‘দৃশ্য-বস্তু থেকে ক্যামেরার দূরত্বের তারতম্য লক্ষ্য করা যায়, কিন্তু ক্যামেরার অবস্থান সব সময়ই মেঝে থেকে দু’হাত উপরে। অর্থাৎ জাপানী কায়দায় মাটিতে হাঁটু গেড়ে বসলে মানুষের চোখ যেখানে থাকে, ওজুর ক্যামেরার লেন্স থাকে প্রতিটি শট-এ ঠিক সেই উচ্চতায়।’ – লেখক সত্যজিৎ রায় (বিষয় চলচ্চিত্র, পৃষ্ঠা - ২০)। সহকারী পরিচালক হিসেবে শুরু করে কিছু বছরের মধ্যেই পুরাদস্তুর পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন ইউসুজিরো ওজু। ছবি করেছেন একশটিরও বেশি কিন্তু বেশিরভাগই হারিয়ে গেছে। সর্বসাকুল্যে সন্ধান পাওয়া যায় গোটা তিরিশেক ছবির। এর মধ্যে নামকরা ছবি গুলি হল- টোকিও মনগাতারি (১৯৫৩), লেট স্প্রিং (১৯৪৯), ফ্লোটিং উইডস (১৯৫৯), আর্লি সামার (১৯৫১), এন অটম আফটারনুন (১৯৬২), দি ফ্লেভার অফ গ্রিন টি অ্যান্ড রাইস (১৯৫২) ইত্যাদি।
আমাদের প্রথম ওজু-অভিজ্ঞতা কিন্তু ওজুর নামকরা ছবি গুলির মধ্যে থেকে হয়নি। কোন উৎসব মনে নেই, কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব হতে পারে আবার স্বতন্ত্র কোনো প্রদর্শনীও হতে পারে। এক দশকের একটু বেশি আগে হবে, সন্ধ্যা-বাসর, যতদূর মনে পড়ছে বিকেল চারটে বা সন্ধ্যা ছটার প্রদর্শনী, নন্দন দুই (তখন আলাদা আলাদা চেয়ার পাতা থাকত, এখনকার মত ফিক্স সুইঙ্গিং চেয়ার নয়)। ওজুর নামের সাথে পরিচিতি তখনও পর্যন্ত উপরের ঐ সত্যজিতের বক্তব্যটি। জাপানের ছবি বলতে আমরা বুঝি আকিরা কুরোসাওয়া (১৯১০-১৯৯৮)। বিশেষত এর কিছুকাল আগে দেখা কুরোসাওয়ার ‘রশোমন’(১৯৫০)-এর রসে তখনও আমাদের মন মজে আছে। অকালপক্ব আমরা সেই দিন ওজুর যে স্বল্প পরিচিত ছবিটি দেখেছিলাম তার নাম 'ইকুইনক্স ফ্লাওয়ার' (১৯৫৮)।