চুপ করে যাব। জানতে আগ্রহী কিভাবে ব্রেনে self-regulation of attention and orientation toward one’s experiences মাপা হয়। ও হ্যাঁ, সাইকোলজির evaluation based on self-report questionnaires মাপজোকের মধ্যে পড়েনা।
দেখুন অরিনদা, আপনি যেমন জন স্নো বা অন্যান্য উদাহরণ বলছেন যেগুলো প্রথমে কার্যকারণ সম্পর্ক না থাকলেও, বা মেকানিজ়ম না জানা গেলেও পরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কম-বেশি সকলেই মেনেও নেয়। কিন্তু, এর উল্টোও তো আছে।
এই যেমন আমি ডিউকে পোস্ট-ডক করার সময় জানতে পারি, ঐখানে আগে একটা আস্ত প্যারাসাইকোলজি ল্যাব ছিলো - ই-এস-পি - এক্সট্টা-সেন্সরি-পারসেপশন স্টাডি করা হত। বেশ শোরগোল তুলেই করা হ'ত। "ছিল" কেন, এখনো সেই বাড়িটা দিব্যি আছে। কিন্তু এখন আর ডিউকের পার্ট না, আর সায়েন্টিফিক কমিউনিটিতে কেউ এক্সট্রা-সেনসরি-পারসেপশন কে সিরিয়াসলি নেন না। একসময় নিতো। গাদা টেস্ট ইত্যাদিও হত। সারবত্তা ছিলো না তাই হারিয়ে গেছে।
তবে কি না আমরা কেউ-ই ভবিষ্যতদ্রষ্টা নই। দেখা যাক। হয়তো আমার জীবদ্দশায় একটা হেস্তনেস্ত হবে। না হলে, ভূত হয়েও মেটা-অ্যানালিসিসের পেপারের পাতা ওল্টাবো।
(এই ঠিক করলাম আর বকবক করবো না, কিন্তু লোভ হয়। কিন্তু আর না। এইই শেষ।)
b | 117.194.***.*** | ২৯ জুন ২০২৪ ০৯:০২533860
আমার এই দু চাট্টে কোশ্চেন ছিলো, এখানে যদুবাবু অরিনবাবু ইত্যাদি বড় বড় হনু রয়েছেন , আমি ক্ষুদ্র কাঠবেরালি মাত্র।
প্রশ্নটা ধ্যান ও স্নায়ুবিজ্ঞান নিয়ে নয়, কিন্তু কোরিলেশন/ কজেশন নিয়ে। নেহাৎই পার্সোনাল কৌতূহল । অপ্রাসংগিক মনে হলে কাটিয়ে দিয়ে পারেন।
মেডিক্যাল সাইন্সে অনেক কিছুতেই কি কজালিটি সেরকম ভাবে এস্টাব্লিশ্ড? এমনকি সিগারেট খাবার ব্যানও কি প্রথমে কোরিলেশনাল স্টাডির উপরে বেস করে হয় নি ? এই জন্যেই সম্ভবতঃ রোনাল্ড ফিশারের প্রভূত আপত্তি ছিলো ঐ ব্যান নিয়ে .
ডাক্তার সম্প্রতি আমাকে ব্যথা কমাবার ওষুধ দিয়েছে , তার যে মূল উপাদান, প্রেগাব্লিন । তার সম্পর্কে উইকি লিখছে ঃ
"While the exact mechanism of action of pregabalin is not definitively characterized, is believed that the main action is exhibited specifically by its binding to the α2δ subunit of VDCCs, so that this binding modulates calcium influx at the nerve terminals, thereby inhibiting the release of excitatory neurotransmitters. "
আমি বুঝছি ( হাঃ সেঃর পরে কেমিস্ট্রি যে পড়তে হয়নি আমাকে সেইটাকে আমি এখনো ঈশ্বরের আশীর্বাদ মনে করি, there was amazing unchemistry between us) যেটুকু, সেটা হল, স্নায়ুর সিগনালগুলোকে ঐ কেমিকালটি বাধা দিচ্ছে, কিন্তু কিভাবে হচ্ছে সেটা এখনো জানা যাচ্ছে না। সুতরাং কজ অ্যান্ড এফেক্টের সম্পর্কটি এখানে, এখনও ধোয়াঁশা।
b | 117.194.***.*** | ২৯ জুন ২০২৪ ০৯:০৪533861
ওহ দুজনে আগেই লিখে দিয়েছেন। ধন্যবাদ .
কগনিশন জিন্দাবাদ | 103.249.***.*** | ২৯ জুন ২০২৪ ১০:৫২533862
এই টইতে কগনিশনের মন্তব্যের কোয়ালিটি দেবাশিসবাবুকেও ছাড়িয়ে গেছে, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। চালিয়ে যান। পক্ষে বিপক্ষে সব যুক্তিই উঠে আসুক। যদিও আমি ব্যক্তিগত অভিগতায়ন দেখেছি ধ্যন প্রাণায়াম জন্মান্তর জ্যোতিষ এর সমর্থকরা কেউই যুক্তির ধার ধারে না। বিভিন্ন লজিক্যাল ফ্যালাসি অবলম্বন করে নিজের বক্তব্যকে প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
কগনিশন জিন্দাবাদ | 103.249.***.*** | ২৯ জুন ২০২৪ ১১:০১533864
অভিগতায়ন ---> অভিজ্ঞতা
রঞ্জন | 2402:e280:3d02:20a:2715:2c34:bfa2:***:*** | ২৯ জুন ২০২৪ ১১:৩০533866
আমার গোদাবুদ্ধিতে:
বিজ্ঞান একটি ওপেন এন্ডেড সিস্টেম। ধর্ম নয়।
বিজ্ঞান কখনই অন্তিম সত্য জানি-- এমন দাবি করে না।
ধর্ম করে।
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে প্রথমে অবজার্ভেশন, তারপর
কোরিলেশনের ভিত্তিতে একটি সহ-অবস্থানজনিত কার্যকারণ সম্পর্ক অনুমান করে একটি হাইপোথিসিস দাঁড় করানো হয়।
তারপর কন্ট্রোল মেথডে এক্সপেরিমেন্ট করে তার ভিত্তিতে ওই হাইপোথিসিসকে স্বীকার বা খারিজ করা হয়।
তখন সেটি কোয়ালিটি ভিত্তিক থিওরির মর্যাদা পায়।
কিন্ত পরবর্তীকালে বিপরীত সাক্ষ্য বা নতুন বিশ্লেষণ পাওয়া গেলে আগের থিওরি পরিত্যক্ত হয় এবং নতুন হাইপোথিসিস দাঁড় করানো হয়। তার ভেরিফিকেশন শুরু হয়। এই পদ্ধতি সদা গতিশীল এবং অন্তহীন
কাজেই বিজ্ঞান, ধর্মের বিপরীতে, কখনোই কোন বিষয়ে শেষ কথা বলার দাবি করে না। এটাই বিজ্ঞানের সৌন্দর্য।
আমি আকুপাংচার চিকিৎসার উদাহরণ দিতে চাই। ভারতে এনেছিলেন ডঃ বিজয় বসু। চীন জাপান যুদ্ধে মেডিক্যাল মিশনে গিয়ে শিখেছিলেন।
পঞ্চাশ বছর আগে শরৎ বসু রোডে ওঁর দি হেল্থ নামক চেম্বারে গিয়েছিলাম।
তখন আকুপাংচার চিকিৎসা মূলতঃ কোরিলেশন ভিত্তিক এভিডেন্স্ড মেডিসিনই ছিল। কারণ ছুঁচের খোঁচা শরীরে বা স্নায়ুতন্ত্রে ঠিক কীভাবে কাজ করে তা জানা যায়নি।
আজ, যতদূর জানি, চীনে এটি সরকার দ্বারা স্বীকৃত চিকিৎসা পদ্ধতি।
সিঙ্কোনা পাতার জল খেয়ে ম্যালেরিয়া জ্বর সারানোর , এবং পরে এর থেকে কুইনিন আবিষ্কার!
আমার মনে হয় ধৈর্য্য ধরে অরিনবাবু এবং দেবাশিস বাবু, দুজনের কথাই শোনা উচিত, এবং দুজনকেই বিষয়ভিত্তিক প্রশ্ন করা উচিত; ব্যক্তিগত আক্রমণ নয়।
রঞ্জন | 2402:e280:3d02:20a:2715:2c34:bfa2:***:*** | ২৯ জুন ২০২৪ ১১:৩২533867
কোয়ালিটি নয়, কজালিটি
আকুপাংচার | 103.249.***.*** | ২৯ জুন ২০২৪ ১১:৩৪533868
আকুপাংচারও একটা বাতিল চিকিৎসা ,অল্টারনেটিভ মেডিসিন।হোমিওপ্যাথির মত
ধ্যানের একটা ঠিকঠাক সংজ্ঞা দেবার প্রশ্নটা, যেটা কগনিশন তুলেছেন, সেটা আমার কাছেও প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়। যার সংজ্ঞাই দেওয়া যাচ্ছে না তার প্রভাব কীভাবেই বা অনুসন্ধান করা যাবে --- এ দুশ্চিন্তা আমাকেও তাড়া করে ভীষণভাবেই। এবং, এছাড়াও এ ব্যাপারে আরও অনেক কিছুই আছে, যা নিয়ে আমার দ্বিমত প্রশ্ন সংশয় ইত্যাদি আছে। কিন্তু, এ নিয়ে যদি ক্রমাগত কথা চলতে থাকে, তাহলে গোটা লেখাটা আর কোনোদিনই বোধহয় শেষ করে উঠতে পারবেন না। একটা লেখা যখন আপনি লিখবেন বলে মনস্থ করেছেন, সেটা আপনাকে শেষ করতে দেওয়া উচিত, সে সম্পর্কে আমার মতামত যা-ই হোক না কেন।
তবে, দুটো জায়গায় আমার অবস্থান বুঝতে সম্ভবত আপনার ভুল হচ্ছে, সেটা পরিষ্কার করে নেওয়া উচিত, না হলে আমার বক্তব্য নিয়ে বিভ্রান্তি হতে পারে।
(১) আমার 'ব়্যাশনালিস্ট' অবস্থানের বিপরীতে যখন আপনি আপনার 'এম্পিরিসিস্ট' অবস্থান তুলে ধরছেন, তখন খুব সম্ভবত আমার অবস্থানকে দেকার্তে স্পিনোজা লিবনিৎস প্রমুখ দার্শনিকদের অবস্থানের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলছেন। এই অবস্থানটিকে অ্যাকাডেমিক হিস্ট্রি অফ ফিলোজফিতে 'ব়্যাশনালিজম' বলে চিহ্নিত করা হয়, এবং এর সঙ্গে লক বার্কলি হিউম প্রমুখ অষ্টাদশ শতকীয় দার্শনিকদের পার্থক্যকে আন্ডারলাইন করবার জন্যে দ্বিতীয়োক্তদেরকে 'এম্পিরিসিস্ট' বলা হয়। কিন্তু, বিশ শতক অনওয়ার্ডস, যুক্তিবাদী আন্দোলনের ফিলোজফিকে সপ্তদশ শতকীয় 'ব়্যাশনালিজম'-এর সঙ্গে এক করে দেখা হয় না। বিশ শতকীয় যুক্তিবাদী দর্শন হচ্ছে সমসাময়িক লজিক, ফিলোজফি অফ সায়েন্স, সোশাল সায়েন্স, লিবারেল ওয়ার্ল্ডভিউ ইত্যাদি উপাদান দিয়ে তৈরি এক যৌগ বস্তু। এর মধ্যে 'এম্পিরিসিজ্ম্' আবশ্যিকভাবে অন্তর্ভুক্ত।
(২) আপনি বলছেন, ধ্যান-গবেষণার প্রতি আমার বিরূপ মনোভাবটা মেনস্ট্রিম সায়েন্সের প্রতি আমার কমিটমেন্টের কারণে। কথাটা আংশিক সত্যি, পুরোটা নয়। হ্যাঁ, মূলস্রোত বিজ্ঞানের প্রতি কমিটমেন্ট আছে বইকি। কিন্তু সেটা একটা পদ্ধতিদার্শনিক অবস্থান, মূলস্রোতকে আঁকড়ে থাকার মনো-সামাজিক প্রবণতামাত্র নয়। কাজেই, একে একটা টিপিক্যাল কনফর্মিস্ট/ডেভিয়্যান্ট মডেলে ফেলে সোশিওলগাইজ করা ঠিক না। মূলস্রোত বিজ্ঞান নিছক এককা সামাজিক অবস্থান নয়, তা এভারচেঞ্জিং, এভার সেল্ফরিফ্লেক্টিং, এভার সেল্ফকারেক্টিং। এবং তা সত্ত্বেও, সব সময়েই তার মধ্যে লিগ্যাসি এলিমেন্ট এবং হিউম্যান ফ্রেইলটি অন্তর্ভুক্ত থাকে, সেইজন্যেই এত সতর্কতা। মেইনস্ট্রিম সায়েন্সের মধ্যে যদি এইসব একদমই না থাকত, তাহলে সায়েন্স-ই যথেষ্ট হত, যুক্তিবাদের আর দরকার পড়ত না। সত্যি বলতে কী, সাইকোলজি এবং সাইকিয়াট্রিতে বোধহয় এইসব কিছু বেশিই আছে, অন্যান্য সায়েন্সের তুলনায়। এখানে এখনও স্রেফ লিগ্যাসি প্র্যাকটিস হিসেবেই ফ্রয়েডীয় সাইকো-অ্যানালিসিস চলে, ররশা-ডিএপি-টিএটি গোত্রের প্রজেক্টিভ সাইকোমেট্রি চলে, এবং আরও অনেক কিছুই চলে --- এগেইনস্ট অল এভিডেন্স।
যাই হোক, আপাতত এই শেষ, আর কথা বলছি না, আপনি লেখা শেষ করুন। অনুগ্রহ করে ভুল বুঝবেন না, এটুকুই প্রার্থনা।
আকুপাংচার নিয়ে উচ্চমানের ব্লাইন্ড কন্ট্রোল্ড পরীক্ষা নিরীক্ষা হয়েছে, এবং তা মূলস্রোত বিজ্ঞানের কাছে বাতিল হয়েছে। অবশ্য, আমাদের দেশে এবং চিনে এখনও আইনি চিকিৎসা বলে গণ্য। শুনেছি, চিনদেশে নাকি এখন এই চিকিৎসা শুধু তাকেই দেওয়া হয়, যিনি তা নিতে চান।
cognition | 199.255.***.*** | ২৯ জুন ২০২৪ ১২:৩৬533872
রঞ্জনবাবু, ঠিকই বলেছেন, তবে হাইপোথিসিস টেস্টেবল প্রপোজিশন হতে হবে। নচেৎ উহা ফলসিফাই করা যাবে না, তাই না? ধ্যান কাকে বলব তা যতক্ষণ না ঠিক করতে পারছেন, ততক্ষন কোন টেস্টেবল প্রপোজিশন দিতে পারবেন না। যেমন কনশাসনেস জিনিসটা আপনার আছে আপনি দিব্যি টের পান, কিন্তু কোনো সংজ্ঞা দিতে পারেন না। সেক্ষেত্রে 'হতেও তো পারে বিজ্ঞান একদিন কনশাসনেসের (বা ধ্যানের) ব্যাখ্যা দেবে, অতএব মনের দরজা খুলে বসে থাকি' এটা বলার কোনো অর্থ হয় না। আপনি যদি প্রশ্নটাই ঠিক করে ডিফাইন করতে না পারেন, তাহলে কোনো উত্তর পাবার আশা নেই। উইটগেইনস্টাইন ইত্যাদি আপনি তো জানেন। আর লিখলাম না।
যা বলছেন সবই খুব সেন্সিব্ল্ লাগছে, কিন্তু এই জায়গায় এসে একটু যেন ধাক্কা খেলাম। ধ্যান আর চেতনাকে এক গোয়ালে ঢুকিয়ে দিলেন কি? চেতনা হচ্ছে একটি রিয়েল বায়ো-সাইকো-সোশ্যাল ফেনোমেনন, বিশুদ্ধ বাংলায় বললে, একটি বাস্তব জৈব-মনো-সামাজিক পরিঘটনা। এই বিষয়টি প্রায় সমস্ত মানুষ ও উদ্ভিদকুলের মধ্যে কোনও না কোনও আকারে দেখা যায়, তাকে সংজ্ঞায়িত করা যতই কঠিন হোক। আর ধ্যান হচ্ছে খুব অল্প কিছু মানুষের মধ্যে প্রচলিত এক ধরনের ঐতিহ্যবাহী আচার, যার পেছনে চেতনার এক পরিবর্তিত অবস্থা থাকতে পারে বলে কারুর কারুর দাবি। দুটোর এক্সিস্টেনশিয়াল স্ট্যাটাস কি এক হল?
সারাদিন কাজের ফাঁকে এই থ্রেডটি দেখার আর সুযোগ হয়নি, এখন দেখছি। আপনাদের সবাইকে ধন্যবাদ, খুব ভালো কয়েকটি পয়েন্ট পড়লাম। একে একে উত্তর দেবার চেষ্টা করি, দেখি পারি কি না।
প্রথমেই, দেবাশিসবাবুকে আন্তরিক ধন্যবাদ আপনার ১১:৩৭ মন্তব্যের জন্য
> "... হ্যাঁ, মূলস্রোত বিজ্ঞানের প্রতি কমিটমেন্ট আছে বইকি। কিন্তু সেটা একটা পদ্ধতিদার্শনিক অবস্থান, মূলস্রোতকে আঁকড়ে থাকার মনো-সামাজিক প্রবণতামাত্র নয়। কাজেই, একে একটা টিপিক্যাল কনফর্মিস্ট/ডেভিয়্যান্ট মডেলে ফেলে সোশিওলগাইজ করা ঠিক না।"
আপনার চিন্তার এই দিকটা আমি একেবারেই এযাবৎ আপনার কমেন্ট থেকে বুঝিনি, বা বুঝতে পারিনি, আমার আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন। আপনার পরবর্তী কমেন্টগুলো পড়বার সময় এবং তাকে নিয়ে ভাববার সময় আপনার এই দিকটা মনে থাকবে। আমার তরফ থেকেও যেহেতু আপনার এই দিকটা আমি খেয়াল করতে পারিনি, যদি কোন মন্তব্য রূঢ় মনে হয়ে থাকে, তার জন্য দুঃখিত। আপনি নিশ্চিত জানবেন, আমার তরফে কোন "hard feelings" নেই ।
দুই, @যদুবাবু, আপনার কমেন্টে কেমন যেন একটা "আহত ভাব" লক্ষ করলাম ("দেখুন অরিনদা, আপনি যেমন ... উল্টোটাও আছে "), :-), এটা কি ঠিক বুঝেছি?
আরে যদুবাবু, আলবাত, উল্টোটাও আছে তো বটেই, ছিল এবং থাকবেও। সেই কারণেই তো এতো "রক্তপাত, মেঘে গাঙ্গেয় প্রপাত", এই জন্যেই তো বৈজ্ঞানিক হয়ে ক্ষোভময় বেঁচে থাকা, :-)
একটা গল্প বলি, শুনুন, আমার নিজের প্রফেশন, ডাক্তারির গল্প।
একটা সময় ছিল, আজ থেকে বছর পঁচিশ আগে, যখন আমরা যারা evidence based medicine নিয়ে লিখতাম, আলাপ আলোচনা করতাম, ঠিক এখন যেমন এখানে ধ্যান ও গবেষণা নিয়ে লিখতে গিয়ে বিদ্বজ্জনের বিরূপতার সম্মুখীন হয়েছি, হচ্ছি, তখনও নানান এই ধরণের সেন্টিমেন্ট চোখে পড়তো। এবং শুধু আমরা নই, আমাদের অগ্রজরাও দেখে গেছেন।
এই ভাবেই বিজ্ঞান এগোয়।
একটা সময় ছিল যখন এক প্রবল দোর্দণ্ডপ্রতাপ শিশু চিকিৎসক বিজ্ঞানের প্রথা মেনেই রীতিমতন বই লিখে বিধান দিয়েছিলেন, শিশুদের বুকের ওপর শুইয়ে রাখতে নাহলে "বৈজ্ঞানিক" কারণে, তাদের চিৎ করে শুইয়ে রাখলে তাদের গলায় লালা ইত্যাদি আটকে গিয়ে তাদের মৃত্যু হতে পারে। অন্যেরা যখন দেখালেন যে, না, এর উল্টোটা, মানে শিশুদের চিৎ করে শুইয়ে রাখলেই বরং অপেক্ষাকৃত উপকার হবে, তাই নিয়ে নবীনপন্থী চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে প্রাচীনপন্থীরা কম আক্রমণ এবং সমালোচনা করেন নি। কালক্রমে প্রাচীনদের সেইসব প্রাকটিস এখন আর কেউ করেন না, তবে এ ব্যাপার সমূহ প্রতিষ্ঠা হতে হতে বহু দশক পেরিয়ে গেছে, বহু শিশু তাদের প্রাণ দিয়ে খেসারত ও দিয়েছে (রেফারেন্স: https://www.thelancet.com/action/showPdf?pii=S0140-6736%2816%2931592-6 ) এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ চিকিৎসকের স্মৃতিচারণা নিয়ে ২০১১ এ Marit Boviberg লিখেছিলেন,
" I think that it is inappropriate to present a biography — however brief — on Dr. Spock that references his best-selling book on child care, Baby and Child Care,2 as a “classic parenting guide,” yet fails to mention that this very book was the first to promote prone sleeping for infants. As we know in retrospect, prone sleeping drastically increases a baby's risk of dying of sudden infant death syndrome (SIDS). Dr. Spock's book was not the only popular book to advocate prone sleeping at the time, but further revisions continued to make the recommendation nine years after solid epidemiological evidence had accumulated regarding the increased risk of SIDS for babies being placed on their stomachs for sleep. In a 2005 meta-analysis of SIDS, Gilbert et al. estimated that, between the 1950s and the early 1990s, over 60 000 infant deaths worldwide “were attributable to harmful health advice [i.e. advice favoring prone sleeping].”3 Dr. Spock's book was not only the first publication to advocate prone sleeping, it was also by far the most popular, selling 50 million copies worldwide in 42 languages.1 Antiwar and antinuclear proliferation efforts are certainly something about which we, as public health professionals, should concern ourselves, but in Dr. Spock's case, his exemplary social justice history is tempered by his poor judgment in recommending—without any scientific evidence to support him—the prone sleep position to millions of unsuspecting parents."
এই কথাটা লিখতে গিয়ে রঞ্জনবাবুর ভারী সুন্দর কমেন্টটি মনে পড়লো,
> "সদা গতিশীল এবং অন্তহীন কাজেই বিজ্ঞান, ধর্মের বিপরীতে, কখনোই কোন বিষয়ে শেষ কথা বলার দাবি করে না। এটাই বিজ্ঞানের সৌন্দর্য। "
আরেকবার, রঞ্জনবাবু, আমার ধন্যবাদ জানবেন। আপনার কথাগুলো আমাকে যে কতবার কতভাবে সমৃদ্ধ করেছে!
@cognition, আপনি জানতে চেয়েছেন
> "এই মাপজোকের রেফারেন্স পেলেই চুপ করে যাব। জানতে আগ্রহী কিভাবে ব্রেনে self-regulation of attention and orientation toward one’s experiences মাপা হয়। ও হ্যাঁ, সাইকোলজির evaluation based on self-report questionnaires মাপজোকের মধ্যে পড়েনা।"
এখন মুশকিল হচ্ছে এই ধরণের মাপজোক আপনি নিজে যদি স্থির করেন কি হবে, তাহলে তো এই নিয়ে আলোচনা এগোনোর প্রয়োজন নেই, কারণ যে কোন স্কেল তৈরী করে তাকে validate করতে গেলে self-report ছাড়া তো উপায় নেই। ব্যাপারগুলো মনোবিজ্ঞানে স্বীকৃত (যেমন Big Five), কাজেই definition গুলোকে validate করতে গেলে তাদের construct validity, face validity, তাকে যদি পরীক্ষা করে দেখতে হয়, মানুষের মনের মাপক করতে হলে তাদের কাছ থেকে সরাসরি জানতে হবে তো।
আপনি যখন "জানতে আগ্রহী কিভাবে ব্রেনে self-regulation of attention and orientation toward one’s experiences মাপা হয়।" সেটাও হবে (যেমন blood oxygen level dependent fMRI এবং আরো অন্যান্য ব্যাপার) আছে, তবে সেইসব নিয়ে এই লেখাটির তৃতীয় ও পরবর্তী পর্বগুলোতে আলোচনা করব, আশাকরি পড়বেন। আপাতত এই definition এবং তৎসংক্রান্ত স্কেল ভ্যালিডেশন এর একটি সিস্টেম্যাটিক রিভিউ দিই, পরে দেখুন, মোটামুটি দশটি স্কেল চালু আছে, লেখাটা পড়ে দেখতে পারেন,
পুরো লেখাটা পড়ার ধৈর্য না থাকলে লেখাটির চার, পাঁচ, আর ছয় নম্বর টেবিল তিনটি পড়ে দেখতে পারেন।
আপাতত এইটুকুই চলছে বলে যতদূর জানি।
আপনার দাবি যে, সর্বজনগ্রাহ্য ডেফিনেশন না পেলে বিষয়টি নিয়ে বিজ্ঞানচর্চা করা যায় না, যদি মানতে হয়, তাহলে বিজ্ঞানের প্রায় কোনো বিষয় নিয়েই আর কোনো আলোচনা করা চলে না। যেমন ধরুন জেনেটিক্স। ১৯০৯, যে বছর Wilhelm জোহানসেন জিন কথাটি চালু করেন, তখন থেকে আজ অবধি জিন বস্তুটির কোন সর্বজনগ্রাহ্য ডেফিনেশন পাওয়া যায়নি, তাতে কিন্তু জেনেটিক্স বলুন বা জেনোমিক্স বলুন, তার চর্চা থেমে থাকে নি। অবশ্য আপনি এসব অগ্রাহ্য করতেই পারেন। এই লেখাটি দেখতে পারেন, যেখানে লেখকরা জিন কথাটির সংজ্ঞা নিরুপন নিয়ে বিস্তর লেখালিখি করেছেন যে সে সংজ্ঞা কি করে বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তিত হয়েছে, এমনকি এঁরা একটি নিজেদের মতন সংজ্ঞা অবধি দিয়েছেন।
"This paper presents a history of the changing meanings of the term “gene,” over more than a century, and a discussion of why this word, so crucial to genetics, needs redefinition today. In this account, the first two phases of 20th century genetics are designated the “classical” and the “neoclassical” periods, and the current molecular-genetic era the “modern period.” While the first two stages generated increasing clarity about the nature of the gene, the present period features complexity and confusion. Initially, the term “gene” was coined to denote an abstract “unit of inheritance,” to which no specific material attributes were assigned. As the classical and neoclassical periods unfolded, the term became more concrete, first as a dimensionless point on a chromosome, then as a linear segment within a chromosome, and finally as a linear segment in the DNA molecule that encodes a polypeptide chain. This last definition, from the early 1960s, remains the one employed today, but developments since the 1970s have undermined its generality. Indeed, they raise questions about both the utility of the concept of a basic “unit of inheritance” and the long implicit belief that genes are autonomous agents. Here, we review findings that have made the classic molecular definition obsolete and propose a new one based on contemporary knowledge."
অতএব জ্ঞান বিজ্ঞানের জগতে কিছুই স্থির থাকে না, এই নিয়েই এগোতে হয় ।
এখানে b এর চিকিৎসার কমেন্টটিও সবিশেষ প্রণিধানযোগ্য। আপনাকে ধন্যবাদ, b !
এখানে আপাতত আর কথা বলব না বলেছি, সে প্রতিশ্রুতি ভাঙতে চাই না। তবে, এই যে সকলের সব কথাকেই গুরুত্ব দিয়ে প্রতিটার সবিস্তার উত্তর দেবার চেষ্টা করছেন, এইটা খুব ভাল লাগছে। তার কতটা কে মানতে পারল বা না পারল, সে তো অনেক পরের কথা!
SIDS সম্পর্কিত স্যালি ক্লার্কের গল্প জানি। লিখেওছিলাম মনে হয়। এই স্পকের গল্প জানতাম না। সাংঘাতিক। আলোচনায় এই যে নতুন জিনিষ জানা যায় সেটা বিশাল বড়ো পাওনা।
আহত নই। একেবারেই না। আমি তর্কপ্রিয় মানুষ। সু-তর্ক, কুতর্ক নয়, ব্রেনের খাদ্য।
বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে,
মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা,
কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
আমাদের কথা
আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের
কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি
জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
বুলবুলভাজা
এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ।
দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও
লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
হরিদাস পালেরা
এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে
পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান
নিজের চোখে...... আরও ...
টইপত্তর
নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান।
এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর।
... আরও ...
ভাটিয়া৯
যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই,
সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক
আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
টইপত্তর, ভাটিয়া৯, হরিদাস পাল(ব্লগ) এবং খেরোর খাতার লেখার বক্তব্য লেখকের নিজস্ব, গুরুচণ্ডা৯র কোন দায়িত্ব নেই। | ♦ :
পঠিত সংখ্যাটি ১৩ই জানুয়ারি ২০২০ থেকে, লেখাটি যদি তার আগে লেখা হয়ে থাকে তাহলে এই সংখ্যাটি সঠিক পরিমাপ নয়। এই বিভ্রান্তির জন্য আমরা দুঃখিত।
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক।
অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি।
যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।
মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি
বার পঠিত
সকলকে জানান
উপরে যে কোনো বোতাম টিপে পরিচিতদের সঙ্গে ভাগ করে নিন
গুরুচন্ডা৯ বার্তা
গুরুতে নতুন?
এত নামধাম দেখে গুলিয়ে যাচ্ছে? আসলে আপনি এতদিন ইংরিজিতে সামাজিক মাধ্যম দেখে এসেছেন। এবার টুক করে বাংলায়ও সড়গড় হয়ে নিন। কটা তো মাত্র নাম।
গুরুর বিভাগ সমূহ, যা মাথার উপরে অথবা বাঁদিকের ভোজনতালিকায় পাবেনঃ
হরিদাসের বুলবুলভাজা : গুরুর সম্পাদিত বিভাগ। টাটকা তাজা হাতেগরম প্রবন্ধ, লেখালিখি, সম্ভব ও অসম্ভব সকল বিষয় এবং বস্তু নিয়ে। এর ভিতরে আছে অনেক কিছু। তার মধ্যে কয়েকটি বিভাগ নিচে।
শনিবারের বারবেলা : চিত্ররূপ ও অক্ষরে বাঙ্ময় কিছু ধারাবাহিক, যাদের টানে আপনাকে চলে আসতে হবে গুরুর পাতায়, ঠিক শনিবারের বারবেলায়।
রবিবারের পড়াবই : পড়া বই নিয়ে কাটাছেঁড়া সমালোচনা, পাঠপ্রতিক্রিয়া, খবরাখবর, বই নিয়ে হইচই,বই আমরা পড়াবই।
বুধবারের সিরিয়াস৯ : নির্দিষ্ট বিষয় ধরে সাপ্তাহিক বিভাগ। ততটা সিরিয়াসও নয় বলে শেষে রয়ে গেছে ৯।
কূটকচা৯ : গুরু কিন্তু গম্ভীর নয়, তাই গুরুগম্ভীর বিষয়াশয় নিয়ে ইয়ার্কি ফুক্কুড়ি ভরা লেখাপত্তর নিয়েই যতরাজ্যের কূটকচা৯। কবে কখন বেরোয় তার কোনো ঠিক ঠিকানা নেই।
হরিদাস পাল : চলতি কথায় যাদের বলে ব্লগার, আমরা বলি হরিদাস পাল। অসম্পাদিত ব্লগের লেখালিখি।
খেরোর খাতা : গুরুর সমস্ত ব্যবহারকারী, হরিদাস পাল দের নিজের দেয়াল। আঁকিবুঁকি, লেখালিখির জায়গা।
টইপত্তর : বিষয়ভিত্তিক আলোচনা। বাংলায় যাকে বলে মেসেজবোর্ড।
ভাটিয়া৯ : নিখাদ ভাট। নিষ্পাপ ও নিখাদ গলা ছাড়ার জায়গা। কথার পিঠে কথা চালাচালির জায়গা। সুতো খুঁজে পাওয়ার দায়িত্ব, যিনি যাচ্ছেন তাঁর। কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।
লগিন করে থাকলে ডানদিকের ভোজনতালিকায় যা পাবেনঃ
আমার গুরুঃ আপনার নিজস্ব গুরুর পাতা। কোথায় কী ঘটছে, কে কী লিখছে, তার মোটামুটি বিবরণ পেয়ে যাবেন এখানেই।
খাতা বা খেরোর খাতাঃ আপনার নিজস্ব খেরোর খাতা। আঁকিবুকি ও লেখালিখির জায়গা।
এটা-সেটাঃ এদিক সেদিক যা মন্তব্য করেছেন, সেসব গুরুতে হারিয়ে যায়না। সব পাবেন এই পাতায়।
গ্রাহকরাঃ আপনার গ্রাহক তালিকা। আপনি লিখলেই সঙ্গে সঙ্গে গ্রাহকরা পাবেন নোটিফিকেশন।
নোটিঃ আপনার নোটিফিকেশন পাবার জায়গা। আপনাকে কেউ উল্লেখ করুক, আপনি যাদের গ্রাহক, তাঁরা কিছু লিখুন, বা উল্লেখযোগ্য কিছু ঘটুক, জলদি পেয়ে যাবেন নোটিফিকেশন।
বুকমার্কঃ আপনার জমিয়ে রাখা লেখা। যা আপনি ফিরে এসে বারবার পড়বেন।
প্রিয় লেখকঃ আপনি যাদের গ্রাহক হয়েছেন, তাদের তালিকা।