
প্রায় একমাস পর ঢাকা মহানগরীতে এলো অনানুষ্ঠানিক শিথিলতা। দ্বিতীয় রমজানে নগর পুলিশ জানালো, সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যসম্মত ইফতার বিক্রির করা যাবে। পাশাপাশি কাঁচাবাজার, নিত্যপণ্য ও মুদি দোকান বেলা ২টার বদলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখার অনুমতি দেওয়া হলো। অর্থাৎ, জনমানুষ চলাচলে শিথিলতার কথাই জানালো পুলিশ।
২৭ এপ্রিলের ওই ঘোষণার দু-একদিন আগেই গলি থেকে রাজপথে বেড়েছে মানুষ। রিকশা, অটোরিকশা ও ব্যক্তিগত গাড়িও বেরুচ্ছে কিছু। ভুতড়ে নগরীতে যেন সঞ্চারিত হচ্ছে কিছু প্রাণ। তবে যানজট, ধুলো, ধোঁয়া, শব্দদূষণ, আর গিজগিজে মানুষের সেই ঢাকার সাথে এই ঢাকার ফারাক অনেক।
একদিনে সর্বোচ্চ সংক্রমণ, মৃত্যু দেড়শ ছাড়িয়েছে
এদিকে, খবরে প্রকাশ, দেশে একদিনে আরও ৫৪৯ জনের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ছয় হাজার ৪৬২ জন। দেশে একদিনে এত বেশি নতুন রোগি আর কখনও শনাক্ত হয়নি। ২৮ এপ্রিল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ জনের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৫৫ জন হয়েছে। আর গত এক দিনে আরও আট জন সুস্থ হয়ে ওঠায় এ পর্যন্ত মোট ১৩৯ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত অনলাইন বুলেটিনে এই সবশেষ তথ্য তুলে ধরা হয়।
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগির খোঁজ মেলে গত ৮ মার্চ। এর ১০ দিনের মাথায় ঘটে প্রথম মৃত্যু। আর এখন সংক্রমণ ছড়িয়েছে পুরো দেশে। এরমধ্যে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ ও গাজিপুরে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রোগির খবর মিলেছে।
আবারো দুর্ভোগে পোশাক শ্রমিক
করোনা পরিস্থিতিতে আবারও দুর্ভোগে ফেলা হলো পরিয়ায়ী তৈরি পোশাক শ্রমিকদের। গণপরিবহন বন্ধের ভেতরেই ঢাকার উপকণ্ঠে সাভার ও গাজিপুরে অল্পকিছু গার্মেন্টস কারখানা খোলা রাখার কথা ঘোষণা করেন মালিকপক্ষ। এরমধ্যে গাজীপুর রয়েছে বেশ খানিকটা করোনা ঝুঁকিতে। সরকারের নির্দেশনা রয়েছে, নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থার পাশাপাশি কারখানাগুলোতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতের। তবে সেটি বোধহয়, বাস্তবে টিভি নিউজের স্ক্রিপ্টেই আটকে আছে।
অতএব ফের শত শত মাইল হেঁটে দলদলে নারীপুরুষ শ্রমিক গাদাগাদি করে মহাসড়ক ধরে আসেন কর্মস্থলে। ফেরিতে, পথে, অটোরিকশা বা ভ্যানে, এমনকি কাজে যোগ দেওয়ার সময় কিসের সঙ্গরোধ? কিসেরই বা সামাজিক দূরত্ব? তবে কারখানা মালিকরা বলছেন, তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কারখানা খোলা রেখেছেন। আর শ্রমিকরা বলছেন, কারখানা গেটে শাবান-পানিতে হাতধোয়ার মধ্যেই সুরক্ষা সীমাবদ্ধ। এছাড়া চাকরি খোয়ানোর হুমকি দিয়ে শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে বাধ্য করার অভিযোগও রয়েছে।
এ লড়াই ভাত-কাপড়ের
এদিকে, খবরে প্রকাশ, করোনা মধ্যেই ২৭ এপ্রিল দুপুর পর্যন্ত গাজীপুরে ৫২৭টি শিল্প কারখানা খুলেছে। জানা যায়, সকালে বকেয়া বেতনের দাবিতে ভোগড়া এলাকার স্টাইলিস্ট নামে একটি গার্মন্টেসের শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা তিনটি মোটরসাইকেলে আগুন দেন। ইটপাটকেল ছুঁড়ে কয়েকটি কারখানার কাঁচও ভাঙচুর করেন। পরে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কয়েক শ্রমিক। এছাড়া শিল্পাঞ্চল টঙ্গীর ইউনাইটেক্স নামে একটি কারখানার সামনে শ্রমিকরা মার্চ মাসের বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন।
কৃষ্ণচূড়ায় সবুজ টিয়ার বৃষ্টিস্নান
বৈশাখেই কয়েকদিন ধরে অঝোরে ঝরছে বৃষ্টি, যেন বর্ষাকাল। খর সূর্য মুখ লুকিয়েছে মেঘের আড়ালে। মেঘ জমেছে আঁখির কোনে, মেঘ জমেছে মনে, মেঘে মেঘে উড়ে বেড়াই, তোমারই সন্ধানে।
তবে এসব খবর-অপখবরের মধ্যে নিউজ পোর্টালের এপে সকাল হয় সবুজ। এখনো এই প্রাচীন নগরে টিকে থাকা কৃষ্ণচূড়ার কোটরে বাসা বাঁধে টিয়ে। বৃষ্টিতে হয় তার সবুজ স্নান। মনে পড়ে প্রাথমিকের সেই গান :
একদিন সূর্যের ভোর, একদিন স্বপ্নের ভোর, একদিন সত্যের ভোর আসবে, এই মনে আছে বিশ্বাস, আমরা করি বিশ্বাস, সত্যের ভোর আসবে একদিন...।
ইশরাত তানিয়া | 162.158.***.*** | ২৮ এপ্রিল ২০২০ ২২:২২92774পোশাক শ্রমিকরা কোভিডযুদ্ধের বিরুদ্ধে পদাতিক বাহিনী৷ মানুষের জীবন তো আর টিয়াপাখির জীবন নয়। এই উদ্বিগ্ন অনিশ্চিত সময়ে সুদিনের অপেক্ষায়...
ধন্যবাদ ইশরাত। সুদিন আসবেই।
আসবেই। বেশিরভাগ মানুষের জন্য সুদিন আসবেই।
অবশ্যই একলহমা। আপনাকে ধন্যবাদ
#
পোস্ট সম্পাদনা করা যাচ্ছে না। এখানেই বলি, ওপরে মৃত্যু ও আক্রান্তের সরকারি পরিসংখ্যানের বাইরে বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ।
টিয়া'কে ভেজাতেই যে রং খুলে গেলো তারা যেন লেগে যায় শ্রমিকে,কারখানায়।সেরে উঠুক পৃথিবী।
ধন্যবাদ সুদেষ্ণা। আপনারই সুরে বলি, শ্রমিকেরা হোক সবুজ, সেরে উঠুক পৃথিবী।
লকডাউন ছাড়া রোগ সংক্রমণ সরানোর উপায় নেই। আসলে এটা তো ফ্লুয়ের মত, সবার না হওয়া অবধি বন্ধ হবে না। সাবধানে থাকতেই হবে তাই। সবাই ভালো থাকুন।
Дж | ৩০ এপ্রিল ২০২০ ১১:৪৮92840এই লকডাউনের প্রশ্নটাই কাল ভাটে করেছিলাম। এই টইটা কাল দেখিনি। অনেক ধন্যবাদ লেখাটির জন্য।
নিরমাল্লো,
যেহেতু ওষুধ-প্রতেষেধক এখনো বের হয়নি, তাই করোনা থেকে বিচ্ছিন্নতা নূন্যতম একটি সুরক্ষা।
গুরুতে আরো লিখুন।
(Дж ),
আপনাকেও ধন্যবাদ। সবাই ভালো থাকুন।
ওপারের করোনা সমাচার ভালোলাগল...ছবির সাথে পড়লাম। সুদিন আসুক। সবাই সেই অপেক্ষায়...
ওপারের করোনা সমাচার ভালোলাগল...ছবির সাথে পড়লাম। সুদিন আসুক। সবাই সেই অপেক্ষায়...
ধন্যবাদ ঝুমা। ইচ্ছে হলে ডান দিকে ওপরে "ব্যবহারকারীর খুঁটিনাটি " বিভাগে গিয়ে নিজের নামটি বাংলায় করে নিতে পারেন, দেখতে ভাল লাগবে। হরিদাস পালে স্বাগতম।
*ভীষণভাবে দুঃখিত।
নামটি "ঝর্ণা" হবে। টাইপো