পঞ্চাশের মন্বন্তরের প্রকোপ তখন তুঙ্গে। কমিউনিস্ট পার্টির পি সি যোশীর আহ্বানে দুই তরুণ চষে বেড়াচ্ছেন সারা বাংলা। সুনীল জানার হাতে রয়েছে ক্যামেরা আর শিল্পী চিত্তপ্রসাদ সঙ্গে নিলেন তাঁর স্কেচবুক। উদ্দেশ্য, কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র "পিপল'স ওয়ার" পত্রিকার জন্য দুর্ভিক্ষের ভয়াবহতাকে নথিবদ্ধ করা। ঘুরতে ঘুরতে চিত্তপ্রসাদ এসে পৌঁছলেন হুগলি জেলার জিরাটে, ইচ্ছে ছিল শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের পৈতৃক ভিটে দর্শন করা, আর নিজের চোখে দেখে নেওয়া 'বেঙ্গল রিলিফ কমিটি'র প্রধান নিজের গ্রামে ত্রাণের কী ব্যবস্থা করেছেন।
বলাগড় অঞ্চলের মধ্যে দিয়ে জিরাটের দিকে হেঁটে যাওয়ার সময় চিত্তপ্রসাদ দেখলেন যে, গত বছরের বিধ্বংসী বন্যার পর পরই এই দুর্ভিক্ষ একেবারে শিরদাঁড়া ভেঙে দিয়েছে এলাকার মানুষের। রাজাপুর গ্রামের ৫২টি পরিবারের মধ্যে ততদিনে কেবলমাত্র আর ৬টি পরিবার রয়ে গেছে। এদিকে আবার অধিকাংশ গ্রামবাসী শ্যামাপ্রসাদের নাম না শুনলেও, প্রত্যেকেই জানালেন যে "আশুতোষের ছেলের" থেকে ছিটেফোঁটা সাহায্যও পাননি গ্রামের মানুষ। বরং সরকারের তরফ থেকে মাস দুয়েক খাবারদাবার পেয়েছেন তাঁরা, আর খাদ্যশস্য এবং সামান্য আর্থিক সাহায্য পেয়েছেন কমিউনিস্ট পার্টি, ছাত্র ফেডারেশন, মুসলিম স্টুডেন্টস লিগের ছাত্রদের উদ্যোগে। শ্যামাপ্রসাদের রিলিফ কমিটি দেশের নানাপ্রান্ত থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ডোনেশন পেয়েছে ঠিকই, কিন্তু সেই টাকা যে এই অঞ্চলের মানুষের কাজে লাগেনি তা একনজর দেখেই বুঝে গেলেন চিত্তপ্রসাদ। কিন্তু জিরাটে পৌঁছে যা দেখলেন, তা সত্যি মেনে নিতে পারেননি তিনি। দেখলেন দুর্ভিক্ষ-পীড়িত বাকি গ্রামের মতনই আশুতোষের আদি বাড়ির ভগ্নপ্রায় অবস্থা আর তার মধ্যেই, ওই দুর্ভিক্ষের বাজারে, শ্যামাপ্রসাদ তৈরি করছেন প্রাসাদোপম বাগান বাড়ি। সেখানে আবার মাঝেমাঝেই ছুটির দিনে কলকাতা থেকে বন্ধু-বান্ধব এসে ফুর্তি করে সময় কাটিয়ে যান।
১৯৪৩ সালের এই দুর্ভিক্ষ কিন্তু খরা বা অনাবৃষ্টি বা খারাপ ফসল হওয়ার কারণে হয়নি, হয়েছিল সম্পূর্ণভাবে ব্রিটিশ সরকারের গাফিলতিতে। একেই জাপানের কাছে বার্মার পতনের ফলে সেখান থেকে চালের আমদানি বন্ধ হয়ে গেল। তার ওপর যুদ্ধের সৈন্যদের জন্য জমা করা হয়েছিল প্রচুর খাদ্যশস্য এবং বাকি যা ফসল ছিল তার সুষম বণ্টন করা হল না বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে। কলকাতা শহরের বাসিন্দাদের জন্য এবং কলকারখানার শ্রমিকদের জন্য চালের বন্দোবস্ত হলেও, খাবার পৌঁছল না রাজ্যের অন্যান্য অঞ্চলগুলিতে। এর সঙ্গে শুরু হল মজুতদারদের চালের কালোবাজারি যা খাদ্যদ্রব্যের দাম নিয়ে গেল গরিব মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। খাবারের অভাবে গ্রামবাংলার মানুষ চলে আসতে লাগলেন শহর কলকাতায়। প্রতিদিন মৃতদেহের সংখ্যা বাড়তে লাগলো শহরের রাস্তাঘাটে। কলকাতা শহরের এই চরম দুরবস্থার ছবি সরকারের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ছাপালেন স্টেটসম্যান সংবাদপত্রের সম্পাদক ইয়ান স্টিফেন্স। সেসব ছবি সাড়া জাগাল গোটা বিশ্বে। এই অবস্থায় সরকারি ত্রাণব্যবস্থা যখন হিমশিম খাচ্ছে, তখন বেসরকারি ত্রাণ শুরু হল শ্যামাপ্রসাদের পরিচালনায়। তিনি 'বেঙ্গল রিলিফ কমিটি' বা বিআরসির রিলিফ কমিশনার নিযুক্ত হলেন এবং এই দুর্ভিক্ষের হাহাকারের মধ্যেও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করার সুযোগ ছাড়লেন না। ত্রাণকেন্দ্র স্থাপন করলেন কেবলমাত্র সেই সব গ্রাম এবং ওয়ার্ডে যেখানে হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। বিআরসির সঙ্গে সঙ্গে শ্যামাপ্রসাদের তত্ত্বাবধানেই তৈরি হলো হিন্দু মহাসভা রিলিফ কমিটি। বিআরসির উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও আর একটি কমিটির প্রয়োজনীয়তার কারণ হিসেবে বলা হল যে অনেক মানুষ চাইছেন যে তাঁদের দানের অর্থ যেন কেবলমাত্র হিন্দু মহাসভা মারফত খরচ করা হয়। কমিটির বক্তব্য ছিল, যেহেতু সরকারি ত্রাণকেন্দ্রের ক্যান্টিনগুলোতে বেশিরভাগ রাঁধুনি মুসলমান, তাই হিন্দুদের নাকি সেখানে খাবার ব্যাপারে আপত্তি আছে। হিন্দু মহাসভার নিজেদের ক্যান্টিনে কেবলমাত্র হিন্দুদের রান্না করা খাবার পরিবেশন করা হতো । মহাসভার দাবি ছিল যে, রান্না খাবার না দেওয়া হলেও, মুসলমানদের পুরোপুরি বঞ্চিত না করে তাঁদেরকে দেওয়া হয় কাঁচা শস্য। সাংবাদিক টি. জি. নারায়ণ মেদিনীপুরে মহাসভার একটি হাসপাতালে গিয়ে দেখেন যে বাইরে হাজার হাজার মরণাপন্ন মানুষ থাকা সত্বেও, হাসপাতালের চল্লিশটির মধ্যে পনেরোটি শয্যা খালি। তবে গরিব রুগীর চিকিৎসা হোক না হোক, হাসপাতালের প্রত্যেকটি ঘর কিন্তু আলোকিত করে রেখেছে শ্যামাপ্রসাদের ফ্রেমে বাঁধানো পোর্ট্রেট।
যে ভয়ঙ্কর সময়ে প্রায় ৩০ লক্ষ বাঙালি না খেতে পেয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন, সেই সময় শ্যামাপ্রসাদের দুশ্চিন্তার কারণ উচ্চবর্ণের আধপেটা-খাওয়া হিন্দু কী করে মুসলমান রাঁধুনির হাতের রান্না সরকারি ক্যান্টিনে খেতে পারেন। এর সঙ্গে সঙ্গে দুর্ভিক্ষের ত্রাণকার্য নিয়ে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ চলতেই থাকে - হিন্দু মহাসভাও আঙুল তুলতে থাকে মুসলিম লীগ নিয়ন্ত্রিত বাংলার গভর্নমেন্টের দিকে, তাদের বক্তব্য সরকারি ত্রাণকার্য্যে মুসলিম জনগণের প্রতি পক্ষপাতিত্ব স্পষ্ট ।
অথচ মুসলিম লীগের সঙ্গে হিন্দু মহাসভার সম্পর্ক কিন্তু খুব অল্প দিনের ছিল না। ভারতকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জড়িয়ে ফেলার প্রতিবাদে ১৯৩৯ সালে যখন কংগ্রেসের নেতারা মন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেন, তখন হিন্দু মহাসভা মুসলিম লীগের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জোট সরকার বানান সিন্ধ এবং উত্তর পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে। ১৯৪১ সালে বাংলায় শ্যামাপ্রসাদ ফজলুল হকের মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রী হিসেবে যোগদান করেন, সেই ফজলুল হক, যিনি বছরখানেক আগেই লাহোরে মুসলিম লীগের সভায় 'পাকিস্তান প্রস্তাব' গ্রহণ করার দাবি জানান। সাভারকার আর শ্যামাপ্রাসাদের নেতৃত্বে হিন্দু মহাসভা জোর কদমে চালাতে থাকে গান্ধীজির 'ভারত ছাড়ো' আন্দোলনের বিরোধিতা। ১৯৪২-এর ২৬ জুলাই বাংলার গভর্নর জন হার্বার্টকে চিঠি লিখে শ্যামাপ্রসাদ জানিয়েও দেন কংগ্রেসের এই আন্দোলন মোকাবিলা করার জন্য ঠিক কিরকম কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। তারপর ১৯৪৩এর ৩রা মার্চ সিন্ধের মন্ত্রিসভায় ভারতের মুসলমানদের জন্য যখন পৃথক রাষ্ট্রের দাবি পাস করা হয়, হিন্দু মহাসভা কিন্তু সরকার থেকে বেরিয়ে আসেনি এই প্রস্তাবের প্রতিবাদে।
আজ থেকে বছর পাঁচেক আগে দিল্লির নেহেরু মেমোরিয়ালে শ্যামাপ্রসাদের ওপর একটি প্রদর্শনী আয়োজিত হয়। সেখানে অমিত শাহ তাঁর ভাষণে বলেন যে শ্যামাপ্রসাদ নেতৃত্ব দিয়ে থাকলে সমগ্র কাশ্মীর আজ ভারতের দখলে থাকত।
প্রোপাগান্ডা এরকমই হওয়া উচিত - রাজনৈতিক সুবিধা পেতে যদি মিথ্যের আশ্রয় নিতেই হয়, তাহলে সেই মিথ্যাকে সুকৌশলে এমনভাবে পেশ করতে হবে কতকগুলো আংশিক সত্যকে পাশে রেখে, যাতে সত্যি-মিথ্যের ফারাকটুকুও আর করা না যায়। আসলে, কাশ্মীরের যতটুকুও আজ ভারতের দখলে আছে, সেটুকুও রয়েছে কিন্তু নেহেরুর জন্যই। কাশ্মীরকে স্বাধীন ভারতের অন্তর্ভুক্ত করার কোনও তাগিদ হিন্দুত্ববাদীদের কোনকালেই ছিল না। বলরাজ মাধকের প্রচেষ্টায় আর এস এস-এর জম্মু শাখা স্থাপিত হয় ১৯৩৯ সালে আর কাশ্মীর শাখা ১৯৪৪এ। কাশ্মীরের ডোগরা পরিবার শুরু থেকেই এই প্রচেষ্টায় শরিক। প্রেমনাথ ডোগরা ছিলেন জম্মু আর এস এস-এর সঙ্ঘচালক, যিনি আবার ছিলেন জম্মু কাশ্মীর হিন্দু সভার একজন প্রধান সদস্যও। লোকসভাতে দাঁড়িয়ে সমগ্র কাশ্মীর ভারতের অধীনে না থাকার জন্য অমিত শাহের নেহেরুকে দোষারোপ করা যাঁরা শুনেছেন তাঁরা অবাক হবেন শুনে যে, দেশভাগ যখন একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে গেল ১৯৪৭-এর মে মাসে, তখন এই হিন্দু সভা কিন্তু মহারাজের পাশে থেকে ভারতে যোগদান না করে কাশ্মীরকে স্বাধীন রাখার জন্য সোচ্চার হয়েছিল।
স্বাধীন ভারতের প্রথম শিল্পমন্ত্রী হিসেবে শ্যামাপ্রসাদের যে 'বিশাল অবদান' রয়েছে সে কথা নেহেরু মেমোরিয়ালের ওই প্রদর্শনীতে বেশ ফলাও করেই বলা হয়েছিল। এও দাবি করা হয়েছিল যে ভিলাই ইস্পাত কেন্দ্র গড়ে ওঠার পেছনেও নাকি তাঁরই হাতযশ। বস্তুত ভিলাই ইস্পাত কেন্দ্র স্থাপিত হয় ১৯৫৫ সালে আর শ্যামাপ্রসাদ মারা যান তার দু'বছর আগেই। সদ্য স্বাধীন ভারতের শিল্পায়ন শ্যামাপ্রসাদের হাত ধরে হয়েছে, এই ন্যারেটিভ বর্তমান সরকারের 'মেক ইন ইন্ডিয়া'র ছবি কিছুটা হলেও শক্তিশালী করবে ঠিকই, কিন্তু এই প্রদর্শনীর আগে পর্যন্ত নেহেরু-মহলানবীশ প্রকল্পের ধারেকাছে কোথাও যে শ্যামাপ্রসাদের আনাগোণাও ছিল, সে কথা কেউ বোধহয় ঘুণাক্ষরেও টের পাননি ।
এখানেই শেষ নয়। আর এক চমকপ্রদ ন্যারেটিভ তৈরি করা হয়েছে শ্যামাপ্রসাদকে ঘিরে - তিনি নাকি কলকাতা শহরকে বাঁচিয়েছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের অংশ হওয়ার থেকে। বস্তুত এরকম কোনো প্রস্তাব কখনোই আসেনি। বরং বাংলার প্রধানমন্ত্রী সুহরাবর্দি আর শরৎ বোস, কিরণ শংকর রায়ের মতন কংগ্রেস নেতারা আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন বাংলাকে অবিভক্ত এবং স্বাধীন রাখার। অন্যদিকে আশুতোষপুত্র চেয়েছিলেন বাংলাকে দুটুকরো করতে - আর তাই মাউন্টব্যাটেনকে গোপন পত্র মারফত আর্জি জানিয়েছিলেন যে দেশভাগ না হলেও যেন অন্তত বাংলাকে ধর্মের ভিত্তিতে দুভাগ করা হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে কি একবার প্রশ্ন করা যায় না, যে হিন্দু মহাসভার যদি প্রকৃতপক্ষেই আপত্তি ছিল দেশভাগ করা নিয়ে, তাহলে স্বাধীনতার পর শ্যামাপ্রসাদ নেহরুর মন্ত্রিসভায় যোগদান করলেন কেন? তাঁর রাজনৈতিক জীবনের এইসব অপ্রীতিকর সত্যিগুলো ধামাচাপা দিয়ে হিন্দু মহাসভার তখনকার কাণ্ডকারখানা বাঙালির কাছে গ্রহণযোগ্য করে শ্যামাপ্রসাদকে বাংলায় বিজেপির আইকন করে তোলার কাজটা খুব একটা সহজ হবে না। তবে পয়সার জোরে ব্যাপক প্রচার চালিয়ে ডাহা মিথ্যেকে সত্যির রূপ দেওয়ার কঠিন কাজটা এই জাতীয় ফ্যাসিস্ট দলগুলি আগেও করে দেখিয়েছে। দেখা যাক, এক্ষেত্রে জল কতদূর গড়ায়।
ভাই অ্যাত না খেটে বরং পোস্টার কী ফ্লেক্সের টাকা মেরে দে। বেশী আসবে হাতে।
হুম- সাদাদের হয়েই ত‘ এত গোলা-গুলি করে তোমাদের জামাইবাবুদের নামে বদনাম রটিয়ে স্যুইস ব্যঙ্কে অনেক টাকা জমিয়েছি। শ্যালক-শ্যালিকা হতে হবে কেন? এমনিতেই সাদারা সেধে পয়সা দেয়, জানো না?
কুবিরদা একটা সরল প্রশ্ন করি, আপনার মতন অনেক জ্ঞাণীগুণিরা বলেন যে নেহেরু ছিলেন দেশের শত্রু, বা ধরুন চিদাম্বরম দেশের শত্রু - তাহলে নিশ্চয়ই ওরা মুসলিম, তাই না? সময় পেলে একটু ক্লিয়ার করে দেবেন পিলিজ।
সাদাপ্রভুদের সাথে তোমার কী এমন গলাগলি যে সেধে পয়সা দেয়, সে আর কেমন করে জানব। কিন্তু অত পেয়েও সত্তর পয়সার হপ্তা যে তুলতেই হয়, সে তো দেখছি।
রেট বেড়ে গেছে নাকি? সত্তর পয়সা ছিল তো, পঁচাত্তর হয়ে গেছে? জয় মা। মাগ্যিগন্ডার দিন। যা আসে।
ল্যাপটপটাও বুঝে গেছে, আবার দু'বার পোস্ট করে দেড় টাকা ফেলছে।
কুবিরদা,
আরও দুএকটা ছোটখাটো জিনিস মনে পড়ল -
আচ্ছা, এই যে পাঞ্জাবের কৃষকরা যারা আন্দোলন এরা তো ১০০% দেশের শত্রু, তো এরা নিশ্চয়ই মুসলিম, সবাই বলছে পাঞ্জাবী, গুলিয়ে যায় মাঝে মধ্যে।
আর ধরুন, কোভিড লকডাউনের সময় ঐ যে অনেক শ্রমিকরা হেঁটে বাড়ি ফিরতে গিয়ে মরে গেল, ঐ যে ছবি দিল এক বাচ্চা বাক্সের ওপরে ঘুমিয়ে পড়েছে - ওগুলোও আমি শিওর দেশের শত্রু, বাজে লোক, আর মুসলিমই হবে - তাই না।
বা ধরুন, নোটবন্দীর সময় নাকি দেড়শোর ওপর লোকে ব্যাংকের লাইনে দাঁড়িয়ে অসুস্থ হয়ে মারা গেছে, ওরাও নিঃসন্দেহে শত্রুস্থানীয় মানুষ, এবং খোঁজ নিলে দেখা যাবে নিশ্চয়ই মুসলিমই হবে।
আচ্ছা কুবিরদা রাজীব গান্ধীকে যারা মেরেছিল তারা কি মুসলিম ছিল? মনে পড়ছে না। বা ইন্দিরা গান্ধীকে তো শিখরা মেরেছিল, নাকি মুসলিমরা । এগুলো বোধহয় তেমন দেশের শত্রুতার কাজ নয়, টেররিজম জাতীয় কিছু নয় - তাই না কুবিরদা?
ল্যাপটপে কয়েক ফোঁটা গোমূত্র ফেললে ঠিক হয়ে যাবে। গোমূত্রে কিনা সোনা থাকে, তাতে ল্যাপটপ ঠিক হয়ে যায়।
জয় হনুমান জি কি!
কুবিরভক্তটাকে নিয়ে পারা যায় না। এরা সবাই দেশের শত্রু, সবাইকে পাকিস্তানে পাঠাতে হবে। এ তো সিম্পুল ব্যপার!
বিটিডবলু, আপনি কি বাংলাদেশের? অনেক বাংলাদেশের রেফারেন্স পাচ্ছি।
আমাদের আশেপাশে সংখ্যালঘুদের জীবন কোথাও-ই খুব একটা সুবিধের না বোধয়। যদিও তা দিয়ে শ্যামপ্রসাদের কাজকর্মের জাস্টিফিকেশন হয় না।
এখানে ভোট আসছে বলে চোথাটা বাংলাদেশ ভর্তি হয়ে এসেছে।
কলকাতার সত্তর ভাগ মানুষই নাকি এপার থেকে যাওয়া সব জমিদারদের সন্তান। তাদের চোখে সত্তর পয়সা থেকে দেড় টাকাও আয়। খুব ভাল। হুম- শিখরা একবার রাজিবকে মেরেছে। কৃষি আন্দোলনও করছে। তাই বলে সারা পৃথিবীতে সবাইকে সারাক্ষণই মেরে মেরে লাল করছে এটা বলা যাবে না। এছাড়া শিখরা নিজেরাই ত‘ পাকিস্থানে খুন-ধর্ষণ হয়ে ভারতে এসেছে। একমাত্র হিন্দুকে লাথি মারতে পারে বাকি সবাই।
আমি যে কে? জ্ঞানদা, মোক্ষদা না কুলদা- কে জানে? একদা বাংলাদেশে ছিলাম- এখন মহাপৃথিবীর সন্তান।:)
হুম। তাহলে আপনার শ্যামাপূজনের সঙ্গে একমত না হয়েও আমি অন্তত আর কথা বাড়াবো না, কারন আমাদের উপমহাদেশে যা গ্যাঁড়াকল হয়ে আছে, ধর্মীয় সংখ্যালঘুর অবস্থা চারদিকেই গোলমেলে, আপনার পরিস্থিতি বা বাস্তবতাও আমি সহজে বুঝবো না।
তবে এটা ভেবে দেখতে পারেন, শ্যামাপ্রসাদ অ্যান্ড কোং যদি ওই দিকটা মুসলমানদের দেশ বলে দাগিয়ে দেওয়ার জন্যে নৃত্য না করতো তাহলে পূর্ববঙ্গ থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষকে উদ্বাস্তু হতে হতো না। বিভৎস দাঙ্গা হয়েছে, দাঙ্গা থামে, প্রশাসনকে দায় নিতে হয়, পুনর্বাসন, ক্ষতিপূরণ দিতে হয়। আমি ত্রিপুরায় জাতি উপজাতি দাঙ্গা দেখেছি, সে বিভৎস ব্যাপার। শিখবিরোধী দাঙ্গা তো সেদিনের কথা। গুজরাট ছেড়েই দিলাম, ওতে আবার মুসলমান আছে, আপনি কিছু না কিছু জাস্টিফিকেশন বের করে ফেলবেন। কিন্তু তার জন্যে অন্তত অবশিষ্ট জীবিত মানুষকে বাড়ি ঘর ছেড়ে অনিশ্চিতের দিকে পাড়ি দিতে হয়না। মানুষ জানে এই আমার বাড়ি, একদিন সব ঠিক হবে, সরকারকে কিছু করতে হবে। আভ্যন্তরীন আইন শৃঙ্খলার ব্যাপার, যাকে বলে অ্যামিকেবল। কিছু না করলে সরকারের ক্রেডিবিলিটি থাকে না।
দেশটাই ভাগ করে ফেলায় সেই সুযোগ আর থাকে না। ভীরু নেতারা হাত ধুয়ে ফেলে বাগানবাড়িতে ফুর্তি করেন।
দেশভাগকে কেউই সমর্থন করেনা। কিন্ত নোয়াখালির ঘটনা ঘটানোই হয়েছিল যেন দেশভাগ বাংলার সংখ্যালঘুরা মেনে নেয়। নইলে এমন আরো পাঁচটি/দশটি দাঙ্গা নামতো। নেমেওছে। পাকিস্থান হবার পরেই। গুজরাটের কেন, কোন দেশের মুসলিমদের প্রতিই ব্যক্তিগতভাবে আমার কোন ক্রোধ নেই। শুধু এই পৃথিবীতে অন্য ধর্মাবলম্বীরাও তাদের কাছ থেকে একটু মানুষের প্রতি মানুষের আচরণ ত‘ প্রত্যাশা করতে পারে, তাই না? শতকের পর শতক ধরে পৃথিবীর কোন দেশে বা কোন সভ্যতায়ই সেটা যদি না পাওয়া যায়, তখন ক্ষোভ কি খুব অসম্ভব? কিছুদিন আগেও মিয়ানমারের জাতিগত দাঙ্গায় রোহিঙ্গাদের সাথে খুবই অন্যায় হয়েছে- কিন্ত রোহিঙ্গারা বার্মার সেনা বাহিনীর যে ৭০ জন অফিসারকে হত্যা করেছিল অতর্কিত এক হানায়...বাংলাদেশে ৭০ জন সেনা অফিসার কেন, এক জন সংখ্যাগুরুকে একজন সংখ্যালঘু খুন করলেও ঠিক কত জন সংখ্যালঘু নারীকে ধর্ষিত হতে হতো, কয় হাজার মন্দির ভগ্ন ও কি পরিমাণ সংখ্যালঘু সম্পত্তি লুটপাট হতো সেটা ভাবা যায় না। এসব আপনারা যে জানেন না তা‘ নয়। তবে আপনাদের মাইনরিটি ভোট ব্যঙ্ক প্রয়োজন- দু:খের বিষয় সেটা পাবেন না। পাবে তৃণমূল বা নতুন পীরের দল। এবং এই ভয়ানক ভন্ডামির জন্য সংখ্যাগুরুর ভোট যাদের দিকে যাবার কথা তাদের দিকেই যাবে। শুভরাত্রি।
বার্মার মিলিটারির ৭০ জন সেনা অফিসারকে হত্যার তথ্যটি একটি ঢপ।
ঢপ।
ঢপ।
https://en.m.wikipedia.org/wiki/Rohingya_genocide#:~:text=On%2025%20August%202017%2C%20the,army%20base%20in%20Rakhine%20State.
এখানে দেখুন, মায়নমারের সরকার ২৫শে আগস্ট, ২০১৭ তে জানায় যে রোহিঙ্গাদের আক্রমণের ফলে ৭১ জন মারা গেছিল, তারমধ্যে ৫৯ জন রোহিঙ্গা এবং
১ জন সৈন্য।
হ্যাঁ, ১ জন সৈন্য।
১ জন।
১ জন।
১ জন।
উইকি টুকে যিনি দিন চালাচ্ছেন তিনি এই তথ্য জানেন না ?
খুব জানেন।
সেই জন্যই হয়ত বেনামে এসব লিখছেন, যাতে এখানে ওনাকে স্বনামে যারা চেনেন তারা এনার এই মিথ্যের কারখানা খুলে বসাটিকে বুঝতে না পারে। তাহলে এনার ইমেজটি টাল খাবে।
কেন করে? ঠিক জানিনা। কিন্তু মনে হয় নিজেদের ভেতরে খুব অসৎ উদ্দেশ্য বা মনোভাব না থাকলে এসব করা যায় না।
অকাতরে এইরকম লোকজন এইসব মিথ্যে চালিয়ে যায়। নাটক করে ক'লাইন লিখে লোককে কিছু তথ্য দিয়ে নিজেদের অ্যাজেন্ডাটি পূরণ করা। বার্মা থেকে বাংলাদেশ এসে কিছু হাবিজাবি লিখে, সেখান থেকে পব - র ভোটের বাজারে মুসলমানদের শয়তান বলে প্রতিপন্ন করা।
রিয়েলি, হুতো বা অরণ্য মনে করে যে এইসব লোকজনকে ঠিক কথা, আসল পরিস্থিতি বোঝানো যাবে ? এরা তো শয়তানের কাছে আত্মবিক্রয় করেই দিয়েছে !
সিএস...এটা সিএস...এটা অ্যামনেস্টি লিঙ্ক। শয়তানের কাছে আত্মা কারা বেচেছে বলো? তুমি/তোমরা না আমি/আমরা? পেট্রোডলার তোরা আরব দেশ থেকে পাস জানি। তাই বলে এতটা? আর আমার আসল পরিচয় জানার জন্য এত আকুলি-বিকুলি...তোরাও তবে তোদের আসল নাম-পরিচয় দে। এই খেলার মাঠে ত‘ সবাই ছদ্ম-নাম নিয়েই খেলছে। নাকি যুক্তিতে পারছিস না বলে আমার ক্ষেত্রে খেলার নিয়ম পাল্টাতে হবে? হীনমন্যতা দেখেছি তাই বলে এতটা দেখিনি। এজন্যই তোদের দেশে নির্বাচনে তোরা এখন শুধু গোল্লা পাস।
(https://www.amnesty.org/en/latest/news/2018/05/myanmar-new-evidence-reveals-rohingya-armed-group-massacred-scores-in-rakhine-state/)
Muslim militants in Myanmar staged a coordinated attack on 30 police posts and an army base in Rakhine state on Friday, and at least 59 of the insurgents and 12 members of the security forces were killed, the army and government said.
(https://www.reuters.com/article/us-myanmar-rohingya-idUSKCN1B507K)
বাংলাদেশের বিখ্যাত ব্লগার আরিফ জেবতিক নিজে মিয়ানমারের ঘটনার পর ফেসবুকে আরসাকে আক্রমণ করেছিলেন দায়িত্বহীণ ভাবে মিয়ানমার পুুলিশ ও সীমান্ত রক্ষীবাহিনীকে আক্রমণ করে নিজ সম্প্রদায়কে বিপদের মুখে ঠেলে দেবার জন্য। এই লিঙ্কে দেখা যাচ্ছে মিয়ানমারের ১২ জন পুলিশ-সেনা কর্মকর্তা মারা গেছে। আক্রমণটা ভাইজানরাই শুরুতে জেহাদি জোশে করেছেন ও পরে বর্মী পুলিশের প্রতিরোধে তারা ৫৯ জন মারা গেছেন বলে লিঙ্কটি বলছে। বাংলাদেশে ত‘ সব কলামিস্ট, লেখক, সংবাদকর্মী জানে যে রোহিঙ্গারাই শুরুতে আক্রমণ করে পরে ভয়ানক মার খেয়েছে। এখন বর্মী সেনা-পুলিশ ৭০ মরুক আর ১২ জন, বাংলাদেশে/পাকিস্থানে/আফগানিস্থানে ১জন মুসলিম সেনা/পুলিশ কর্মকর্তাকে কোন সংখ্যালঘু গোষ্ঠি আক্রমণ করে হত্যা করলে প্রতিটা সংখ্যালঘু নারী ধর্ষিত হতো। এসব তোরা জানিস। জেনেও মিথ্যা কথা বলবি আর নোংরা করবি।
(https://www.reuters.com/article/us-myanmar-rohingya-idUSKCN1B507K)
আর কমোডে হাগবি। গৌমাতা যে তোদের নিয়ে কি করবে!
মায়ানমার নিয়ে কথা হচ্ছে। কেউ আসিন উইরাথুর নাম জানে?
সেও কি আরেক ভীতুপ্রসাদ?
আর আমি ট্রাম্পের রাজত্বকাল দেখেছি। অতেব।
মোটেই আমি ভীতুপ্রসাদ না। তোরা যখন বড় জোর রহমান সাহেবদের শালা, আমি তখন উল্টো কোন এক রহমান বা আহমেদ কি মোহাম্মদের জামাই। আমার বউ মুসলমান। সেজন্য অবশ্য প্রতিবেশী সম্প্রদায়ের অত্যাচারে দিশেহারা হয়ে দেশ ছাড়তে হয়েছে। তবে আমি তোদের মত রহমান সাহেবদের শালা নই। সময় নেই বাপু আর। শয়তানের কাছে আমি আত্মা বেচেছি না তোরা- সেটা তোরাই ভেবে দ্যাখ।
হুঁ, তাও ভালো উইকির লিংক দেওয়ার পরে ৭০ জন 'মিলিটারি অফিসার' টা কমে ১২ জন পুলিশ-্মিলিটারি হয়েছে। হ্যাঁ, সেটাই ঠিক, ৭০ জন মিলিটারি অফিসারটা ঢপ। উইকির লিংকেও আছে (one soldier, one immigration officer, 10 policemen and 59 insurgents)।
কিন্তু ৭০ জন মিলিটারি অফিসারকে মেরেছিল লিখে, সেটা থেকে বাংলাদেশে চলে আসাতে যে নাটকীয়তা তৈরী হয়, সঠিক সংখ্যাগুলি দিলে সেটি তৈরী করা যায় না। হোয়ানিভার্সিটিতে এটিই শেখানো হয়। কীভাবে, সত্যি তথ্য বা সংখ্যাকে একটু বদল করে নিজেদের বদবুদ্ধি প্রচার করা যায়। এক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছে।
আর বলা হয়েছে, রোহিঙ্গারা আগে মেরেছিল।
হ্যাঁ , সেও ঠিক, অ্যামনেস্টির লেখাতেও রোহিঙ্গাদের হত্যাকর্মের বিস্তৃত বিবরণ আছে এবং সেখানকার হিন্দু গ্রামের ওপরেই সেইসব ঘটনা ঘটানো হয়। কিন্তু অ্যামনেস্টির সৎ সাহস থাকে শেষে এই অংশটি লেখারঃ
The Rohingya in Rakhine State have for decades suffered systematic discrimination by the Myanmar authorities. Amnesty International has concluded that the deeply discriminatory way the authorities treated the Rohingya, even before the atrocities from August 2017 onwards, amounted to the crime against humanity of apartheid. Following the 25 August attacks these violations and crimes reached a peak, with unlawful killings, rapes, and burning of villages on a large scale, leading the majority of the population to flee the country. Nothing can justify such violations. But similarly, no atrocities can justify the massacre, abductions, and other abuses committed by ARSA against the Hindu community, as documented in this briefing.
কিন্তু না, অন্যরা পেট্রোডলার পেয়ে গেল, আমি তো কিছুই পেলাম না এই ভেবে যারা মাথা বিকিয়ে দিয়ে সত্তর পয়সা তুলেই খুশী তারা ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে শুধু একটা দিকই দেখিয়ে যাবে আর বলবে, যে মুসলমানরাই দায়ী। এ ক্ষেত্রে যে একটা দেশের সরকার যে এথনিক ক্লীনসিং-এ অভিযুক্ত, সেই জন্য যে ইউ এন ও - তে আফ্রিকার একটি দেশ বার্মাকে টেনে নিয়ে গেছিল, সু কি কে যে জবাবদিহি করতে হয়েছিল তাদের মিলিটারির কাজকর্মের - না সেসব বলা যাবে না। সেসব বলতে গেলে দেখা যাবে যে অত সহজে একটি গোষ্ঠীকে দাগিয়ে দেওয়া যায় না, দীর্ঘদিনের সমস্যা থেকে এক সময়ে ভাওলেন্স শুরু হয় আর প্রায় সব ক্ষেত্রেই আজকের দিনে একটা দেশের সরকারই ঐসব সমস্যা জিইয়ে রাখা, ব্যবহার করা আর মদত দেওয়ার জন্য দায়ী, সেসব বুঝে লিখতে গেলে নিজেদের অ্যাজেন্ডা পূরণ হবে না, বেনামেও ভুল খবর দেওয়া যাবে না।
সিএস, না, ওরকম আশা করার মানে নেই ঠিকই, করিও না। তাও যতদূর কথা চালানো যায়।
কুবিরবাবু, ভিন্ন ধর্মে বিয়ের জন্যে প্রতিবেশির অত্যাচারের ট্রমা নিশ্চয়ই সাংঘাতিক। তবে অন্ধরা সর্বত্রই অন্ধ, শ্যামার সন্ততিরা ভিন্ন জাতে বা স্বগ্রামে বিয়ের কারনেও লিঞ্চ করে ফেলে মাঝেমধ্যে।
ঢপ শব্দের মানে কি তাই জানি না। কি মনে হয় সিএস? পত্রিকায় বড় বড় হেডিং ছাড়া ভেতরের খবর বউ-বাচ্চা, অফিস-টফিস সামলে ক‘জন পড়ে? প্রবাসী মানুষ। তবু সুযোগ পেলে দেশের টিভি দেখি। সেখানে টক শো-তে সবাই বলছে যে আরসার গুলিতে ৭০ জন বর্মী সেনা মারা যাওয়ার পাল্টা হিসেবে ছয় লাখ রোহিঙ্গাকে ভিটে ছাড়া করা অনুচিত। ব্যস...দেশেও থাকা হয় না। সত্যি বলতে তোমাদের সাথে তর্ক না লাগলে এই লিঙ্কটা খুঁটিয়ে পড়া হত না। রোহিঙ্গারা ওদেরই প্রতিবেশী হিন্দুদেরও অত্যাচার করেছে। দীর্ঘদিন তাদের ঘেটো করে রাখা বার্মা সরকারের অন্যায্য কাজ। কিন্তÍ ওরাও ওখানে ক্রমাগত বর্মী মেয়ে বিয়ে করে ও ধর্মান্তরিত করে সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধদের মনে ত্রাস সৃষ্টি করে ফেলেছিল। মিয়ানমারে নাকি একটি আইনই আছে। বর্মী, বৌদ্ধ নারীর অবর্মী ও অবৌদ্ধ পুরুষ বিয়ে করা সংক্রান্ত আইন। আমাদের এক বার্মিজ প্রতিবেশী বলছিলেন। যাহোক, এটুকুর জন্য সিএস যা খুশি মুখ খারাপ করতে পারে। পূর্ব বাংলার জমিদারদের নাতি-পুতিরা ওপারে রিফিউজি হয়ে আর গরীবস্য গরীব হতে হতে যে বস্তির ছেলে-মেয়েদের মত মুখ খারাপ করে এটা জানতাম না। শ্যামা কে সেটাও বুঝলাম না।
ও শ্যামাদাস! আয় তো দেখি বোস তো দেখি এখেনে,
সেই কথাটা বুঝিয়ে দেবো পাঁচ মিনিটে দেখে নে।
সাধারণতঃ নিজের যে নামে এখানে লোকে লেখে, সেই নাম না ব্যবহার করে বেনামে লিখলে সুবিধে হলঃ
১। সরল সাদাসিধে সাজা যায়ঃ আমি তো অতো জানিনা, লোকে বলল, টিভিতে দেখলাম, লিংক এখন পড়লাম।
২। নিজের সম্বন্ধে ঢপ মারা যায়ঃ বৌ-বাচ্চা, অফিসের চাপ ইত্যাদি।
৩। গালি দেওয়া যায়, ভুলভাল কথা লিখে লোক চটানোর চেষ্টা করা যায়।
৪। ন্যাকা সেজে তোমাদের তোমাদের করে লেখা যায়।
এই কায়দাগুলো হোয়ানিতে শেখানোও হয়। কীভাবে মিথ্যে কথা লিখতে হবে, কখন নিজের সম্বন্ধে ঢপ মারতে হবে, কখন খিস্তি দিতে হবে।
অবশ্য এসব পুরোটা শিখে হয় না, নিজের মধ্যে বেশ বদগন্ধওয়ালা প্রতিভা না থাকলে এরকম চালিয়ে যাওয়া বেশ শক্ত।
তুমি থেকে তুই-তে চলে গেছেন এখন। ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে আরকি!
কিন্তু এখন আবার শ্যামাকে চিনতে পারছেন না।