এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  রাজনীতি

  • বিজেপির সাময়িক পশ্চাদপসরণ, সংখ্যালঘু-নিপীড়ন চলবে

    সোমনাথ গুহ
    আলোচনা | রাজনীতি | ১০ জুন ২০২২ | ৫৭০৯ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)

  • মহানবী সম্পর্কে অবমাননামূলক মন্তব্যর জন্য বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র নূপুর শর্মাকে দল থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। একই বক্তব্য টুইট করার জন্য দলের দিল্লি শাখার নবীন জিন্দালকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বোঝাই যায় দলে নূপুর যথেষ্ট ওজনদার নেত্রী যে কারণে মূল বক্তব্যটি তাঁর হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে শুধুমাত্র সাসপেন্ড করা হয়েছে। অনেকের প্রশ্ন কে এই নূপুর শর্মা? আশি নব্বইয়ের দশকে বিজেপির অতি পরিচিত মুখ ছিলেন বিজয়রাজে সিন্ধিয়া, গোয়ালিয়রের রাজমাতা। ১৯৮৭ সালে রাজস্থানে রূপ কানোয়ার যখন তাঁর স্বামীর চিতায় আত্মাহুতি দিয়েছিলেন তখন তিনি তাঁকে সমর্থন করেছিলেন। সতীদাহ ফিরিয়ে আনার তাঁর এই প্রচেষ্টাকে সারা দেশ ধিক্কার জানিয়েছিল। তাঁর যোগ্য দুই উত্তরসূরি ছিলেন উমা ভারতী ও সাধ্বি রিতাম্ভারা। এঁরা ধর্মীয় বাতাবরণে, ধর্মীয় শিক্ষায় ও ধর্মগুরুদের আশ্রয়ে লালিত পালিত হয়েছেন। এঁদের বেশভূষা ছিল সাবেকি সাধ্বীদের মত, আদবকায়দা আটপৌরে, ভাষা কর্কশ, বিষময়, বেলাগাম ঘৃণা বিদ্বেষ ছড়ানোয় এঁদের জুড়ি মেলা ছিল ভার।

    একবিংশ শতাব্দীর বিজেপিতে উপরোক্ত ধরণের নেত্রীরা পিছনে চলে গেছে। এখন তাঁদের পোস্টার গার্ল নূপুর শর্মা, মনিকা অরোরা, সোনালি চিতলকার, প্রেরণা মালহোত্রা। এঁরা উচ্চ শিক্ষিতা। মনিকা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, সোনালি ও প্রেরণা দিল্লির মিরান্ডা হাউস এবং রামলাল আনন্দ কলেজের অধ্যাপিকা। বিশ বছর আগেও বিজেপিকে মনে করা হতো একটা বানিয়াদের দল, দূরবীন দিয়ে খুঁজেও তাঁরা তাঁদের হয়ে বলার মত কোন বুদ্ধিজীবী পেতেন না। যুগ আমূল পাল্টে গেছে। ২০২০র দিল্লি ‘দাঙ্গা’র একটি তাৎপর্যপূর্ণ দিক হল এই প্রথম শাসক তাঁর পেটোয়া লোকজনদের দিয়ে একটি তথ্যানুসন্ধান রিপোর্ট তৈরি করে ফেলে। মনিকা, সোনালি ও প্রেরণা ছিল সেই রিপোর্টের কারিগর যাতে তাঁরা সিএএ-এনআরসি বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে, শাহীনবাগ, জামিয়া-জেএনইউতে প্রতিবাদ এবং অবশেষে ‘দাঙ্গা’, পুরোটাকেই একটা আর্বান নকশাল-জিহাদি চক্রান্ত হিসাবে সাব্যস্ত করে। ব্লুমসবেরি থেকে তাঁরা এই রিপোর্টটিকে বই হিসাবে প্রকাশিত করারও চেষ্টা করে। বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে অন্যতম গেস্ট অফ অনার ছিলেন এই নূপুর শর্মা।

    তিনি নিজে বই লিখেছেন ‘দিল্লি এন্টি-হিন্দু রায়টস, ২০২০, দ্য ম্যাকাবার ড্যান্স’ যেখানে তিনি একই নকশাল-জিহাদি তত্ত্ব আউরেছেন। তিনি নতুন শতাব্দীর এই নতুন নেতা নেত্রীদের মধ্যে অন্যতম উজ্জ্বল তারকা। নূপুর শর্মা উচ্চ শিক্ষিতা তো বটেই, বিদেশী ডিগ্রির তকমাও তাঁর আছে। আগেকার নেত্রীদের মত ইংরাজি বলতে গিয়ে তাঁকে বারবার ঢোক গিলতে হয় না। হিন্দি ইংরাজি দুটোতেই তিনি তুখোড়। তাঁর বেশভূষা ঝকঝকে, স্মার্ট; ঠাটবাট, আদবকায়দা রীতিমতো চমকপ্রদ। রোজ সন্ধ্যায় তিনি টিভি চ্যানেল আলোকিত করেন। গোদি মিডিয়ার সঞ্চালক/সঞ্চালিকাদের সাহায্যে যে কোন বিতর্কে তিনি বিরোধীদের নাস্তানাবুদ করে দেন, অনায়াসে গালি দিয়ে তাঁদের চুপ করিয়ে দিতে পারেন। ভক্তরা তাঁর ক্ষমতায় অভিভূত, তাঁকে সিংহী, বাঘিনী নামে ভূষিত করেন। দলের সর্বোচ্চ ব্যক্তি থেকে শুরু করে প্রত্যেকে তাঁর বাকপটুতা, বাকচাতুর্যে মন্ত্রমুগ্ধ। তাঁরা তাঁর টুইটার নিয়মিত অনুসরণ করেন। এহেন এক নেত্রী যিনি দলের মুখপাত্র বিজেপি তাঁকে নিছকই একজন ‘ফ্রিঞ্জ এলিমেন্ট’, নগণ্য ব্যক্তি, বলে ঝেড়ে ফেলতে চাইছে, বলছে তাঁর বক্তব্য সরকার বা দলের মতামত নয়।

    নূপুর ২৬শে মে একটি টিভি চ্যানেলে বিতর্কিত মন্তব্যটি করেছিলেন। তারপর এক সপ্তাহ কেটে গেছে কেন্দ্রীয় সরকার বা বিজেপির তরফ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ইতিমধ্যে কানপুরে হিংসা ছড়িয়েছে তবুও নেতারা মৌনব্রত পালন করেছে। আরব ও ইসলামিক দেশ যখন প্রতিবাদে মুখর হয়েছে, ভারতীয় পণ্য বয়কট করা শুরু করেছে, ভারতের রাষ্ট্রদূতদের ডেকে কড়কানো শুরু করেছে, তখন বিজেপি নড়েচড়ে বসেছে। পত্রপাঠ দু’জনকে বিদায় করে ড্যামেজ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করেছে।

    প্রশ্ন হল বিজেপি কি আদৌ অনুতপ্ত? অন্য ধর্মের সাথে আমার হাজার বিবাদ থাকলেও তাঁদের পয়গম্বরকে অপমান করা যে অপরাধ এই বোধ কি আদৌ বিজেপি নেতৃত্বের আছে? নাকি মুসলিম সমাজকে হেনস্থা ও কোণঠাসা করার যে সীমারেখা যা তাঁরা প্রতিনিয়ত প্রসারিত করছে, নূপুর শর্মার মন্তব্য সেরকমই একটি প্রয়াস? বিশেষ করে ২০১৯ এর পর থেকে তাঁরা একটা করে লক্ষণ-রেখা তৈরি করেছে এবং সেটাকে লঙ্ঘন করেছে, আবার নতুন লক্ষণ-রেখা সৃষ্টি করেছে। বারবার পরীক্ষা করেছে মুসলিম সমাজ কতটা কড়া দাওয়াই সহ্য করতে পারে। সিএএ-এনআরসির বিরুদ্ধে, হিজাব বিতর্কের সময়, মুসলিম সমাজ ক্ষোভে ফেটে পড়েছে। কিন্তু প্রবল সরকারি দমন-পীড়ন, বিচিত্র নামধারী হিন্দু সেনাদের সন্ত্রাস এবং উগ্র ধর্মান্ধতায় বুঁদ হয়ে থাকা বিপুল হিন্দু জনতার নিস্তব্ধতা বা নীরব সমর্থন তাঁদের অবস্থা ক্রমশ আরও অসহায় করে তুলছিল। সুতরাং দাওয়াইটা আরও কড়া কর, খোদ পয়গম্বরকে আক্রমণ কর।

    এবারও কিছু বিক্ষোভের পর হয়তো মুসলিমরা ঘরে ফিরে যেতেন, নেহাত আরব দুনিয়া প্রতিবাদে সরব হল বলে বিজেপি দুঃখপ্রকাশ করতে বাধ্য হল। আরেসেস-বিজেপি নেতৃত্ব অনুতপ্ত নন, যদি হতেন তাহলে ঘটনার পরে এতদিন তাঁরা নীরব থাকতেন না। তাঁরা কেউ ঘটনার নিন্দা করেননি। নূপুর শর্মার দুঃখপ্রকাশও লোক-দেখান; তিনি জানিয়ে দিয়েছেন হিন্দু দেবতাকে ক্রমাগত অপদস্থ করার (জ্ঞানব্যাপী মসজিদে খুঁজে পাওয়া কাঠামোটিকে ফোয়ারা বলা তাঁর মতে শিবলিঙ্গকে হেয় করা) কারণেই তিনি পয়গম্বরকে আক্রমণ করতে বাধ্য হয়েছেন।

    প্রথমে কেন্দ্রীয় সরকার আরব দেশগুলির ক্ষোভ প্রশমিত করবে, সেটা খুব কঠিন হবে না কারণ নিজেদের অর্থনৈতিক স্বার্থের কারণে তারাও চাইবে না যে এই ঘটনা বেশিদূর গড়াক। সেটা হয়ে যাওয়ার পরেই তাঁরা এই ঘটনার ফয়দা তোলার চেষ্টা করবে। তাঁরা জানেন নূপুরের বহিষ্কার ভক্তদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। তাঁরা বলবেন হিন্দু ধর্ম আক্রান্ত, আমাদের দেবতাকে কটু কথা বললে কোনও প্রতিবাদ হয় না অথচ মুসলিমদের ক্ষেত্রে নিন্দার ঝড় ওঠে! তাঁরা এটাও বলবেন আমরা নিজেদের লোককে কী ভাবে শাস্তি দিয়েছি সেটা তো বিশ্ব দেখেছে, এবার কোনও মসজিদের তলায় কী পাওয়া গেছে সেটা নিয়ে কোনও সন্দেহ প্রকাশ করলে, কোনও ‘কটূক্তি’ করলে কিন্তু কেউ পার পাবে না। সেটা পয়গম্বরকে অপমান করার সমতুল্য অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে। অতএব মোহন ভাগবত মিষ্টি কথায় যেটা বলেছেন মসজিদের তলায় শিবলিঙ্গ না পাওয়া গেলেও কিছু যায় আসে না, আসলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বিশ্বাসটাই সার কথা, সেটাই মসজিদ ভেঙে মন্দির করার রাস্তা সুগম করে দেবে। অত খোঁড়াখুঁড়ি, প্রমাণ ইত্যাদির বাপু আর কোনও দরকার নেই।

    অতএব মসজিদ ভেঙে মন্দির গড়ার কাজ ত্বরান্বিত হবে। ১৯৯১ সালে সংসদে আইন পাস হয়েছিল যে বাবরি মসজিদ ছাড়া দেশের আর কোনও ধর্মস্থানের স্টেটাস পরিবর্তন করা যাবে না। বিজেপি সেই আইনের তোয়াক্কা করে না। তাঁদের গেরুয়াবাহিনীর সামনে মুসলিমরা গুটিয়ে যাবে; দেশজুড়ে শত শত মসজিদ লাইন দিয়ে তাঁদের হাতে শহীদ হওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। জ্ঞানব্যাপীর পর মথুরার শাহি ইদ্গাহ, তারপর কুতুব মিনার, তাজমহল... আরও কত; মধ্যপ্রদেশের কমল মৌলা মসজিদ, কর্ণাটকের বাবা বুদান দরগা, সীরঙ্গপাটনার মসজিদ-ই-আলা, খোদ টিপু সুলতানের প্রাসাদ, সেটাও নাকি হিন্দুদের জমির ওপর নির্মিত হয়েছে। এক কর্ণাটকেই নাকি ১০০০০ ধর্মস্থান আছে যা হিন্দু মন্দির ভেঙে তৈরি হয়েছে।

    এরপর তাঁরা বলবেন নূপুর শর্মাকে যখন শাস্তি দেওয়া হয়েছে তখন কানপুরে যাঁরা ঝামেলা করেছেন তাঁদেরও উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। সেখানকার পুলিশ প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া একদম প্রত্যাশিত। তাঁরা বলেছেন ‘দাঙ্গা’ পূর্ব পরিকল্পিত, পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার সাথে দাঙ্গাকারীদের যোগাযোগ আছে, বিদেশী পয়সা এসেছে, হোয়াটস অ্যাপে চক্রান্ত নিয়ে কথোপকথন হয়েছে, একেবারে ডিটো দিল্লি ‘দাঙ্গা’, ২০২০ নিয়ে সঙ্ঘীদের যা বয়ান ছিল তাই। যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁরা প্রায় সবাই মুসলিম। ইসলামিক দুনিয়ায় হৈ চৈ হওয়ার পরে এক বিজেপি আধিকারিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এইসব হট্টগোলের মধ্যে টুক করে নূপুর শর্মার বরখাস্ত রদ করে দেওয়া হবে।

    একটা উল্টো সম্ভাবনাও আছে। এক জঙ্গি গোষ্ঠী ফ্রান্সের কার্টুন পত্রিকা চার্লি হেবদোর অফিসে আক্রমণ করে যে ভাবে বারো জনকে হত্যা করেছিল, ঠিক একই ভাবে এখানে যে কোনও উন্মাদ প্রত্যাঘাত করবে না তা কে বলতে পারে? সেটা হলে তা হবে ভয়ঙ্কর! এক মৌলবাদ আরেক মৌলবাদকে পুষ্ট করে। সেটা হলে হিন্দু মৌলবাদীদের দাপট যে কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। আরেসেস-বিজেপির ক্ষমতা এখন সর্বব্যাপী। প্রায় সব প্রতিষ্ঠান তাঁদের তাঁবেদারে পরিণত হয়েছে। বিরোধীরা মূক। এই ঘটনা নিয়ে তাঁদের কোনও জোরাল প্রতিবাদ নেই। তাই নূপুর শর্মার ঘটনা সাময়িক ভাবে গেরুয়াবাহিনীকে ব্যাকফুটে ঠেলে দিলেও, আদপে এই সংকট তাঁদের পক্ষে আরও অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করবে।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১০ জুন ২০২২ | ৫৭০৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • nb | 2405:8100:8000:5ca1::94:***:*** | ১০ জুন ২০২২ ১৮:৪০508726
  • সহমত। এই কদর্য মন্তব্যের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু সমাজ শান্তিপূর্ণভাবে জাতীয় সড়ক অবরোধ করছেন, তা নিয়েও বর্ণহিন্দুরা আপত্তি জানাচ্ছে। তবে এই প্রতিবাদ ভরসা জোগায় যে আন্দোলন চলবেই।
  • দীপ | 42.***.*** | ১০ জুন ২০২২ ১৮:৫৮508728
  • গোসন্তান ও শূকরশাবক দুইই কাছে ঘৃণ্য। কারো প্রতিই বিশেষ শ্রদ্ধাবোধ নেই। 
    আজ একটি ধর্মীয় গোষ্ঠী তাদের ধর্মের অপমান হয়েছে বলে অবরোধ করছে, ভাংচুর করছে। কাল বিজেপিও এক‌ই দাবি করে রাস্তা অবরোধ করতে পারে, ভাংচুর করতে পারে। তখন এক‌ই ভাবে সমর্থন করবেন তো? 
    প্যান্ডোরার বাক্স একবার খুললে আর বন্ধ হবেনা!
  • দীপ | 42.***.*** | ১০ জুন ২০২২ ১৯:০২508729
  • একটি ধর্মীয় মৌলবাদকে প্রশ্রয় দিলে আরেকটি ধর্মীয় মৌলবাদ উঠে আসে। ভারতে ঠিক সেটাই হয়েছে। আটের দশকেও বিজেপির বিশেষ শক্তি ছিলনা। আজ সেই দল দেশ চালাচ্ছে। একটু ভেবে দেখবেন। ধর্মনিরপেক্ষতার নামে মৌলবাদকে প্রশ্রয় দিলে এটাই হয়!
  • Ranjan Roy | ১০ জুন ২০২২ ২১:৪৪508733
  • "ধর্মনিরপেক্ষতার নামে মৌলবাদকে প্রশ্রয় দিলে এটাই হয়!"
    --দীপ, একটু উদাহরণ সহযোগে যদি বুঝিয়ে দেন।
    অর্থাৎ, মৌলবাদকে প্রশ্রয় দেওয়া এক কথা আর 'ধর্মনিরপেক্ষতার নামে প্রশ্রয় দেওয়া' আরেক।
  • hirak sengupta | ১০ জুন ২০২২ ২২:৩৯508737
  • সমস্যাটা রয়েই যাচ্ছে। কে,কাকে অপমান করল?কে, কতটুকু অসম্মানিত হলেন? 
    কেনই বা হলেন? 
  • Somenath Guha | ১০ জুন ২০২২ ২৩:১৫508738
  • এক মৌলবাদ আরেক মৌলবাদকে পুষ্ট করে। গত দু দিন ধরে যে ধরণের বেলাগাম বিশৃঙ্খলা দেখা গেল তা উগ্র হিন্দুবাদীদের হাত শক্ত করবে। 
  • psd | 2405:8100:8000:5ca1::a0:***:*** | ১০ জুন ২০২২ ২৩:২০508739
  • Ranjan Roy, শাহবানু মামলার কথা পড়ে নিন, আইডিয়া হবে।
  • aranya | 2601:84:4600:5410:79ff:2df0:afa1:***:*** | ১১ জুন ২০২২ ০০:৪৫508743
  • 'মহানবী সম্পর্কে অবমাননামূলক মন্তব্যর জন্য'
    - অবমাননাকর কেন? নূপুর যা বলেছেন, তা তো হাদিশে আছে 
  • Ranjan Roy | ১১ জুন ২০২২ ১০:৩৭508751
  • @ psd,
           না ভাই; শাহবানো মামলা ঠিক উদাহরণ নয়। ওটা আমাদের যৌবনের কেস, তাই ভাল মনে আছে। বলছিঃ
    ১৯৮৫ সালে সুপ্রীম কোর্টের পাঁচজনের বেঞ্চ শাহবানোকে তিন তালাক দেওয়া  স্বামী ইন্দোরের এক উকিলের আপিল খারিজ করে দিয়ে বলে-- তালাকশুদা বৌয়ের জন্যও খোরপোষ দিতে হবে। ইসলামী আইনে যদিও বিদ্দতের সময় টুকুর জন্য দেওয়ার বিধান, কিন্তু এখানে হাইকোর্টের রায় সিভিল ল নিয়ে নয়, ক্রিমিনাল প্রসিডিওর অ্যাক্টের ধারা ১২৫ নিয়ে। আর ভারতে (এবং সব দেশেই) ক্রিমিনাল অ্যাক্ট  জাতি-ধর্ম - নির্বিশেষে সব নাগরিকের জন্য সমান। এখানে ধর্মীয় সিভিল অ্যাক্টের দোহাই চলবে না।  এই রায় ছিল পুরোপুরি সেকুলার।
    কিন্তু এক বুছর পরে ১৯৮৬ সালেই রাজীব গান্ধীর সরকার মুসলিম কট্টরপন্থীদের সামনে মাথা নুইয়ে মুসলিম উইমেন'স প্রোটেকশন অন ডিভোর্স অ্যান্ড মেইন্টেনান্স) অ্যাক্ট ১৯৮৬ পাস করিয়ে সুপ্রীম কোর্টের সেকুলার রায়কে পাশ কাটিয়ে গেল। 
    আবার সেই ১৯৮৬ সালেই ২৫শে জানুয়ারি তারিখে উমেশ চন্দ্র পান্ডে বলে এক হিন্দু উকিলের বাবরি মসজিদের ভেতরে ঢুকে রামলালার পুজোর অধিকার মেনে নিয়ে দাদু নেহেরুজীর ১৯৪৯ সালে  লাগানো তালা খুলে দেন।
      ( ১৯৪৯ সালের ২২-২৩ ডিসেম্বরে ৫০/৬০ জন জোর করে মসজিদে ঢুকে রামসীতার মূর্তি বসিয়ে দেয়। পুলিশ হাবিলদার মাতাপ্রসাদের রিপোর্ট। তখন নেহেরু মূর্তিদুটিকে এককামরায় বন্ধ করে তালা লাগানোর অর্ডার দেন)।
     ২ তাহলে দেখা যাচ্ছে ভোটের জন্য রাজীব গান্ধী হিন্দু এবং মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের ধার্মিক উত্তেজনার সামনে মাথা নুইয়ে তুষ্টিকরণের স্টেপ নিয়েছিলেন। কিন্তু সুপ্রীম কোর্টের অর্ডার পুরোপুরি সেকুলার ছিল।
      সেকুলার মানে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে ধার্মিক ফরমানের তোয়াক্কা না করা।
    কিন্তু দীপ বলছেন "ধর্মনিরপেক্ষতার নামে মৌলবাদকে প্রশ্রয় দিলে এটাই হয়!"
    এখানে রাজীব গান্ধী  ১৯৮৬ সালে যা করেছিলেন সেটা খোলাখুলি দুদিকের মৌলবাদকে তোল্লাই দেওয়া। আদৌ ধর্মনিরপেক্ষতার নামে' নয়। তাই শাহবানো কেস ঠিক উদাহরণ নয়। আমি চাইছি জানতে--কোথায় ধর্মনিরপেক্ষতার নামে মৌলবাদকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে?
  • দীপ | 2401:4900:3a09:ca82:6768:578e:3324:***:*** | ১১ জুন ২০২২ ১০:৫৭508752
  • কংগ্রেস তো নিজেকে ধর্মনিরপেক্ষ দল বলে দাবি করে। তা এটা কি হলো?
  • dc | 2401:4900:266f:a9e1:b1a5:f714:e4b1:***:*** | ১১ জুন ২০২২ ১০:৫৮508753
  • রঞ্জনদার সাথে একমত। পুরো আশি আর নব্বুই এর দশক ধরেই বিজেপি হার্ড হিন্দুত্ব খেলেছে আর কংগ্রেস সফট হিন্দুত্ব খেলেছে। আর কংগ্রেস এই খেলাটা খেলেছে এই ভেবে যে বিজেপির জুজু দেখিয়ে নিজেরা ক্ষমতা দখল করে রাখবে আর অন্য অপোজিশান পার্টিগুলোকে দাবিয়ে রাখবে। রাজীব গান্ধী শুধু শাহবানো মামলার রায় উল্টে দেন নি, উনি ১৯৮৫ সালে বাবরি মসজিদের তালা খুলে দিয়েছিলেনঃ 
     
    Former Madhya Pradesh Chief Minister and senior Congress leader Kamal Nath on Wednesday said that Rajiv Gandhi was the first person to open the locks of the then Babri Mosque in Ayodhya in 1985 and that no one should take credit for the Ram Temple.
     
    বাজপেয়ীকে নেলি হত্যাকান্ডর জন্য কোন দায় নিতে হয়নি কারন কংগ্রেস চুপ থেকেছে। আর রাজীব গান্দীর পর এই খেলা চালু রাখেন পিভি নরসিংহ রাও। ইন ফ্যাক্ট আদবানীর রখ প্রথম আটকেছিলেন লালু, কংগ্রেসে কোন রাজ্য সরকার সেই চেষ্টা করেনি। আবার ১৯৮৯ এ সফদার হাসমিকে হত্যা করেন কংগ্রেস এর মুকেশ শর্মা। সেকুলারিজম এর ধারা দুদিক থেকেই নষ্ট করেছে কংগ্রেস। পরে বিজেপি যখন ফ্র‌্যাংকেনস্টাইন হয়ে উঠল তখন আর সামলাতে পারে নি, কারন কংগ্রেস দলটা ততোদিনে পুরো ফোঁপরা হয়ে গেছিল। 
  • Ranjan Roy | ১১ জুন ২০২২ ১১:১৫508754
  • দীপ 
      বিজেপির কন্সটিট্যুশন দেখুন। সেখানেও সেকুলারিজমের কথা আছে, হিন্দুরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কথা নেই। সবকা সাথ সবকা বিশ্বাস বলা হয়ও, কাজে?
     
    সেকুলার নেহেরু তালা লাগিয়েছিলেন। রাজীব সেকুলারিজমের নামে খোলেন নি। সোজাসুজি ধর্মভিত্তিক সাম্প্রদায়িক অ্যাকশন--১৯৮৬ সালের দুটো কেসেই, দু'দিকেই। 
     
    ডিসি,
      একেবারে। টু দি পয়েন্ট। প্রত্যেকটি কথার সাথে একমত। এখন রাহুল নিজেকে বলেন জনেউধারী হিন্দু। হে ভগবান, এসব করে আমও গেল ছালাও গেল।
  • S | 2405:8100:8000:5ca1::8b:***:*** | ১১ জুন ২০২২ ১১:২১508755
  • খুব ভালো হয়েছে লেখাটা।

    আমি নুপুর শর্মার মূল মন্তব্যটা নিয়ে কোনও মন্তব্য করবো না। কারণ সেটা এই লেখার আসল উদ্দেশ্য নয়। কিন্তু বিজেপির রিয়্যাকশান নিয়ে দুচার কথা বলতে চাই।

    বিজেপি কেন এত দ্রুততায় রিয়্যাক্ট করেছে সেটা শেখর গুপ্তা খুব ভালো বুঝিয়েছেন। এনারাই, রেমিট্যান্স, ট্রেড, ইনভেস্টমেন্টের বাইরেও একটা বড় ফ্যাক্টর হল পাকিস্তান। বিজেপি কখনই চাইবে না যে মিডল ইস্ট, আরব ওয়ার্ল্ড, মুসলিম দেশগুলো পাকিস্তানের দিকে চলে যাক। কারণ ভিকাস, মেড ইন ইন্ডিয়া, পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলারের ইকনমি, পনেরো লাখের জুমলার পরে এখন বহু লোকই  "পাকিস্তানকে টাইট দিয়েছে - দেবে" মূলত এই আশায় বিজেপিকে ভোট দিচ্ছে।

    অন্যদিকে সম্প্রতি সেক্রেটারি অব স্টেট ব্লিন্কেন নিজে স্টেট ডিপের ইন্ডিয়া সংক্রান্ত রিপোর্টে মাইনরিটিদের উপরে হওয়া আক্রমণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইউক্রেণ যুদ্ধ নিয়ে আম্রিগ্রা, ওয়েস্ট ইন্ডিয়ার উপরে খুব ক্ষুব্ধ। ফলে দিস ইজ নট আ টাইম টু লুজ মোর ফ্রেন্ডস ওভার আ সিলি স্টেটমেন্ট।

    এই দুটই বিজেপির রিয়্যাকশানের মূল কারণ।

    আর এইসব বক্তব্য বা তেজোমহল ইত্যাদি হল আসতে আসতে ভক্তকুলকে আরো মেরুর দিকে নিয়ে যাওয়ার চক্রান্ত যাতে আর কয়েকদিন পরে তারা এমন একটা হিংস্র গড্ডালিকায় প্রবেশ করে যেখান থেকে উঠে আসা কোনওদিনও সম্ভব না হয়। আমেরিকাতে এই ব্যাপারটা অনেকটাই দেখতে পাচ্ছি।
  • দীপ | 42.***.*** | ১১ জুন ২০২২ ১১:২৮508756
  • সেটাই তো বলছি। কংগ্রেস নিজেকে ধর্মনিরপেক্ষ বলে দাবি করে। সেই ধর্মনিরপেক্ষতার নামাবলী চড়িয়েই তো এসব করেছে। 
  • দীপ | 42.***.*** | ১১ জুন ২০২২ ১১:২৯508757
  • আর রুশদির ব‌ইকে কংগ্রেস নিষিদ্ধ করেছিল।
  • Ranjan Roy | ১১ জুন ২০২২ ১১:৩৭508758
  • অরণ্য, 
    আপনি বলছেনঃ- 'অবমাননাকর কেন? নূপুর যা বলেছেন, তা তো হাদিশে আছে'।
     
    -শাস্ত্রে থাকাই কি যথেষ্ট? কন্টেক্সট, ইন্টেনশন, কে বলছেন, কোথায় বলছেন --সেটা দেখতে হবে না? হুতো এই কথাটাই বারবার বলার চেষ্টা করছে।
    নূপুর শর্মা কোন শাস্ত্র নিয়ে অ্যাকাডেমিক আলোচনা করছিলেন না। সোশ্যাল মিডিয়ায় সবচেয়ে বড় শাসক দলের  রাষ্ট্রীয় প্রবক্তা হয়ে  গলা ফাটিয়ে অন্য ধর্মকে হেয় করার উদ্দেশ্যে বলেছিলেন। 
      আমি পালটা উদাহরণ দিচ্ছি-শ্রীমদ্ভাগবতে শ্রীকৃষ্ণের বস্ত্রহরণ পালা আছে। স্নানরতা গোপিনীদের স্নানের কাপড় চুরি করা। এ নিয়ে বাউল গানেও আছেঃ ছাড় ছাড় ত্রিভঙ্গ কালো রঙ্গ কোর না। --
                                                     আমরা কুলবতী কুলের নারী, কালা করলি কাপড় চুরি,
                                                   ছি ছি ছি, লাজে মরি , কুল মজাতে পারব না।
    এখন এটাকে ভিত্তি করে কোন মৌলবী যদি চ্যানেলে বলে--তোমাদের ভগবান তো মেয়েদের স্নানের কাপড় নিয়ে পালাত, তখন আমাদের জ্বলে যাবে না? তখন কি নতুন কিছু বলেনি, ভাগবতে বিস্তারিত বর্ণনা আছে বলে ছেড়ে দেব?
      দেখুন, জামা মসজিদ শিবলিঙ্গ প্রসঙ্গে দিল্লি ইউনিভার্সিটির ইতিহাসের নামী অধ্যাপক রতনলাল শুধু দুটো ফটো ছাপিয়ে লিখেছিলেন যে দেখে তো ফোয়ারা মনে হচ্ছে, শিবলিঙ্গের সঙ্গে বিশেষ মিল কোথায়?
      তাঁকে কিছু ছাত্র মিলে গায়ে হাত তোলে--উনি নাকি শিবের অপমান করেছেন। তারপর তাঁকেই অশান্তি সৃষ্টির কথিত অপরাধে গ্রেফতার করা হয়, আদালতে জামিন পেতে হয়। একই ভাবে লক্ষ্ণৌ ইউনির প্রফেসর রবিকান্ত মন্তব্য করায় ছাত্রের হাতে ক্যাল খেলেন এবং গ্রেফতার হলেন। ধর্মসংসদে খোলাখুলি ডাক দেওয়া হচ্ছে মুসলিমদের মেরে ফেল। একের পর এক বৈঠক। মধ্যপ্রদেশের নীমাচ জেলায়একটি শহরে মসজিদে গণেশ মূর্তি রেখে দিয়ে সেখানে দাঙ্গা করানোর চেষ্টা, সেখানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মুস্লিম সন্দেহে একজন ছিটেল বয়স্ক লোককে তার নাম পরিচয় আধার কার্ড দেখাও বলে মারতে মারতে  তার ভিডিও তোলা হল।  বেচারা মরে গিয়ে রাস্তায় পড়ে রইল। পরে জানা গেল সে হিন্দু, নাম ভঁওরলাল জৈন।
      এই টক্সিক পরিবেশে নূপুর ওই কমেন্ট করে দেখছেন --মুসলিম সমাজ কতটা নিতে পারে।
     বিভিন্ন দেশগু্লো ক্ষমাপ্রার্থনার দাবি করেছে, তার বেশি নয়।
  • dc | 2401:4900:266f:a9e1:b1a5:f714:e4b1:***:*** | ১১ জুন ২০২২ ১১:৪৩508759
  • হ্যাঁ, রুশদির বই নিষিদ্ধ করেছিল। রুশদির ব্যাপারটা বেশ ভালো মনে আছে কারন ওটা আমার প্রথম সিরিয়াস ডিসইউলিউশানমেন্ট, ইন্ডিয়ান সরকারকে নিয়ে। মনে হয়েছিল, ব্রিটিশ সরকার রুশদিকে ডিফেন্ড করতে পারে আর ইন্ডিয়ান সরকার পারে না? আর সিপিএম যখন তসলিমার বই ব্যান করেছিল সেটা ছিল মোমেন্ট অফ বিট্রেয়াল। ভেবেছিলাম, সিপিএম তসলিমাকে ডিফেন্ড করতে পারলো না? তাহলে তো পৃথিবী রসাতলে গেল laugh
     
    রঞ্জনদা, রাহুল গান্ধীর ব্যপারে যতো কম বলা যায় ততো ভালো। তবে ওনার জন্য আমার কষ্ট হয়, বেচারা ছুটে পালিয়ে যেতে চায় কিন্তু মা কিছুতেই ছাড়বে না। 
  • Ranjan Roy | ১১ জুন ২০২২ ১১:৫১508760
  • দীপ,
      আরও কিছু আছে। 
    কংগ্রেস আমলে আয়করে হিন্দু সংযুক্ত পরিবারের ছাড় দেওয়া রয়েছে। কোন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে এই ছাড় দেওয়া হয়নি।  হিন্দুদের দলিত এবং আদিবাসীদের জন্য পড়াশুনোয় চাকরিতে রিজার্ভেশন আছে, মুসলিমদের নেই। হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন , ক্রিশ্চান সবাই দলিত হতে পারে; মুসলিমরা নয়।
     
    দেশের প্রায় ২০% হয়েও ওদের প্রতিনিধিত্ব প্রশাসনে চাকরি  ব্যবসায়ে খুব কম। জাস্টিস রাজিন্দর সাত্তার কমিশনের রিপোর্ট দেখিয়েছে কীভাবে ওরা দেশের অত্যন্ত পিছিয়ে থাকা বড় কম্যুনিটি। 
  • Ranjan Roy | ১১ জুন ২০২২ ১১:৫৭508761
  • ডিসি,
     রুশদি, তসলিমা (হতাশা অ বিট্রেয়াল) রাহুল গান্ধীর করুণ অবস্থা নিয়ে সবকটি মন্তব্যে সহমত। এই একটা পরিবারের পোঁ ধরে কংগ্রেস দলটা মায়ের ভোগে গেছে। এখন দেশে সর্বভারতীয় দল বলতে শুধু বিজেপি। কাজেই লোকসভা স্তরে ওরাই অন্ততঃ দু'দশক ক্ষমতায় থাকবে।
     ছ'মাস আগে দিল্লিতে একটি বই প্রকাশন আয়োজনে তসলিমা আমন্ত্রিত ছিলেন। এক ডজন সশস্ত্র বন্দুকধারী নিয়ে এলেন। বিজেপি সরকার থাকার ব্যবস্থা অ সিকিউরিটি দিয়েছে, কিন্তু চলাফেরায় স্বাধীনতা নেই।খাঁচার পাখি। 
  • দীপ | 42.***.*** | ১১ জুন ২০২২ ১১:৫৮508762
  • তা আম্বেদকর তো Uniform Civil Code চেয়েছিলেন। সেটাও তো হয়নি। হিন্দু, মুসলিম, শিখ- সবাইকে সমানভাবেই দেখা হবে। সেটাই এক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে কাম্য।
  • aranya | 2601:84:4600:5410:d410:f1e2:5fbf:***:*** | ১১ জুন ২০২২ ১২:০৪508764
  • 'এখন এটাকে ভিত্তি করে কোন মৌলবী যদি চ্যানেলে বলে--তোমাদের ভগবান তো মেয়েদের স্নানের কাপড় নিয়ে পালাত, তখন আমাদের জ্বলে যাবে না? তখন কি নতুন কিছু বলেনি, ভাগবতে বিস্তারিত বর্ণনা আছে বলে ছেড়ে দেব?'
    - আমার মনে হয় যে জ্বলে যাওয়া উচিত নয়, এবং ছেড়ে দেওয়াটাই ঠিক। 
     
    নূপুর শর্মার উদ্দেশ্য জানি।  কিন্তু একটা ঐতিহাসিক সত্যের জন্য কারও অপমানিত বোধ করার কথা নয়। সত্য-টা যদি 'মহানবী সম্পর্কে অবমাননামূলক' মনে হয়, তবে মহানবী সেই নিন্দাজনক কাজ করে অন্যায় করেছিলেন, সেটাও স্পষ্ট ভাবে স্বীকার করা দরকার। 
     
    নূপুর শর্মা, বিজেপি ভারতবর্ষের লজ্জা। আর এই ইসলামিক দেশগুলো, যারা ভারতের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করছে  - সারা পৃথিবীর, মানবতার লজ্জা। ধর্মের ভিত্তিতে স্থাপিত দেশ মানেই সেখানে অন্য ধর্মের মানুষ ডিসক্রিমিনেটেড হবে। 
     
    এটা লক্ষ্যণীয় যে এই অন্য ধর্মের মানুষ, ইনফিদেল - রা যখন অত্যাচারিত হতে থাকে, পাকিস্তান, বাংলাদেশে হিন্দু রা খুন, ধর্ষণ, লুন্ঠনের স্বীকার হয়, দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়, তখন এই আরব দেশগুলো-র কোন হেল দোল দেখা যায় না 
  • Ranjan Roy | ১১ জুন ২০২২ ১২:১২508765
  • অরণ্য
     আপনি বলছেন আদর্শ স্থিতির কথা। আমার আপনার এবং দীপ, এস , ডিসির মত মানুষদের কথা।
    মধ্যপ্রাচ্যের দেশের সঙ্গে ভারতের কোন তুলনা হয়না। কিন্তু ভয় হয়ও , আমরা কোন দিকে যাচ্ছি?
  • s | 2a0b:f4c2:3::***:*** | ১১ জুন ২০২২ ১২:১৫508766
  • ত্রিশূলে কন্ডোম পরালে, শিবলিঙ্গে কন্ডোম পরানোর ছবি দিলে, কালা ধনকে শিবলিঙ্গের সঙ্গে ইকুয়েট করলে সেকুলারদের যে সস্নেহ প্রশ্রয় দেখা যায় তাকে কেউ মৌলবাদী ছাপ্পা দেবেন না নিশ্চয়। এই অবরোধেও তো সেকুলারবর্গ প্রতিবাদের গণতান্ত্রিক অধিকার দেখছেন মাত্র।
  • Amit | 220.235.***.*** | ১১ জুন ২০২২ ১৩:২৯508772
  • এক্সাক্টলি। মধ্যপ্রাচ্য বা আফগানিস্তান পাকিস্তান বা বাংলাদেশ ইত্যাদি ইসলামিক দেশের সঙ্গে এখনো ভারতের তুলনা হয়না। হয়তো সেইপথে কিছুটা এগিয়েছে , কিন্তু এদের লেভেল এ আসতে এখনো অনেক অনেক রাস্তা পেরোতে হবে। এই বেসিক প্রেমিস টা শুরুতেই মেনে নিলে আলোচনা মিনিংফুল ভাবে এগোতে কোনো অসুবিধা নেই। 
     
    তাই কেও কেও যখন বঙ্কিম বা অন্য কারোর লেখা থেকে কয়েকটা লাইন তুলে তাদের কে সাম্প্রদায়িক বা ইন্টলারেন্ট প্রমানের চেষ্টা করেন , তখন চালুনি আর ছুঁচের তুলনা টা চলেই আসে। সেটা একেবারে অপ্রাসঙ্গিক না। 
     
    এটাও বোঝা যায়না এতগুলো ইসলামিক দেশে তিন তালাক ব্যান হলে ইন্ডিয়াতে সেটা করলে সেক্যুলারদের এতো কেন আপত্তি ওঠে। 
     
    শিবলিঙ্গে কন্ডোম পরিয়ে কারুর হাল এখনও অভিজিৎ রায়ের মতো হয়নি। নেট এ গালাগাল বাপান্ত করা আর চাপাতি চালানো এক জিনিস নয়। পিরিয়ড। 
  • Saahil | 118.179.***.*** | ১১ জুন ২০২২ ১৪:৩৩508775
  • প্রথমেই বলে রাখি আমি বিজেপি সমার্থক নই  .
     
    কিন্তু নুপুর শর্মার বক্তব্যে টেকনিক্যাল ভুল নেই ।  উনি যা বলেছেন সেটা হাদিসে লেখা তথ্য ।বলার ভঙ্গি বিজেপি সুলভ এগ্রেসিভ ছিল। কিন্তু তথ্য ভুল নয় ।   
     
    দুনিয়া জুড়ে একটা এক্স-মুসলিম আন্দোলন চলছে  কয়েক বছর ধরে ।আপনারা ওয়াকিবহাল কিনা জানি  না। ওই  অনুষ্ঠানে আরেক অংশ্গ্রহন্কারী  "সাহিল" ( আসল নাম নয় ) ওরোকোম ই  আরেক এক্স মুস্লিম ।  সাহিল আগে  তব্লিক জামাতের প্রচরক ছিলো । অমুস্লিম দের দাওয়াত দিতো ইস্লামিক আলোচনাচোক্রে যোগ দিতে । তাদের অনেকে কন্ভার্ট হত । (মাল্টিলেভেল  ( AMWAY)মার্কেটিং এ ডিস্ট্রিবিউটার নিয়োগ  কি করে হয় জানা থাকলে প্রসেসটা বুঝবেন--ওরা বলে ৮০ঃ২০ রুল  ---১০০ জনকে ইন্ভাইট করলে ২০ জন আসবে কনসেপ্ট শুন্তে ,  তার ২০%  জয়েন করবে )
     
    এহেন একনিষ্ঠ  "সাহিল" এর মনে  ইস্লামিক টেক্স্ট পড়ে   নানা প্রশ্ন এলো । বছর 2 ধরে না মৌলবি /উলেমার শরনাপন্য হয়ে , বই ঘেটে  উত্তর না পেয়ে---- সাহিল নিজেকে এক্স মুস্লিম দাবি করে এক ইউটিউব চ্যানেল  খুলে প্রশ্নগুলো রাখতে শুরু করে ।  নানা মুফ্হ্তি মৌলবিদের সাথে প্রকশ্যে আলোচনা হয় ----তার ফল কট্টর দের জন্য খুব খারাপ হয় । অবশেষে এক মৌলবি মাস দুই আগে সাহিল এর আসল পরিচয় ফাস  করে বাড়ি / অফিসএর ঠিকানা সহ । সাহিল  কে আন্ডার গ্রাউন্ড হতে বাধ্য হতে হয় । এর পরে মাস ২ পরে সহিলের আত্মপ্রকাশ নিজ নামে ।  নানা টিভি চ্যানেল টিআরপি র  জন্য লুফে নিয়ে অনুষ্ঠান গুলো করতে থাকে । নুপুর সংক্রান্ত  অনুষ্ঠান্টা এই হল এর ব্যক্গ্রাউন্ড । 
     
    নুপুর শর্মা সেদিন যা বলেছে এক্স মুস্লিম কম্যুনিটি গত  ২ বছর ধরে একই কথা বলে চলেছে ইউটিউব এ ---বিশ্বাস  না হলে  কতগুলো পপুলার এক্স মুস্লিম এথেইস্ট চ্যানেল রেকমেন্ড করলাম ।  সব বক্তব্যে একমত না হতেই পারেন । সেতো ইয়ঙ্গ বেঙ্গাল আন্দোলনের সাথেও হওয়া  যায় না ।  
     
    এক্স মুস্লিম অয়থেইস্ট আন্দোলন মুস্লিম সমাজের  মধ্যে থেকে উঠে আসা আন্দোলন । মুলতঃ উপমহাদেশ ভিত্তিক ।  এরা কট্টর ইস্লামের বিরুদ্ধে ন্যারেটিভ তৈরী করছে  ---- এদের সমস্ত রেফেরেন্স/ আর্গুমেন্ট  ইস্লামিক স্ক্রিপ্চার বেস্ড ----এক্কালে রামমোহন , বিদ্যাসাগর যা করেছেন হিন্দুদের জন্য । 
     
    উপমহাদেশের কিছু  এক্স মুস্লিম অ্যাথেইস্ট  ইউটিউব চ্যানেল ঃ   পাকিস্তানী মুল্হিদ , হ্যারিস সুল্তান ,  স্পার্টকাস। এরা মুলত মুস্লিম ব্যাক্গ্রাউন্ড এর নাস্তিক ।  বেশির্ভাগ কথাবর্তা ইস্লাম নিয়ে বল্লেও হিন্দু খ্রীষ্টান দেরো ছাড়ে না দরকারে 
     
     
    ( অনেক বিজেপির ফেক এক্স মুস্লিম ও আছে  বাজারে , তাদের  এড়িয়ে চলতে হবে )
     
     
  • আর নাম দিয়ে কি হবে | 3.142.***.*** | ১১ জুন ২০২২ ১৪:৪৯508776
  • বাপ আব্দুল আমার 
     
    সোমনাথ নাম নিয়ে এতো কষ্ট করে এসব না লিখে হাওড়ায় গিয়ে দুটো দোকান জ্বালিয়ে এলে পতিবাদ আরো জোরালো হতো না ?
  • দীপ | 2401:4900:3a09:ca82:6768:578e:3324:***:*** | ১১ জুন ২০২২ ১৪:৫১508777
  • আর তসলিমার ব‌ই নিষিদ্ধ করা, তসলিমাকে তাড়ানো তো ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাজনীতির অসামান্য উদাহরণ! তখন অবশ্য মহাবিপ্লবীদের গলায় কোনো সমালোচনা শোনা যায়না! সামান্য লজ্জাবোধ থাকলে সবার আগে আত্মসমালোচনা প্রয়োজন!
  • দীপ | 2401:4900:3a09:ca82:6768:578e:3324:***:*** | ১১ জুন ২০২২ ১৫:০২508778
  • তসলিমার সময়‌ও ইদ্রিশ আলী কোম্পানি ঠিক এই কাজটাই করেছিল। সাংবাদিকের কাছে শোনা (অফ দ্য রেকর্ড) সেদিন রাইটার্স থেকে লালবাজারে নির্দেশ গেছিল কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যেন না হয়। সন্ধ্যেবেলা মিলিটারি ডাকা হবে, দেখানো হবে তসলিমার জন্য পশ্চিমবঙ্গের জীবন বিপর্যস্ত। সুতরাং তসলিমাকে তাড়াতে হবে! 
    সেদিন মহাবিপ্লবীরা প্রতিবাদ করেছিলেন? বিজেপির হাতে অস্ত্র তো আপনারাই তুলে দিয়েছেন।
     
  • দীপ | 2401:4900:3a09:ca82:6768:578e:3324:***:*** | ১১ জুন ২০২২ ১৫:০৫508779
  • তসলিমার লেখা।
     
    ২২ নভেম্বর, ২০০৭ সাল। আমাকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। এই বের করে দেওয়ার পরিকল্পনা দেড়-দু'বছর ধরেই চলছিল। আমার যে বইটি বামফ্রন্ট সরকার নিষিদ্ধ করেছিল ২০০৩ সালে, সেটিকে দু'বছর পর কলকাতা হাইকোর্ট মুক্তি দেয়। বইয়ের এই মুক্তি পাওয়া বামপন্থীরা পছন্দ করেননি। থেকে থেকেই বলছিলেন রাজ্য ছাড়তে। চাপটা চরমে উঠলো হায়দারাবাদে মুসলিম মৌলবাদীরা আমার ওপর হামলা করার পর। কলকাতায় আমাকে গৃহবন্দি করা হলো। পুলিশ কমিশনার বাড়িতে এসে থ্রেট করতেন। রাজ্য ছাড়ার জন্য হুকুম দিতেন। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, বুদ্ধদেব গুহকে দিয়েও মূখ্যমন্ত্রী বলাতেন আমি যেন কলকাতা ছাড়ি। এমনকী বাড়িওয়ালা ডাক্তার দেবল সেনও বাধ্য হয়েছিলেন আমাকে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দিতে। এমন সময় পার্ক সার্কাসের গলিতে হঠাৎ শ'দুয়েক মুসলমানকে বের করা হলো। ছিল নন্দীগ্রাম,সিঙ্গুর আর রিজওয়ানকে নিয়ে বিক্ষোভ, হয়ে দাঁড়ালো তসলিমার ডিপোর্টেশনের পক্ষে মিছিল। মুসলমানের আপরাইজিং হলে মেটিয়াবুরুজ, খিদিরপুরেও হতো। কোথাও কিন্তু কিছু হয়নি। মোহাম্মদ সেলিমের গলি থেকে কিছু পকেটমার, ছিঁচকে চোর বেরিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের সামনেই গাড়িটাড়ি পোড়ালো। খামোকা আর্মি নামানো হয়েছিল। কার্ফুও ডাকা হয়েছিল। মশা মারতে কামান দাগা বোধহয় একেই বলে। 
     
    বামফ্রন্ট সরকার মুসলমানের ভোট পাওয়ার জন্য আমাকে তাড়িয়েছিল, কিন্তু মুসলমানের ভোট তাদের শেষ অবধি পাওয়া হয়নি। সামনেই ছিল পঞ্চায়েত ইলেকশন। সেই ইলেকশনে গোহারা হেরেছিল বামফ্রন্ট। (আজও রাজনীতিকদের এই শিক্ষাটা হয়নি যে তসলিমাকে গৃহবন্দি করে, মেরে, তাড়িয়ে, তার সর্বনাশ করে, তার টিভি সিরিয়াল ব্যান করে, তার বইয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বাতিল করে মুসলমানের ভোট জোটেনা, জোটেনি কোনওকালে। ) 
     
    এরপর তো ফতোয়াবাজরা ধর্মতলার মোড়ে দাঁড়িয়ে বিরাট জনসভা করে আমার মাথার দাম 'আনলিমিটিড' অ্যামাউন্ট টাকা ঘোষনা করলো। এক হায়দারাবাদি মোল্লাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে আসা হয়েছিল। সেই মোল্লা এবং কলকাতার টিপু সুলতান মসজিদেরও ইমাম ছিল ফতোয়া ঘোষণার নায়ক। এই যে কারও মুণ্ডু কেটে নিয়ে এলে হাজার কোটি অথবা যত ইচ্ছে টাকা চাও তো দেবো বলা হলো, এর জন্য কিন্তু কোনও ফতোয়াবাজের শাস্তি হলো না। পুলিশ ছিল সভায়, ওদের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা দিতেই ছিল। ওই ফতোয়াবাজ ইমাম আবার বামফ্রন্ট সরকারের, এবং এখনকার তৃণমূলী সরকারের পরম বন্ধু। 
     
    কলকাতা থেকে তাড়াবার পর কিছু বন্ধু, খুব সাধারণ বন্ধু, প্রতিবাদ করতো এই ২২ নভেম্বর তারিখে। একজন নির্বাসিত বাঙালি লেখক, যে ভালোবেসে কলকাতায় থাকতো, তাকে কলকাতা থেকে বের করে দেওয়াটা কলকাতার জন্য লজ্জা, সে কারণেই ২২ নভেম্বরের দিনটিকে ওরা লজ্জা দিবস বলতো। তসলিমাকে কলকাতায় ফেরত চাই বলে বলে প্রতিবছর চিৎকার করতো ওরা । কয়েকজন বড় লেখক শিল্পী আসতেন প্রতিবাদ অনুষ্ঠানে। ওই লেখক শিল্পীরা তৃণমূলে ভিড়ে যাবার পর অবশ্য এ পথ আর মাড়ান না। লজ্জা দিবস বলে কোনও দিবসের কথাও ওঁদের হয়তো আর স্মরণ নেই।
     
    দেখতে দেখতে আজ আট বছর। চোখের পলকে সময় চলে যায়। কলকাতায় যেতে পারি বা না পারি, মত প্রকাশের অধিকারকে মূল্য দিতে, যতদিন বাঁচি, ততদিনই করবো কলকাতায় ফেরার দাবি।
  • দীপ | 2401:4900:3a09:ca82:6768:578e:3324:***:*** | ১১ জুন ২০২২ ১৫:০৭508780
  • আরেকটি লেখা।
     
    আমার নির্বাচিত কলাম বইটি কলকাতা থেকে আনন্দ পুরস্কার পেয়েছিল ১৯৯২ সালে। তখন বাম ডাম সকলে পন্থীই আমার বেশ প্রশংসা করতো। ১৯৯৩ সালে যখন লজ্জা বেরোলো, অবাক কাণ্ড, তখন ভারতের বাম্পন্থীরা আমাকে গালাগালি করতে লাগলো, বলতে লাগলো আমি নাকি লজ্জায় মিথ্যে কথা লিখেছি, আমি নাকি বাড়াবাড়ি করেছি, এরকম ঘটনা নাকি ঘটেনি 'অসাম্প্রদায়িক' বাংলাদেশে। কলকাতার 'আজকাল' পত্রিকাটি সেই থেকে আমার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। অশোক দাশগুপ্ত ছিলেন আজকালের সম্পাদক। তিনি কিছুদিন পর পরই খামোকা তসলিমাবিরোধী লেখা লিখতেন। লজ্জা লিখেছি বলে বিজেপির নাকি সুবিধে হয়েছে। আমি নাকি বিজেপির হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছি। তাহলে আমার কী করা উচিত ছিল? তাদের বক্তব্য আমার চুপ করে থাকা উচিত ছিল। আমার দেশে মানুষের ওপর অত্যাচার চলছে শুধু ভিন্ন ধর্মে বিশ্বাস করে বলে-- আর আমি নাকি তার প্রতিবাদ করবো না, করলে সেটা অন্যের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়। কত রকম কথা বলে আমাকে অপমান করা হয়েছে! অপবাদ দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রদায়িকতার বিপক্ষে এবং মানবতার পক্ষে লেখা একটি বইকে কত রকম ভাবে যে ওরা ঘেন্না করেছে। অথচ লজ্জার ঘটনাই ঘটে চলেছে নিরবধি। নিরীহ নির্যাতিত মানুষ প্রাণ বাঁচাতে মান বাঁচাতে ওদেশ থেকে এদেশে পাড়ি দিচ্ছে। কিন্তু চোখে ঠুলি পরে আমাকেই বড় বড় বুদ্ধিজীবী গোষ্ঠী ব্রাত্য করে রেখেছেন। লজ্জা লেখার অপরাধে। লজ্জা'কে মেনে নেওয়া মানে, তাঁরা মনে করেন , সেক্যুলারের তালিকা থেকে খসে পড়া।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : guruchandali@gmail.com ।


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে মতামত দিন