এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  পড়াবই  বই কথা কও

  • যে গল্প বিশ্ব জয় করে এলো

    পুরুষোত্তম সিংহ
    পড়াবই | বই কথা কও | ২০ নভেম্বর ২০২২ | ১৭৮৭ বার পঠিত

  • গাঁওবুড়ো এক যাত্রাপথের গল্প। বলে যেতে পারে হাঁটার গল্প। হাঁটতে হাঁটতে সুখ অনুসন্ধানের গল্প। সুখ এখানে বিভ্রম। কিন্তু সন্ধানটা জরুরি। যে সন্ধান, আত্মজিজ্ঞাসা, অনুসন্ধান মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে। সুখের স্বপ্ন দেখায়। মানুষ তো সুখের সন্ধানে বাঁচে। সমস্ত প্রাপ্তির মধ্যেও আরেকটু সুখ বা সমস্ত অপ্রাপ্তির মধ্যেও সামান্য সুখের সন্ধান করে। ‘গাঁওবুড়ো’ তেমনই এক গল্প যেখানে বিভ্রমকে সামনে রেখে বিভ্রমের বাস্তবতাকে আবিষ্কার করে জনপদ জীবনের চরম অর্থনৈতিক অস্বচ্ছন্দতার নিত্য নৈমিত্তিক দিনলিপি। রাঙা পথের জীর্ণ চিত্রে জার্নির ক্লান্তিতে মেঠো সুরে ব্যক্তি ও সমষ্টির ব্যথিত কোলাহল সহ রূপহীন-রংহীন মানুষের সমস্ত না পাওয়া ও পথের দিকে চেয়ে থাকার উদাসীন সোপান। যে ভূগোলে কিছুই নেই, যেখানে বাঁচার তীব্র আকুতি নিয়ে মানুষ বাঁচে-স্বপ্ন দেখে, সেখানে কেউ কেউ অলীক জাল রচনা করে আরও দুই মুহূর্তের স্বপ্নের হাতছানি দিয়ে যায়, ‘গাঁওবুড়ো’ সেই স্বপ্ন হাতছানির গল্প।

    গল্পের পটভূমি কুসুমপুর। যাত্রাপথ কুসুমপুর থেকে সুবর্ণরেখা নদী (লেখকের আখ্যানে ধীরে ধীরে সুবর্ণরেখা বড় ভূমিকা নেবে, বিশেষ করে উপন্যাসে, নদী ও মানুষের কথা নানাভাবে উঠে আসবে। ‘নদীর মানুষ’ নামেই যেমন উপন্যাস লিখবেন তেমনি ‘‘‘নদীর ধারে পবনচন্দ্র” ’ উপন্যাসে সুবর্ণরেখা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকবে) তীরবর্তী কন্যাডিহি (পরে এই নামে উপন্যাস লিখবেন) পর্যন্ত। এখানে কুসুমপুর দুখপুর, কন্যাডিহি সুখপুর। দুখপুর থেকে সুখপুরে যাত্রার কাহিনী ‘গাঁওবুড়ো’। জনপদের সকলে যাত্রা করতে পারে না, গ্রামের কেউ একজন যাত্রা করে, তিনিই যেন সকলের দুখ মন্থনের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে চলেছেন। তিনিই (ফকিরচাঁদ) যেন গ্রামের প্রতিনিধি হয়ে উঠছেন, তিনিই যেন দুঃখহরণ। ফকিরচাঁদ নিজের চেতনায় যাত্রা শুরু করেছিল। কিন্তু ফকিরচাঁদ বড়বাবুর সন্ধান কীভাবে পেল তা আমরা জানি না। আসলে এটি একটি ধারণা বা বিভ্রম। বলা যেতে পারে অলীক চেতনা বা অনুমান নির্ভর বিশ্বাস। বড়বাবু একটি মোটিভ। সেই মোটিভকে সামনে রেখে লেখক বাস্তব থেকে রূপকথা, উপকথায় পৌঁছতে চাইবেন, কিন্তু পৌঁছবেন না। এক ভ্রান্ত ধারণাকে সামনে রেখে গল্প বলয়ে জনজীবনের চিত্রকে উপস্থিত করে আসলে তিনি বাস্তবের শিল্পকেই ভিন্ন বাস্তবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইবেন।

    এ আখ্যান আসলে এক নিঃসঙ্গতার আখ্যান। সমস্ত হারিয়েও যে মানুষ বাঁচার স্বপ্ন দেখে সেই স্বপ্ন চিন্তার আখ্যান। যার কিছুই নেই, যিনি সমস্তই হারিয়েছেন তিনিও বাঁচবেন, বাঁচার চেষ্টায় ক্রমাগত নিমগ্ন হবেন। বৃদ্ধ ফকিরচাঁদ চোখ, পুত্র, জমির ফসল, স্ত্রী সমস্তই হারিয়েছেন। বয়স সত্তর অতিক্রম করেছে। মনে এখনও উত্তেজনা আছে। গ্রামের সকলেই বৃদ্ধের মৃত্যু চায়। মৃত্যু হলেই জমি দখল করে নেবে। সেই মরণ আশার মুখে যেন ছাই দিয়ে বৃদ্ধের বাঁচার প্রবণতা আরও বৃদ্ধি পায়। এও তো মৃত্যু-জীবন সংগ্রামে জয়-পরাজয়ের গল্প। এমনকি বৃদ্ধ গত রাতে মৃত্যুর স্বপ্ন দেখেছে। সেই মৃত্যু চেতনাই বৃদ্ধকে জীবনতৃষ্ণা বাড়িয়ে দিয়েছে। মানুষ মৃত্যুর কোল থেকে বাঁচতে যা পায় তাই আঁকড়ে ধরে। বৃদ্ধ একটি প্রেরণাকে, বিশ্বাসকে, ধারণাকে আঁকড়ে ধরতে চেয়েছে। গল্পের ঘটনা শুরু হবে চৈত্রের সকালে, শেষ হবে সন্ধ্যায়। একদিন গল্পের সময়কাল। জীবন সায়াহ্নে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে এসেছে। জীবনানন্দের কবিতার ব্যাঙের মতো বৃদ্ধও সমস্ত বাধাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে বাঁচার আকাঙ্ক্ষা জিইয়ে রাখতে চাইছে। সেই আশাই ফকির চাঁদকে পথে হাঁটতে সাহায্য করেছে। বলা ভালো মৃত্যু চেতনা যেন তাড়িয়ে নিয়ে গিয়েছে।

    সত্তর বছরের বৃদ্ধের পক্ষে তো হাঁটা সম্ভব নয়, কিন্তু তাঁকে তো হাঁটতেই হবে (“নাহ্ মরণ অত সহজ নয়”)। এখনও তো চরাচর দেখা শেষ হয়নি। উষ্ণ রক্তের অনুভূতির তৃষ্ণা যে এখনও দেহে সাড়া দেয়। গল্পের প্লট বড় জটিল। দিন বাড়বে, বৃদ্ধ ক্লান্ত হবে, পথে বাধা আসবে, মানুষের সাক্ষাৎ ঘটবে। মানুষের আশ্রয় নিতে বাধ্য হবে। এই চরাচর যে দুঃখময় সেই রহস্য উদ্ঘাটিত হবে। গল্পের চরিত্র এক থেকে দুই হয়ে বহু হবে। বৃদ্ধের অলীক স্বপ্ন জনজীবনের সকলেই ধীরে ধীরে বিশ্বাস করতে বাধ্য হবে। সর্বস্বহারা মানুষ যা পায় তাই আঁকড়ে ধরতে চায়, হোক তা যতই অলীক, অবিশ্বাসের। ছোটসোনা মাণ্ডি, আদিবাসী শ্রেণি, কুষ্ঠরোগী প্রত্যেকেই দুঃখের কথা শোনাবে। প্রত্যেকেই আশাহত। নিরাশ হয়ে কোনক্রমে বেঁচে আছে। বাঁচতে হয় বলেই বেঁচে আছে। ফকিরচাঁদের কাছে বড়বাবু যেমন মোটিভ, তেমনি অন্যদের দৃষ্টিতে ফকিরচাঁদ মোটিভ হয়ে উঠবে। জনজীবনের কাছে ফকিরচাঁদ সুখ তৃপ্তির মাধ্যম হয়ে ওঠে। সকলেই অপেক্ষা করবে ফকিরচাঁদের ফিরে আসার জন্য। কিন্তু ফেরা হবে না। প্রাপ্তির খাতায় শূন্য। ফকিরচাঁদ নিজেই শূন্যের মালা গলায় পড়বে। জনজীবনের সকলেই স্বস্থানে অপেক্ষা করবে, ফকিরচাঁদ শুধু সুবর্ণরেখার বালিয়াড়ি দেখে যাবে। এই শূন্যতা, ব্যক্তির নিঃসঙ্গতা অতিক্রম করে চরাচরের নিঃসঙ্গতা বড় চরিত্র হয়ে ধরা দেবে।

    ফকিরচাঁদের যাত্রাপথে তিনটি স্টপেজ পড়বে। প্রথমে ছোটসোনা মাণ্ডি। যে নিজের জমিহীনতা, ভালোবেসে বিবাহ করতে না পারার দুঃখ জানাবে। আদিবাসী শ্রেণি যেন দুঃখের মালা ঘুচাতে চাইবে। শোনা যাক আদিবাসী জীবনের সেই চরম দরিদ্রের কথা—
    “আমাদের বড় দুঃখ বুড়ো। শালুই পূজায় ধুমধাম করতে পারিনে। শাল গাছই জোটে না, ফরেষ্টার চালান দেবে খড়গপুরে, আমাদের এই দুঃখ। আমাদের কষ্ট হয় যে পূজায় বরাহ বলি দিতে পারিনে, কত দুঃখ! আমার মেয়েটা ভিনদেশি হা-ঘরের সঙ্গে পালিয়ে যাবে বোধ হয়…। বড় দুঃখ শাল গাছ পাইনে, কাঠ কাটতে পাইনে, শিকার জোটে না। সব চালান দেবে খড়গপুরে। বরাহ জোটে না। মারাং বরু সন্তুষ্ট হয় না বুড়া… নেশা করলে পুলিশে এসে ধরে।” (গাঁওবুড়ো, শ্রেষ্ঠ গল্প, করুণা প্রকাশনী, কলকাতা-০৯, দ্বিতীয় প্রকাশ, বইমেলা ২০১২, পৃ. ১২)

    শেষে পাবে কুষ্ঠরোগীকে। যে সমাজের চোখে প্রায় বাতিল হয়ে গেছে। বনের ধারে পড়ে মৃত্যুর দিন গুনছে। কিন্তু মৃত্যুবরণ করতে চায় না। প্রত্যেকেই যেন নিজেদের আশা আকাঙ্ক্ষার কথা বলবে। প্রত্যেকেই বাঁচার স্বপ্নে বিভোর। তিন স্টপেজেই বৃদ্ধ বড়বাবুর কথা বলবে। প্রত্যেকেই বড়বাবু ধারণায় অবিশ্বাস করবে, অলীক ভাববে। নিজেদের বোধ বিশ্বাসে জানে সুবর্ণরেখার তীরে শুধুই শূন্যতা। কিন্তু বৃদ্ধ ফকিরচাঁদ বিশ্বাস উৎপাদনে বাধ্য হবে। ওদিকে সুবর্ণরেখা সমস্ত গ্রাস করবে, গ্রামের পর গ্রাম বাস্তুভিটে নিশ্চিহ্ন করে দেবে, নদীর মতোই ফকিরচাঁদের স্বপ্ন ভাঙবে। মানুষের স্বপ্ন তো সহজেই মরে যায় না। মানুষ স্বপ্নের সমাধি পর্যন্ত নিজের বিশ্বাস টিকিয়ে রাখতে প্রস্তুত। নিজের মনকেই প্রবোধ দেবে হয়ত পথ ভুল হয়েছে। বড়বাবু নিশ্চয়ই আছে। এখানে না হলেও আশেপাশে আছে। ফকিরচাঁদের নিঃসঙ্গতা বৃদ্ধি পাবে। চরাচরের অন্ধকার ঘনিয়ে আসবে। জীবনের অন্ধকারও প্রসারিত হয়ে যাবে। আজ ফকিরচাঁদ তো কেবল এক নয়, ব্যক্তি নয়, সে সমষ্টির প্রতিনিধি। তাঁর পথ চেয়ে বসে আছে অনেকগুলি মানুষ। সেই মানুষগুলির আশা ভরসা তো ফকির চাঁদকে সামনে রেখেই। ক্রমেই হতাশা গ্রাস করবে। হতাশার তরবারি ক্রমে আঘাত করবে।

    ক্রমেই ফকিরচাঁদের আত্মচিন্তা বৃদ্ধি পাবে। গল্পের ন্যারেটর কখনও লেখক কখনও ফকিরচাঁদ হয়ে উঠবে। বৃদ্ধের কাছে মোটিভ বড়বাবু, জনজীবনের কাছে মোটিভ হয়ে উঠবেন ফকিরচাঁদ। বৃদ্ধ ফকিরচাঁদ বড়বাবুকে যে আসনে বসিয়েছেন আদিবাসীরাও ফকির চাঁদকে সমান্তরাল আসনে বসাবেন। আদিবাসী দৃষ্টিতে ফকিরচাঁদ হয়ে উঠবেন ব্রাহ্মণের প্রতীক। তবে এই ব্রাহ্মণ শোষণ করে না পথ দেখায়। আবার আদিবাসী দৃষ্টিতে বড়বাবু (ফরেস্টার) শোষণের প্রতীক। আদিবাসীরা বড়বাবু বলতে ফরেস্টারকেই বোঝে। ফকিরচাঁদ আদিবাসীদের বাস্তব ভেঙে পরিকল্পিত ভাববাস্তব গড়ে তুলবেন। কিন্তু যা আসলে অলীক। সেই অলীকত্ব বিশ্বাসে ভেঙে দেবেন। বড়বাবু অলীক, বিভ্রম বলে তার দায়িত্ব, নৈতিকতা অনুপস্থিত, ফকিরচাঁদ বাস্তবের মানুষ বলেই দায়িত্ব বাড়বে, নিজের চিন্তার পাশাপাশি জনজীবনের মানুষগুলির চিন্তা প্রসারিত হবে। বৃদ্ধ আত্ম-জিজ্ঞাসায় ও নিঃসঙ্গতার আবরণে কুয়াশার চাদরের মতো ঢেকে যাবেন। আখ্যানে উচ্চারিত হয়ে চলবে—
    “তখন অন্ধকারের পৃথিবীতে চাঁদ ভেসেছে গেরুয়া বর্ণের ডিম্বাকার। তার সামনে অন্তহীন চরাচরে কেউ নেই। সেই বিশাল পুরুষও নয়। একমাত্র আছে বিশাল বালিয়াড়ি নিয়ে এই নদী। সব কেমন রহস্যময়। বুড়োর মাথার ঠিক থাকছে না, সব ভুল হয়ে যাচ্ছে। বড়বাবু তুমি থাকলে না। মানুষে বলে এমন মানুষ আর এখন থাকে না। তুমি থাকলে না তাহলে আমার কষ্ট ছোটসোনার দুঃখ, কুষ্ঠরোগীর জীবন আর সেই সাঁওতাল গাঁয়ের কষ্ট বেদনা কী ভাবে হারিয়ে যাবে?” (তদেব, পৃ. ১৫)

    নিঃসঙ্গতার পরিসর চওড়া হবে। অন্ধকার যত ঘনিয়ে আসবে নিঃসঙ্গতা তত বড় হবে। অন্ধকার ও নিঃসঙ্গতা একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠবে। দুজন দুজনকে পরাজিত করতে চাইবে। কেউই পরাজিত হবে না মাঝ থেকে ট্র্যাজেডির নায়ক হয়ে উঠবেন ফকিরচাঁদ। ট্র্যাজেডির আত্মযন্ত্রণায় দগ্ধ হবেন। তবে প্রাপ্তির আশায় মশগুল থাকবেন। শেষে নদীকেই জিজ্ঞাসা করবেন। নদী থাকলে মানুষ থাকবে না কেন? নদী থাকলে জনপদ জীবন থাকবে না কেন? নদী সব ডুবিয়ে দিলেও বিশ্বাস কি ডুবে যাবে? বিশ্বাস ডুবে গেলে মানুষ যাবে কোথায়? আর দুঃখ জিইয়ে থাকে কেন? যার কিছু নেই তার দুঃখ থাকবে কেন? চরাচরের নিয়ম আইন কানুন নিয়ে ভাববেন। মহাবিশ্বের রহস্য চরাচরে ভেসে যাবে। ফকিরচাঁদ মহাবিশ্বের অংশ হয়ে উঠবেন। ক্ষুদ্র অংশ হয়ে নিঃসঙ্গতার চোরাবালিতে ডুবতে থাকবেন।

    ফকিরচাঁদ নিজের আত্ম-জিজ্ঞাসায় ঢেউ তুলবেন সকলের মতো তাহার জীবন হলে এমন হাঁটতে হতো না। অপ্রাপ্তির ভাড়ায় যখন শূন্য হতে চলবে (যা অলরেডি গিয়েছে, তবুও ফিরে আসার বিশ্বাস আছে) তখন বিচ্যুত ভাবনা বড় হবে। নতুন বউ নয় ছেলে ফিরে আসুক। বিস্ময়বোধ তাড়া করে বেড়াবে। যার কিছু নেই সে তো মনে মনে বহুকিছু কল্পনা করে চলবেন। কল্পনায় নিজেকে নায়ক ভেবে আত্মতৃপ্তির স্বাদ অনুভব করবেন। ফকিরচাঁদ সেই স্বাদ অনুভব করে। কিন্তু একদিন তো শরীরে মোষের মতো শক্তি ছিল। শক্তি গেলেও জেদ তো যায়নি। এই জেদই ফকির চাঁদকে কদম কদম এগিয়ে দেবে।

    একটি পথ বা সরণি গল্পের পার্শ্বচরিত্র হয়ে উঠবে। কিছু মানুষ ফকিরচাঁদের জীবনে ডিম লাইটের মতো উঁকি দেবে বটে কিন্তু জার্নিতে পথই দাঁড়িয়ে থাকবে। পথ গান গাইবে না বটে, পথ পথিককে আশ্রয় বা পথ দেখাবে না বটে তবুও পথের আত্মজিজ্ঞসা ফকিরচাঁদ এড়িয়ে যেতে পারবেন না। ভূগোলের নির্দিষ্ট সীমারেখায় (কুসুমপুর থেকে সুবর্ণরেখার তীর) প্লট আবৃত থেকেও কাহিনী উড়ান দেবে বিভ্রমে। বাস্তবের পাশাপাশি পরিকল্পিত অবাস্তব নির্মাণ করে চরিত্রকে গোলকধাঁধায় রেখে শ্রীমিত্র নিজের ফর্ম খুঁজে চলবেন (একটু পরেই বিভ্রম নামে উপন্যাস লিখবেন, পরে তা পালটে ‘অশ্বচরিত’ রচনা করবেন, যা বঙ্কিম পুরস্কার এনে দেবে, শুধু তাই নয় সারাজীবন চরিত্রকে অর্ধ বাস্তবে ডোবাবেন ভাসাবেন)। নিঃসঙ্গতার সঙ্গে শূন্যতা আখ্যানে বড় ভূমিকা নেবে। শূন্য হাতে যাত্রা শুরু করে আবার শূন্যতেই মিলিয়ে যেতে হচ্ছে। ঘর থেকে শূন্য হাতে মহাবিশ্বের প্রান্তে উপস্থিত হয়েছেন, কিন্তু মহাবিশ্ব থেকে তো শূন্যতা নিয়ে ঘরে ফেরা যায় না। অসম্ভব। হতাশা নিয়ে আর কে ফিরতে চায়? ফকির চাঁদেরও আর ফেরা হয়নি। শূন্যতা থেকে পূর্ণতার অভিমুখে যাত্রা, যাত্রা শেষে শূন্যতার আত্মদর্শনে উপনীত হওয়া কাহিনীর মুখ্যসূত্র হয়ে উঠবে। প্রাপ্তির সত্যে অগ্রসর হয়ে অ-প্রাপ্তির বেদনা বাতাসে ঘুরতে থাকবে।

    অমর মিত্রের গল্পভূমির এই পর্বে ক্রমেই পথ, হাঁটা, এক পরিসর থেকে অন্য পরিসরে যাত্রা বড় হয়ে উঠবে। মনের মধ্যে উঁকি দেবে ‘মেলার দিকে ঘর’, ‘আগুনের দিন’, ‘ডাইন’ ‘দুই নারী’ গল্পের কথা। ‘গাঁওবুড়ো’ গল্পের মতো সকল আখ্যানই চলনশীল প্রেক্ষাপটে এগিয়ে যাবে। আলোচ্য গল্পের সমাপ্তি ঘটেছে ওপেন ফর্মে। ফকিরচাঁদের যাত্রা দিয়ে গল্পের সূচনা হয়েছিল, শেষ হবে ফিরবে এই আশায়। গল্পের বয়ানে অন্ধকারের চিত্রনাট্য, হতাশার হাহাকার, নিঃসঙ্গতার নৈঃশব্দ্য পাঠককে ক্রমেই অনুসন্ধান প্রবণ করে তুলবে। গল্প বাড়িতে বিশ্বাস, লোকাচার, সংস্কারের খেলা চলবে। ভাষায় কাব্যস্রোত বয়ে যাবে। উপমার বিচ্ছুরণে গল্প নদীতে ক্রমেই ঢেউ উঠবে।

    ‘গাঁওবুড়ো’ গল্পটি প্রকাশিত হবে ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে ‘অমৃত’ পত্রিকায়। ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দের জুন মাসে প্রকাশিত অমর মিত্রের প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘মাঠ ভাঙে কালপুরুষ’ গ্রন্থে গল্পটি স্থান পাবে একেবারে অন্তিমে। প্রথম গল্পগ্রন্থ প্রকাশের পঁচিশ বছর পর প্রকাশিত হবে লেখকের ‘শ্রেষ্ঠ গল্প’ (২০০৩)। ‘শ্রেষ্ঠ গল্প’এ প্রথম গল্পগ্রন্থ থেকে দুটি গল্প নির্বাচিত হবে লেখকের কলমে—‘মেলার দিকে ঘর’, ‘গাঁওবুড়ো’। ‘শ্রেষ্ঠ গল্প’র ভূমিকায় সমালোচক রুশতি সেন আলোচ্য গল্প সম্পর্কে মন্তব্য করবেন—
    “সংকলনের দ্বিতীয় গল্প ‘গাঁওবুড়ো’ (১৯৭৭) যখন লেখা হয়েছিল, সেই সাতের দশক অমরের সাহিত্যচর্চার প্রথম দশক। ছোটগল্পের ঐতিহ্যে একান্ত সম্পন্ন এই বাংলা সাহিত্যের প্রান্তরে নতুন লেখক তখনো রূপকথার সাধ নিয়ে বাস্তববাদের ছককে পুরো ভেঙে ফেলতে পারেন না। ‘গাঁওবুড়ো’র মতো গল্পে মোটিভ জরুরী হয়ে পড়ে। রূপকথাতেই পৌঁছতে চান অমর। কিন্তু বাস্তববাদের বাধা তিনি পেরতে পারেন না। অথচ সেই সাবেকি বাস্তববাদ অমরের সমকালীন বাস্তবকে শিল্পের সত্যে পুরোপুরি গাঁথতে অক্ষম।” (শ্রেষ্ঠ গল্প, ভূমিকা, পৃ. XI)

    যদিও ভূমিকার শেষে রুশতি সেন জানিয়েছেন লেখকের নিজের নির্বাচিত গল্পের সঙ্গে পাঠকের( রুশতি সেন) পছন্দপুরের গল্পের ফারাক স্পষ্ট করতেই এই ভূমিকা। লেখক নিজের চাহিদা, মনন অনুসারে গল্প সাজাবেন, সমালোচক (পাঠক) নিজের বোধ, বিশ্বাস, মনন অনুসারে গল্প ক্রম চাইবেন। ‘শ্রেষ্ঠ গল্প’ সংকলনের পরে তিনটি বড় গল্প সংকলন ‘সেরা ৫০টি গল্প’, ‘পঞ্চাশটি প্রিয় গল্প’, ‘গল্প ৫১’তে ‘গাঁওবুড়ো’র আর দেখা মিলবে না। সমালোচকের সেই বক্তব্যই কি লেখককে এই গল্প সম্পর্কে অনীহা গড়ে দেবে? নইলে ‘সেরা’, ‘প্রিয়’ বিশেষণে ভূষিত সংকলনে এই গল্প অনুপস্থিত! যদিও লেখকের বিশ্বাস ছিল ভিন্ন। গল্পের আঙ্গিক, তত্ত্ব থেকে দৈনন্দিন বাস্তবতাকে বড় ভেবে জেনে এসেছেন, সেই পদ্ধতিতেই শিল্পের নির্মাণ ঘটিয়েছেন—
    “আসলে গল্পের আঙ্গিক, লিখন প্রণালীর জন্য নানারকম তত্ত্ব উপদেশের চেয়ে জীবনযাপনের দৈনন্দিনতার অনেক বড় ভূমিকা। একটা সময় ক্যাম্পে অফিসে পৌঁছন, ক্যাম্প অফিস থেকে বাড়ি আসা, আবার যাওয়া আবার আসা, ক্যাম্প অফিস থেকে জরিপের দল সঙ্গ করে দূর গ্রামের দিকে যাত্রা এবং যাত্রাপথে দুপাশের গ্রামকে দেখা—এই ধরনটিই আমার গল্পের আঙ্গিক হয়ে আসে। মেলার দিকে ঘর, গাঁওবুড়ো, আরো অনেক গল্পে এই যাত্রাপথই ছিল গল্প।” (অলীক এই জীবন, শ্রেষ্ঠ গল্প, পৃ. XVII)

    এই সত্য বিশ্বাস করেও গল্পকে আর স্থান দেননি। না পাঠক মহল থেকে তেমন কোনো সাড়া পাননি? যে সাড়া পেয়েছিলেন ‘দানপত্র’র ক্ষেত্রে। রুশতি সেনের ভূমিকা লেখার প্রায় কুড়ি বছর অপেক্ষা করতে হবে এই গল্পের ভাগ্য ফিরতে। কে আর জানে এই গল্পই কিছুদিন আগে বিশ্বজয় করে আসবে। বাংলা গল্পকে বিশ্ব দরবারে প্রবেশ করিয়ে দেবে। শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় বেঁচে থাকলে একটা হই-হুল্লোড় হয়ে যেত। গর্বের সঙ্গে ঘোষণা করতেন কার পত্রিকায় প্রকাশিত গল্প বিশ্ব জয় করে এলো!

    ‘গাঁওবুড়ো’ গল্পের ইংরেজি অনুবাদ করবেন অনীশ গুপ্ত। ইংরেজি অনুবাদের নাম হবে—‘The Old Man of Kusumpur’. যা ‘ও হেনরি’ পুরস্কার জয়ী হয়ে আসবে। এবার ‘গাঁওবুড়ো ও অন্যান্য গল্প’ (দে’জ) নামে গল্পগ্রন্থই প্রকাশিত হবে। এমনকি ইংরেজিতে গল্পগ্রন্থও প্রকাশিত হবে ‘The old Man of KUSUMPUR & Other Stories’.





    বই: গাঁওবুড়ো ও অন্যান্য গল্প
    লেখক: অমর মিত্র
    প্ৰকাশক : দে'জ পাবলিকেশন
    মূল্য: ২৬৫/- টাকা

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • পড়াবই | ২০ নভেম্বর ২০২২ | ১৭৮৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • প্রতিভা | 115.96.***.*** | ২১ নভেম্বর ২০২২ ১২:১৫513973
  • গাঁওবুড়ো গল্পটির একটি বিশেষত্ব আছে। প্রজন্মের ফারাক এ গল্পের ক্ষেত্রে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে না। আমার ছেলের সঙ্গে কথা হচ্ছিল, সে বলল 'পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ গল্পের মধ্যে যথান পাবে।'
  • পুরুষোত্তম সিংহ | 2409:4061:2d11:6152::3289:***:*** | ২১ নভেম্বর ২০২২ ১৪:৫২513980
  • মহৎ গল্পের লক্ষণই তাই।   সৎ সাহিত্য স্থান কাল পাত্র অতিক্রম করে যুগে যুগে বয়ে চলে।         
  • প্রতিভা | 115.96.***.*** | ২১ নভেম্বর ২০২২ ২২:২৩513998
  • চশমা ছাড়া টাইপ করেছিলাম। যথান নয় স্থান হবে। 
  • ইন্দ্রাণী | ২৬ নভেম্বর ২০২২ ১১:২৮514171
  • গাঁওবুড়ো গল্পটি নিয়ে আলোচনা যথার্থ কারণেই। কিন্তু বইটিতে আরো চব্বিশটি গল্প। বাকি গল্পগুলি নিয়ে অর্থাৎ সমগ্র সংকলনটি নিয়ে আলোচনা কাঙ্খিত ছিল।
  • ইন্দ্রাণী | ২৬ নভেম্বর ২০২২ ১১:৫২514172
  • আন্তর্জাতিক খ্যাতি প্রাপ্ত একটি গল্প এই বইতে। ওদিকে মোটামুটি একই সময়ে ধনপতির চর ও ইংরিজিতে অনূদিত হয়ে সর্বত্র পৌঁছে যাচ্ছে। সংকলনটি , আমার মতে লেখকের গ্রন্থপঞ্জিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে, ফলতঃ।

    বইটিতে একটি গল্প ১৯৭৪ এ লেখা, আর একটি ১৯৭৭এ। বাকি আখ্যান ' গত শতকের শেষ দশক এবং এই শতকের প্রারম্ভে লেখা।' লেখাগুলি কালানুক্রমে সজ্জিত নয়। কেন নয়, তা লেখক শ্রী মিত্র ভূমিকাতে নিবেদন করেছেন। ভূমিকাতেই লিখেছেন তাঁর লেখার দর্শনের কথা।
    গোটা সংকলনে শ্রী মিত্রর এই দর্শন কতখানি প্রতিফলিত বা এই যে কালানুক্রম না মেনে সজ্জার অভিঘাত কী ও কতখানি বিম্বিত, লেখাগুলির অন্তর্লীন যোগসূত্র ( যা বিনিসুতোর মত একটি সংকলনকে ধরে রাখে) ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন ছিল।
  • পুরুষোত্তম সিংহ | 2409:4061:2d0b:ec0e::3289:***:*** | ২৮ নভেম্বর ২০২২ ২২:৫৯514222
  • দিদি আমি দে'জ পাবলিশিং এর বইটা নিয়ে আলোচনা করিনি। একজন শুধু এই গল্পটা নিয়ে লিখতে বলেছিল। ছবিটা ওই বইয়ের দেওয়ার হয়ত ভুল ধারণা হয়েছে। 
  • ইন্দ্রাণী | ২৯ নভেম্বর ২০২২ ০২:৩৮514223
  • থ্যাঙ্কু পুরুষোত্তম। বই য়ের আলোচনা ভেবে নিয়ে মন্তব্য করেছিলাম।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক মতামত দিন